আন্তর্জাতিক অ্যাপালাচিয়ান পথ (ফরাসি: সঁতিয়ে আন্তরনাসিওনাল দে'জ অ্যাপালাশ) হলো একটি ভ্রমণপথ, যা মূলত মেইন, নিউ ব্রান্সউইক, ক্যুবেক, এবং নিউফাউন্ডল্যান্ড অ্যান্ড লাব্রাডর প্রদেশ জুড়ে বিস্তৃত। এর পাশাপাশি ইউরোপ ও উত্তর আফ্রিকাতেও এর শাখা ও সহযোগী পথ রয়েছে।
জানুন
[সম্পাদনা]আন্তর্জাতিক অ্যাপালাচিয়ান পথ (আইএটি) হলো একটি দীর্ঘ দূরত্বের হাঁটার পথ, যা অ্যাপালাচিয়ান পথের ধারনাকে উত্তর দিকে প্রসারিত করেছে। এটি মেইন, নিউ ব্রান্সউইক, ক্যুবেক, এবং নিউফাউন্ডল্যান্ড অ্যান্ড লাব্রাডর জুড়ে অ্যাপালাচিয়ান পর্বতমালা অনুসরণ করে এগিয়ে গেছে। এই পথের ধারণা ১৯৯৪ সালে রিচার্ড অ্যান্ডারসনের মাথা থেকে আসে। তিনি অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন একটি ভূতাত্ত্বিক সত্য থেকে—অ্যাপালাচিয়ান পর্বতমালা আসলে একটি বহু প্রাচীন পর্বতশ্রেণির অংশ, যার নাম কেন্দ্রীয় প্যানজিয়ান পর্বত। এই পর্বতশ্রেণি সৃষ্টি হয়েছিল প্যানজিয়া মহাদেশ ভেঙে যাওয়ার আগেই। সেই ভূতাত্ত্বিক সম্পর্কই আইএটির প্রসার ঘটিয়েছে ইউরোপ ও উত্তর আফ্রিকায়, যেখানে গ্রিনল্যান্ড, আইসল্যান্ড, নরওয়ে, সুইডেন, ডেনমার্ক, স্কটল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড, ওয়েলস, ইংল্যান্ড, স্পেন, পর্তুগাল আর মরক্কোর মতো দেশে শাখা ও সহযোগী পথ গড়ে উঠেছে।
এই ভ্রমণপথ মূলত উত্তর আমেরিকার অংশের ওপর জোর দেয়। এখানে ভ্রমণকারীরা মেইনে মূল অ্যাপালাচিয়ান পথের উত্তর প্রান্ত থেকে শুরু করে, কানাডার নানারকম প্রাকৃতিক দৃশ্য পেরিয়ে নিউফাউন্ডল্যান্ডের আটলান্টিক উপকূল পর্যন্ত একটানা পথের অভিজ্ঞতা পান। এই পথে হাঁটতে গিয়ে পর্বতারোহীরা পৌঁছে যাবে জনশূন্য বন্যপ্রাণ এলাকায়, পাথুরে উপকূলে, চ্যালেঞ্জিং পর্বতশৃঙ্গে, আবার কখনও সংস্কৃতিতে সমৃদ্ধ অঞ্চলেও। এটি সেই সব ভূমির ভাগাভাগি করা ভূতাত্ত্বিক আর প্রাকৃতিক ঐতিহ্যকে উদযাপন করে।
আইএটি কিন্তু অ্যাপালাচিয়ান পথের মতো এককভাবে পরিচালিত হয় না। এটি হলো নানা জায়গার ভিন্ন ভিন্ন পথ আর রুটের সমন্বয়, যেগুলো স্থানীয়, আঞ্চলিক আর জাতীয় পর্যায়ে আলাদা সংগঠন দ্বারা পরিচালিত হয়। ফলে পথের অবস্থা, চিহ্নিতকরণ আর সুবিধাসমূহ একেক জায়গায় একেক রকম হতে পারে।
প্রস্তুতি নিন
[সম্পাদনা]আন্তর্জাতিক অ্যাপালাচিয়ান পথে হাঁটার আগে ভালোভাবে পরিকল্পনা করা জরুরি, বিশেষ করে যদি বড় অংশ হাঁটার ইচ্ছা থাকে বা একটানা পুরোটা হাঁটার পরিকল্পনা থাকে।
শারীরিক সক্ষমতা
