ধর্মশালা (হিন্দি: धर्मशाला; তিব্বতি: དྷ་རམ་ས་ལ་) হিমাচল প্রদেশের একটি পাহাড়ি জায়গা, যা দালাই লামার কার্যক্রমকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা বৃহৎ তিব্বতি সম্প্রদায়ের জন্য বিখ্যাত।
জানুন
[সম্পাদনা]ধর্মশালার তিব্বতি বৌদ্ধ ঐতিহ্য ৮ম শতাব্দী পর্যন্ত প্রসারিত, যদিও স্থানীয় জনসংখ্যার বেশিরভাগই বহু আগেই হিন্দু ধর্মে ফিরে গেছে এবং এখনও তাই রয়েছে। "ধর্মশালা" শব্দের আক্ষরিক অর্থ হলো "মন্দির সংলগ্ন সরাইখানা"। এটি তেমনই ছিল, যতদিন না কাংড়া জেলার সদর দপ্তর অতিরিক্ত ভিড়পূর্ণ হয়ে ওঠে এবং ১৮৪০-এর দশকের শেষের দিকে ব্রিটিশরা তাদের দুটি রেজিমেন্ট স্থানান্তর করে বর্তমান ধর্মশালা এলাকায় নিয়ে আসে। পরবর্তী বছরগুলোতে এটি কাংড়া জেলার সদর দপ্তর হিসেবে গড়ে ওঠে, এবং সেই স্থানটি বর্তমানে পুলিশ লাইন্স নামে পরিচিত।
এক সময় ধর্মশালাকে ভারতের গ্রীষ্মকালীন রাজধানী করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তা সম্ভব হয়নি, কারণ ১৯০৫ সালের ৪ এপ্রিল ৭.৮ মাত্রার একটি ভূমিকম্প শহরের অধিকাংশ অংশ ধ্বংস করে দেয়। এই বিপর্যয়ে তুলনামূলকভাবে কম জনবহুল এই এলাকায় ১০,০০০-এর বেশি মানুষ প্রাণ হারায়।
ভারতের স্বাধীনতার শুরুর দিনগুলোতে গুরুত্ব হারানোর পর, ১৯৫৯ সালে দালাই লামা এবং নির্বাসিত তিব্বতি সরকার ধর্মশালায় আসার সঙ্গে সঙ্গে এটি আবার কিছুটা সামাজিক মর্যাদা ফিরে পায়। এটি বিদেশি ভ্রমণকারী এবং বৌদ্ধধর্মের শিক্ষার্থীদের মধ্যে অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি স্থান। তবে বর্তমানে এটি সম্ভবত একটু বেশিই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে, এবং অনেকের মতে, শহরটি, বিশেষত ম্যাকলিয়ড গঞ্জ, এখন কেবল একটি ব্যাকপ্যাকারদের আস্তানায় পরিণত হয়েছে। এখানে শান্তি এবং নির্জনতার প্রত্যাশা নিয়ে এলে আপনি হতাশ হতে পারেন।
জলবায়ু
[সম্পাদনা]নিম্ন ধর্মশালা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১,৪০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত, আর ম্যাকলিয়ড গঞ্জ প্রায় ১,৭৫০ মিটার উচ্চতায়। ফলে এই অঞ্চলটি নীচের সমতল ভূমির তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে শীতল। জানুয়ারিতে তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নিচে নেমে যেতে পারে, আর জুনে তা ৩৮°সেলসিয়াস পর্যন্ত উঠতে পারে। জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বর্ষাকালে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। এমনকি মার্চ মাসেও, যখন দালাই লামার শিক্ষাসমূহ অনুষ্ঠিত হয় এবং দিল্লির আবহাওয়া আরামদায়ক থাকে, তখনও এখানে ভারী শীতের কোট প্রয়োজন হয়। এগুলো শহরের দোকানগুলোতে সাশ্রয়ী মূল্যে কেনা যায়।
প্রবেশ
[সম্পাদনা]কাংড়া বিমানবন্দর DHM আইএটিএ কাংড়ার গগ্গল এলাকায় অবস্থিত, যা ম্যাকলিয়ডগঞ্জ থেকে সড়কপথে এমডিআর৪৪ এবং জতীয় সড়ক১৫৪ হয়ে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
বাসে
[সম্পাদনা]- 1 ধর্মশালা আইএসবিটি বাস স্ট্যান্ড। অধিকাংশ মানুষ নিম্ন ধর্মশালায় বাসে পৌঁছান। এর উত্তর ভারতের অন্যান্য অঞ্চলের সাথে ভালো সংযোগ রয়েছে, যদিও পাহাড়ি সরু এবং ঘুরপাক রাস্তার কারণে যাত্রাগুলো প্রায়শই ধীরগতির হয়। হিমাচল রোড ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশন (HRTC), যা একটি রাজ্য সরকার পরিচালিত সংস্থা, এর টিকিট অনলাইনে বুক করা যায়।
- 2 ধর্মশালা প্রাইভেট ভলভো স্টপ।
একসময় কিছু সরকারি এইচআরটিসি (HRTC) বাস দিল্লি এবং পাঠানকোট থেকে ম্যাকলিয়ডগঞ্জের প্রধান স্কয়ার পর্যন্ত যেত, যেখানে ফেরার জন্য আগাম টিকিটও বুক করা যেত। তবে এখন হয়ত আর এরকম হয় না।
বেসরকারি বাসগুলি মানালি, দেরাদুন এবং দিল্লি থেকে যাত্রা করে। দিল্লি থেকে রাতের বাসও চলে, যেগুলোর বেশিরভাগ তিব্বতি কলোনি মজনু কা টিল্লা থেকে ছাড়ে। এই যাত্রাগুলোতে প্রায় ১৩ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় লাগে এবং ভলভো বাসের জন্য ভাড়া ₹৪৫০ থেকে ₹১,০০০ পর্যন্ত হতে পারে।
ট্রেনে
[সম্পাদনা]নিকটবর্তী প্রধান রেলস্টেশন পাঠানকোটে অবস্থিত, আর তার কাছেই ছোট একটি স্টেশন আছে, চাক্কি ব্যাংক। দিল্লি থেকে রাতভর আরামদায়ক ট্রেন যাত্রায় এখানে সহজেই পৌঁছানো যায়।
যারা ট্রেন ভ্রমণ পছন্দ করেন, তারা পাঠানকোট থেকে কাংড়া ভ্যালি রেলওয়েতে যেতে পারেন। এটি একটি সরু গেজের রেলপথ, যা ধীরগতির এবং খানিকটা কেঁপে-কেঁপে চলে, কিন্তু অত্যন্ত সুন্দর। এই যাত্রাতে কাংড়া পৌঁছাতে প্রায় ৪ ঘণ্টা সময় লাগে। কাংড়ায় পৌঁছে বাসস্ট্যান্ডে যাওয়ার জন্য হাঁটতে পারেন বা রিকশা নিতে পারেন। এখান থেকে ধর্মশালাগামী বাস সহজেই পাওয়া যায়। এই ট্রেনটি কাংড়া থেকে আরও দূরে যোগিন্দরনগর পর্যন্ত যায়।
ট্যাক্সিতে
[সম্পাদনা]পাঠানকোট থেকে ম্যাকলিয়ডগঞ্জ যাওয়ার জন্য ট্যাক্সি ভাড়া (একদিকে) ₹২,২০০। এই ভাড়া মে ২০১৯-এর জন্য নির্ধারিত ছিল এবং ছোট গাড়ি (যেমন অল্টো বা ইন্ডিকা) এর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। দূরত্ব ৮৮ কিলোমিটার। যেতে প্রায় ৩ ঘণ্টা সময় লাগে।
দিল্লি থেকেও সহজেই ট্যাক্সি পাওয়া যায়। বিশেষ করে, উত্তর দিল্লির মজনু কা টিল্লা তিব্বতি কলোনি থেকে ট্যাক্সি ছাড়ে। অনেক মানুষ বাসের ঝামেলা এড়ানোর জন্য ট্যাক্সি ব্যবহার করেন। দিল্লি থেকে ধর্মশালায় ট্যাক্সিতে যেতে ১০ ঘণ্টা লাগে। বেশিরভাগ সময় মানুষ আসা-যাওয়ার পুরো ভাড়া দিয়ে থাকেন।
তবে, ধর্মশালায় ফেরার পথে ট্যাক্সি চালকরা বাসের ভাড়ার সমান ভাড়া নেন। এই ট্যাক্সি নিতে হলে মজনু কা টিল্লা তিব্বতি কলোনি বাসস্ট্যান্ডে যেতে হবে। হিমাচল প্রদেশের লাইসেন্স প্লেট আছে এমন ট্যাক্সি দেখতে হবে। চালকের সঙ্গে দরদাম করতে পারবেন।
ট্যাক্সিগুলো সাধারণত সন্ধ্যায় ছাড়ে। এগুলো পরদিন ভোরে ধর্মশালায় পৌঁছে।
ঘুরে দেখুন
[সম্পাদনা]
অবস্থান
[সম্পাদনা]ধর্মশালা বিভিন্ন অঞ্চলে বিভক্ত । এই অঞ্চলগুলি একে অপরের থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার বা ১৫ মিনিটের বাস বা জিপ যাত্রার মাধ্যমে সংযুক্ত।
- 1 নিম্ন ধর্মশালা – এখানে বেশিরভাগ সরকারি দপ্তর, স্কুল, স্থানীয় হাসপাতাল এবং বাণিজ্যিক এলাকা রয়েছে। এখানে কিছু চা বাগানও দেখা যায়, একটি চিলগারি এলাকায় এবং আরেকটি দাড়ি অঞ্চলের একটু বাইরে। এটি একটি সাধারণ ছোট ভারতীয় শহর, যা পর্যটকদের জন্য বিশেষ আকর্ষণীয় নয়, তবে বাস স্টেশন রয়েছে। শহরটির মধ্য দিয়ে যাওয়ার সময় দৃশ্য উপভোগ করা যায়।
- 2 ম্যাকলিয়ডগঞ্জ – এটি উচ্চ ধর্মশালা নামেও পরিচিত। এর নামকরণ করা হয়েছে ডেভিড ম্যাকলিয়ডের নামে, যিনি একসময় পাঞ্জাবের ব্রিটিশ লেফটেন্যান্ট-গভর্নর ছিলেন। গঞ্জ শব্দটি একটি পার্সি শব্দ, যার অর্থ "পাড়া" বা "অঞ্চল"। এটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২,০৮২ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত এবং নিম্ন ধর্মশালা থেকে পায়ে হেঁটে প্রায় ৫ কিলোমিটার। এটি তিব্বতি সংস্কৃতি, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, মিশ্র ঐতিহ্য, প্রাচীন মন্দির, গির্জা এবং মঠের জন্য বিখ্যাত। ২০২১ সাল পর্যন্ত এটি তিব্বতের ১৪তম দালাই লামা তেনজিন গ্যাতসোর বাসস্থান, যিনি তিব্বত থেকে নির্বাসিত হয়ে এখানে বসবাস করছেন। ফলে এটি তিব্বতি সম্প্রদায়ের কেন্দ্রস্থল এবং তাদের প্রধান আবাসস্থল হয়ে উঠেছে।
