ফুলছড়ি উপজেলা বাংলাদেশের একটি প্রশাসনিক এলাকা যা রংপুর বিভাগের গাইবান্ধা জেলার অন্তর্ভূক্ত। ফুলছড়ি উপজেলা ২৫°০৬´ উত্তর অক্ষাংশ হতে ২৫°২৩´ উত্তর অক্ষাংশের এবং ৮৯°৩৪´ পূর্ব দ্রাঘিমা হতে ৮৯°৪৬´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশের মধ্যে অবস্থিত। ৩০৬.৫৩ বর্গ কিমি আয়তনের এই উপজেলাটির উত্তরে গাইবান্ধা সদর উপজেলা, দক্ষিণে সাঘাটা ও ইসলামপুর উপজেলা; পূর্বে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা এবং পশ্চিমে গাইবান্ধা সদর ও সাঘাটা উপজেলা অবস্থিত। এই উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা চরাঞ্চল।
কীভাবে যাবেন?
[সম্পাদনা]দেশের যেকোন স্থান হতে ফুলছড়ি উপজেলায় সরাসরি আসতে হলে কেবলমাত্র সড়কপথে আসতে হয়; রেলপথ, আকাশপথ বা জলপথে এখানে সরাসরি আসার কোনো ব্যবস্থা এখনও গড়ে ওঠেনি। ফুলছড়িতে কোনো রেলপথ নেই বিধায় রেলে করে আসা সম্ভব নয়। গাইবান্ধা জেলায় কোনো বিমানবন্দর না-থাকায় এবং নাব্যতা ও বড় নদ-নদী না-থাকায় এ অঞ্চলের সাথে দেশের অন্যান্য অঞ্চলের আকাশপথে বা নৌ-পথে কোনো যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি।
স্থলপথে
[সম্পাদনা]সড়ক পথে ঢাকা হতে ফুলছড়ি উপজেলার দূরত্ব ২৮৫ কিলোমিটার। উপজেলা সদরদপ্তরটি জেলা শহর গাইবান্ধা হতে ২৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
সড়কপথ
[সম্পাদনা]ঢাকা থেকে ফুলছড়ি উপজেলায় আসতে হলে মহাসড়ক পথে টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ, পাবনা এবং বগুড়া জেলা হয়ে আসতে হয়। ঢাকা থেকে এখানে সরাসরি বাসে আসা যায়; আবার, বিভিন্ন বিলাসবহুল পরিবহনের গাড়ীও ঢাকা-গাইবান্ধা রুটে চলাচল করে, যেগুলোর মাধ্যমে এখানে আসা যায়। গাইবান্ধা সদরের সাথে এই উপজেলার পাকা সড়ক পথে যোগাযোগ রয়েছে। তাছাড়াও উপজেলা সদর হতে ইউনিয়নগুলোতে যাওয়ার জন্য পাকা রাস্তা রয়েছে।
ঢাকার গাবতলী, মহাখালী, সায়েদাবাদ, শ্যামলী, কল্যানপুর, কলাবাগান, ফকিরাপুল, আসাদগেট - প্রভৃতি বাস স্টেশন থেকে ফুলছড়ি ও গাইবান্ধা আসার সরাসরি দুরপাল্লার এসি ও নন-এসি বাস সার্ভিস আছে; এগুলোতে সময় লাগে ৬.৩০ হতে ৮ ঘণ্টা। ঢাকা থেকে ফুলছড়ি ও গাইবান্ধার উদ্দেশ্যে শাহ ফতেহ আলী, নাবিল, এস আর ট্র্যাভেলস প্রভৃতি পরিবহন কোম্পানীর বাস আছে প্রতিদিন।