[সম্পাদনা]আইএটি এর পথ অনেক বৈচিত্র্যময় এবং অনেক সময় বেশ কঠিনও হয়—পর্বতময় এলাকা, দূরবর্তী বন্যপ্রাণ অঞ্চল, আর পাথুরে উপকূলীয় পথ সবই এর অংশ। তাই পর্বতারোহীদের শারীরিক অবস্থা ভালো থাকতে হবে,, আর বহুদিন ব্যাগ কাঁধে নিয়ে ভ্রমণের অভিজ্ঞতা থাকা দরকার। অনুশীলনে জোর দিতে হবে হৃদযন্ত্রের সহনশীলতা বাড়ানোতে, শক্তি অর্জনে (বিশেষ করে পা ও কোমরের অংশে), আর ওজনযুক্ত ব্যাগ বহনের উপর জোর দেওয়া উচিত।
অনুমতি ও খরচ
[সম্পাদনা]মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মেইন অঙ্গরাজ্যে, যদি কেউ কাতাহডিন পাহাড়ে ব্যাক্সটার প্রাদেশিক উদ্যান থেকে শুরু করতে চায়—যা আসলে অ্যাপালাচিয়ান পথের উত্তর প্রান্ত এবং আইএটির কাছাকাছি—তাহলে তাঁবু খাটিয়ে থাকা আর হাঁটার জন্য আগে থেকে অনুমতি ও সংরক্ষণ প্রয়োজন। এই বিষয়ে বিস্তারিত জানতে হবে ব্যাক্সটার প্রাদেশিক উদ্যান কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইট থেকে। কাতাহডিনের বন আর জলভূমি জাতীয় স্মৃতিসৌধে হাঁটার জন্য জাতীয় উদ্যান পরিষেবার নিয়ম মেনে চলতে হবে।
কানাডায়, নিউ ব্রান্সউইকের কিছু অংশ মাউন্ট কার্লেটন প্রাদেশিক উদ্যানের মধ্যে পড়ে, যেখানে প্রবেশমূল্য বা তাঁবু খাটিয়ে থাকার জন্য টাকা লাগতে পারে। ক্যুবেকে গাসপেজি জাতীয় উদ্যান ও ফরিয়ঁ জাতীয় উদ্যানের অংশে প্রবেশমূল্য রয়েছে, আর বন্যপ্রাণী এলাকায় তাঁবু খাটিয়ে থাকতে হলে আগে থেকে অনুমতি ও সংরক্ষণ লাগবে। ক্যুবেকের প্রাদেশিক উদ্যানে যাওয়ার জন্য সেপাক আর কানাডার জাতীয় উদ্যানে যাওয়ার জন্য পার্কস কানাডার নির্দেশিকা দেখতে হবে।
নিউফাউন্ডল্যান্ড অ্যান্ড লাব্রাডরে, গ্রস মরন জাতীয় উদ্যানের মতো প্রাদেশিক ও জাতীয় উদ্যানে হাঁটার জন্য অনুমতি বা প্রবেশমূল্য লাগতে পারে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে কানাডায় ঢোকার সময় অবশ্যই সরকারি সীমান্ত প্রবেশপথ ব্যবহার করতে হবে। আইএটির পথ সেই অনুযায়ী পরিকল্পিত হলেও ভ্রমণকারীর নিজের দায়িত্ব সব ধরনের আইনগত শর্ত পূরণ করা—কানাডায় ঢোকার জন্য যেমন বৈধ পাসপোর্ট আর প্রয়োজন হলে ভিসা থাকতে হবে, তেমনি ফের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের ক্ষেত্রেও শর্ত মানতে হবে। তাই সর্বশেষ নিয়ম জানতে সবসময় সরকারি ওয়েবসাইট দেখা উচিত।
সাংস্কৃতিক দিক
