চকরিয়া বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা।
জানুন
[সম্পাদনা]চট্টগ্রাম বিভাগীয় সদর থেকে প্রায় ৯২ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং কক্সবাজার জেলা সদর থেকে প্রায় ৪৮ কিলোমিটার উত্তরে ২১°৩৪´ থেকে ২১°৫৫´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১°৫৭´ থেকে ৯২°১৩´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ জুড়ে অবস্থিত চকরিয়া উপজেলার আয়তন ৫০৩.৭৮ বর্গ কিলোমিটার। ১৭৯৩ সালে চকরিয়া থানা গঠিত হয় এবং ১৯৮৩ সালে চকরিয়া থানাকে উপজেলায় রূপান্তরিত করা হয়। চকরিয়া উপজেলায় বর্তমানে ১টি পৌরসভা ও ১৮টি ইউনিয়ন রয়েছে।
নামকরণ
[সম্পাদনা]চকরিয়া উপজেলার নামকরণ নিয়ে একাধিক জনশ্রুতি রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল মাতামুহুরী নদীর চারটি বাক থেকে বাকচতুষ্টয় বা চক্রবাক, কারো মতে আকাশে প্রচুর চকুরী পাখির আনাগোনা থেকে চকরিয়া নামকরণ হয়েছে। ঐতিহাসিক ত্রিপুরা রাজাদের রাজমালা গ্রন্থে চাকরোয়া নামের একটি গ্রামের উল্লেখ আছে। এই চাকরোয়া থেকেই চকরিয়া নামের উৎপত্তির প্রমাণ বেশি মিলে। যেমন, সুলতানদের রাজত্বকালে শাসনকর্তা খোদাবক্স চাকরোয়া গ্রামে (বর্তমান কাকারা) প্রথম পদার্পণ করেন। খ্রিষ্টপূর্ব ২০০০ অব্দে এ নামের উৎপত্তি হয়েছে। ধারণা করা হয় যে, বর্তমান কাকারা ইউনিয়নে এক কালে চাক নামের একটি আদিবাসীর বসবাস ছিল যাদের সামান্য অস্তিত্ব একমাত্র বান্দারবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় বিদ্যমান। উপজাতিরা গ্রামকে রোয়া বলে। সেই অনুসারে চাক জনগোষ্টির বসবাসকৃত গ্রামটির নাম চাকরোয়া। কাজেই যেহেতু চাক উপজাতিরা বর্তমান চকরিয়াস্থ কাকারা ইউনিয়নে বসবাস করতো সেহেতু কাকারাকে চাকরোয়া হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। এই চাকরোয়া থেকেই চকরিয়া নামকরণ করা হয়। এ বিষয়ে ইতিহাস ভিত্তিক ব্যাপক প্রমাণ পাওয়া যায়।
জনসংখ্যা
[সম্পাদনা]২০১১ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী চকরিয়া উপজেলার জনসংখ্যা ৪,৭৮,৪৬৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২,৩৯,১৯৮ জন এবং মহিলা ২,৩৫,২৬৭ জন। এ উপজেলার ৯৩.৪% মুসলিম, ৫.৪% হিন্দু, ১.০২% বৌদ্ধ এবং ০.১৮% খ্রিস্টান। এছাড়া এ উপজেলায় মগ, রাখাইন, মারমা, মুরং, চাকমা প্রভৃতি উপজাতি বসবাস করে, এদের সবাই বৌদ্ধ ধর্মানুসারী।
কীভাবে যাবেন
[সম্পাদনা]সড়কপথে
[সম্পাদনা]চট্টগ্রাম শহরের বহদ্দারহাট বাস টার্মিনাল অথবা কক্সবাজার বাস টার্মিনাল থেকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক হয়ে বাস বা সিএনজি চালিত অটোরিক্সা যোগে চকরিয়া উপজেলায় যাওয়া যায়।
দর্শনীয় স্থান
[সম্পাদনা]- ডুলাহাজারা সাফারি পার্ক চকরিয়া পৌর বাস টার্মিনাল থেকে ১০ কিলোমিটার দক্ষিণে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক সংলগ্ন সড়কের পূর্বপাশে অবস্থিত ৬০০ হেক্টর এলাকা জুড়ে এ সাফারি পার্কের অবস্থান। যে কোন যানবাহনে যাওয়া যায়।
- শাহ্ ওমরের মাজার কাকারা ইউনিয়নে অবস্থিত। চকরিয়া পৌর বাস টার্মিনাল থেকে সিএনজি চালিত অটোরিক্সা যোগে যাওয়া যায়।
- বিজয়ানন্দ বৌদ্ধ বিহার মানিকপুরে অবস্থিত। চকরিয়া পৌর বাস টার্মিনাল থেকে সিএনজি চালিত অটোরিক্সা যোগে যাওয়া যায়।
এছাড়াও এ উপজেলার অন্যান্য দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে রয়েছে:
- ফজল কুকে ষাট গম্বুজ মসজিদ
- হাঁসের দীঘি
- বীর কামলা দীঘি
- মেধাকচ্ছপিয়া জাতীয় উদ্যান
উপজেলার ঐতিহ্য
[সম্পাদনা]চকরিয়া উপজেলার মানিকপুরের মহিষের দই এখনো বিখ্যাত।
কোথায় থাকবেন
[সম্পাদনা]চকরিয়া পৌরসভা এলাকার যে কোন হোটেলে সুলভ মূল্যে থাকার ব্যবস্থা রয়েছে।
খাওয়া দাওয়া
[সম্পাদনা]চকরিয়া পৌরসভা এলাকার যে কোন রেস্টুরেন্টে সুলভ মূল্যে খেতে পারেন।