বিষয়বস্তুতে চলুন

59.950030.3000
উইকিভ্রমণ থেকে

সেন্ট পিটার্সবার্গ

পরিচ্ছেদসমূহ

ফ্লোরিডায় অবস্থিত শহরের জন্য দেখুন, সেন্ট পিটার্সবার্গ (ফ্লোরিডা)

সেন্ট পিটার্সবার্গ (রুশ: Са́нкт-Петербу́рг), রাশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর যা ১৯১৪ সাল থেকে ১৯২৪ সাল অবধি পেট্রোগ্রাদ এবং ১৯২৪ সাল থেকে ১৯৯১ সাল অবধি লেনিনগ্রাদ নামে পরিচিত ছিল। ২০২১ সালের হিসাব অনুযায়ী শহরের জনসংখ্যা প্রায় ৫.৬ মিলিয়ন, যা একে ইউরোপের চতুর্থ সর্বাধিক জনবহুল শহর হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এছাড়াও এটি বিশ্বের উত্তরতম শহর যেখানে এক মিলিয়নেরও বেশি মানুষ বাস করে। সেন্ট পিটার্সবার্গ এক সময় রুশ সাম্রাজ্যের রাজধানী ছিল। ১৭০৩ সালে প্রতিষ্ঠিত এই শহরটি খুব বেশি প্রাচীন নয়। পুরাতন শহরের অনেক কিছু আজও উল্লেখযোগ্যভাবে সংরক্ষিত রয়েছে। শহরের কেন্দ্রীয় এলাকাটি নেভা নদীর ব-দ্বীপ অঞ্চলের অন্তর্গত অসংখ্য দ্বীপসমূহের মধ্যে বিস্তৃত। একাধিক নদী, খাল ও জলপথ দ্বারা বিভাজিত এই অঞ্চলটি একাধিক ড্র-ব্রিজ বা অপসারণীয় সেতু দ্বারা একে অপরের সাথে সংযুক্ত। ১৯৯১ সালে সেন্ট পিটার্সবার্গ এবং এর কিছু ঐতিহাসিক শহরতলি অঞ্চলকে (যেমন পিটারহফ) ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যস্থল হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। সেন্ট পিটার্সবার্গ রাশিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক কেন্দ্র সিলভার রিং -এর অংশ। এই শহরে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শিল্পকলা সংগ্রহালয় হার্মিটেজের অবস্থান। অনেক রুশ নাগরিক এই শহরকে স্নেহভরে পিটার নামে সম্বোধিত করেন, যা সেন্ট পিটার্সবার্গের একটি সংক্ষিপ্ত রূপ।

মানচিত্র
সেন্ট পিটার্সবার্গের মানচিত্র

 কেন্দ্র
উত্তরে নেভা নদী এবং দক্ষিণে অবভোডনি খালের মধ্যবর্তী অঞ্চল, যা ফন্টাঙ্কা ও মোইকা নদী দ্বারা বিভাজিত। ১৭৩০ সাল থেকে এই অঞ্চল সেন্ট পিটার্সবার্গের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। এখানে রয়েছে শহরের প্রধান সড়ক নেভস্কি প্রসপেক্ট এবং বিখ্যাত হার্মিটেজ জাদুঘর। এই এলাকায় আঠারো এবং উনিশ শতকের শেষভাগে নির্মিত একাধিক স্থাপত্যকীর্তির অবস্থান।
 ভাসিলিয়েভস্কি দ্বীপ
১৭২০ সালে কিছু সময়ের জন্য এই অঞ্চলটিকে শহরের কেন্দ্র হিসাবে বিবেচনা করা হয়েছিল। ১৭৩০ সাল থেকে উনিশ শতকের মধ্যভাগ পর্যন্ত এই অঞ্চলটি সমুদ্রবন্দর হিসেবে ব্যবহৃত হত। ভাসিলিয়েভস্কি দ্বীপের পূর্ব অংশটি দীর্ঘকাল ধরে শহরের প্রাতিষ্ঠানিক জীবনের কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। এখানে রয়েছে অষ্টাদশ শতকের স্থাপত্যশৈলীর বহু নিদর্শন। ভাসিলিয়েভস্কি দ্বীপের স্পিট অঞ্চলে উনবিংশ শতকের গোড়ার দিকে নির্মিত বহু স্থাপত্য আছে। ১৮৫০ সাল থেকে দ্বীপের পশ্চিমাংশে ধাপে ধাপে উন্নয়ন হয়েছে।
 পেট্রোগ্রাদ সাইড
১৭০৩ সালে এই নির্দিষ্ট এলাকাতেই শহরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হয়েছিল। এখানে রয়েছে পিটার অ্যান্ড পল কাসল, যা অষ্টাদশ শতকের প্রথমার্ধে নির্মিত। পেট্রোগ্রাদ সাইড অঞ্চলে মূলত উনবিংশ শতকের শেষভাগ থেকে শুরু করে বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধ অবধি নির্মিত উল্লেখযোগ্য স্থাপত্যের নিদর্শন পরিলক্ষিত হয়। এর উত্তর-পশ্চিমাংশের দ্বীপগুলোতে বহু উদ্যান, ভিলা এবং ক্রীড়াক্ষেত্র রয়েছে। দীর্ঘ সময় ধরে এটি শহরের বিনোদনমূলক এলাকা হিসেবে পরিচিত।
 উত্তর সেন্ট পিটার্সবার্গ
এই অঞ্চলটি মূলত শহরতলির ব্যাস্ত এলাকা যেখানে মূলত বৈচিত্র্যহীন এবং দৃষ্টিকটু সোভিয়েত যুগের বড় বড় উঁচু আবাসন দেখা যায়। তবে কিছু উল্লেখযোগ্য স্থাপনাও রয়েছে, যেমন ফরেস্ট্রি অ্যাকাডেমি ও সংলগ্ন উদ্যান, মিলিটারি মেডিকেল অ্যাকাডেমি, পলিটেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় এবং বৌদ্ধ দাতসান। এই সমস্ত জায়গাগুলি কেন্দ্রীয় অঞ্চলের কাছাকাছি অবস্থিত। তবে এর বাইরে দেখার মতো তেমন কিছু নেই। এই এলাকায় রয়েছে ফিনল্যান্ডস্কি ট্রেন স্টেশন
 দক্ষিণ সেন্ট পিটার্সবার্গ
বেশিরভাগ পর্যটক এই এলাকাটিকে সেরকম গুরুত্ব দেয় না, কিন্তু এই অঞ্চলে চমৎকার শিল্প স্থাপত্যের নিদর্শন পরিলক্ষিত হয়। এছাড়াও এখানে স্তালিন যুগের একাধিক মনোমুগ্ধকর ভবনের অবস্থান। এটি একসময় একটি শিল্পাঞ্চল ছিল, যেখানে ১৯১৭ সালের বিপ্লবের পূর্বে ধর্মঘট সংঘটিত হয়েছিল। এখানেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় লেনিনগ্রাদের অবরোধের দৃশ্যপট পরিলক্ষিত হয়। এই অঞ্চলে রয়েছে বেশ কিছু আকর্ষণীয় পর্যটন স্থল, যেমন নার্ভা বিজয় তোরণ, চেসমে চার্চ এবং পুলকোভো মানমন্দির। এই সমস্ত স্থান মূলত কেন্দ্রীয় এলাকার কাছাকাছি অবস্থিত। ১৯৩০ সালে সোভিয়েত কর্তৃপক্ষের সদস্যরা শহরের কেন্দ্রীয় অঞ্চলটিকে দক্ষিণে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন।
 ডান তীর
খুব কম পর্যটক এই অঞ্চলে ঘুরতে আসেন। এখানে রয়েছে ঐতিহাসিক বারুদ কারখানা, কয়েকটি সুন্দর গির্জা ও উদ্যান, আইস প্যালেস হকি ক্রীড়াস্থিল এবং লাদোজস্কি ট্রেন স্টেশন

পরিচিতি

[সম্পাদনা]

ইতিহাস

[সম্পাদনা]
ব্রোঞ্জ অশ্বারোহী, ওরফে পিটার দ্য গ্রেট

১৭০৩ সালে পিটার দ্য গ্রেট নেভা নদীর তীরে সুইডিশ সাম্রাজ্যের কাছ থেকে সদ্য বিজিত ভূমির উপর সেন্ট পিটার্সবার্গ শহরের নির্মাণ করেছিলেন। সেই ভূমির বাইরে ছিল তৎকালীন রাশিয়ান জনবসতিপূর্ণ এলাকা। শুরু থেকেই পূর্বপরিকল্পনা অনুসারে পিটার এই শহরটিকে রাশিয়ান শৈলীর চেয়ে পৃথকভাবে ইউরোপীয় ধাঁচে নির্মান করতে চেয়েছিলেন। শহরটি "মাই উইন্ডো অন ইউরোপ" নামে ভূষিত হয়। অনেক ইউরোপীয় স্থপতি এই শহরের নকশা অঙ্কন করেছিলেন। অষ্টাদশ শতকের গোড়ার দিক থেকে বিংশ শতাব্দীর সূচনাকাল অবধি রাশিয়ান সাম্রাজ্যের সমকালীন রাজধানী হিসেবে শহরটির ক্রমবিকাশ ঘটে। রাশিয়ান ইতিহাসের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার সাক্ষী এই শহর একসময় একটি প্রধান সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ছিল। এই শহর মেন্ডেলিভ, দস্তয়েভস্কি এবং চাইকোভস্কির মতো অনেক বিশিষ্ট শিল্পী, বিজ্ঞানী, লেখক এবং সুরকারের বাসভূমি ও কর্মভূমি হিসাবেও সুপরিচিত।

১৯১৭ সালে রুশ বিপ্লবের পর শহরটি কমিউনিস্ট শাসনের অধীনস্থ হয়। ১৯১৮ সালে রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে স্থানান্তরিত হওয়ার পর সেন্ট পিটার্সবার্গের গুরুত্ব কিছুটা কমে যায়, কিন্তু এর ফলে সময়ের সাথে শহরের বিশেষ কিছু পরিবর্তন হয়নি। নতুন নির্মাণের পাশাপাশি শহরের পুরোনো স্থাপত্য ও এলাকাগুলি আজও প্রায় আগের মতোই আছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এই শহর ৮৭২ দিন ধরে ওয়েহরমাখট বাহিনীর অবরোধে ছিল, যার ফলে এক মিলিয়নেরও বেশি মানুষ প্রধানত অনাহারে মারা যান। এটি বিশ্ব ইতিহাসে সবচেয়ে প্রাণঘাতী অবরোধ হিসেবে পরিচিত।

প্রতিষ্ঠার পর থেকে শহরটির একাধিকবার নাম পরিবর্তন হয়েছে। "সেন্ট পিটার্সবার্গ" নামটি মূলত জার্মান ভাষা থেকে উদ্ভুত। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ১৯১৪ সালে শহরের নাম পরিবর্তন করে "পেট্রোগ্রাদ" রাখা হয়। রুশদেশীয় মানুষদের উচ্চারনে "সেন্ট পিটার্সবার্গ" নামটি হয়ে উঠেছিল "পেট্রোগ্রাদ", যা পরবর্তীকালে শহরের আধিকারিক নাম হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়। এর আরও পরে সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রতিষ্ঠাতা ভ্লাদিমির ইলিচ লেনিনের সম্মানে শহরটির নাম পুনরায় পরিবর্তন করে রাখা হয় "লেনিনগ্রাদ"। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর পুনরায় শহরের নাম "সেন্ট পিটার্সবার্গ" রাখা হয়। আশেপাশের অঞ্চলে শহরটি এখনও "লেনিনগ্রাদ ওবলাস্ট" নামে পরিচিত। ১৯৯০ সালে, প্রেসিডেন্ট ইয়েলৎসিনের শাসনামলে শহরবাসীরা এক কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যায়। তখন শহরের একটি বড় অংশ তাম্বভ নামক এক স্থানীয় অপরাধী দলের নিয়ন্ত্রণে ছিল।

সেন্ট পিটার্সবার্গের প্রশাসকরা বিদেশি শক্তির সঙ্গে দৃঢ় সংযোগ রাখার জন্য সবসময় সচেষ্ট এবং এখানেই এই শহরের প্রকৃত স্বাতন্ত্র্য নিহিত। শহরটিকে খুব প্রাচীন বা সেকেলে বলে মনে করবেন না। বিদেশিদের মধ্যে জনপ্রিয় এখানকার ম্যাট্রিওশকা পুতুল ও অন্যান্য স্মারক সামগ্রীর সঙ্গে শহরের বাস্তব জীবনধারার খুব কমই সম্পর্ক আছে।

সেন্ট পিটার্সবার্গকে 'উত্তরের ভেনিস' বলা হয়

জলবায়ু

[সম্পাদনা]
সেন্ট পিটার্সবার্গ
জলবায়ু চার্ট (ব্যাখ্যা)
জাফেমামেজুজুসেডি
 
 
 
৩৭
 
 
−৪
−৯
 
 
 
৩০
 
 
−৩
−৯
 
 
 
৩৪
 
 
−৪
 
 
 
৩৩
 
 
 
 
 
৩৭
 
 
১৬
 
 
 
৫৭
 
 
২০
১২
 
 
 
৭৭
 
 
২২
১৪
 
 
 
৮০
 
 
২০
১৩
 
 
 
৬৯
 
 
১৪
 
 
 
৬৬
 
 
 
 
 
৫৫
 
 
−২
 
 
 
৫০
 
 
−২
−৬
°C-এ গড় উচ্চ ও নিম্ন তাপমাত্রা
Precipitation+Snow totals in mm
মাস অনুযায়ী সেন্ট পিটার্সবার্গের গড় তাপমাত্রা।
Imperial conversion
জাফেমামেজুজুসেডি
 
 
 
১.৫
 
 
২৬
১৬
 
 
 
১.২
 
 
২৬
১৬
 
 
 
১.৩
 
 
৩৫
২৪
 
 
 
১.৩
 
 
৪৭
৩৪
 
 
 
১.৫
 
 
৬০
৪৪
 
 
 
২.২
 
 
৬৮
৫৩
 
 
 
 
 
৭২
৫৮
 
 
 
৩.১
 
 
৬৮
৫৫
 
 
 
২.৭
 
 
৫৮
৪৭
 
 
 
২.৬
 
 
৪৭
৩৮
 
 
 
২.২
 
 
৩৫
২৮
 
 
 
 
 
২৯
২০
°F-এ গড় উচ্চ ও নিম্ন তাপমাত্রা
Precipitation+Snow totals in inches

রৌদ্রজ্বল রাত আর অন্ধকার দিন

[সম্পাদনা]

শহরটি ৬০° উত্তর অক্ষাংশে অবস্থিত, তাই এখানে পরিবর্তিত ঋতুর সঙ্গে দিনের দৈর্ঘ্যের পরিবর্তন অত্যন্ত প্রকট। ডিসেম্বরের শেষের দিনগুলিতে সূর্যের আলো থাকে ছয় ঘণ্টারও কম। জুন মাসের এক বিশেষ মরসুম, যাকে "হোয়াইট নাইটস" নামে অভিহিত করা হয়, সেসময় রাত্রিবেলা কখনও সম্পূর্ণ অন্ধকারে নামে না—সবসময় গোধূলির মতো আলো থাকে। বিলম্বিত শরৎ ও শীতের শুরুতে দিন যেমন ছোট হয়, তেমনি আবহাওয়াও দীর্ঘ সময় ধরে মেঘাচ্ছন্ন থাকতে পারে। দীর্ঘ সময় ধরে আকাশে নীলের কোনো আভাস না থাকায় মন বিষাদগ্রস্ত হয়ে পড়ে। তবে ডিসেম্বরের কোনো একদিন যখন প্রথম সূর্যের দেখা মেলে, তখন তার নিম্ন কোণীয় আলো দিগন্ত থেকে সর্বোচ্চ সাত ডিগ্রি উপরে ওঠে এবং শহরজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। শহরের বরফাবৃত স্থাপত্য, খালপথ এবং নব্য-ধ্রুপদ শৈলীতে নির্মিত ভবনগুলি সেই মোহময়, সোনালি আলোয় ঝলমল করে ওঠে।

আবহাওয়া

[সম্পাদনা]

এখানকার সবচেয়ে শুষ্ক সময় হল বসন্তের গোড়ার দিকে, যখন বৃষ্টিপাত কম হয়। সাধারণত সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয় জুলাই এবং আগস্ট মাসে। মরসুমের এই ভিন্নতা নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার দরকার নেই। তবে আপনি চাইলে হাতের কাছে ছাতা বা বর্ষাতি রাখতে পারেন।

শীতকালের তুষারঝড়

নভেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত সেন্ট পিটার্সবার্গে পর্যটকের সংখ্যা খুবই কম, এমনকি দেশীয় পর্যটকরাও খুব একটা আসেনা। হার্মিটেজ জাদুঘরের সামনে গ্রীষ্মকালে যে দীর্ঘ লাইন পড়ে, তার সামান্যতম ইঙ্গিতও এ সময় চোখে পড়ে না। নব্য-ধ্রুপদী শৈলীতে নির্মিত শহরের রাস্তাগুলি বরফে ঢেকে যায়। এই সময়ে কখনো হালকা শীত আবার কখনো তীব্র ঠাণ্ডা অনুভূত হয়। তাপমাত্রা কখনও কখনও গড়ের অনেক নিচে নেমে যায়। নিম্নতম তাপমাত্রা -২৫°C (-১৩°F) বা তারও নিচে নামতে পারে। এর সাথে যোগ হয় উচ্চ আর্দ্রতা ও ঠান্ডা হাওয়া। তাই সঙ্গে উষ্ণ পোশাক থাকা জরুরি। তবে বেশিরভাগ প্রধান পর্যটন আকর্ষণ (ফোয়ারা ও জলযান ব্যতীত) এই সময়েও খোলা থাকে এবং অনেক হোটেল তুলনামূলকভাবে কম দামে থাকা যায়।

নভেম্বর থেকে এপ্রিলের শুরু পর্যন্ত সেন্ট পিটার্সবার্গে বরফের আস্তরণ থাকে (গ্রামাঞ্চলে তা এপ্রিলের শেষ পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে)। বেশিরভাগ তুষারপাতের ঘটনা শীতের প্রথমার্ধে ঘটে। রাস্তাগুলি থেকে বরফ সময়মতো সরানো না হলে যানজট আরও বেড়ে যেতে পারে। শীতকালে বরফের স্তর জমে রাস্তাগুলি পিচ্ছিল হয়ে যায়, তাই এই সময় চলাচলে ঝুঁকি থাকে। হাঁটার সময় ভালো মানের বুটজুতো পরুন, ছোট ছোট পা ফেলে হাঁটুন এবং পায়ের দিকে নজর রাখুন। ছাদ থেকে বরফ পড়ার বিষয়েও সতর্ক থাকুন।

নদী ও খালগুলির জল সাধারণত নভেম্বরের শেষ থেকে এপ্রিল পর্যন্ত বরফে জমে থাকে। এপ্রিলের শেষ থেকে নভেম্বর পর্যন্ত নেভা নদী চলাচলের উপযোগী থাকে এবং এই সময়ে প্রতি রাতে নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী বিশাল সেতুগুলি কয়েক ঘণ্টার জন্য তুলে দেওয়া হয় যাতে জাহাজ চলাচল করতে পারে। এর কারণে যাতায়াতের ক্ষেত্রে বড় অসুবিধা সৃষ্টি হয়, তবে "হোয়াইট নাইটস" মরসুমের এ এক মনোমুগ্ধকর দৃশ্য।

