বিষয়বস্তুতে চলুন

উইকিভ্রমণ থেকে

যারা কখনো গিনেস রেকর্ডের বই পড়েছেন তাদের কাছে রেকর্ডগুলো প্রায়শই চমকপ্রদ ও বিস্ময়কর। তবে মানুষ প্রায়শই প্রাকৃতিক রেকর্ড যেগুলো পৃথিবীতেই বিদ্যমান প্রাকৃতিক বিস্ময় ও ঘটনাবলী তা সাধারনত ভুলে যায়।

পৃথিবীর সবচেয়ে নাটকীয় স্থানগুলোতে ভৌগোলিক রের্কড রয়েছে। উত্তরতম এবং দক্ষিণতম বিন্দুগুলো তেমন কোন বিস্ময়কর নাহলেও রের্কডগুলো তাদের অবস্থান অনন্য ভ্রমণস্থল করে তুলেছে। এদিকে, সর্বোচ্চ উচ্চতা ও জলাশয়ের রেকর্ডগুলো বিস্ময়কর দৃশ্য প্রদান করে। পাশাপাশি আকর্ষণীয় ভ্রমণ গন্তব্য বা ভ্রমণ বিরতির স্থান হয়ে ওঠেছে।

গন্তব্যসমূহ

[সম্পাদনা]
মানচিত্র
ভৌগোলিক রেকর্ডের মানচিত্র

যদিও আঞ্চলিক চরমবিন্দু ও বৈশ্বিক চরমবিন্দুও রয়েছে (যেমন যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ বিন্দু) তবুও পৃথিবী জুড়ে অসংখ্য রেকর্ডভঙ্গকারী স্থান থাকার কারণে এখানে কেবল বৈশ্বিক রেকর্ডগুলোই অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এগুলো রেকর্ড অনুযায়ী নয় বরং অবস্থান অনুযায়ী তালিকাভুক্ত।

যে স্থানের নাম রেকর্ড ভেঙেছে তা গাঢ় হরফে এবং যে রেকর্ডটি ভেঙেছে তা তির্যক হরফে লেখা হয়েছে। প্রবেশযোগ্যতা বোঝায় কোনো গন্তব্যে পৌঁছানো কতটা সহজ বা কঠিন। এটি সহজ থেকে অত্যন্ত কঠিন পর্যন্ত পরিবর্তিত হতে পারে।

দিক নির্দেশক বিন্দু

[সম্পাদনা]

পৃথিবীর সর্বউত্তরের ও সর্বদক্ষিণের ভূমি বিন্দু

[সম্পাদনা]

•আর্কটিক উত্তরের দূরবর্তী অবস্থান ও অস্থায়ী দ্বীপগুলির অস্তিত্বের কারণে, গ্রিনল্যান্ডের উত্তরে পৃথিবীর সর্বউত্তরের ভূমি নিয়ে সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত নেই। এর ব্যতিক্রম 1 ক্যাফেক্লাবেন দ্বীপ (পৃথিবীর সর্বউত্তরের ভূমি)। এই বালুকাময় ও নির্জন দ্বীপটি কোনো আকর্ষণীয় স্থান নয়। তবে এটি সম্ভবত এই রেকর্ড ভেঙেছে। যদিও উত্তরে আরও কিছু ছোট বালুচর রয়েছে সেগুলো ২০১৮ সালের মধ্যে টিকে আছে কি না তা অনিশ্চিত। প্রবেশযোগ্যতা: অত্যন্ত কঠিন।

দক্ষিণ মেরু হলো পৃথিবীর সর্বদক্ষিণের ভূমি। যদিও ভূমি বরফস্তরের প্রায় ২৫০০ মিটার নিচে অবস্থিত। এখানে নিয়মিত পর্যটকবাহী বিমানের ব্যবস্থা রয়েছে। যার ভাড়া অতন্ত ব্যয়বহুল। প্রবেশযোগ্যতা: মাঝারি কঠিন। তবে উপকূল থেকে সংগঠিত স্কি-যাত্রায় যোগ দিলে প্রবেশযোগ্যতা অত্যন্ত কঠিন হয়।

