ফয়সালাবাদ (উর্দু: فیصل آباد; পূর্বে লিয়ালপুর নামে পরিচিত ছিল) হলো পাকিস্তানের তৃতীয় বৃহত্তম এবং পাঞ্জাব প্রদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর।
কীভাবে যাবেন
[সম্পাদনা]
আকাশপথে
[সম্পাদনা]ফয়সালাবাদে পাকিস্তানের বড় শহর এবং আঞ্চলিক কেন্দ্রগুলো থেকে আন্তর্জাতিক উড়ান সেবা রয়েছে।
- 1 ফয়সালাবাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর।
সড়কপথে
[সম্পাদনা]ফয়সালাবাদ ইসলামাবাদ (জাতীয় রাজধানী), লাহোর (প্রাদেশিক রাজধানী) এবং অন্যান্য বড় শহরগুলোর সঙ্গে মোটরপথ ও জাতীয় মহাসড়কের মাধ্যমে সংযুক্ত। আপনি সহজেই এই শহরগুলো থেকে ফয়সালাবাদে যাওয়ার জন্য ঢেউ এক্সপ্রেস, খান ব্রাদার্স, নাদির কোচ, রাভি এক্সপ্রেস, কোহিস্তান, নিয়াজি এক্সপ্রেস, নিউ সুবহান, হিলাল ট্রাভেলস এবং নিউ খান ইত্যাদি আরামদায়ক বাস ধরতে পারেন।
রেলপথে
[সম্পাদনা]ফয়সালাবাদ দেশের প্রধান শহরগুলোর সঙ্গে রেলপথে সংযুক্ত। লাহোর ও করাচিতে সাশ্রয়ী ও আরামদায়ক ট্রেন পরিষেবা উপলব্ধ রয়েছে।
শহরের মধ্যে যাতায়াতের জন্য রিকশা বা স্থানীয় ক্যাব ভাড়া করতে পারেন। এছাড়া "মেট্রো" নামে একটি বাস পরিষেবা চালু রয়েছে: যেটি শহরের মধ্যেও পরিচালিত হয়। তবে ভ্রমণের প্রিয় মাধ্যম হিসাবে সবাই অটোরিকশাকেই বেছে নেয়।
- 2 ফয়সালাবাদ রেলওয়ে স্টেশন (فيصل آباد ریلوے اسٹیشن), রাজবা সড়ক।
ঘুরে দেখুন
[সম্পাদনা]রিকশায় করে
[সম্পাদনা]রিকশা শহরের মধ্যে দ্রুত ও সাশ্রয়ী মূল্যের যাতায়াতের সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম।
ট্যাক্সিতে করে
[সম্পাদনা]বিমানবন্দরে ট্যাক্সি পরিষেবা উপলব্ধ। এছাড়া ভাড়ায় চালিত বাস এবং গাড়িও রয়েছে।
দেখুন
[সম্পাদনা]
- 1 লিয়ালপুর জাদুঘর।
- ঘন্টা ঘর (ঘড়ি টাওয়ার)। এটি ফয়সালাবাদের প্রধান বাজার ও শহরের প্রাচীনতম এলাকা। এই বাজারে মোট আটটি বাজার রয়েছে, যা একসঙ্গে একটি "ইউনিয়ন জ্যাক" (ব্রিটিশ পতাকা) গঠন করে। এটি ব্রিটিশ রাজত্বকালের নির্মাণকাজের অংশ। এখানে আপনি ব্রিটিশ আমলের স্থাপনার অবশিষ্টাংশ দেখতে পাবেন, যা পাকিস্তান গঠনের আগেই নির্মিত হয়েছিল।
- 2 পিটার ও পলের বড় গির্জা। ১৯৬৯ সালে নির্মিত এই বড় গির্জাটি ধর্মীয় সম্প্রদায়গুলোর মধ্যে ঐক্য ও বোঝাপড়ার প্রচারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।
- গাটওয়ালা উদ্যান, ফয়সালাবাদ-শেখুপুরা সড়ক। এটি বিদ্যালয় এবং পরিবারের জন্য একটি জনপ্রিয় বনভোজন কেন্দ্র।
- ডি-গ্রাউন্ড। এটি ঘণ্টা ঘরের পর শহরের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ বাজার। সন্ধ্যার সময় এই এলাকাটি সবচেয়ে ব্যস্ত থাকে। এখানে স্থানীয় লোকজন সাধারণত সন্ধ্যায় ঘুরতে বা কেনাকাটা করতে আসে। এছাড়াও এখানে অনেক রেস্তোরাঁ রয়েছে।
