ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেস ছিল একটি কিংবদন্তিতুল্য ট্রেন পরিষেবা, যা ১৮৮৩ সালে পূর্ব ও পশ্চিম ইউরোপের মধ্যে চলাচল শুরু করে। যদিও সময়ের সাথে সাথে এর রুট পরিবর্তিত হয়েছে, তবে এর ঐতিহ্যবাহী শেষ গন্তব্য ছিল প্যারিস এবং ইস্তাম্বুল।
১৯৬২ সালে বলকান অঞ্চলের মধ্য দিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যবাহী প্রধান পথটি বন্ধ হয়ে গেলেও, প্যারিস থেকে ইস্তাম্বুলগামী শেষ স্লিপার গাড়িটি ১৯৭৭ সালে ছেড়ে যায়। তবে ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেস নামের নিয়মিত রেল পরিষেবা পশ্চিম ও মধ্য ইউরোপের কিছু অংশে সীমিত আকারে চালু ছিল এবং অবশেষে ২০০৯ সালের ডিসেম্বরে ইউরোপের মূল রেল সময়সূচী থেকে ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেস নামটি চিরতরে বিলুপ্ত হয়ে যায়। পশ্চিম ও মধ্য ইউরোপের বেশিরভাগ স্থানে দ্রুতগতির রেল চালু হওয়া এবং বিমান ভ্রমণের খরচ ওঠানামা করার কারণে অনেক স্লিপার ট্রেনের পরিষেবা বন্ধ হয়ে গেছে। ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেসের মূল পরিষেবাটিও সেগুলোর মধ্যে অন্যতম।
জানুন
[সম্পাদনা]
মূল ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেস পরিষেবাটি ১৮৮৩ সালের জুন মাসে কোম্পানি আন্তার্নাসিওনাল দে ওয়াগঁ-লিত্স (সিআইডাব্লিউএল) চালু করে। প্রাথমিকভাবে এটি প্যারিস থেকে ভিয়েনা পর্যন্ত চলাচল করত। এরপর সেই বছরেরই অক্টোবর মাসে এর রুট প্যারিস থেকে ইস্তাম্বুল পর্যন্ত সম্প্রসারিত করা হয়। ট্রেনটি প্যারিসের গার দে ল’এস্ত স্টেশন থেকে যাত্রা শুরু করত। এই রুটে ১৮৮৯ সাল পর্যন্ত স্টিমার বা ফেরি পারাপারের প্রয়োজন হতো। এরপর পুরো পথটি রেলপথে সংযুক্ত হলে সেই পারাপারগুলো বিলুপ্ত হয়। ১৮৮৯ সাল থেকে ১৯৬২ সাল পর্যন্ত মূল রুটটি প্রায় অপরিবর্তিত ছিল: প্যারিস থেকে স্ট্রাসবুর্গ, মিউনিখ, ভিয়েনা, বুদাপেস্ট এবং বুখারেস্টের মধ্য দিয়ে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে (তৎকালীন কনস্ট্যান্টিনোপল) গিয়ে শেষ হতো। সেই সময়ের অনেক বড় বড় সাম্রাজ্য যেমন: ব্রিটিশ, ফরাসি, জার্মান, অস্ট্রো-হাঙ্গেরিয়ান এবং উসমানীয় সাম্রাজ্যকে এই ট্রেনটি সংযুক্ত করেছিল।
শীতল যুদ্ধের প্রায় পুরোটা সময় এই রেললাইন টিকে ছিল। এই সময় এটি লৌহ যবনিকার অন্তরালে চলে যায় এবং পরে আবার পশ্চিমা-নিয়ন্ত্রিত এলাকায় ফিরে আসে। ১৯৩১ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর একজন বিচ্ছিন্ন সন্ত্রাসী বুদাপেস্টের কাছে বিয়াতোরবাগে একটি ভায়াডাক্টে বিস্ফোরক দিয়ে ট্রেনের ওপর হামলা চালায়। ট্রেনটি তখন ভিয়েনা যাচ্ছিল। বিস্ফোরণের ফলে একটি ইঞ্জিন ও নয়টি বগি লাইনচ্যুত হয়ে ৩০ মিটার গভীর খাদে পড়ে যায়। এতে ২০ জন মারা যান এবং শত শত মানুষ আহত হন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ (১৯১৪ সালে বন্ধ হয়ে ১৯১৯ সালে আবার চালু হয়) এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের (১৯৩৯ সালে বন্ধ হয়ে ১৯৪৫ সালে আবার চালু হয়) সময় ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেসের সবগুলি রুটেই (মূল রুট, 'সিম্পলন' এবং 'আর্লবার্গ') পরিষেবা বন্ধ ছিল।
