লো-কার্ব ডায়েট অনুসরণকারী ভ্রমণ
ওজন কমানো, ডায়াবেটিস (মধুমেহ রোগ) , কোলেস্টেরল, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ অথবা হৃদরোগ, স্ট্রোক বা রক্তক্ষরণ প্রতিহত করার জন্য অনেকেই "লো-কার্বোহাইড্রেট ডায়েট" (কম শর্করাযুক্ত খাবার) গ্রহণ করেন । ভ্রমণকালে, মূলত যখন আপনি রেস্টুরেন্টের খাবারের উপর নির্ভরশীল বা কোনও ব্যক্তির গৃহে আতিথ্য গ্রহণ করেছেন যিনি আপনার খাবারের ব্যবস্থা করবেন না ; তখন এইধরনের লো-কার্ব ডায়েট মেনে চলা অসুবিধাজনক হলেও অসম্ভব নয়। এই নিবন্ধটি আপনাকে বেড়ানোর সময়ও এইধরনের ডায়েট বজায় রাখার উপায় সম্বন্ধে কিছু ধারণা দেবে যাতে আপনি ডায়েটে থেকেও বেড়ানোর আনন্দ নিতে পারেন।
পরিকল্পনা
প্রথমে জানতে হবে লো-কার্ব ডায়েটে কি খাওয়া যাবে আর কি কি খাওয়া যাবে না। প্রধান যে খাদ্য ও পানীয়গুলি লো-কার্ব ডায়েটে থাকবে না তা হল - দানাশস্য, আলু, অন্যান্য শর্করাজাতীয় মূল ও কন্দ, বিভিন্ন ফল, প্রায় সমস্ত ধরনের ফলের রস, মিষ্টি সোডা (নরম পানীয়) এবং মদ বা সুরা। কিছুক্ষেত্রে লো-কার্ব ডায়েট ফাইবার সমৃদ্ধ (আঁশযুক্ত) খাদ্যের উপর বিশেষ ভাবে জোর দেয় যেমন - পালং শাক ও ব্রকলি (সবুজ ফুলকপি)। আপনি যদি বিমানে সফর করেন তবে আপনার বিমান সংস্থাকে বিশেষ ধরনের খাদ্য পরিষেবা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করুন। কিছু কিছু বিমান সংস্থা লো-কার্ব মিল/থালি প্রদান করে, বেশিরভাগ বিমান সংস্থাই ডায়াবেটিক মিলের ব্যবস্থা করে দেয়। ডায়াবেটিক মিলে পরিশোধিত শর্করা ও ফ্যাট বা স্নেহজাতীয় খাদ্য কম পরিমানে থাকে। যদিও এই ধরনের মিলটি হুবহু আপনি যেমনটি চাইছেন তেমনটি নয় তবুও এটি অন্যান্যদের জন্য পরিবেশিত গরম করা পাস্তার চেয়ে সাস্থ্যকর। সল্প সময়ের বিমানযাত্রায় আপনি আপনার নিজস্ব জলখাবার বা স্ন্যাক্স নিয়ে যেতে পারেন, যেমন - বাদাম, চিজ, সহজেই খাওয়া যায় এমন সবজি যথা চেরি টমেটো, কুচানো শসা, ক্যাপসিকাম বা প্রোটিন বার। আপনি যদি আগে থেকেই লো-কার্ব ডায়েট মেনে চলেন তবে তো আপনি জানেন যে কোন কোন খাবার আপনার খাদ্য তালিকাভুক্ত হবে। কাজেই বাড়ি থেকে বের হওয়ার আগে জেনে নিন আপনি কি কি ধরনের খাবারদাবারের সম্মুখীন হতে চলেছেন এবং সেগুলি আপনার জন্য সঠিক কিনা। কোনও বিশেষ খাদ্য সম্বন্ধে বিস্তারিত জানার জন্য ভরসাযোগ্য ওয়েবসাইটের সাহায্য নিন; লো-কার্ব ডায়েট, কিটো ডায়েট বা ডায়াবেটিক ডায়েট সম্পর্কিত তথ্য অনুসন্ধান করতে পারেন। যেখানেই