বিষয়বস্তুতে চলুন

29.333348.0000
উইকিভ্রমণ থেকে

কুয়েত শহর (আরবি: مدينة الكويت মাদীনাত আল-কুয়েত) হলো কুয়েতের রাজধানী।

কুয়েত শহর সুউচ্চ অফিস ভবন, বিলাসবহুল হোটেল, প্রশস্ত রাজপথ এবং পরিচ্ছন্ন পার্ক ও বাগান দিয়ে গঠিত একটি ব্যস্ত মহানগরী। এখানকার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা হলো কুয়েত টাওয়ার্স। তবে কুয়েত শহর ভ্রমণের জন্য খুব একটা আকর্ষণীয় নয়, কারণ এর অধিকাংশ স্থাপত্যশৈলী এবং সামগ্রিক পরিবেশে ধুলোবালিপূর্ণ হওয়ায় একে অনেকটাই মলিন মনে হয়।

জানুন

[সম্পাদনা]

কুয়েত শহরের সমুদ্রবন্দর তেলবাহী জাহাজ, পণ্যবাহী জাহাজ এবং অসংখ্য প্রমোদতরী দ্বারা ব্যবহৃত হয়।

দিগনির্দেশ

[সম্পাদনা]

প্রধান আবাসিক ও বাণিজ্যিক এলাকা হলো সালমিয়া এবং হাওয়ালি। প্রধান শিল্পাঞ্চল হলো আল-আসিমাহ গভর্নরেটের অন্তর্গত শুওয়াইখ। প্রধান প্রাসাদগুলির মধ্যে রয়েছে কুয়েত শহরের পুরোনো অংশে অবস্থিত আস-সীফ প্রাসাদ যেখানে আমির রাষ্ট্রের দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনা করেন। সরকারের সদর দফতর বায়ান প্রাসাদে অবস্থিত আর আমিরের আবাসস্থল হলো দার সালওয়া।

কীভাবে যাবেন

[সম্পাদনা]

বিমানে করে

[সম্পাদনা]

সম্পূর্ণ তথ্যের জন্য মূল কুয়েত নিবন্ধটি দেখুন। এক্সপ্রেস বাস এক্স৩ বিমানবন্দরকে শহরের কেন্দ্রের সঙ্গে সংযুক্ত করে এবং এটি প্রতি ঘণ্টায় এমনকি রাতে-ও চলাচল করে। টিকিট বাসেই কেনা যায় এবং মূল্য ১ কুয়েতি দিনার।

  • 1 কুয়েত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (১৬ কিমি (৯.৯ মা) কুয়েত সিটির দক্ষিণে)। কেডব্লিউআই  আইএটিএ (Q527157)

গাড়িতে করে

[সম্পাদনা]

বাসে করে

[সম্পাদনা]

নৌকায় করে

[সম্পাদনা]

ঘুরে দেখুন

[সম্পাদনা]
মানচিত্র
কুয়েত শহরের মানচিত্র

ট্যাক্সি করে

[সম্পাদনা]

আপনার নিজের গাড়ি না থাকলে ট্যাক্সিই হলো যাতায়াতের সবচেয়ে কার্যকরী মাধ্যম। এখানে ট্যাক্সিতে মিটার সাধারণত ব্যবহার করা হয় না (কারণ এর সরকারি ভাড়া অনেক বছর ধরে পরিবর্তন করা হয়নি), তাই গাড়িতে ওঠার আগে ভাড়া ঠিক করে নেওয়া উচিত। এখানে মূলত তিন ধরনের ট্যাক্সি রয়েছে:

কল ট্যাক্সি (হোটেল ট্যাক্সি নামেও পরিচিত) সম্পূর্ণ সাদা রঙের হয় এবং এগুলোর দরজায় কোম্পানির স্টিকার লাগানো থাকে। এগুলো সাধারণত বড় হোটেলগুলোর আশেপাশে অপেক্ষা করে। বেশিরভাগ সময় ফোনের মাধ্যমে বুক করা হয়, ট্যাক্সিগুলো সাধারণত আরামদায়ক এবং ঝামেলা ছাড়াই যাত্রীকে গন্তব্যে পৌঁছে দেয়, তবে ভাড়া তুলনামূলক বেশি। শহরের ভেতরে বেশিরভাগ ভ্রমণের জন্য সাধারণত ৩ কুয়েতি দিনার ভাড়া নেওয়া হয় এবং বিমানবন্দরে যাতায়াতের জন্য ৫ কুয়েতি দিনার লাগে। তবে আপনি যদি রাস্তায় সরাসরি কোনো ট্যাক্সি ধরতে পারেন (পর্যবেক্ষণকারী কর্মকর্তার নজরের আড়ালে) তাহলে আপনি কিছুটা ছাড়ও পেতে পারেন। কুদস ট্যাক্সি +৯৬৫ ২৪১-৩৪১৪ এখানকার বৃহত্তম সেবাদাতাদের মধ্যে অন্যতম।

এয়ারপোর্ট ট্যাক্সি সাধারণত বড় আকারের আমেরিকান গাড়ি, যাদের জন্য বিমানবন্দরে আলাদা উঠানামার পথ রয়েছে। এদের গাড়ির ভেতরে নির্ধারিত ভাড়ার তালিকা টাঙানো থাকে এবং ভাড়া স্থির থাকে। তবে অনেক চালক প্রায়ই নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশি ভাড়া চাইতে পারেন।