|
মার্ডার অন দ্য ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেস
১৯২৯ সালের জানুয়ারির শেষের দিকে, প্যারিস থেকে ইস্তাম্বুলগামী সিম্পলন ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেস ট্রেনটি তার যাত্রার প্রায় শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিল। কিন্তু পথে তুষারপাত এতটাই বেড়ে যায় যে ট্রেনটি জার্কেজকয় শহরের ৫০ মাইল দূরে এসে আটকে যায়। পরের পাঁচ দিন ট্রেনটি সম্পূর্ণভাবে বরফের নিচে চাপা পড়ে সেখানেই আটকে ছিল। যাত্রীরা এবং কর্মীরা চরম দুর্দশার মধ্যে পড়েছিলেন। আমরা যা জানি, সেই নির্দিষ্ট ট্রেনটিতে কোনো পলাতক খুনি, হীরা চোর, ভাগ্যবিড়ম্বিত প্রেমিক-প্রেমিকা, গুপ্তচর, খেয়ালি অভিজাত বা তাদের গম্ভীর চেহারার চাকর অথবা এডওয়ার্ডীয় যুগের পোশাক পরা এবং মাথায় ফেজ টুপি পরিহিত কোনো চরিত্র ছিল না—যাদের অভিনয়ে নিযুক্ত করা যেত একটি নাট্যাভিনয়ের জন্য। সেই যাত্রায় আগাথা ক্রিস্টি নিজেও ছিলেন না। তবে তিনি প্রায় চলেই এসেছিলেন এবং খুব দ্রুতই এই অভাবগুলি পূরণ করবেন। ১৮৯০ সালে আগাথা মিলার জন্মগ্রহণ করেন। ১৯১৪ সালে তিনি সেনা কর্মকর্তা আর্চি ক্রিস্টি-কে বিয়ে করেন। ১৯২৬ সাল নাগাদ তাদের সম্পর্ক ভেঙে যায়। সেই বছর আর্চি তার নতুন প্রেমিকার সঙ্গে সপ্তাহান্ত কাটাতে চলে যান। এর পরেই আগাথা একটি নাটকীয় অন্তর্ধানের পরিকল্পনা করেন। তিনি তার গাড়িটি বিচ হেডের খাড়া পাহাড়ের ওপরে রেখে আসেন এবং নিজে হ্যারোগেটের সোয়ান হোটেলে লুকিয়ে থাকেন। দশ দিন পর তাকে সেখানে খুঁজে বের করা হয়। ১৯২৮ সালে এই দম্পতির বিবাহবিচ্ছেদ হয় এবং আগাথা ক্রিস্টি মধ্যপ্রাচ্যের একটি দীর্ঘ সফরের জন্য অরিয়েন্ট এক্সপ্রেসে যাত্রা করেন। আর্চির সঙ্গে পরিচয় হওয়ার আগে তিনি মিশরে বেশ কয়েক মাস কাটিয়েছিলেন। এই সফরের সময় তিনি প্রত্নতত্ত্ববিদ ম্যাক্স ম্যালোন-এর সঙ্গে ইরাকে পরিচিত হন। ১৯৩০ সালে তারা বিয়ে করেন এবং পরবর্তী বছরগুলোতে আগাথা প্রায়ই ট্রেন এবং অন্যান্য পরিবহনে করে লেভান্ত ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে ভ্রমণ করতেন। তাই, বরফে আটকে থাকা ট্রেনটির ঘটনাটি কেবল সাহিত্যিক সম্ভাবনার জন্যই নয়, তার ব্যক্তিগত ভ্রমণের অভিজ্ঞতার সঙ্গেও সম্পর্কিত ছিল। ১৯৩৪ সালে ইস্তাম্বুলের পেরা প্যালেস হোটেলে বসে তিনি তার সহযাত্রীদের গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেন এবং তার পরবর্তী উপন্যাসটি লিখতে শুরু করেন। |
ঐতিহাসিক প্রধান রুটগুলি (যা উভয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ই বন্ধ ছিল) হলো:
- ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেস (১৮৮৩–১৯৬২) এর মূল রুটটি ছিল প্যারিস থেকে শুরু হয়ে স্ট্রাসবার্গ, মিউনিখ, ভিয়েনা, বুদাপেস্ট এবং বুখারেস্ট হয়ে ইস্তাম্বুলে গিয়ে শেষ হতো। ১৯৭৭ সালে এই রুটের একটি অংশকে (প্যারিস থেকে বুদাপেস্ট পর্যন্ত) আবার চালু করা হয়েছিল। কিন্তু ২০০১ সালে এটি প্যারিস–ভিয়েনা পর্যন্ত সীমিত করা হয়। পরবর্তীতে ২০০৭ সালে এটি আরও সংক্ষিপ্ত করে স্ট্রাসবার্গ–ভিয়েনা পর্যন্ত চালানো হয় এবং ২০০৯ সালে এটি পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়। প্রাথমিকভাবে সিম্পলন অরিয়েন্ট এক্সপ্রেস এর চেয়ে দীর্ঘ এই রুটটি বেছে নেওয়া হয়েছিল। এর কারণ ছিল সেই সময়ের অস্ট্রো-হাঙ্গেরিয়ান সাম্রাজ্যের একটি আইন। এই আইন অনুযায়ী অস্ট্রিয়ার ভূখণ্ডের মধ্য দিয়ে যাওয়া সব আন্তর্জাতিক ট্রেনকে রাজধানী ভিয়েনাতে থামতে হতো। দক্ষিণের পথে (যা তখন ত্রিয়েস্তে শহরের আশেপাশে কিছুটা অংশ অস্ট্রিয়ার মধ্যে ছিল) ভিয়েনা হয়ে যাওয়া সম্ভব ছিল না। ফলে অস্ট্রো-হাঙ্গেরীয় সাম্রাজ্যের পতন না হওয়া পর্যন্ত সেই পথটি ব্যবহার করা সম্ভব ছিল না।
- সিম্পলন ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেস (১৯১৯–১৯৬২) এবং ডাইরেক্ট অরিয়েন্ট এক্সপ্রেস (১৯৬২–১৯৭৭) হলো প্রধান ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেস রুটের একটি বিকল্প পরিষেবা। এটি প্যারিস থেকে যাত্রা শুরু করে লুসান, মিলান, ভেনিস, বেলগ্রেড এবং সোফিয়া হয়ে ইস্তাম্বুলে পৌঁছাত। এই রুটটি সুইজারল্যান্ডের সিম্পলন টানেল দিয়ে ইতালিতে প্রবেশ করত। এই রুটটি দীর্ঘকাল ধরে মূল ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেসের সমান্তরালভাবে চালু ছিল। এই যাত্রাপথের একটি অংশ ১৯৮২ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত 'ভেনিস সিম্পলন ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেস' নামে পুনরায় চালু করা হয়। এই ট্রেনটি ক্যালে এবং প্যারিস থেকে লুসান ও মিলান হয়ে ভেনিস পর্যন্ত যেত। তবে এই পরিষেবাটি ইস্তাম্বুল পর্যন্ত সম্প্রসারিত করা হয়নি।
- আর্লবার্গ অরিয়েন্ট এক্সপ্রেস (১৯৩০-১৯৬২) ছিল তৃতীয় একটি রুট যা লন্ডন থেকে শুরু হয়ে ক্যালে, প্যারিস, জুরিখ, ইন্সব্রুক, ভিয়েনা ও বুদাপেস্ট হয়ে চলাচল করত। এই ট্রেনটি হয় বুখারেস্টে গিয়ে শেষ হতো, নয়তো বেলগ্রেড হয়ে এথেন্সে গিয়ে এর যাত্রা শেষ হতো। এই রুটের কোনো ট্রেনই কখনো ইস্তাম্বুল পর্যন্ত যেত না। এই সময়ের মধ্যে ট্রেনটির যুক্তরাজ্য পর্যন্ত যাওয়ার জন্য জলপথে ফেরি পারাপার অপরিহার্য ছিল।
এটি ১৯৩২ সালে প্যারিস থেকে ইস্তাম্বুল পর্যন্ত মূল রুটটিকে কার্যকরভাবে বন্ধ করে দেয় (শুধুমাত্র সিম্পলন রুটটি চালু ছিল)। এরপর ১৯৭৭ সালের মধ্যে ইস্তাম্বুলে সমস্ত রেল পরিষেবা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে যায়।
