অবয়ব
লে করবুসিয়ের স্থাপত্যকর্ম: আধুনিক স্থাপত্য আন্দোলনের এক অনন্য নিদর্শন, যা এখন বিশ্ব ঐতিহ্যের মর্যাদা পেয়েছে। সুইস-ফরাসি স্থপতি লে করবুসিয়ের নকশা করা তিন মহাদেশজুড়ে বিস্তৃত ১৭টি বিখ্যাত ভবন এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত। ২০১৬ সালে এগুলোকে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যের স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
জানুন
[সম্পাদনা]আধুনিক স্থাপত্যের অন্যতম পথিকৃৎ চার্লস-এডুয়ার্ড জেনারেট-গ্রিস (১৮৮৭–১৯৬৫), যিনি লে করবুসিয়ে নামে পরিচিত। তিনি সারা পৃথিবীতে অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ও জনপরিসরের ভবন নকশা করেছেন (যার মধ্যে চণ্ডীগড় শহরের মাস্টার প্ল্যানও আছে)। শুধু তাই নয়, তিনি অভিনব সব নকশার আবাসিক ভবনের জন্যও সমানভাবে খ্যাতি অর্জন করেছেন।
স্থানসমূহ
[সম্পাদনা]আর্জেন্টিনা
[সম্পাদনা]- 1 কুরুশে হাউস, বুলেভার্ড ৫৩, ৩২০, লা প্লাতা। ‘কুরুশে হাউস’, লা প্লাতার অন্যতম দর্শনীয় স্থাপনা। গাছপালা-ঘেরা রোদেলা সবুজ অঞ্চলে, ‘পাসেও দেল বোসকে’ উদ্যানের বিপরীতে এই বাড়িটি অবস্থিত। আমেরিকায় লে করবুসিয়ের নকশা করা অল্প কয়েকটি ভবনের মধ্যে এটি একটি। জমিটি ছিল অত্যন্ত সরু, তাই তিনি র্যাম্প ও সর্পিল সিঁড়িসহ চারতলা নকশা পরিকল্পনা করেন। বর্তমানে ভবনটিতে বুয়েনোস আইরেস আর্কিটেক্টস সমিতি (কোলেখিও দে আরকিতেক্তোস) পরিচালিত হয়। এটি সর্বদা জনসাধারণের জন্য খোলা থাকে এবং মাঝে মাঝে বিভিন্ন অনুষ্ঠানও আয়োজিত হয়।
বেলজিয়াম
[সম্পাদনা]- 2 মেসোঁ গিয়েত, অ্যান্টওয়ার্প। স্থপতি লে করবুসিয়ে ১৯২৬ সালে এর নকশা করেন।
ফ্রান্স
[সম্পাদনা]
- মেসোঁ লা রোশ এ জাঁনে-রে, ৮–১০ প্লাস দু দকতর-ব্লঁশ, প্যারিস/১৬তম আরোঁদিস্মঁ। পাশাপাশি দুটি ভিলা, নির্মাণকাল ১৯২৩-১৯২৫।
- 3 সিতে ফ্রুজ (বোর্দো শহরের প্রায় ১০ কিমি দক্ষিণ-পশ্চিমে, পেসাক শহরতলিতে ‘কার্তিয়ে মদার্ন ফ্রুজ’ অবস্থিত)। ১৯২০–এর দশকের একটি আবাসন প্রকল্প।
- 4 ভিলা সাভোয়া ও মালি ঘর, পোইসি, ইল-দ্য-ফ্রঁস (পোইসি, প্যারিসের উত্তর-পশ্চিমে)। এটি স্থপতির সর্বাধিক পরিচিত সৃষ্টিগুলোর একটি।
- 5 ইম্যোব্ল লোকাতিফ আ লা পোর্ত মোলিৎর, ২৪, র্যু নুঙেসে এ কোলি (প্যারিস/১৬তম আরোঁদিস্মঁ/বোলোন-বিয়াঁকুর)। আটতলা অ্যাপার্টমেন্ট ভবন, নির্মাণকাল ১৯৩২–৩৪।
- 6 ইউনিতে দ’হাবিতাসিওঁ (মার্সেই, রোঁ-পোয়াঁ দু প্রাদো মেট্রো থেকে ২১ নম্বর বাস)। “লা মেজঁ দু ফাদা” (পাগলদের বাড়ি) নামে স্থানীয়দের কাছে পরিচিত। ভবনের ভেতরেই আছে শপিং স্ট্রিট, গির্জা, শিশুদের স্কুল ও আবাসন। ছাদে উঠতে পারবেন এবং পাহাড় ও সাগরের ফাঁকে মার্সেই’র অসাধারণ দৃশ্য দেখা যায়। তৃতীয় তলায় একটি বার/রেস্তোরাঁ/হোটেলও আছে।
- 7 লা মানুফ্যাকচুর, সাঁ-দিয়ে (উজিন ক্লোদ এ দ্যুভাল) (সাঁ-দিয়ে-দে-ভোজ)। একটি বস্ত্রকারখানা।