কমলা ট্যাক্সি আসলে সাদা-ও-বেইজ রঙের হয়, ছাদের উপর "TAXI" চিহ্ন থাকে এবং হলুদ নাম্বারপ্লেট ব্যবহার করে। এগুলো কুয়েতের রাস্তায় যাত্রী খুঁজে বেড়ায়। এদের ভাড়া দর কষাকষি করে ঠিক করা হয়—সংক্ষিপ্ত দূরত্বে সাধারণত ১ কুয়েতি দিনার, আর শহরজুড়ে দীর্ঘ যাত্রার জন্য প্রায় ২ কুয়েতি দিনার। এগুলো সহজেই পাওয়া যায়, এমনকি রাস্তা পার হওয়ার সময়ও প্রায়ই হর্ন বাজিয়ে যাত্রী ডাকতে চেষ্টা করে। তবে চালকরা প্রায়ই যাত্রার খরচ বাড়ানোর চেষ্টা করতে পারে, যানজট থাকলে বা আপনি গন্তব্য স্পষ্টভাবে না জানালে বিরক্তি প্রকাশ করে এবং গন্তব্যে পৌঁছানোর পর তারা আরও বেশি ভাড়া চাইতে পারে। সাধারণত এ কৌশল প্রয়োগের আগে তারা অভিযোগ করতে শুরু করে—যেটি সহজেই বোঝা যায়। কিছু কমলা ট্যাক্সি নির্দিষ্ট রুটেই চলাচল করে, আর এই ক্ষেত্রে যাত্রীদের অন্যদের সঙ্গে ট্যাক্সি ভাগাভাগি করে (ভাড়াসহ) যাত্রা করতে হয়।

বাসে করে

[সম্পাদনা]

কুয়েত পাবলিক ট্রান্সপোর্ট কোম্পানি (কেপিটিসি) এবং সিটি বাস কুয়েত শহরের ভেতরে ও আশেপাশে বাস পরিচালনা করে, যেখানে শহরের ভেতরের যাত্রার জন্য ফ্ল্যাট ৩০০ ফিলস এবং দীর্ঘ দূরত্বের জন্য ফ্ল্যাট ৩৫০ ফিলস ভাড়া নির্ধারিত। উভয় কোম্পানি একই রুটে চলাচল করে, তাই কেপিটিসি-এর ৯৯৯ বাস আপনাকে সিটিবাসের ৯৯৯ নম্বর বাসের মতোই একই জায়গায় একই ভাড়ায় নিয়ে যাবে। তবে বাস ছাউনিগুলো সাধারণত সাধারণ মানের, সময়সূচি অনিয়মিত এবং তথ্যের অভাব থাকে, তাই যদি আপনার কোনো তাড়া থাকে এবং নগদ টাকার অভাব না থাকে, ট্যাক্সির বিকল্প হিসেবে এটি ভালো নয়। যারা ভ্রমণ পছন্দ করেন তাদের জন্য ব্যক্তিগত মালিকানাধীন সিটিবাসের ওয়েবসাইটে রুটের একটি হালনাগাদ তালিকা রয়েছে,অন্যদিকে কেপিটিসি-এর ওয়েবসাইটটি শুধুমাত্র আরবিতে উপলব্ধ।

প্রয়োজনীয় বাস রুটগুলো হলো:

  • ১৩: বিমানবন্দর (কেডব্লিউআই) থেকে মিরকুয়াব (শহরের কেন্দ্র) পর্যন্ত যায়, সময় লাগে ১ ঘণ্টা।
  • ১৫, ১৬, ৯৯৯: মিরকুয়াব থেকে দক্ষিণ দিকে উপকূলের সমান্তরালভাবে চলে। ৯৯৯ এবং ১৬ ফাহাহিল পর্যন্ত যায়।