[সম্পাদনা]পথ চলতে গিয়ে ভিন্ন ভিন্ন সংস্কৃতি আর ভাষার মুখোমুখি হতে হবে, বিশেষ করে ক্যুবেক আর নিউ ব্রান্সউইকের ফরাসিভাষী অঞ্চলে। কয়েকটি সহজ ফরাসি বাক্য শিখে নিলে কাজে আসবে, আর স্থানীয়রা প্রশংসাও করবে। স্থানীয় সংস্কৃতি আর ব্যক্তিগত জমির প্রতি সম্মান দেখাতে হবে। পুরো পথজুড়ে "লিভ নো ট্রেস" নীতি মানতে হবে যাতে পরিবেশের ওপর প্রভাব কম পড়ে। ছোট ছোট শহরে ব্যাংকের এটিএম নাও থাকতে পারে, তাই সঙ্গে কিছু নগদ অর্থ রাখতে হবে—মার্কিন ডলার আর কানাডিয়ান ডলার দুই ধরনেরই—এর পাশাপাশি ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ডও থাকা ভালো।
কীভাবে পোঁছাবেন
[সম্পাদনা]আন্তর্জাতিক অ্যাপালাচিয়ান পথে প্রবেশ নির্ভর করে আপনি কোন অংশে হাঁটতে চান তার ওপর।

মেইন (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র)
[সম্পাদনা]আইএটি আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় ব্যাক্সটার প্রাদেশিক উদ্যানের উত্তরে, আর অনেকেই মনে করেন এটি শুরু হয় কাতাহডিনের বন আর জলভূমি জাতীয় স্মৃতিসৌধ থেকে।
আকাশপথে গেলে, ব্যাঙ্গর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (বিজিআর) হলো নিকটতম বড় বিমানবন্দর।
বাসে গেলে, কনকর্ড কোচ লাইনস আর গ্রেহাউন্ড মেইনের শহরগুলোতে যাতায়াতের সুযোগ দেয়, সেখান থেকে আবার আপনাকে স্থানীয় পরিবহন বা শাটল ধরতে হতে পারে।
গাড়িতে গেলে, আপনি মিলিনককেট বা প্যাটেন শহরের কাছে দক্ষিণ দিকের অংশে প্রবেশ করতে পারবেন। নানা জায়গায় পার্কিং-এর ব্যবস্থা আছে, তবে রাতভর পার্কিং-এর জন্য নিয়মকানুন অবশ্যই দেখে নিতে হবে, বিশেষ করে জাতীয় স্মৃতিসৌধ আর ব্যাক্সটার প্রাদেশিক উদ্যানের ভেতরে।
ব্যক্তিগত শাটল পরিষেবা ব্যাক্সটার প্রাদেশিক উদ্যান ঘিরে অ্যাপালাচিয়ান পথের ভ্রমণকারীদের জন্য সাধারণ ব্যাপার, আর এগুলো আইএটির প্রবেশপথেও পাওয়া যেতে পারে। তবে আগে থেকে সংরক্ষণ করা প্রয়োজন হয়।
নিউ ব্রান্সউইক (কানাডা)
[সম্পাদনা]পথটি নিউ ব্রান্সউইকে প্রবেশ করে মেইনের ফোর্ট ফেয়ারফিল্ড এবং নিউ ব্রান্সউইকের পার্থ-অ্যান্ডোভার অঞ্চলের কাছাকাছি দিয়ে।
আকাশপথে গেলে, ফ্রেডেরিকটন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (ওয়াইএফসি) এবং বৃহত্তর মন্টকন রোমিও লে ব্লাঙ্ক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (ওয়াইকিউএম) ব্যবহার করা যেতে পারে, যদিও অনেক ট্রেইল অংশ থেকে এগুলো এখনো যথেষ্ট দূরে। মেইনের প্রেস্ক আইল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (পিকিউআই) সীমান্তের কাছাকাছি কিছুটা সুবিধাজনক।
গাড়িতে গেলে, ট্রান্স-কানাডা মহাসড়ক (রুট ২)-এর মতো বড় রাস্তা নিউ ব্রান্সউইকের মধ্য দিয়ে যায়, আর প্রাদেশিক রাস্তা দিয়ে মাউন্ট কার্লেটন প্রাদেশিক উদ্যানের কাছাকাছি ট্রেইলের প্রবেশপথে পৌঁছানো যায়।