- 3 ভাগসু – ভাগসুকে অনেক সময় "ছোটো তেল আবিব" বলা হয়। এটি ম্যাকলিয়ডগঞ্জ থেকে ২ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে অবস্থিত। জায়গাটি ইসরায়েলি ব্যাকপ্যাকারদের জন্য জনপ্রিয় এবং এখানে হিব্রু ভাষা সাধারণ দেখা যায়। এটি এখন একটি বাণিজ্যিককৃত হটস্পট।
- 4 ধর্মকোট – ভাগসুর ওপরে প্রায় ১০ মিনিট উঠলেই ধর্মকোট। জায়গাটি ভাগসুর তুলনায় অনেক নিরিবিলি। এখানে অনেক অতিথিশালা রয়েছে। পাশাপাশি বেশ কিছু শৌখিন রেস্তোরাঁ এবং যোগ ও ধ্যান কেন্দ্র রয়েছে। এখানে একটি সুন্দর পায়ে হাঁটা আছে, যা অর্ধবৃত্তাকার ভাবে পাহাড় ঘিরে চলে।
- 5 হাইনি – ধর্মকোট থেকে সোজা উত্তরে আরও ১০ মিনিটের চড়াইয়ে হাইনি। এটি ধর্মশালার শেষ পর্যটনকেন্দ্র। একে "উচ্চ ধর্মকোট"ও বলা হয়। এখানে অসাধারণ দৃশ্য উপভোগ করার মতো বেশ কিছু ভালো মানের হোস্টেল রয়েছে। রুশ ভাষাভাষী পর্যটকদের মধ্যে এটি বেশ জনপ্রিয়। তবে, অন্যান্য অনেক পর্যটকও এখানে আসেন। কারণ, এটি গালু জলপ্রপাতের পথে পড়ে।
ম্যাকলিয়ডগঞ্জের আশেপাশে কয়েকটি গ্রাম রয়েছে। এর মধ্যে ফোরসাইথগঞ্জ উল্লেখযোগ্য, যা নিম্ন ও উচ্চ ধর্মশালার মাঝামাঝি অবস্থিত।
যদি আপনি আরও নিরিবিলি এবং সাধারণ অভিজ্ঞতা চান, তাহলে নাড্ডি ঘুরে দেখতে পারেন। এটি ম্যাকলিয়ডগঞ্জ থেকে ৩ কিলোমিটার দূরে এবং একটি চমৎকার দেখার জায়গা। আরেকটি বিকল্প হলো তালনু, যা প্রায় ১১ কিলোমিটার দূরে।
এই এলাকাগুলো এতটাই ছোট যে পায়ে হেঁটে সহজেই ঘোরা যায়। ম্যাকলিয়ড, ভাগসু, ধর্মকোট এবং হাইনি একে অপরের খুব কাছাকাছি। পায়ে হাঁটলে সর্বোচ্চ ২০ মিনিট সময় লাগে। তবে, নিম্ন ধর্মশালা কিছুটা দূরে অবস্থিত।
ট্যাক্সি বা অটোরিকশায়
[সম্পাদনা]ম্যাকলিয়ডগঞ্জ এবং ধর্মকোটের মধ্যে ভাড়া ট্যাক্সি প্রায় প্রতি ঘণ্টায় চলাচল করে। ভাড়া ₹২০ (২০২৩)। তবে দরদাম করার জন্য প্রস্তুত থাকুন। নিজস্ব ভাড়া করা অটোরিকশার ভাড়া প্রায় ₹২৫০।
ম্যাকলিয়ডগঞ্জ থেকে আশেপাশের স্থানে (যেমন ভাগসু) যেতে অটোরিকশার ভাড়া লাগে ₹৫০–১৫০-এর মধ্যে। কেন্দ্রস্থলে থাকা আলাদা অটোরিকশা এবং ট্যাক্সি কাউন্টার থেকে গাড়ি ভাড়া করতে পারেন। কাউন্টারে গিয়ে ভাড়া করুন এবং যারা নিজে থেকে এসে আপনাকে গাড়ি ভাড়া নেওয়ার প্রস্তাব দেয়, তাদের এড়িয়ে চলুন।
- 3 অটোরিকশা কাউন্টার।
₹৫০–২৫০।
- 4 ট্যাক্সি ক্যাব কাউন্টার।
- 5 ধর্মশালা বিমানবন্দর। ধর্মশালা গাগল বিমানবন্দর থেকে ম্যাকলিয়ডগঞ্জের জোগীওয়ারা রোডের মাঝপথ পর্যন্ত ট্যাক্সি ভাড়া ₹১২৬০। হোটেলের মাধ্যমে ট্যাক্সি ভাড়া করলে ₹১৪০০ পর্যন্ত লাগতে পারে। তবে, একজন চালক দরদামের মাধ্যমে ভাড়া ₹৮০০ পর্যন্ত নামানোর কথা বলেছেন।
₹১২৬০।
তারশকট (কেবল কার)
[সম্পাদনা]- 6 ধর্মশালা স্কাইওয়ে (নিম্ন স্টেশন), ☎ +৯১ ১৮৯২ ২২৩৩০২। এখন নিম্ন ধর্মশালা এবং ম্যাকলিয়ডগঞ্জের মধ্যে একটি কেবল কার পরিষেবা চালু হয়েছে। একমুখী যাত্রার ভাড়া ₹৪৫০ এবং আসা-যাওয়ার জন্য ভাড়া ₹৬৭৫।
₹৪৫০/৬৭৫ একমুখী যাত্রা।
- 7 ধর্মশালা স্কাইওয়ে (উচ্চ স্টেশন)।
দর্শনীয়
[সম্পাদনা]
- 1 এইচপিসিএ ক্রিকেট স্টেডিয়াম (এইচপিসিএ ক্রিকেট অ্যাকাডেমি) (ধর্মশালা)।
সকাল ১০.০০ - সন্ধ্যা ৬.০০। মনোরম এই হিমাচল প্রদেশ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়াম ভারতের অনন্য একটি স্টেডিয়াম। এটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১,৪৫৭ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত। স্টেডিয়ামের পেছনে বরফে ঢাকা হিমালয়ের দৃষ্টিনন্দন দৃশ্য দেখা যায়।
₹২০।
- 2 কুনাল পথারি মন্দির (ধর্মশালা থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরে)। এই মন্দিরে প্রতিদিন ভক্তরা দেবীর কাছে প্রার্থনা করতে আসেন।
- 3 ডাল হ্রদ (ম্যাকলিয়ডগঞ্জ থেকে ৪ কিলোমিটার দূরে, নাড্ডির নিচে)। একটি পবিত্র পুকুর, এর নামের মতোই জলও ডালের মতো হলুদ রঙের।

- 4 নাড্ডি ভিউ পয়েন্ট, Naddi (ধর্মশালা থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে)। এই জায়গা থেকে বরফে ঢাকা ধৌলাধার পর্বতমালার পুরো দৃশ্য দেখা যায়। এখানে দূরবীন (₹১০–২০) পাওয়া যায়, যার সাহায্যে ত্রিউন্দ ক্যাম্পসাইট এবং গুনা দেবী মন্দির দেখা যায়। ধর্মকোট বা হাইনি থেকে হেঁটে যাওয়া সহজ। তবে, নাড্ডি ট্যাক্সি বা রিকশায়ও সহজেই পৌঁছানো যায়।
- 5 পিক আর্ট গ্যালারি, মন্দির রাস্তা, ম্যাকলিয়ডগঞ্জ (মন্দির রাস্তা ধরে ৫০০মিটার, ক্যাফে নির্বানার নিচে)।
সকাল ১০.০০ - সন্ধ্যা ৭.০০।
- 6 রাক্কার। ধর্মশালার নিম্নাঞ্চলের এক মনোরম গ্রাম। এটি বরফে ঢাকা ধৌলাধার পর্বতের পাদদেশে অবস্থিত। ঐতিহাসিকভাবে জায়গাটি গাড্ডি সম্প্রদায়ের মেষপালকদের বাসস্থান। বর্তমানে যারা ম্যাকলিয়ডগঞ্জের ব্যস্ততা থেকে দূরে সঠিক গ্রাম্য জীবনযাত্রা দেখতে চান তাদের কাছে গ্রামটি আকর্ষণীয় স্থান হয়ে উঠেছে।

- 7 ঘন অরণ্যের মধ্যে সেন্ট জন ক্যাথেড্রাল (ধর্মশালা থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরে)। এটি সবুজের মাঝে একটি সুন্দর ও মনোরম গির্জা। ম্যাকলিয়ডগঞ্জ থেকে ১ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এখানে যাওয়ার জন্য অটো-রিকশার ভাড়া ₹৭০ (মে ২০১৯ অনুসারে)। তবে গির্জার কাছে কোনো অটো স্ট্যান্ড নেই, তাই ফেরার জন্য অটো পাওয়া একটু কঠিন। সম্ভব হলে, অটো চালককে অপেক্ষা করতে বলুন এবং একই অটোতে অন্য স্থানেও যান।
বিনামূল্যে।
- 8 তিব্বতি পারফর্মিং আর্ট ইনস্টিটিউট (TIPA)। এখানে ঐতিহ্যবাহী তিব্বতি নাচ, সঙ্গীত এবং থিয়েটারের প্রদর্শনী হয়। তবে এই প্রদর্শনীগুলি নিয়মিত হয় না।
- 9 তিব্বতি গ্রন্থাগার (লাইব্রেরি অফ তিব্বতি ওয়ার্কস অ্যান্ড আর্কাইভস)), গাংচেন কিশং, ☎ +৯১ ৯২১৮৪২২৪৬৭, +৯১ ৯৮৮২২৫৫০৪৭ (রিসেপশন), ইমেইল: ltwa1970@gmail.com। নির্বাসিত তিব্বতি সরকারের কাছে অবস্থিত। এখানে একটি ছোট কিন্তু আকর্ষণীয় জাদুঘর রয়েছে।
- 10 তিব্বত জাদুঘর, ম্যাকলিয়ডগঞ্জ (সুগলাগখাং-এর বিপরীতে), ☎ +৯১ ১৮ ৯২২ ২৫১০।
মঙ্গলবার থেকে রবিবার, সকাল ৯টা–বিকাল ৫টা। তিব্বতের ইতিহাস এবং এর মানুষের উপর ছোট কিন্তু আকর্ষণীয় একটি জাদুঘর।
₹৫।
- 11 সুগলাগখাং কমপ্লেক্স, মন্দির রাস্তা, ম্যাকলিয়ডগঞ্জ। এটি তিব্বতের বাইরে সবচেয়ে বড় তিব্বতি মন্দির। এখানে একটি বিশাল ধ্যান কক্ষ রয়েছে, যেখানে সুন্দর মূর্তি, থাংকা এবং কালচক্র মন্দিরের দেয়ালে আকর্ষণীয় চিত্র রয়েছে। কমপ্লেক্সটি দলাই লামার মঠ এবং তার বাসভবনের সামনে অবস্থিত। এখানে প্রায় ২ মিটার উচ্চতার সবচেয়ে বড় তিব্বতি প্রার্থনার চাকা রয়েছে—এটি ঘোরাতে ভুলবেন না!