কী দেখবেন

[সম্পাদনা]
কুয়েত টাওয়ার্স থেকে দেখা অনেক দৃশ্যের মধ্যে একটি।
সেইফ প্যালেসের সবচেয়ে ভালো দৃশ্য যা আপনি পেতে পারেন।
কুয়েত শহরের কর্মব্যস্ত মাছের বাজার
  • 1 কুয়েত টাওয়ার্স, শার্ক, +৯৬৫-১৮২০০০১ সকাল ৯টা-রাত ১১টা পর্যন্ত খোলা কুয়েতের অনানুষ্ঠানিক প্রতীক, যা এখানকার পতাকা ছাড়া আর সবকিছুতে দেখা যায়, এটি কুয়েতের প্রধান আকর্ষণ। সুইডিশদের নকশায় যুগোস্লাভরা এটি তৈরি করেছিল এবং ১৯৭৯ সালে এটি উদ্বোধন করা হয়। কাছ থেকে দেখলে এর গোলাকার অংশগুলো বেশ আকর্ষণীয় লাগে, কারণ এগুলি রঙিন গোলাকার প্লেট দিয়ে তৈরি একটি সুন্দর পোলকা-ডট প্যাটার্নে আবৃত। প্রথম টাওয়ারটি ১৭৮ মিটার (৫৮৩ ফুট) উঁচু। এর মধ্যে ১২৩ মিটার (৪০৩ ফুট) উচ্চতায় একটি পর্যবেক্ষণ গোলক আছে, যেখানে একটি ঘূর্ণায়মান প্ল্যাটফর্মও রয়েছে। ইরাকি আগ্রাসনে টাওয়ারের যে ক্ষতি হয়েছিল তার ছবি দ্বিতীয় স্তরের সিঁড়ির নিচে দেখতে ভুলবেন না। পর্যবেক্ষণ গোলকের ভেতরে একটি ছোট বারও আছে, যেখানে কোমল পানীয় এবং হালকা খাবার পাওয়া যায়। আপনি ঘূর্ণায়মান পর্যবেক্ষণ প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে এগুলো উপভোগ করতে পারেন। নিচের গোলাকার অংশে ওফোক রেস্তোরাঁ (৮২ মিটার বা ২৭০ ফুট উচ্চতায়) আছে, সেখানে প্রতিদিন সকালের নাস্তা (শুধুমাত্র মহিলাদের জন্য), দুপুরের খাবার এবং রাতের খাবারের ব্যবস্থা রয়েছে। দ্বিতীয় টাওয়ারটি ১৪৫.৮ মিটার (৪৭৮ ফুট) উঁচু। এটি পানি সংরক্ষণের জন্য ব্যবহৃত হয় এবং জনসাধারণের জন্য এটি উন্মুক্ত নয়। তৃতীয় টাওয়ারটিতে কোনো গোলাকার অংশ নেই; এটি মূলত রাতে অন্য দুটি টাওয়ারকে আলোকিত করার জন্য ব্যবহৃত হয়। সূর্যাস্তের সময় এটি ভ্রমণের জন্য সেরা সময়, তবে সেসময় এখানে সবচেয়ে বেশি ভিড় হয়। ২ কুয়েতি দিনার (Q1335640)
  • লিবারেশন টাওয়ার। এটি বিশ্বের অন্যতম উঁচু একটি টেলিকমিউনিকেশন টাওয়ার। পর্যটকদের এখন আর টাওয়ারের ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না; তবে ২৫শে ফেব্রুয়ারি জাতীয় দিবসে দর্শনার্থীদের প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয় বলে মনে হয়।
  • 1 জাতীয় জাদুঘর (গালফ স্ট্রিটে ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি এবং গ্র্যান্ড মসজিদের মাঝামাঝি স্থানে অবস্থিত)। সোমবার-বৃহস্পতিবার সকাল ৮:৩০ থেকে দুপুর ১২:৩০ এবং বিকাল ৪:৩০ থেকে সন্ধ্যা ৭:৩০ পর্যন্ত; শুক্রবার ও শনিবার সকাল ৮:৩০ থেকে সকাল ১১:০০ এবং বিকাল ৪:৩০ থেকে সন্ধ্যা ৭:৩০ পর্যন্ত; শীতকালে বিকেলের সময়: বিকাল ৪:০০ থেকে সন্ধ্যা ৭:০০ পর্যন্ত যুদ্ধের সময় এই জাদুঘর থেকে অনেক প্রাচীন নিদর্শন চুরি হয়ে যায়– তবে এর কিছু অংশ সংস্কার করা হয়েছে এবং এখন জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত। একটি প্রদর্শনীতে ফাইলাকা দ্বীপে পাওয়া প্রাচীন নিদর্শনগুলো প্রদর্শিত হয় এবং আরেকটি প্রদর্শনীতে পুরোনো কুয়েতের একটি সৌক (বাজার)-এর আদলে তৈরি করা হয়েছে। এখানে একটি পুরোনো কুয়েতি বৌম (ধৌ বা এক প্রকার পালতোলা নৌকা) প্রদর্শনের জন্য রয়েছে। প্রবেশ বিনামূল্যে
  • সাদু হাউস। এটি জাতীয় জাদুঘরের ঠিক পাশেই অবস্থিত। প্রবাল ও জিপসাম দিয়ে তৈরি এই বাড়িটি বেদুইন সমাজের শিল্প ও কারুশিল্প সংরক্ষণের জন্য একটি সাংস্কৃতিক জাদুঘর হিসেবে ব্যবহৃত হয়। বেদুইনদের তৈরি জিনিসপত্র কেনার জন্য এটি একটি আদর্শ জায়গা।
  • বায়ত আল-বদর: এটি জাতীয় জাদুঘরের ঠিক পাশেই অবস্থিত। এটি পুরনো কুয়েতি স্থাপত্যে নির্মিত কয়েকটি বাড়ির মধ্যে অন্যতম। ২০১০ সালের প্রথম দিকে এটি সাময়িকভাবে বন্ধ ছিল বলে মনে হয়, তবে এর পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়াটাও আনন্দদায়ক।
  • 2 সীফ প্যালেস (গ্র্যান্ড মসজিদ এবং জাতীয় জাদুঘরের মধ্যবর্তী স্থানে)। ১৮৯৬ সালে নির্মিত এই প্রাসাদের অভ্যন্তরে মূল ইসলামিক মোজাইক টাইলসের কাজ রয়েছে, যা ইরাকি দখলের সময় ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। যদিও আপনার ভিতরে প্রবেশের অনুমতি নেই তবুও পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়া এবং প্রাসাদের বিশাল উদ্যান দেখার অভিজ্ঞতা এখনও আকর্ষণীয় (Q3564897)
  • 3 জাতীয় পরিষদ (জাতীয় জাদুঘরের পাশে)। জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত নয় জাতীয় পরিষদ হলো কুয়েতের সংসদ ভবন এবং এটি দেশের কয়েকটি চমৎকার স্থাপত্যকলার অন্যতম একটি নিদর্শন। (Q15156679)
  • 4 গ্র্যান্ড মসজিদ সীফ প্যালেসের উল্টো দিকে এবংজাতীয় জাদুঘরের প্রায় ৪০০ মিটার (১,৩০০ ফুট) পূর্বে এটি অবস্থিত। পর্যটকদের জন্য বন্ধুত্বপূর্ণ কুয়েতিরা এখানে গাইডেড ট্যুরের ব্যবস্থা করে থাকেন। মহিলারা প্রবেশের জন্য মসজিদ থেকে উপযুক্ত পোশাক ধার নিতে পারেন। আপনি যখন মসজিদে যাবেন তখন নিরাপত্তারক্ষী সম্ভবত আপনাকে ভ্রমণের জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় জানাবেন। সেই সময় ফিরে এলে আশা করা যায় কিছু গাইডকে পাওয়া যাবে। (Q1432832)
  • যুদ্ধ জাদুঘর (গালফ স্ট্রিটের শেষপ্রান্তে শুয়াইক বন্দরের নিকটে কুয়েত পেট্রোল কোম্পানির সদর দপ্তরের বিপরীতে একটি আবাসিক এলাকায় অবস্থিত।)। যুদ্ধ জাদুঘরটিতে ইরাকি আক্রমণের সময় কুয়েতের চরম ভয়ঙ্কর দৃশ্য উপস্থাপন করা হয়েছে।
  • 5 আল শহীদ পার্ক, +৯৬৫-২২৪৬১২৬৭, ইমেইল: কুয়েতের বৃহত্তম শহুরে উদ্যান এবং একটি গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। এখানে আধুনিক স্থাপত্য এবং নান্দনিক শিল্পকর্মের সমাহার দেখা যায়। পার্কটিতে একটি জাদুঘর, উদ্ভিদ উদ্যান, বিভিন্ন স্মৃতিস্তম্ভ, ফোয়ারা, জগিংয়ের জন্য নির্দিষ্ট পথ এবং আরও অনেক কিছু রয়েছে। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে এখানে ছোট ছোট অস্থায়ী দোকান ও বাজার বসে, যেখানে স্থানীয় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা তাদের পণ্য ও হালকা খাবার বিক্রি করে। এটি হাঁটাচলার জন্য চমৎকার একটি জায়গা, যেখানে আপনি কুয়েতিদের অবসর এবং পারিবারিক জীবনের নির্মল আনন্দ উপভোগ করতে পারবেন। তাছাড়া এখানে রোদ থেকে বাঁচতে প্রচুর ছায়াযুক্ত স্থানও রয়েছে। (Q39049812)
  • মাছের বাজার (শার্ক মলের ঠিক পশ্চিমে)। সম্ভবত কুয়েতে দেখার মতো সবচেয়ে আকর্ষণীয় স্থান হলো এই মাছের বাজার। এটি একটি বিশাল এবং কর্মচঞ্চল ভবন, যেখানে সারি সারি ২৭৪টি (!) কাউন্টার রয়েছে এবং প্রতিটি কাউন্টারেই স্তূপ করে রাখা আছে তাজা মাছ। ভবনের অভ্যন্তরটি অত্যন্ত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা হয়; কর্মীরা নিয়মিতভাবে মেঝে ধুয়ে পরিষ্কার করেন। একই ভবনে একটি ছোট ফল ও সবজির বাজারও রয়েছে। অনেকেই এই বাজার থেকে মাছ কিনে পাশের রেস্তোরাঁয় দিয়ে দেন, যেখানে সঙ্গে সঙ্গেই তা রান্না করে দেওয়া হয়।
  • পুরাতন জাহাজ বন্দর, সৌক শার্ক মাছ বাজারের পাশে প্রায় অর্ধশত ঐতিহ্যবাহী কাঠের তৈরি 'ধৌ' (নৌকা) একসাথে সারিবদ্ধভাবে বাঁধা আছে। এটি বেড়া দিয়ে ঘেরা হলেও আপনি যেকোনো সময় ছবি তুলতে পারবেন। প্রায়ই এর ফটক খোলা থাকে, ফলে জেলেদের তাদের দৈনন্দিন কাজ করতে দেখা যায়। সূর্যাস্তের সময় এর দৃশ্য খুবই মনোরম হয়।
  • 6 বৈজ্ঞানিক কেন্দ্র (সালমিয়ার গালফ স্ট্রিটের পাশে সমুদ্রের ধারে)। বৈজ্ঞানিক কেন্দ্র হলো একটি পরিবার-বান্ধব বিনোদন কেন্দ্র। এখানে প্রকৃতি বিষয়ক চলচ্চিত্র দেখানোর জন্য একটি ত্রিমাত্রিক (থ্রিডি) সিনেমা হল এবং একটি অ্যাকুরিয়াম রয়েছে। ঐতিহ্যবাহী বউম (ধৌ বা নৌকা) বাইরে প্রদর্শিত হয়। (Q6448876)
  • 7 গ্রিন আইল্যান্ড কৃত্রিম দ্বীপ ও সামুদ্রিক উদ্যানটি ১৯৮৮ সালে উদ্বোধন করা হয়। এর উপকূলীয় এলাকা থেকে কুয়েত শহরের দিগন্তরেখার চমৎকার পাখির চোখে দেখা দৃশ্য উপভোগ করা যায়। উইকিপিডিয়ায় Green Island (Kuwait) (Q15222108)
  • দাসমান সমুদ্রসৈকত কম জনাকীর্ণ এবং শান্ত এই সৈকত থেকে সমুদ্র এবং শহরের আকাশরেখার মনোমুগ্ধকর দৃশ্য দেখা যায়, যার মধ্যে রয়েছে দেশের বিখ্যাত স্থাপত্য নিদর্শন কুয়েত টাওয়ার।