এপ্রিল মাসে গলন্ত বরফ থেকে কাদা নিসৃত হয় এবং সেই কাদা শুকিয়ে যে ধুলোর স্তর তৈরি হয়, তা মাঝে মাঝে বিরক্তিকর হয়ে উঠতে পারে।

৯ মে, অমর রেজিমেন্ট

৯ মে তারিখে নাৎসি জার্মানির বিরুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিজয়কে উদযাপন করার জন্য বিজয় দিবস পালন করা হয়। এই দিন হার্মিটেজের ঠিক সামনে প্রাসাদ চত্বরে উদ্বোধনী সামরিক কুচকাওয়াজের আয়োজন করা হয়। স্থানীয়রা বিভিন্ন যুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভ পরিদর্শন করেন এবং সম্পূর্ণ সামরিক পোশাক পরিহিত যুদ্ধের প্রবীণ সৈনিকদের ফুল দেওয়া হয়। সন্ধ্যায় নেভস্কি প্রসপেক্টে একটি কুচকাওয়াজের আয়োজন করা হয়, যেখানে লেনিনগ্রাদ অবরোধের জীবিত প্রত্যক্ষদর্শীরাও অংশ নেন।

গ্রীষ্মের হোয়াইট নাইটস মরসুম

জুন মাসের "হোয়াইট নাইটস" মরসুমে (প্রায় ১১ জুন–২ জুলাই) পর্যটকদের সবচেয়ে বেশি ভিড় হয়। এ সময় গোধূলিবেলায় মাত্র কিছু সময়ের জন্য সূর্য অস্ত যায়। শহরের রাস্তাগুলি সারাক্ষণ প্রাণবন্ত থাকে। জুনের শেষ দশ দিন শহরে বিভিন্ন উৎসব, সঙ্গীতানুষ্ঠান ও আনন্দ-সামাবেশ আয়োজিত হয়। এটি শহরের সবচেয়ে ব্যস্ত পর্যটন মরসুম, তাই থাকার জায়গা ও পরিবহনের ব্যবস্থা করা কঠিন হতে পারে। তাই আগেভাগেই সমস্ত বুকিং সেরে রাখুন।

জুলাই ও আগস্ট সাধারণত বছরের সবচেয়ে উষ্ণ মাস। শহরটি উত্তর অক্ষাংশে অবস্থিত হওয়ায় খুব বেশি গরম পড়ে না, তবে উচ্চ আর্দ্রতার কারণে সামান্য উষ্ণতাও গ্রীষ্মে অসহ্য লাগতে পারে। এই সময়ে মাঝে মাঝে বৃষ্টি হয়, তাই পরিষ্কার রৌদ্রজ্বল দিনেও ছাতা বা বর্ষাতি সঙ্গে রাখা বুদ্ধিমানের কাজ।

সেপ্টেম্বরের শেষ থেকে অক্টোবরের শুরু পর্যন্ত শহরের আবহাওয়া মনোরম থাকে। তাপমাত্রা মাঝারি পর্যায়ে নেমে যায় এবং প্রায়শই তীব্র বাতাস বইতে থাকে। এসময় পর্যটকদের ভিড় থাকে না তবে যেকোন সময় বৃষ্টি হ্তে পারে।

মে থেকে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত শহরের ফোয়ারাগুলি সচল থাকে। মে থেকে অক্টোবর পর্যন্ত গাছপালায় সবুজ পাতা দেখা যায়।

ভ্রমণের সময়সূচী নির্ধারণ করার সময় স্থানীয় ছুটির দিনগুলির কথা মাথায় রাখা উচিত, কারণ তখন সংগ্রহশালা ও অনুরূপ স্থানগুলোতে ভিড় অনেক বেড়ে যায়। নভেম্বরের শুরুতে, জানুয়ারির প্রথমার্ধে এবং মার্চের শেষে দিকে স্কুল ছুটি থাকে। এছাড়া সাধারণ ছুটি থাকে নববর্ষ থেকে জানুয়ারির শুরু পর্যন্ত এবং মে মাসের শুরুতে।

রাশিয়ায় ইংরেজি নববর্ষ বছরের সবচেয়ে বড় উৎসব। এই সময়ে হোটেল বুকিং সাধারণত সমস্যা হয় না, তবে প্রচুর ভিড় ও শব্দের সম্মুখীন হতে হয়।

নেভস্কি প্রসপেক্ট

স্থানীয় ভাষা

[সম্পাদনা]
নেভস্কি প্রসপেক্টে রাস্তার সাইনবোর্ড পড়ার জন্য আপনার সিরিলিক বর্ণমালা জানার প্রয়োজন নেই। তবুও, এত ছোট ইংরেজি লেখা পড়তে আপনার একটি আতস কাঁচের প্রয়োজন পরবে।

রাশিয়ার বেশিরভাগ অংশের মতো সেন্ট পিটার্সবার্গেও রুশ ভাষায় কথা বলা হয়। স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণত ইংরেজি শেখানো হয়, তাই অল্পবয়সীরা কিছুটা হলেও ইংরেজি বুঝতে পারে বলে ধারণা করা যায়। তবে রাস্তায় ইংরেজিতে সাবলীলভাবে কথা বলতে পারে এমন কাউকে খুঁজে পাওয়ার সম্ভাবনা—যদিও মস্কোসহ রাশিয়ার অন্যান্য স্থানের তুলনায় কিছুটা বেশি—তবুও খুব বেশি নয়। রাস্তায় পথচলতি সাধারণ মানুষকে জিজ্ঞাসা করলে হয়তো তারা আপনাকে দিকনির্দেশনা দিতে পারবেন, তবে তার চেয়ে বেশি কিছু আশা না করাই ভালো।

বেশিরভাগ জায়গায়, বিশেষ করে মূল পর্যটনপথের বাইরে, সাইনবোর্ড ও লেবেলে এখনও শুধুমাত্র রুশ বর্ণমালার অক্ষর দেখা যায়। শুধুমাত্র শহরের কেন্দ্রস্থলে মেট্রো (সাবওয়ে) ও রাস্তার সাইনবোর্ডে আপনি ইংরেজি লেখা দেখতে পাবেন। ভ্রমণের আগে রুশ সিরিলিক বর্ণমালার সঙ্গে পরিচিত হওয়া ভালো; তাহলে আপনি সহজেই রাস্তার নাম ইত্যাদি পড়ে বুঝতে পারবেন।

কিভাবে আসবেন

[সম্পাদনা]

রাশিয়ার ভিসা সংক্রান্ত নিয়মাবলি জটিল হলেও কিছু অনলাইন অনুসন্ধানের মাধ্যমে সহজেই সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। বিস্তারিত তথ্যের জন্য রাশিয়া সম্পর্কিত প্রবন্ধের প্রবেশ বিভাগটি দেখুন।

বিমানে

[সম্পাদনা]

পুলকোভো বিমানবন্দর

[সম্পাদনা]
  • 1 পুলকোভো বিমানবন্দর (এলইডি  আইএটিএ, অ্যারোপোর্ট পুলকোভো), উল. স্টার্তোভায়া, নর্দার্ন ক্যাপিটাল গেটওয়ে এলএলসি (শহরের কেন্দ্র থেকে ১৭ কিমি দক্ষিণে), +৭ ৮১২ ৩৩৭-৩৮-২২, ইমেইল: সীমাহীন বিনামূল্যের ওয়াই-ফাই সুবিধা রয়েছে। বিমানবন্দরে ব্যবসায়িক লাউঞ্জ রয়েছে যা প্রথম এবং ব্যবসায়িক শ্রেণীর ভ্রমণকারীদের জন্য বিনামূল্যে উপলব্ধ। নির্দিষ্ট প্রদানের মাধ্যমে সমস্ত যাত্রীরা এগুলি ব্যবহার করতে পারে। লাউঞ্জগুলিতে জলখাবার, পানীয়, টেলিভিশন এবং স্নানের ব্যাবস্থা রয়েছে। উইকিপিডিয়ায় Pulkovo Airport (Q690122)

বিমানবন্দর থেকে শহর ভ্রমন

[সম্পাদনা]
  • সিটি বাস সংস্থার পক্ষ থেকে বিমানবন্দর থেকে মস্কোভস্কায়া মেট্রো স্টেশন পর্যন্ত বাস চালনা করা হয়। বাসের ভাড়া ৬৫ রুবেল (৩৯ ইউরো)। মেট্রো স্টেশনে পৌছানোর পর ২য় লাইনের মেট্রো ধরতে পারেন বা অন্যান্য বাসের মাধ্যমে শহরের অভ্যন্তরে প্রবেশ করেত পারবেন। ৮২ নং বাসটি বিমানবন্দর থেকে ভেটেরান্স অ্যাভিনিউ স্টেশন অবধি চলে। ভেটেরান্স অ্যাভিনিউ থেকে আপনি প্রথম লাইনের মেট্রো এবং অন্যান্য অনেক বাস ধরতে পারবেন। বাস পরিষেবা সকাল ৫:১৫ থেকে রাত ১:৪০ পর্যন্ত চালু থাকে।
  • ইয়ান্ডেক্স ট্যাক্সি হলো বিমানবন্দরের নিজস্ব ট্যাক্সি পরিষেবা। এই ট্যাক্সিতে শহরের কেন্দ্রীয় অঞ্চল পর্যন্ত যাত্রার খরচ ১০০০-২০০০ রুবেল। ট্যাক্সি মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে বা বিমানবন্দর থেকে বুক করা যায়। ট্যাক্সি ০৬৮ অনলাইনেও বুক করা যায়। কোনো দালাল মারফত ট্যাক্সি নেবেন না। যদি নেন, তাহলে আগেই ভাড়ার বিষয়ে স্পষ্টভাবে আলোচনা করে নেবেন। এই ধরনের দালালরা অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের চেষ্টা করতে পারে।
  • ট্যাক্সি আগে থেকে বুক করা থাকলে কিছুটা বেশি খরচ হতে পারে। বিমানবন্দরে আপনার নাম লেখা সাইনবোর্ড হাতে ড্রাইভার আপনাকে স্বাগত জানাবেন। ইন্টারনেটের মাধ্যমে বুকিং নিরাপদ, কোনো ক্রেডিট কার্ড তথ্য চাওয়া হয় না এবং আগাম অর্থ প্রদানও প্রয়োজন হয় না। লিংগো ট্যাক্সির ভাড়া ২০০ রুবেল থেকে শুরু। ইংরেজিভাষী চালক উপলব্ধ।

ট্রেনে

[সম্পাদনা]

ট্রেনের টিকিট রেলস্টেশন থেকে কাটতে পারেন অথবা নির্দিষ্ট অনলাইন সাইট থেকেও ট্রেনের টিকিট কাটা যায়। ভ্রমণের তারিখের কাছাকাছি সময়ে টিকিট কাটা হলে দূরপাল্লার ট্রেনের টিকিটের মূল্য সাধারণত বেশি হয়। রাশিয়ায় ট্রেনে ভ্রমণ সম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্যের জন্য দেখুন:রাশিয়া#ট্রেন ২

  • 2 বালতিয়স্কি স্টেশন (বাল্টিক স্টেশন, বাল্টিসকি ভোকজাল), নাব. অবভোডনোগো কানালা, ১২০ (: বাল্টিস্কায়া)। এটি রাশিয়ার অন্যতম ব্যস্ত রেলস্টেশন। স্থপতি আলেকজান্ডার ক্রাকাউ প্যারিসের গার দে ল'এস্ত স্টেশনের আদলে এর পরিকল্পনা করেন। নির্মাণ শুরু হয় ১৮৫৪ সালে এবং ২১ জুলাই ১৮৫৭ সালে উদ্বোধন হয়। তখন এই স্টেশনের নাম ছিল পিটারহফ রেলস্টেশন। স্টেশনটিতে প্রান্তীয় প্ল্যাটফর্মের উপর কাচের ছাদ রয়েছে এবং দুই পাশে দ্বিতল উইং (বসার জায়গা) রয়েছে। বাম পাশের উইংটি একসময় রুশ রাজপরিবারের সদস্যদের জন্য সংরক্ষিত ছিল। তারা এখান থেকে স্ট্রেলনা, পিটারহফ ও ওরানিয়েনবাউমের প্রাসাদে যেতেন। স্টেশনের সম্মুখভাগে এখনও একটি কাচের প্যানেলে মূল ঘড়িটি দৃশ্যমান, যা বিখ্যাত ঘড়ি নির্মাতা পাভেল বুরে ডিজাইন করেছিলেন। তিনি ছিলেন জার শাসকদের ঘড়ি প্রস্তুতকারক এবং আইস-হকি খেলোয়াড়দের পূর্বপুরুষ। এই স্টেশন থেকে পেট্রোডভোরেটস (পিটারহফ), লোমোনোসভ (ওরানিয়েনবাউম), গ্যাচিনা, লুগা সহ বিভিন্ন গন্তব্যে ট্রেন চলাচল করে। এছাড়া অ্যারোপোর্ট স্টেশন থেকেও ট্রেন চলে, যেখানে পুলকোভো বিমানবন্দরের দিকে সংযোগকারী বাস পাওয়া যায়। (Q805795)
  • 3 ফিনল্যান্ডস্কি স্টেশন (ফিনল্যান্ড স্টেশন), লেনিন স্কোয়ার (লেনিন স্কয়ার, কমসোমল স্ট্রিট), ৫ (: প্লোশচাদ লেনিনা ("লেনিন স্কয়ার"))। ফিনিশ রাজ্য রেলওয়ের উদ্যোগে নির্মিত। সেন্ট পিটার্সবার্গ রেলপথের পূর্ব অংশের প্রান্তিক স্টেশন হিসেবে এটি গড়ে তোলা হয়। সুইডিশ স্থপতিরা স্টেশনের পরিকল্পনা করেন এবং ১৮৭০ সালে এটি উদ্বোধন হয়। ১৯৫০ ও ১৯৭০ সালে রেল স্টেশনটির ব্যাপক পুনর্নির্মাণ হয়। একসময় স্টেশনে রুশ রাজপরিবারের জন্য একটি বিশেষ সংরক্ষিত স্থান ছিল। (Q548259)
  • 4 লাদোজস্কি স্টেশন, জানেভস্কি প্রসপেক্ট (জেনেভস্কি প্রসপেক্ট, প্লোশচাদ কার্লা ফাবেরজে), ৭৩ (:লাদোজস্কায়া «লাডোগা»: ৪এম, ৪এমএ, ৫, ২১, ২৪, ২৭, ৩০, ৭৭, ৮২, ৯২, ১২৩, ১৬৮, ৪২৯, ৪৫৩, ৪৬২, ৫৩১, ৫৩২, ৫৩৩, ৮৬০এল : ৮, ১০, ৫৯, ৬৪; : ১, ২২)। এটি সেন্ট পিটার্সবার্গের সবচেয়ে নতুন ও আধুনিক যাত্রী রেলস্টেশন যা স্থপতি নিকিতা ইয়াভেইনের পরিকল্পনায় নির্মিত। এটি রাশিয়ার অন্যতম বৃহৎ স্টেশন, যেখান থেকে প্রতি ঘণ্টায় ৫০টি শহরতলির এবং ২৬টি দূরপাল্লার ট্রেন ছাড়ার ব্যাবস্থা রয়েছে। স্টেশনের যাত্রী ধারণক্ষমতা ৪,৫০০ জন। ২০০৩ সালে শহরের ৩০০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে এটির উদ্বোধন হয়। স্টেশন নির্মাণে ব্যয় হয়েছিল ৯,০০০,০০০,০০০ রুবল (মার্কিন ৩০০ মিলিয়ন ডলারের সমতুল্য)। এখান থেকে পেট্রোজাভোডস্ক (৮৩৫ руб), আরখানগেলস্ক (১৬৯৭ руб), টিউমেন (৩০৩৮ руб), টুলা (১৪৩৫ руб), ক্রাসনোডার (২৮৩৯ руб), মুরমানস্ক (২০৩০ руб), একাটেরিনবার্গ, চেলিয়াবিন্স্ক, ওমস্ক, নভোসিবিরস্ক, আস্তানা (কাজাখস্তান) সহ বিভিন্ন শহরে ট্রেন চলাচল করে। (Q1800041)
  • 5 মস্কোভস্কি স্টেশন (মস্কোভস্কি স্টেশন, মস্কোভস্কি ভকজাল), নেভস্কি অ্যাভিনিউ, ৮৫? প্লোশচাদ ভোস্তানিয়া (ভোস্তানিয়া স্কয়ার), ২ (:প্লোশ্চাদ ভস্তুনিয়া (ক্লোজার)(ভোস্তানিয়া স্কয়ার) এবং :মায়াকোভস্কায়া; ১এম, ১এমবি, ৩, ৩এম, ৩এমবি, ৪এম, ৪এমবি, ৫এম, ৫এমবি, ৭, ১৫, ২২, ২৬, ২৭, ৫৪, ৬৫, ৭৪, ৭৬, ৯১, ১৪১, ১৮১, ১৯১। ১, ৫, ৭, ১০, ১১, ২২), +৭ ৮১২ ৪৫৭-৪৪-২৮ নেভস্কি প্রসপেক্ট ও ভোসস্তানিয়া স্কোয়ারে অবস্থিত এই স্টেশন। এই রেলস্টেশনের সম্মুখ অংশের নির্মানশৈলীতে নব্য-রেনেসাঁস শিল্পের প্রভাব প্রত্যক্ষ। ১৮৪৪–৫১ সালে কনস্টানটিন থন এই স্টেশনের নির্মান পরিকল্পনা করেন। বড় ভেনিসীয় জানালা, করিন্থীয় স্তম্ভের দুটি তলা এবং কেন্দ্রে দুইতলা বিশিষ্ট ঘড়ির মিনার এই সমস্ত কিছুতে ইতালীয় রেনেসাঁস স্থাপত্যের অনুপ্রেরণায় দেখা যায়। কিন্তু তার সাথে বিভিন্ন সময় ও দেশের বৈশিষ্ট্য এই স্টেশনের স্থাপত্যশৈলীতে সংযোজিত হয়েছে। এখান থেকে মস্কো, নোভগ্রদ, আজেরবাইজান, ভল্গ্রদ, কাজান, সামারা, রস্তভ-নাদো-দমু, উফা, সোচি সহ বিভিন্ন শহরে ট্রেন চলাচল করে। (Q139318)
  • 6 ভিতেবস্কি স্টেশন (ভিতেবস্কি রেলওয়ে স্টেশন, সেন্ট পিটার্সবার্গ-ভিতেবস্কি স্টেশন), জাগোরোডনি অ্যাভিনিউ (জাগোরোডনি প্রসপেক্ট), ৫২? (: পুশকিনস্কায়া, : জভেনিগোরোদস্কায়া; ১এম, ১এমবি, ৪এম, ৪এমবি, ৫এম, ৫এমবি; : ১৬; : ৩, ৮, ১৫, ১৭)। সেন্ট পিটার্সবার্গ এবং সমগ্র রুশ সাম্রাজ্যের প্রথম রেলস্টেশন। পূর্বে চার্সকোয়ে সেলো স্টেশন নামে পরিচিত ছিল। স্টেশনের নির্মাণ শুরু হয় ১৯০১ সালে যা তিন বছর ধরে চলে। স্টানিসলভ ব্রজোজোস্কি নতুন দুইতলা স্টেশনের সম্মুখভাগে বিভিন্ন ঐতিহাসিক শৈলীর অলঙ্করণ আছে। বড় অর্ধবৃত্তাকার জানালাসহ উনিবিংশ শতাব্দীর সময়কালীন এই রেলস্টেশনের দুটি সাধারণ বৈশিষ্ট্য হল রেনেসীঁয় স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত গম্বুজ ও বর্গাকার ঘড়ির মিনার। সিমা মিনাশের ঐশ্বর্যশালী শৈল্পিক ছোঁয়ায় সজ্জিত এই স্টেশন শহরের সবচেয়ে অলঙ্কৃত রেলস্টেশন হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। এখানকার বিস্তৃত সিঁড়ি, রঙিন কাচের ফয়্যার এবং রাশিয়ার প্রথম রেলপথের ইতিহাস তুলে ধরা চিত্রপটসমৃদ্ধ হল অত্যন্ত আকর্ষনীয়। ভবনের উঁচু খিলান ও কাচের বিস্তার পশ্চিমা নির্মাণ প্রযুক্তির সঙ্গে স্থপতির পরিচিতি প্রকাশ করে। ২০০৩ সালে মূল অভ্যন্তরের অলঙ্করণের যত্নসহকারে পুনরুদ্ধার করা হয়। স্টেশনে জার ও তার পরিবারের জন্য পৃথক বসার জায়গা এবং নিকোলাস প্রথমের একটি মার্বেল মুর্তি রয়েছে। পুশকিন (পূর্বে সারস্কোয়ে সেলো নামে পরিচিত) এবং পাভলভস্ক থেকে এই স্টেশনে ট্রেন চলাচল করে। এখান থেকে নেভেল (৮১৫ руб), নোভোসোকোলনিকি (৬৮৯ руб), ভেলিকি লুকি (৮৮০ руб), সোলটসি (৫৪৯ руб) এবং অন্যান্য শহরের জন্য স্থানীয় ট্রেন পাওয়া যায়। (Q1238406)

