এশিয়া> দক্ষিণ এশিয়া > ভারত > পশ্চিম ভারত > দাদরা ও নগর হাভেলি এবং দমন ও দিউ
দাদরা ও নগর হাভেলি এবং দমন ও দিউ পশ্চিম ভারতের একটি ছোট কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল। দাদরা ও নগর হাভেলি হল কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের একটি জেলা যা মহারাষ্ট্র এবং গুজরাট রাজ্যের মধ্যে বিভক্ত। দমন গঙ্গা নদীর মুখে একটি আধা-ছিটমহল, যা গুজরাত রাজ্য দ্বারা চারপাশে আবদ্ধ এবং অন্যদিকে দিউ হল গুজরাতের উপকূলে একটি ছোট দ্বীপ।
অঞ্চলসমূহ
[সম্পাদনা]দাদরা ও নগর হাভেলি গুজরাট এবং মহারাষ্ট্রের মধ্যে একটি সঙ্কুচিত ভূখণ্ড। |
দমন জেলা গুজরাটের পশ্চিমে একটি আধা-বেষ্টিত অঞ্চল। |
দিউ দ্বীপ গুজরাটের সৌরাষ্ট্রের দক্ষিণে একটি সুন্দর দ্বীপ। |
শহরসমূহ
[সম্পাদনা]- 1 দমন- রাজধানী এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলটির বৃহত্তম শহর। এর একটি সুন্দর ভূদৃশ্য রয়েছে এবং এটি গুজরাট উপকূলে অবস্থিত সমুদ্র সৈকতের জন্য বিখ্যাত। এখানে একটি পর্যটন গন্তব্যে থাকা উচিত, এমন সমস্ত সুযোগ-সুবিধা নাও থাকতে পারে; তবে এতে শান্তি, বিশ্রাম, বন্ধুত্বপূর্ণ স্থানীয় এবং দেখার মতো সুন্দর জায়গা রয়েছে।
- 2 সিলভাসা- দাদরা ও নগর হাভেলির রাজধানী শহর এবং শিল্পের একটি প্রধান কেন্দ্র।
অন্যান্য গন্তব্য
[সম্পাদনা]- 3 দাদরা- গুজরাট দ্বারা বেষ্টিত একটি ছোট শহর।
- 4 দিউ দ্বীপ- একটি মাছ ধরার শহর, যা নিজের পুরানো দুর্গ, পর্তুগিজ মহাগির্জা ও পর্তুগিজ শৈলীর চমৎকার পুরানো শহরটির জন্য সুপরিচিত। এটি সূক্ষ্ম এবং ততটা দর্শনীয় সৈকত নয়; তবে ভারতের অন্যান্য অংশের তুলনায় খুব স্বাচ্ছন্দ্যপূর্ণ পরিবেশ রয়েছে। দিউতে অনেক সৈকত রয়েছে, যা সবাই নিজের স্বাদ অনুসারে বেছে নিতে পারে।
- 5 সিম্বর- দিউ জেলার অংশ হিসাবে পরিচালিত একটি অসংগঠিত আধা-বেষ্টিত অঞ্চল।
অনুধাবন
[সম্পাদনা]দাদরা ও নগর হাভেলি এবং দমন ও দিউ ১৯৫৪ সাল পর্যন্ত গোয়ার সাথে পর্তুগিজ ঔপনিবেশিক শাসনের অধীনে ছিল। ১৯৫৪ থেকে ১৯৬১ সালের মধ্যে দাদরা ও নগর হাভেলি স্বশাসিত ছিল এবং এটি ১৯৬১ সালে একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হয়ে উঠেছিল। দমন এবং দিউয়ের আধা-ছিটমহলগুলি ১৯৬১ থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত গোয়া, দমন ও দিউয়ের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের অংশ ছিল, যখন গোয়া ভারতের একটি রাজ্য হয়ে ওঠে। দাদরা ও নগর হাভেলি এবং দমন ও দিউ ১৯৮৭ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত দুটি পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ছিল। এরপর দুইটি অঞ্চলকে একীভূত করে একক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের জন্য একটি আইন পাস করা হয়।
ভাষা
[সম্পাদনা]এই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের সরকারী ভাষা হল ইংরেজি, গুজরাটি, হিন্দি এবং মারাঠি। এসব ভাষা অধিকাংশ মানুষ বোঝে এবং কথা বলে। এই অঞ্চলে কোঙ্কনি ভাষাও প্রচলিত আছে। কিছু বাসিন্দা এখনও পর্তুগিজ ভাষায় কথা বলতে পারে অথবা সে ভাষার উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠা কোনো একটি ক্রেওলে কথা বলতে পারে।
প্রবেশ
[সম্পাদনা]বিমানে