কী করবেন

[সম্পাদনা]

কুয়েত শহরে ঘোরার মতো বেশ কিছু জায়গা আছে। আপনি কুয়েত টাওয়ারে (সমুদ্রের পাশে পানির ট্যাঙ্কসহ তিনটি টাওয়ার) দুপুরের বা রাতের খাবার খেতে পারেন। কুয়েতের গ্র্যান্ড মসজিদটি পরিদর্শন করাও সার্থক—মসজিদের প্রবেশপথের সামনে থাকা নিরাপত্তা কর্মীকে অনুরোধ করলেই আপনাকে ভেতরে প্রবেশ করতে দিবে। গ্র্যান্ড মসজিদের ঠিক উল্টো দিকে রয়েছে কুয়েত স্টক এক্সচেঞ্জ, এটি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত বলে মনে হয়।

কুয়েতে ক্যাফেতে বসে শিশা (হুক্কা) সেবন করাও সম্ভব। এখানে ইরানি, লেবাননি এবং বেদুঈন খাবারের জন্যও অনেক ভালো রেস্তোরাঁ আছে।

কুয়েত টাওয়ার থেকে দেখা কুয়েত অ্যাকোয়া পার্ক

তীব্র গরম থেকে বাঁচতে কুয়েত টাওয়ারের কাছে অ্যাকোয়া পার্ক যেতে পারেন। প্রবেশ মূল্য ৩.৫০ কুয়েতি দিনার। এই পার্কে বিভিন্ন আধুনিক রাইড এবং সুইমিং পুল রয়েছে।

কুয়েতের উপকূলের অনেক ফুটপাত ধরে হেঁটেও সময় কাটানো যায়। সন্ধ্যার সময় সৌক শার্কের উল্টো দিকে একটি বেঞ্চে বসে আরব সাগরের উপর সূর্যাস্ত দেখা খুবই উপভোগ্য। মাছের বাজারের সৌক থেকে এক থলে বাদাম অথবা কিছু জলপাই কিনে আরাম করে সময় কাটাতে পারেন।

ফিটনেসপ্রেমী এবং স্বাস্থ্য সচেতনরা কুয়েত শহর ও তার আশেপাশে অনেকগুলো বিশেষায়িত ফিটনেস সেন্টারে শরীরচর্চার সুযোগ পেতে পারেন। কিছু সেরা হেলথ ক্লাব ও জিম হোটেলগুলোর সঙ্গে যুক্ত, যেমন: দ্য পামস, এসএএস র‌্যাডিসন, হিলটন ইত্যাদি। এছাড়াও এখানে অনেক স্বাধীনভাবে পরিচালিত কিছু স্পা এবং ফিটনেস সেন্টারও রয়েছে। এলিসিয়াম, ফ্লেক্স, স্পা টাইম এবং আয়ুরমানা কুয়েতের কয়েকটি শীর্ষস্থানীয় ফিটনেস সেন্টার। আয়ুরমানাতে নারীদের জন্য একটি অত্যন্ত প্রশংসিত এক্সক্লুসিভ যোগব্যায়াম স্টুডিও এবং আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা কেন্দ্রও আছে।