সীমান্ত পারাপারের সময় অবশ্যই কানাডার সরকারি সীমান্ত পরিষেবা সংস্থা অনুমোদিত প্রবেশপথ ব্যবহার করতে হবে।
ক্যুবেক (কানাডা)
[সম্পাদনা]ক্যুবেকে আইএটি গাসপে উপদ্বীপ (গাসপেসি) অতিক্রম করে।
আকাশপথে গেলে, মন্ট-জলি বিমানবন্দর (ওয়াইওয়াইওয়াই) এবং গাসপে (মিশেল-পুলিও) বিমানবন্দর (ওয়াইজিপি) এই অঞ্চলে পরিষেবা দেয়।
বাসে গেলে, ওরলিয়ঁ এক্সপ্রেস গাসপে উপকূলের শহরগুলোতে যাতায়াতের ব্যবস্থা করে।
গাড়িতে গেলে, স্বয়ংক্রিয় পথ ২০ এবং মহাসড়ক ১৩২ উপদ্বীপের চারপাশে ঘুরে ট্রেইল সংলগ্ন শহর ও উদ্যানে পৌঁছানোর সুবিধা দেয়, যেমন গাসপেসি জাতীয় উদ্যান এবং ফরিয়ঁ জাতীয় উদ্যান।
রেলাই নর্ডিক ফেরি সরাসরি ক্যুবেকের আইএটির মূল ভূখণ্ড অংশে পরিষেবা দেয় না, তবে এটি অ্যান্টিকোস্তি দ্বীপ এবং সেপ্ট-ইলস উত্তর উপকূলে পৌঁছায়, যা ক্যুবেকের আরও দূরবর্তী এলাকা।
নিউফাউন্ডল্যান্ডের সঙ্গে আইএটির সংযোগ প্রায়শই সেন্ট লরেন্স উপসাগরের ওপরে একটি ধারণাগত ফেরি সংযোগের মাধ্যমে হয়।
নিউফাউন্ডল্যান্ড অ্যান্ড লাব্রাডর (কানাডা)
[সম্পাদনা]নিউফাউন্ডল্যান্ডে আইএটি শুরু হয় পোর্ট অক্স বাস্কের কাছাকাছি, যেখান পৌঁছানোর জন্য উত্তর সিডনি, নোভা স্কোটিয়া থেকে ফেরি ব্যবহার করতে হয়। এরপর পথটি দ্বীপের পশ্চিম উপকূলে চলে।
আকাশপথে গেলে, ডিয়ার লেক আঞ্চলিক বিমানবন্দর (ওয়াইডিএফ) কেন্দ্রীয় এবং উত্তর অংশের আইএটিতে যাওয়ার জন্য সুবিধাজনক, যার মধ্যে গ্রস মরন জাতীয় উদ্যানও পড়ে। সেন্ট জনস আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (ওয়াইওয়াইটি) দ্বীপের পূর্ব দিকে এবং আইএটি থেকে দূরে।
ফেরি দিয়ে, মেরিন অ্যাটলান্টিক সারাবছর উত্তর সিডনি (নোভা স্কোটিয়া) থেকে পোর্ট অক্স বাস্ক পর্যন্ত পরিষেবা দেয়, আর মরসুমে আর্জেন্টিয়াতেও যায়। পোর্ট অক্স বাস্ক ফেরি হলো মূল উপায় গাড়ি আনা বা নিউফাউন্ডল্যান্ডের আইএটির শুরুতে পৌঁছানোর।
গাড়িতে গেলে, ট্রান্স-কানাডা মহাসড়ক (রুট ১) নিউফাউন্ডল্যান্ডের মধ্য দিয়ে যায়, আর নানা স্থানীয় রাস্তা দ্বীপের পশ্চিম অংশের ট্রেইলহেডে পৌঁছানোর সুবিধা দেয়।
হেঁটে
[সম্পাদনা]আন্তর্জাতিক অ্যাপালাচিয়ান পথ তার বিভিন্ন অংশ জুড়ে প্রচুর বৈচিত্র্যময় হাঁটার অভিজ্ঞতা দেয়। মে ২০২৫ অনুযায়ী, পুরো পথটি এখনও সম্পূর্ণ হয়নি।
নিরাপদ থাকুন
[সম্পাদনা]আন্তর্জাতিক অ্যাপালাচিয়ান পথ চমৎকার অভিজ্ঞতা দেয়, তবে দূরবর্তী এলাকায় দীর্ঘ পথ হাঁটার সময় কিছু সাধারণ বিপদও থাকে।
বন্যপ্রাণী