ইন্টারনেট সংযোগ পাবেন খাবারের নাম উল্লেখ করে শর্করার মাত্রা অনুসন্ধান করুন। (যথা - কিটোজেনিক ডায়েটে সাধারণত 30 গ্রাম আঁশবিহীন শর্করার অনুমোদন থাকে, ফলে আপনি সেকথা মাথায় রেখে খাবারের শর্করার মাত্রা নির্ণয় করতে পারেন)। তবে যদি আপনি এমন জায়গায় বেড়াতে যান যেখানে ইন্টারনেট সংযোগ ভালো নয় তবে আপনাকে আগে থেকে বিভিন্ন খাবারের (যেগুলি আপনি ঐ জায়গায় পেতে পারেন) শর্করা মাত্রার একটি ছাপানো তালিকা সঙ্গে নিয়ে যেতে হবে।
দ্বন্দ্ব ও আনন্দ
লো-কার্ব ডায়েট যাঁরা করেন তাদের মূল সমস্যা অবশ্যই শর্করা জাতীয় খাদ্য যেমন ভাত, রুটি, নুডলস এইসব খাবারের ব্যাপক ও সংস্কৃতিগত উপস্থিতি। ভাত বা রুটি এতটাই সর্বস্বীকৃত যে সেগুলোকে বর্জন করা খুবই মুশকিল। আপনি যদি বলেন যে আপনি ডাক্তারের পরামর্শে স্বাস্থ্যের কারণে লো-কার্ব ডায়েট খাচ্ছেন তবে সবাই আপনাকে সহানুভূতির দৃষ্টিতে দেখবে। আপনি বরং উচ্চ-শর্করাযুক্ত খাবার খুব কম পরিমাণে খেতে পারেন। সামান্য পরিমাণ রুটি হয়ত আপনার অতটাও ক্ষতিসাধন করবে না।তবে আপনাকে পরিমাপের উপর দৃষ্টি রাখতে হবে। কিন্তু আপনি যদি এমন কারুর আতিথ্য গ্রহণ করেন যিনি শুধুই উচ্চ-শর্করাযুক্ত খাবারই পরিবেশন করেছেন, তখন? আপনাকে ভাবতে হবে যে এটি কি আপনাকে সত্যিই অসুস্থ করে তুলবে? যদি শুধু ওজন কমানোই উদ্দেশ্য হয় তবে জেনে রাখা ভাল যে একবারের জন্য উচ্চ-শর্করাযুক্ত খাবার খেলে আপনার তেমন ক্ষতি হবে না, বরং তা যদি আপনাকে সামাজিকতা বজায় রাখতে সাহায্য করে তবে তা গ্রহণ করা যেতে পারে (যখন আর কোনো উপায়ান্তর নেই)।
অপর পক্ষে দেখা যায় অনেক লো-কার্ব ডায়েটারই যখন মিষ্টান্ন বা রুটিজাতীয় খাবার খেতে শুরু করেন তখন তার মাত্রা ঠিক রাখতে পারেন না। ভেগান হলে আপনি যথেচ্ছ পরিমানে চিজ জাতীয় খাবার খেতে পারেন আর যদি নিরামিষাশী হন তবে তো বিভিন্ন ধরনের মাংস খেতেই পারেন যদি না তাতে ময়দা, কর্ণস্টার্চ, পাঁউরুটি বা বিস্কুটের গুঁড়ো ব্যবহার করা হয়। বেশ কিছু ফল আছে যা আপনি নির্দ্বিধায় খেতে পারেন তবে পরিমাণের ব্যাপারে সতর্কতা প্রয়োজন। উদাহরণ স্বরূপ বলা যেতে পারে - একটি মধ্যম আকারের পিচফলে 13 গ্রাম শর্করা থাকে, ফলতঃ আপনি যদি কঠোর ভাবে কিটো ডায়েট মেনে চলেন সেক্ষেত্রে ঐ একটি পিচফল আপনাকে কিটোসিস থেকে অব্যাহতি দিতে অক্ষম। বেরিজাতীয় ফল সাধারণত লো-কার্ব হয় তা সে যতই মিষ্টি হোক না কেন। তাই ফুল-ফ্যাট ইয়োগার্টে ব্লু-বেরি বা স্ট্র-বেরি যথেচ্ছ পরিমাণে দিয়ে খাওয়া বিধিসম্মত। আশ্চর্যজনক এই যে বীটও কিন্তু অল্প পরিমানে খাওয়া যেতেই পারে যেহেতু 1কাপ বীট থেকে মাত্র 9 গ্রাম শর্করা পাওয়া যায়।