পোপায়ান
কলম্বিয়ার কাউকা বিভাগের রাজধানী হল পোপায়ান। পশ্চিম পর্বতমালা এবং কেন্দ্রীয় পর্বতমালায় অবস্থিত পুবেনজা উপত্যকায় এই শহরটি অবস্থিত। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৭৬০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত এই শহরের জনসংখ্যা প্রায় ৩১৮,০৫৯ এবং এর আয়তন ৪৮৩ বর্গকিলোমিটার। এখানকার গড় তাপমাত্রা ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
পোপায়ান তার ঔপনিবেশিক স্থাপত্য এবং কলম্বিয়ার সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক জীবনে অবদানের জন্য সুপরিচিত। শহরের কেন্দ্রে অবস্থিত অধিকাংশ ঔপনিবেশিক ভবনের রং সাদা হওয়ায় একে "সাদা শহর" নামেও ডাকা হয়। এখানে সান ফ্রান্সিসকো, সান জোসে, বেলেন, সান্তো ডমিঙ্গো, সান আগুস্টিন এবং ক্যাথেড্রাল বাসিলিকা নুয়েস্ট্রা সেনোরা দে লা আসুনসিয়ন (স্থানীয়ভাবে "লা ক্যাথেড্রাল" নামে পরিচিত) সহ বেশ কয়েকটি চার্চ রয়েছে। শহরের ক্যাথেড্রালে অ্যান্ডেসের মুকুট রাখা ছিল, যা ছিল ১৬শ শতাব্দীর একটি মেরিয়ানিষ্ট ভক্তিমূলক বস্তু। এতে ইনকা সম্রাট আতাহুয়ালপাকে বন্দী করার পর পাওয়া নীলমাণি জড়িত ছিল। স্থানীয় স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলির অর্থায়নের জন্য এটি বিক্রি করা হয়েছিল।
পোপায়ান কলম্বিয়ার সতেরোজন রাষ্ট্রপতির জন্মস্থান এবং বিখ্যাত কবি, চিত্রকর এবং সুরকারদের আবাসস্থল। কলম্বিয়ার প্রাচীনতম এবং সর্বাধিক বিশিষ্ট উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে একটি কাউকা বিশ্ববিদ্যালয় (১৮২৭ সালে প্রতিষ্ঠিত) এখানে অবস্থিত, তাই পোপায়ানকে "বিশ্ববিদ্যালয় শহর" নামেও ডাকা হয়। কাছাকাছি পুরাসে ন্যাশনাল ন্যাচারাল পার্ক রয়েছে। কাউকা বিভাগের উত্তরে অবস্থিত ভ্যালে ডেল কাউকা বিভাগের সবচেয়ে বড় শহর কালি এই শহরের নিকটতম।
১৯৮৩ সালের ৩১ মার্চ একটি ভূমিকম্পে শহরের মূল জৌলুষের অনেক কিছু ধ্বংস হয়ে যায়। যদিও অনেক ভবন পুনর্নির্মিত এবং মেরামত করা হয়েছিল, শহরের কেন্দ্রে এখনও ধ্বংসাবশেষ এবং খালি জমি রয়েছে। ২০০৫ সালে ইউনেস্কো কলম্বিয়ার সাংস্কৃতিক অমূল্য সম্পদের বৈচিত্র্য এবং অর্থের জন্য পোপায়ানকে গ্যাস্ট্রোনমির প্রথম শহর হিসাবে ঘোষণা করে। কাউকা বিভাগের রান্নার ইতিহাসকে বেছে নেওয়া হয়েছিল কারণ এটি প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে মৌখিকভাবে প্রেরিত ঐতিহ্যগত খাবার প্রস্তুতি পদ্ধতি বজায় রাখে। ২০০৯ সালে ইউনেস্কো ইস্টার সপ্তাহে সেমানা সান্তা মিছিলকে মানবতার মৌখিক ও অমূল্য সম্পদের একটি মাস্টারপিস হিসাবে ঘোষণা করে।