বিষয়বস্তুতে চলুন

উইকিভ্রমণ থেকে

জন মিউর ট্রেইল (JMT) হলো ২২১ মা (৩৫৬ কিমি) মাইল দীর্ঘ একটি হাইকিং পথ, যা ক্যালিফোর্নিয়ার সিয়েরা নেভাদা অঞ্চলে অবস্থিত। প্রকৃতিবিদ জন মিউরের নামে নামকরণ করা এই পথটি ইয়োসেমিটি ভ্যালি থেকে শুরু হয়ে মাউন্ট হুইটনির শীর্ষে (১৪,৫০৫ ফুট) গিয়ে শেষ হয়। পথে রয়েছে ইয়োসেমিটি, কিংস ক্যানিয়ন, সিকোইয়া জাতীয় উদ্যান; ডেভিলস পোস্টপাইল; ইনিওসিয়েরা জাতীয় বন; এবং জন মিউর ও অ্যানসেল অ্যাডামস বন্যপ্রাণী এলাকা। প্রায় ১৬০ মা (২৬০ কিমি) পথ প্যাসিফিক ক্রেস্ট ট্রেইলের সাথে মিলে যায়।

উপলব্ধি

[সম্পাদনা]

জন মিউর ট্রেইল ছিল মার্কিন পশ্চিম উপকূলে প্রথম বড় দূরপাল্লার ট্রেইল। এটি ২০শ শতকের শুরুতে সিয়েরা ক্লাব ও স্বেচ্ছাসেবকদের সহায়তায় তৈরি হয়। উচ্চ সিয়েরার সৌন্দর্য রক্ষা ও প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে এটি গড়ে তোলা হয়েছিল। জন মিউর একে বলেছিলেন “আলোয় ভরা পর্বতশ্রেণী”। পথটি হিমবাহ খোদাই করা উপত্যকা, গ্রানাইট গম্বুজ, আল্পাইন তৃণভূমি ও দূরবর্তী গিরিপথের মধ্য দিয়ে যায়। এটির কারণে জাতীয় উদ্যান সংরক্ষণ কার্যক্রম ত্বরান্বিত হয় এবং অ্যানসেল অ্যাডামসসহ প্রজন্মের পর প্রজন্মের প্রকৃতি আলোকচিত্রী অনুপ্রাণিত হন।

প্রস্তুতি

[সম্পাদনা]
  • কখন যাবেন: জুলাইয়ের মাঝামাঝি থেকে সেপ্টেম্বরের শুরু পর্যন্ত সবচেয়ে উপযুক্ত সময়। এ সময়ে তুষারমুক্ত গিরিপথ ও স্থিতিশীল আবহাওয়া থাকে।
  • সময় ও দূরত্ব: পুরো ২১১ মাইল পাড়ি দিতে ৩–৪ সপ্তাহ লাগে। মোট উঁচুতে ওঠা প্রায় ৪৬,৭০০ ফুট। প্রতিদিন গড়ে ১২–১৪ মাইল হাঁটতে হয়।
  • শারীরিক সক্ষমতা: ভারী ব্যাকপ্যাক নিয়ে খাড়া পথে অনুশীলন দরকার। একদিনে ৫,০০০ ফুটের বেশি ওঠার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
  • পারমিট: ইয়োসেমিটি থেকে পাওয়া একটি বন্যপ্রাণী পারমিটই পুরো পথের জন্য যথেষ্ট। আবেদন আগে করতে হয়, কারণ চাহিদা বেশি।
  • সরঞ্জাম: মাইনাস তাপমাত্রার রাতের জন্য প্রস্তুতি নিন। মজবুত বুট, উষ্ণ স্লিপিং ব্যাগ, রেইন গিয়ার, সানপ্রটেকশন এবং ভাল্লুক প্রতিরোধক ক্যানিস্টার প্রয়োজন।
  • রিসাপ্লাই: কয়েকটি জায়গায় সরবরাহ নেওয়া যায় – টুয়োলমি মেডোজ (২৩ মাইল), রেডস মেডো (৫৯), ভারমিলিয়ন ভ্যালি রিসোর্ট (৮৮), মিউর ট্রেইল র‍্যাঞ্চ (১১০)।

প্রবেশ

[সম্পাদনা]

এই পথ শুরু হয় ইয়োসেমিটি ভ্যালির হ্যাপি আইলসে এবং শেষ হয় হুইটনি পোর্টালে।

  • উত্তর প্রান্ত (ইয়োসেমিটি): ফ্রেসনো বা মারসেড বিমানবন্দর থেকে এসে ইয়োসেমিটি ভ্যালিতে বাসে যাওয়া যায়।
  • দক্ষিণ প্রান্ত (হুইটনি পোর্টাল): হুইটনি শীর্ষ থেকে ১১ মাইল নেমে হুইটনি পোর্টালে পৌঁছানো যায়। সেখান থেকে লোন পাইনে যাওয়ার ট্যাক্সি পাওয়া যায়।
  • অন্যান্য অপশন: রেনো-তাহো বিমানবন্দর থেকেও প্রবেশ সম্ভব। মৌসুমি ফ্লাইট ফ্রেসনো ও মামথ থেকে পাওয়া যায়।