করণীয়
[সম্পাদনা]- ঘুরে বেড়ানো। ম্যাকলিয়ডগঞ্জ পায়ে হেঁটে ঘুরে দেখার জন্য দারুণ একটি জায়গা। ধৌলাধার পর্বতমালার ঢালে তৈরি হোটেল, রঙিন তিব্বতি পতাকায় সাজানো বাজার, হাতে তৈরি পণ্য এবং সুস্বাদু খাবারের দোকান—এসব মিলে জায়গাটিকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে।
ধর্মকোটেও ছোট ছোট ক্যাফে এবং আরাম করার জায়গা রয়েছে, যেখানে বসে চারপাশের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন। - 1 ভাগসু মন্দির সাঁতারকুণ্ড, ভাগসু। ভাগসুতে অবস্থিত এই সাঁতারকুণ্ডে সাঁতার কাটতে পারেন। বিশেষ করে গরমের সময় এটি চমৎকার আরামদায়ক অভিজ্ঞতা। এই অঞ্চলের অন্যান্য পর্যটন কার্যকলাপের ভিড় থেকে দূরে স্নিগ্ধ মুহূর্ত কাটানোর উপযুক্ত জায়গা এটি। এখানে ভাগসু জলপ্রপাতের জল ব্যবহার করা হয়, যা কুণ্ডের মধ্য দিয়ে অবিরত প্রবাহিত হতে থাকে।
বিনামূল্যে।
ট্রেকিং এবং হাঁটা
[সম্পাদনা]- 2 ভাগসু জলপ্রপাত (ধর্মশালা থেকে ৩ কিমি দূরে)। এখানে একাধিক জলপ্রপাত, একটি প্রাচীন মন্দির, স্লেট পাথরের খনি এবং একটি স্বাদু জলের ঝরনা রয়েছে। ভাগসু সড়ক ধরে গ্রামটির মধ্য দিয়ে হেঁটে যেতে হবে, এরপর জলপ্রপাতটির কাছে পৌঁছাতে ১ কিমি ওপরে উঠতে হবে। জলপ্রপাতের পথ বেশিরভাগটাই পাথরে বাঁধানো এবং খাড়াই অংশে নিরাপত্তার জন্য বেড়া লাগানো। জলপ্রপাতের কাছে কিছু দোকান রয়েছে, যেখানে জলখাবার এবং পানীয় বিক্রি হয়। উপরের স্নানকুণ্ডে স্নান করতে চাইলে সাবধানে থাকতে হবে, কারণ কিছু জায়গায় জলের মধ্যে কাঁচের টুকরো থাকতে পারে। স্থানীয়রা মাঝে মাঝে এই কাঁচের টুকরোগুলো ফেলে দেয়, যাতে রাতে পর্যটকরা সেখানে "অশোভন" আচরণ না করেন।
আপনি চাইলে উপরের ভাগসু গ্রাম থেকে পায়ে হেঁটে শুরু করতে পারেন। এই রাস্তাটি তুলনামূলকভাবে সমতল এবং সরাসরি জলপ্রপাতের দিকে নিয়ে যায়। জলপ্রপাতের কাছে পৌঁছে আরও একটু উপরে উঠলেই শিবা ক্যাফে আছে। এখানে একটি ছোট ব্যক্তিগত স্নানকুণ্ড রয়েছে, যা ঠান্ডা পাহাড়ি জলে ভরা। এখানে পিকনিকের জন্য আরামদায়ক জায়গা আছে। - 3 গালু জলপ্রপাত। এটি আরেকটি সুন্দর ট্রেকিং গন্তব্য। তবে প্রথমে আপনাকে ভাগসু থেকে হাইনি গ্রামের পেছনের একটি পার্বত্য গিরিপথ পর্যন্ত ৩০০ মিটার উচ্চতায় উঠতে হবে। তারপর পথ অতটাও খাড়াই চড়াই-উৎরাই থাকবে না। পথে ৩-৪টি ক্যাফে এবং রেস্তোরাঁ রয়েছে। জলপ্রপাতের শেষে একটি ছোট ঝর্ণা রয়েছে।

- 4 ত্রিউন্দ। যদি আপনি হাঁটতে ভালোবাসেন, তবে ধর্মকোটের ওপরে ত্রিউন্দ পর্বত পর্যন্ত ট্রেক করার পরিকল্পনা করতে পারেন। এটি চণ্ডীগড় এবং দিল্লি থেকে সপ্তাহান্তে ঘুরতে যাওয়ার জন্য একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় ট্রেক এবং হিমালয়ের সহজতম ট্রেকগুলোর মধ্যে একটি। ভগসু বা ধর্মকোট থেকে ত্রিউন্দ পর্যন্ত পথটি প্রায় ৬ কিলোমিটার লম্বা এবং শুধুমাত্র যেতে ৩ ঘণ্টার মতো সময় লাগে। পথটি কিছুটা খাড়া এবং জঙ্গলের ভেতর দিয়ে যায়। প্রতি বছর প্রচুর পর্যটক এই ট্রেকের অভিজ্ঞতা নিতে আসেন। ত্রিউন্দ থেকে হিমালয়ের শৃঙ্গগুলোর চমৎকার দৃশ্য দেখতে পাবেন এবং সমতলের বিস্তৃত দৃশ্য উপভোগ করতে পারবেন। শীতকালে, বিশেষ করে ডিসেম্বর এবং জানুয়ারি মাসে, এই এলাকা তুষারে ঢেকে যায়। তখন এটি আরও বেশি আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে।
ত্রিউন্দের উচ্চতা ২,৮৭৫ মিটার। তাই যাওয়ার আগে ভালো জুতো, পর্যাপ্ত জল, কিছু খাবার এবং একটি অতিরিক্ত জ্যাকেট বা কোট সঙ্গে নিয়ে যান। ওপরের আবহাওয়া দ্রুত পরিবর্তন হতে পারে। গরম ও রৌদ্রোজ্জ্বল আবহাওয়া হঠাৎ ঠান্ডা এবং মেঘাচ্ছন্ন হয়ে যেতে পারে। প্রতি বছর কিছু পর্যটক চটি আর টি-শার্ট পরে যান এবং সমস্যায় পড়েন। তাই সতর্ক থাকুন। পশ্চিম দিকের পথটি তুলনামূলকভাবে ভালোভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়েছে বলে মনে হয়। যদি আপনি ধর্মকোটে থাকেন, তাহলে সেই দিকের পথ ধরাই ভালো। ত্রিউন্দে যাওয়ার আগে প্রস্তুতি নিতে চাইলে গুনা মন্দির পর্যন্ত ছোট একটি ট্রেক করতে পারেন। সেখানে রাতে থাকার পরিকল্পনা থাকলে বনের বিশ্রামভবনে থাকার সুযোগ পাবেন। রাত্রিকালীন ভাড়া ₹৫০০–₹১০০০ এর মধ্যে। অবশ্যই একটি টর্চ সঙ্গে রাখুন। যদি বনের বিশ্রামভবনে ঘর খালি না থাকে, তাহলে তাঁবু ভাড়া নিয়ে থাকতে পারেন। চাইলে স্নোলাইন টেন্ট ক্যাম্পেও থাকতে পারেন, যা একটু ওপরে অবস্থিত। সানসেট ক্যাফের কর্মীদের সঙ্গে কথা বললে তাঁরা আপনাকে বিস্তারিত জানাবে। - লাকা হিমবাহ ট্রেক। হিমবাহে পৌঁছানো সবসময়ই দারুণ রোমাঞ্চকর, তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এটি বেশ কষ্টসাধ্য। কিন্তু এশিয়ার সবচেয়ে নিম্ন উচ্চতায় অবস্থিত লাকা গ্লেসিয়ার বেশ সহজসসধয। এই ট্রেকের পথ ত্রিউন্দ পর্বতের শীর্ষের মধ্য দিয়ে যায়, তাই এটিকে অনেক সময় ত্রিউন্দ-লাকা হিমবাহ ট্রেকও বলা হয়।
- 5 ইন্দ্রহার গিরিপথ। ত্রিউন্দ থেকে আরও উপরে উঠে এই ট্রেকের শুরু। এই পথে যেতে হলে সাধারণত গাইড সহ ট্যুর বুক করতে হয়। এই ট্রেক ধৌলাধার পর্বতমালার বরফে ঢাকা অংশ পেরিয়ে কাংড়া উপত্যকা অতিক্রম করে এবং শেষে লামুতে পৌঁছায়।
- 6 তোড়ল গিরিপথ (৪,৫৭৫ মিটার)। এই ট্রেক শুরু হয় তাং নারওয়ানা (১,১৫০ মিটার) থেকে, যা ধর্মশালা থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে।
- 7 করেরি হ্রদ ট্রেক। সবুজে ঘেরা প্রকৃতির মাঝে অবস্থিত এই হিমবাহ হ্রদ প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য এক অসাধারণ জায়গা। এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এমন যে এখানে এলে প্রকৃতির সাথে সত্যিই একাত্ম হওয়া যায়।

দলাই লামার সাথে সাক্ষাৎ
[সম্পাদনা]দলাই লামার সাথে সাক্ষাৎ করা (বা অন্তত এক নজর দেখা) অনেকের কাছে জীবনের সবচেয়ে বড় স্বপ্ন। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের জন্য এটি গভীর আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতা, আর অন্যদের জন্য স্মরণীয় এক মুহূর্ত। তবে এটি খুবই কঠিন, তাই নিশ্চিতভাবে এর উপর ভরসা করবেন না। ভাগ্যের সহায়তা প্রয়োজন।