কাজেই স্যালাডের সাথে কয়েকটুকরো বীট খেলে এমন কিছু সমস্যা হবে না। অনেকের মতে বিয়ার বা ককটেল ছাড়া (যেহেতু তাতে কিছু মিষ্টান্ন যুক্ত করা থাকে) অন্যান্য সুরা সামান্য পরিমানে লো-কার্ব ডায়েটে খাওয়া যেতেই পারে - যদিও এ ব্যাপারে মতানৈক্য আছে।
রেস্তোরাঁয় খাওয়া-দাওয়া লো-কার্ব ডায়েটের ক্ষেত্রে রেস্তোরাঁয় খাওয়া-দাওয়ার সুবিধা অসুবিধা দুদিকই আছে। পাস্তা বা শেষ পাতের মিষ্টি আপনার জন্য না হলেও অনেক রেস্তরাঁই গ্রিলড বা ব্রয়েলড মাছ, স্টেক, ভেড়ার মাংস বা মুরগীর রোস্ট পরিবেশন করে আপনার জন্যই। এগুলোর সঙ্গে খাবার জন্য যদি আলুর কোনও পদ থাকে তবে তার পরিবর্তে আলাদা দাম দিলে স্যালাড বা অন্য সবজিও পেতে পারেন ।
ছবি - [সবজি দেওয়া অমলেট রেস্তরাঁর খাবারের ক্ষেত্রে একটি ভাল পছন্দ। ]
প্রাতরাশ বা দুপুরের খাবারের জন্য ডিম একটি ভালো পছন্দ। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায় চিজ দেওয়া অমলেট, যেকোনও মাংসের পদ এবং সবুজ শাকসবজি যেমন পালং শাক লো-কার্ব ডায়েটের বেশ ভাল সমণ্বয় হতে পারে যদি আপনি এর সাথে থাকা আলু বা পাঁউরুটির উচ্চ-শর্করাযুক্ত পদগুলিকে বর্জন করতে পারেন।
প্রাদেশিক রন্ধনশৈলী এখানে পূর্ব-পরিকল্পনা করার সুবিধার্থে বিভিন্ন ধরনের খাবারদাবারের সম্পর্কে কিছু ধারণা দেওয়া হল ।
আমেরিকা আর্জেন্টিনা আরও দেখুন : আর্জেন্টিনার রন্ধনশৈলী আর্জেন্টিনার মানুষজন স্টেক পছন্দ করেন, আর তাদের কাবাবগুলি প্রধানত ঝলসানো মাংস যা স্যালাডের সঙ্গে পরিবেশিত হয়। ফাইবার সমৃদ্ধ সবজি যেমন টমেটো, পেঁয়াজ, লেটুস ও জুকিনি খুবই সহজলভ্য। পিৎজা, ইতালীয় পাস্তারও চল আছে তবে তা লো-কার্ব ডায়েটে চলবে না। এমপেনাডার (একধরনের স্প্যানিশ নোনতা পেস্ট্রি) পুরটা লো-কার্ব ডায়েটে চলতেও পারে তবে তার বাইরের আবরণটি নৈব নৈব চ। স্থানীয় গরম পানীয়, মাতে(mate), সাধারণত মিষ্টি হয় কারণ তাতে চিনি দেওয়া থাকে।
মেক্সিকান আরও দেখুন : মেক্সিকান রন্ধনশৈলী ছবি [একটি কড়মড়ে ট্যাকোতে সাধারণত 10 থেকে 15 গ্রাম কার্বোহাইড্রেট থাকে (পুরের উপর নির্ভর করে)] প্রথাগত মেক্সিকান খাবারে সবজি, ভুট্টা ও বিনসের আধিক্য দেখা যায়। ভাত এক্ষেত্রে বৈদেশিক খাবার, তাই বাড়ির খাবারে তার প্রচলন না থাকলেও রেস্তরাঁয় সহজলভ্য। ক্যাল/মেক্সিকান বা টেক্স/মেক্সিকান ট্যাকুয়েরিয়ার(রেস্তরাঁ যেখানে