[সম্পাদনা]কালো ভালুক উত্তর আমেরিকার আইএটির অধিকাংশ অঞ্চলে থাকে। খাবার নিরাপদে রাখুন—ভালুক বক্স, সঠিকভাবে ঝুলানো ভালুক ব্যাগ, বা ক্যাম্পিং-এ নির্ধারিত ভালুক কন্টেইনার ব্যবহার করে। হাঁটার সময় শব্দ করুন যাতে ভালুককে হঠাৎ ভয় না লাগে। যদি আপনি ব্যবহার করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন এবং অনুমতি থাকে, ভালুক স্প্রে সঙ্গে রাখুন। সীমান্ত পারাপার বা জাতীয় উদ্যানের ক্ষেত্রে নিয়মাবলী ভালোভাবে দেখুন।
মৃগশূকর (মুস) সাধারণত মেইন, নিউ ব্রান্সউইক এবং নিউফাউন্ডল্যান্ডে পাওয়া যায়। সাধারণত তারা আক্রমণাত্মক নয়, কিন্তু হঠাৎ উপস্থিতি বা হুমকি অনুভব করলে বিপজ্জনক হতে পারে, বিশেষ করে গাভী ও তাদের বাচ্চা থাকলে। তাদের পর্যাপ্ত স্থান দিন।
মশা, কালো মাছি, এবং টিক বসন্তের শেষ থেকে গ্রীষ্মকাল পর্যন্ত প্রচুর থাকে। কীটপতঙ্গের প্রতিরোধক ব্যবহার করুন, হালকা রঙের কাপড় পরুন, কাপড়ের ওপর পারমেথ্রিন প্রয়োগ বিবেচনা করুন, প্রয়োজনে মাথার নেট ব্যবহার করুন, যা মাথা ও মুখ ঢেকে রাখে যাতে মশা বা ছোট কীটবালিগুলো ঢুকতে না পারে। প্রতিদিন টিক পরীক্ষা করুন, কারণ কিছু অঞ্চলে লাইম রোগের ঝুঁকি থাকে।
বিষাক্ত সাপ, যেমন র্যাটলস্নেক, সাধারণত উত্তর আইএটির অংশে বড় সমস্যা নয়, তবে উপযুক্ত আবাসস্থলে তাদের উপস্থিতি সম্পর্কে সচেতন থাকুন।
আবহাওয়া
[সম্পাদনা]গ্রীষ্মকালেও ঠাণ্ডা, ভেজা, এবং ঝড়ো আবহাওয়া হাইপোথার্মিয়ার ঝুঁকি বাড়াতে পারে। তাই স্তরবদ্ধ কাপড় পরুন, ভালো বৃষ্টি প্রতিরোধী পোশাক সঙ্গে রাখুন, এবং হাইপোথার্মিয়ার লক্ষণগুলো জানুন।
উষ্ণ মাসে বা খোলা অংশে, তাপের কারণে দুর্বলতা বা তাপপ্রবাহজনিত অসুস্থতা হতে পারে। পর্যাপ্ত পানি পান করুন, ছায়ায় বিশ্রাম নিন, এবং লক্ষণগুলো পর্যবেক্ষণ করুন।
পর্বতের আবহাওয়া দ্রুত পরিবর্তিত হতে পারে; গ্রীষ্মে বজ্রঝড় সাধারণ এবং উচ্চাংশে বরফ পড়া সম্ভব, এমনকি শীতকালের বাইরে। সম্ভব হলে আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেখুন এবং আপনার পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রস্তুত থাকুন।
ভূপ্রকৃতি ও পথের অবস্থা
[সম্পাদনা]পথজুড়ে মূল, পাথর, কাদা, এবং ঢালু অংশ সাধারণ, যা পিছলে যাওয়া, পড়ে যাওয়া বা থমকে যাওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়। তাই দৃঢ় জুতা পরুন এবং স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে ট্রেকিং পোল ব্যবহার করুন। কিছু নদী বা খালের পারাপারে সেতু নাও থাকতে পারে এবং ভারি বর্ষা বা বরফ গলনের সময় বিপজ্জনক হতে পারে। প্রতিটি পারাপার সাবধানে মূল্যায়ন করুন।