১৯৭৭ সালে লা কোম্পানি আন্তার্নাসিওনাল দ্য ওয়াগঁ-লিত্স (সিআইডাব্লিউএল) ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেস থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর এর রেলগাড়িগুলির মালিকানা বিভিন্ন দেশের রেল ব্যবস্থার হাতে চলে যায়। এই রেল ব্যবস্থাগুলো ১৯৭৭ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত পশ্চিম ইউরোপে রুটের বিভিন্ন অংশ পরিচালনা করত। এছাড়াও কিছু রেলগাড়ির মালিকানা ব্যক্তিগত সংগ্রাহকদের হাতে চলে যায়। এই রেলগাড়িগুলির বেশিরভাগই এখনো টিকে আছে। ২০১৪ সালে প্যারিসের আরব ওয়ার্ল্ড ইনস্টিটিউটে ইল এতাইত উনে ফোয়া ল'অরিয়েন্ট এক্সপ্রেস (এক দেশে ছিল ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেস) নামে একটি জাদুঘর প্রদর্শনীতে এর কয়েকটি বগি একত্রিত করে দেখানো হয়েছিল। বর্তমানে, কিছু আসল ওয়াগঁ-লিত্ (শয়নকক্ষযুক্ত বগি) ব্যক্তিমালিকানাধীন ঐতিহ্যবাহী পর্যটক ট্রেনে ব্যবহার করা হয়।
ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেস বিভিন্ন চলচ্চিত্র ও সাহিত্যে বারবার এসেছে, আর এর জন্যই এটি এত বিখ্যাত। এদের মধ্যে সবচেয়ে পরিচিত হলো আগাথা ক্রিস্টি-র লেখা "মার্ডার অন দ্য ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেস" এবং ইয়ান ফ্লেমিং-এর "ফ্রম রাশিয়া উইথ লাভ"। "ফ্রম রাশিয়া উইথ লাভ" হলো জেমস বন্ড সিরিজের একটি উপন্যাস, যা শীতল যুদ্ধের সময়ে লেখা। এছাড়াও গ্রাহাম গ্রিনের লেখা দুটি উপন্যাস "স্টাম্বুল ট্রেন" এবং "ট্রাভেলস উইথ মাই আন্ট"-এও এই ট্রেনটি একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে।
প্রস্তুতি
[সম্পাদনা]
ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেসের পথটি অনেকগুলো দেশের মধ্য দিয়ে গেছে। আধুনিক রেল পরিষেবা ব্যবহার করে যদি এই পথটি অনুসরণ করতে চান, তাহলে আপনাকে একাধিক ট্রেন বদলাতে হবে। এই পথের বেশিরভাগ অংশ শেনজেন অঞ্চলের মধ্যে পড়লেও, ক্রোয়েশিয়া এবং হাঙ্গেরির দক্ষিণ ও পূর্ব সীমান্ত পার হওয়ার সময় পাসপোর্ট বা ভিসার প্রয়োজন হবে। যদিও এই পথের পূর্ব দিকের দেশগুলোর ভিসা নীতি বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই শেনজেন অঞ্চলের নীতির মতোই। অন্যদিকে আয়ারল্যান্ড-যুক্তরাজ্য ভ্রমণ এলাকার অংশ হিসাবে ইংল্যান্ডের পৃথক ভিসা এবং অভিবাসন নীতি রয়েছে।
নির্দিষ্ট ভিসা এবং অভিবাসন সংক্রান্ত বিধিনিষেধের জন্য সংশ্লিষ্ট দেশের নিবন্ধগুলি দেখুন। আপনি যদি লন্ডন থেকে যাত্রা শুরু করেন, তাহলে মনে রাখবেন যে সেখানে বেশ দীর্ঘ নিরাপত্তা/অভিবাসন/কাস্টমস যাচাই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হয়।
আপনার এই ভ্রমণটি সময় নিয়ে পরিকল্পনা করা উচিত। কারণ এই রুটে নির্দিষ্ট কিছু পরিষেবা খুব কম চলে (ইস্তাম্বুলের ট্রেনটি আসল বগি নিয়ে বছরে একবারই চলে) এবং সাধারণ ট্রেনগুলোর টিকিট দেরিতে কিনলে দাম অনেক বেশি পড়ে যায়। এছাড়াও কিছু পরিষেবার মধ্যে ভালো সংযোগ না থাকার কারণে আপনাকে আগে থেকে পরিকল্পনা করে নিতে হতে পারে। পথের মধ্যে সুযোগ পেলে আপনি বিভিন্ন শহর ঘুরে দেখার জন্যও সময় বের করে নিতে পারেন।