ট্যাকো পাওয়া যায়) খাবারদাবার লো-কার্ব ডায়েটের উপযোগী। টরটিলা (মেক্সিকান রুটি) বাদ দিলেও ট্যাকোর বাদবাকি অংশ দিয়েই কাজ চালাতে পারবেন। মুচমুচে ভুট্টার তৈরি ট্যাকোর খোলগুলি ময়দার তৈরি টরটিলার তুলনায় অপেক্ষাকৃত কম শর্করাযুক্ত। বুরিটোর মত পদগুলি এড়িয়ে চলুন কারণ এটি ভাত সহ পরিবেশিত হয় অথবা ভাত ছাড়া পদটি পরিবেশনের জন্য অনুরোধ করুন। যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে অতিরিক্ত শর্করাযুক্ত খাবারদাবার বর্জন করার চেষ্টা ব্যাখ্যাতীত তাই তার চেয়ে মাত্রা নিয়ন্ত্রণ অধিক সুবিধাজনক। তাই প্রত্যেকে পূর্ণাঙ্গ মিল খাওয়ার থেকে একটি মিল ভাগ করে খাওয়া বেশী সুবিধাজনক ও সাশ্রয়কর।
এশিয়া চীনা ছবি [ হাল্কা নেড়েচেড়ে ভাজা সবজি লো-কার্ব ডায়েটের জন্য বেশ ভাল পছন্দ, যদি তা ভাত বা নুডলস এবং মিষ্টি বা গাঢ় সস ছাড়া খাওয়া যায়।] পশ্চিমী ধাঁচের চীনা খাবার লো-কার্ব ডায়েটারদের পক্ষে বেশী অসুবিধাজনক যেহেতু এতে নানারকম সস, ভুট্টার আটা এবং/অথবা চিনি মেশানো থাকে; আর তা ভাতের সাথে পরিবেশন করাই প্রথা। চীনা খাবার কিন্তু ভাত ছাড়াও খাওয়া যায়। কোনও ভোজসভায় ভাত না নিয়ে বা শেষ পাতে অল্প ফ্রায়েড রাইস খেয়ে কাটানোই যায়। ভুট্টার আটা ব্যবহার না করে বানানো স্যঁতে (হাল্কা ভাজা) সবজি খান।আদা ও পেঁয়াজ শাক দিয়ে সেদ্ধ মাছ অথবা পাঁউরুটি ছাড়া রসুন দিয়ে ভাজা বা পোরানো মাংসও খেতে পারেন। গুয়াংডং বা অন্য কিছু অঞ্চলে মাংস ঝলসানোর সময় চিনি বা সয়া সস মেশানোর প্রথা আছে তাই আগে থেকে সতর্ক থাকা দরকার। বেজিং-এর রেস্তরাঁগুলিতে ডাম্পলিং-এর সাথে সবজির আচার দেওয়ার চল আছে। অনেক ক্যান্টোনিস রেস্তরাঁয় ডিম-সামের সাথে সাথে মুরগির রোস্ট বা সেদ্ধ সবজিও পরিবেশন করা হয় যদি আপনি চান। প্রথাগত ক্যান্টোনিস ডিম-সাম পদগুলির মধ্যে মুরগীর পায়া ও রসুন দিয়ে ভাজা চিংড়ি বেশ প্রোটিন সমৃদ্ধ কিন্তু দেখে নিতে হবে যে রান্নার সময় ভুট্টার আটা দেওয়া হয়েছে কি না। পাঁজর দেওয়া ব্ল্যাক বিনসে অনেক সময় চিনি দেওয়া থাকে।
থাই আরও দেখুন : থাই রন্ধনশৈলী থাই খাবারে চিনির ব্যবহার পরম্পরাগত তাই লো-কার্ব ডায়েটারদের জন্য তা অসুবিধাজনক। যদি আপনি বিভিন্ন আস্বাদের ভারসাম্য বজায় রাখতে পারেন তবেই অতিরিক্ত মাত্রার চিনি এড়ানো সম্ভব। যাই হোক, আপনাকে বিভিন্ন পদ যেমন লার্ব ইত্যাদিতে মেশানো চালের গুঁড়োর ব্যাপারেও সতর্ক থাকতে হবে।
উত্তর ভারতীয় আরও দেখুন : দক্ষিণ ভারতীয় রন্ধনশৈলী ছবি - [ পেঁয়াজ ও লেবুর রস ছড়ানো মুরগির তন্দুরি ]