- জিন্নাহ উদ্যান। শহরের একটি সুন্দর উদ্যান, যা সাধারণত "কোম্পানি বাগ" নামে পরিচিত। এখানে স্যার চার্লস জেমস লিয়ালের সমাধি অবস্থিত। তিনি এই শহরের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন এবং তার সম্মানে শহরের নাম প্রথমে লিয়ালপুর রাখা হয়েছিল।
- এএম টেক্স জলপ্রপাত, এএম টেক্স স্কয়ার, আব্দুল্লাহপুর।
- ক্যানেল পার্ক, রাখ শাখা খালের পশ্চিম তীর। এটি পরিবার নিয়ে ঘোরার জন্য একটি চমৎকার জায়গা।
- ইকবাল স্টেডিয়াম। এটি একটি ক্রিকেট স্টেডিয়াম। এছাড়াও এখানে সিন্দাবাদ এবং ফানল্যান্ডের মতো বিনোদন পার্ক এবং অনেকগুলো দোকান রয়েছে।
কেনাকাটা
[সম্পাদনা]মুল বাণিজ্যিক এলাকাটি ডি-গ্রাউন্ড এলাকায় অবস্থিত, যেখানে শপিং কেন্দ্রগুলো রয়েছে।
- পোশাক - ফয়সালাবাদ তার কাপড় ও বস্ত্রশিল্প পণ্যের জন্য সারা বিশ্বে বিখ্যাত। এটি গৃহস্থালির কাপড় (বিছানার চাদর, পর্দা, তোয়ালে ইত্যাদি), ব্যক্তিগত পোশাক এবং হোসিয়ারি কেনার জন্য সবচেয়ে ভালো বাজার। এশিয়ার সবচেয়ে বড় কাপড়ের বাজার (এরশাদ ক্লথ মার্কেট) এখানেই অবস্থিত।
- ইমতিয়াজ সুপার মার্কেট (মিসাকুল মল), শেখুপুরা - ফয়সালাবাদ সড়ক, আশরাফাবাদের কাছে, ফয়সালাবাদের সবচেয়ে বড় মল।
- হাসান শপিং এরিয়া, রিপল সড়ক।
- আল ফাতাহ ডিপার্টমেন্ট স্টোর, সেন্টার পয়েন্ট, প্লাজা ঝারানওয়ালা সড়ক, কোহিনূর সিটি।
- লিয়ালপুর গ্যালারিয়া, ই ক্যানেল সড়ক, সাঈদ কলোনি নাসির উল্লাহ খান টাউন।
- দ্য গ্র্যান্ড এট্রিয়াম শপিং মল ফয়সালাবাদ[অকার্যকর বহিঃসংযোগ], ওয়েস্ট ক্যানেল সড়ক, ক্যানেল সড়ক, মনসুরাবাদের নিকটে। এখানে ফান সিটি আর্কেড রয়েছে।
- মেট্রো ক্যাশ অ্যান্ড ক্যারি - শপিং পয়েন্ট, ফয়সালাবাদ ইন্টারচেঞ্জের কাছে।

আহার
[সম্পাদনা]স্থানীয় বিশেষত্ব
[সম্পাদনা]- সমুচা - ফয়সালাবাদের সমুচা পাকিস্তানের সবচেয়ে সেরা। এগুলোর সাথে সমুচা চক নামে এক বিশেষ ধরনের চক উৎসর্গ করা হয়ে থাকে। এই সমুচাগুলো অন্যান্য সমুচার মতো নয় কারণ এখানে আপনি পেতে পারেন বিভিন্ন ধরণের চাটনি। খ্যাতনামা চাচা সমুচে ওয়ালা ডি-গ্রাউন্ড বাজারে রয়েছে। সেরা সমুচা পাওয়া যায় বাওয়ানাবাজার-গোলের কোণার দোকান থেকে।
- চা - ফয়সালাবাদের অন্যতম জনপ্রিয় চা স্পট মাদানপুরায় অবস্থিত।
- বিরিয়ানি এবং পোলাও - বিরিয়ানি এবং পোলাও খুবই জনপ্রিয়। জাহাঙ্গীরের মোরগ পোলাও দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয়। মিস্টার ফাতাহ প্রায় ৬০ বছর আগে তার ভাই মিস্টার জাহাঙ্গীরের নামে এটি প্রথম শুরু করেছিলেন, যার নাম তাবিশ বিরিয়ানি।
- ডাল-ভাত - ফয়সালাবাদের থেকে ভালো ডাল-ভাত আর কোনো শহরে পাওয়া যায় না। এটি স্থানীয়দের অন্যতম প্রিয় খাবার। জনপ্রিয় দোকানগুলো ঘন্টা ঘরের কাছে রয়েছে যেমন চাম্মা ডাল-ভাত এবং মুন্না ডাল-ভাত।
- পরোটা - ঘন্টা ঘরের পরোটা বিখ্যাত এবং এখানে রাতভর একটি বড় ধরনের ভিড় জমে থাকে। এগুলো বিভিন্ন মিশ্রণে পাওয়া যায় যেমন আলু, মিশ্র শাকসবজি, মুরগি ইত্যাদি।
রেস্তোরাঁ
[সম্পাদনা]- কক'এন'বুল, ☎ +৯২-৪১-৮৭৩৮৭৮৭। ঝটপট খাবার, চাইনিজ, শর্মা, স্টেক, ডি-গ্রাউন্ড
পানীয়
[সম্পাদনা]- রাবড়ি - এটি ফয়সালাবাদের মানুষের সবচেয়ে প্রিয় পানীয়। বিভিন্ন শুকনো ফল যেমন বাদাম, পেস্তা, ও অন্যান্য ফল দুধে মিশিয়ে এটি তৈরি করা হয় এবং এটি খুবই সুস্বাদু।
- লিমো পানি - এটি খুবই মজাদার। এটি তৈরি করা হয় লেবুর রস এবং পানির মিশ্রণে।
- লাচ্ছি - লাচ্ছি হলো ঐতিহ্যবাহী পাঞ্জাবি পানীয়। লাচ্ছি শহরের প্রতিটি অংশেই পাওয়া যায়। এটি দই দিয়ে তৈরি করা হয়। এক গ্লাস বা "পিয়ালা" লাচ্ছির দাম প্রায় ২০ টাকা।
ঘণ্টা ঘর চৌকের বাঙালি মিল্ক শপ লাচ্ছির জন্য খুবই বিখ্যাত জায়গা।
রাত্রিযাপন
[সম্পাদনা]স্বল্প বাজেট
[সম্পাদনা]- হোটেল গ্র্যান্ড, সুসান সড়ক, ব্লক জেড মদিনা টাউন, ☎ +৯২ ৩০২ ৭২৩৯৫৯৫।
$২৮।
- রিজকিউ হোটেল, পি-১৪৩ , স্টেশন চক মসজিদদের নিকটে, রাজবা সড়ক (রেলওয়ে স্টেশনের নিকটে), ☎ +৯২ ৪১ ২৬১৬৬৪৬।
- রাজ ওয়ান হোটেল, ২ চেনাব মার্কেট সুসান সড়ক (সোশ্যাল সিকিউরিটি হাসপাতালের নিকটে), ☎ +৯২ ৩৪ ৫৬৬৫ ৫৫৫৫, ইমেইল: shamsi2000pk@gmail.com।
৫০০০ রুপি।
মধ্যম বাজেট
[সম্পাদনা]- হোটেল ওয়ান ফয়সালাবাদ, ব্লক সি, ১ নং পিপলস কলোনি, ☎ +৯২ ৩৪১ ২২০১১১১। প্রাতঃরাশ এবং সুইমিং পুল।
$৪৬।
- আবারি এক্সপ্রেস হোটেল ফয়সালাবাদ, ১২সি ঝারানওয়ালা সড়ক, কোহিনূর সিটি (বাণিজ্যিক কেন্দ্র কোহিনূর সিটিতে), ☎ +৯২ ৪১ ৮৫৩৫৩০২।
$৪৯।
উচ্চ বাজেট
[সম্পাদনা]- রয়ালটন হোটেল, পি-১২৭০ পশ্চিম ক্যানেল সড়ক, আব্দুল্লাহপুর, ☎ +৯২ ৪১ ৮৭১৯৯০০। শহরের সেরা আবাসন।
$৬৮।
- 1 সেরেনা ফয়সালাবাদ হোটেল, ক্লাব রোড, সিভিল লাইনস, ☎ +৯২ ৪১ ১১১ ১৩৩ ১৩৩। এটি শহরের একমাত্র পাঁচ তারকা হোটেল, যার তিনটি রেস্তোরাঁ, প্রাতঃরাশ এবং বহিঃস্থ পুল রয়েছে।
সতর্কতা
[সম্পাদনা]যেকোনো জরুরী অবস্থায় পুলিশে কল করতে হলে যেকোনো ল্যান্ডলাইন ফোন থেকে ১৫ ডায়াল করুন। আপনি যদি মুঠোফোন ব্যবহার করেন তবে পুলিশের সাহায্যের জন্য ৯১১ ডায়াল করুন।
- অ্যাম্বুলেন্স সেবা: জরুরী অবস্থায় অ্যাম্বুলেন্স পেতে হলে যেকোনো ল্যান্ডলাইন বা মুঠোফোন থেকে ১১৫ ডায়াল করুন।
- জরুরী উদ্ধার: ১১২২ ডায়াল করুন। জরুরী সেবার নাম "রেসকিউ ১১২২"।
{{#মূল্যায়ন:শহর|ব্যবহারযোগ্য}}