যদি আপনি সাক্ষাৎ করার চেষ্টা করতে চান, প্রথমে নিশ্চিত করুন যে তিনি যখন ধর্মশালায় থাকবেন তখনই আপনি সেখানে যাবেন। তিনি অনেক ভ্রমণ করেন। তার ওয়েবসাইটে তার ভ্রমণের সূচি প্রকাশিত থাকে। চাইলে ইমেইল করে তার ভ্রমণের তারিখ নিশ্চিত করতে পারেন। তিনি মাঝেমধ্যে জনসাধারণের জন্য নির্ধারিত বক্তব্য দেন, তবে সেখানে প্রচুর ভিড় হয়। কিছু বক্তব্য মাত্র কয়েক দিন আগে ঘোষণা করা হয়। তাই ধর্মশালায় থাকাকালীন সজাগ থাকুন। যদি ব্যক্তিগত সাক্ষাতের চেষ্টা করেন, তবে আপনাকে অনেক কিছু করতে হবে। তার ওয়েবসাইট বলছে তিনি ব্যক্তিগত সাক্ষাৎ দেন না। তবে সত্যি বলতে, বিশেষ কারণ বা পরিচিতি থাকলে এটি সম্ভব। এজন্য তার সচিবের অফিসে যেতে হবে।
দলাই লামার প্রশাসনিক অফিস সুগলাগখাং কমপ্লেক্সে। তার বাড়ির সামনে একটি ফটক আছে যেখানে ভারতীয় নিরাপত্তা রক্ষীরা থাকে। সেই ফটকের ডান দিকে কমপ্লেক্সের একদম শেষ দরজায় তার অফিস। অফিস সপ্তাহে ছয় দিন খোলা থাকে। অফিসে গেলে আপনাকে অনলাইনে আবেদন করতে বলবে এবং ওয়েবসাইটের ঠিকানা দেবে। অনলাইনে আবেদন আগে না করে থাকলে কোনো ইন্টারনেট ক্যাফেতে গিয়ে আবেদন করুন। তবে আবেদন করলেও এটি নিশ্চিত নয় যে সাক্ষাৎ পাবেন। যদি অফিসে একজন রিসেপশনিস্ট থাকে, তাহলে তিনি হয়তো সাক্ষাৎ দেবেন না। কিন্তু যদি দেখেন অনেকে পাসপোর্ট আর কাগজ নিয়ে অপেক্ষা করছে, তাহলে তিনি সাক্ষাৎ দিচ্ছেন। এই সাক্ষাৎ সাধারণত দুপুর নাগাদ হয়।
কিছু বিশেষ দল যেমন ডকুমেন্টারি টিম বা কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের পরিবার সাক্ষাৎ পেতে পারে। ধর্মশালায় যাদের সাথে দেখা হয় তাদের সাথে কথা বলুন। অনেকেই হয়তো তার কর্মীদের কারো সাথে পরিচিত। এই পরিচিতদের নাম উল্লেখ করে অফিসে যান। যদি অসুস্থতার কারণ দেখান, তবে এই কারণেও সাক্ষাৎ পেতে পারেন। তবে সাক্ষাৎ মানে বড় কিছু নয়। সাধারণত আশীর্বাদের জন্য মাত্র ১০ সেকেন্ড সময় দেওয়া হয়। যদি ছবি তুলতে চান, ₹৫ দিতে হয়। ফটোগ্রাফার অফিস থেকেই দেয়, নিজস্ব ক্যামেরা নিয়ে যাওয়া যায় না।
দলাই লামার সাথে দেখা করা তিব্বতীদের জন্যও একটি বিরল সুযোগ। তাই যদি আপনি এটি করতে পারেন, নিজেকে ভাগ্যবান মনে করুন। একটি খাতা (সাদা স্কার্ফ) সঙ্গে নিন। এগুলো কয়েক রুপিতে কিনতে পারেন। তবে যদি এটি স্মৃতিস্বরূপ রাখতে চান, ₹২০ খরচ করে ভালো মানের একটি কিনুন।
যদি তিনি আপনার সাথে ছবি তোলেন, অফিস বলবে একটি খালি সিডি নিয়ে আসতে। তারা সেই ছবিটি সিডিতে দেবে। মন্দির সড়কে ₹৫০-এ খালি সিডি পাওয়া যায়। যাদের নাম ব্যবহার করে বা যাদের সাহায্যে আপনি সাক্ষাৎ পেয়েছেন, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে ভুলবেন না। তাদের মঠে অনুদান দিন, তাদের রেস্তোরাঁয় খান বা যা আপনার কাছে সঠিক মনে হয়। এটি বাধ্যতামূলক নয়, তবে একটি ভালো কাজ।
প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে প্রায় দশ দিনের জন্য বা কখনো কখনো অন্য সময়েও দলাই লামা সাধারণ মানুষের জন্য ধর্মোপদেশ দেন। এর জন্য তিব্বতি শাখা নিরাপত্তা দপ্তরে (হোটেল তিব্বতের কাছাকাছি) আগাম নিবন্ধন করতে হয়। সাধারণত ৩-৪ দিন আগে নিবন্ধন করাই ভালো, যদিও কখনো কখনো কম সময়েও এটা সম্ভব। বসার জন্য একটি তোশক, তিব্বতি ভাষা থেকে বাংলায় বা ইংরেজিতে সরাসরি অনুবাদ শোনার জন্য একটি এফএম রেডিও ও হেডফোন, চা খাওয়ার জন্য একটি কাপ, এবং রোদ বা বৃষ্টির জন্য একটি টুপি বা ছাতা সঙ্গে রাখুন। তবে নিরাপত্তা ব্যবস্থা খুবই কড়া, তাই অপ্রয়োজনীয় কিছু না নিয়ে যাওয়াই ভালো। শিক্ষা-পর্বের শেষ দিনে জনসাধারণের প্রার্থনার আয়োজন হয়, এর জন্য কোনো নিরাপত্তা পাস লাগে না। এই অনুষ্ঠানে অনুদান দেওয়া হলে তা স্বাগত জানানো হয়।
- 8 ১৭তম কারমাপা (দলাই লামার আরেকটি বাসভবন)। একটি অস্থায়ী বাসভবন ম্যাকলিয়ডগঞ্জের কাছেই সিধবাড়ি শহরে গ্যুটো তান্ত্রিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থিত।
শিখুন
[সম্পাদনা]ম্যাকলিওডগঞ্জে যোগব্যায়াম, ধ্যান, রেইকির পাশাপাশি তিব্বতি ও ভারতীয় রান্নার ক্লাস, তিব্বতি ভাষার ক্লাস এবং থাই ম্যাসাজ শেখার কোর্স পাওয়া যায়। অনেক কোর্সই নিরামিষ খাবার অন্তর্ভুক্ত করে এবং এগুলো ধ্যান কেন্দ্রগুলিতে পরিচালিত হয়।
যোগব্যায়াম, ধ্যান এবং নিরাময়
[সম্পাদনা]ভিপাসনা এবং তুষিতা (নীচে দেখুন) এই অঞ্চলের সবচেয়ে ভালো এবং জনপ্রিয় নামগুলোর মধ্যে অন্যতম।
- আশো ইনস্টিটিউট, ভগসু গ্রাম। আয়ুর্বেদিক পুষ্টি এবং তাই-চি এর কোর্স।
- অমিত রেইকি অ্যান্ড মেডিটেশন সেন্টার, জোগিওয়াড়া রোড, ম্যাকলিওডগঞ্জ (ইয়ংলিং স্কুলের নীচে), ☎ +৯১ ৯৪ ১৮৯০৯০৪৬।
- বুদ্ধ হল-রেইকি উইথ উষা (জার্মান বেকারির বিপরীতে)। রেইকির বিভিন্ন স্তর (I, II, III এবং মাস্টার), ট্যারট এবং ক্রিস্টাল নিরাময়ের কোর্স বুদ্ধ হলে পরিচালিত হয়। এখানের শিক্ষক খুব নমনীয় এবং সহানুভূতিশীল।
- গেরিলা যোগা (ইয়ংলিং স্কুলের সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামুন; এটি বড় সবুজ ভবন)। বিভিন্ন ধরনের যোগার পাঁচ দিনের কোর্স। ব্যক্তিগত প্রশিক্ষণের সুযোগ রয়েছে। কর্মীরাও বন্ধুত্বপূর্ণ। এছাড়াও এখানে স্থানীয় শিল্পকর্ম ক্রয় করা যায়।
- কৈলাশ স্কুল অফ যোগা অ্যান্ড হোলিস্টিক হিলিং (মূল চত্বর থেকে ১০০ মিটার দূরে; গ্রিন শপ থেকে সিঁড়ি দিয়ে নামুন)। অষ্টাঙ্গা বিন্যাসা এবং উপজাতীয় হঠ যোগ ক্লাস প্রতিদিন পাওয়া যায় এবং আপনি যেকোনো সময় অংশগ্রহণ করতে পারেন। রেইকি, আয়ুর্বেদিক ম্যাসাজ, ধ্যান এবং 'সাউন্ড হিলিং'-এর চিকিৎসা এবং সেশন উপলব্ধ। তবে এগুলোতে অংশগ্রহণ করতে চাইলে অন্তত একদিন আগে থেকে ব্যবস্থা করতে হবে। এখানে ছোট এবং দীর্ঘ মেয়াদী কোর্সের ব্যবস্থাও রয়েছে।
- কুণ্ডলিনী যোগা, থার্ডোলিং, এইচএইচ দালাই লামার মন্দিরের কাছে, ম্যাকলিয়ডগঞ্জ, ☎ +৯১ ৯৮ ১৬৮৫ ১৬৯১, ইমেইল: jiwankaur13@hotmail.co.uk। যোগা ক্লাস
- তিব্বতি বৌদ্ধধর্ম এবং ভাষা, ☎ +৯১ ৯৮ ০৫৩৯ ১৭৯৯, ইমেইল: tibhintutor@yahoo.in।
সোম-শনি সকাল ৯টা-দুপুর, দুপুর ২টা–৪টা। তিব্বতি বৌদ্ধধর্ম, তিব্বতি ভাষা এবং হিন্দি ভাষার কোর্স প্রদান করা হয়।
- তুষিতা মেডিটেশন সেন্টার। ১০ দিনের বৌদ্ধধর্ম এবং ধ্যানের পরিচয়মূলক কোর্স, ৫ দিনের ধ্যান কোর্স এবং আরও অনেক কিছু (মূলত আবাসিক)। দিনের বেশিরভাগ সময় নীরবতা পালন করা হয়, তবে দর্শন পাঠের পর আলোচনা হয়। এটি ধর্মকোটের কাছে অবস্থিত এবং তুষিতা তিব্বতি মহাযান ঐতিহ্যের চর্চা করে। অনলাইনে বা তুষিতায় নিবন্ধন করুন। মূল্য এর মধ্যে রয়েছে আবাসন, পাঠ এবং দিনে ৩ বেলার সুস্বাদু নিরামিষ খাদ্য। প্রতিদিনের খরচ প্রায় ₹৫০০ (খাবার এবং থাকার খরচ সহ)। যারা বৌদ্ধধর্মে নতুন তাদের জন্য এটি একটি ধাপে ধাপে পরিচয়ের সুযোগ প্রদান করে।