রাশিয়া থেকে

[সম্পাদনা]

ট্রেনের টিকিট রেলস্টেশন থেকে কাটতে পারেন অথবা নির্দিষ্ট অনলাইন সাইট থেকেও ট্রেনের টিকিট কাটা যায়। ভ্রমণের তারিখের কাছাকাছি সময়ে টিকিট কাটা হলে দূরপাল্লার ট্রেনের টিকিটের মূল্য সাধারণত বেশি হয়। রাশিয়ায় ট্রেনে ভ্রমণ সম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্যের জন্য দেখুন:রাশিয়া#ট্রেন ২

দ্রুতগামী সাপসান ট্রেন (গন্তব্যে পৌছাতে ৪–৫ ঘণ্টা সময় লাগে, দিনে ৬টি ট্রেন আছে, ইকোনমি ক্লাসের টিকিট যাত্রার ২ মাস আগে কিনলে তার মূল্য হয় ৩,০০০ রুবল, ১ সপ্তাহ আগে কিনলে ৭,৫০০ রুবল। টিকিট সাধারণত দ্রুত বিক্রি হয়ে যায়।) সেন্ট পিটার্সবার্গ ও মস্কোর যোগাযোগ ব্যাবস্থাকে সহজতর করে তুলেছে। কিছু ট্রেন টভেরসহ বেশ কয়েকটি স্টেশনে বিরতি নেয়। ট্রেনের কর্মীরা ইংরেজি ভাষায় কথা বলতে পারেন।

রাতের দ্রুতগামী ট্রেনগুলি (৮–৯ ঘণ্টা সময় লাগে, ২,০০০ রুবল থেকে ভাড়া শুরু) দিনের ট্রেনের তুলনায় ধীরগতির হলেও তাদের ভাড়া তুলনামূলকভাবে অনেক কম। ভাড়া অনুযায়ী এই ট্রেনগুলিতে যাত্রীদের জন্য বিভিন্ন সুবিধা উপলব্ধ রয়েছে। সবচেয়ে বিলাসবহুল ট্রেন হলো গ্র্যান্ড-এক্সপ্রেস "হোটেল ট্রেন", যেখানে কিছু কামরায় স্নানের সুবিধাও রয়েছে। তৃতীয় শ্রেণির প্লাত্সকার্ট কূপের টিকিটের ভাড়া তুলনামূলকভাবে সস্তা। দ্বিতীয় শ্রেণির শয়ন কুপে বিছানা ও চাদরের ব্যবস্থা থাকে।

ওবভোডনি কানাল মেট্রো স্টেশনের কাছে অবস্থিত প্রধান বাস স্টেশন (অ্যাভটোভোকজাল) থেকে আন্তর্জাতিক বাসের সাথে সাথে রাশিয়ার প্রধান শহরের জন্যও বাস পাওয়া যায়। কিছু কিছু বাস শহরের ভেতরের কিছু অতিরক্ত স্টপেজে থামে। এস্তোনিয়া এবং লাটভিয়া থেকে সেন্ট পিটার্সবার্গে আস্তে চাইলে বাসই সবচেয়ে উপযুক্ত গনপরিবহন।

বাসে করে সীমান্ত পার হওয়ার প্রক্রিয়াটি সময়সাপেক্ষ। সীমান্তে অবস্থানকারী এজেন্টরা কেবল রাশিয়ান ভাষায় কথা বলে এবং তারা ভিসার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে অবগত থাকে না, যার ফলে বিলম্ব অবধারিত।

রাশিয়া থেকে

[সম্পাদনা]

রাশিয়ার অভ্যন্তরে যানজটের কারণে বাসের চেয়ে ট্রেন ভ্রমণ বেশি আরামদায়ক।

বাল্টিক ও ইউরোপের অন্যান্য শহর থেকে

[সম্পাদনা]

ইভানগোরোড/নার্ভা সীমান্ত পারাপারের জন্য বাস পরিষেবা চালু রয়েছে। প্রথম বাসটি আপনাকে সীমান্ত পর্যন্ত নিয়ে যাবে। সীমান্তের কাছে বাস পরিত্যাগ করে যাত্রীদের পায়ে হেঁটে সীমান্ত পার হতে হয় এবং তারপর সীমান্তের অন্য দিক থেকে আলাদা একটি বাসে ধরতে হয়, যা আপনাকে কাঙ্খিত গন্তব্যে পৌঁছে দেবে। এস্তোনিয়া থেকে রাশিয়ায় প্রবেশ করার সময় সীমান্ত পারাপার ও যাতায়তে সাধারণত ৩ থেকে ৬ ঘণ্টা সময় লাগে, আর রাশিয়া থেকে এস্তোনিয়ায় যেতে সময় লাগে প্রায় ১ থেকে ৩ ঘণ্টা। এস্তোনিয়া ও সেন্ট পিটার্সবার্গের মধ্যে চলাচলকারী বাসের টিকিট প্রায়শই আগেভাগে বিক্রি হয়ে যায়, তাই এক বা দুই সপ্তাহ আগে টিকিট কেটে রাখা সবচেয়ে ভালো।

  • 7 লাক্স এক্সপ্রেস, মিত্রোফানিয়েভস্কোয়ে শোসে (মিত্রোফানেভস্কো মহাসড়ক), ২/১ (: বাল্টিস্কি), +৭ ৮১২ ৪৪১ ৩৭৫৭ তালিন থেকে সেন্ট পিটার্সবার্গ অবধি প্রতিদিন ৭টি বাস ছাড়ে (ভাড়া: ৪৭ ইউরো, সময়: ৭ ঘণ্টা)। এই বাসগুলি ইভানগোরড/নার্ভা সীমান্তে কিছুক্ষনের জন্য থামে (ভাড়া:২৭–৩৫ ইউরো, সময়:৫ ঘণ্টা)। তার্তু‌ থেকে প্রতিদিন ১টি বাস চলাচল করে (ভাড়া: ৪৭ ইউরো, সময়: ৭ ঘণ্টা)। রিগা থেকে প্রতিদিন ৪টি বাস চলাচল করে (সময়:১১ ঘণ্টা, ভাড়া: ৫৫–৬৩ ইউরো)। ইউরোপের অন্যান্য শহর থেকেও বাস সংযোগ রয়েছে। সেন্ট পিটার্সবার্গ ও রুশ সীমান্তের যাতায়তের জন্য সবচেয়ে আরামদায়ক গন পরিবহন হল বাস।
  • 8 ইকোলাইনস (আমরন-ইকোলাইনস, ট্রান্সপোর্টনায়া কোম্পানি), পদইয়েজদনয় পেরেউলোক (প্রবেশ পথ), ৩ (: পুশকিনস্কায়া), +৭-৮১২-৪০৯-৯৪১০ ১০:০০–২০:০০ প্রতিদিন তালিন থেকে সেন্ট পিটার্সবার্গ অবধি ৩টি বাস ছাড়ে (ভাড়া: ৪৫ ইউরো, সময়: ৮ ঘণ্টা) এবং রিগা- থেকে ৩টি বাস ছাড়ে (ভাড়া: ৬০–৭০ ইউরো, সময়: ১০–১২ ঘণ্টা)। সেগুলি অবভোডনি খালের ধারে অবস্থিত মূল বাস স্টেশনের (অ্যাভটোভোকজাল) ৩৬ নম্বর ঠিকানা থেকে ছাড়ে।
  • বাল্টিক শাটল তালিন থেকে সেন্ট পিটার্সবার্গ অবধি বাস পরিষেবা চালু রয়েছে (ভাড়া: ৪৫ ইউরো)। বাসগুলি তুলনামূলকভাবে পুরনো এবং লাক্স এক্সপ্রেসের মতো আরামদায়ক নয়, তবে সময়সূচি অনুসারে যাত্রার জন্য কিছুটা সুবিধাজনক হতে পারে। বাসগুলি অবভোডনি খালের ধারে অবস্থিত মূল বাস স্টেশনের (অ্যাভটোভোকজাল) ৩৬ নম্বর ঠিকানা থেকে ছাড়ে।
  • 9 স্কাইলাইনস / আপলাইনস, কিংগিসেপ্পস্কোয়ে শোসে (কিংসেপ্পস্কো মহাসড়ক), ৭ (: বুখারেস্তস্কায়া), +৭-৯৬০-২৮৬-৯৭৬৯ ৫:০০–১৮:০০ বুখারেস্তস্কায়া থেকে সেন্ট পিটার্সবার্গ অবধি প্রতিদিন ৬টি মিনিবাস ছাড়ে (২ ঘণ্টা)। সেন্ট পিটার্সবার্গে এই বাসগুলি মেট্রো বুখারেস্তস্কায়ার কাছে অবস্থিত বাস স্টেশন থেকে ছাড়ে এবং মেট্রো প্রসপেক্ট ভেটেরানভ, লেনিনস্কি প্রসপেক্ট, মস্কোভস্কায়তে পৌঁছানোর পর আবার বুখারেস্তস্কায়াতে ফিরে যায়। অনলাইন থেকে এই বাসগুলির টিকিট বুকিং করা যায়। ৬০০ রুবেল

নৌকাযোগে

[সম্পাদনা]

আপনি যদি সেন্ট পিটার্সবার্গের কোনো ক্রুজ ট্যুরে অংশ নেন, তাহলে রাশিয়ার ভিসা প্রয়োজন হয় না, তবে আপনাকে ভ্রমণকারী দলের সঙ্গেই থাকতে হবে। বিস্তারিত জানতে দেখুন: রাশিয়া#জাহাজে ভিসামুক্ত প্রবেশ

  • ভল্গাড্রীম এবং স্টোলিচনায়া সুদোখোদনায়া কোম্পানিয়া (এসএসকে) "ভল্গা-বাল্টিক" অভ্যন্তরীণ জলপথে নদীভ্রমণ পরিচালনা করে। জলপথের এই ভ্রমণে আপনি মস্কো এবং ভল্গা নদীর সাথে ওনেগা, লাডোগা ও নেভা হ্রদও ঘুরতে পারবেন।

বন্দর

[সম্পাদনা]

সেন্ট পিটার্সবার্গের প্রধান নৌযান পরিচালনা কেন্দ্র হল “মেরিন ফাসাদ" যাত্রী বন্দর। নেভা নদীর মোহনার কাছে ভ্যাসিলিয়েভস্কি দ্বীপের পশ্চিম তীরের জমিতে এই বন্দর নির্মিত হয়েছে। শহরের কেন্দ্র থেকে প্রায় ৮ কিমি পশ্চিমে অবস্থিত এই বন্দরে ৭টি জেটি এবং ৪টি জাহাজ অবতরন স্থল(টার্মিনাল) রয়েছে। এই বন্দর থেকে প্রতিদিন কমপক্ষে ৭টি বড় ক্রুজ জাহাজ পরিচালিত হতে পারে। বন্দরের সর্বোচ্চ যাত্রী ধারণ ক্ষমতা প্রায় ১৫,০০০। মেরিন ফাসাদ বন্দর এবং প্রিমর্সকায়া মেট্রো স্টেশনের মধ্যে ১৫৮ নং বাস চলাচল করে।

ছোট আকারের ক্রুজ জাহাজগুলো মূলত নেভা নদী ধরে শহরে প্রবেশ করে এবং ইংলিশ বাঁধ ( অ্যাংলিস্কায়া নাবেরেজনায়া) অথবা লেফটেন্যান্ট শ্মিট বাঁধে নোঙর করে। দুটি জায়গার অবস্থান শহরের কেন্দ্র থেকে বেশ কাছে।

কিভাবে ঘুড়বেন

[সম্পাদনা]

সেতু উত্তোলনের সময়সূচী

[সম্পাদনা]

শীতকাল ব্যতীত, সেন্ট পিটার্সবার্গের ৯টি অপসারনীয় সেতুকে প্রতি রাতে একটি নির্দিষ্ট সময়ে উত্তোলিত করা হয়, যাতে নৌযান চলাচল করতে পারে। যদি সেতু উত্তোলনের সময় আপনার নদী পার করার প্রয়োজন হয় তবে নির্দিষ্ট সময়সূচী না মেনে চললে হয়তো পারাপারের সময় আপনি বাধাপ্রাপ্ত হতে পারেন এবং আপনাকে দীর্ঘ সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতে পারে। সেতুগুলো অবনমিত না হওয়া পর্যন্ত আপনি নদী পার করতে পারবেন না। রাতের মাঝামাঝি সময়ে কিছুক্ষণের জন্য বিরতি দেওয়া হয়, যখন কয়েকটি সেতু প্রায় ৩০ মিনিটের জন্য নামানো হয়, যাতে মানুষ নদী পার করে ঘরে ফিরতে পারে। যারা ভ্যাসিলিয়েভস্কি দ্বীপে অবস্থান করছেন, তাদেরকে সেতুর সময়সূচী অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে মনে রাখতে হয়, নাহলে রাতের নির্দিষ্ট সময়ে দ্বীপটিতে পৌঁছানো কঠিন হয়ে পড়ে। রাতের অন্ধকারে সেতুগুলি উত্তোলনের দৃশ্য শহরের দর্শনার্থীদের জন্য একটি অনন্য অভিজ্ঞতা।

অ্যালেক্সান্ডার নেভস্কি ব্রিজের (মোস্ট অ্যালেক্সান্ড্রা নেভস্কোগো) ১৪ কিমি দক্ষিণে অবস্থিত বলশয় ওবুখভস্কি মোস্ট সেতুটি কখনোই উত্তোলিত করা হয় না, ফলে এই সেতু দিয়ে ২৪ ঘণ্টা নেভা নদী পারাপার করা যায়। সেতুটি মূল পথ থেকে কিছুটা দূরে হওয়ার জন্য ট্যাক্সি ভাড়া কিছুটা বেশি লাগতে পারে।

সেতু উত্তোলনের সরকারী সময়সূচি অনলাইনে প্রকাশিত হয়।

নিচে সেতু ওঠানোর সময়সূচি দেওয়া হলো। এই সময়ে সেতুগুলো পরপার করা সম্ভব নয়:

সেতু স্থান উত্তোলনের সময়
প্যালেস ব্রিজ (ডভরৎসোভি মোস্ট) ভাসিলিভস্কি দ্বীপে রাত ১:১০ থেকে ১:৪০ পর্যন্ত এবং সকাল ৩:১০ থেকে ৪:৫৫ পর্যন্ত
ব্লাগোভেশচেনস্কি ব্রিজ ভাসিলিভস্কি দ্বীপে রাত ১:২৫ থেকে ২:৪৫ পর্যন্ত এবং সকাল ৩:১০ থেকে ৫:০০ পর্যন্ত
ট্রয়িৎসকি ব্রিজ পেট্রোগ্রাদস্কি, পিটার ও পল দুর্গের কাছে রাত ১:৩৫ থেকে ৪:৫০ পর্যন্ত
লিতেইনি ব্রিজ লেনিন স্কোয়ার / ফিনল্যান্ডস্কি রেলস্টেশনের কাছে রাত ১:৪০ থেকে ৪:৪৫ পর্যন্ত
বিরঝেভয় (এক্সচেঞ্জ) ব্রিজ ভাসিলিভস্কি দ্বীপ ও পেট্রোগ্রাদস্কির মাঝে, পিটার ও পল দুর্গের কাছে রাত ২:০০ থেকে ৪:৫৫ পর্যন্ত
ভোলোদারস্কি ব্রিজ লোমোনোভস্কায়ার কাছে রাত ২:০০ থেকে ৩:৪৫ পর্যন্ত এবং সকাল ৪:১৫ থেকে ৫:৪৫ পর্যন্ত
তুচকোভ ব্রিজ পেট্রোগ্রাদস্কি ও ভাসিলিভস্কি দ্বীপের মাঝে রাত ২:০০ থেকে ২:৫৫ পর্যন্ত এবং সকাল ৩:৩৫ থেকে ৪:৫৫ পর্যন্ত
বলশেওখতিনস্কি / পিটার দ্য গ্রেট ব্রিজ আলেকজান্ডার নেভস্কি ব্রিজের ঠিক উত্তরে রাত ২:০০ থেকে ৫:০০ পর্যন্ত
আলেকজান্ডার নেভস্কি ব্রিজ (মোস্ট আলেকজান্ড্রা নেভস্কোগো) নেভস্কি প্রসপেক্টে রাত ২:২০ থেকে ৫:১০ পর্যন্ত
ফিনল্যান্ডস্কি ব্রিজ আলেকজান্ডার নেভস্কি ব্রিজের ঠিক দক্ষিণে রাত ২:২০ থেকে ৫:৩০ পর্যন্ত

গণপরিবহন

[সম্পাদনা]

সেন্ট পিটার্সবার্গে মেট্রো, বাস ও ট্রাম ভাড়া দেওয়ার জন্য ইলেকট্রনিক "পদরোজনিক" ডেবিট কার্ড ব্যবহার করা সবচেয়ে সহজ ও সাশ্রয়ী পদ্ধতি। এই কার্ড মেট্রো স্টেশনের কাউন্টার বা স্বয়ংক্রিয় টিকিট মেশিন থেকে সংগ্রহ করা যায় এবং কার্ডে পুনরায় টাকা ভরা যায়। বাস বা মেট্রোর ভাড়া পরিশোধ করার জন্য স্টেশনের স্বয়ংক্রিয় মেশিনের কার্ড রিডারে কার্ডটিকে ছোঁয়াতে হয়। বিভিন্ন গণপরিবহনের ভাড়ার তালিকা জানতে কাউন্টারের পাশে থাকা তথ্য বোর্ড দেখতে পারেন। কার্ড সংগ্রহের সময় অতিরিক্ত ৬০ রুবেল জমা দিতে হয়, যা পরে ফেরত পাওয়া যায়। পদরোজনিক কার্ড মেট্রো, ট্রাম, ট্রলিবাস এবং অনেক বাস রুটে ব্যবহারযোগ্য। বাসে যাত্রার সময় টিকিট পরীক্ষকরা একটি ছোট রিডার যন্ত্রের মাধ্যমে যাচাই করে নেন যে কার্ডটি ব্যবহার করা হয়েছে কি না।

রাশিয়ান ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমেও ভাড়া দেওয়া যায়, তবে সাধারণত এই পদ্ধতিতে ভাড়া কিছুটা বেশি হয়।