মহাদেশগুলির সর্বউত্তরের বিন্দু

[সম্পাদনা]

এটি কিছুটা জটিল কারণ মহাদেশগুলোর উপকূল থেকে অনেক দ্বীপ রয়েছে। সাধারণত এই তালিকায় বড় দ্বীপগুলো অন্তর্ভুক্ত হয়। কিন্তু ছোট ছোট দ্বীপখণ্ডগুলোকে সাধারণত মহাদেশের সর্বউত্তরের বিন্দু হিসেবে ধরা হয় না।

তবে এর একটি ব্যতিক্রম হলো ওশেনিয়া। কারণ ওশেনিয়ার প্রায় সবই দ্বীপ নিয়ে গঠিত। তাই এই মহাদেশে ছোট দ্বীপগুলোও সর্বউত্তরের বিন্দু হিসেবে ধরা হয়।

নিচে তাদের অক্ষাংশ অনুযায়ী তালিকাভুক্ত করা হয়েছে (সবচেয়ে উত্তর থেকে দক্ষিণে):

  • সাইবেরিয়ার উত্তরে কিছু দ্বীপ রয়েছে, যার মধ্যে আছে 2 কমসোমোলেতস দ্বীপ (এশিয়ার সর্বউত্তরের বিন্দু)। এটি একটি বৃহৎ বরফাবৃত এলাকা। সঠিক বিন্দুটি হতে পারে- হয় ৮১.২১ ডিগ্রি উত্তর (যদি বরফের নিচে ভূমি না থাকে) অথবা ৮১.২৭ ডিগ্রি উত্তর (যদি ভূমি থাকে)। প্রবেশযোগ্যতা: অত্যন্ত কঠিন।
  • এই সর্বউত্তরের বিন্দুটি ততটা পরিচিত নয়। 3 রুডলফ দ্বীপ, ফ্রানৎস যোসেফ ভূমি, রাশিয়া (ইউরোপীয় রেকর্ড)। এটি সভালবার্ড থেকে সামান্য বেশি উত্তরে অবস্থিত। প্রবেশযোগ্যতা: কঠিন থেকে অত্যন্ত কঠিন।
  • ছোট দ্বীপ বাদ দিলে, আফ্রিকার সর্বউত্তরের ভূমি ভূমধ্যসাগরের পাশে। 4 বিজার্তে, তিউনিসিয়া (আফ্রিকার সর্বউত্তরের বিন্দুর কাছাকাছি শহর)। এই শহরটি তিউনিসের উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত এবং এর উত্তর প্রান্ত আফ্রিকার সর্বউত্তরের উপকূল চিহ্নিত করে। প্রবেশযোগ্যতা: মাঝারি সহজ।
  • প্রবালপ্রাচীর বাদ দিলে এটি হলো 5 গ্রিনদ্বীপ,হাওয়াই (ওশেনিয়ার সর্বউত্তরের বিন্দু)। তবে যদি যুক্তরাষ্ট্রের অঞ্চলগুলো বাদ দেওয়া হলে সর্বউত্তরের দ্বীপ হবে মার্শাল দ্বীপপুঞ্জ। প্রবেশযোগ্যতা (গ্রিন দ্বীপের জন্য): কঠিন। তবে কাছাকাছি হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জ সহজেই ঘোরা যায়।
  • কলম্বিয়াতে একটি বিরল জনবসতিপূর্ণ মরুভূমি অঞ্চল রয়েছে। 6 লা গুয়াজিরা উপকূল (দক্ষিণ আমেরিকার সর্বউত্তরের বিন্দু)। এটি অদ্ভুত মনে হতে পারে কিন্তু উত্তর ভেনেজুয়েলাতেও একই ধরনের মরুভূমি পাওয়া যায়। প্রবেশযোগ্যতা: মাঝারি কঠিন। সঠিক রাস্তা এই উপকূলে যায় না।