১০ দিনের কোর্স শুরু ₹৪,৮০০ থেকে।।
- বিপাসনা (☸) (ধর্মকোটের কাছে)। ১০ দিনের ধ্যান কোর্স। আপনাকে আগেই তাদের ওয়েবসাইটে নিবন্ধন করতে হবে, তবে এখানে কোর্সগুলো সাধারণত কয়েক মাস আগে থেকেই বুক হয়ে যায়। যদি কোর্সে আপনার গভীর আগ্রহ থাকে এবং ধর্মশালায় জায়গা না পান, তবে এটি ভারতের অন্যান্য অনেক স্থানে দেওয়া হয়—ওয়েবসাইটটি দেখুন।
এই কোর্স আপনাকে বিপাসনা ধ্যানের পদ্ধতি শেখাবে। আপনাকে সম্পূর্ণ নীরব থাকতে হবে, এবং দিনে ২টি খাবার ও খুব হালকা রাতের খাবার সরবরাহ করা হয়। কোর্সটি সম্পূর্ণ বিনামূল্যে, তবে আপনি চাইলে একটি অনুদান দিতে পারেন। কোর্সটি বেশ তীব্র ধরণের ধ্যানের রিট্রিট (দিনে ১৪ ঘণ্টা) যা থেরবাদ ঐতিহ্যের অন্তর্ভুক্ত। আগের ধ্যানের অভিজ্ঞতা প্রয়োজন হয় না, কারণ কোর্স চলাকালীন আপনাকে আপনার আগের সব ধ্যান পদ্ধতি সাময়িকভাবে স্থগিত রাখতে বলা হবে। কিছু মানুষ পরামর্শ দেয় যে নতুনদের জন্য তুষিতা প্রদত্ত কোর্সে অংশ নেওয়া ভালো। এটি ধ্যান, দর্শন এবং আলোচনার মিশ্রণ, যা নতুনদের জন্য বেশ সহজ। - কৈলাশ ট্রাইবাল স্কুল অফ যোগ (যোগী কটেজ), ভগসু রোড (ম্যাকলয়েডগঞ্জ)। যোগা অ্যালায়েন্স অনুমোদিত ₹২০০–₹৫০০-এর যোগ শিক্ষক প্রশিক্ষণ কর্মসূচি এবং একক বা গোষ্ঠীর জন্য রেইকি পাঠ।
- জি-মেডিটেশন। ১৫ দিনের নীরব ধ্যান রিট্রিট, নিম্ন ধর্মশালায়। এতে গভীর পুনঃশিক্ষার অনুসন্ধান, উজ্জ্বল মন্ত্র, সৃজনশীল ধ্যান, নিজের জীবনের জটিলতা সমাধানের জন্য নির্ধারিত কাজ, প্রতিদিন ২ ঘণ্টার যোগাভ্যাস, তিনবেলা নিরামিষ খাবার এবং বিরতি অন্তর্ভুক্ত। পুরো নিরাময় নীরবতার মধ্যে সম্পন্ন হয়। কোর্সের খরচ বাসস্থানের উপর নির্ভর করে মার্কিন$৬০০–১,২০০।
রান্নার ক্লাস
[সম্পাদনা]- এলএইচএ চ্যারিটেবল ট্রাস্ট, মন্দির সড়ক, ম্যাকলিওডগঞ্জ,, ☎ +৯১ ১৮ ৯২ ২২০৯৯২। এখানে বিভিন্ন ধরনের মোমো, তিব্বতি রুটি এবং তিব্বতি নুডলস রান্না শেখা যায়। ক্লাসের জন্য Lha-এর সঙ্গে যোগাযোগ করুন। এছাড়াও, এখানে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করার সুযোগও রয়েছে।
২ঘন্টা ক্লাসের জন্য ₹৩০০।
- লহামোর কিচেন। প্রতিদিন ভিন্ন ভিন্ন কোর্সের মাধ্যমে ঐতিহ্যবাহী তিব্বতি খাবার রান্না করা শেখা যায়। এতে স্যুপ, মোমো এবং তিব্বতি রুটি অন্তর্ভুক্ত। ক্লাসটি চালান একজন মজাদার তিব্বতি ব্যক্তি, যার নাম লহামো। ক্লাসটি লহামোর একটি ছোট একক কক্ষে, শহরের কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয়।
- মি. সাঙ্গ্যের কিচেন, যোগিওয়াড়া রোড, ম্যাকলিওডগঞ্জ (ডাকঘর এবং পুল হল থেকে আরও নিচে), ☎ +৯১ ৯৮ ১৬১৬ ৪৫৪০, ইমেইল: sangyla_tashi@yahoo.co.in। এখানে প্রতিদিন ভিন্ন ভিন্ন কোর্সের মাধ্যমে ঐতিহ্যবাহী তিব্বতি খাবার রান্না শেখা যায়। স্যুপ, মোমো এবং তিব্বতি রুটি সহ বিভিন্ন পদ তৈরি করা শেখানো হয়।
- ত্রিমূর্তি রান্নার ক্লাস। ভারতীয় খাবারের একটি বিস্তৃত তালিকা থেকে যে কোনো তিনটি পদ বেছে নিন, এবং রজনী আপনাকে তার ছোট ও সুন্দর রান্নাঘরে সেগুলি রান্না করা শিখিয়ে দেবেন। রজনী তার স্বামী এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় পক্ষাঘাতগ্রস্ত হওয়ার পর, নিজেকে এবং তার পরিবারকে সাহায্য করার জন্য ক্লাস নেওয়া এবং কাপড় ধোয়ার কাজ শুরু করেন।
কার্যক্রম
[সম্পাদনা]স্বেচ্ছাসেবক
[সম্পাদনা]স্বেচ্ছাসেবার কিছু সুযোগ রয়েছে। যদি দীর্ঘমেয়াদী (যেমন ১ মাস বা তার বেশি) কাজ করতে চান, তাহলে শহরের মাঝখানে অবস্থিত এলএইচএ (LHA) অফিসে যোগাযোগ করুন। সেখানকার কর্মীরা খুবই বন্ধুত্বপূর্ণ এবং যারা পড়ানো বা কথোপকথনের ক্লাসে অংশ নিতে চান, তাদের সবসময় স্বাগত জানানো হয়।
- এলএইচএ সামাজিক কার্যক্রম – ধর্মশালা এবং ম্যাকলিওডগঞ্জের অন্যতম বৃহৎ দাতব্য সামাজিক কার্যক্রম সংগঠন। এটি তিব্বতি শরণার্থী, স্থানীয় ভারতীয় জনগণ এবং হিমালয়ের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ ও পরিষেবা প্রদান করে। ইংরেজি, ফরাসি এবং চীনা ভাষার ক্লাসে, আইটি বিষয়ক ক্লাসে,পেশাগত প্রশিক্ষণে, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সচেতনতা শিক্ষায়, জামাকাপড় এবং ওষুধ বিতরণে, ভক্তশালা এবং অন্যান্য বহু কার্যক্রমে মাঝেমধ্যেই স্বেচ্ছাসেবক প্রয়োজন হয়।
- রোগপা ক্যাফে (যোগিওয়াড়া সড়ক) – এখানে ক্যাফেতে কাজ করার জন্য বা ডে কেয়ার সেন্টারে শিশুদের দেখাশোনা করার জন্য সবসময় স্বেচ্ছাসেবকদের প্রয়োজন হয়। এটি দুই সপ্তাহের একটি কার্যক্রম। এই ক্যাফের সমস্ত আয় রোগপা ডে কেয়ার সেন্টারে যায়, যা স্থানীয় শিশুদের জন্য বিনামূল্যে সেবা প্রদান করে।
- তেসি পরিবেশ সচেতনতা আন্দোলন – যদি আপনি পরিবেশ বিশেষজ্ঞ হন, তাহলে এই তিব্বতি অলাভজনক সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
আপনি তিব্বতি সমাজের সাথে মেলামেশার মাধ্যমে তাদের ইংরেজি শেখাতে সাহায্য করতে পারেন। এর পাশাপাশি, একে অপরের সংস্কৃতি এবং ব্যক্তিগত গল্প জানার সুযোগও পাবেন। তবে রাস্তার ভিক্ষুদের কাছ থেকে ব্যক্তিগত টিউটরের অনুরোধ পাওয়ার ক্ষেত্রে একটু সতর্ক থাকুন। কিছুদিন পর তারা হয়তো আপনাকে আর্থিক পৃষ্ঠপোষকতার জন্য বলতে পারে। যদিও এমন ঘটনা খুবই কম ঘটে। তাই এমন সহযোগিতা করতে চাইলে নির্ভরযোগ্য ও প্রতিষ্ঠিত কোনো সংস্থার মাধ্যমে এগোনোই ভালো।
সাধারণত, বেশিরভাগ ভিক্ষু ও সাধারণ মানুষ ইংরেজি শেখানোর জন্য আপনার প্রতি খুব কৃতজ্ঞ থাকেন। এটি তিব্বতি মানুষদের কাছ থেকে খুব ঘনিষ্ঠভাবে জানারও দারুণ এক সুযোগ। সাহায্য করার সবচেয়ে সহজ উপায় হলো, টেম্পল রোডের এলএইচএ (LHA) বা যোগিওয়ারা রোডের এলআইটি (LIT)-এ গিয়ে টিউটরিংয়ের জন্য নাম লেখানো। এক মাসের কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিলে তারা আরো বেশি খুশি হয়।
কেনাকাটা
[সম্পাদনা]ধর্মশালায় তিব্বতি জিনিসপত্র কেনা যায়, যেমন গয়না ও ছোট ছোট অলংকার, উলের শাল, প্রার্থনার পতাকা, প্রার্থনার চাকা, কার্পেট, থাংকা ও মণ্ডল চিত্রকলা।
- তিব্বতি সিংগিং বোল। এটি বাজানো সহজ এবং এটি 'সাউন্ড হিলিং' অর্থাৎ শব্দের সাহায্যে নিরাময়, সংগীতের সাহায্যে নিরাময় বা শুধু আরামের জন্য ব্যবহার করা হয়।