মেট্রো পরিষেবা

[সম্পাদনা]
সেন্ট পিটার্সবার্গ মেট্রো

প্রধান মেট্রো লাইনের চিহ্ন:, , , ,

সেন্ট পিটার্সবার্গের মেট্রো স্টেশন

সেন্ট পিটার্সবার্গের মেট্রো পরিষেবা রাশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম ভূগর্ভস্থ গণপরিবহন ব্যবস্থা হিসাবে পরিচিত। মস্কোর পরেই এর স্থান। শহরের ভেতরে চলাচলের জন্য এটি একটি সাশ্রয়ী ও কার্যকর মাধ্যম। স্টেশনগুলো তার শৈল্পিক সজ্জার কারণে পর্যটকদের কাছেও বেশ আকর্ষণীয়। সাধারণ ফটোগ্রাফি (যেমন: ট্রাইপড ছাড়া) অনুমোদিত হলেও পেশাদার ফটোগ্রাফি নিষিদ্ধ। মেট্রোগুলি দ্রুতগতির এবং ঘন ঘন যাতায়ত করে। ব্যস্ত সময়ে ২–৩ মিনিট অন্তর ট্রেন যাতায়ত করে। যাত্রার দূরত্ব নির্বিশেষে টিকিটের ভাড়া নির্ধারিত হয়। পদরোজনিক কার্ড ব্যাবহার করলে প্রতি যাত্রার জন্য খরচ ৪৯ রুবেল আর রাশিয়ান কন্টাক্টলেস ডেবিট/ক্রেডিট কার্ড বা টোকেনে ভাড়া পরে ৭০ রুবেল।

মেট্রোর খোলা ও বন্ধ হওয়ার সময় স্টেশনভেদে ভিন্ন হয়, সাধারণত রাত ১২টা থেকে সকাল ৫:৪৫ পর্যন্ত মেট্রো স্টেশনগুলি বন্ধ থাকে।

প্রতিটি ট্রেনের কামরায় মেট্রো লাইনের মানচিত্র থাকে, যেখানে স্টেশনগুলোর নাম ল্যাটিন অক্ষরে লেখা থাকে। প্ল্যাটফর্মেও ল্যাটিন অক্ষরে নাম থাকে এবং অনেক সাইনবোর্ডে ইংরেজি অক্ষরও দেখা যায়। তবে ট্রেনের ঘোষণাগুলো শুধুমাত্র রুশ ভাষায় হয়, তবে মনোযোগ দিয়ে শুনলে দরজা বন্ধ হওয়ার সময় বর্তমান ও পরবর্তী স্টেশনের নাম শুনতে পাওয়া যায়।

মেট্রো স্টেশনগুলো মাটির অনেক গভীরে অবস্থিত। মাঝখানের কোন স্টেশনে ট্রেন বদলাতে হলে আপনাকে প্রায় ১০ মিনিট পর্যন্ত হাঁটতে হতে পারে।

ব্যস্ত সময়ে ট্রেন অত্যন্ত বেশি ভিড় থাকতে পারে, তাই নিজের জিনিসপত্রের দিকে নজর রাখা এবং স্টেশনে পৌঁছানোর সময় ট্রেন থেকে বেরোনর সময় কিছুটা ধাক্কাধাক্কির হতে পারে যার জন্য প্রস্তুত থাকা উচিত।

বাস, ট্রলিবাস অথবা ট্রামে

[সম্পাদনা]

শহরের মধ্যে অসংখ্য বাস এবং ট্রলিবাস যাতায়ত করে যাদের রুট(গন্তব্যপথ) সম্পর্কে অনলাইন থেকে জানা যায়। এছাড়াও বিনামূল্যে উপলব্ধ ইয়ানডেক্স.ট্রান্সপোর্ট মোবাইল অ্যাপ থেকেও আপনি বাসের রুট সম্পর্কে জানতে পারেন। শহরের সমস্ত বাসের রুটগুলি জানতে অনলাইন সাইটের[অকার্যকর বহিঃসংযোগ] সাহায্য নিতে পারেন।

সহরের প্রধান রুটের বাস এবং ট্রলিবাসগুলিতে প্রায়শই অত্যন্ত ভিড় থাকে। টিকিটের সাধারণ ভাড়া ৬৫ রুবেল (৬৫ руб)। মেট্রো থেকে বাসে চাপলে এই ভাড়ার উপর কিছু ছাড় পাওয়া যায়। টিকিট বাস বা ট্রলিবাসে থাকা সহকারী কর্মীদের কাছ থেকে কেনা যায় (সঠিক খুচড়া মূল্য দিয়ে টিকিট কেনা ভালো)। এছাড়া রাশিয়ান ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড রিডার মেশিনে ছোঁয়ালেও ভাড়া পরিশোধ করা যায়।

ট্রলিবাসগুলিকে 'এম' চিহ্নের মাধ্যমে নির্দেশিত করা হয়, যা মূলত রাশিয়ান অক্ষর 'টি' -এর ছোট হাতের সংস্করণ। ডিজেল বা গ্যাস দ্বারা পরিচালিত বাসগুলিকে 'এ' অক্ষর দ্বারা চিহ্নিত করা হয়। কদাচিৎ বাস ও ট্রলিবাসের একই রুট নাম্বার থাকতে পারে, কিন্তু সেক্ষেত্রে ট্রলিবাসের গন্তব্যপথের দৈর্ঘ্য সাধারণত কম হয় এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে তাদের গন্তব্যপথ বাসের গন্তব্যপথের থেকে আলাধা হতে পারে।

শহরের কেন্দ্রীয় অঞ্চলে ভিড় ও যানজটের জন্য সেখানে সাধারণত ট্রাম চলেনা। কেন্দ্রীয় অঞ্চলের বাইরে অবশ্য কিছু ট্রাম চলে।

ট্রাম মানচিত্র

লোকাল ট্রেন

[সম্পাদনা]

শহরতলিতে যাতায়তের জন্য সেই স্থানীয় ট্রেনগুলি ব্যবহার করুন যাতে নিত্যযাত্রীরা যাতায়ত করে। গন্তব্যপথের দূরত্ব অনুসারে ট্রেনের ভাড়া নির্ধারিত হয়। ট্রেনগুলি মাঝারি গতিসম্পন্ন। খুব বেশি ট্রেন যাতায়ত করে না। ট্রেনগুলি সম্পর্কে সমস্ত তথ্য অনলাইনে পাবেন, তবে তা রাশিয়ান ভাষায় লিখিত।

ট্যাক্সি

[সম্পাদনা]

ইয়ান্ডেক্স হল রাশিয়ার সরকারি ট্যাক্সি পরিচালন সংস্থা। ইয়ান্ডেক্স গো মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে ট্যাক্সি বুক করা যায়। সাধারণত সবসময়ই ট্যাক্সি পাওয়া যায়, কিন্তু ভিড়ভাট্টা ও ব্যস্ততার সময় ভাড়া বেশি হতে পারে।

এছাড়াও, আপনি জিপসি ক্যাব থেকে ট্যাক্সি নিতে পারেন বা রাস্তায় চলাচলের সময় কোনো ট্যাক্সি বুক করতে পারেন, তবে সেগুলি তুলনামূলকভাবে অসুরক্ষিত এবং চালকেরা পর্যটকদের কাছ থেকে বেশি ভাড়া দাবি করতে পারে।

সাইকেল

[সম্পাদনা]

সেন্ট পিটার্সবার্গের রাস্তাগুলি মোটামুটি সমতল, কিন্তু সাইকেল চলাচলের জন্য খুব একটা উপযোগী নয়। শহরে সাইকেল চলাচলের জন্য আলাদা রাস্তা সেভাবে নেই। এছাড়াও, খারাপ আবহাওয়া ও রাস্তার ভিড়ভাট্টা সাইকেল চালনার ক্ষেত্রে বাঁধা সৃষ্টি করে। তবে এখানকার স্থানীয় ইলেকট্রিচকা ট্রেনে আপনি সাইকেল নিয়ে উঠতে পারবেন, যদিও তার জন্য বাড়তি কিছু ভাড়া দিতে হবে। শহরতলির কম জনবহুল রাস্তাগুলিতে আপনি সাইকেল চালিয়ে উপভোগ করতে পারবেন।

কি দেখবেন

[সম্পাদনা]
হার্মিটেজ সংগ্রহশালা
রাতে সেতু
চার্চ অন দ্যা স্পিল্ড ব্লাড
ভ্যাসিলিভস্কি দ্বীপের কাছে নেভা নদীর জলে ঝর্ণা
The এক্সচেঞ্জ ভবন এবং রোস্ট্রাল কলাম
কুনস্টকামেরা
সেন্ট মাইকেলের দুর্গ

সেন্ট পিটার্সবার্গের ঐতিহাসিক কেন্দ্রস্থল এবং সংশ্লিষ্ট স্মৃতিস্তম্ভগুলি ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে স্বীকৃত, তাই অবশ্যই হাতে সময় রেখে ভালোভাবে ঘুরে দেখুন।

রোমানভ রাজবংশের দুই শতাব্দীব্যাপী শাসনকালে রাশিয়ান বিশ্বের কেন্দ্র হিসেবে শহরটির উত্থান হয়। পিটার দ্য গ্রেটের অতিরঞ্জিত জাঁকজমকপূর্ণ ও কঠোর দৃষ্টিভঙ্গি এবং সাম্রাজ্যের চরম বৈষম্যের প্রতিফলন এই শহর। সাম্রাজ্যবাদী রাশিয়ায় ধনীদের সম্পদ ছিল প্রায় অকল্পনীয় মাত্রায়, যা শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত প্রাসাদ ও ধর্মীয় ভবনগুলোর অতুল ঐশ্বর্য ও চাকচিক্যে প্রকাশিত হয়েছে। মূল শহরের পাশাপাশি শহরতলির পিটারহফ, গ্যাচিনা, স্ট্রেলনা, পুশকিন এবং পাভলভস্কেও কিছু রাজকীয় প্রাসাদ নির্মিত হয়েছিল। ওবভোডনি খালের ভিতরে, ভ্যাসিলিভস্কি দ্বীপের দক্ষিণ বাঁধ এবং পেট্রোগ্রাডস্কি দ্বীপের দক্ষিণ অংশ বরাবর বিস্তৃত শহরের কেন্দ্রস্থলের দর্শনীয় স্থানগুলিতে সবচেয়ে বেশি জনসমাগম পরিলক্ষিত হয়।

মূল আকর্ষণ

[সম্পাদনা]

শহরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আকর্ষণ হল প্রাসাদ চত্বরে অবস্থিত উইন্টার প্যালেস (যা অ্যাডমিরালটিব্রোঞ্জ হর্সম্যানের ঠিক পাশে), যেখানে হার্মিটেজ সংগ্রহশালারও অবস্থান। এটি ছিল রোমানভ রাজাদের শীতকালীন বাসভবন এবং কার্যত রুশ সাম্রাজ্যের প্রশাসনিক কেন্দ্র। হার্মিটেজ জাদুঘর বিশ্বসেরা পাঁচটি শিল্প জাদুঘরের একটি হিসেবে বিবেচিত। আপনি যদি শিল্পে আগ্রহী না-ও হন, তবুও এই বিশাল প্রাসাদ পরিদর্শন আপনাকে এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা দেবে। এর কাছাকাছিই অবস্থিত চার্চ অন দ্য স্পিল্ড ব্লাড, যার নির্মাণশৈলী বেশ অদ্ভুত ও আকর্ষণীয়। এটি শহরের আরেকটি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত প্রতীক। এটি গ্রিবোয়েদভ খালের ধারে, মিখাইলোভস্কি উদ্যানের কাছে এক মনোমুগ্ধকর স্থানে অবস্থিত। চার্চের অভ্যন্তরে চমৎকার মোজাইক শিল্পের কাজ দেখা যায়।

শহরের ঐতিহাসিক কেন্দ্রীয় অঞ্চলে প্রবাহিত হয়েছে মোইকা, ফন্টাঙ্কা এবং গ্রিবোয়েদভ খাল। উৎসাহী পর্যটকদের এই খালগুলির প্রাসাদ-বেষ্টিত তীরভূমিতে অবশ্যই একবার হেঁটে ঘুরে বেড়ানো উচিত। গ্রীষ্মকালে, জনপ্রিয় (যদিও ব্যয়বহুল) “চ্যানেল ট্যুরে” অংশ নিয়ে আপনি এই অসাধারণ স্থাপত্য সৌন্দর্য নৌকা থেকে উপভোগ করতে পারবেন। কম খরচে জলপথে ঘুরতে চাইলে নেভা নদীর উপর রিভারবাস নামে পরিচিত ছোট নৌকা ধরতে পারেন, যা অন্তত দ্রুতগতিতে আপনাকে বিভিন্ন গন্তব্যে পৌঁছে দেবে। এই নৌকাগুলি শহরের গণপরিবহন ব্যবস্থার অবিচ্ছেদ্য অংশ।

শহরের নেভস্কি প্রসপেক্ট ধরে হেঁটে ঘুরে বেরাতে পারেন। এটি পিটার্সবার্গের প্রধান রাজপথ, যা একাধিক দোকানপাট (বিশেষত ঐতিহাসিক গস্তিনি দ্বোর শপিং মল), থিয়েটার এবং অসংখ্য প্রাসাদ ও গির্জা দ্বারা সজ্জিত। এর মধ্যে বিশাল কাজান ক্যাথেড্রাল বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। কাজান ক্যাথেড্রাল এখনও সক্রিয়, তাই অন্যান্য বড় ক্যাথেড্রালের তুলনায় এটি পরিদর্শন করা সহজ (কোনো লাইন বা প্রবেশমূল্য নেই)। নেভস্কির বাইরে রয়েছে স্কোয়ার অফ দ্য আর্টস, যেখানে রাশিয়ান সংগ্রহশালার অবস্থান। শিল্পপ্রেমীদের এই সংগ্রহশালায় একবার অবশ্যই যাওয়া উচিত। শহরের মারিয়িনস্কি থিয়েটার বিশ্বের অন্যতম সুন্দর অনুষ্ঠান মঞ্চ। আপনি এখানকার অপেরা বা ব্যালে প্রদর্শনী না দেখলেও, সম্পূর্ণ থিয়েটারটি একবার ঘুরে দেখবেন। বিশাল সেন্ট আইজ্যাকস ক্যাথেড্রাল শহরের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দর্শনীয় স্থান। এখানকার ব্যালকনি থেকে অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর দৃশ্য দেখা যায়। পেট্রোগ্রাদ সাইডে

নেভা নদীর ওপারে শহরের আরও কিছু আবশ্যক দর্শনীয় স্থানের অবস্থান। পেট্রোগ্রাদ সাইডে অবস্থিত পিটার অ্যান্ড পল ফোর্ট্রেস শহরের শীর্ষ তিন আকর্ষণের একটি। নিছক সৌন্দর্যের পাশাপাশি এই স্থান রোমানভ রাজাদের শেষ বিশ্রামস্থল হিসেবে আকর্ষণীয়। রোমানভদের শাসনকালে উচ্চ ক্ষমতাশীল রাজনৈতিক বন্দিদের কারাগার হিসেবে ব্যবহৃত এই কুখ্যাত স্থান তার ঐতিহাসিক গুরুত্বের জন্য অবশ্যই দর্শনীয়। ভ্যাসিলিয়েভস্কি দ্বীপ।ভ্যাসিলিয়েভস্কি দ্বীপে ভ্রমণের সময় অন্তত একবার হলেও ট্যাক্সি নিয়ে স্ট্রেলকা পর্যন্ত যাওয়া উচিত, যেখানে রোস্ট্রাল কলামগুলোর পাশ থেকে অপূর্ব দৃশ্য দেখা যায়। এর ঠিক বিপরীতে রয়েছে পুরনো স্টক এক্সচেঞ্জ ভবন, যেখানে নৌ সংগ্রহশালার অবস্থান। এটি নিঃসন্দেহে বিশ্বের অন্যতম সেরা সামুদ্রিক জাদুঘর। নদী পার হওয়ার আগে কুন্সটকামেরা নৃতত্ত্ব জাদুঘরে যেতে ভুলবেন না। বিশ্ববিদ্যালয় বাঁধ বরাবর হেঁটে গেলেই আপনি সেখানে পৌঁছে যাবেন। এখানে পিটার দ্য গ্রেটের অদ্ভুত সংগ্রহশালা রয়েছে।

যদি আপনি শহরের মূল আকর্ষণগুলো অল্প সময়ে দেখে নেওয়ার পরিকল্পনা করেন, তাহলে আপনাকে অনেক জটিলতার সম্মুখীন হতে হবে। শহরতলির কিছু স্থান, যেমন পিটারহফ, পুশকিন, লোমোনোসোভ, স্ট্রেলনা এবং পাভলভস্কে অসাধারণ কিছু প্রাসাদ আছে। যারা সেন্ট পিটার্সবার্গে এসে পুশকিনের চার্সকোয়ে সেলোর প্রাসাদ কিংবা পিটারহফের বলশোই প্যালেস না দেখে ফিরে যান, তাদের সত্যিই লজ্জিত হওয়া উচিত। এটা ঠিক যেন প্যারিসে গিয়ে ভার্সাই না দেখার মতো। তিনটি জনপ্রিয় প্রাসাদের মধ্যে পাভলভস্ক প্যালেস অবশ্য দর্শনীয়। হাতে সময় থাকলে অবশ্যই সেখানে ঘুরে আসুন।

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

শহরের কেন্দ্রস্থলে আরও অনেক দর্শনীয় স্থান রয়েছে। বিপ্লবী যোদ্ধাদের স্মৃতিস্তম্ভ ও চিরন্তন শিখাসহ মার্স ফিল্ড, ঐতিহ্যবাহী সার্কাস, চমৎকার বারোক স্থাপত্যের স্মলনি ক্যাথেড্রাল, পিটার দ্য গ্রেটের কেবিন, তাউরিদ প্রাসাদ ও উদ্যানের সবুজ এলাকা, আলেকজান্ডার নেভস্কি মঠ এবং ইউসুপভ প্রাসাদ, যেখানে রাসপুটিন নিহত হয়েছিলেন, এই সমস্ত জায়গাই ঘুরে দেখার মতো। যদি সুযোগ থাকে, প্রাসাদের অভ্যন্তরের থিয়েটারে কোনো পরিবেশনা দেখে নিতে পারেন। নব্য-ধ্রুপদী শৈলীর আবক্ষ মূর্তিতে সজ্জিত গ্রীষ্মকালীন উদ্যান, মিখাইলোভস্কি ক্যাসেল, মার্বেল প্যালেস—এই সমস্ত স্থানের সাথে লেনিনগ্রাদের প্রতিরক্ষা ও অবরোধ বিষয়ক জাদুঘরটি দেখতে ভুলবেন না। অপেক্ষাকৃত ক্ষুদ্র কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ এই সংগ্রহশালায় শহরের ইতিহাসের নানা দিক তুলে ধরা হয়েছে। সাহিত্যপ্রেমীদের জন্য দস্তয়েভস্কির স্মৃতিবিজড়িত স্থানগুলো বিশেষ আকর্ষণীয়, বিশেষ করে ক্রাইম অ্যান্ড পানিশমেন্ট উপন্যাসের বিখ্যাত "মার্ডার ওয়াক"।

নদীর ওপারে পেট্রোগ্রাদ সাইডে ফিরে যাওয়ার সময় রাস্তার পাশেই আপনি বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান দেখতে পারেন, যেমন পিটার অ্যান্ড পল কাসল, চিত্তাকর্ষক সেন্ট পিটার্সবার্গ মসজিদ, সামরিক সংগ্রহশালা, ক্রুজার অরোরার জাদুঘর-জাহাজ, চির আকর্ষণীয় রাজনৈতিক ইতিহাসের জাদুঘর এবং বোটানিক্যাল গার্ডেন। ভ্যাসিলিভস্কির সমগ্র নেভা বাঁধ অঞ্চলে আকর্ষণীয় সব সংগ্রহশালা এবং সুবিশাল ভবন রয়েছে। অন্যান্য বিশেষ আকর্ষণীয় জায়গাগুলির মধ্যে রয়েছে (উপরে উল্লিখিত নৌ জাদুঘর এবং কুনস্টকামেরা বাদে) মেনশিকভ প্রাসাদ (হার্মিটেজ দ্বারা পরিচালিত), টুয়েলভ কলেজিয়া এবং মাইনিং জাদুঘর। থেবান নেক্রোপলিসে অবস্থিত প্রায় ৩,৩০০ বছরের পুরনো স্ফিংস মূর্তিগুলি দেখতে ভুলবেন না!