•অ্যান্টার্কটিকার মূল ভূখণ্ডের সর্বউত্তরের বিন্দু হলো যা অ্যান্টার্কটিক উপদ্বীপের প্রান্তে অবস্থিত। চিলির বার্নার্দো ও’হিগিন্স ঘাঁটি ৩০ কিমি দূরে অবস্থিত। এটি এতটাই উত্তরে যে এটি দক্ষিণ মেরু থেকে তিনগুণ বেশি দূরে অবস্থিত। দক্ষিণ আমেরিকার মূল ভূখণ্ড থেকে যার দূরত্ব ১৬০০ কিমি উত্তাল সমুদ্রে হয়। উপদ্বীপের বাইরে আরও দ্বীপ রয়েছে। যেগুলো ৬০ ডিগ্রি দক্ষিণ অক্ষাংশের দক্ষিণে রয়েছে। তারা একই অ্যান্টার্কটিক চুক্তির অধীনে মহাদেশের অংশ হিসেবে গণ্য হয়। সেই হিসেবে অ্যান্টার্কটিকার সর্বউত্তরের বিন্দু , এক শীতল হিমবাহ। উপদ্বীপে নিয়মিত ক্রুজ জাহাজ গেলেও খুব কমই এদিকে আসে। তাই কেপ ও এই দ্বীপ উভয়ের প্রবেশযোগ্যতা অত্যন্ত কঠিন।

মহাদেশগুলির সর্বদক্ষিণের বিন্দু

[সম্পাদনা]

নিচে তাদের অক্ষাংশ অনুযায়ী তালিকাভুক্ত করা হয়েছে (সবচেয়ে দক্ষিণ থেকে উত্তরমুখী):

•অ্যান্টার্কটিকার পৃথিবীর সর্বশেষ সর্বদক্ষিণের বিন্দু হলো দক্ষিণ মেরু

•দক্ষিণ আমেরিকার সর্বদক্ষিণের বিন্দু নির্দিষ্টভাবে বলা কঠিন। কারণ মহাদেশটির দক্ষিণ প্রান্ত অসংখ্য দ্বীপ নিয়ে গঠিত। তবে দক্ষিণ আমেরিকার সর্বদক্ষিণের দ্বীপ হলো 7 আইসলা হর্নোস (দক্ষিণ আমেরিকার সর্বদক্ষিণের দ্বীপ)। এই দ্বীপটিই মূলত কেপ হর্ন। এখানে একটি স্মৃতিস্তম্ভ রয়েছে। এটি দক্ষিণ আমেরিকার সর্বদক্ষিণের ভূমি হিসেবে স্পষ্টভাবে চিহ্নিত।

•এটি কিছুটা নিশ্চিত করা কঠিন কারণ নিউজিল্যান্ড উপ-অ্যান্টার্কটিক দ্বীপপুঞ্জ–এর অকল্যান্ড দ্বীপ ও অ্যাডামস দ্বীপ এবং তাসমানিয়ার ম্যাকোয়ারি দ্বীপ বিদ্যমান। তবে এই দ্বীপগুলো উপ-অ্যান্টার্কটিক দ্বীপ ও ওশেনিয়ার অংশ হিসেবে গণ্য হয় না। এর পরিবর্তে যেতে হবে 8 স্নেয়ারস দ্বীপপুঞ্জ, নিউজিল্যান্ড (ওশেনিয়ার সর্বদক্ষিণের দ্বীপ)। এই দ্বীপগুলো ছোট হলেও উপরে বর্ণিত ব্যতিক্রম অনুসারে ওশেনিয়াতে ছোট দ্বীপও ধরা হয়। তবে স্নেয়ারস দ্বীপগুলো উপ-অ্যান্টার্কটিক দ্বীপ হিসেবেও গণ্য হতে পারে। সেই হিসেবে মারফি দ্বীপ (যা নিউজিল্যান্ডের দক্ষিণ দ্বীপের কাছাকাছি) হবে ওশেনিয়ার সর্বদক্ষিণের ভূমি।