শিক্ষা

[সম্পাদনা]
The American University of Kuwait

আমেরিকান ইউনিভার্সিটি অফ কুয়েত সালমিয়া অঞ্চলে অবস্থিত। গালফ ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি এবং অস্ট্রেলিয়ান কলেজ অফ কুয়েত উভয়ই মিশরেফ-এ অবস্থিত। আমেরিকান ইউনিভার্সিটি অফ দ্য মিডল ইস্ট এবং আমেরিকান কলেজ অফ দ্য মিডল ইস্ট —এই দুটি প্রতিষ্ঠান এগাইলা এলাকায় অবস্থিত। কুয়েত ইউনিভার্সিটির কয়েকটি ক্যাম্পাস শহরের বিভিন্ন স্থানে রয়েছে, আর বক্স হিল কলেজ কুয়েত আবু হালিফা অঞ্চলে অবস্থিত।

এছাড়াও, কুয়েতের বিভিন্ন এলাকায় ব্রিটিশ, আমেরিকান, ফরাসি, ভারতীয় এবং পাকিস্তানি অনেক স্কুল রয়েছে।

কেনাকাটা

[সম্পাদনা]

কুয়েত শহরে বেশ কিছু উচ্চমানের বিপণীবিতান (মল) রয়েছে, যার মধ্যে মেরিনা মল অন্যতম বৃহৎ। তবে এই অঞ্চলের অন্যান্য জায়গার তুলনায় এখানকার জিনিসপত্রের দাম বেশ চড়া। বেশিরভাগ নামকরা ব্র্যান্ডের পণ্যের দাম পশ্চিমা দেশগুলোর তুলনায় ২ থেকে ৫ গুণ বেশি হতে পারে।

  • আধুনিক শপিং সেন্টার: কুয়েত শহরে অবস্থিত সৌক শার্ক এবং সালমিয়ায় অবস্থিত মেরিনা মল দুটোই উপকূলীয় গালফ রোডের পাশে অবস্থিত এবং কেনাকাটার জন্য চমৎকার জায়গা। আরেকটি শপিং সেন্টার হলো ফাহাহিলের আল-কৌত। এখানে বেশ কিছু সুন্দর কফি শপ এবং নানা ধরনের দোকান রয়েছে। অন্যদিকে শার্কে অবস্থিত আরাইয়া মল এবং আল-সালহিয়া মল-এ আপনি পাবেন নামীদামি ডিজাইনার ব্র্যান্ড। দ্য অ্যাভিনিউজ কুয়েতের নতুন এবং অন্যতম বৃহৎ একটি শপিং মল।
  • ঐতিহ্যবাহী বাজার: কুয়েতের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত সৌক আল মুবারকিয়া একটি বিখ্যাত জায়গা। এখানে মধ্যপ্রাচ্য ও প্রাচ্যদেশীয় নানা জিনিসপত্রের পাশাপাশি সোনা ও গহনার বাজারও রয়েছে। সৌক আল-জুমা'আ হলো একটি শুক্রবারের বাজার, যেখানে খুবই সস্তায় গণউৎপাদিত পণ্য ও ব্যবহৃত জিনিস পাওয়া যায়। বেহবাহানি কমপ্লেক্সের মাহামীদ বাজার-এ প্রায় একই ধরনের জিনিসপত্র ও মূল্যমান দেখা যায়।
  • শহরের অন্য প্রান্তে শেরাটন হোটেল এবং ফোর পয়েন্ট শেরাটন-এর পাশে অবস্থিত সৌক আল-ওয়াতিয়া বা আল-ওয়াতিয়া কমপ্লেক্স নামে একটি শপিং মলে বেশি প্রাচ্যদেশীয় পরিবেশ পাওয়া যায়। স্থানীয় ফিলিপিনোরা এই জায়গাটিকে অ্যাডিডাস বিল্ডিংও বলে। গির্জার কাছাকাছি হওয়ায় শুক্রবার ও রবিবার এই পুরো এলাকাটি যেন এক ছোট্ট ভারতীয় শহর বা ফিলিপিনো শহরের রূপ নেয়। এখানে অনেক রেস্তোরাঁ রয়েছে যেখানে ফাস্ট ফুড এবং ঐতিহ্যবাহী প্রাচ্যদেশীয় খাবার দুটোই পাওয়া যায়। সোনা বা গহনা কেনার জন্যও এটি একটি ভালো জায়গা।

কুয়েতের আল-ফানার মলে অনেক দোকান যেমন রালফ লরেন এবং ল্যাকোস্ট-এর পাশাপাশি বিভিন্ন রেস্তোরাঁ ও ক্যাফে রয়েছে।

খাওয়া-দাওয়া

[সম্পাদনা]

ফরাসি:রেলে দ্য ল’অঁত্রেকোত (অ্যাভিনিউজ মল, আল-ফানার মল, সালমিয়া) - এই রেস্তোরাঁটি প্যারিসের পোর্ট মাইও এলাকার মূল রেস্তোরাঁর মতো ঐতিহ্যবাহী স্টেক ফ্রাইটস পরিবেশন করে। পল (মেরিনা মল, সালমিয়া এবং অন্যান্য শাখা) - এই প্যাটিসেরিটিতে বেশ ভালো মানের পেস্ট্রি/ব্যাগুয়েত এবং কিছু চমৎকার মূল খাবার পরিবেশন করা হয়।