- নাবিল পরিবহন, ঢাকা: ☎ ০২-৯০০ ৭০৩৬, ৯০১ ৩৬৮২, ৮১২ ৭৯৪৯, মোবাইল: +৮৮০১৭১৪-৮২৭ ৩৭৩ (আসাদগেট);
- হানিফ এন্টারপ্রাইজ, ঢাকা: ☎ ০২-৯১৪ ৪৪৮২, ৮০১ ১৭৫০, ৯০০ ৩৩৮০, ৮১১ ৯৯০১, মোবাইল: ০১১৯৮-২২০ ০৫২ (শ্যামলী), ০১১৯০-১৮৮ ১৬৯ (গাবতলি);
- এস আর ট্র্যাভেলস, ঢাকা: মোবাইল: +৮৮০১৭১১-৩৯৪ ৮০১ (গাবতলি), +৮৮০১৫৫২-৩১৫ ৩১৮ (উত্তরা);
- শাহ ফতেহ আলী এক্সপ্রেস, ঢাকা: মোবাইল: ০১১৯৩-২২১ ০৮৫ (মহাখালি), ০১১৯৩-২২১ ০৮৪ (উত্তরা);
- আল হামরা ট্র্যাভেলস, ঢাকা: মোবাইল: +৮৮০১৭২১-৮০২ ০৩১ (গাবতলি)।
- ঢাকা-গাইবান্ধা রুটে সরাসরি চলাচলকারী পরিবহনে আসার ক্ষেত্রে ভাড়া হলোঃ
- এসি বাসে - ৭০০/- এবং
- নন-এসি বাসে - ৩৫০/- - ৫০০/-।
রেলপথ
[সম্পাদনা]ফুলছড়ি উপজেলায় কোনো রেলপথ নেই বিধায় এখানে কোনো রেল স্টেশনও নেই; রেলপথে কেবলমাত্র জেলা শহর গাইবান্ধা পর্যন্ত আসা যায়।
ঢাকার কমলাপুর রেল স্টেশন থেকে ট্রেনে সরাসরি গাইবান্ধা, অথবা লালমনিরহাট অভিমুখী ট্রেনে রংপুরের কাউনিয়া এসে সেখান থেকে সড়ক পথে ফুলছড়ি উপজেলায় আসা যায়। কমলাপুর রেল স্টেশন থেকে প্রতিদিন একাধিক ট্রেন গাইবান্ধা - কাউনিয়া পথে যাতায়ত করে। ঢাকা – গাইবান্ধা/কাউনিয়া রুটে চলাচলকারী ট্রেনগুলো হলো:
- ৭৭১ রংপুর এক্সপ্রেস (রবিবার বন্ধ) - রংপুর হতে রাত ০৮ টায় ছাড়ে ও ঢাকায় ভোর ৬টা ১৫ মিনিটে পৌছে এবং ঢাকা থেকে সকাল ০৯ টায় ছাড়ে ও রংপুরে সন্ধ্যা ৭টায় পৌছে;
- লালমনি এক্সপ্রেস (শুক্রবার বন্ধ) - ঢাকা থেকে রাত ১০ টা ১০ মিনিটে ছাড়ে।
ঢাকা-গাইবান্ধা রুটে চলাচলকারী রেলে ঢাকা হতে গাইবান্ধা আসার ক্ষেত্রে ভাড়া হলো -
- শোভন চেয়ার - ৫১৫ টাকা;
- স্নিগ্ধা (এসি চেয়ার) - ৯৮৪ টাকা।
ট্রেন সম্পর্কিত তথ্যের জন্য যোগাযোগ করতে পারেনঃ
- কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন, ☎ ০২-৯৩৫৮৬৩৪,৮৩১৫৮৫৭, ৯৩৩১৮২২, মোবাইল নম্বর: +৮৮০১৭১১৬৯১৬১২;
- বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন, ☎ ০২-৮৯২৪২৩৯;
- ওয়েবসাইট: www.railway.gov.bd।
আকাশ পথে