দূর্বরতী স্থান

[সম্পাদনা]

শহরের উত্তর ও দক্ষিণ অংশে, বিশেষ করে দক্ষিণে দেখার মতো অনেক কিছু রয়েছে। সেন্ট পিটার্সবার্গের দক্ষিণাঞ্চলে রয়েছে নার্ভা ট্রায়ামফাল আর্চ এবং এর অনুরূপ স্মৃতিস্তম্ভ মস্কো ট্রায়ামফাল গেট, লেনিনগ্রাদের বীর প্রতিরক্ষকদের বিশাল স্মৃতিস্তম্ভ (যা শহরের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ হতে পারতো, কিন্তু কেবলমাত্র শহরের কেন্দ্র থেকে দূরত্বের কারনে সম্ভব হয়নি), মস্কো ভিক্টরি পার্ক এবং হাউস অফ দ্য সোভিয়েটস, যা স্ট্যালিন যুগের স্থাপত্যশৈলীর একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ। এর সামনে একটি বড় লেনিন মূর্তি রয়েছে। দক্ষিণ সেন্ট পিটার্সবার্গের সবচেয়ে আকর্ষণীয় দ্রষ্টব্য হিসাবে পরিচিত রঙিন এবং বৈচিত্র্যপূর্ণ চেসমে চার্চ।

শহরের পূর্বাংশ, যা কথ্য ভাষায় "রাইট ব্যাংক" নামে পরিচিত, সেখানকার ওখতা ও পোরোখোভিয়ে জেলা উনিশ শতকের শিল্প স্থাপত্যের জন্য পরিচিত। পোরোখোভিয়েরতে একসময় বারুদ কারখানা ছিল।

উত্তর সেন্ট পিটার্সবার্গ তুলনামূলকভাবে স্বল্প পরিচিত, তবে অভিযাত্রী পর্যটকরা এখানে কিছু আকর্ষণীয় স্থান খুঁজে পাবেন। এখানকার দর্শনীয় স্থানের মধ্যে রয়েছে ফিনল্যান্ডস্কি স্টেশনের আশেপাশের পুরনো শিল্প এলাকা, ফরেস্ট্রি একাডেমি এবং লেনিনগ্রাদ অবরোধে নিহতদের স্মরণে নির্মিত পিসকারিওভস্কয়ে স্মৃতিচিহ্ন।

কটলিন দ্বীপে অবস্থিত ক্রনস্টাডট নৌ দুর্গ। বর্তমানে বাঁধের উপর দিয়ে সড়কপথে সেখানে পৌঁছানো যায়। সামরিক স্থাপত্যের ইতিহাসে আগ্রহীদের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান এবং দিনেরবেলা নৌকাভ্রমণের জন্য উপযুক্ত।

কি করবেন

[সম্পাদনা]

টেলিগ্রাম মেসেঞ্জার দলের আন্তর্জাতিক সমাবেশ, এসপিবি কাউচসার্ফিং, সে ইয়েস সেন্ট পিটার্সবার্গ এবং ইংলিশ মিটআপ সেন্ট পিটার্সবার্গ এবং অন্যান্য কিছু স্থানীয় অনলাইন সাইট থেকে সেন্ট পিটার্সবার্গে আয়োজিত নিত্যদিনের অনুষ্ঠান সম্পর্কে জানতে পারা যায়। স্থানীয় মানুষ এবং বিদেশিদের সাক্ষাৎকার সমাবেশ, ভ্রমণমূলক কার্যক্রম এবং ভাষা অনুশীলনের মতো নানা অনুষ্ঠানের কথা আপনি উপরোক্ত ওয়েবসাইটগুলি থেকে জানতে পারবেন।

অপেরা, ব্যালে এবং থিয়েটার

[সম্পাদনা]

অপেরা অথবা ব্যালে নৃত্যের প্ররদর্শ‌নী না দেখলে সেন্ট পিটার্সবার্গ ভ্রমণ অসম্পূর্ণ থেকে যায়। মারিন্সকি সম্ভবত শহরের সবচেয়ে জনপ্রিয় অপেরা ও ব্যালে নৃত্যের প্রতিষ্ঠান, কিন্তু এটিই শহরের একমাত্র প্রতিষ্ঠান নয়। থিয়েটারের টিকিট ওয়েবসাইট থেকে পাবেন। প্রত্যেক থিয়েটারে টিকিট কাটার অফিসও আছে। এছাড়াও শহরের বিভিন্ন স্থানে "টিট্রালনায়া কাসা" নামে পরিচিত স্থায়ী ও অস্থায়ী দোকান থেকে থিয়েটারের টিকিট কেনা যায়। কখনো কখনো দোকানে টিকিট শেষ হয়ে যায়, কিন্তু থিয়েটারে টিকিট পাওয়া যেতে পারে, আবার এর উল্টোটাও হতে পারে। তাই নির্দিষ্ট কোনো পরিবেশনা দেখতে চাইলে উভয় জায়গায় খোঁজ নেওয়া ভালো। কিছু পরিবেশনায় ব্যক্তিগত আসন নিলে তুলনামূলকভাবে বয়স্ক শিশুদের নিয়ে প্রবেশ করা যাবে, তবে টিকিট কেনার সময় এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করে নেওয়া উচিত।

সঙ্গীতানুষ্ঠান

[সম্পাদনা]

সেন্ট পিটার্সবার্গের সংগীত জগৎ বৈচিত্র্যময়। এখানে প্রতি সপ্তাহে ধ্রুপদী, জ্যাজ এবং পপ ইত্যাদি বিভিন্ন পশ্চিমা সংগীতের অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়। ব্যালে ও অপেরার মতোই টিট্রালনায়া কাসার বিভিন্ন অস্থায়ী দোকানে এইসব অনুষ্ঠানের টিকিট পাওয়া যায়। তবে পপ সংগীতের অনুষ্ঠান, বিশেষ করে মার্কিন ও ইউরোপীয় শিল্পীদের অনুষ্ঠানের টিকিটগুলি মূলত নির্দিষ্ট পরিবেশকদের মাধ্যমেই বিক্রি হয়। পপ ও রক সঙ্গীতের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করার সময় কিছু জিনিস মনে রাখবেন। যদি আপনি নৃত্য-মঞ্চের (ট্যাঞ্জপোল) টিকিট না কেনেন, তাহলে দর্শকসারিতে শান্ত হয়ে বসে অনুষ্ঠান উপভোগ করুন। দর্শকদের অহেতুক আসন ছেড়ে দাঁড়ানো, নাচানাচি বা চিৎকার করা একেবারেই কাম্য নয়। কর্মীরা এ বিষয়ে সতর্ক থাকেন (তবে ভদ্রভাবে করতালি দিয়ে শিল্পীদের অভিবাদন অবশ্যই জানানো যায়)।

সেন্ট পিটার্সবার্গের বেশ কয়েকটি ব্যালে ও অপেরা মঞ্চে গানবাজনা এবং আবৃত্তির আয়োজন করা হয়। পাশাপাশি শহরের নানা ছোট ক্লাবে নতুন ও উদীয়মান সংগীতদলের পরিবেশনা উপভোগ করা যায়।

চলচ্চিত্র

[সম্পাদনা]

সেন্ট পিটার্সবার্গের বেশিরভাগ সিনেমা হলে রাশিয়ান ভাষায় ভাষান্তরিত হলিউডের ছবি দেখানো হয়। ডম কিনোর মতো সিনেমা হলগুলিতে স্বাধীনভাবে নির্মিত আমেরিকান বা ব্রিটিশ সিনেমাগুলি রাশিয়ান অনুবাদসহ দেখানো হয়।

অক্টোবর মাসে অনুষ্ঠিত হয় শহরের বার্ষিক চলচ্চিত্র উৎসব মেসেজ টু ম্যান। এখানে আন্তর্জাতিক তথ্যচিত্র, স্বল্পদৈর্ঘ্য এবং অ্যানিমেটেড চলচ্চিত্রের সাথে অনেক ইংরেজি চলচ্চিত্রও প্রদর্শিত হয়।

খালগুলিতে নৌকা ভ্রমণ

[সম্পাদনা]

গ্রীষ্মকালে সেন্ট পিটার্সবার্গ শহরের খালগুলিতে নৌকাভ্রমণের মাধ্যমে আপনি শহরের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান ঘুরে দেখতে পারেন। সাধারণত বেশিরভাগ নৌকা ভ্রমণের সূচনা হয় মোইকা খাল থেকে। সেখান থেকে নেভা নদীতে গিয়ে পিটার অ্যান্ড পল কাসল ও ক্রুসার আরোরা দেখানো হয়, তারপর ফন্টাঙ্কা খালের মধ্য দিয়ে নৌকা ভ্রমণের সূচনাস্থলে ফিরে আসে। নৌকাযাত্রা কখনও কখনও মারিনস্কি থিয়েটার পর্যন্তও প্রলম্বিত হয়। এই নৌকা ভ্রমণ শহরের বিভিন্ন স্থানে শুরু হয়। সাধারণত যেখান থেকে নৌকাভ্রমণের শুরু হয়, সফরের শেষে সেখানেই নৌকা ফিরে আসে। নেভস্কি প্রসপেক্টে বিভিন্ন নৌকা পরিচালনা সংস্থার কর্মীরা তাদের সফরসূচী সম্পর্কে প্রচার করেন। কিছু নৌকায় ক্যাফে ও শৌচাগার থাকে, আবার কিছুতে নাও থাকতে পারে।

বেশিরভাগ ভ্রমণ রুশ ভাষায় পরিচালিত হয়, তবে ওয়াটার ট্যুরিজম সেন্টার থেকে ইংরেজি ভাষার ট্যুরও বুক করা যায়।

খেলাধূলা

[সম্পাদনা]

ফুটবল: শহরের স্থানীয় ফুটবল দল হলো এফসি জেনিট সেন্ট পিটার্সবার্গ। এই ফুটবল দলটি রাশিয়ার শীর্ষ ফুটবল লিগ হিসাবে পরিচিত রাশিয়ান প্রিমিয়ার লিগে খেলে। এই দলের হোম গ্রাউন্ড (ঘরের মাঠ) হিসাবে পরিচিত ক্রেস্টোভস্কি স্টেডিয়াম, যা শহরের কেন্দ্র থেকে প্রায় ১০ কিমি উত্তরে ক্রেস্টোভস্কি দ্বীপে অবস্থিত। স্টেডিয়ামে যেতে চাইলে মেট্রো এম৩ (সবুজ লাইন) ধরে পশ্চিমমুখে বেগোভায়ার দিকে যেতে হবে এবং নোভোক্রেস্টভস্কায় স্টেশনে নামতে হবে।

বাস্কেটবল: শহরের স্থানীয় বাস্কেটবল খেলোয়াড়দের দল বিসি জেনিট সেন্ট পিটার্সবার্গ। এরা ভিটিবি ইউনাইটেড লিগে অংশগ্রহণ করে। এই দলটি রাশিয়ার শীর্ষ চারটি দলের ("বিগ ফোর") মধ্যে পরিগণিত হয়। তাদের হোম গ্রাউন্ড (ঘরের মাঠ) সিবুর এরিনা নামে পরিচিত, যদিও সেটি সরকারি নাম নয়। এই স্টেডিয়ামটি এফসি জেনিটের ফুটবল স্টেডিয়ামের কাছেই অবস্থিত।

হকি: শহরের স্থানীয় হকি খেলোয়াড়দের দল এইচসি এসকেএ সেন্ট পিটার্সবার্গ, যারা কন্টিনেন্টাল হকি লিগে (কেএইচএল) অংশগ্রহণ করে। তাদের হোম গ্রাউন্ড হল এসকেএ অ্যারেনা, যা বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ইনডোর হকি স্টেডিয়াম। স্টেডিয়ামে যেতে হলে মেট্রো এম২ (নীল লাইন) ধরে কুপচিনোর দিকে যেতে হবে এবং পার্ক পোবেদি স্টেশনে নামতে হবে। ম্যাচ চলাকালীন, স্টেশন থেকে প্রতি ৫ মিনিট অন্তর শাটল পাবেন, যা আপনাকে স্টেডিয়ামে পৌঁছে দেবে। নাহলে পার্কের মধ্যে ১৫ মিনিট হাঁটলেও আপনি স্টেডিয়ামে পৌঁছাতে পারবেন।

ছাদ অথবা উঁচু জায়গা থেকে শহরের দৃশ্য

[সম্পাদনা]

সেন্ট পিটার্সবার্গ শহরের সেরা দৃশ্য উপভোগ করার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত জায়গা হল কোনো উঁচু জায়গা অথবা উঁচু বাড়ির ছাদ। উন্মুক্ত ছাদসহ রেস্তোরাঁ ও পানশালাগুলি থেকে এই দৃশ্য উপভোগ করা যায়। এছাড়া সেন্ট আইজ্যাক ক্যাথেড্রালের ২৫০টিরও বেশি সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠলে শহরের বিস্তৃত দৃশ্য চোখে পড়ে। পর্যটকদের অভিজ্ঞতা প্রদানের জন্য রাশিয়ান ভাষায় রুফটপ ট্যুর পরিচালনা করা হয়।

শিক্ষা

[সম্পাদনা]

যদি আপনি রাশিয়ায় পড়াশোনা করতে ইচ্ছুক হন, তাহলে ১৭২৪ সালে পিটার দ্য গ্রেট কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত সেন্ট পিটার্সবার্গ স্টেট ইউনিভার্সিটি আপনার জন্য একটি উপযুক্ত বিকল্প হতে পারে। এটি রাশিয়ার অন্যতম প্রাচীন ও মর্যাদাপূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে বিবেচিত হয়। সেন্ট পিটার্সবার্গে আরও কিছু স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে রয়েছে আইটিএমও ইউনিভার্সিটি (ইনফরমেশন টেকনোলজি, মেকানিক্স ও অপটিক্স), সেন্ট পিটার্সবার্গ পলিটেকনিক ইউনিভার্সিটি এবং সেন্ট পিটার্সবার্গ ইউনিভার্সিটির অন্তর্গত হায়ার স্কুল অফ ইকোনমিক

সেন্ট পিটার্সবার্গের ভাষাশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর তালিকা জানতে দেখুন: রাশিয়ার শিক্ষাকেন্দ্র

কেনাকাটা

[সম্পাদনা]

সাধারণত সেন্ট পিটার্সবার্গে এটিএমে শুধুমাত্র রাশিয়ান কার্ড গ্রহণযোগ্য। মুদ্রা বিনিময়ের জন্য লিগোভকা এলাকাটি সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য। অনলাইনে হালনাগাদ বিনিময় হার প্রকাশিত হয়। রাস্তার যেকোন জায়গা থেকে টাকা বদলাবেন না। তাহলে উপযুক্ত মূল্য পাবেননা এবং প্রতারিত হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি থাকে।

শহরের ছোট দোকানগুলোতে জিনিসের দাম সবসময় বড় দোকানের তুলনায় বেশি হয় না। একই পণ্যের দামের মধ্যে খুব কমই ফারাক থাকে।

শহরের গির্জাগুলোতে প্রায়ই ছোট স্মারক ও ধর্মীয় সামগ্রীর দোকান দেখা যায়, যেখানে নানা ধরনের জিনিস পাওয়া যায়।

কেনাকাটার জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় জায়গা হল শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত নেভস্কি প্রসপেক্ট। এখানকার রাস্তার পাশের দোকান, পাসাজ এবং ঐতিহাসিক গোস্তিনি দ্বোর বিপনন কেন্দ্রে উচ্চমূল্যের পণ্য বিক্রি হয়। নেভস্কির কাছাকাছি রাস্তার ধারে কিছু বাজার রয়েছে, যাদের মধ্যে আপ্রাকসিন দ্বোর উল্লেখযোগ্য (গোস্তিনি দ্বোর থেকে সাদোভায়া, রাস্তায় দক্ষিণে)। এখানে সমস্ত কিছুই তুলনামূলকভাবে সস্তায় পাওয়া যায়। বিশেষত যদি আপনি রুশ ভাষায় কথা বলতে পারেন তবে এই বাজার থেকে কম দামে জিনিস কিনতে পারবেন।

বিশ্বমানের ও বিলাসবহুল পন্য কেনাকাটা করার জন্য ডিএলটি মাল্টি-ব্র্যান্ড বিপনন কেন্দ্র এবং স্টারোনেভস্কি ফ্যাশন ডিস্ট্রিক্টে যেতে পারেন।

খাদ্য

[সম্পাদনা]

শহরের স্থানীয় সুস্বাদু পথ খাবারের মধ্যে শৌর্মা এবং পিশকি বিশেষভাবে জনপ্রিয়। শৌর্মা সেন্ট পিটার্সবার্গের নিজস্ব এক বৈশিষ্ট্য। রাশিয়ার অন্যান্য শহরে এই খাবার খুব একটা পাওয়া যায় না। মূলত আজেরি বিক্রেতারা এই খাবার বিক্রি করেন। শহরের ক্যাফেতে অথবা রাস্তার পাশের দোকানে, সর্বত্রই শৌর্মা পাওয়া যায়। পিশকি হলো রাশিয়ান ডোনাট জাতীয় খাবার, যা কফির সঙ্গে খেতে দারুণ লাগে। পিশকি সেন্ট পিটার্সবার্গের খাদ্য সংস্কৃতির সাথে নিবিড়ভাবে জড়িত। শহরের কিছু জনপ্রিয় রাশিয়ান রেস্তোরাঁ হল তেরেমোক, ক্রোশকা কার্তোশকা এবং ডোডো পিজ্জা। এছাড়াও এখানকার জনপ্রিয় এফ. ভলচেক'স বেকারির দোকানে ১০০ রুবেলের থেকেও কম দামে কেকের টুকড়ো এবং ৬০ রুবেল মূল্যে আইসক্রিম পাওয়া যায়।

শহরে রেস্তোরাঁগুলির খাদ্য তালিকা বেশ বৈচিত্র্যময়। স্থানীয় রুশ খাবারের আস্বাদন পেতে চাইলে পিটার অ্যান্ড পল ফোর্ট্রেসের প্রাঙ্গণে অবস্থিত একটি আকর্ষণীয় রেস্তোরাঁতে যেতে পারেন। এখানকার রেস্তোরাঁগুলিতে আন্তর্জাতিক, পশ্চিম ইউরোপীয় এবং মিশ্র এশিয়ান রন্ধনশৈলীর খাবার অত্যন্ত সহজলভ্য। এখানকার রুশ ধাঁচে পরিবেশিত চাইনিজ খাবার বেশ সুস্বাদু, যদিও অর্ডার করতে কিছুটা শব্দতত্ত্বের সহায়তা দরকার। শহরের খুবই জনপ্রিয় একটি খাবার হল সুশি। এখানে জর্জিয়ান রান্না তেমন প্রচলিত নয়, তবে সেন্ট পিটার্সবার্গে সহজলভ্য। জর্জিয়ান রান্না এখানে বিশ্বমানের একটি রন্ধনশৈলী হিসেবে বিবেচিত হয়। এছাড়াও মধ্য এশীয় এবং উজবেক রেস্তোরাঁগুলোও শহরে বেশ জনপ্রিয়।