হাঁটা

[সম্পাদনা]
মানচিত্র
জন মুইর ট্রেইলের মানচিত্র
Rae Lakes Creek

জন মিউর ট্রেইল সাধারণত দক্ষিণমুখে হাঁটা হয়। রাস্তার চিহ্ন ও সাইনেজ স্পষ্ট। গ্রীষ্মে পানির অভাব হয় না, তবে বরফ গলার সময় ঝুঁকি থাকে।

ইয়োসেমিটি ভ্যালি থেকে টুয়োলমি মেডোজ

[সম্পাদনা]
দূরত্ব
২৪ মাইল

হ্যাপি আইলস (৪,০০০ ফুট) থেকে পথ শুরু হয়। প্রথমে নেভাডা ফলস পর্যন্ত প্রায় ২.৭ মাইল উঠতে হয়। এরপর লিটল ইয়োসেমিটি ভ্যালি হয়ে সানরাইজ লেকস ও ক্যাথেড্রাল লেকস পেরিয়ে টুয়োলমি মেডোজে (৮,৬০০ ফুট) নামা যায়। এখানে দোকান, পোস্ট অফিস ও বিশ্রামের ব্যবস্থা আছে। কাছেই হাফ ডোম ও মাউন্ট লায়েলসহ বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য শৃঙ্গ দেখা যায়।

টুয়োলমি মেডোজ থেকে রেডস মেডো

[সম্পাদনা]
দূরত্ব
৩৭ মাইল

প্রথমে সমতল লায়েল ক্যানিয়ন পেরিয়ে ১১,০৬৬ ফুট উচ্চতার ডনোহু পাসে ওঠা হয়। এরপর অ্যানসেল অ্যাডামস বন্যপ্রাণী এলাকায় প্রবেশ করা যায়। তারপর থাউজেন্ড আইল্যান্ড লেক, গারনেট লেক অতিক্রম করে পথ নিচে নামে। অনেকে রেডস মেডো ও ডেভিলস পোস্টপাইল হয়ে যান, যেখানে সরবরাহের ব্যবস্থা আছে।

রেডস মেডো থেকে মিউর ট্রেইল র‍্যাঞ্চ

[সম্পাদনা]
দূরত্ব
৫৫ মাইল

রেডস মেডো থেকে পথ সিলভার পাস পেরিয়ে এগোয়। প্রায় ৮৮ মাইলে ভারমিলিয়ন ভ্যালি রিসোর্টে সরবরাহ নেওয়া যায়। এরপর সেলডেন পাস ও মিউর পাস পেরিয়ে বেয়ার ক্রিক ভ্যালি হয়ে পথ নামে। শেষে ১১০ মাইলে মিউর ট্রেইল র‍্যাঞ্চে পৌঁছানো যায়।

মিউর ট্রেইল র‍্যাঞ্চ থেকে মাউন্ট হুইটনি

[সম্পাদনা]
দূরত্ব
১০০ মাইল

মিউর ট্রেইল র‍্যাঞ্চ থেকে পথ আবার উঁচুতে ওঠে। মিউর পাস, ম্যাথার পাস, গ্লেন পাস ও ফোরেস্টার পাস পেরিয়ে অবশেষে ১৪,৫০৫ ফুট উচ্চতার মাউন্ট হুইটনিতে পৌঁছায়। সেখান থেকে হুইটনি পোর্টালে নামা হয়।

নিরাপত্তা

[সম্পাদনা]
  • পারমিট ও নিয়ম: ইয়োসেমিটি ইস্যু করা পারমিট সবসময় সঙ্গে রাখতে হবে। ভাল্লুক প্রতিরোধক ক্যানিস্টার বাধ্যতামূলক।
  • উচ্চতা: অনেক পথ ১১,০০০ ফুটের ওপরে। মাথা ব্যথা, বমি, ক্লান্তি হলে নিচে নামতে হবে।
  • আবহাওয়া: জুলাই–সেপ্টেম্বরে বজ্রঝড় সাধারণ। সকালেই গিরিপথ পার হওয়া ভালো।
  • বন্যপ্রাণী: কালো ভাল্লুক দেখা যায়। খাবার ঝুলিয়ে রাখা নিষিদ্ধ।
  • পথের অবস্থা: খাড়া, পাথুরে ও নদী পারাপারের ঝুঁকি থাকে। প্রয়োজন হলে ট্রেকিং পোল, আইস অ্যাক্স ব্যবহার করুন।
  • জরুরি পরিস্থিতি: মোবাইল নেটওয়ার্ক নেই। স্যাটেলাইট মেসেঞ্জার বা PLB বহন করা উচিত।

পরবর্তী গন্তব্য

[সম্পাদনা]

জন মিউর ট্রেইল শেষ করার পর কাছাকাছি ঘোরার মতো কিছু জায়গা হলো:

This TYPE জন মুইর ট্রেইল has রূপরেখা অবস্থা TEXT1 TEXT2

{{#assessment:ভ্রমণপথ|রূপরেখা}}

বিষয়শ্রেণী তৈরি করুন