কিভাবে যাবেন
[সম্পাদনা]এই ভ্রমণটি প্যারিস অথবা ইস্তাম্বুল - উভয় দিক থেকেই করা যেতে পারে। তবে সাধারণত এটি পশ্চিম থেকে পূর্বে অর্থাৎ ফ্রান্সের প্যারিসের গারে দ্য ল’এস্ত থেকে শুরু করা হয়। যেহেতু প্যারিস ফ্রান্সের বিস্তৃত রেল নেটওয়ার্কের প্রধান কেন্দ্র এবং ইউরোপের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিমানবন্দরের (শার্ল দ্য গল বিমানবন্দর সিডিজি আইএটিএ) এর কেন্দ্র তাই প্যারিসে যাওয়া কোনো বড় সমস্যা নয়।
প্রবেশ করুন
[সম্পাদনা]ঐতিহ্যবাহী পরিষেবা
[সম্পাদনা]
বর্তমানে বেলমন্ড সংস্থা বছরে একবার পর্যটকদের জন্য একটি বিশেষ ট্রেন পরিষেবা পরিচালনা করে, যা "ভেনিস সিম্পলন ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেস" নামে পরিচিত। এই ট্রেনটি প্যারিস থেকে শুরু হয়ে বুদাপেস্ট, সিনাইয়া, বুখারেস্ট হয়ে ইস্তাম্বুল পর্যন্ত যায়। এটি একদিকে যেমন খুবই ব্যয়বহুল একটি যাত্রা (একমুখী ভ্রমণের জন্য প্রতিজনের খরচ ৯০০০ মার্কিন ডলারেরও বেশি), তেমনই একটি ধীরগতির ভ্রমণ (প্যারিস থেকে ইস্তানবুল পৌঁছাতে মোট ছয় দিন সময় লাগে, যার মধ্যে বুদাপেস্টে একরাতের হোটেল অবস্থান ও শহর ভ্রমণ অন্তর্ভুক্ত)। এই ট্রেনটি বিলাসিতা এবং আরামের এক অনন্য অভিজ্ঞতা প্রদান করে। এতে ১৯২০ এবং ১৯৩০-এর দশকে ব্যবহৃত মূল ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেসের কিছু বগি ব্যবহার করা হয়, যা এই যাত্রাকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে।
একই কোম্পানি আরও কিছু রেল পরিষেবা পরিচালনা করে, যা লন্ডন থেকে প্যারিস হয়ে ভেনিস বা বার্লিনের মতো অন্যান্য শহরে যায়। এই যাত্রাগুলো ঋতুভিত্তিকভাবে পরিচালিত হয়। যদিও এই ট্রেনগুলোতে ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেসের বগি ও ব্র্যান্ডিং ব্যবহার করা হয়, তবে এগুলোর কোনোটিই ঐতিহাসিক ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেসের মূল রুটের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত নয়।
একাধিক আধুনিক ট্রেন দ্বারা
[সম্পাদনা]পশ্চিম দিক থেকে শুরু করলে, যাত্রার শুরুটা বেশ সহজ। এই রুটটি অনেক দেশের দ্রুতগতির রেল পরিষেবার কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত এবং প্রকৃতপক্ষে প্যারিস-বুদাপেস্ট রুটটিকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন কর্তৃক "ম্যাজিস্ট্রালে ফর ইউরোপ" হিসাবে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। এখানে রাতের ট্রেন পরিষেবাও রয়েছে। যদিও মূল পরিষেবাটি আধুনিক দ্রুতগতির ছিল না, তবে এটি ইচ্ছাকৃতভাবে ধীরগতিরও ছিল না, তাই উভয় ধরণের যাত্রাই "আধুনিক সমতুল্য"-এর প্রতি আপনার ধারণার সাথে মানানসই হতে পারে।