পানীয়

[সম্পাদনা]

পানশালা

[সম্পাদনা]

সেন্ট পিটার্সবার্গের পানশালাগুলোতে রাশিয়ার যেকোন শহরের তুলনায় সেরা বিয়ার পরিবেশিত হয়। এই অঞ্চলের প্রধান ভাঁটিখানা বাল্টিকা সেন্ট পিটার্সবার্গে শহরেই অবস্থিত। তবে ২০২৩ সালে এই কোম্পানিটি রাশিয়ান সরকারের দ্বারা অধিগৃহীত হওয়ার পর থেকে এখানকার বিয়ারকে ঘিরে রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হয়।

রাত্রিকালীন ক্লাব

[সম্পাদনা]

সেন্ট পিটার্সবার্গের মানুষ জানেন কিভাবে আনন্দ সমাবেশ বা পার্টির আয়োজন করতে হয়। শহরে বিভিন্ন মানের রাত্রিকালীন সমাবেশ স্থল বা ক্লাব রয়েছে। যারা শহরে রাত্রিকালীন ভ্রমণ উপভোগ করতে চান, তাদের জন্য এই ক্লাবগুলি যথেষ্ট। এই ক্লাবগুলিতে রক, পপ, জ্যাজ, হিপ হপ/আরএনবি ইত্যাদি পশ্চিমা সঙ্গীতের অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়।

শহরের কিছু এলাকায় প্রচুর সংখ্যক নাইটক্লাব আছে, এর মধ্যে অন্যতম হলো ডুমস্কায়া স্ট্রিট, যা লোমনোসোভা স্ট্রিটের সঙ্গে সংযুক্ত। এই এলাকাটি জনসাধারণের কাছে "ডুমস্কায়া" নামে পরিচিত। ডুমস্কায়া এলাকাটির অবস্থান গোস্তিনি দ্বোর মেট্রো স্টেশনের কাছে। শহরের আরেকটি জনপ্রিয় নাইটক্লাব সমৃদ্ধ এলাকা হলো রুবিনশটেইনা স্ট্রিট, যা মায়াকোভস্কায়া মেট্রো স্টেশনের কাছে অবস্থিত। স্থানীয়রা সাধারণত রুবিনশটেইনাকে ডুমস্কায়ার চেয়ে বেশি মানসম্পন্ন বলে মনে করেন। চমৎকার ক্লাব এবং আরও পরিশীলিত দর্শকশ্রেণির জন্য স্থানীয়দের কাছে এই ক্লাব এলাকা বেশি পছন্দের। তাই দুইয়ের মধ্যে রুবিনশটেইনা বেছে নেওয়াই সুপারিশযোগ্য। তবে শহরের কেন্দ্রস্থলে, বিশেষ করে নেভস্কি অ্যাভিনিউয়ের আশেপাশে আরও অনেক ভালো ক্লাব রয়েছে।

এছাড়া শহরে কিছু ছোট, তুলনামূলকভাবে অপরিচ্ছন্ন গে ক্লাব (সমকামী পুরুষদের জন্য ক্লাব) রয়েছে। এদের মধ্যে ক্যাবারে ক্লাবের একাধিক শাখা বর্তমান।

রাত্রিযাপন

[সম্পাদনা]

পর্যটকদের জন্য সেন্ট পিটার্সবার্গে থাকার সবচেয়ে ভালো এলাকা হল নেভস্কি প্রসপেক্ট মেট্রো স্টেশনের নিকটবর্তী এলাকাসমূহ। এখান থেকে শহরের প্রধান আকর্ষণগুলোর বেশিরভাগই হেঁটে ঘুরে দেখা যায় এবং নেভস্কির রাস্তায় অসংখ্য রেস্তোরাঁ, দোকান, ক্যাফে, ক্লাব ইত্যাদি রয়েছে। আপনি চাইলে নেভস্কি থেকে একটু দূরে গিয়ে খালের ধারের মনোরম পরিবেশেও থাকতে পারেন।

যোগাযোগ

[সম্পাদনা]

রাশিয়ায় টেলিফোন ব্যবহার ও সিম কার্ড কেনার বিষয়ে বিস্তারিত জানতে রাশিয়া#যোগাযোগ বিভাগটি দেখতে পারেন। রাশিয়ান আইনের কারণে স্থানীয় ফ্রি ওয়াইফাই পরিষেবা ব্যবহার করতে হলে রাশিয়ান মোবাইল নম্বর দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হয়।

রাশিয়ার জরুরি পরিষেবা নম্বর হলো ১১২(বিনামূল্যে)।

কম্পিউটার ও প্রিন্টার

[সম্পাদনা]

শহরে অনেক কম্পিউটার ক্লাব/ইন্টারনেট ক্যাফে আছে, যেখানে প্রায়শই কমবয়সী বাচ্চারা কাউন্টার স্ট্রাইক নামক কম্পিউটার গেম খেলার জন্য ভিড় জমান।

  • ক্যাফেম্যাক্স, নেভস্কি প্রস্পেক্ট ৯০-৯২ (মেট্রো: মায়াকভস্কায়া বা প্লসচাদ ভোসিতানিয়া), +৭ ৮১২ ২৭৩ ৬৬৫৫, ইমেইল: দিনে ২৪ ঘন্টা বৃহৎ, আলোকিত এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। এখানে কপি, প্রিন্টিং, স্ক্যানিং এবং ফ্যাক্সিং পরিষেবা প্রদান করা হয়।

সতর্ক থাকুন

[সম্পাদনা]

অপরাধ

[সম্পাদনা]

অন্যান্য বড় শহরের মতোই, সেন্ট পিটার্সবার্গে মদ্যপ ব্যক্তিদের সঙ্গে কোনো ধরনের ঝামেলায় জড়ানো থেকে বিরত থাকা উচিত। রাতে ভ্রমণ করলে প্রধান ফুটপাথ ধরে হাঁটুন এবং অন্ধকার গলি বা উঠোন এড়িয়ে চলুন। কোন অবস্থাতেই জিপসি ক্যাব পরিষেবার ট্যাক্সি নেবেননা, বিশেষত পানশালার আশেপাশে তো একেবারেই নয়। ট্যাক্সিগুলি পর্যটকদের আশেপাশে ঘোড়াঘুড়ি করতে থাকে, কিন্তু এদের কাছ থেকে পরিষেবা গ্রহন করা সম্পূর্নরূপে অনুচিত।

সাধারণ পথচারী পুলিশ সাধারণত কোনো বিদেশি ভাষা জানেন না। কিন্তু আপনি যদি পর্যটক হিসেবে চিহ্নিত হন, তাহলে তারা আপনার কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ার চেষ্টা করবে। আতঙ্কিত না হয়ে অফিসারের নাম জিজ্ঞাসা করুন এবং তার কাছ থেকে রসিদ অবশ্যই চাইবেন।

মেট্রো স্টেশনের নিরাপত্তা কর্মীরা মাঝে মাঝে নির্বাচিত যাত্রীদের ব্যাগ ও জিনিসপত্র পরীক্ষা করেন।

শহরে পকেটমারির আশঙ্কা আছে। তাই টাকা, কাগজপত্র, ক্যামেরা, মোবাইল ফোন এবং মূল্যবান যেকোনো জিনিসের যত্ন নিন। বিশেষ করে ভিড়ভাট্টার সময় মেট্রোতে সতর্ক থাকুন, কারণ লোকজন ট্রেনের দরজায় ধাক্কাধাক্কি শুরু করে এবং এই সময় প্রায়শই পকেটমারির ঘটনা ঘটে, বিশেষ করে গোস্তিনি দ্বোর মেট্রো স্টেশনে (পকেটমারী শুধুমাত্র এই স্টেশনেই সীমাবদ্ধ নয়)। মেট্রোতে ডাকাতির ঘটনা উদ্বেগজনক সমস্যা। তাই আপনার চারপাশে কী ঘটছে এবং আপনার খুব কাছে কে দাঁড়িয়ে আছে তা সর্বদা নজরে রাখুন। খেয়াল রাখবেন নেভস্কি প্রসপেক্ট এবং কাছাকাছি বাজারগুলি পকেটমারদের আড্ডার জায়গা।

সেন্ট পিটার্সবার্গে আরেকটি বড় সমস্যা হল, এখানে ফটোগ্রাফি, অর্থাৎ ছবি তোলার মূল্যবান সরঞ্জাম প্রায়শই চুরি হয়। সাধারণ যেকোনো ব্যাগে ফটোগ্রাফির মূল্যবান সরঞ্জাম রেখে আপনি চুরির হাত থেকে বাঁচতে পারবেন না, কারণ এই ব্যাগগুলি খুলতে পাঁচ মিনিটেরও কম সময় লাগে। একটি ধারালো ছুরির সাহায্যেই এই ব্যাগগুলি দ্রুত চিঁড়ে ফেলা যায়। ছবি তোলার ক্যামেরাটি সবসময় কাঁধে ঝোলানো ব্যাগের ভেতর সাবধানে রাখুন এবং হাত দিয়ে শক্ত করে ধরে রাখুন। কোনো দামী ঘড়ি বা গয়না জনসমক্ষে প্রদর্শন করবেন না, অর্থাৎ কোনোভাবেই এটা বোঝানোর চেষ্টা করবেন না যে আপনার কাছে প্রচুর পয়সা আছে। এখানে ডাকাতির ঘটনা অস্বাভাবিক নয়। অনেক সময় বিদেশি পর্যটকদের দিকে বন্দুক অথবা ছুরি তাক করে তাদের ভয় দেখানো হয়। তবে শুধু বিদেশি নয়, যেসব স্থানীয় মানুষ অসাবধানতাবশত তাদের বিত্তের প্রদর্শন করে, তারাও ডাকাতদের দ্বারা আক্রান্ত হন।

সেন্ট পিটার্সবার্গ শহরের সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী, শহরের কেন্দ্র থেকে আপনি যত দূরে থাকবেন, ততই আপনার পক্ষে বিপজ্জনক।

শহরের আরেকটি সমস্যা হল এখানকার অপরাধী গোষ্ঠী বা গ্যাং -এর রমরমা। যদিও অপরাধী গোষ্ঠীগুলির পারস্পরিক প্রতিদ্বন্দিতা এখানকার পর্যটকদের ক্ষতিসাধন করে না, কিন্তু কিছু কিছু অপরাধী গুন্ডাদলের লোকেদের কার্যকলাপ সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। সেন্ট পিটার্সবার্গের আঞ্চলিক ফুটবল দল জেনিট সেন্ট পিটার্সবার্গ, দেশের সবচেয়ে বড় ফুটবল সঙ্ঘ হিসাবে পরিচিত এবং বিস্ময়করভাবে এদের নিজস্ব একটি গুন্ডাদলও আছে। আপনি যদি ক্লাবের খেলা দেখার জন্য ফুটবল স্টেডিয়ামে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন, তাহলে খেয়াল রেখে কেবলমাত্র সেন্টার সেক্টরের (কেন্দ্রীয় আসন) টিকিট কিনবেন। যদি আপনি তা না করেন এবং কোনো কারণে স্টেডিয়ামে মারামারি শুরু হয়, তাহলে সম্ভবত গুন্ডারা বা স্থানীয় পুলিশ আপনাকে এই লড়াইয়ের মধ্যে টেনে আনবে, কারণ উভয়ই ভাববে যে আপনিও এই অকস্মাৎ গন্ডগোলের অংশ।

রাশিয়ানরা খুবই বর্বরোচিতভাবে এবং দ্রতবেগে গাড়ি চালনা করে। গাড়িচালকদের মধ্যে আক্রমণাত্মক স্বভাব এবং অযোগ্যতার চূড়ান্ত মিশেল দেখা যায়। গাড়িচালনার নির্দেশিকাগুলি শিথিল এবং খুব কমই অনুসরণ করা হয়। পথচারী হিসেবে রাস্তা পার হওয়ার সময় খুব সাবধানতা অবলম্বন করুন, কারণ পথচারীদের জন্য নির্দেশিত জেব্রা ক্রসিং চিহ্ন প্রায়শই উপেক্ষা করা হয়, এমনকি পুলিশও সে ব্যাপারে উদাসীন। লাল-নীল ট্র্যাফিক বাতি যেখানে আছে, সেই জায়গাগুলিতে রাস্তা পার করা বেশ নিরাপদ কারণ সেখানে বেশিরভাগ গাড়িচালকই থামবেন। অন্য যেকোনো বড় শহরের মতোই রাস্তা পার হওয়ার আগে সর্বদা বাম এবং ডান দিকে তাকান এবং সম্ভব হলে ড্রাইভারের দিকে নজর রাখুন।

বিভিন্ন পানশালায় প্রায়শই গণ্ডোগোলের সূত্রপাত হয়। শহরের কেন্দ্রীয় অঞ্চল এবং নেভস্কি প্রসপেক্টের আশেপাশের অঞ্চলে অবশ্য সেরকম কিছু দেখা যায় না, কিন্তু শহরতলির তুলনামূলক সস্তা পানশালাগুলিতে মারামারির ঘটনা নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। তাই সেইসব স্থান এড়িয়ে যাওয়াই ভালো। ছোটখাটো গণ্ডগোলে প্রায়শই পুলিশের দেখা মেলে না। তাদের কাছে এগুলো গুরুত্বহীন, নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার, যেগুলি সময়ের অপচয় ছাড়া কিছুই নয়। আপনি যদি পুলিশকে এই মারামারির ঘটনা জানাতে চান, তাহলে তারা হয়তো হেসে উড়িয়ে দেবে।

শহরের আরেকটি বিপজ্জনক দিক হল পানশালাগুলির প্রতারণা চক্র। প্রায়শই সেখানে আগমনকারী কোনো পুরুষকে নেশার বস্তু খাইয়ে, তাদের থেকে লুটপাট করা হয়। তাদের অভিযোগ অনুসারে, এইসব প্রতারণা সাধারণত এমন কোনো মহিলা করে থাকে যাদের সঙ্গে কোনো না কোনো অনলাইন গণমাধ্যমে বা রাস্তায় আলাপ হয়েছিল। মূলত সেইসব পানশালাগুলি উপেক্ষা করুন যেগুলির অস্তিত্ব গোপনে রাখা আছে এবং যেখানে প্রবেশ করতে হলে অনেক জটিলতার সম্মুখীন হতে হবে। এই প্রতারণা চক্রের একটি সুস্পষ্ট নকশা আছে। মূলত কোনো অপরিচিতা মহিলা আপনার কাছে আসবে এবং আপনাকে তার সাথে একত্রে মদ্যপান করার আহ্বান জানাবে এবং তারা সেই পানীয়ের জন্য অর্থ প্রদান করারও প্রস্তাব দেবে। এভাবে তারা আপনার বিশ্বাস অর্জন করে অন্য একটি পানশালায় নিয়ে যেতে চাইবে। তারা ফোনে এক বন্ধুর সাথে কথা বলার ভান করবে এবং আপনাকে জানাবে যে আপনি যে ক্লাবে যেতে ইচ্ছুক তা সেই মুহূর্তে বন্ধ। তাই তারা আপনাকে বুঝিয়ে এমন একটি পানশালায় নিয়ে যাবে যেখানে আপনার সাথে প্রতারণা করার সুবিধা হবে। সেখানে আপনাকে খাদ্যতালিকা না দেখিয়েই পানীয় এবং খাবার পরিবেশন করা হবে এবং তারপরে তারা আপনার কাছ থেকে হাস্যকরভাবে টাকা আদায় করবে। পুলিশকে ফোন করা অর্থহীন, কারণ তারা কোনোভাবেই আপনাকে সাহায্য করবে না।

পর্যটকদের জন্য ফাঁদ

[সম্পাদনা]

শহরে সর্বত্র উপলব্ধ জিপসি ক্যাবের গাড়িতে চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ। প্রবাসী এবং পর্যটকদের সমাগম হয় এমন পানশালা/ক্লাবের কাছে কখনও জিপসি ক্যাব রাখবেন না।

রাস্তার ভিখারী বাচ্চা ছেলেমেয়েরা চুরি করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করে। তারা অকারণ ঝামেলা করে এবং আপনাকে ভিক্ষা দেওয়ার জন্য জোরাজুরি করতে পারে। এসময় যেমন স্থানীয় রাশিয়ান ব্যক্তিরা যে পন্থা অবলম্বন করেন, আপনিও তাই করুন। তাদেরকে সরাসরি না বলে দিন, দরকারে উপেক্ষা করুন এবং চলে যান। যদি তারা আপনার গায়ে হাত দেওয়ার চেষ্টা করে, তাহলে তাদের দূরে ঠেলে সরিয়ে দিন।

সেন্ট পিটার্সবার্গে ভ্রমণ করার সময় সমকামী পর্যটকদের অত্যন্ত সতর্কতার সাথে চলাফেরা করা উচিত, কারণ প্রায়ই তাদের উপর আক্রমণের ঘটনা ঘটে। অনেক রাশিয়ান মানুষ সমকামিতার প্রকাশ্য প্রদর্শনকে স্পষ্টভাবে অবজ্ঞার চোখে দেখে। তাদের প্রতি পরামর্শ, যেন তারা প্রকাশ্যে নিজেদের যৌনতা প্রদর্শন না করে।

সামগ্রিকভাবে সাবধানতা বজায় রেখে চলুন। আপনি যদি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং/অথবা পশ্চিম ইউরোপে বসবাস করতে অভ্যস্ত হন, তাহলে সেন্ট পিটার্সবার্গ এবং পূর্ব ইউরোপের যেকোন স্থানের পরিবেশ আপনার কাছে অপরিচিত এবং মাঝে মাঝে কিছুটা ভীতিকরও মনে হতে পারে। তবে রাশিয়ানরা সাধারণত বন্ধুত্বপূর্ণ এবং বিদেশীদের প্রতি আগ্রহী। আপনি যদি অকারণ ঝুঁকি নিয়ে নিজেকে ক্ষতির মুখে না ফেলেন, তবে আপনার কিছুই হওয়া উচিত নয়। আপনি যদি তাদের ব্যাপারে নাক না গলান, তাহলে তারাও আপনার সম্পর্কে চিন্তা করে না এবং একটি দুর্দান্ত ছুটি কাটানোর পথে আর কোনো বাধা থাকবে না।

প্রাকৃতিক বিপর্যয়

[সম্পাদনা]

অন্য একটি সমস্যা যা আপনার ভ্রমণকে প্রভাবিত করতে পারে, তা হল সেন্ট পিটার্সবার্গের শীতকালীন আবহাওয়ার অনিবার্য প্রভাব। শহরের রাস্তা থেকে তুষার ও বরফ সঠিকভাবে পরিষ্কার করা না হলে দৈনন্দিন জীবনে বড় সমস্যা দেখা দিতে পারে। তুষারাচ্ছন্ন শীতকালে বাড়ির ছাদ থেকে বরফ খসে পড়তে পারে, তাই সে ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করা হয়। চলাফেরার সময় পথচারীদের রাস্তায় বরফের দিকে বিশেষ মনোযোগ দেওয়া উচিত। মার্বেলের উপর তুষার পড়লে তা অত্যন্ত পিচ্ছিল হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় ছোট ছোট পদক্ষেপ ফেলে হাঁটুন এবং অতি অবশ্যই আপনার পায়ের দিকে নজর রাখুন!