আহার
[সম্পাদনা]কি খাবেন
[সম্পাদনা]তিব্বতি রাস্তার বিক্রেতাদের কাছে পাওয়া মোমো সাধারণত ৪ পিসের জন্য ₹১০-এ বিক্রি হয়। এগুলো খাওয়া নিরাপদ এবং পশ্চিমা স্বাদের সাথে মানানসই, যদিও এগুলো নীচে উল্লেখিত কিছু সেরা রেস্তোরাঁর রান্নার সূক্ষ্মতার সমান হবে না।
ধর্মশালা তিব্বতি খাবার এবং পানীয় স্বাদ গ্রহণ করার জন্য একটি ভালো জায়গা:
- মোমো – মাংস বা সবজি দিয়ে ভরা ডাম্পলিং, যেগুলো ভাপানো বা ভাজা হয়।
- থুকপা – সবজি বা মাংস মেশানো একটি পুষ্টিকর নুডল স্যুপ।
- থেনথুক – হাতে তৈরি চ্যাপ্টা, আয়তাকার নুডল দিয়ে প্রস্তুত থুকপা।
- পোচা – লবণাক্ত চা, যা মাখনের সাথে মেশানো হয়; এটি একটি তিব্বতি প্রধান খাদ্য এবং সাধারণত তিব্বতি বাটার টি (Tibetan Butter Tea) নামে পরিচিত।
কোথায় খাবেন
[সম্পাদনা]
হালনাগাদ এই বিভাগে এবং নীচের সমস্ত খাবারের তালিকা ২০২৩ সালের আগস্ট মাসে পর্যালোচনা করা হয়েছে। আমরা আশা করি এটি আপনার জন্য সহায়ক হবে। কোনো মন্তব্য বা আপডেটের প্রস্তাব থাকলে, অনুগ্রহ করে আলাপ পাতায় আপনার মতামত জানান। |
ম্যাকলিওডগঞ্জ খাওয়া-দাওয়ার জন্য একটি দারুণ জায়গা, এবং এখানে প্রচুর রেস্তোরাঁ রয়েছে, বিশেষ করে মধ্য থেকে উচ্চমানের রেস্তোরাঁ, যেগুলো বিদেশি পর্যটকদের জন্য উপযোগী।
ভাগসু এবং ধর্মকোটেও দারুণ স্থানীয়, ফিউশন এবং বিদেশি খাবারের রেস্তোরাঁ রয়েছে—হিউমাস এবং ফালাফেল এখানে অস্বাভাবিক নয়।
ধর্মশালায় খাবারের দাম সাধারণত ভারতের অন্যান্য (পর্যটকবিহীন) অঞ্চলের তুলনায় ৫০-১০০% বেশি হয়। এছাড়াও, বিদেশি খাবারের ক্ষেত্রে প্রায়ই অতিরিক্ত মূল্য ধার্য করা হয়।
ম্যাকলিওডগঞ্জ
[সম্পাদনা]সস্তা
[সম্পাদনা]- 1 কমন গ্রাউন্ড ক্যাফে, তুষিতা সড়ক (ম্যাকলিওডগঞ্জের প্রধান চত্বর বা চৌকের ১০০ মিটার উপরে।), ☎ +৯১ ৯৮১৬২৭৩২৪০, +৯১ ১৮৯২২২০২৬৪। একটি অলাভজনক ক্যাফে। এটি চীনা এবং তিব্বতীদের মধ্যে ঐক্য এবং বোঝাপড়া বৃদ্ধির জন্য আলোচনার স্থান হিসেবে তৈরি করা হয়েছে। এখানে অনেক আলোচনা ও প্রদর্শনী হয় যা দুই সংস্কৃতির মধ্যে সম্প্রীতি বাড়ায়।
- 2 জেজেআই এক্সাইল ব্রাদার্স মম’স কিচেন, ভাগসু সড়ক (ম্যাকলিওডগঞ্জের প্রধান চত্বর থেকে কিছুটা দূরে, ডান দিকে, পিস কফি হাউস এবং কুংগা গেস্টহাউসের মধ্যে।)।
সকাল ৮:৩০–রাত ১০টা। রেস্টুরেন্টে মাত্র ৫টি টেবিল, একটি কাউন্টার এবং একটি পোষা কুকুর রয়েছে। এটি "জেজেআই এক্সাইল ব্রাদার্স" নামে পরিচিত তিনজন তিব্বতি সংগীতশিল্পী ভাইয়ের মালিকানাধীন। প্রতি রবিবার সন্ধ্যা ৭:৩০-এ তারা রেস্টুরেন্টে লাইভ পারফর্ম করেন। এখানে ভালো মানের তিব্বতি খাবার পাওয়া যায়। ৫ ধরনের থুকপা এবং থেনথুকের দাম ₹৫০–৮০। বাদামী আটা দিয়ে তৈরি মোমোর দাম ₹৫০–৭০, যেখানে বিরল পালং শাকের মোমোও রয়েছে। এছাড়াও, টিংমো (সবজির সাথে পরিবেশিত বাষ্পে রান্না করা রুটি) পাওয়া যায় ₹৬০–৭০ দামে। সবজি ও ফলের সালাদ ₹৪০–৬০ দামে পাওয়া যায়। মিষ্টির মধ্যে রয়েছে ভেগান চকলেট কেক, বাদাম যোগে রাম কেক এবং বিভিন্ন ধরণের প্যানকেক, যার দাম ₹৪০–৬০। পোরিজ এবং তাজা ফলের রসের দাম ₹৪০–৫০। যদিও খাবারের পরিমাণ একটু কম, তবে রেস্টুরেন্টে একটি বইয়ের তাক আছ। এই বইগুলি পড়াও যায়।
- 3 ম্যাকলিও মোমোস, টিপা সড়ক (ম্যাকলিওডগঞ্জের প্রধান চত্বর বা চৌকের উপরে ডান দিকে প্রথম বাড়ি বা কুঁড়েঘর)।
গ্রীষ্মকালে সকাল ৭:৩০ থেকে রাত ৯:৩০ পর্যন্ত এবং শীতকালে সকাল ৮টা থেকে রাত ৯:৩০ পর্যন্ত।। ক্যাফেটি খুব সাধারণ, খানিকটা পুরনো দেখতে হলেও এর মোমোর জন্য বিখ্যাত। এখানকার মেনুতে ঐতিহ্যবাহী খাবারের সৃজনশীল রূপ দেওয়া হয়েছে, যা বড় বড় রেস্টুরেন্টেও সহজে পাওয়া যায় না। ক্যাফেটির ১২ পৃষ্ঠার দ্বিভাষিক মেনু (ইংরেজি এবং জাপানি) রয়েছে। নিরামিষাশীদের জন্য ৯ ধরনের মোমো রয়েছে, যার দাম একটি প্লেটের জন্য ₹৫০–৭০ (১০–১২টি মোমো)। আমিষভোজীদের জন্য ৫ ধরনের মোমো পাওয়া যায়, যার দাম ₹৬০–৮০ (৩–১২টি মোমো)। তিব্বতি খাবারের মধ্যে থুকপার ৯টি ভিন্ন ভিন্ন ধরন রয়েছে। পাশাপাশি পশ্চিমা ও তিব্বতি প্রাতঃরাশে প্যানকেক, ওমলেট এবং মুসলির মতো খাবার পাওয়া যায়। চিনা খাবারের মধ্যে ৭ ধরনের চাউমিন রয়েছে। এখানকার তিব্বতি রুটি বড় আকারের হয়। খাবারের দাম ₹২৫–৮০ পর্যন্ত।
₹25–80।
- 4 নিকের ইতালীয় রান্নাঘর (ম্যাকলিওডগঞ্জের প্রধান চত্বর থেকে ৫ মিনিটের হাঁটা দূরত্ব)।
সকাল ৬টা থেকে রাত ৯টা। এখানে তুলনামূলকভাবে মাঝারি মানের পশ্চিমা খাবার এবং কিছু তিব্বতি খাবার পাওয়া যায়। তালিকায় ১৯৪টি খাবারের ধরণ রয়েছে। রেস্তরাঁটি আলো-বাতাসপূর্ণ একটি বড় ঘর এবং পেছনে একটি ছাদ রয়েছে, যেখান থেকে ম্যাকলিওডগঞ্জ উপত্যকা এবং কাংরা উপত্যকার দারুণ দৃশ্য দেখা যায়। পাশের গ্রিন গ্রিন রেস্তোঁরাতে ও পিস কফি হাউসের মতো এখানেও চমৎকার দৃশ্য উপভোগ করা যায়। একটি ছোট লাইব্রেরি ও জনপ্রিয় নোটিশবোর্ডও আছে। জায়গাটি ভিড় হলে একটু কোলাহলপূর্ণ হয়ে ওঠে।
₹৩০–১৫০।
- 5 তাখিয়েল পিস ক্যাফে, তাখিয়েল অতিথিশালা, যোগিওয়াড়া সড়ক (ম্যাকলিওডগঞ্জের প্রধান চত্বর থেকে ১০ মিনিটের হাঁটা দূরত্ব; রাস্তার সবজি বিক্রেতাদের পাশে, রাস্তা থেকে কয়েক ধাপ সিঁড়ি উপরে)। এই ক্যাফেটি খুব সাধারণ এবং সরল মানের। এখানে প্রাতঃরাশের জন্য ডিমের নানা রকম পদ (₹২০–৪৫), পোরিজ (মিশ্র ফল দিয়ে ₹৬৫), টোস্ট, স্যান্ডউইচ (তোফু স্যান্ডউইচ ₹৪৫), বিভিন্ন ধরনের রুটি (₹৫–২৫; পিনাট বাটার, জ্যাম বা মধুর জন্য অতিরিক্ত খরচ), এবং প্যানকেক (₹৪০–৭০; মিশ্র ফল-চকলেট প্যানকেক ₹৭০) পাওয়া যায়। তিব্বতি খাবারের মধ্যে থুকপা (₹৪০–৭০) এবং মোমো (ভাপা ₹৪০–৫০; ভাজার জন্য ₹১০ অতিরিক্ত) পরিবেশিত হয়, তবে এদের মান অনিশ্চিত। বিভিন্ন স্বাদের ভালো লাসি (যেমন আপেল লাসি ₹২০–৩৫) পাওয়া যায়।
- 6 রেওয়া ক্যাফে, যোগিওয়াড়া সড়ক (ডাকঘর থেকে ৫ মিনিট নিচে পাহাড়ের দিকে)। এখানে ভালো তিব্বতি খাবার পাওয়া যায়।
- 7 শাংগ্রি লা রেস্টুরেন্ট, যোগিওয়াড়া সড়ক (বাস স্টপের কাছাকাছি)। এই ছোট রেস্টুরেন্টটি সন্ন্যাসীরা পরিচালনা করেন এবং এর আয় গিউডমেড মঠের জন্য ব্যবহৃত হয়। প্রাতঃরাশে "শাংগ্রি লা স্যান্ডউইচ" চেখে দেখতে পারেন। রাত্রের খাবারও মানসম্মত এবং মূল্যবান।