ইউরোস্টারের মাধ্যমে লন্ডন থেকে প্যারিসে সরাসরি ট্রেন পরিষেবা রয়েছে। প্যারিস থেকে প্রতিদিন স্ট্র্যাসবার্গে বেশ কয়েকটি ট্রেন ছেড়ে যায় এবং সেখান থেকে টিজিভি (এবং জার্মানিতে আইসিই) এর মাধ্যমে মিউনিখে সংযোগকারী পরিষেবা রয়েছে। এছাড়াও প্যারিস থেকে মিউনিখে প্রতিদিন একটি সরাসরি আইসিই/টিজিভি চলাচল করে। মিউনিখ থেকে ডিবি এবং ওবিবি (অস্ট্রিয়ান রেলওয়ে) উভয়ই ভিয়েনাতে সংযোগ পরিষেবা দেয়, যা স্লোভাকিয়ার রাজধানী ব্রাতিস্লাভা থেকে মাত্র ৬০ কিলোমিটার (ট্রেনে ১ ঘন্টা) দূরে। এখান থেকে পূর্ব দিকে গেলে ট্রেনের গতি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়, তবে রাতের ট্রেন (স্লিপার কোচ) এখনও একটি সাধারণ দৃশ্য, ফলে আপনি চাইলে দিনের বেলার ভ্রমণের পরিবর্তে রাতের ট্রেনে যাত্রা করতে পারেন।
পূর্ব দিকে আধুনিক বসফরাস এক্সপ্রেস পরিষেবাটি বুখারেস্ট বা সোফিয়া থেকে ইস্তাম্বুলে যায়। এই ট্রেনে আসল ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেস এর মতো বিলাসিতা নেই এবং মূল ট্রেনের একটি প্রধান সুবিধাও এতে অনুপস্থিত—তা হলো একটি ব্যক্তিগত মালিকানাধীন ওয়াগন-লিট স্লিপার কোচকে এক দেশের রেল ব্যবস্থা থেকে অন্য দেশের ট্রেনে বা ইঞ্জিনে নির্বিঘ্নে স্থানান্তর করার ক্ষমতা। ফলে যাত্রীরা আগের মতো প্যারিস থেকে ইস্তাম্বুল পর্যন্ত পুরো পথ একই কামরায় থেকে যাত্রা সম্পন্ন করতে পারেন না।
আধুনিক রেল ব্যবস্থায় প্যারিস থেকে ইস্তাম্বুল যেতে তিন বা চার রাত লাগে (এবং এর জন্য একাধিক ট্রেন পরিবর্তন করতে হয়)। প্রতিটি যাত্রাপথের টিকিট (অথবা ইন্টাররেলের মতো একটি পাস) আলাদাভাবে কিনতে হয়; প্যারিস (বা লন্ডন) থেকে ইস্তাম্বুল পর্যন্ত কোনো একক টিকিট নেই। ব্রিটেন থেকে অস্ট্রিয়া পর্যন্ত সমস্ত রেলওয়ে ব্যবস্থায় (অর্থাৎ এই দুটি এবং জার্মানি ও ফ্রান্স) অগ্রিম টিকিট কেনার জন্য বিভিন্ন ছাড়ের ব্যবস্থা রয়েছে (প্রায়শই শুধু একটি নির্দিষ্ট ট্রেনের জন্য সীমাবদ্ধ এবং ট্রেন মিস করলে সীমিত বা কোনো ফেরত পাওয়ার সুযোগ থাকে না)। তাই শেষ মুহূর্তে টিকিট কেনা বেশ ব্যয়বহুল হতে পারে, বিশেষ করে দীর্ঘ দূরত্বের জন্য। তবে আপনি যদি তারিখের ব্যাপারে নমনীয় হন এবং মঙ্গলবার দুপুর ১টায় যাত্রা করতে ইচ্ছুক থাকেন, তাহলে আপনি মাত্র ১৯ ইউরোতেও অগ্রিম আন্তঃদেশীয় টিকিট পেতে পারেন (কিছু নির্দিষ্ট ছাড় থাকলে আরও কম দামে)। পূর্ব ইউরোপের দেশগুলিতে ২০২0-এর দশকের শুরুর দিকে ট্রেনের ধরন বা টিকিট কেনার সময়ের ওপর ভিত্তি করে ভাড়ার তেমন পার্থক্য ছিল না, তবে সেখানেও এখন অগ্রিম টিকিট কেনার সুযোগ (এবং আরও ব্যয়বহুল মূল ভাড়া) ক্রমশ প্রচলিত হয়ে উঠছে।
বুখারেস্ট হয়ে
[সম্পাদনা]টিজিভি ট্রেনে প্যারিস-স্ট্র্যাসবার্গ-মিউনিখ যান; তারপর পূর্ব দিকে বুদাপেস্টের দিকে এগিয়ে চলুন। বুদাপেস্ট থেকে বুখারেস্ট যাওয়ার জন্য একটি ট্রেন আছে। বুখারেস্ট থেকে আপনি বসফরাস এক্সপ্রেসে চড়ে ইস্তাম্বুল যেতে পারেন।
এটি মূল রুটের সবচেয়ে কাছাকাছি একটি পথ। তবে এই পথে চার দিন সময় লাগে, কারণ পূর্বদিকের কিছু ট্রেনের সংযোগের সময়সূচি ঠিকমতো মেলে না।
বেলগ্রেড হয়ে