শহরের ইতিহাসে ঘাটলে দেখা যাবে যে সেন্ট পিটার্সবার্গে প্রায়শই বন্যা হয়েছে এবং কখনও কখনও তা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। তবে বন্যা প্রতিরোধের জন্য বাঁধের নির্মাণের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে ভয়াবহ বন্যা আবার হওয়ার সম্ভাবনা কম।

শীতকালে রাস্তায় জমে থাকা তুষার ও বরফ ঠিকমতো পরিষ্কার হয় না, যা এই শহরের একটি বড় সমস্যা। তুষারময় শীতকালে ছাদ থেকে বরফ পড়ার ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত এবং রাস্তায় চলাফেরার সময় পথচারীদের রাস্তার বরফের দিকে বিশেষ মনোযোগ দেওয়া উচিত।

সুস্থ থাকুন

[সম্পাদনা]

নীচে তালিকাভুক্ত ব্যক্তিগত হাসপাতালগুলোতে ইংরেজি-ভাষী রুশ চিকিৎসক রয়েছেন (যদিও হাসপাতালের অন্যান্য কর্মীদের মধ্যে বিদেশি কর্মী খুব কম, থাকলেও অল্প)। প্রদত্ত সেবা এবং বিমা নীতির শর্ত অনুযায়ী, এই হাসপাতালগুলো ইউরোপীয় ও আমেরিকান মেডিকেল ইনস্যুরেন্স কোম্পানির সঙ্গে একযোগে আপনার চিকিৎসার খরচ সংক্রান্ত ব্যাপারে সহায়তা করতে সক্ষম।

  • 10 আমেরিকান মেডিকেল ক্লিনিক, ময়কা বাঁধ ৭৮ (সেন্ট আইজ্যাক স্কোয়ারের ঠিক পশ্চিমে, : অ্যাডমিরালটেইস্কায়া বা : সদোভায়া), +৭ ৮১২ ৭৪০ ২০৯০, ফ্যাক্স: +৭ ৮১২ ৩১০ ৪৬৬৪, ইমেইল: ২৪ ঘন্টা দন্তচিকিৎসা ও শিশুচিকিৎসা বিভাগ আছে। চিকিৎসাগত পরামর্শের জন্য মূল্য ২৭০০ руб
  • 11 ইউরোমেড, সুভোরোভস্কি প্রসপেক্ট (সুভোরোভস্কি প্র.) ৬০ (: চেরনিশেভস্কায়া থেকে তুলস্কায়া উলিৎসা স্টপ পর্যন্ত : ২২, ২২এ, ১৩৬), +৭ ৮১২ ৩২৭ ০৩০১, ইমেইল: ২৪ ঘণ্টা এই চিকিৎসাকেন্দ্রটিতে একাধিক রোগ বিষয়ক চিকিৎসা উপলব্ধ। আন্তর্জাতিক মান ও চুক্তি অনুসারে পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়। এদের নিজস্ব পরীক্ষাগার ও ওষুধপত্রের দোকান রয়েছে। আরামদায়ক পাঁচতারা হোটেলের ন্যায় সুবিধাযুক্ত কক্ষ এবং অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা উপলব্ধ। ইংরেজি-ভাষী কর্মীরা সরাসরি ইনস্যুরেন্স সংক্রান্ত এবং রোগীর জন্য প্রশাসনিক সহায়তা (আবাসন, ভিসা, স্থানান্তর, চিকিৎসা সরিয়ে নেওয়া) প্রদান করেন।
  • 12 মেডসি, মারাতা স্ট্রিট (উলিৎসা মারাতা) ৬ (: মায়াকোভস্কায়া), +৭ ৮১২ ৩৩৬ ৩৩৩৩ ২৪ ঘণ্টা দন্তচিকিৎসা, শিশুচিকিৎসা এবং অন্যান্য সেবা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। পরামর্শের মূল্য ২৭০০–১৩৮০০ руб

শহরের জল সরবরাহ ব্যবস্থা আদর্শ নয়, কারণ অনেক পুরনো পাইপলাইনের কারণে জলে ভারী ধাতুর পরিমাণ বেশি থাকে, ফলে জল শতভাগ বিশুদ্ধ নয়। অনেক স্থানীয় বাসিন্দা নলকূপের জল ফুটিয়ে বা ছেঁকে ব্যবহার করেন। আপনি যদি জলের গুণমান নিয়ে সংবেদনশীল হন, তাহলে বোতলজাত জল কেনাই ভালো বিকল্প। তবে এই জল জীবাণুমুক্ত, তাই দাঁত ব্রাশ করার জন্য নিরাপদ, শুধু পান করার জন্য উপযুক্ত নয়। ঠান্ডা জল গরম জলের তুলনায় বেশি পরিষ্কার বলে বিবেচিত হয়। কিছু আবাসিক স্থানে দীর্ঘ সময় ধরে গরম পানির অভাব থাকতে পারে।

শহরে অনেক গন শৌচাগার রয়েছে, যেগুলি সামান্য মূল্যে ব্যাবহার করা যায়। কিন্তু সেখানে টয়লেট পেপার সবসময় পাওয়া যায় না। তবে অনেক ক্যান্টিন, রেস্তোরাঁ ও হোটেল পর্যটকদের তাদের বাথরুম ব্যবহার করতে দেন। আপনি যদি তাদের গ্রাহক না ও হন তাহলেও তারা আপনাকে বাথরুম ব্যাবহার করতে দেন।

মোকাবেলা

[সম্পাদনা]

সেন্ট পিটার্সবার্গে গ্রীষ্মকালে, বিশেষ করে জুন মাসে, মশার উপদ্রব বেশ তীব্র হয়। শহরের আশেপাশের জলাভূমি অঞ্চল মশার জন্য আদর্শ বাসস্থান। যদি আপনি কোন সস্তার আবাসনে থাকেন, যেখানে মশা প্রতিরোধের ব্যবস্থা কম, তাহলে রাতের ঘুমে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। শহরের কেন্দ্রস্থলে এই সমস্যা তুলনামূলকভাবে কম, কিন্তু শহরের প্রান্তবর্তী এলাকায় মশার সংখ্যা অনেক বেশি হতে পারে। তবে মশা নিয়ে সেভাবে চিন্তার কিছু নেই কারন এরা বিপজ্জনক নয়, কিন্তু অত্যন্ত শুধু বিরক্তিকর।

দূতাবাস এবং ভিসা কেন্দ্র

[সম্পাদনা]
  • Angola (পতাকা) 13 অ্যাঙ্গোলা (সম্মানসূচক, অ্যাঙ্গোলার পোচ্যোৎনয়ে কনস্যুলস্তভো (সম্মানসূচক দূতাবাস কেন্দ্র)), শপালেরনায়া স্ট্রিট (শপালেরনায়া উলিৎসা), ৩৬, অফিস ৩২৪ (: চেরনিশেভস্কায়া, ০.৫ কিমি দক্ষিণে, প্রবেশ পথ চেরনিশেভস্কোগো প্রসপেক্ট থেকে), +৭ ৮১২ ২৭২-০৯৯৪, ফ্যাক্স: +৭ ৮১২ ২৭২-০৯৯৪ সোম–শুক্র ০৯:০০–১৭:৩০
  • Armenia (পতাকা) 14 আর্মেনিয়া (আর্মেনিয়ার সাধারন দূতাবাস কেন্দ্র, (আর্মেনিয়ার সাধারন দূতাবাস কেন্দ্র), (আর্মেনিয়ার প্রধান দূতাবাস কেন্দ্র)), ডেকাব্রিস্তভ স্ট্রিট (উলিৎসা ডেকাব্রিস্তভ), ২২, অ্যাপার্টমেন্ট ১৩ (: সেন্নায়া প্লোশচাদ 'সেন্নায়া প্লোশচাদ'), +৭ ৮১২ ৫৭১-৭২৩৬, ফ্যাক্স: +৭ ৮১২ ৭১০-৬৬২০, ইমেইল: মঙ্গল–শুক্র ১০:০০–১৮:০০
  • Australia (পতাকা) 15 অস্ট্রেলিয়া (সম্মানসূচক দূতাবাস কেন্দ্র), ময়কা স্ট্রিট ১১ (: নেভস্কি প্রসপেক্ট, ০.৯ কিমি দক্ষিণে), +৭ ৯৬৪ ৩৩৩ ৭৫৭২, +৭ ৮১২ ৩১৫ ১১০০, ফ্যাক্স: +৭ (৮১২) ৩২৫ ৭৩৩৩;, ইমেইল: সোম–শুক্র ০৯:০০–১৮:০০ সম্মানসূচক কনসাল: নদী ময়কার বাঁধ (নাবেরেজনায়া রেকি ময়কি), ১১ অথবা ১৫; সম্পর্ক সংক্রান্ত প্রতারণা
  • Austria (পতাকা) 16 অস্ট্রিয়া, নেভস্কি প্রসপেক্ট, ৬৮ (: চেরনিশেভস্কায়া), +৭ ৮১২ ২৭৫-০৫০২, +৭ ৮১২ ২৭৫-০৪৯৬, +৭ ৮১২ ২৭২-৪১১৭, ফ্যাক্স: +৭ ৮১২ ২৭৫-১১৭০, ইমেইল: সোম–শুক্র ০৯:০০–১৩:০০
  • Azerbaijan (পতাকা) 17 আজারবাইজান (আজারবাইজানের সাধারন দূতাবাস কেন্দ্র, আজারবাইজান প্রজাতন্ত্রের সেন্ট পিটার্সবার্গ শহরে অবস্থিত প্রধান দূতাবাস কেন্দ্র), ২য় সোভিয়েতস্কায়া স্ট্রিট, ২৭এ (: প্লোশচাদ ভসস্তানিয়া 'প্লোশচাদ ভসস্তানিয়া', ০.৬ কিমি পশ্চিমে), +৭ ৮১২ ৭১৭-৩৯৯১, ফ্যাক্স: +৭ ৮১২ ৭১৭-৩৯৮৬ সোম, বুধ, শুক্র ১০:০০–১৪:০০
  • Bangladesh (পতাকা) 18 বাংলাদেশ (সম্মানসূচক দূতাবাস কেন্দ্র, বাংলাদেশের অনারারি দূতাবাস কেন্দ্র), মালায়া কোন্যুশেনায়া স্ট্রিট (ул. Малая Конюшенная), ১–৩, বিল্ডিং ‘এ’, +৭ ৯৯৯ ০০৪-৬৭-০৬, ইমেইল: সোম–শুক্র ১০:০০–১৮:০০
  • Belarus (পতাকা) 19 বেলারুশ (বেলারুশ দূতাবাসের শাখা), বনচ-ব্রুয়েভিচা স্ট্রিট, ৩এ (: চেরনিশেভস্কায়া, ১.৭ কিমি পশ্চিমে; এরপর : ২২, ২২এ, ১৩৬), +৭ ৮১২ ২৭৪-৭২১২, +৭ ৮১২ ২৭৫-৮১৩০, ফ্যাক্স: +৭ ৮১২ ২৭৩-৪১৬৪, ইমেইল: সোম–শুক্র ১০:০০–১২:০০ এবং ১৪:০০–১৫:০০
  • Bulgaria (পতাকা) 20 বুলগেরিয়া, সাপিয়র্নি গলিপথ, ১১ (: চেরনিশেভস্কায়া), +৭ ৮১২ ২৭৫ ৭৫ ৩৭ (সাধারণ), +৭ ৮১২ ২৭৫ ৩১ ৩৪ (দূতাবাস কেন্দ্র), ফ্যাক্স: +৭ ৮১২ ২৭২-৫৭১৮, ইমেইল: সোম–শুক্র ০৯:০০–১৬:০০
  • Chile (পতাকা) 21 চিলি (সম্মানসূচক দূতাবাস কেন্দ্র), কনস্তান্তিনোভস্কি অ্যাভিনিউ, ২২এ অথবা ৯ম লাইন, ৩৪ (ভাসিলিয়েভস্কি দ্বীপ), +৭ ৮১২ ৭০২-১২৮০, ফ্যাক্স: +৭ ৮১২ ৭০২-১২৭১
  • China (পতাকা) 22 চীন (চীনের সাধারন দূতাবাস কেন্দ্র), গ্রিবোয়েদোভা খালের নদীতীর, ১৩৪ (: সেনায়া প্লোশচাদ, ১.৫ কিমি উত্তর-পূর্বে; : ট্রাম ১৬—স্টপ: সাদোভায়া স্ট্রিট / লেরমন্তোভস্কি প্রসপেক্ট), +৭ ৮১২ ৭১৪-৭৬৭০, +৭ ৮১২ ৭১৩-৭৬০৫, ফ্যাক্স: +৭ ৮১২ ৭১৪-৭৯৫৮
  • Cyprus (পতাকা) 23 সাইপ্রাস (সাইপ্রাসের সাধারন দূতাবাস কেন্দ্র), ফুরশটাতস্কায়া স্ট্রিট, ২৭ (: চেরনিশেভস্কায়া), +৭ ৮১২ ৩৮০-৭৮০০, ফ্যাক্স: +৭ ৮১২ ৩৮০-৭৯০০, ইমেইল: সোম–শুক্র ১০:০০–১৭:০০
  • France (পতাকা) 24 ফ্রান্স (সেন্ট পিটার্সবার্গে ফ্রান্সের সাধারন দূতাবাস কেন্দ্র), নেভস্কি প্রসপেক্ট, ১২, ৫ম তলা (: নেভস্কি প্রসপেক্ট অথবা : অ্যাডমিরালটেইস্কায়া), +৭ ৮১২ ৩৩২-২২৭০, ফ্যাক্স: +৭ ৮১২ ৩৩২-২২৯০, ইমেইল: সোম ০৯:৩০–১৩:০০; বুধ ১৪:০০–১৭:৩০
  • Germany (পতাকা) 25 জার্মানি (জার্মান দূতাবাস, সেন্ট পিটার্সবার্গে সাধারন দূতাবাস কেন্দ্র), ফুরশটাতস্কায়া স্ট্রিট, ৩৯ (: চেরনিশেভস্কায়া), +৭ ৮১২ ৩২০-২৪০০, ফ্যাক্স: +৭ ৮১২ ৩২৭ ৩১১৭, ইমেইল: ১০:০০–১২:০০
  • Greece (পতাকা) 26 গ্রিস (গ্রিসের সাধারন দূতাবাস কেন্দ্র, সেন্ট পিটার্সবার্গের জেনিকো প্রোক্সেনিও), চেরনিশেভস্কোগো প্রসপেক্ট, ১৭ (: চেরনিশেভস্কায়া), +৭ ৮১২ ৩৩৪-৩৫৮৬, +৭ ৯২১ ৯৪২৫৯৩৪ (জরুরি), ফ্যাক্স: +৭ ৮১২ ২৭২৮৭৪৭, ইমেইল: সোম–শুক্র ১০:০০–১৩:০০
  • Guatemala (পতাকা) 27 গুয়াতেমালা (সম্মানসূচক দূতাবাস কেন্দ্র), ইগোরোভা স্ট্রিট, ১৮ (: টেকনোলজিচেস্কি ইনস্টিটিউট, ০.৫ কিমি)।
  • Hungary (পতাকা) 28 হাঙ্গেরি (হাঙ্গেরির সাধারন দূতাবাস কেন্দ্র, Magyarország Főkonzulátusa), মারাতা স্ট্রিট, ১৫ (: দস্তয়েভস্কায়া, : ভ্লাদিমিরস্কায়া ০.৪ কিমি পশ্চিমে, : মায়াকোভস্কায়া ০.৪ কিমি পূর্বে, : প্লোশচাদ ভসস্তানিয়া ০.৪ কিমি উত্তর-পূর্বে), +৭ ৮১২ ৩১২-৬৪৫৮, +৭ (৮১২) ৩১২-৬৭৫৩, +৭ (৮১২) ৩১২-৯২০০, +৭ (৮১২) ৩১৪-৫৮০৫ (ভিসা সংক্রান্ত), ফ্যাক্স: +৭ ৪৯৫ ৩১২-৬৪৩২, ইমেইল: মঙ্গল, বুধ, শুক্র ১০:০০–১২:০০
  • Iceland (পতাকা) 29 আইসল্যান্ড (সম্মানসূচক দূতাবাস কেন্দ্র), বোলশায়া রাজনোচিন্নায়া স্ট্রিট, ১৬ (: লোমোনোসোভস্কায়া, ১.৫ কিমি দক্ষিণ-পশ্চিমে; : উলিৎসা দিবেঙ্কো, ২.১ কিমি উত্তর-পূর্বে; ট্রাম ৭, ২৭—স্টপ: উলিৎসা তেলমানা), +৭ ৮১২ ৩২৬-৮৫৮০, +৭ ৮১২ ৩২৬-৮৫৮৫, ফ্যাক্স: +৭ ৪৯৫ ৩২৬-৮৫৮৮, ইমেইল: সোম–শুক্র ০৯:০০–১৮:০০
  • India (পতাকা) 30 ভারত, রিলিয়েভা স্ট্রিট, ৩৫ (: চেরনিশেভস্কায়া), +৭ ৮১২ ৬৪০৭২২২, +৭ ৯১১ ৭৭৭৬৯৪৮ (জরুরি যোগাযোগ নম্বর), ফ্যাক্স: +৭ ৮১২ ৬৪০৭২২১, ইমেইল: সোম–শুক্র ০৯:৩০–১৮:০০
  • Indonesia (পতাকা) 31 ইন্দোনেশিয়া (সম্মানসূচক দূতাবাস কেন্দ্র), কামেন্নোস্ত্রোভস্কি প্রসপেক্ট, ১৫ (: গোরকোভস্কায়া, ০.৬ কিমি দক্ষিণে অথবা : পেত্রোগ্রাদস্কায়া, ০.৭ কিমি উত্তর-পশ্চিমে), +৭ ৮১২ ২৩৭-০৮৮৩, ফ্যাক্স: +৭ ৮১২ ২৩৭-০৮৮৩ সোম, মঙ্গল, বুধ, শুক্র ১০:০০–১৬:০০
  • Ireland (পতাকা) আয়ারল্যান্ড (সম্মানসূচক দূতাবাস কেন্দ্র), বোলশায়া রাজনোচিন্নায়া, ১৬এ, +৭ ৪৯৯ ২৭১ ৩৪০৮, ইমেইল:
  • Italy (পতাকা) 32 ইতালি (সেন্ট পিটার্সবার্গে ইতালির সাধারন দূতাবাস কেন্দ্র), থিয়েটার স্কয়ার, ১০ (: সেনায়া প্লোশচাদ, ০.৯ কিমি পূর্বে; : বাস ২, ৩, ৬, ২২, ২৭, ৭০, ১০০), +৭ ৮১২ ৬৭৯ ৪৫ ৮১, ফ্যাক্স: +৭ ৮১২ ৩১২-২৮৯৬, ইমেইল: সোম–শুক্র ০৯:০০–১৩:০০
  • Japan (পতাকা) 33 জাপান (সেন্ট পিটার্সবার্গে জাপানের সাধারন দূতাবাস কেন্দ্র), ময়কা নদীর নদীতীর, ২৯ (: অ্যাডমিরালটেইস্কায়া, ০.৭ কিমি দক্ষিণ-পশ্চিমে; : নেভস্কি প্রসপেক্ট, ০.৯ কিমি দক্ষিণ-পূর্বে), +৭ ৮১২ ৩১৪-১৪৩৪, ফ্যাক্স: +৭ ৮১২ ৭১০-৬৯৭০, ইমেইল: সোম–শুক্র ০৯:০০–১৮:০০ – ভবনটি ১৮৫১ সালে আলেক্সেই লোবানোভ-রোস্তোভস্কির জন্য নির্মিত হয়েছিল; ১৮৬৮ ও ১৮৭৫ সালে পুনর্গঠন ও সম্প্রসারণ করা হয়। জাপানের মন্ত্রিসভা একটি বিলের ভিত্তিতে লেনিনগ্রাদে (বর্তমানে সেন্ট পিটার্সবার্গ) একটি সাধারন দূতাবাস কেন্দ্র খোলার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
  • Kazakhstan (পতাকা) 34 কাজাখস্তান (সম্মানসূচক দূতাবাস কেন্দ্র), ভিলেনস্কি গলিপথ, ১৫? অথবা গ্যালেরনায়া স্ট্রিট, ১১ (: চেরনিশেভস্কায়া, ০.৫ কিমি উত্তর-পশ্চিমে), +৭ ৮১২ ৩১২-০৯৮৭, ইমেইল:
  • Kyrgyzstan (পতাকা) 35 কিরগিজস্তান (সম্মানসূচক দূতাবাস কেন্দ্র), সুভোরোভস্কি প্রসপেক্ট, ৪০, অফিস ১৮? অথবা নেভস্কি প্রসপেক্ট, ১৩২? (: প্লোশচাদ ভসস্তানিয়া), +৭ ৮১২ ৪০০-২২৮০
  • Luxembourg (পতাকা) 36 লুক্সেমবার্গ (সম্মানসূচক দূতাবাস কেন্দ্র), নেভস্কি প্রসপেক্ট, ৫৮? অথবা থিয়েটার স্কয়ার, ১?, +৭ ৮১২ ৭১৮-৩৪৫০, +৭ ৮১২ ৭১৮-৩৪৫১, +৭ ৮১২ ৩১১-১২১৯, ফ্যাক্স: +৭ ৮১২ ৩২৬ ২১৯০, ইমেইল: সোম–শুক্র ১০:০০–১৮:০০
  • Netherlands (পতাকা) 37 নেদারল্যান্ডস (সেন্ট পিটার্সবার্গে নেদারল্যান্ডসের সাধারন দূতাবাস কেন্দ্র), ময়কা নদীর নদীতীর, ১১ (: নেভস্কি প্রসপেক্ট), +৭ ৮১২ ৩৩৪-০২০০, ফ্যাক্স: +৭ ৮১২ ৩৩৪-০২২৫, ইমেইল: সোম–শুক্র ১০:০০–১২:৩০ একই ভবনে অস্ট্রেলিয়ার দূতাবাস কেন্দ্রও রয়েছে
  • Norway (পতাকা) 38 নরওয়ে (সেন্ট পিটার্সবার্গে নরওয়ের সাধারন দূতাবাস কেন্দ্র), লিগোভস্কি প্রসপেক্ট, ১৩–১৫ (: নেভস্কি প্রসপেক্ট; : বাস ৩, ৭, ২২, ২৪, ২৭, ১৯১; : ট্রলি ১, ৫, ৭, ১০, ১১, ২২), +৭ ৮১২ ৬১২ ৪১ ০০, ফ্যাক্স: +৭ ৮১২ ৬১২ ৪১ ০১, ইমেইল: সোম–শুক্র ১০:০০–১২:০০
  • Pakistan (পতাকা) 39 পাকিস্তান (সম্মানসূচক দূতাবাস কেন্দ্র), ভাইবর্গস্কায়া নদীতীর, প্রায় ২৭ (: ভাইবর্গস্কায়া, ০.৭ কিমি উত্তর-পূর্বে), +৭ ৮১২ ৩৩৬-৯২৩৯, ফ্যাক্স: +৭ ৮১২ ৩৩৬-৯২৪০ সোম–শুক্র ১০:০০–১৭:০০
  • Peru (পতাকা) 40 পেরু (সম্মানসূচক দূতাবাস কেন্দ্র), স্মোলনি প্রসপেক্ট, ৬ (: চেরনিশেভস্কায়া, ১.৯ কিমি পশ্চিমে; : বাস ২২, ২২а, ১৩৬; অথবা : ট্রলি ৫, ১১, ১৫—স্টপ: তুলস্কায়া স্ট্রিট / বঞ্চ-ব্রুয়েভিচা স্ট্রিট)।
  • Philippines (পতাকা) 41 ফিলিপাইন (সম্মানসূচক সাধারন দূতাবাস কেন্দ্র), বোলশয় প্রসপেক্ট, ১০৩; ভাসিলিয়েভস্কি দ্বীপ (: প্রিমোরস্কায়া, ২ কিমি), +৭ ৮১২ ৩২৬-১৩৫৫, ফ্যাক্স: +৭ ৮১২ ৩২৬-১৩৫৭
  • Poland (পতাকা) 42 পোল্যান্ড (সেন্ট পিটার্সবার্গে পোল্যান্ডের সাধারন দূতাবাস কেন্দ্র), ৫ম সোভিয়েতস্কায়া স্ট্রিট, ১২ (: প্লোশচাদ ভসস্তানিয়া, ০.৭ কিমি দক্ষিণ-পশ্চিমে), +৭ ৮১২ ৩৩ ৬৩ ১৪২, ফ্যাক্স: +৭ ৮১২ ২৭৪-৪৩১৮, ইমেইল: সোম–শুক্র ১০:০০–১৩:০০ ২০২৫ সালের ১০ জানুয়ারির মধ্যে বন্ধ হয়ে যাবে
  • Romania (পতাকা) 43 রোমানিয়া (রোমানিয়ার সাধারন দূতাবাস কেন্দ্র), গোরোখোভায়া স্ট্রিট, ৪ (: নেভস্কি প্রসপেক্ট), +৭ ৮১২ ৩১২-৬১৪১, ইমেইল: সোম, মঙ্গল, বৃহস্পতিবার, শুক্র ১১:০০–১৬:০০
  • Senegal (পতাকা) 44 সেনেগাল (সম্মানসূচক দূতাবাস কেন্দ্র), এনার্গেটিকোভ প্রসপেক্ট, ৬ (: লাদোজস্কায়া, ০.৩ কিমি দক্ষিণে), +৭ ৮১২ ৫২৮-০৭৭০, ফ্যাক্স: +৭ ৮১২ ৫২৮-০৭৭০, ইমেইল:
  • Slovakia (পতাকা) 45 স্লোভাকিয়া (স্লোভাকিয়ার সাধারন দূতাবাস কেন্দ্র), অরবেলি স্ট্রিট, ২১, বিল্ডিং ২, +৭ ৯২৯ ১৫৭ ৯৫০৩, ইমেইল: সোম–শুক্র ১০:০০–১৫:০০
  • South Korea (পতাকা) 46 দক্ষিণ কোরিয়া (সেন্ট পিটার্সবার্গে দক্ষিণ কোরিয়ার সাধারন দূতাবাস কেন্দ্র), নেকরাসোভা স্ট্রিট, ৩২-এ (: চেরনিশেভস্কায়া, ০.৭ কিমি উত্তর), +৭ ৮১২ ৪৪৮-১৯০৯
  • Spain (পতাকা) 47 স্পেন (সেন্ট পিটার্সবার্গে স্পেনের সাধারন দূতাবাস কেন্দ্র), ফুরশটাতস্কায়া স্ট্রিট, ৯ (: চেরনিশেভস্কায়া), +৭ ৮১২ ৩২৭-৩৬৩৪, ফ্যাক্স: +৭ ৮১২ ৩২৭-৩৬৩৪, ইমেইল: সোম–শুক্র ১০:০০–১৭:০০
  • Sri Lanka (পতাকা) 48 শ্রীলঙ্কা (সম্মানসূচক দূতাবাস কেন্দ্র), ১৭তম লাইন, ৬০? (ভাসিলিয়েভস্কি দ্বীপ), +৭ ৮১২ ৩০৫-০১৮৫ সোম–শুক্র ১১:০০–১৮:০০
  • Switzerland (পতাকা) 49 সুইজারল্যান্ড (সুইজারল্যান্ডের সাধারন দূতাবাস কেন্দ্র), চেরনিশেভস্কোগো প্রসপেক্ট, ১৭ (ভাসিলিয়েভস্কি দ্বীপ, : চেরনিশেভস্কায়া), +৭ ৮১২ ৩২৭-০৮১৭, ফ্যাক্স: +৭ ৮১২ ৩২৭-০৮২৯, ইমেইল: সোম–বৃহস্পতিবার ০৯:০০–১২:০০
  • Tajikistan (পতাকা) 50 তাজিকিস্তান (সম্মানসূচক দূতাবাস কেন্দ্র), ফনারনি গলিপথ, ৩ (: সেনায়া প্লোশচাদ, ০.৭ কিমি পূর্বে)।
  • Thailand (পতাকা) 51 থাইল্যান্ড (সম্মানসূচক দূতাবাস কেন্দ্র), বোলশয় প্রসপেক্ট, ৯ (ভাসিলিয়েভস্কি দ্বীপ, : ভাসিলিওস্ত্রোভস্কায়া), +৭ ৮১২ ৩২৫-৬২৭১, ফ্যাক্স: +৭ ৮১২ ৩২৫-৬৩১৩ সোম–শুক্র ১১:০০–১৩:০০ +7 812 325-6371, 213-2538