•যদিও কেপ টাউন প্রায়ই আফ্রিকার দক্ষিণ প্রান্ত বলে ধরা হয়। প্রকৃতপক্ষে এই খেতাবটি যেতে হবে 9 আগুলহাস জাতীয় উদ্যান (দক্ষিণ আফ্রিকার সর্বদক্ষিণের বিন্দু)। এখানে একটি বাতিঘর ও স্মৃতিস্তম্ভ রয়েছে।

•যদিও সেন্তোসা এশিয়ার সর্বদক্ষিণের বিন্দু দাবি করে। তবে নিরক্ষীয় রেখার দক্ষিণে অবস্থিত ছোট একটি দ্বীপই হলো 10 কোকোস (কিলিং) দ্বীপপুঞ্জ (এশিয়ার সর্বদক্ষিণের দ্বীপ)। (Q36004)। এটি অস্ট্রেলীয় বাইরের অঞ্চল যা মূল ভূখণ্ড থেকে প্রায় ২৭০০ কিমি উত্তর-পশ্চিমে। তবে যদি কোকোস (কিলিং) দ্বীপপুঞ্জকে অস্ট্রেলীয় অঞ্চল হিসেবে বাদ দেওয়া হয়, তবে হবে 11 পুলাউ এনদানা দ্বীপ, পূর্ব তিমুর

12 পানামা-কলম্বিয়া সীমান্ত (উত্তর আমেরিকার সর্বদক্ষিণের বিন্দু)। নিকটতম দর্শনীয় স্থান হলো দারিয়েন জাতীয় উদ্যান ও দারিয়েন গ্যাপ।

•ইউরোপকে সুনির্দিষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত করা কঠিন কারণ এটি ভৌগোলিকের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক কারণ রয়েছে। এর মূল ভূখণ্ডের সর্বদক্ষিণের বিন্দু হলো স্পেনে অবস্থিত। যেখানে একটি বাঁধপথ ইসলা দে লাস পালোমাসে নিয়ে যায়। আরও দক্ষিণের দ্বীপপ্রার্থী হলো গাভদোস–এর কেপ ট্রিপিটি (৩৪.৮০৫° উত্তর), সাইপ্রাস–এর আক্রোটিরি (৩৪.৫৬৬° উত্তর; এই দ্বীপটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের অংশ হলেও ভৌগোলিকভাবে এশিয়া মাইনরে এবং প্রান্তটি একটি বিমানঘাঁটি, যেখানে প্রবেশ নিষিদ্ধ) এবং এল ইয়েরো–এর লা রেস্টিঙ্গা (২৭.৬৪১° উত্তর, এটি স্পেনের অংশ হলেও আটলান্টিক মহাসাগরের মাঝামাঝি)।

মহাদেশগুলির সর্বপশ্চিম প্রান্ত

[সম্পাদনা]

দ্রাঘিমাংশ অনুযায়ী পশ্চিমতম থেকে পূর্বতম ক্রমানুসারে সাজানো হয়েছে।

• সমগ্র উত্তর আমেরিকার পশ্চিমতম বিন্দু হলো , এটি আলেউটিয়ান দ্বীপপুঞ্জ-এর আত্তু দ্বীপে অবস্থিত। এটি এতটাই পশ্চিমে যে পূর্ব গোলার্ধে পড়ে যায়। মূল ভূখণ্ডে পশ্চিমতম বিন্দু হলো কেপ অব প্রিন্স ওয়েলস, যা আলাস্কার একটি অংশ দিওমেদেসের দিকে বেরিয়ে এসেছে।

ইস্টার দ্বীপকে একদিকে ওশেনিয়ার পূর্বতম বিন্দু আবার অন্যদিকে দক্ষিণ আমেরিকার পশ্চিমতম বিন্দু বলা যেতে পারে। অন্যথায় দক্ষিণ আমেরিকার প্রশাসনিক পশ্চিমতম ভূমি হলো , গ্যালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জ-এর একটি ছোট দ্বীপ। যা এই তালিকার সমস্ত চরম ভৌগোলিক বিন্দুর মধ্যে বিষুবরেখার সবচেয়ে কাছাকাছি। দক্ষিণ আমেরিকার মূল ভূখণ্ডের পশ্চিমতম বিন্দু হলো পেরুর উত্তর-পশ্চিম কোণের পুন্টো পারিনাস।

