বিষয়বস্তুতে চলুন

বাংলাদেশের জাদুঘরের তালিকা

উইকিভ্রমণ থেকে

জাদুঘর হলো এমন একটি স্থান যেখানে বিভিন্ন প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন, শিল্পকর্ম, প্রাকৃতিক ইতিহাসের নমুনা এবং অন্যান্য সাংস্কৃতিক মূল্যবান বস্তু সংরক্ষণ ও প্রদর্শন করা হয়। জাদুঘরগুলি আমাদের অতীতের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয় এবং আমাদের ইতিহাস, সংস্কৃতি ও বিজ্ঞান সম্পর্কে গভীর জ্ঞান প্রদান করে। ভ্রমণের ক্ষেত্রে, জাদুঘরগুলি একটি গুরুত্বপূর্ণ গন্তব্য। ভ্রমণকারীরা জাদুঘরে গিয়ে বিভিন্ন দেশের ইতিহাস ও সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে পারে, যা তাদের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ করে। এছাড়াও, জাদুঘরগুলি শিক্ষার্থীদের জন্য একটি আদর্শ শিক্ষার স্থান, যেখানে তারা বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে বাস্তব অভিজ্ঞতা লাভ করতে পারে। জাদুঘরগুলি আমাদের অতীতের জীবন্ত স্মৃতি এবং বর্তমান ও ভবিষ্যতের জন্য একটি মূল্যবান সম্পদ। বর্তমানে বাংলাদেশে সর্বমোট প্রায় ১০৩টি জাদুঘর রয়েছে।

১. আবুল বরকত স্মৃতি জাদুঘর

[সম্পাদনা]

আবুল বরকত স্মৃতি জাদুঘর (ভাষা শহীদ আবুল বরকত স্মৃতি জাদুঘর ও সংগ্রহশালা) বাংলাদেশের ঢাকা জেলার পলাশীতে জহুরুল হক হলের ভেতরে অবস্থিত। এটি ২০১২ সালের ২৫ মার্চ ভাষা শহীদ আবুল বরকতের স্মৃতির উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়। স্মৃতিফলক পার হয়ে ভেতরে ঢোকার পরে দেয়ালে বিশাল ক্যানভাসে আঁকা ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস, ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’ দাবিতে ছাত্রদের মিছিল, মিছিলে সরকারি বাহিনীর গুলিবর্ষণ ইত্যাদির নিদর্শন ও আলোকচিত্র রয়েছে। নিদর্শনের মধ্যে রয়েছে ভাষাশহীদ আবুল বরকতের ব্যবহৃত একটি খেলনা, তিনটি কাপ-পিরিচ, বাবাকে লেখা বরকতের তিনটি চিঠি, বরকতের ডিগ্রির সনদ। সংগ্রহশালায় রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চের ছাত্র আন্দোলন থেকে শুরু করে ১৯৫২ সালের আন্দোলন, ২১ ফেব্রুয়ারি বরকতের কবরে তার বাবা-মায়ের শ্রদ্ধাঞ্জলি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের প্রভাতফেরি, মাওলানা ভাসানী ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রভাতফেরির ছবি, একুশের গানসহ নানা ঘটনার আলোকচিত্র রয়েছে।

দোতলায় রয়েছে লাইব্রেরি ও গবেষণা কর্মের নির্দিষ্ট স্থান। জাদুঘরের পরিচালকের আগ্রহে সেখানে রয়েছে ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের অনেক বই এবং মূল্যবান অনেক দলিল। অনুমতি সাপেক্ষে তা ব্যবহার করতে পারেন আগ্রহী গবেষকরা।

২. এশিয়াটিক সোসাইটি ঐতিহ্য জাদুঘর

[সম্পাদনা]