ইতালীয়: ক্রাউন প্লাজা হোটেলের প্রথম তলায় অবস্থিত ভিয়াজ্জিও রেস্তোরাঁ সম্ভবত শহরের সেরা ইতালীয় খাবার পরিবেশনের জন্য পরিচিত। সালহিয়া কমপ্লেক্সের পাশে (শার্গে) লোরেঞ্জো এবং শেরাটনে অবস্থিত রিকার্ডো কুয়েতের সেরা ইতালীয় রেস্তোরাঁগুলোর মধ্যে গণ্য করা হয়। গির্জার পাশে শার্গে অবস্থিত পোমোদোরোও ভাল ইতালীয় খাবার পরিবেশন করে। গাল্ফ রোডে নিনো'স রেস্তোরাঁও ভালো, তবে এটি একটি নৈমিত্তিক রেস্তোরাঁর মতো। জেলাতো ইতালিয়ানো শার্গ এলাকার আহমেদ আলজাবের স্ট্রিটে গাজ টাওয়ারে অবস্থিত, +৯৬৫ ২২৪৩৪৪৩৪। এটি ২০০১ সাল থেকে কুয়েতের অন্যতম জনপ্রিয় এবং প্রথম আইসক্রিম পার্লার, যেখানে বিভিন্ন ধরনের ইতালীয় আইসক্রিম পাওয়া যায়।

ভারতীয়: মুগল মহল (শার্গ), বুখারা (শেরাটন হোটেল), সিল্ক অ্যান্ড স্পাইস (আল কৌত মল, ফাহাহিল), আশা'স (মেরিনা ক্রিসেন্ট)। দ্য স্পাইস ক্লাব (৩৬০ মল) নতুন মলের একটি জনপ্রিয় স্থান এবং উত্তর ভারতীয় সুস্বাদু খাবার এবং বৈচিত্র্যময় মেনুর জন্য প্রশংসিত, তাই নিয়মিত ভোজনরসিকদের কাছে খুবই জনপ্রিয় এবং সারা বছরই এখানে অনেক ভিড় থাকে, এটি অত্যন্ত সুপারিশযোগ্য।

লেবানিয়: ভিলা ফাইরুজ (শা'আব), মেজানা (আল কৌত মল, ফাহাহিল), মাইস আল-ঘানিম (গাল্ফ রোড), তারবুশ (শেরাটন হোটেল), বুর্জ আল হামাম।

পার্সিয়ান: শাহরিয়ার (শেরাটন হোটেল), শাবেস্তান (ক্রাউন প্লাজা হোটেল), বাবা তাহের (শার্গ)।

কুয়েতি: আল-মারসা যা গাল্ফ রোডের রিটজ হোটেলে অবস্থিত, যদি আপনি স্থানীয় খাবার চেখে দেখতে চান তবে এটি অত্যন্ত সুপারিশযোগ্য।

আমেরিকান: জনি রকেটস (মেরিনা মল, কৌত মল, দ্য অ্যাভিনিউজ), চিলিস এবং ফ্রাইডেস—উভয়ই গাল্ফ রোডে অবস্থিত।

জাপানি: মাকি (মেরিনা ওয়েভস), এদো (শা'আব), সাকুরা (ক্রাউন প্লাজা হোটেল বা লায়লা গ্যালারি)—এই চারটি রেস্তোরাঁই অত্যন্ত সুপারিশযোগ্য।

চীনা: গ্রিনস (গাল্ফ রোড), গোল্ডেন চপস্টিকস (শা'আব), পিকক (রাডিসন সাস হোটেল)।

বার্গার: গালফ রোডে আল সেইফ প্যালেসের সামনে অবস্থিত বার্গার হাব রেস্তোরাঁটি ৫০টিরও বেশি ধরনের বার্গার এবং স্ন্যাকস সরবরাহ করে, যা উপসাগরীয় অঞ্চলে ও মধ্যপ্রাচ্যের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। বার্গার গুরমেট (মেরিনা মল)। বার্গার কোম্পানি (হাওয়ালি, মুহালাব মলের সামনে)।

প্রাতঃরাশ:

  • প্রাইম অ্যান্ড টোস্ট হলো মধ্যপ্রাচ্যের প্রথম সুস্বাদু ডেলি যা সাইফ প্যালেসের বিপরীতে অবস্থিত।
  • ৩৬০ মল

সামুদ্রিক খাবার:

  • দ্য ফিশ মার্কেট, Mahboula একটি চমৎকার মাছের রেস্তোরাঁ যেখানে তাজা মাছ প্রদর্শিত হয়, বিক্রি হয় এবং আপনার নির্দেশনা অনুযায়ী রান্না করা হয়। আরও আকর্ষণীয় বিষয় হল এই রেস্তোরাঁটি টিজিআই ফ্রাইডেসের পাশেই অবস্থিত, যাকে কুয়েতিরা উচ্চমানের রেস্তোরাঁ হিসেবে বিবেচনা করে এবং দেখার জন্য দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকে; এটি একটি দুর্দান্ত সুযোগ চমৎকার খাবার খাওয়ার পাশাপাশি মানুষ পর্যবেক্ষণ করার জন্য।
  • ফিশ মার্কেট রেস্তোরাঁ, সৌক শার্ক। এটি আরেকটি রেস্তোরাঁ যেখানে মাছ ও সামুদ্রিক খাবার প্রদর্শন করা হয়। এখানে আপনি বরফের উপর প্রদর্শিত তাজা মাছের যেকোনোটি বেছে নিতে পারেন, তাই মেনুতে কেবল মাছটি কীভাবে রান্না করতে চান তার তালিকা থাকে (যেমন: থারমিডর, প্রোভেন্সাল, ঝলসানো, সেদ্ধ বা ভাপে রান্না করা, ভাজা, কুয়েতি ধাঁচে ইত্যাদি)। সৌক শার্কের একটি লুকানো রত্ন, যা চমৎকার পর্যালোচনা পেয়েছে।

পানীয়

[সম্পাদনা]

রাত্রিযাপন

[সম্পাদনা]

কুয়েতে পশ্চিমা চেইন হোটেলগুলো ব্যাপকভাবে প্রচলিত। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় বাণিজ্যিক এলাকায় অবস্থিত জেডব্লিউ ম্যারিয়ট এবং শেরাটন হলো সবচেয়ে বড় দুটি পাঁচতারা হোটেল। এছাড়াও সেখানে কোর্টইয়ার্ড বাই ম্যারিয়ট এবং ফোর পয়েন্টস বাই শেরাটন এর পাশাপাশি দুটি বিলাসবহুল লে মেরিডিয়ান হোটেলও রয়েছে। কুয়েত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে একটি ক্রাউন প্লাজা অবস্থিত। এছাড়া হলিডে ইন-এর দুটি হোটেল রয়েছে, যার একটি সালমিয়া শপিং এলাকায় এবং অন্যটি কুয়েত শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত। উপকূলে হিলটন এবং কেম্পিনস্কি-র মতো আরও কিছু রিসোর্ট হোটেলও রয়েছে।