• ইউরোপের ভূতাত্ত্বিক পশ্চিমতম বিন্দু আসলে উত্তর আমেরিকার প্লেটের উপর রয়েছে। এটি , আজোরেস-এর ফ্লোরেস দ্বীপের বাইরে অবস্থিত। মূল ভূখণ্ডের পশ্চিমতম বিন্দু পর্তুগালের অংশ কাবো দা রোকা

• আফ্রিকার পশ্চিমতম বিন্দু হলো , আর মূল ভূখণ্ডের পশ্চিমতম বিন্দু একটি প্রধান নগরী ডাকার-এ অবস্থিত।

• এশিয়ার পশ্চিমতম বিন্দু হলো , একটি গ্রাম যা এজিয়ান সাগরে প্রবেশ করেছে।

• অস্ট্রেলিয়ার পশ্চিমে ভারত মহাসাগরে কিছু অঞ্চল রয়েছে। যদি এগুলোকে ওশেনিয়ার অংশ ধরা হয়। তবে ম্যাকডোনাল্ড দ্বীপ হবে পশ্চিমতম বিন্দু। অন্যথায়, শিরোপাটি যাবে -এর এক প্রান্তে আর মূল ভূখণ্ডের পশ্চিমতম বিন্দু এই দ্বীপের ঠিক দক্ষিণে।

মহাদেশগুলির সর্বপূর্ব প্রান্ত

[সম্পাদনা]

দ্রাঘিমাংশ অনুযায়ী পূর্বতম থেকে পশ্চিমতম ক্রমানুসারে সাজানো হয়েছে।

• ওশেনিয়ার পূর্বতম বিন্দুর সংজ্ঞা কিছুটা জটিল। ইস্টার দ্বীপকে একদিকে দক্ষিণ আমেরিকার পশ্চিমতম বিন্দু আবার অন্যদিকে ওশেনিয়ার পূর্বতম বিন্দু বলা যায়। তবে নিশ্চিতভাবে অন্য কোনো মহাদেশের অংশ নয় এমন পূর্বতম বিন্দু হলো । দুটিই এত দূরে পূর্বে যে গভীরভাবে পশ্চিম গোলার্ধে পড়ে যায়। ওশেনিয়ার ক্ষেত্রে "মূল ভূখণ্ড" পূর্বতম বিন্দুর কোনো মানে হয় না।

• এশিয়ার পূর্বতম বিন্দু হলো । সবচেয়ে কাছের মূল ভূখণ্ডের বিন্দু কেপ দেজনেভ। যা মাত্র ৫০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত। এই বিন্দুগুলোও এতটাই পূর্বে যে পশ্চিম গোলার্ধে পড়ে।

• ইউরোপের পূর্বতম বিন্দু তার অন্যতম উত্তরতম বিন্দুও; , নোভায়া জেমলিয়া-এর উত্তর-পূর্ব প্রান্তে। ইউরোপ-এশিয়ার সীমানা অন্য মহাদেশের মতো কঠোরভাবে নির্ধারিত নয়। তাই মূল ভূখণ্ডের পূর্বতম বিন্দু অস্পষ্ট।

• সমগ্র আফ্রিকার পূর্বতম বিন্দু হলো , যা মৌরিতানিয়ার একটি দূরবর্তী দ্বীপ। মূল ভূখণ্ডে পূর্বতম বিন্দু হলো আফ্রিকার শিং-এর পূর্ব উপকূলে রাস হাফুন।

• উত্তর আমেরিকার পূর্বতম বিন্দুও অনেক উত্তরে; গ্রিনল্যান্ড-এ অবস্থিত। মূল ভূখণ্ডের পূর্বতম বিন্দু হলো ল্যাব্রাডরের কেপ সেইন্ট চার্লস।