শিয়াটিক সোসাইটি ঐতিহ্য জাদুঘর বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার নিমতলায় অবস্থিত একটি গুরুত্বপূর্ণ জাদুঘর। এই জাদুঘরটি মোগল ও ব্রিটিশ আমলের মধ্যবর্তী সময়ে ঢাকা তথা বাংলার সমাজ, অর্থনীতি, ধর্ম, জীবন ইত্যাদি বিষয়ে ঐতিহাসিক গুরুত্ব বহন করে। এখানে মসলিন কাপড়, ধাতব মুদ্রা, বিভিন্ন সময়ের তৈজসপত্র, এবং নবাব নুসরত জং এর দরবারের ত্রিমাত্রিক উপস্থাপনা সহ বিভিন্ন ঐতিহাসিক নিদর্শন সংরক্ষিত আছে।

জাদুঘরটি মোট পাঁচটি গ্যালারি নিয়ে গঠিত। প্রতিটি গ্যালারিতে ঐতিহাসিক স্মারক এবং প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়। প্রাথমিকভাবে জাদুঘরের জন্য ঐতিহাসিক ৮৩টি স্মারক সংগ্রহ করা হয়েছে।

৩. জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘর

[সম্পাদনা]

জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘর ১৯৬৫ সালের ২৬ এপ্রিল তৎকালীন পাকিস্তান সরকার কর্তৃক ঢাকায় প্রতিষ্ঠিত হয়। জাদুঘর প্রাঙ্গণ ৪ তলা বিশিষ্ট একটি ভবন রয়েছে এবং ৮টি প্রদর্শনী গ্যালারি বিদ্যমান আছে। ভবনের ১ম ও ২য় তলায় প্রদর্শশালা, ৩য় তলায় অফিস এবং ৪র্থ তলায় বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমি অবস্থিত। জাদুঘরটির প্রধান লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যসমূহ হলো স্থানীয় বিজ্ঞানীদের সৃষ্টিশীল কাজ ও প্রদর্শনযোগ্য প্রাকৃতিক সামগ্রী সংরক্ষণ এবং উদ্ভাবনমূলক কাজ পরিচালনার ক্ষেত্রে তরুণ বিজ্ঞানীদের উৎসাহিতকরণ, মানবসমাজের বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত অগ্রগতির নিদর্শন সামগ্রী প্রদর্শন এবং একটি বিজ্ঞানমনস্ক শিক্ষিত নাগরিক সমাজ গড়ে তোলা।

৪. ঢাকা নগর জাদুঘর

[সম্পাদনা]

ঢাকা নগর জাদুঘর বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার দক্ষিণ সিটি করপোরেশন কার্যালয়ের নগর ভবনে অবস্থিত। ঢাকার ইতিহাসকে সংরক্ষণের জন্য এই ভবনের ষষ্ঠতলায় জাদুঘরটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। এখানে রয়েছে মোগল এবং ব্রিটিশ আমলের বিভিন্ন দলিল, ছবি এবং গ্রন্থসহ নানা জিনিস। ঢাকার ১৯৫২, ১৯৬৬, ১৯৬৯ ও ১৯৭১ সালসহ নানা আন্দোলনের বেশকিছু দুর্লভ আলোকচিত্র ও পোস্টার রয়েছে। এখানে সংরক্ষিত আছে ঢাকা নগরীর স্মৃতি সংক্রান্ত জানা-অজানা নানা বিষয়। ১০০ বছর আগের ঢাকার এ মানচিত্রটি ছাড়াও এখানে আছে প্রাক-মোগল আমল থেকে বাংলাদেশ আমল পর্যন্ত ঢাকার সীমানার ধারাবাহিক বৃদ্ধির নকশা।[১] ঢাকার ইতিহাস সংবলিত ১০১টি দুর্লভ আলোকচিত্র রয়েছে এই নগর জাদুঘরে।

৫. বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘর

[সম্পাদনা]