- 8 শাপেল নোতর-দাম-দ্য-ও দ্য রঁশঁ (রঁশঁ)। একটি ছোট গির্জা বা প্রার্থনাগৃহ (চ্যাপেল)।
- 9 কাবানোঁ দ্য লে করবুসিয়ে (রোকব্র্যুন-কাপ-মার্তাঁ)। ভূমধ্যসাগরের তীরে স্থপতির নিজ হাতে নকশা করা এক ছোট্ট ছুটির কুটির। সেখানেই থাকাকালে তিনি সাগরে সাঁতার কাটতে গিয়ে ডুবে মৃত্যুবরণ করেন।
- 10 কুভঁ স্যঁত-মারি-দ্য-লা-তুরেত (এভ্যো)। ডমিনিকান ধর্মসংঘের একটি আশ্রম, ১৯৫০–এর দশকে নির্মিত।
- 11 মেজঁ দ্য লা কুলত্যুর দ্য ফিরমিনি। সাঁ-তেতিয়েন শহরের প্রায় ৮ কিমি দক্ষিণ-পশ্চিমে ফিরমিনি গ্রামে লে করবুসিয়ের নকশা করা কয়েকটি ভবন আছে। তাদের একটি, ‘মেজঁ দ্য লা কুলত্যুর দ্য ফিরমিনি-ভের’, ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে তালিকাভুক্ত।
জার্মানি
[সম্পাদনা]
- 12 ভাইসেনহোফ এস্টেট (ভাইসেনহোফজিডলুং), রাথেনাউশ্ট্রাসে ১–৩, স্টুটগার্ট। ১৯২৭ সালের প্রদর্শনীর জন্য নির্মিত একটি আবাসন এলাকা। এখানে লে করবুসিয়ে, পিটার বেহরেন্স, ভাল্টার গ্রোপিয়ুস, লুডভিগ মিস ফান ডের রোহেসহ খ্যাতনামা স্থপতিদের আবাসিক ভবন রয়েছে। লে করবুসিয়ের নকশা করা পাশাপাশি জোড়া লাগানো (দুটি সেমি-ডিট্যাচড) দুই বাড়িতে এলাকাটির জন্য নিবেদিত একটি জাদুঘর রয়েছে। তবে ঐতিহাসিক এ ভবনটি হুইলচেয়ার ব্যবহারকারীদের জন্য উপযোগী নয়।
ভারত
[সম্পাদনা]- 13 দ্য ক্যাপিটল কমপ্লেক্স (চণ্ডীগড় ক্যাপিটল কমপ্লেক্স), সেক্টর ১। ক্যাপিটল কমপ্লেক্সের বেশিরভাগ অংশ উচ্চ নিরাপত্তার কারণে তার দিয়ে ঘেরা। ‘ওপেন হ্যান্ড’ অংশে যাওয়া যায় এবং সেখান থেকে প্রধান ভবনগুলো দেখা যায়, যদিও কিছুটা দূর থেকে। ক্যাপিটল ভবনগুলো কাছে থেকে দেখতে চাইলে সেক্টর ৯–এর ‘ডিলাক্স অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বিল্ডিং’–এ ট্যুরিস্ট ব্যুরো থেকে, অথবা আরও সুবিধাজনকভাবে হাই কোর্টের কাছে নতুন ট্যুরিস্ট অফিস থেকে অনুমতি নিতে হয়। পাসপোর্ট নিয়ে যান এবং ভারতীয় দাপ্তরিক এক বিস্ময়কর অভিজ্ঞতার জন্য শুরুতেই প্রস্তুত থাকুন। ট্যুরিস্ট ব্যুরো থেকে সচিবালয়, হাই কোর্ট আর অ্যাসেম্বলি, এই তিনটি বড় ভবনে ঢোকার অনুমতি হিসেবে তিন রকম চিঠি দেওয়া হয়। তবে সেই চিঠিগুলো পেতে মাঝে মাঝে কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হতে পারে।
জাপান
[সম্পাদনা]
- 14 পশ্চিমা শিল্পকলার জাতীয় জাদুঘর (কোকুরিত্সু সেইয়ো বিজুত্সুকান), টোকিও/উএনো। এখানে পশ্চিমা শিল্পকলার বিস্তৃত সংগ্রহ রয়েছে; রোদাঁ-র বিখ্যাত দ্য থিঙ্কার ভাস্কর্যের আসলটি এখানেই রয়েছে।
সুইজারল্যান্ড
[সম্পাদনা]- 15 ভিলা ল্য লাক (পেতিত ভিলা ও বোর্দ্যু লাক লেমাঁ), রুত দ্য লাভো ২১, কর্সো (ডাউনটাউনের পশ্চিমে কর্সো জেলায়)। লে করবুসিয়ে ১৯২৩ সালে এটির নকশা করেন।
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]{{#assessment:প্রসঙ্গ|ব্যবহারযোগ্য}}