আটলান্টিক মহাসাগরের দূরে দক্ষিণ আমেরিকার পূর্বতম বিন্দু। মূল ভূখণ্ডের পূর্বতম বিন্দু সহজেই পৌঁছানো যায়। এটি জোয়াও পেসোয়া-এর পোন্তা দো সেইক্সাস।

উচ্চতা

[সম্পাদনা]

পৃথিবীর সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন বিন্দু

[সম্পাদনা]

• পৃথিবীর শীর্ষে অনুভব করতে চাইলে যান 13 মাউন্ট এভারেস্ট (সমুদ্রপৃষ্ঠের উপরে সর্বোচ্চ স্থান)। প্রবেশযোগ্যতা: অত্যন্ত কঠিন।

• তবে এভারেস্ট পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে সবচেয়ে দূরের বিন্দু নয়। পৃথিবী বিষুবরেখায় কিছুটা "চওড়া" হওয়ায় এই মর্যাদা যায় -এর কাছে। প্রবেশযোগ্যতা: কঠিন।

• "বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু পর্বত কোনটি?" — প্রশ্নটি কিছুটা ধাঁধা। হাওয়াই-এ সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৪২০৭ মিটার উঁচু। তবে যেহেতু এর ভিত্তি সমুদ্রতলে তাই পুরো পর্বতটির উচ্চতা ১০,০০০ মিটারেরও বেশি।

• কিন্তু যদি আপনি নিচের দিক খুঁজে দেখতে চান তখন যেতে হবে 14 মৃত সাগরের তীর (স্থলভাগের সর্বনিম্ন স্থান)। প্রতিটি বাস ভ্রমণ এখানে আসে। প্রবেশযোগ্যতা: সহজ।

• আরও নিচে যেতে চাইলে, অ্যান্টার্কটিকার বরফের চাদর কিছু জায়গায় ৪ কিমি পুরু, যা ভূত্বককে নিচে নামিয়ে দিয়েছে। পৃথিবীর সর্বনিম্ন অন্তর্দেশীয় স্থান এটি। যা সমুদ্র বা তরল জলে আবৃত নয়। সেটি হলো পশ্চিম অ্যান্টার্কটিকা-এর বার্ড সাবগ্লেসিয়াল বেসিন, সমুদ্রপৃষ্ঠের ২৮৭০ মিটার নিচে রয়েছে। প্রবেশযোগ্যতা: অসম্ভব।

মহাদেশভিত্তিক সর্বোচ্চ চূড়া

[সম্পাদনা]
আরও দেখুন: সেভেন সামিট

• এভারেস্ট, এশিয়া, ৮৮৪৮ মিটার • আকনকাগুয়া, দক্ষিণ আমেরিকা, ৬৯৬১ মিটার • দেনালি, উত্তর আমেরিকা, ৬১৯৪ মিটার • কিলিমাঞ্জারো, আফ্রিকা, ৫৮৯৫ মিটার • এলব্রুস, ইউরোপ, ৫৬৪২ মিটার • ভিনসন, অ্যান্টার্কটিকা, ৪৮৯২ মিটার • ওশেনিয়ার সর্বোচ্চ বিন্দু নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।

    • মাউন্ট কসিয়াস্কো, ২২২৮ মিটার, অস্ট্রেলিয়ার মূল ভূখণ্ডের সর্বোচ্চ বিন্দু।
    • তবে নিউ গিনি দ্বীপ অস্ট্রেলিয়ান প্লেটের উপর রয়েছে। তাই মহাদেশের অংশ হিসেবে ধরা হয়। এর সর্বোচ্চ বিন্দু হলো পুনচাক জয়া (কার্সটেন্স পিরামিড নামেও পরিচিত), ইন্দোনেশিয়ার অংশে, ৪৮৮৪ মিটার উঁচু।

সবচেয়ে দূরবর্তী বিন্দু

[সম্পাদনা]

মহাদেশভিত্তিক অপ্রবেশযোগ্য মেরু

[সম্পাদনা]