বঙ্গবন্ধু সামরিক জাদুঘর বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা শহরের বিজয় সরণিতে অবস্থিত একটি জাদুঘর। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় সেনাবাহিনীর কমান্ডারদের ব্যাজ, পোশাক, অস্ত্র, গোলাবারুদ, কামান, এন্টি এয়ারক্রাফ্ট গান এবং যোগাযোগের জন্য ব্যবহৃত বিভিন্ন যানবাহন জাদুঘরটিতে রক্ষিত রয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের পর তৎকালীন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া বিভিন্ন যানবাহন এবং অস্ত্রও এখানে সংরক্ষিত রয়েছে। জাদুঘরটিতে তিন বাহিনীর জন্য নির্ধারিত গ্যালারিসহ ৬টি পৃথক অংশ রয়েছে ও প্রতিটি বাহিনীর গ্যালারিতে একটি বঙ্গবন্ধু কর্নার রয়েছে। জাদুঘরের নিচতলায় বাংলাদেশ ইতিহাস গ্যালারি, ২য় তলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী গ্যালারি, ৩য় তলায় বাংলাদেশ বিমান বাহিনী গ্যালারি, ৪র্থ তলায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা গ্যালারি এবং বেসমেন্টে বাংলাদেশ নৌবাহিনী গ্যালারি রয়েছে।

৬. বলধা জাদুঘর

[সম্পাদনা]

বলধা জাদুঘর বাংলাদেশের ঢাকার ওয়ারীতে খ্রিস্টান কবরস্থানের সন্নিকটে অবস্থিত যা ১৯২৫ সালে জমিদার নরেন্দ্র নারায়ণ রায় কর্তৃক গৃহ-জাদুঘর হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। আবাসিক ভবনের প্রথম তলায় ছিল প্রাচীনকালের শিল্পকর্ম। বারান্দায় দুটি বিশাল কড়াই ছিল। একটি হলঘরে মুদ্রা, পুঁতি ও শিল্প বিষয়ক গ্রন্থাবলি রাখা হয়েছিল। দ্বিতীয় কক্ষে গ্রামীণ ও শহুরে জীবনযাত্রার নানা মডেল এবং গজদন্ত ও রুপার ঝালরের কারুকর্ম ছিলো। তৃতীয় কক্ষে অস্ত্রশস্ত্রের সংগ্রহ এবং চতুর্থ কক্ষে প্রবাল ও সামুদ্রিক প্রদর্শনদ্রব্য ছিল। এসব সংগ্রহ পরে ঢাকা জাদুঘরে স্থানান্তরিত হয়েছে।

বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর

[সম্পাদনা]

বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা শহরের শাহবাগে অবস্থিত একটি জাদুঘর। এটি ২০ মার্চ, ১৯১৩ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয়, এবং ৭ আগস্ট, ১৯১৩ খ্রিষ্টাব্দে এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরে সংগৃহীত নিদর্শনের সংখ্যা প্রায় ৯৪ হাজার। সংগৃহীত নিদর্শনসমূহের প্রায় ৫ হাজার নিদর্শন ৪৫টি প্রদর্শন কক্ষে জনসাধারণের দর্শনের জন্য সাজিয়ে রাখা আছে।

বাংলাদেশ ডাক জাদুঘর

[সম্পাদনা]

বাংলাদেশ ডাক জাদুঘর ঢাকা জেনারেল ডাকঘর (জিপিও)-তে অবস্থিত একটি জাদুঘর। ১৯৬৬ সালে প্রতিষ্ঠিত এ জাদুঘরে নানা সময়ে ডাক বিভাগের ব্যবহৃত সরঞ্জামাদি স্থান পেয়েছে। উর্দি পরিহিত, বর্শা ও লণ্ঠন হাতে এবং কাঁধে চিঠির ব্যাগসহ একটি পূর্ণ মাপের ডাকপিয়নের অবয়ব এবং রানী ভিক্টোরিয়া আমলের একটি বিশালাকৃতির ডাকবাক্স উল্লেখযোগ্য। পার্সেল করার কাজে ব্যবহূত সাত মণ পর্যন্ত ওজন মাপার তুলাদন্ড, ডাকঘরে বিভিন্ন সময়ে ব্যবহূত সিলমোহর, হাত ও টেবিলঘড়ি, রানার ও পিয়নদের বেল্টে ব্যবহূত ব্যাজ, উর্দি ও পোশাক, বিভিন্ন প্রকার ডাকসামগ্রী বহনের উপযোগী বিভিন্ন মাপের ব্যাগ ও ডাকঘরের বিভিন্ন কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ব্যবহূত অন্যান্য দ্রব্যাদি, যার অধিকাংশই শত বছরের পুরাতন।