[সম্পাদনা]টিজিভি ট্রেনে প্যারিস-স্ট্র্যাসবার্গ-মিউনিখ যান। এরপর মিউনিখ থেকে জাগরেব এবং তারপর বেলগ্রেড যান। বেলগ্রেড ও সোফিয়া থেকে আপনি বলকান এক্সপ্রেসে উঠতে পারেন, যা মূল বসফরাস এক্সপ্রেসের একটি শাখা এবং ইস্তাম্বুল পর্যন্ত যায়।
পূর্বদিকের কিছু ট্রেনের সংযোগের সময়সূচি ঠিকমতো মেলে না।
অপটিমা এক্সপ্রেস
[সম্পাদনা]যথেষ্ট ব্যয়বহুল ঐতিহ্যবাহী ট্রেন এবং একাধিক আধুনিক ট্রেনের সংযোগের একটি সংমিশ্রণ হলো অপটিমা এক্সপ্রেস। এটি একটি কার ট্রেন যা ভিলাখ (অস্ট্রিয়া) এবং তুরস্কের ইউরোপীয় অংশের এদির্নের মধ্যে চলাচল করে। এই যাত্রায় ৩৩ ঘন্টা সময় লাগে এবং আপনি আপনার নিজের গাড়ি নিয়েও ট্রেনে উঠতে পারেন, কিংবা শুধুমাত্র যাত্রী হিসেবেও বুক করতে পারেন। গ্রীষ্মের মরসুমে (প্রায় এপ্রিল থেকে নভেম্বর) এটি সপ্তাহে সর্বোচ্চ দুইবার চলাচল করে। ব্যক্তিগত গাড়ি ছাড়া ভ্রমণকারী প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ছয়-শয্যার কামরায় একটি বার্থের একক টিকিটের মূল্য ১৪৯ ইউরো থেকে শুরু হয়। অবশ্য পুরো প্যারিস-ইস্তাম্বুল ভ্রমণ করার জন্য আপনাকে বাকি অংশের ট্রেনের টিকিটও ব্যবস্থা করতে হবে, যা প্যারিস-ভিলাখ অংশে সহজ হলেও এদির্নে-ইস্তাম্বুল অংশে অপ্রত্যাশিতভাবে কঠিন হতে পারে।
পরবর্তী যাত্রা
[সম্পাদনা]

মূল ভ্রমণপথটি শেষ হতো সিরকেজি টার্মিনালে, যা ১৮৯০ সালে ইস্তাম্বুলে ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেসের প্রধান ইউরোপীয় স্টেশন হিসেবে নির্মিত হয়েছিল। এটি ইউরোপীয় প্রাচ্যবাদের একটি বিখ্যাত উদাহরণ। এর স্থপতি ইচ্ছাকৃতভাবে এমন এক নকশা বেছে নিয়েছিলেন যা আগত যাত্রীদের মনে "প্রাচ্যের" অনুভূতি জাগিয়ে তোলে। ২০২৪ সাল পর্যন্ত শুধুমাত্র ইউ৩ লাইট রেল ট্রেনগুলো নিয়মিত এই স্টেশন ব্যবহার করে, কিন্তু এর কেন্দ্রীয় অবস্থানের কারণে স্থানীয় ট্রাম এবং কমিউটার রেল (যা এই স্থানে মাটির অনেকটা গভীরে চলে) দিয়ে সহজে এখানে পৌঁছানো যায়। স্টেশনের ভেতরে ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেস আমলের জিনিসপত্র নিয়ে একটি ছোট্ট এক কক্ষের জাদুঘরও আছে।
স্টেশন থেকে গোল্ডেন হর্নের ওপারে পেরার পেরো প্যালেস হোটেল (১৮৯২ সালে শহরের প্রথম ইউরোপীয় ধাঁচের হোটেল হিসেবে তৈরি করা হয়েছিল, যেন ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেস থেকে নামা যাত্রীরা নিজেদের দেশে থাকা পশ্চিমা বিলাসবহুল জীবনযাপনের অভাব অনুভব না করে) এর একটি ঘর আগাথা ক্রিস্টির সম্মানে সংরক্ষণ করা হয়েছে, যেখানে তিনি মার্ডার অন দ্য ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেস লিখেছিলেন।