- 8 ওয়েজার বেকারি, যোগিওয়াড়া সড়ক (ব্ল্যাক ম্যাজিকের নিচে, যোগিওয়াড়া সড়কের, প্রধান চত্বর থেকে ১০০ মিটার নিচে)।
যোগিওয়াড়া। এখানে প্রতিদিন মানসম্মত উপকরণ দিয়ে চমৎকার পেস্ট্রি বানানো হয়। মালিক এবং বেকার, সাঙ্গমো, একজন তরুণ তিব্বতি যিনি ক্রেতাদের সাথে গল্প করতে ভালোবাসেন। এখানে ওয়ালনাট টার্ট, চকলেট চিলি ললিপপ, ক্যাপুচিনো, ভেগান কেক (গ্লুটেন-মুক্ত বিকল্পসহ), এবং তাজা বিন থেকে তৈরি কফি পাওয়া যায়। ১৫ ধরনের গরম চা, হট চকোলেট, ভারতীয় চা, মিল্কশেক এবং অন্যান্য ঠান্ডা পানীয় পরিবেশিত হয়। এছাড়া এখানে একটি ছোট লাইব্রেরি আছে, যেখানে ভালো বইয়ের সংগ্রহ রয়েছে।
₹৫০–১৫০।
মাঝারি বাজেট
[সম্পাদনা]- 9 জিমির ইতালীয় রান্নাঘর, যোগিওয়াড়া সড়ক (ম্যাকলিয়ডগঞ্জের প্রধান চত্বর বা চক থেকে কয়েক ধাপ দূরে, বৌদ্ধ স্তূপ পেরিয়ে বাঁ দিকে, রাস্তার একতলা ওপরে)। সুন্দর সাজসজ্জা, যেখানে পুরনো এবং আধুনিক সিনেমার পোস্টার রয়েছে। তবে কর্মীরা কিছুটা অপ্রশিক্ষিত এবং মালিকদের নজরের বাইরে কাজ করে বলে মনে হয়। এখানকার খাবার শহরের অন্যান্য ইতালীয় খাবারের চেয়ে ভালো। সালাদ অসাধারণ এবং পাস্তা (নাপোলিতানা, আররাবিয়াতা,কোয়াট্রো ফর্মাজি, পুটানেস্কা) এবং পিজ্জার মানও গ্রহণযোগ্য।
₹১০০–১৩০।
- 10 লামোর ক্রসঁ, ভাগসু সড়ক, ☎ +৯১ ৯৮৮২৩ ৭১৫০৭, ইমেইল: lhamotso@gmail.com। একটি সাধারণ কিন্তু স্টাইলিশ ক্যাফে, যেটি সম্ভবত ম্যাকলিয়ডগঞ্জের সবচেয়ে অবমূল্যায়িত স্থান। এখানে প্রাতঃরাশ, স্যান্ডউইচ, স্যুপ, সালাদ, ডেজার্ট, কফি এবং চা পরিবেশন করা হয়। এখানে নিরামিষ খাবারের ভালো বৈচিত্র্য রয়েছে। প্রতিদিন সকালে লামো নিজে তাজা রুটি তৈরি করেন। দ্বিতীয় তলায় জাপানি শৈলীতে কুশন এবং তিব্বতি কার্পেটের উপর আরামদায়ক বসার ব্যবস্থা রয়েছে। ছাদ থেকে চমৎকার দৃশ্য উপভোগ করা যায়।
- 11 লুং-টা, যোগিওয়াড়া সড়ক (শহরের দক্ষিণ প্রান্তের কাছে)।
সোমবার থেকে শনিবার দুপুর ১২টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত, রোববার বন্ধ। চমৎকার জাপানি খাবার পরিবেশন করে। প্রতিদিনের বিশেষ মেনুতে নজর দিন। এখানে একটি ছোট পোশাকের দোকানও রয়েছে, যেখানে তিব্বতি অনুপ্রাণিত উচ্চমানের ফ্যাশন বিক্রি হয়। এটি একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান। এর আয় সাবেক রাজনৈতিক বন্দীদের সাহায্য ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা নথিভুক্ত করার কাজে ব্যবহৃত হয়।
- 12 পেমা থাংয়ের অতিথিশালা, ভাগসু সড়ক (ভাগসু হোটেলের বিপরীতে)।
প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত। মহাদেশীয় এবং স্থানীয় ধাঁচের নিরামিষ খাবার পরিবেশন করা হয়। তেলে ভাজা কলা ও বাদামের খাবার এবং পেপারনি পিজ্জা অবশ্যই চেষ্টা করে দেখুন। এ ছাড়াও এখানে দারুণ থেনথুক পরিবেশন করা হয়।
হাইনা
[সম্পাদনা]সস্তা
[সম্পাদনা]- 13 ফ্রেন্ডস কর্নার ক্যাফে। স্বল্প মূল্যের বিভিন্ন খাবার পাওয়া যায়। বৃষ্টি থেকে সুরক্ষিত একটি ছোট্ট ঝুপড়ির মধ্যে অবস্থিত। নিয়মিত ক্রেতাদের আনাগোনা থাকে এবং খাবারের বৈচিত্র্যও হরেকরকম।
ডাল – ₹৯০, বোঁদে রায়তা – ₹৯০।
- 14 হিনা ক্যাফে। তেমন জাঁকজমকপূর্ণ নয়, তবে এটি এলাকায় সবচেয়ে সস্তার খাবারের ঠিকানা। দুই ভাই মিলে এটি চালান। এখানে একটি বড় টেরেস রয়েছে, যেখানে বসে গালু জলপ্রপাতের দিকে পায়ে হাঁটা মানুষ বেশি দেখা যায়।.
চা – ₹২০, পরোটা – ₹৫০।
- 15 টিন টিন ক্যাফে। আরেকটি বাজেট উপযোগী ক্যাফে, যেখানে সুস্বাদু চাউমিন পরিবেশন করা হয়। মূল চিহ্নিত স্থানে ছোট্ট একটি ঝুপড়ি থাকলেও, প্রায় ১০০ মিটার দূরে একটি ছোট ক্যাফে রয়েছে, যেখানে বসার ভালো ব্যবস্থা আছে।
ডিম চাউমিন – ₹১৭০।
মাঝারি
[সম্পাদনা]- 16 ইয়ং মঙ্ক ক্যাফে। এটি একটি হোস্টেল, যার বড় রান্নাঘর রয়েছে ও এখানে সুন্দর দৃশ্য উপভোগ করার সুযোগ রয়েছে।
চা – ₹৫০।
বিলাসবহুল
[সম্পাদনা]- 17 কালি যুগা বার্বিকিউ। এটি মূলত রাশিয়ান ভাষাভাষী কিছু মানুষের পরিচালিত একটি রেস্তোরাঁ, যেখানে বিভিন্ন ধরনের মাংসের পদ পাওয়া যায়। পশ্চিমা মানের তুলনায় এটি সস্তা হলেও বেশিরভাগ ভারতীয়দের জন্য এখানে খাওয়া বেশ ব্যয়বহুল।
₹৫০০ বা তার বেশি।
পানীয়
[সম্পাদনা]ম্যাকলিওডগঞ্জে বিশুদ্ধ জলের বোতল ভর্তি করার ভালো ব্যবস্থা রয়েছে। আপনি মন্দির সড়কের এলএইচএ, ভাগসু সড়কের পরিবেশ শিক্ষা কেন্দ্র, আর যোগিওয়াড়া সড়কের ডগ্গা-সেন্টার থেকে বিনামূল্যে বা স্বল্প খরচে জল ভরতে পারেন।
এছাড়া, কিছু রেস্তোরাঁতেও এই সুবিধা আছে। যেমন নিক'স-এ ₹৫ এবং গ্রিন হোটেল-এ ₹১০ দিয়ে বিশুদ্ধ জল ভর্তি করা যায়। যদি বাইরের জলে ওপর নির্ভর করতে না চান, তবে এসব জায়গা আপনার জন্য ভালো বিকল্প হতে পারে।
কফি
[সম্পাদনা]উপরের তালিকায় থাকা অনেক রেস্তোরাঁ ও বেকারিতে কফি বা চা উপভোগ করার দারুণ সুযোগ আছে। সাথে মনোরম দৃশ্যও উপভোগ করতে পারবেন। এখানে দেখুন
- 1 মুনপিক এসপ্রেসো, মন্দির সড়ক, ম্যাকলিওডগঞ্জ (মুখ্য চত্বর বা চক থেকে ১০ মিনিট হাঁটা)।
সকাল ৭টা – রাত ৮টা। এখানে ₹৪০–৭০ টাকায় কফি পাওয়া যায়। যদিও ম্যাকলিওডগঞ্জে আরও ভালো কফির বিকল্প আছে, তবে এটি বেশ আরামদায়ক একটি ক্যাফে। ক্যাফেটি ভারতীয় মালিকানাধীন হলেও সমস্ত কর্মচারী তিব্বতীয়। এখানে ছোট কিন্তু ভালো মানের স্যান্ডউইচ এবং প্রাতরাশ পাওয়া যায়। বিভিন্ন ধরনের চা, বিশেষ করে হার্বাল চা (₹৫০–৬০) পাওয়া যায়। এটি ম্যাকলিওডগঞ্জের কয়েকটি ক্যাফের মধ্যে একটি যেখানে বিনামূল্যে ও ভালো মানের ওয়াই-ফাই আছে। তবে, মেনুতে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা আছে যে, যদি কেউ অনেকক্ষণ ইন্টারনেট ব্যবহার করেন, তাহলে কিছু অতিরিক্ত খাবার অর্ডার করাটা ভালো হবে।
₹৫০–১২০।
সুরা
[সম্পাদনা]- এক্স সাইট, প্রধান চক, ম্যাকলিওডগঞ্জ। কয়েক বছর আগে পর্যন্ত জায়গাটি জনপ্রিয় ছিল, তবে এখন সেই জৌলুস কিছুটা কমে গেছে। এটি ম্যাকলিওডগঞ্জের একমাত্র নাইটক্লাব যেখানে নাচের ফ্লোর আছে। এখানে রাত ১টা পর্যন্ত ভারতীয় এবং পশ্চিমা গান বাজানো হয়।
রাত্রিযাপন
[সম্পাদনা]
হালনাগাদ এই বিভাগে এবং নীচের সমস্ত খাবারের তালিকা ২০২৩ সালের আগস্ট মাসে পর্যালোচনা করা হয়েছে। আমরা আশা করি এটি আপনার জন্য সহায়ক হবে। কোনো মন্তব্য বা আপডেটের প্রস্তাব থাকলে, অনুগ্রহ করে আলাপ পাতায় আপনার মতামত জানান। |