[সম্পাদনা]ফুলছড়ি উপজেলায় কোনো বিমানবন্দর না-থাকায় এখানে সরাসরি আকাশ পথে আসা যায় না, তবে ঢাকা থেকে সরাসরি বিমান যোগাযোগ ব্যবস্থা রয়েছে সৈয়দপুর বিমানবন্দরের সাথে; ঢাকা থেকে সৈয়দপুর এসে সেখান থেকে সড়কপথে ফুলছড়ি উপজেলায় আসা যায়। বাংলাদেশ বিমান, জেট এয়ার, নোভো এয়ার, রিজেন্ট এয়ার, ইউনাইটেড এয়ার - প্রভৃতি বিমান সংস্থার বিমান পরিষেবা রয়েছে ঢাকা থেকে সৈয়দপুর আসার জন্য।
বাংলাদেশ বিমানের একটি করে ফ্লাইট সপ্তাহে ৪ দিন ঢাকা-সৈয়দপুর ও সৈয়দপুর-ঢাকা রুটে চলাচল করে; ভাড়া লাগবে একপথে ৩,০০০/- এবং রিটার্ণ টিকিট ৬,০০০/-। সময়সূচী হলোঃ
- ঢাকা হতে সৈয়দপুর - শনি, রবি, মঙ্গল, বৃহস্পতি - দুপুর ০২ টা ২০ মিনিট;
- সৈয়দপুর হতে ঢাকা - শনি, রবি, মঙ্গল, বৃহস্পতি - দুপুর ০৩ টা ৩৫ মিনিট।
এই সম্পর্কিত তথ্যের জন্য যোগাযোগ করতে পারেনঃ
- ম্যানেজার, সৈয়দপুর বিমান বন্দর, মোবাইল - +৮৮০১৫৫৬-৩৮৩ ৩৪৯।
জল পথে
[সম্পাদনা]অপ্রচলিত মাধ্যম হিসাবে নৌপথ ব্যবহৃত হয়ে থাকে; তবে কেবলমাত্র স্থানীয় পর্যায় ছাড়া অন্য কোনো এলাকার সাথে, কিংবা ঢাকা থেকে বা অন্যান্য বড় শহর হতে সরাসরি কোনো নৌযান চলাচল করে না। অবশ্য, চরাঞ্চলে যোগাযোগের একমাত্র বাহন নৌযান।
দর্শনীয় স্থান ও স্থাপনা
[সম্পাদনা]- ফুলছড়ি বধ্যভূমি;
- কাইয়ারহাট বধ্যভূমি;
- কাইয়ারহাট গণকবর;
- ফুলছড়ি পাইলট হাইস্কুল (১৯৪০);
- কাঞ্চিপাড়া একাডেমী (১৯৬০)
- বালাসী ঘাট
খাওয়া দাওয়া
[সম্পাদনা]‘সিদল ভর্তা’ এখানকার জনপ্রিয় খাবার, যা কয়েক ধরনের শুঁটকির সঙ্গে নানা ধরনের মসলা মিশিয়ে বেটে তৈরি করা হয়। এছাড়াও রয়েছে বিখ্যাত “হাড়িভাঙ্গা” আম, তামাক ও আখ। এখানে সাধারণভাবে দৈনন্দিন খাওয়া-দাওয়ার জন্য স্থানীয় হোটেল ও রেস্টুরেন্টগুলোতে সুস্বাদু খাবার পাওয়া যায়।
থাকা ও রাত্রি যাপনের স্থান
[সম্পাদনা]ফুলছড়িতে থাকার জন্য স্থানীয় পর্যায়ের কিছু সাধারণ মানের আবাসিক হোটেল রয়েছে। এছাড়াও সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় থাকার জন্য উন্নতমানের আবাসন সুবিধা পাওয়া যায় -
- সার্কিট হাউজ, গাইবান্ধা, মোবাইল: +৮৮০১৭৬২-৬৯৫ ০৫৫;
- জেলা পরিষদ ডাক বাংলো, ফুলছড়ি, গাইবান্ধা।
জরুরি নম্বরসমূহ
[সম্পাদনা]- জননিরাপত্তা সম্পর্কিত যোগাযোগের জন্য
- ওসি গাইবান্ধা, মোবাইল: +৮৮০১৭১৩-৩৭৩ ৮৯২;
- ওসি ফুলছড়ি, মোবাইল: +৮৮০১৭১৩-৩৭৩ ৮৯৮।