২০২৩ সাল পর্যন্ত কুয়েতে পরিচালিত একমাত্র হোস্টেল হলো শহরের কেন্দ্রস্থলের কাছে আম্মান স্ট্রিটে (সালমিয়া) আলাদিন হোস্টেল। এটি শহরের কেন্দ্রস্থলের কাছে একটি প্রাণবন্ত এলাকায় এবং এখানকার আতিথেয়তাপূর্ণ হোস্টরা খুবই উদার ও অতিথিপরায়ণ।

বাজেট

[সম্পাদনা]
  • 1 হাওয়ালি কন্টিনেন্টাল হোটেল, হাওয়ালি কুতিবা স্ট্রিট
  • 2 আলাদিন রুমস (হোস্টেল দ্য ভেন্যু আলাদিন), ১৩ আম্মান স্ট্রিট, সালমিয়া, ব্লক ১২ (আল-রাজা রয়্যাল ফার্মেসির একই ভবনে), +৯৬৫ ৫০১০ ৪০৭১, ইমেইল: আগমন: বিকাল ৩টা, প্রস্থান: বিকাল ২ টা ব্যাকপ্যাকারদের জন্য একটি সাধারণ কিন্তু আরামদায়ক জায়গা। ৬-৭ কুয়েতি দিনার

মাঝারি মানের হোটেল

[সম্পাদনা]
  • দ্য ওয়াসিস হোটেল (আহমদ আল-জাবের স্ট্রিট এবং মুবারক আল-কবীর স্ট্রিটের সংযোগস্থলে), +৯৬৫ ২৪৬৫৪৮৯, ফ্যাক্স: +৯৬৫ ২৪৬৫৪৯০, ইমেইল: কুয়েত শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত একটি নির্ভরযোগ্য হোটেল, তারা বিমানবন্দর থেকে অতিথি আনার ব্যবস্থা করে। হোটেলের ওপরের তলায় একটি চমৎকার ভারতীয় রেস্তোরাঁ আছে।

বিলাসবহুল হোটেল

[সম্পাদনা]
  • 3 কোর্টইয়ার্ড কুয়েত সিটি, আল শুহাদা স্ট্রিট (দাসমান), +৯৬৫-২২-৯৯৭০০০ এটি অন্যান্য সাধারণ কোর্টইয়ার্ড হোটেলের তুলনায় অনেক বেশি সুন্দর এবং এর দামও সেই অনুযায়ী। ২২ তলা বিশিষ্ট একটি আধুনিক শৈলীর বিলাসবহুল হোটেল, যা একটি বিশাল অ্যাট্রিয়ামের চারপাশে নির্মিত। এখানে একটি বড় কিন্তু অগভীর রুফটপ পুল, একটি ভালো মানের জিম, প্রতিটি রুমে বিনামূল্যে তারযুক্ত ইন্টারনেট এবং লবিতে ওয়াইফাইয়ের সুবিধা আছে। এখানকার সকালের নাস্তার বুফেটিও অসাধারণ। এটি সরাসরি আরাইয়া সেন্টার শপিং মলের সাথে সংযুক্ত। ২৫০ মার্কিন ডলার
  • 4 র‌্যাডিসন ব্লু হোটেল, কুয়েত, আল বিদা আল তাউউন স্ট্রিট, সালওয়া, +৯৬৫ ২৫৬৭ ৩০০০, ইমেইল: এই পাঁচতারকা সমুদ্রতীরবর্তী রিসোর্ট হোটেলটি কুয়েত সিটির কেন্দ্র এবং প্রধান শপিং এলাকা থেকে মাত্র কয়েক মিনিটের দূরত্বে অবস্থিত। এখানে ব্যবসা, বিনোদন এবং অবসর কাটানোর জন্য প্রচুর সুবিধা রয়েছে, পাশাপাশি নানা ধরনের বিনোদনমূলক কার্যক্রমের ব্যবস্থা আছে। এছাড়াও এখানে চমৎকার সব রেস্তোরাঁ থেকে বেছে নেওয়ার সুযোগ এবং বিনামূল্যে সিটি শাটল সেবাও পাওয়া যায়। তবে এর একটি বড় অসুবিধা হলো কয়েকশ মিটার দূরে সমুদ্রে অপরিশোধিত পয়োনিষ্কাশন বর্জ্য ফেলা হয়। আপনার যদি গন্ধের প্রতি সংবেদনশীলতা থাকে তাহলে এখানে না থাকাই ভালো।
  • 8 জেডব্লিউ ম্যারিয়ট কুয়েত সিটি, আল শুহাদা স্ট্রিট, +৯৬৫ ২৪৫-৫৫৫০ (Q15229082)

যোগাযোগ

[সম্পাদনা]

নিরাপত্তা

[সম্পাদনা]

কুয়েত শহর তুলনামূলকভাবে নিরাপদ। এখানে অপরাধের হার কম এবং প্রতিবেশী দেশ ইরাকের গৃহযুদ্ধ কুয়েতের দিকে ছড়ায়নি। তবে কিছু শহরতলির পরিস্থিতি ভিন্ন, যেখানে একা হেঁটে যাওয়া নারীদের জন্য অনিরাপদ হতে পারে। প্রায়ই এমন ঘটনা ঘটে যে গাড়িতে করে কিছু লোক এসে পশ্চিমা নারীদের গাড়িতে উঠতে বাধ্য করার চেষ্টা করে এবং তাদের আচরণ খুবই হুমকিযুক্ত হতে পারে।

রাস্তা পার হওয়ার সময় খুব সতর্ক থাকুন, কারণ কুয়েতি চালকরা বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালায়। এখানে পথচারীদের জন্য কোনো ট্র্যাফিক লাইট নেই এবং জেব্রা ক্রসিং প্রায় সম্পূর্ণ উপেক্ষা করা হয়।

সম্মান করুন

[সম্পাদনা]

কুয়েত একটি মুসলিম-প্রধান দেশ তাই ভ্রমণের সময় শালীন পোশাক পরিধান করুন। তবে "শালীন" শব্দটি আপেক্ষিক। কুয়েতের শপিং মলগুলোতে অনেক তরুণ-তরুণীকে শর্টস এবং আঁটসাঁট পোশাক পরতে দেখা যায়। দুবাইয়ের মতো এটি এই অঞ্চলের এমন কয়েকটি জায়গার মধ্যে একটি যেখানে আপনি চাইলে শর্টস পরতে পারেন।

ঐতিহ্যবাহী আরবীয় পোশাকে একজন কুয়েতি পুরুষ হেঁটে যাচ্ছেন

ইসলাম, কুয়েত সরকার বা জাতীয় গর্বের প্রতি অপমানজনক হতে পারে এমন কোনো কথা বলা থেকে বিরত থাকুন। মাদক পাচার, খুন এবং ধর্ষণের মতো অপরাধের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। জনসমক্ষে কাউকে গালি দেওয়া বা অশালীন অঙ্গভঙ্গি করাও গ্রেপ্তারের কারণ হতে পারে, যার ফলে মোটা অঙ্কের জরিমানা বা তাৎক্ষণিক নির্বাসনের কারণ হতে পারে।

সুবিধা ও সহায়তা

[সম্পাদনা]

কুয়েতে বসবাসকারী যেকোনো পশ্চিমা নাগরিকের জন্য বিশেষ করে যারা পরিবার ছাড়া এখানে এসেছেন তাদের মানিয়ে নেওয়ার সেরা উপায় হলো প্রচুর বন্ধু তৈরি করা। এখানে আগত একজন নতুন ব্যক্তি দেখতে পাবে যে পশ্চিমা প্রবাসীদের মধ্যে বন্ধুত্ব নিজ দেশের তুলনায় দ্রুত গড়ে ওঠে। এখানে যুক্ত হওয়ার জন্য প্রচুর সামাজিক কার্যকলাপ রয়েছে, বিশেষ করে খেলাধুলায় (যেমন: ক্রিকেট, রাগবি, সেইলিং, স্কোয়াশ, টেনিস, ঘোড়ায় চড়া, ডার্টস ইত্যাদি)। এছাড়াও রয়েছে থিয়েটার গ্রুপ, র‍্যাম্বলার্স (পায়ে হেঁটে ঘোরার দল), বিভিন্ন গানের দল এবং ব্যবসায়িক সমিতি (এখানে বিভিন্ন পশ্চিমা দূতাবাসের উদ্যোগে গঠিত )। খ্রিস্টান গির্জাগুলোও এখানে ভালোভাবে বিদ্যমান।

প্রাথমিকভাবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো কুয়েতে আসার পর আপনার নিজ দেশের দূতাবাসের 'ওয়ার্ডেন সিস্টেম'-এর অধীনে নাম নিবন্ধন করা যাতে করে কনস্যুলার কর্মকর্তারা আপনার আগমন এবং কুয়েতে আপনার বাসস্থান সম্পর্কে জানতে পারেন। এছাড়াও একজন ভালো চিকিৎসক এবং একজন দাঁতের ডাক্তারের কাছে নাম নথিভুক্ত করা বুদ্ধিমানের কাজ। এই বিষয়ে আপনার দূতাবাস আপনাকে সহায়তা করতে পারে।

কুয়েতে মদ্যপান সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ এবং মদ রাখার জন্য কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে। তবে অনেক কুয়েতি নাগরিক এবং প্রবাসী তাদের বাড়িতে ভালো মানের পানীয়ের ব্যবস্থা রাখেন। বাড়িতে মদ তৈরি করা একটি জনপ্রিয় শখ। তবে এটি মনে রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যে এটি একটি মুসলিম দেশ এবং স্থানীয় আইনগুলিকে প্রকাশ্যভাবে লঙ্ঘন করা অত্যন্ত বোকামি। সব সময় যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করা উচিত।

গ্রীষ্মকালে (বিশেষ করে জুলাই এবং আগস্ট মাসে) তাপমাত্রা অত্যন্ত বেশি থাকে, দিনের বেলায় তাপমাত্রা ৫০°সে (১২২°ফা) ছাড়িয়ে যায় এবং তা একটানা কয়েক সপ্তাহ ধরে চলতে থাকে। তাই এ সময়ে পানিশূন্যতা এড়াতে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা এবং যতটা সম্ভব সূর্যের আলো থেকে দূরে থাকা গুরুত্বপূর্ণ। ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাসে আশ্চর্যজনকভাবে অনেক ঠাণ্ডা পড়ে এবং রাতের তাপমাত্রা ০°সে (৩২°ফা) এর নিচে নেমে আসে। বসন্তকালে (মার্চ এবং এপ্রিলের বেশিরভাগ সময়) আবহাওয়া খুবই মনোরম থাকে। এরপর থেকে আবার গরম পড়তে শুরু করে এবং সাধারণত অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি সময়ে এসে তাপমাত্রা আবার কমতে শুরু করে।

দূতাবাস

[সম্পাদনা]

পরবর্তী গন্তব্য

[সম্পাদনা]

আপনি যদি কুয়েতে কয়েক মাসের বেশি সময় কাটিয়ে থাকেন তাহলে আপনি সহজেই বুঝতে পারবেন যে এখানে দেখার ও করার মতো যত কিছু আছে সবই দেখেছেন এবং করে ফেলেছেন। উপসাগরীয় অঞ্চলে ঘুরে বেড়ানো একটি সাশ্রয়ী বিনোদনের উৎস হতে পারে। একজন ভ্রমণকারীর পছন্দ যাই হোক না কেন, যেমন-রক ক্লাইম্বিং, স্কিইং, স্কুবা ডাইভিং, মাছ ধরা, পান করা বা নাচ—সবকিছুর সুযোগই এখানে আছে। একঘেয়েমি কাটাতে চাইলে আপনি অবশ্যই কুয়েত ছাড়তে চাইবেন।

বিষয়শ্রেণী তৈরি করুন

This TYPE কুয়েত শহর has ব্যবহারযোগ্য অবস্থা TEXT1 TEXT2

{{#assessment:শহর|ব্যবহারযোগ্য}}