ম্যাকলিওডগঞ্জে থাকার জন্য অনেক জায়গা আছে, তবে এর প্রধান রাস্তাগুলো, বিশেষ করে ভাগসু সড়ক, ভারতের অন্যান্য ব্যস্ত এলাকার মতোই গাড়ি, মোটরবাইক ও অটোরিকশার আওয়াজে ভরা। উপযুক্ত থাকার জায়গা খুঁজে পাওয়া সহজ—শুধু একটু হাঁটুন আর দরদাম করুন। কোনো হোটেল পছন্দ করার আগে অন্তত দুটো আলাদা ঘর দেখে নেওয়াই ভালো। ম্যাকলিওডগঞ্জে থাকার জন্য উল্লেখযোগ্য দুটি হোস্টেল হলো 1 মিত্র ২ এবং 2 হোস্টেলার। এখানে সরাসরি গিয়ে ঘর নেওয়াটা বেশ সুবিধাজনক হতে পারে।
ভাগসু এবং হাইনিতে তুলনামূলকভাবে বেশি সংখ্যক আবাসিক ও ব্যাকপ্যাকারদের দেখা যায়, যেখানে সাধারণ অতিথিশালা ও হোটেলও রয়েছে। উল্লেখযোগ্য আবাসিকের মধ্যে 3 মিত্র এবং 4 ইয়ং মঙ্ক রয়েছে। এখানে সরাসরি গিয়ে রুম নেওয়া বেশ সুবিধাজনক হতে পারে।
যারা দীর্ঘ সময় থাকার পরিকল্পনা করছেন, তারা জোগিওয়ারা সড়কের ওপর ইয়ংলিং সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামতে পারেন। এই এলাকায় প্রায় এক ডজন সস্তা ও ভালো থাকার জায়গা রয়েছে, যেগুলো থেকে দারুণ দৃশ্য উপভোগ করা যায়।
সস্তা
[সম্পাদনা]- 5 কর্নেলের আরামদায়ক কর্নার, ম্যাকলিয়ডগঞ্জ (দারি-এর কাছাকাছি), ☎ +৯১ ৯৪ ১৮৭২ ৪৮৯৭, +৯১ ৯৮ ১৬৭৭ ০৮৯৯ (বুকিং), ইমেইল: colkrishan@yahoo.co.in। এই অতিথিশালার মালিক একজন অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা ও তার স্ত্রী। জায়গাটি নিরাপদ ও নিরিবিলি, যেখানে কেউ বিরক্ত করবে না। এখানে মাত্র ৩টি কক্ষ আছে, তাই পরিবারের মতো পরিবেশ পাবেন। পরিষ্কার বিছানার চাদর ও নিরাপদ পানীয় জল পাওয়া যায়। স্থানীয় ‘ধাম’ (মধ্যাহ্নভোজ) খাওয়ার ব্যবস্থাও রয়েছে।
₹৬০০-৮০০, (কতদিন থাকবেন তার উপর দরদাম করা যেতে পারে)।
- 6 লর্ড কৃষ্ণা বুটিক স্টে, মন্দির সড়ক, ম্যাকলিয়ডগঞ্জ, ☎ +৯১ ১৮ ৯২২২ ১৫৮৮। পরিচ্ছন্ন কক্ষ, চা-কফি ও স্বস্তিদায়ক পরিবেশ। এখানে বাইক ভাড়ার সুবিধাও পাওয়া যায়।
- 7 রিভার ভিউ অ্যাপার্টমেন্টস, যোগিওয়াড়া, হেরু, ☎ +৯১ ৯৮ ১৬২০ ৬৪০৬, +৯১ ৯৮ ১৬২৯ ২২২৮। প্রতিটি কক্ষের সঙ্গে ঝুলবারান্দা ও রান্নাঘর রয়েছে। অতিথিদের কাছ থেকে ভালো রেটিং পেয়েছে।
- 8 শ্রী অতিথিশালা, ম্যাকলিয়ডগঞ্জ (মূল চত্বরে ষ থেকে ২০০ মিটার উপরে স্বর্গ আশ্রম সড়ক বা তুষিতা সড়কের দিকে), ☎ +৯১ ৯৪১৮৯২০০০৩, +৯১ ৮৮৯৪০৬০৫০৫। খুবই শান্ত পরিবেশে অবস্থিত একটি পারিবারিক অতিথিশালা। ডাবল ও সিঙ্গেল রুম ভালো দামে পাওয়া যায়। এই অতিথিশালাটি দেবদারু ও পাইন বনের মধ্যে অবস্থিত।
- 9 তুষার ব্যাঘ্র অতিথিশালা, ম্যাকলিয়ডগঞ্জ। শহরের কেন্দ্রস্থলে একটি ভালো বাজেট হোটেল।
₹১৭৫।
- 10 তারা বেড অ্যান্ড ব্রেকফাস্ট, যোগীওয়ারা সড়ক, ম্যাকলিয়ডগঞ্জ (পিংক হাউসের পাশে, ইয়ংলিং স্কুলের ঠিক পাশেই। এখানে পৌঁছাতে হলে কিছুটা সিঁড়ি নামতে হবে। বাইরে যেতে চাইলে সেই সিঁড়ি বেয়ে উঠতে হবে।)। স্নেহশীল ও যত্নবান হোস্ট সেপাল এটি পরিচালনা করেন। জায়গাটি আরামদায়ক, বিছানা ও বাথরুম পরিষ্কার। ঝুলবারান্দা থেকে বরফে ঢাকা পাহাড় দেখা যায়। একজন পরিচারক আছেন, তিনি সকালের নাস্তা বানান এবং সাধারণত কাছাকাছিই থাকেন। তবে সবসময় কাউকে পাবেন না। এখানে বিছানা, বাথরুম ও গরম জল পাওয়া যায়।
₹৮০০–১,০০০।
- 11 জুস্টা বার্ডিং রিসর্ট অ্যান্ড স্পা, ইন্দ্রুনাগ, প্যারাগ্লাইডিং পয়েন্টের কাছে, তাহু, চোহলা, ☎ +৯১ ৯৮১৬-৩৪৩-২৫৫, +৯১-৯৮১৬-৩৭৭-৭০৯, নিঃশুল্ক-ফোন: +৯১-৯৫৯০-৭৭৭-০০০, ইমেইল: book@justahotels.com।
মধ্যম মানের
[সম্পাদনা]- 12 অসপিশিয়াস হিম ভিউ হোটেল, যোগীওয়ারা সড়ক, ম্যাকলিয়ডগঞ্জ (লেডিজ ভেঞ্চার হোটেলের নিচে), ☎ +৯১ ৯৪ ১৮২৩ ৬৬০৩। নিজস্ব ঝুলবারান্দা থেকে বরফে ঢাকা ধৌলাধার পর্বতমালার দৃশ্য দেখা যায়। কক্ষগুলো পরিষ্কার এবং সংযুক্ত বাথরুম রয়েছে। প্রতিটি কক্ষ বৌদ্ধধর্মের আটটি শুভ চিহ্নের নামে রাখা হয়েছে এবং সেই অনুযায়ী সাজানো হয়েছে।
- 13 পেমা থাংয়ের অতিথিশালা (ভাগসু হোটেলের বিপরীতে), ম্যাকলিয়ডগঞ্জ, ☎ +৯১ ১৮ ৯২২২ ১৮৭১। একটি পুরনো, তিব্বতি-পরিচালিত অতিথিশালা, যেটি নিরিবিলি গলির মধ্যে অবস্থিত। এখান থেকে কাংড়া উপত্যকার দারুণ দৃশ্য দেখা যায়। কক্ষগুলো কিছুটা পুরনো হয়ে উঠলেও অত্যন্ত পরিষ্কার ও আরামদায়ক। প্রতিটি কক্ষে টিভি ও ২৪ ঘণ্টা গরম জল পাওয়া যায়। দীর্ঘ সময় থাকলে রান্নার সুবিধাও ব্যবহার করা যাবে।
দুজনের জন্য কক্ষ ₹৭৭০–১,১০০, গ্যাস হিটার (শীতকালে দরকারি) ₹২০০/দিন অতিরিক্ত।
অত্যাধুনিক ও বিলাসবহুল
[সম্পাদনা]- 14 গ্লেনমুর কটেজেস, মল সড়ক, ম্যাকলিয়ডগঞ্জ (ম্যাকলিয়ডগঞ্জ থেকে প্রায় ১ কিমি দূরে, যে রাস্তা ডাল হ্রদ/টিসিভির দিকে যায়), ☎ +৯১ ১৮ ৯২২২ ১০১০। দেবদারু, ওক ও রডোডেনড্রনের মিশ্র বনভূমির মাঝে অবস্থিত, যেখান থেকে কাংড়া উপত্যকার অপূর্ব দৃশ্য দেখা যায়। নিরিবিলি ও শান্ত ছুটি কাটানোর জন্য আদর্শ জায়গা। অনেক সেলিব্রিটি ও বিশিষ্ট ব্যক্তিরাও এখানে আসেন।
নিরাপদ থাকুন
[সম্পাদনা]এই জায়গাটি সাধারণত নিরাপদ, তবে সতর্ক থাকা ভালো। সব সময় সতর্ক থাকুন, বিশেষ করে রাত ৯টার পর বাইরে থাকলে বেশি সতর্কতা অবলম্বন করুন।
পরবর্তী গন্তব্য
[সম্পাদনা]- অমৃতসর – শিখদের পবিত্র শহর এবং এর স্বর্ণ মন্দিরে পৌঁছাতে বাসে প্রায় ৬ ঘণ্টা সময় লাগে। বাস সকাল ৫টায় নিচের বাসস্টেশন থেকে ছাড়ে। অথবা প্রথমে পাঠানকোট হয়ে যেতে পারেন, সেখান থেকে বিভিন্ন মাধ্যম রয়েছে এবং ট্রেনেও যাওয়া যায়।
- বীর – একটি ছোট গ্রাম যেখানে তিব্বতি ও ভারতীয় জনগোষ্ঠী বসবাস করে। এটি বৌদ্ধ মঠ ও প্যারাগ্লাইডিং সেন্টারের জন্য বিখ্যাত। এখানে বিশ্বের দ্বিতীয় উচ্চতম প্যারাগ্লাইডিং স্থান, বীর-বিলিং, রয়েছে। এটি এখন একাধিক রোমাঞ্চকর ক্রীড়ার কেন্দ্র হয়ে উঠছে।
- ডালহৌসি – একটি ছোট পাহাড়ি শহর, যা পাঠানকোট-এর কাছে অবস্থিত।
- মানালি – আরও গভীর পার্বত্য অঞ্চলে যাওয়ার জন্য পরবর্তী প্রধান গন্তব্য।
- পালমপুর – একটি সুন্দর উপত্যকা, যা এর চা বাগান, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এবং মন্দিরের জন্য পরিচিত।
- সিধবাড়ি – নিম্ন ধর্মশালার বাইরে অবস্থিত একটি চমৎকার স্থান। এটি পর্যটকদের ভিড় থেকে দূরে থাকার জন্য উপযুক্ত এবং উপত্যকার এক সাধারণ কৃষি গ্রামে জীবনের স্বাদ নিতে আদর্শ।
{{#মূল্যায়ন:শহর|guide}}