আপনার ব্যাগের কোমরের বেল্ট খুলে রাখুন, বিশেষ করে পারাপারের সময় নির্দিষ্ট পানি পায়ের জুতা ব্যবহার বিবেচনা করুন, এবং কোনো পারাপার যদি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ মনে হয়, তা এড়িয়ে চলুন।
পথের চিহ্ন ভিন্ন হতে পারে, তাই সবসময় মানচিত্র ও কম্পাস (এবং এগুলো ব্যবহার করতে জানুন) বা জিপিএস সঙ্গে রাখুন। সতর্ক থাকুন, আপনার চারপাশে নজর দিন, এবং নিশ্চিত করুন কেউ আপনার হাঁটার পরিকল্পনা জানে।
দূরবর্তী অংশ
[সম্পাদনা]অনেক অঞ্চলে মোবাইল নেটওয়ার্ক সীমিত বা একেবারেই নেই, তাই জরুরি পরিস্থিতির জন্য ব্যক্তিগত লোকেটর বীকন (পি এল বি) বা স্যাটেলাইট মেসেঞ্জার সঙ্গে রাখা বুদ্ধিমানের কাজ। আপনাকে কয়েকদিন নিজের ওপর নির্ভরশীল থাকার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে, যার মধ্যে পর্যাপ্ত খাবার, প্রাথমিক চিকিৎসার সরঞ্জাম, এবং যন্ত্রপাতি মেরামতের জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ রাখা অন্তর্ভুক্ত, কারণ সাহায্য অনেক দূরে থাকতে পারে।
জরুরি প্রস্তুতি
[সম্পাদনা]ভালোভাবে সরঞ্জামযুক্ত প্রাথমিক চিকিৎসা কিট সঙ্গে রাখুন এবং এটি কিভাবে ব্যবহার করতে হয় তা জানুন। স্থানীয় জরুরি নম্বরগুলো জানুন; মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এটি হলো ৯১১, আর কানাডার দূরবর্তী অঞ্চলে পরিষেবা ভিন্ন হতে পারে বা সরাসরি নাও পৌঁছানো যেতে পারে। বের হওয়ার আগে স্থানীয় জরুরি প্রক্রিয়াগুলো বোঝার চেষ্টা করুন। আপনার ভ্রমণসূচি বিশ্বাসযোগ্য কারও সঙ্গে শেয়ার করুন এবং নির্ধারিত সময়ে যোগাযোগ করুন।
পরবর্তী গন্তব্য
[সম্পাদনা]উত্তর আমেরিকার আন্তর্জাতিক অ্যাপালাচিয়ান পথের কোনো অংশ বা পুরো অংশ শেষ করার পর অনেক নতুন সুযোগ উন্মুক্ত হয়:
আন্তর্জাতিক অধ্যায়ে চলতে থাকুন: যারা সত্যিকারের সাহসিক অভিযান পছন্দ করেন, তারা আইএটির ইউরোপের অধ্যায়গুলো (যেমন স্কটল্যান্ডের পশ্চিম উচ্চভূমি পথ, আয়ারল্যান্ড, নরওয়ে, স্পেন, পর্তুগাল) বা এমনকি মরক্কোতেও যেতে পারেন। প্রতিটি অংশে অনন্য সাংস্কৃতিক ও হাঁটার অভিজ্ঞতা পাওয়া যায়, যা অ্যাপালাচিয়ান পর্বতমালার প্রাচীন ভূতাত্ত্বিক অবশিষ্ট অনুসরণ করে।
অ্যাপালাচিয়ান পথ অন্বেষণ করুন: যদি আপনি উত্তর দিকে আইএটি হেঁটেছেন, তাহলে মেইন থেকে দক্ষিণ দিকে মূল অ্যাপালাচিয়ান পথের অংশগুলো হেঁটেও দেখার কথা ভাবতে পারেন, বা এই পথে অন্য বিখ্যাত অংশগুলো অন্বেষণ করতে পারেন।
{{#assessment:ভ্রমণপথ|রূপরেখা}}