মহাদেশগুলিকে বর্ণানুক্রমিকভাবে সাজানো হয়েছে

• আফ্রিকায় অপ্রবেশযোগ্য মেরু অবস্থিত (৫.৬৫°উ ২৬.১৭°পূ) উপকূল থেকে ১৮১৪ কিমি দূরে মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র-এর ওবো শহরের কাছে দক্ষিণ সুদানগণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্র-এর ত্রিদেশীয় সীমান্তের কাছাকাছি।

• অ্যান্টার্কটিকায় দক্ষিণ অপ্রবেশযোগ্য মেরু হলো এমন একটি বিন্দু যা দক্ষিণ মহাসাগর থেকে সবচেয়ে দূরে। এখানে বিভিন্ন স্থানাঙ্ক দেওয়া হয়েছে। কারণ বরফের প্রান্ত কোথায় ধরা হবে, বরফচাদরের সরে যাওয়া, জরিপের নির্ভুলতা ইত্যাদির ওপর নির্ভর করে। সাধারণভাবে বোঝানো হয় , যা দক্ষিণ মেরু থেকে ৮৭৮ কিমি দূরে এবং ৩৭১৮ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত। তবে সঠিক অবস্থান সময়ে সময়ে পরিবর্তিত হয়েছে।

• অস্ট্রেলিয়ায় মহাদেশীয় অপ্রবেশযোগ্য মেরু অবস্থিত (২৩.১৭°দ ১৩২.২৭°পূ) অথবা (২৩°২′দ ১৩২°১০′পূ) উপকূল থেকে ৯২০ কিমি দূরে অ্যালিস স্প্রিংস থেকে প্রায় ১৬১ কিমি উত্তর-পশ্চিমে। নিকটতম শহর হলো নর্দার্ন টেরিটরির পাপুন্যা। যা প্রায় ৩০ কিমি দূরে রয়েছে। ২০১৬ সালে টার্নার যমজ ভাইরা প্যারামোটর উড়ে এই স্থানে পৌঁছায়।

• ইউরেশিয়ায় মহাদেশীয় অপ্রবেশযোগ্য মেরু চীন-এর উত্তর-পশ্চিমে কাজাখস্তান সীমান্তের কাছে। পুরনো হিসাবে এটি ২৬৪৫ কিমি দূরে (স্থানাঙ্ক ৪৬°১৭′উ ৮৬°৪০′পূ)উরুমকি থেকে প্রায় ৩২০ কিমি উত্তরের দজুসোতোইন মরুভূমিতে। নিকটতম জনবসতি হলো , প্রায় ১০ কিমি পূর্বে। তবে উপসাগরকে বাদ দেওয়ায় বিকল্প বিন্দু হিসাবেও (৪৪.২৯°উ এবং ৮২.১৯°পূ) এবং (৪৫.২৮উ এবং ৮৮.১৪°পূ) প্রস্তাব করা হয়েছে। যেগুলো প্রায় ২৫০০ কিমি দূরে অবস্থিত। এগুলো দুঞ্জাঙ্গারিয়ান গেট অঞ্চলে পড়ে। যা পূর্ব-পশ্চিম অভিবাসনের ঐতিহাসিক প্রবেশপথ। এটি একটি ছোট জনবসতি কাস কির সু-এর কাছের কিজিলকুম অঞ্চলে।

• উত্তর আমেরিকায় মহাদেশীয় অপ্রবেশযোগ্য মেরু দক্ষিণ ডাকোটার দক্ষিণ-পশ্চিমে। অ্যালেন শহর থেকে ১১ কিমি উত্তরে, উপকূল থেকে ১৬৫০ কিমি দূরে (স্থানাঙ্ক 43.36°উ 101.97°প)। কানাডার অপ্রবেশযোগ্য মেরু বলা হয় আলবার্টার জ্যাকফিশ নদীর কাছে (স্থানাঙ্ক 59.03°উ 112.82°প)। যেখানে জ্যাকফিশ নদী শান্তিপূর্ণ নদীতে মিশেছে।