বাংলাদেশ পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর

[সম্পাদনা]

বাংলাদেশ পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর হলো বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাযর রাজারবাগে প্রতিষ্ঠিত একটি ঐতিহাসিক স্মারক সংগ্রাহক প্রতিষ্ঠান। জাদুঘরটিতে মুক্তিযুদ্ধের সময় পুলিশ সদস্যদের ব্যবহূত রাইফেল, বন্দুক, মর্টারশেল, হাতব্যাগ, টুপি, চশমা, মানিব্যাগ, ইউনিফর্ম, বেল্ট, টাই, স্টিক, ডায়েরি, বই, পরিচয়পত্র, কলম, মেডেল ইত্যাদি প্রদর্শনী রয়েছে। এছাড়াও রয়েছে রক্তভেজা প্যান্ট-শার্ট, দেয়ালঘড়ি, এমএম রাইফেল, মর্টার, মর্টার শেল, সার্চ লাইট, রায়ট রাবার শেল, রিভলবার, এলএমজি, মেশিনগান, এমএম এলএমজি, বোর রিভলবার, রাইফেলসহ বিবিধ স্মৃতিস্মারক।

বাংলাদেশ বিমান বাহিনী যাদুঘর

[সম্পাদনা]

বিমান বাহিনী যাদুঘর ঢাকার আগারগাঁওয়ে অবস্থিত বাংলাদেশের প্রথম বিমান জাদুঘর। মূলত বিভিন্ন সময়ের হেলিকপ্টার ও বিমান দিয়েই এই জাদুঘর সাজানো হয়েছে। যেমন- বলাকা, এয়ার টুওরার, পিটি-৬, ফুগাসি এম-১৭০, গ্লাইডার, এয়ারটেক কানাডিয়ান ডিএইচ ৩/১০০০, হান্টার বিমান, এছাড়াও আছে এফটি-৫, মিগ-২১,ডাকোটা বিমান, জি নাট, এফ৬, এ৫-১১১ ইত্যাদি।

বাংলাদেশ মুদ্রা জাদুঘর

[সম্পাদনা]

টাকা জাদুঘর বা মুদ্রা জাদুঘর বাংলাদেশের ঢাকা জেলার মিরপুরে অবস্থিত একটি জাদুঘর। এখানে সংরক্ষিত ও প্রদর্শিত হচ্ছে প্রাচীন আমল থেকে বর্তমান সময়কাল পর্যন্ত মুদ্রিত বিভিন্ন ধরনের ধাতব মুদ্রা, কাগজের নোট ও মুদ্রা সম্পর্কিত দ্রব্যসামগ্রী। স্মরণাতীতকাল থেকে ১৯ শতক পর্যন্ত বাংলায় ক্ষুদ্র লেনদেনে মুদ্রা হিসেবে কড়ি ব্যবহার করা হত, সে সব কড়ির কিছু নমুনাও রয়েছে প্রদর্শনীতে। জাদুঘরে এখন পর্যন্ত প্রায় ১২০টি দেশের কাগজের নোট, পলিমার, হাইব্রিড নোট ও ধাতব মুদ্রা রয়েছে।

বিজয় কেতন জাদুঘর

[সম্পাদনা]

বিজয় কেতন জাদুঘর বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় অবস্থিত একটি জাদুঘর যেটি মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযোদ্ধা এবং বীরত্বসূচক খেতাবপ্রাপ্তদের স্মরণে নির্মিত। এ জাদুঘরের ছয়টি গ্যালারিতে মুক্তিযুদ্ধে ব্যবহৃত সামরিক যোদ্ধাদের নানা কীর্তি, স্মৃতিস্মারক, সেক্টর কমান্ডারদের আলোকচিত্র ও পরিচিতি, এবং মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যবহৃত রাইফেল ও কামান প্রদর্শিত হয়। এখানে বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের বহনের কফিনও রাখা আছে। এছাড়াও প্রদর্শনী হিসেবে রয়েছে বাংলাদেশের সংবিধানের মূলকপি, জাতীয় পতাকা, বাংলাদেশের মানচিত্র এবং ধাতুপাতে খোদাই করা জাতীয় সঙ্গীত।

মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর

[সম্পাদনা]

মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মুক্তিযুদ্ধ-ভিত্তিক একটি জাদুঘর এবং বাংলাদেশের একমাত্র মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর। জাদুঘরটি ঢাকার এফ-১১/এ-বি, সিভিক সেক্টর, আগারগাঁওয়ে অবস্থিত। জাদুঘরের নতুন ভবনে ছয়টি গ্যালারি রয়েছে। এই গ্যালারিতে প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত কালপর্বের বিভিন্ন জনপদের প্রতিনিধিত্বমূলক প্রত্ননিদর্শন, ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের ঘটনা থেকে ১৭ এপ্রিল মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলায় প্রবাসী সরকার গঠন পর্ব, বাঙালির প্রতিরোধ গড়ে তোলার নিদর্শন ইত্যাদি রয়েছে।

লোকঐতিহ্য জাদুঘর

[সম্পাদনা]

লোকঐতিহ্য জাদুঘর ঢাকার বাংলা একাডেমির বর্ধমান হাউসের তৃতীয় তলার পশ্চিম পাশে অবস্থিত। বিষয়ভিত্তিক জাদুঘর হিসেবে জাদুঘরটি বাংলাদেশের লোকজ সংস্কৃতির সৃষ্টিশীলতা উপস্থাপন করে। ১৯৫৮ সাল থেকে শুরু করে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত বাংলা একাডেমি দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বিভিন্ন লোকউপাদান উপাদান সংগ্রহ করেছিল বর্তমানে সেগুলি এখানে প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যেমন- গাজীর পট, শতরঞ্জি, বাঁশ-বেতের উপকরণ, রিকশাচিত্র, দারুশিল্প’র সামগ্রী (কাঠের কাজ), গ্রামীণ জীবনধারার মডেল নকশিশিকা, নকশিকাঁথা, জামদানি, মৃৎশিল্পের অলংকার প্রভৃতি। এছাড়াও রয়েছে কাঠ, মাটি, ধাতু, শোলা প্রভৃতি উপকরণে তৈরি বিভিন্ন সামগ্রীসহ প্রায় পাঁচ শতাধিক সংগ্রহ।

শিল্পাচার্য জয়নুল লোক ও কারুশিল্প জাদুঘর

[সম্পাদনা]

শিল্পাচার্য জয়নুল লোক ও কারুশিল্প জাদুঘর, বাংলাদেশের প্রাচীন ঐতিহ্য রক্ষার্থে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে গঠিত একটি জাদুঘর, যা ঢাকার অদূরে সোনাগাঁতে অবস্থিত। এখানে স্থান পেয়েছে বাংলাদেশের অবহেলিত গ্রাম-বাংলার নিরক্ষর শিল্পীদের হস্তশিল্প, জনজীবনের নিত্য ব্যবহার্য পণ্যসামগ্রী। এসব শিল্প-সামগ্রীতে তৎকালীন প্রাচীন বাংলার ঐতিহ্যবাহী লোকশিল্পের রূপচিত্র প্রস্ফুটিত হয়। র্দার বাড়িতে মোট ১০টি গ্যালারী রয়েছে। গ্যালারিগুলোতে বাংলাদেশের প্রাকৃতিক, বৈশিষ্ট্য কাঠ এবং কাঠ থেকে বিভিন্ন কারুপণ্য তৈরি এবং সর্বশেষ বিক্রির সামগ্রিক প্রক্রিয়া, অত্যন্ত আকর্ষণীয়ভাবে সুন্দর মডেল দিয়ে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. উইকিপিডিয়া
  2. এনটিবি অনলাইন
  3. প্রথম আলো
  4. বাংলাপিডিয়া