উইকিভ্রমণ থেকে

কুতুবদিয়া বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা।

জানুন[সম্পাদনা]

চট্টগ্রাম বিভাগীয় সদর থেকে প্রায় ৮০ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং কক্সবাজার জেলা সদর থেকে প্রায় ৭৫ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে ২১°৪৩´ থেকে ২১°৫৬´ উত্তর অক্ষাংশ থেকে ৯১°৫০´ থেকে ৯১°৫৪´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ জুড়ে অবস্থিত কুতুবদিয়া উপজেলার আয়তন ২১৫.৮০ বর্গ কিলোমিটার। ১৯১৭ সালে মহেশখালী থানা থেকে পৃথক করে কুতুবদিয়া থানা গঠিত হয় এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে। এ উপজেলায় বর্তমানে ৬টি ইউনিয়ন রয়েছে।

নামকরণ[সম্পাদনা]

কুতুবদিয়া সমুদ্রসৈকত

দীর্ঘদিন ধরে কুতুবদিয়া দ্বীপের গঠন প্রক্রিয়া শুরু হলেও এ দ্বীপ সমুদ্র বক্ষ থেকে জেগে উঠে চতুর্দশ শতাব্দীর শেষের দিকে। ধারণা করা হয়, পঞ্চদশ শতাব্দীর শেষের দিকে এ দ্বীপে মানুষের পদচারণা। হযরত কুতুবুদ্দীন নামে এক কামেল ব্যক্তি আলী আকবর, আলী ফকির, এক হাতিয়াসহ কিছু সঙ্গী নিয়ে মগ পর্তুগীজ বিতাড়িত করে এ দ্বীপে আস্তানা স্থাপন করেন। অন্যদিকে আরাকান থেকে পলায়নরত মুসলমানেরা চট্টগ্রামের আশেপাশের অঞ্চল থেকে ভাগ্যান্বেষণে উক্ত দ্বীপে আসতে থাকে। জরিপ করে দেখা যায়, আনোয়ারা, বাঁশখালী, সাতকানিয়া, পটিয়া, চকরিয়া অঞ্চল থেকে অধিকাংশ আদিপুরুষের আগমন। নির্যাতিত মুসলমানেরা কুতুবুদ্দীনের প্রতি শ্রদ্ধান্তরে কুতুবুদ্দীনের নামানুসারে এ দ্বীপের নামকরণ করেন কুতুবুদ্দীনের দিয়া, যা পরবর্তীতে কুতুবদিয়া নামে স্বীকৃতি লাভ করে। দ্বীপকে স্থানীয়ভাবে দিয়া বা ডিয়া বলা হয়। পরবর্তীতে বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন এসে এই দ্বীপে বসবাস শুরু করে। বর্তমানে (২০১৭) এই দ্বীপের বয়স ৬০০ বছর পেরিয়ে গেছে। এই দ্বীপের আয়তন প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ কমে গেছে এবং এখনও সাগরের ঢেউয়ের প্রভাবে ভেঙ্গে সমুদ্রে পরিণত হচ্ছে সৌন্দর্যের লীলাভূমি সাগরকন্যা কুতুবদিয়া দ্বীপটি।

জনসংখ্যা[সম্পাদনা]

২০১১ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী কুতুবদিয়া উপজেলার জনসংখ্যা ১,৩৩,৮৮৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৬৯,৭৩৮ জন এবং মহিলা ৬৪,১৫০ জন। এ উপজেলার ৯৩% মুসলিম, ৬.৯৬% হিন্দু এবং ০.০৪% বৌদ্ধ ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বী।

কীভাবে যাবেন[সম্পাদনা]

মগনামা ঘাট

চট্টগ্রাম রেলস্টেশন থেকে রিক্সায় চলে যেতে পারেন ফিরিঙ্গিবাজার ঘাট। ফিরিঙ্গিবাজার ঘাট থেকে প্রতি জন ১০০ টাকা করে সকাল ৬.৩০ ঘটিকা অথবা ৭.০০ ঘটিকায় যেকোন ১ টি ট্রলার করে ৩ ঘণ্টা রোমাঞ্চকর বোর্ট জার্নি করে নামবেন বড়ঘোপ ঘাট অথবা দরবার ঘাট, তারপর সেখান থেকে ৩০ টাকা রিক্সা ঠিক করে চলে যান বড়ঘোপ সাগর পাড়।

অথবা, ঢাকা টু কক্সবাজার যেকোন বাসে উঠে নামবেন চকরিয়া, সেখান থেকে টেম্পু যায় মগনামা ঘাট পর্যন্ত। ঘাট থেকে ট্রলারে ৫০ মিনিট আর স্পিডবোটে ১০/১৫ মিনিটে কুতুবদিয়া যাওয়া যায়। ট্রলারে জন প্রতি ৪০ টাকা ভাড়া। সম্পূর্ণ ট্রলার রিজার্ভ নিতে চাইলে ৮০০-১,০০০ টাকা খরচ করতে হবে।

এছাড়া, চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি এস. আলম বাস সার্ভিস আছে পেকুয়া মগনামা ঘাট পর্যন্ত।

দর্শনীয় স্থান[সম্পাদনা]

এছাড়া অসংখ্য গাংচিল আর মাছ ধরার নৌকা দেখে মন জুড়িয়ে যাবে।

থাকার ব্যবস্থা[সম্পাদনা]

বড়ঘোপ বাজারে বীচের পাশেই সমুদ্র বিলাস নামে ভাল একটা হোটেল আছে, রাত প্রতি দুই বেড ১০০০ টাকা।

ভ্রমণ পরিকল্পনা[সম্পাদনা]

দিনে গিয়ে দিনে ঘুরে চলে আসা সম্ভব। ফেরার সময় বিকালে ট্রলার পাবেন, তবে চট্টগ্রাম পর্যন্ত নয়। পেকুয়া, মগনামা ঘাট পার করে দিবে, সেখান থেকে বাসে করে চট্টগ্রাম আসতে পারেন।

কেউ কক্সবাজার ভ্রমণে গেলে আপনার ভ্রমণ পরিকল্পনায় কুতুবদিয়াকে রাখতে পারেন।

প্রয়োজনীয় তথ্য[সম্পাদনা]

কুতুবদিয়া দ্বীপে বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। জেনারেটর ও সৌর বিদ্যুৎ দিয়ে এখানকার বৈদ্যুতিক চাহিদা মেটানো হয়ে থাকে।

সৈকতে জোয়ার ভাটা চিহ্নিত করার কোনো ব্যবস্থা নেই। তাই নিজ দায়িত্বে জোয়ার-ভাটার সময় জেনে সমুদ্র স্নানে নামতে। ভাটার সময় সমুদ্রে নামা বিপজ্জনক।