উইকিভ্রমণ থেকে

পেঁচার দ্বীপ বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলার কলাতলী এলাকায় অবস্থিত পরিবেশবান্ধব অবকাশ যাপন কেন্দ্র। কক্সবাজারের কলাতলী থেকে সিএনজিচালিত অটোরিক্সায় চেপে সোজা রেজুব্রিজের কাছেই মারমেইড ইকো রিসোর্ট। রাস্তার ওপর থেকে তাকালে গাছপালার আড়ালে চোখে পড়বে ছোট-বড় অনেক কুটির। বড় রাস্তার ঢাল বেয়ে নিচে নামলেই কানে আসবে কলরব। দুই পাশের জলাধারে ঝিকমিক করে ভরদুপুরের রোদ্দুর। অভ্যর্থনা কক্ষে এগিয়ে গেলে মিলবে রঙবেরঙের বুনো ফুলের গুচ্ছ। এরপর পাওয়া যাবে স্বাগতঃ পানীয়, মানে ওয়েলকাম ড্রিঙ্ক। সদ্য গাছ থেকে পেড়ে আনা কচি ডাব। ডাবের পানি শেষ করতে করতে বাংলো বরাদ্দের কাজ শেষ। যে বাংলোয় থাকার ব্যবস্থা হয়েছে তার নাম রোড লাভার স্কুইড। বাকি গোটা তিরিশেক ভিলা আর বাংলোর নামেরও একই হাল।

জানুন[সম্পাদনা]

ঘরটা সত্যিই মন ভালো করে দেয়ার মতো। বাইরে গ্রেফ কুটিরের মতো দেখালেও ভেতরে মোটামুটি আধুনিক সকল সুযোগ-সুবিধা বিদ্যমান। স্নানঘরটায় ঢুকলে মুহূর্তেই মন ভালো হয়ে যাবে। প্লাস্টিকের বোতলে ভর্তি বাজারি শ্যাম্পুর বদলে কাচের পাত্রে ভেষজ উপায়ে বানানো শ্যাম্পু। সেটি সবুজ গাছের পাতা দিয়ে কায়দা করে ঢাকা। দুই পাশে দুটো কাঠগোলাপ ফুল গুঁজে দেয়া আছে। সাবান, শ্যাম্পু রাখা হয়েছে নারকেলের লম্বা একটা খোলের মধ্যে।

মারমেইড ইকো রিসোর্টে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর এমন সব জিনিসপত্র যথাসম্ভব কম ব্যবহার করা হয়েছে। পেঁচার দ্বীপের জন্য প্রাকৃতিক পরিবেশ বহাল রেখেই সব বাংলো তৈরি করা হয়েছে।

ইয়োগা সেন্টার, স্পা, নৌকা ভ্রমণ, সম্মেলন কক্ষ, প্রেক্ষাগৃহ সবকিছুরই এখানে ব্যবস্থা আছে এই পরিবেশবান্ধব অবকাশ যাপন কেন্দ্রে। মারমেইড রিসোর্টের মূল নক্সা করেছেন স্থপতি জিয়াউদ্দিন খান।

উপভোগ করুন[সম্পাদনা]

নাগরিক কোলাহল নেই। হাঁক ডাক নেই। দুপুরের রোদ মরে এলে কুটিরের সামনের বাঁশের বেঞ্চে গা এলিয়ে বসা ভীষণ আরামের। এ সময়ে নৌকা ভ্রমণে বেড়িয়ে পড়ার জন্য আদর্শ সময়। বাংলোর সারি আর নারকেল গাছ পেরিয়ে হেঁটে গেলে রেজু খালের পাড়। নীলচে রঙ ধরতে শুরু করেছে সবে সাগরের শাখা রেজু খালের পানিতে। পাশ দিয়ে ভেসে যাবে বাহারি সাম্পান। দূরে আদিগন্ত বিছিয়ে থাকা সমুদ্র। নৌকা থামবে ওপারের কোনো এ অজানা চরে। বালুকাবেলায় পা রাখতেই হুটোপুটি করে ছুটে পালাবে লাল কাঁকড়ার দল। দখিনা বাতাসের দোলার মাথা নেড়ে যেন অভিবাদ জানাবে ঝাউবন। তারপর ইচ্ছেমতো নির্জন সাগরতীরে ছুটোছুটি। কোন ফাঁক যে বেলা পেরিয়ে যাবে টেরই পাওয়া যাবে না। ফিরতে ফিরতে সন্ধ্যা পেরিয়ে গেলেও ক্ষতি নেই।

যত তাড়াই থাকুক, বোট ক্লাবের পাটতনে পেতে রাখা ঢাউস কেদারায় একবার বসে যেতে ভুল করা যাবে না। আকাশে পূর্ণচন্দ্র। সামনে সাগরের জল। আশ্চর্য মৌনতায় ডুবে আছে সমস্ত চরাচর। মন চাইলে গা এলিয়ে বসে থাকুন গভীর রাত অবধি। একদম কাকপক্ষীটিও জ্বালাতন করতে আসবে না।

কীভাবে যাবেন[সম্পাদনা]

কক্সবাজারের কলাতলী থেকে সিএনজিচালিত অটোরিক্সায় যাওয়া যায় পেঁচার দ্বীপে। ভাড়া পড়বে ২০০ টাকার মতো। মারমেইড ইকো রিসোর্টে বাংলো আছে নানা রকম। এক রাতের ভাড়া ২৫০০ থেকে ৫০০০ টাকার মধ্যে। যাবার পূর্বেই বাংলো বুকিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে।