বিষয়বস্তুতে চলুন

উইকিভ্রমণ থেকে
ব্যবহারকারী:RDasgupta2020/খেলাঘর
        

লিউব্লিয়ানা ("লি-ও-ব্লি-এএইচ-নুহ") স্লোভেনিয়ার ছোট রাজধানী শহর। ২০২০ সালে শহরের জনসংখ্যা ছিল ২৯৫,৫০০। শহরের দর্শনীয় স্থান এবং ভালো সুযোগ-সুবিধার জন্য এটি মনোমুগ্ধকর পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। এই শহর শিল্প, জাদুঘর এবং ছবি প্রদর্শনীতে পূর্ণ। এখানকার বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশ এবং সহজেই দেশের বাকি অংশ থেকে এখানে পৌঁছানো যায়।

ভৌগোলিক পরিচিতি

[সম্পাদনা]

স্টারি টিআরজি -এর উপরে বাড়ি

লিউব্লিয়ানা একটি পাহাড়ী অঞ্চলের প্রবেশদ্বার। এই অঞ্চল বেশ কয়েকটি নদী উপত্যকার সঙ্গম, তাই প্রাগৈতিহাসিক থেকেই এখানে বসতি স্থাপন হয়েছে এবং এই অঞ্চল বাণিজ্য এবং পরিবহনের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। এই অঞ্চলের প্রথম পরিচিত শহরটি ছিল রোমান কলোনিয়া ইউলিয়া অ্যামোনা।; মধ্যযুগীয় সময়ে এর নাম হয় লাইবাচ। এখনও কিছু জার্মান-ভাষী এই নামটি ব্যবহার করে। এই অঞ্চল অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরির অধীনে পড়ে। ১৯১৮ সাল পর্যন্ত এই অঞ্চল হ্যাপসবার্গ সাম্রাজ্যের একটি ডাচি বা প্রদেশ ছিল। ২০ শতকের বেশিরভাগ সময় এটি । শেষে ১৯৯১ সালে এই অঞ্চল স্বাধীনতা লাভ করে। লিউব্লিয়ানা আগে কেবল একটি আঞ্চলিক রাজধানী ছিল এবং মাত্র কয়েক দশক আগে থেকে এটি দেশের জাতীয় রাজধানী হিসেবা স্বীকৃত হয়েছে। শহরের পরিবেশ বেশ আরামদায়ক এবং এখানকার লোকজন বেশ বন্ধুত্বপূর্ণ। আরামে কয়েকদিন কাটানোর জন্য এবং রাস্তা ধরে নিশ্চিন্তে হাঁটা এবং পরিবেশ উপভোগ করার জন্য এই স্থান আদর্শ।

লিউব্লিয়ানার বর্তমান নাম কীভাবে এসেছে তা সঠিকভাবে কেউ জানে না। স্লোভেনীয় ভাষায় লিউব্লিয়ানা শব্দের অর্থ প্রিয়। তবে কেবল এই একটি শব্দ থেকে শহরের নামকরণ হয়েছে সেটা জোড় দিয়ে বলা যায়না। শহরটি লুব্লজানিকা নদীর উপত্যকায় অবস্থিত, যার দুপাশে সবুজ পাহাড় রয়েছে। দক্ষিণ-পূর্বদিকের পাহাড়ে দুর্গ এবং শহরের প্রাচীনতম অঞ্চলের সাথে নদীটি সমকোণ প্রবাহিত হয়েছে। ১৯ শতকের একটি রাস্তার নদীর উত্তর উপকূল ধরে প্রসারিত। আধুনিক শহরটি নদীর পশ্চিম এবং উত্তর শহরের ধার ধরে বিস্তৃত। প্রাচীনকালের তিনটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ পার করে শহর এবং তার স্থাপত্যশৈলী আজকের বর্তমান রূপ পেয়েছে। ১৫১১ সালের ভূমিকম্পের ফলে কাঠের শহরে আগুন লেগে ওঠে। পরে আগুন নিয়ন্ত্রণের জন্য শহরের রেনেসাঁ শৈলীর স্থাপত্যের ব্যাপক পুনর্নির্মাণ ঘটে এবং কাঠের বদলে পাথরের ব্যবহার শুরু হয়। ১৮৯৫ সালে আরেকটি ভূমিকম্পের ফলে শহরের আরেকবার পুনর্নির্মাণ হয়। ১৮ শতকে শহরের দক্ষিণ-পূর্ব দিকে খাল কেটে দুর্গের পাহাড়টিকে একটি দ্বীপে পরিণত করা হয়। তার আগে পর্যন্ত এই অঞ্চল একাধিকবার নদী দ্বারা প্লাবিত হয়েছিল। কিন্তু এই খাল কাটার পর থেকে ২০১০ সালের বিধ্বংসী বন্যার থেকেও এই অঞ্চল সুরক্ষিত ছিল। শহরের ট্রিপল এবং ড্রাগন সেতুগুলি লিউব্লিয়ানার গর্বিত প্রতীক হিসাবে আজও অক্ষত রয়েছে।