• দক্ষিণ আমেরিকায় মহাদেশীয় অপ্রবেশযোগ্য মেরু ব্রাজিলে (স্থানাঙ্ক 14.05°দ 56.85°প) আরেনাপোলিস শহরের কাছে। ২০১৭ সালে টার্নার যমজ ভাইরা প্রথম অভিযানকারী হিসেবে এই বিন্দুতে পৌঁছায়।

জলভাগ

[সম্পাদনা]

নদীসমূহ

[সম্পাদনা]
  • এটি কিছুটা বিতর্কিত বিষয়, তবে সবচেয়ে দীর্ঘ নদী সম্ভবত 15 নীল নদী (সবচেয়ে দীর্ঘ নদী)। এই নদী ভিক্টোরিয়া হ্রদ থেকে উত্তরে ভূমধ্যসাগর পর্যন্ত প্রবাহিত হয়েছে এবং সবুজ অঞ্চল ও মরুভূমির মধ্য দিয়ে গেছে। তবে আমাজন নদীকে কিছু নথিতে সবচেয়ে দীর্ঘ নদী হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। কারণ এটি নিঃসন্দেহে পানি প্রবাহ ও জলাধারের আয়তনের দিক থেকে সবচেয়ে বড়। প্রবেশযোগ্যতা: মাঝারি সহজ।

হ্রদসমূহ

[সম্পাদনা]
  • আশ্চর্যের বিষয় হলো সবচেয়ে বড় হ্রদের নামের মধ্যে "হ্রদ" শব্দটি নেই বরং এটিকে বলা হয় 16 কাস্পিয়ান সাগর (সবচেয়ে বড় হ্রদ)। এই হ্রদ সমুদ্রপৃষ্ঠের নিচে অবস্থান করছে। এর লবণাক্ততা ও বিশাল আকারের কারণে একে আপনি সমুদ্র ভেবে নিতে পারেন।কিন্তু এটি অন্য কোনো সমুদ্রের সাথে যুক্ত নয় বলে একে হ্রদ হিসেবে গণ্য করা হয়। তবে আরও অনেক বড় হ্রদ আছে, যেমন মহান হ্রদসমূহ। অতীতে আরাল সাগর যা আকারে কাস্পিয়ান সাগরের কাছাকাছি ছিল। কিন্তু কৃষিকাজে পানির ব্যবহার বৃদ্ধির ফলে এর আকার ছোট হয়ে যায়। বিশ্বের সবচেয়ে গভীর হ্রদ হলো রাশিয়ার বাইকাল হ্রদ। যা সাইবেরিয়া জুড়ে রেলপথ নির্মাণে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। প্রবেশযোগ্যতা: মাঝারি সহজ।
  • বিশ্বের সবচেয়ে গভীর হ্রদ হলো 17 বাইকাল হ্রদ রাশিয়ার দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলে অবস্থিত এই হ্রদের গভীরতম অংশ ১,৬৪২ মি (৫,৩৮৭ ফু) মিটার এবং সমুদ্রপৃষ্ঠের নিচে ১,১৮৬.৫ মি (৩,৮৯৩ ফু) মিটার। এই হ্রদের মধ্যে একটি বড় দ্বীপ রয়েছে, যার নাম ওলখোন দ্বীপ

নিরাপদ থাকো

[সম্পাদনা]

রেকর্ড ভাঙা প্রায়শই বিপজ্জনক অর্থে ব্যবহৃত হয়। বহু রেকর্ডধারী স্থান যেগুলোর প্রাকৃতিক নাটকীয় দৃশ্য (যেমন গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন) উচ্চতার পরিবর্তনের কারণে ভ্রমণকারীর জন্য অধিক ঝুঁকি সৃষ্টি করে।

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]
This TYPE ভৌগোলিক রেকর্ড has ব্যবহারযোগ্য অবস্থা TEXT1 TEXT2

{{#assessment:প্রসঙ্গ|ব্যবহারযোগ্য}}