তন্দুরি পদগুলি সাধারণত লো-কার্ব ডায়েটের উপযোগী। অপরপক্ষে, ঝোলের পদগুলির থেকে শুকনো পদগুলিতে গাঢ়ত্ব বৃদ্ধিকারী শর্করা মেশানোর সম্ভাবনা কম। তবে আপনি ময়দা, ভুট্টার আটা, চিনি মেশানো আছে কিনা তা জিজ্ঞেস করে নিতেই পারেন। লস্যি খাওয়ার সময় আপনি নোনতা লস্যি চাইতে পারেন (একে ছাঁচও বলা হয়)। আর মসলা-চা চাওয়ার সময় চিনি ছাড়া বলতে ভুলবেন না। আলু বহুল প্রচলিত হলেও তা বর্জন করার চেষ্টা করুন। বিভিন্ন প্রকার ডালে (গোটা/ভাঙা) শর্করার মাত্রা বিভিন্ন ফলে ডাল খাওয়ার আগে পুষ্টিগুণ দেখে নেওয়া উচিৎ।
ভূমধ্যসাগরীয় ইতালীয় বা গ্রীক আরও দেখুন : ইতালীয় রন্ধনশৈলী / গ্রীক রন্ধনশৈলী ছবি [ "ইনসালাটা ক্যাপরিস" একটি টমেটো, চিজ ও তুলসী সমৃদ্ধ স্যালাড। ] টুসকান রেস্তরাঁগুলিতে বিস্টিকা এল্যা ফিওরেন্টিনা বা ঝলসানো পদের নির্দেশ দিন। খাওয়া শুরু করতে পারেন এন্টিপাস্টো জলপাই, জারিত সবজি, সসেজ বা জারিত মাংস অথবা স্যালাড দিয়ে । ইতালিতে গ্রীষ্ম কালে ইনসালাটা ক্যাপরিস ( টমেটো, চিজ ও তুলসী সমৃদ্ধ একটি স্যালাড) পাবেন। সঙ্গের পদ হিসেবে কনটোরোনি (একবচনে: কনটোরোনো) একটি প্রধান ইতালীয় পদ বলে চিহ্নিত। আপনি সবুজ সবজি (যেমন - শাকজাতীয়র মধ্যে পালং বা ব্রকলির পাতা, জুকিনি বা ঝার সিম) নিতে পারেন।
শেষ পাতে মিষ্টির পরিবর্তে বেরিজাতীয় ফলের সাথে মিষ্টি ছাড়া ক্রীম ভালো পছন্দ হতে পারে। মধু ও বাদাম দেওয়া গ্রীক ইয়োগার্ট সাধারণত শেষপাতে পরিবেশিত হয়; আপনি এক্ষেত্রে মধুছাড়া বা কম মধুযুক্ত পদটি নিতে পারেন।
মধ্য প্রাচ্য আরও দেখুন : মধ্যপ্রাচ্যের রন্ধনশৈলী ছবি [এই টেক এওয়ে খাবারটিতে কাঁচা পেঁয়াজ ও শসা সহ ভেড়ার মাংসের কাবাব আছে ] সাওয়ারমা একটি উপযুক্ত পছন্দ হতে পারে যদি তা মাংসের কিমা ও ময়দার তৈরী না হয়ে মাংসের কাবাব দিয়ে তৈরী হয়। মিশ্রথালির ক্ষেত্রে টবুওলাহ, বুলগুর গমের পদ, না খাওয়াই ভাল। মুজাদ্রাও গম থেকে তৈরী তাই এড়িয়ে যাওয়াই ভাল। "ফলাফল" -এ প্রচুর চিনি থাকে, তাই মাত্রা রেখে খাওয়াই উচিৎ ; হামাসে কিন্তু শর্করার পরিমাণ অনেক কম।