[সম্পাদনা]দাদরা ও নগর হাভেলি এবং দমন ও দিউয়ের দুইটি অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দর রয়েছে: দমন বিমানবন্দর (NMB আইএটিএ ) ও দিউ বিমানবন্দর ( DIU আইএটিএ)। দিউ বিমানবন্দরে আহমেদাবাদ, ভুজ ও মুম্বাই থেকে ফ্লাইট রয়েছে। বর্তমান দমন বিমানবন্দরে কোনো নির্ধারিত বাণিজ্যিক বিমান পরিষেবা নেই। এটি এখন সামরিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়।
যেহেতু এ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে একটিও আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নেই; তাই ভারতের বাইরের পর্যটকদের প্রথমে বিমানে মুম্বাই বা সুরাত পৌঁছানোর পরামর্শ দেওয়া হয়। তারপর কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ভ্রমণ করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
ট্রেনে
[সম্পাদনা]দাদরা ও নগর হাভেলি এবং দমন ও দিউয়ের নিকটতম রেলওয়ে স্টেশনগুলির মধ্যে রয়েছে উনা এবং ভাপি; উভয়ই গুজরাটে অবস্থিত। কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের নিজস্ব কোনো রেলওয়ে স্টেশন নেই।
সড়কপথে
[সম্পাদনা]দাদরা এবং নগর হাভেলি এবং দমন ও দিউতে তিনটি জাতীয় মহাসড়কের মাধ্যমে প্রবেশ করা যেতে পারে: NH 251, NH 848A এবং NH 848B । NH 251 দিউ দ্বীপের মধ্য দিয়ে, NH 848A নগর হাভেলির একটি ছিটমহলের মধ্য দিয়ে এবং NH 848B দমন শহরে শেষ হয়েছে।
ঘোরাঘুরি
[সম্পাদনা]ট্রেনে
[সম্পাদনা]ছিটমহল এবং আধা-ছিটমহলে রেলওয়ে স্টেশনের অভাবের কারণে, কেউ গুজরাটে অবস্থিত নিকটবর্তী রেলওয়ে স্টেশনগুলির মাধ্যমে দমন বা দাদরা এবং নগর হাভেলি থেকে দিউ পর্যন্ত ট্রেন ভ্রমণ করতে পারে।
সড়কপথে
[সম্পাদনা]কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলটিতে ঘোরাঘুরি করার জন্য প্রচুর ট্যাক্সি এবং অটোরিকশা পাওয়া যায়।
দর্শনীয়
[সম্পাদনা]গীর্জা
[সম্পাদনা]পূর্বে এই অঞ্চলটিতে পর্তুগিজ শাসনের সুবাদে দাদরা ও নগর হাভেলি এবং দমন ও দিউতে বেশ কয়েকটি গীর্জা রয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে দমনের চার্চ অফ বম জেসাস এবং দিউতে সেন্ট পলস চার্চ। চার্চ অফ বম জেসাসের সজ্জিত সিলিং ও খোদাই করা প্রবেশপথ আছে। সেন্ট পল চার্চের নামকরণ করা হয়েছে সেন্ট পলের নামানুসারে, যিনি যীশু কর্তৃক প্রেরিত ছিলেন এবং অজাতীদের (খ্রিস্টান নয় এমন) কাছেও তিনি প্রেরিত (Gentiles) নামে পরিচিত ছিলেন।
মন্দির
[সম্পাদনা]গীর্জার পাশে দাদরা এবং নগর হাভেলি এবং দমন ও দিউতে বেশ কয়েকটি মন্দিরও রয়েছে। যাদের মধ্যে সিলভাসার বালাজি মন্দির, দিউতে গঙ্গেশ্বর মন্দির ও দমনের জৈন মন্দির উল্লেখযোগ্য।
আহার
[সম্পাদনা]স্থানীয় গুজরাটি খাবার এবং ঐতিহ্যবাহী পর্তুগিজ খাবার উভয়ই সাধারণ। উপকূলীয় অঞ্চল হওয়ায় জনগোষ্ঠী মূলত সামুদ্রিক খাদ্যের উপর নির্ভরশীল। সাধারণত রোটলি ও চা সকালের নাস্তা হিসেবে খাওয়া নেওয়া হয়। দুপুরের খাবারে রোটলা ও সাগ; রাতের খাবার হিসেবে সাগ ও তরকারিসহ চোখা খাওয়া হয়। উত্সব উপলক্ষে তৈরি কিছু খাবারের মধ্যে রয়েছে, পুরি, লাপসি, পোটায়া, দুধ-প্লাগ, ঢাকানু।
পানীয়
[সম্পাদনা]দাদরা ও নগর হাভেলি এবং দমন ও দিউতে প্রতিবেশী গুজরাটের বিপরীতে অ্যালকোহল বৈধ। তাই প্রচুর লোক এই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে আসে বিশেষত পান করতে। ভারতীয় ও বিদেশী বিয়ার ও স্পিরিট ব্যাপক হারে পাওয়া যায়। আপনি বিয়ার এমনকি হকার দ্বারা বিয়ার বিক্রি হতেও দেখতে পারেন। তবে ভেজাল মদ এড়াতে দোকান থেকে আপনার মদ কেনা ভালো।