লিউব্লিয়ানা বছরের যেকোন সময় ঘুড়তে যাওয়া যায় কিন্তু পর্যটকদের বলকান জলবায়ুর উপযুক্ত পোশাক বহন করা প্রয়োজন। এখানকার গ্রীষ্মকাল উষ্ণ এবং দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩০°C অবধি থাকে।এসময় প্রায়শই গন অনুষ্ঠান এবং উত্সব পালিত হয় যার জন্য রাস্তায় যানজট এবং ভিড়ভাট্টা লেগেই থাকে। তবে মাঝে মাঝে বিকেলে বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টিপাত পরিবেশকে আর্দ্র করে তোলে। প্রারম্ভিক গ্রীষ্ম এবং শরৎ ঋতুতে আরও বেশি তাপমাত্রা উপভোগ করে, থাকে। শীতকালে তাপমাত্রা প্রায় শূন্যের কাছাকাছি থাকে এবং প্রায়শই তুষারপাত হয়। পাহাড় থেকে আসা ঝড়ো বাতাস এই অঞ্চলে বয়ে যায়। এসময়ে শহরে ক্রিসমাস পালিত হয় এবং রাস্তাগুলি হাজার হাজার আলোতে সজ্জিত হয়। নদীর তীরে খাবার ও পানীয়ের ব্যবসা জমে ওঠে। ফেব্রুয়ারী সাধারনত ধূসর। বসন্তের আগে শহরের প্রতিটি রাস্তার ধার এবং চৌরাস্তা রঙ-বেরং এর ফুলের সাজে সেজে ওঠে।

লিউব্লিয়ানা ট্যুরিস্ট ইনফরমেশন সেন্টার, ঠিকানাঃ স্ট্রিটারজেভা (ট্রিপল ব্রিজের পাশে), ফোন নাম্বারঃ +৩৮৬ ১ ৩০৬-৪৫৮৩, ইমেইলঃ tic@visitljubljana.si। লিউব্লিয়ানায় ভ্রমণকারীদের সহায়ক সংস্থা। সোম থেকে শুক্র সকাল ৮ টা থেকে রাত আটটা এবং শনি ও রবিবার সকাল ১০ টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা অবধি খোলা। এছাড়াও গ্রীষ্মে সকাল ১০ টা, দুপুর ২ টো এবং বিকেল ৫ টায় এরা শহরভ্রমন করায়। ভ্রমনের মূল্য €১০। এখান থেকে চমৎকার স্মৃতিচিহ্ন এবং বিনামূল্যে মানচিত্র সংগ্রহ করা যায়।

শহরের প্রধান ভাষা স্লোভেনীয় । এখানকার বেশিরভাগের অধিবাসীরা বসনিয়ান/ক্রোয়েশিয়ান/সার্বিয়ান ভাষাও বোঝেন। বিশেষোত ৪০ বছরের বেশি বয়সী লোকেরা সাবলীলভাবে এই সকল ভাষায় কথা বলতে পারে। লিউব্লিয়ানার অনেক বাসিন্দা ইংরেজিতেও কথা বলে, বিশেষ করে ৩০ বছরের কম বয়সীরা, তাদের মধ্যে কেউ কেউ জার্মান, ইতালীয়, ফরাসি বলতেও সক্ষম। স্প্যানিশ এবং/অথবা রাশিয়ান ভাষারো চল আছে। যে কোন প্রধান ইউরোপীয় ভাষার চল দেখা যায় এখানে।