টেকনাফ বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা। এটি বাংলাদেশের সর্ব-দক্ষিণের উপজেলা।
জানুন[সম্পাদনা]
কক্সবাজার জেলা সদর থেকে প্রায় ৮২ কিলোমিটার দক্ষিণে ২০°২৩´ থেকে ২১°০৯´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯২°০৫´ থেকে ৯২°২৩´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ জুড়ে অবস্থিত টেকনাফ উপজেলার আয়তন ৩৮৮.৬৮ বর্গ কিলোমিটার। ১৯৩০ সালে টেকনাফ থানা গঠিত হয় এবং ১৯৮৩ সালে থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয়। এ উপজেলায় বর্তমানে ১টি পৌরসভা ও ৬টি ইউনিয়ন রয়েছে।
জনসংখ্যা[সম্পাদনা]
২০১১ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী টেকনাফ উপজেলার জনসংখ্যা ২,৬৩,৩৮৯ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১,৩২,৮৫৭ জন এবং মহিলা ১,৩০,৫৩২ জন। মোট জনসংখ্যার ৯৭.২% মুসলিম, ১.৩% হিন্দু, ১.৪% বৌদ্ধ এবং ০.১% খ্রিস্টান ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বী।
কীভাবে যাবেন[সম্পাদনা]
ঢাকা বা চট্টগ্রাম থেকে সড়ক ও বিমান সকল পথেই কক্সবাজারের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা রয়েছে। কক্সবাজার থেকে বাস বা সিএনজি চালিত অটোরিক্সা যোগে টেকনাফ যাওয়া যায়। পালকি নামক বাস কক্সবাজার বাস টার্মিনাল থেকে টেকনাফে বিরতিহীনভাবে চলাচল করে, ভাড়া জনপ্রতি ১৫০ টাকা। সিএনজি চালিত অটোরিক্সা বা হাইস গাড়িতে জন প্রতি ভাড়া পড়বে ২০০ টাকা, এই গড়িগুলো মেরিন ড্রাইভ দিয়ে চলাচল করে। এতে সময় কম লাগে এবং ভ্রমণ হয় আরামদায়ক। এছাড়া নীল দরিয়া নামে পর্যটকবাহী গাড়ি মেরিন ড্রাইভ দিয়ে চলাচল করে, ভাড়া জন প্রতি ১৭০ টাকা। এছাড়া ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে টেকনাফে সরাসরি এসি ও ননএসি বাস পাওয়া যায়।
দর্শনীয় স্থান[সম্পাদনা]
- সেন্টমার্টিন বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ যা মূল ভূখণ্ডের সর্ব-দক্ষিণে এবং কক্সবাজার জেলা শহর থেকে ১২০ কিলোমিটার দূরে ১৭ বর্গ কিলোমিটারের একটি ক্ষুদ্র দ্বীপ। স্থানীয় ভাষায় সেন্টমার্টিনকে নারিকেল জিঞ্জিরা বলেও ডাকা হয়।
- শাহপরীর দ্বীপ নাফ নদীর মোহনায় বাংলাদেশ-মায়ানমার সীমান্তে অবস্থিত। প্রথম ইংরেজ-বর্মী যুদ্ধের সময় ব্রিটিশরা এই দ্বীপের দাবি করে। শাহ পরী টেকনাফের সর্ব দক্ষিণে ভূ-ভাগের খুবই নিকটবর্তী একটি দ্বীপ এবং টেকনাফ উপজেলার উপদ্বীপ পর্যন্ত বিস্তৃত।
- ছেঁড়া দ্বীপ বাংলাদেশের মানচিত্রে দক্ষিণের সর্বশেষ বিন্দু। দক্ষিণ দিকে এর পরে বাংলাদেশের আর কোনো ভূখণ্ড নেই। সেন্টমার্টিন থেকে বিচ্ছিন্ন ১০০ থেকে ৫০০ বর্গমিটার আয়তনবিশিষ্ট কয়েকটি দ্বীপ রয়েছে, যেগুলোকে স্থানীয়ভাবে ছেঁড়াদিয়া বা সিরাদিয়া বলা হয়ে থাকে। ছেঁড়া অর্থ বিচ্ছিন্ন বা আলাদা, আর মূল দ্বীপ-ভূখণ্ড থেকে কিছুটা বিচ্ছিন্ন বলেই এ দ্বীপপুঞ্জের নাম ছেঁড়া দ্বীপ।
- তৈঙ্গা চূড়া বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণের উপজেলা টেকনাফের অন্তর্গত সংরক্ষিত বন টেকনাফ বন্যপ্রাণ অভয়ারণ্যের সর্বোচ্চ চূড়া। কক্সবাজার জেলা থেকে ৪৮ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং টেকনাফ থেকে উত্তর দিকে ১৫ কিলোমিটার দূরত্বে এর অবস্থান। অক্টোবর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এলাকা পরিদর্শনের সেরা সময়। মার্চ থেকে এপ্রিল মাসে পাহাড়ের গাছগাছিল মারা যাওয়ায় সব ফাঁকা হয়ে যায়। এছাড়াও ঝিরির জলধারা ক্ষীণ হয়ে যায়। এ চূড়াটি অত্যন্ত খাড়া ও টেকারদের জন্য আদর্শস্থানীয়। চূড়া থেকে বঙ্গোপসাগর, নাফ নদী, মায়ানমার সীমান্তের পাহাড়শ্রেণী এবং টেকনাফ বন্যপ্রাণ অভয়ারণ্য এলাকার দৃশ্য অবলোকন করা যায়।
- কালো রাজার সুড়ঙ্গ সুড়ঙ্গটি দেখার জন্য বাসে করে হোয়াইক্যং বাজারে যেতে হবে। এরপর পায়ে হেঁটে প্রায় ৬ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হবে। মূলত ঝিরি বা পাহাড়ী নালা পার হয়ে কালো রাজার সুড়ঙ্গে পৌঁছতে হয়।
এছাড়া অন্যান্য দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে রয়েছে:

- সাবরাং ট্যুরিজম পার্ক
- টেকনাফ সমুদ্র সৈকত
- মাথিনের কূপ
- বাংলাদেশ-মায়ানমার ট্রানজিট জেটিঘাট
- টেকনাফ ন্যাচার গেম রিজার্ভ
- শীলখালী চিরহরিৎ গর্জন বাগান
- মারিশবনিয়া সৈকত
- কুদুমগুহা
- টেকনাফ সমুদ্র সৈকত
থাকার ব্যবস্থা[সম্পাদনা]
টেকনাফ পৌরসভা এলাকায় সুলভে থাকার মত বেশ কিছু হোটেল রয়েছে।
- 1 হোটেল নেটং, বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন, কিরণতলী, টেকনাফ, কক্সবাজার, ☎ +৮৮০১৯৯১১৩৯২১৯, ফ্যাক্স: +৮৮০৩৪২৬-৭৫১০৪। সকালের নাস্তা, টেলিভিশন, টেলিফোন, গরম এবং ঠান্ডা পানির ব্যবস্থাসহ অন্যান্য সুবিধা।
৳ ১,৪০০.০০-৳ ৩,৫০০.০০।
- 2 আলো রিসোর্ট, টেকনাফ, ☎ +৮৮০১৭০৯৩৯৯১৯১, ইমেইল: aloresortteknag@gmail.com। সম্মেলন কক্ষ, গাড়ি পার্কিংসহ অন্যান্য সুবিধা।
- 3 সেন্ট্রাল রিসোর্ট, মেরিন ড্রাইভ রোড, টেকনাফ, ☎ +৮৮০১৮৩৮৩৭৯৩৭২, ইমেইল: centralresortltd@gmail.com। রেঁস্তোরা, সুইমিং পুল, ব্যায়ামাগার, সম্মেলন কক্ষ, গাড়ি পার্কিংসহ অন্যান্য সুবিধা বিদ্যমান।
৳ ৪,০২৫.০০-৳ ৯,৭৭৫.০০।
- 4 সী কোরাল রিসোর্ট, মূল সড়ক, টেকনাফ, ☎ +৮৮ ০১৩১২ ৬০৯৮২৯, +৮৮ ০১৮১১ ৫৬৪৭৫০।
খাওয়া দাওয়া[সম্পাদনা]
টেকনাফ পৌরসভা এলাকায় যে কোন মানের রেস্টুরেন্টে খেতে পারেন।