তুরস্কের একটি নবীন ও সম্প্রসারমান উচ্চ গতির রেল ব্যবস্থা রয়েছে, কিন্তু ইস্তাম্বুল এলাকার রেল নেটওয়ার্কের বড় ধরনের পুনঃনকশার কারণে তুরস্কের এশিয়ান গন্তব্যগুলোর সব ট্রেন এখন সোগুতলুচেসমে থেকে ছাড়ে। এটি ঐতিহ্যবাহী কেন্দ্র থেকে কিছুটা দূরে এশিয়ান অংশের একটি শহরতলি। তবুও ক্রস-সিটি কমিউটার পরিষেবার কারণে শহরের অন্য প্রান্ত থেকে এখানে পৌঁছানো বেশ সহজ। আধুনিক একটি উঁচু সেতুর উপর নির্মিত সোগুতলুচেসমে স্টেশনটি অবশ্যই সিরকেজি বা হায়দারপাশার (ঐতিহ্যবাহী এবং ভবিষ্যতের জন্য পরিকল্পিত এশিয়ান টার্মিনাল স্টেশন) জাঁকজমকের তুলনায় অনেকটাই ম্লান, তবে আপাতত এটি কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। ওয়াইএইচটি পরিষেবাগুলো আঙ্কারা, এস্কিহির এবং কোনিয়াসহ আরও কয়েকটি গন্তব্যে যায়, এবং এই নেটওয়ার্কের আরও সম্প্রসারণের পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
২০০৩ সালের আগে কোম্পানি আন্তার্নাসিওনাল দে ওয়াগঁ-লিত্স দ্বারা পরিচালিত অন্য একটি প্রথম সারির যাত্রীবাহী ট্রেনে স্থানান্তর করা সম্ভব ছিল, যার নাম ছিল টরাস এক্সপ্রেস (তুর্কি: তোরোস এক্সপ্রেসি)। এই ট্রেনটির কথা মার্ডার অন দ্য ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেস উপন্যাসের শুরুর অধ্যায়ে সংক্ষেপে উল্লেখ করা আছে। এই ট্রেনটি ইস্তাম্বুলের এশিয়ান টার্মিনাল থেকে সিরিয়ার মধ্য দিয়ে বাগদাদ পর্যন্ত যেত। এর স্বর্ণযুগে মধ্যপ্রাচ্যের নানা প্রান্তে এমনকি কায়রো পর্যন্ত সংযুক্ত পরিষেবা চালু ছিল। যার ফলে এটি পুরাতন বিশ্বের তিনটি মহাদেশকে সংযুক্ত করত। কিন্তু ইরাকে মার্কিন আগ্রাসনের কারণে এই পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। ২০১২ সালে রুটটির তুরস্কের অভ্যন্তরীণ অংশটি মানসম্পন্ন তুর্কি বগি ব্যবহার করে আংশিকভাবে পুনরায় চালু করা হয়েছিল, যা কোনিয়া ও আদানার মধ্যে চলাচল করত। এই ট্রেনটি যে পর্বতশ্রেণীর নামে এর নামকরণ করা হয়েছে তার মধ্য দিয়ে বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকের বেশ কয়েকটি সুড়ঙ্গ ও উঁচু রেলসেতু পার হতো। যদিও পূর্ববর্তী রুটের উত্তরাংশটি এখন তুর্কি উচ্চ গতির রেল দ্বারা মোটামুটিভাবে অনুসরণ করা যায়, তবে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ইরাক এবং সিরিয়া উভয় স্থানে চলমান সংঘাতের কারণে দক্ষিণে পরিষেবা পুনরায় চালু হওয়ার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। এই রুটের একটি সংস্করণ দেখতে ইস্তাম্বুল থেকে কায়রো পর্যন্ত স্থলপথের ভ্রমণ পরিকল্পনা দেখুন।
ইস্তাম্বুল থেকে স্থলপথে নতুন দিল্লি পর্যন্ত যাওয়া তাত্ত্বিকভাবে সম্ভব। এটি একটি স্বতন্ত্র দীর্ঘ যাত্রা হিসেবে করা যেতে পারে, অথবা জুল ভার্নের অ্যারাউন্ড দ্য ওয়ার্ল্ড ইন এইটি ডেজ-এর মতো স্থলপথে বিশ্ব ভ্রমণের একটি অংশ হিসেবেও এই যাত্রা করা যায়। তবে, মধ্যপ্রাচ্য এবং মধ্য এশিয়ার বেশিরভাগ অংশে প্রতিকূল রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে এই ধরনের ভ্রমণ যথেষ্ট জটিলতাপূর্ণ।
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]- রেল ভ্রমণ
- ইউরোপে রেল ভ্রমণ
- অতি-সাইবেরীয় রেলপথ, একটি একই ধরনের বিখ্যাত দীর্ঘ দূরত্বের স্লিপার ট্রেন যাত্রা যা এখনও ট্রেন পরিবর্তন না করেই করা সম্ভব।
{{#assessment:ভ্রমণপথ|ব্যবহারযোগ্য}}