টার্কিশ নিরামিষাসী না হলে আপনি কাবাব, ঝলসানো মাছ বা ঐধরনের পদ পেতে পারেন। এখানে খুব ভাল সসেজ, যেমন সুজুক পাওয়া যায়।এখানে দারুণ স্যালাডও পরিবেশিত হয়; মেজেস-ও পছন্দ করতে পারেন। তবে পুর ভরা সবজির ( যেমন - আঙুরলতা, ক্যাপসিকাম, বেগুন ইত্যাদি) ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে কারণ এগুলোতে ভাতের পুর ভরা থাকে। ইউরোপ জার্মান/ অস্ট্রিয়ান আরও দেখুন : জার্মান রন্ধনশৈলী সুস্বাদু জার্মান পাঁউরুটি বা অস্ট্রিয়ান স্ট্রুডেল ভয়ে ভয়ে খাবার আগে জেনে রাখুন এখানে কিন্তু দানের কাবাব প্রায় সব শহরে সর্বত্রই পাওয়া যায়। দানের স্ট্যান্ডগুলিতে আপনি স্যালাড সহ বা র্যাপ পাবেন তাই শুধু শুধু পাতলা রুটি খাওয়ার প্রয়োজন নেই। আলু দিয়ে তৈরী সহকারী পদ ও চিনি ভর্তি সস বাদ দিলে আপনি উর্স্ট (একধরনের সসেজ) খেতে পারেন। এসব জায়গা বিয়ারের জন্য বিখ্যাত হলেও এখানে খুব ভাল ওয়াইন পাওয়া যায় (ড্রায়ার ধরনেরটি আপনার ডায়েটের উপযোগী), অস্লার(একধরনের কড়া মদ)-ও মিলবে সহজেই। কোনও কোনও অস্লার যদি মিষ্টি স্বাদের হয় সেক্ষেত্রে আপনি পুয়া উইলিয়ামসের (Poire williams) অ দে ভি (eaux de vie)-ও খেয়ে দেখতে পারেন। বিয়ার ও প্রেৎসেলের (pretzels) রাজত্বে সস্তায় কিছু খুঁজলে মুদির (grocery) দোকানই ভরসা, তবে কিছু কিছু বেকারিতে 'বুনটা আয়া' (Bunte Eier) বা রঙিন ডিম (বেশী সেদ্ধ ডিম) পাওয়া যায়। সুপার মার্কেটে সবজির দাম বেশ সস্তা, হাল্কা সুগন্ধযুক্ত চিজ যথা বুটাকেসা(Butterkäse) অর্থাৎ মাখন-চিজ বেশ সহজলভ্য। তুর্কি মুদিদোকানে বেশী ফ্যাটযুক্ত সাদা ইয়োগার্ট পাবেন, 12% চর্বিযুক্ত দুধ থেকে তৈরী ইয়োগার্ট সর্বত্রই পাওয়া যায়, এটি প্রায় উচ্চমানের ক্রীম ফ্রেইচের (fraiche) মতই খেতে এবং লো-কার্ব ডায়েটের উপযুক্ত। যুক্ত রাজ্য ছবি [ প্রাতরাশের জন্য মাশরুম ও ডিমভাজা] ডিম,মাশরুম, টমেটো পোড়া এবং মাংস দিয়ে প্রথাগত ইংলিশ (অথবা স্কটিশ, ওয়েলস, আলস্টার) ধরনের প্রাতরাশ দিয়ে দিনটা শুরু করুন। পাঁউরুটি টোস্ট বা আলুর পদগুলি এড়িয়ে বেকড বীনস, সসেজ বা ব্ল্যাক পুডিং বেছে নেওয়াই বুদ্ধিমানের মত কাজ হবে। টেক এওয়ে বা ফাস্ট ফুড চেইনগুলোর মেনু সাধারণত শর্করাযুক্ত খাবারদাবারে পরিপূর্ণ থাকে। মাঝারি মানের স্বতন্ত্র রেস্তরাঁগুলি বরং যথোপযুক্ত আর এরা বিভিন্ন পরিবর্তনেও স্বচ্ছন্দ। এটকিন ডায়েট একবিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে যুক্তরাজ্যে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছিল, ফলে কোনও কোনও বিশেষ অনুরোধ এখানে গ্রাহ্য হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। কিছু কিছু চেইন রেস্তরাঁও তাদের নিজস্ব মেনুতে পৌষ্টিকসূচী সংযোগ করে তাই সেখান থেকেও বেছে নেওয়া যায়।
আরও দেখুন
- উচ্চ-রক্তচাপ নিয়ে ভ্রমণ
- নিরামিষাশীর ভ্রমণ