পরবর্তী গন্তব্য

[সম্পাদনা]
নেভা নদীর ডান তীর থেকে দেখা ওরেশেক ফোর্টেসের দৃশ্য।

এক দিনের ভ্রমণ

[সম্পাদনা]

সেন্ট পিটার্সবার্গ থেকে একদিনের মধ্যে কাছাকাছি জায়গা থেকে ঘুড়ে আসার জন্য আপনি কোন ভ্রমণ সংস্থার দ্বারা আয়োজিত ভ্রমণসূচীর অংশ হতে পারেন অথবা নিজে থেকেই পরিকল্পনা করতে পারেন। একদিনের ভ্রমণে আপনি দেখে নিতে পারেন পিটারহফ, ক্রোনশটাড্ট এবং লোমোনোসভ। এই তিনটি জায়গা মূলত সেন্ট পিটার্সবার্গের পশ্চিমে অবস্থিত এবং নৌকযোগে সহজেই পৌছানো যায়।

  • গাচিনা — সেন্ট পিটার্সবার্গ থেকে ৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত একটি সুন্দর গ্রাম যেখানে অনেক বিশাল প্রাসাদ এবং উদ্যান রয়েছে।
  • ক্রোনস্টাড্টলোমোনোসভ থেকে ২০ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত কোটলিন দ্বীপের এই পুরাতন সমুদ্রবন্দর শহর। আঠারো শতকের গোড়ার দিকের এখানে রাশিয়ান সেনার প্রধান নৌঘাঁটি ছিল। এখান থেকে ৪০০ রুবেল ভাড়ার বিনিময়ে(একমুখী যাত্রার ভাড়া) আপনি নৌকাযোগে হার্মিটেজে ফিরে যেতে পারেন।
  • লোমোনোসভ (ওরানিয়েনবাউম) — মাইকেল লোমোনোসভের নির্মিত সম্মানে সংগ্রহশালা ও তৎসংলগ্ন উদ্যান। এ১২১ মহাসড়ক ধরে পিটারহফ থেকে ৯ কিমি পশ্চিমে যাত্রা করে আপনি এখানে পৌছাতে পারবেন। ট্রেন স্টেশনের নাম ওরানিয়েনবাউম (জার্মান ভাষায় যার অর্থ 'কমলা গাছ')। আপনি ক্রোনস্ট্যাড পরিদর্শন করে ৪০০ রুবেল ভাড়ার বিনিময়ে(একমুখী যাত্রার ভাড়া) নৌকাযোগে হার্মিটেজ ফিরে যেতে পারেন। পিটারহফ থেকে ট্রেন ধরে আসার তুলনায় এই নৌকাযাত্রা একটি সস্তা বিকল্প পথ।
  • শ্লিসেলবার্গ /ওরেশেক ফোর্টেস — সেন্ট পিটার্সবার্গ থেকে ৫০ কিলোমিটার পূর্বে নেভা নদীর ওরেশেক/ওরেখোভি দ্বীপে অবস্থিত একটি রাশিয়ান দুর্গ। এটি একটি ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান। মধ্যযুগে এখানে নোটেবার্গ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল।
  • পাভলভস্ক — মনোরম সবুজ উদ্যান যেখানে আপনি নিজের হাতে কাঠবিড়ালিদের খাওয়াতে পারবেন। ভিতেবস্কি স্টেশন থেকে ট্রেনে করে এখানে পৌঁছানো যায় (স্টেশনের মূল হলের পরিবর্তে, লোকাল ট্রেনের জন্য নির্ধারিত ডান পাশে থাকা ছোট হল থেকে ট্রেন ছাড়ে)। পাভলভস্ক ট্রেন স্টেশনটি পার্কের উত্তর-পশ্চিম গেটের কাছে অবস্থিত এবং সেখান থেকে পার্কের মধ্য দিয়ে দীর্ঘ ও মনোরম হাঁটা পথ ধরে প্রাসাদে পৌছানো যায়।
  • পিটারহফ — সেন্ট পিটার্সবার্গ থেকে প্রায় ৩০ কিমি দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত এই স্থান "রাশিয়ান ভার্সাই" নামে পরিচিত। এখানে ঘড়ি নির্মানসংস্থার কারখানা আছে যা "পেট্রোডভোরেটস ওয়াচ ফ্যাক্টরি - রাকেটা" নামে পরিচিত।
  • পুশকিন (সারস্কয় সেলো) — সেন্ট পিটার্সবার্গ থেকে ২৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত। এখানে সুন্দর পার্ক এবং প্রাসাদ আছে। এখানকার বিশেষ দ্রষ্টব্য জারিনা ক্যাথরিন প্রথমের জন্য নির্মিত ক্যাথরিন প্রাসাদ।
  • রেপিনো — শিল্পী ইলিয়া রেপিনের বাড়ি যা বর্তমানে একটি সংগ্রহালয়ে পরিনত হয়েছে। এর অবস্থান ফিনল্যান্ড উপসাগরের ঠিক কাছে। এই বাড়ি ছিল একাধারে তার বাসভূমি এবং কর্মক্ষেত্র। রেপিনোতে পৌঁছানোর জন্য ফিনল্যান্ডস্কি স্টেশন থেকে ইলেকট্রিচকা ট্রেন ধরুন। যাত্রার সম্যকাল প্রায় ৪৫ মিনিট এবং ভাড়া ১২০ রুবেল। স্টেশন থেকে নামার পর প্রধান রাস্তা পার হয়ে, সুপারমার্কেটের বাঁ পাশে থাকা পথ ধরে একটি রিসোর্ট কমপ্লেক্সের মধ্য দিয়ে হাঁটতে হবে। পরবর্তী বড় রাস্তায় পৌঁছে বাঁ দিকে মোড় নিয়ে প্রায় ১.৫ কিমি হাঁটলেই পৌঁছানো যাবে "পেনাটি" নামাঙ্কিত স্ংগ্রহশালার প্রবেশদ্বার পর্যন্ত। পুরো পথ হাঁটতে প্রায় ৪৫ মিনিট সময় লাগে। দর্শনার্থী না থাকলে জাদুঘর এবং প্রাঙ্গণ দুপুর তিন্তে বা তার আগে বন্ধ হয়ে যায়।
  • স্টারায়া লাডোগা — রাশিয়ার প্রথম রাজধানী হিসাবে পরিচিত। শহর থেকে চার ঘন্টা দূরে অবস্থিত একটি মনোরম ছোট্ট গ্রাম যেখানে অবিশ্বাস্য সব ঐতিহাসিক নিদর্শন রয়েছে। দর্শনীয় বস্তুর মধ্যে পাথরের ক্রেমলিন(বিশাল দুর্গপ্রাসাদ) এবং শিল্পী আন্দ্রেই রুবেলভের নিজ হাতে হাতে আঁকা গির্জার ফ্রেস্কো(দেয়াল চিত্র) বিশেষ উল্লেখযোগ্য।
  • ভিবর্গ — ভিবর্গ উপসাগরের সন্নিকটে ক্যারেলিয়ান ইস্থমাসে অবস্থিত একটি শহর। সেন্ট পিটার্সবার্গ থেকে প্রায় ১৩০ কিমি উত্তর-পশ্চিমে ও ফিনল্যান্ড সীমান্ত থেকে মাত্র ৩৮ কিমি দক্ষিণে ভিবর্গের অবস্থান। এখানেই সাইমা খাল ফিনল্যান্ড উপসাগরে মিলিত হয়। সুইডিশ আমলে এবং ১৮১২ সাল থেকে ১৯৪০ সাল পর্যন্ত ফিনল্যান্ডের অন্যতম প্রধান শহর ছিল। সুইডিশরা ১৩শ শতাব্দীতে এখানে দুর্গ নির্মান করেছিল। ১৮৯১-১৮৯৪ সালে রাশিয়ানরা সেই দুর্গের ব্যাপক পুনর্নির্মাণ করে। এখানে রয়েছে মন রেপোস,পূর্ব ইউরোপের অন্যতম বিস্তৃত ইংরেজ স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত উদ্যান। উনিশ শতকে এই উদ্যানের পরিকল্প্না হয়। শহরের কাছাকাছি রয়েছে ম্যানারহাইম লাইনের দুর্গসমূহ, যা ফিনল্যান্ড সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা হিসেবে নির্মাণ করেছিল। বর্তমানে ভিবর্গে দ্রুতগামী ট্রেনের মাধ্যমে দিনভর ভ্রমণ করা যায়, যা ইতিহাস, স্থাপত্য ও প্রকৃতির এক অনন্য মিশ্রণ উপভোগের সুযোগ করে দেয়।

রাত্রিকালীন ভ্রমণ

[সম্পাদনা]

রাশিয়া থেকে বেরিয়ে আবার ফিরে আসার পরিকল্পনা থাকলে, আপনার কাছে মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসা (দেশে একাধিকবার প্রবেশের জন্য অনুমোদিত ভিসা) থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

  • নভগোরড — সেন্ট পিটার্সবার্গ থেকে ১৮০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত একাধিক গির্জা এবং জাদুঘর দ্বারা সজ্জিত এই প্রাচীন শহরটিতে দ্রুতগতির ট্রেনের মাধ্যমে যাওয়া যায়।
  • নার্ভা, এস্তোনিয়া — সেন্ট পিটার্সবার্গ থেকে ১৬০ কিমি দক্ষিণ-পশ্চিমে নার্ভা নদীর তীরে অবস্থিত এই অঞ্চল যা রাশিয়া এবং এস্তোনিয়ার সীমান্ত হিসেবে পরিচিত। এখানে যমজ দুর্গের অবস্থান(রাশিয়ার দিকে রয়েছে ইভানগোরোদ দুর্গ, যা ১৪৯২ সালে গ্র্যান্ড ডিউক ইভান তৃতীয়্র দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয় এবং এস্তোনিয়ার দিকে রয়েছে নার্ভা দুর্গ, যা প্রথমে ডেনিশদের দ্বারা নির্মিত এবং পরে সুইডিশদের দ্বারা পুনর্গঠিত হয়।)।
  • ভোলোগদা — এই শহরটিকে রাশিয়ার উত্তরাঞ্চলের হৃদয় হিসেবে বিবেচনা করা হয় এবং এটি একটি জনপ্রিয় স্থানীয় ভ্রমণ গন্তব্য। রাতের ট্রেনে এখানে পৌঁছানো যায়, এবং সেখান থেকে আপনি মস্কো অথবা আরও উত্তরে আর্কহাঙ্গেলস্ক যেতে পারেন
  • পেত্রোজাভোৎস্ক এবং কারেলিয়া অঞ্চল — রাশিয়ার একটি জনপ্রিয় ভ্রমণ গন্তব্য। অপূর্ব প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং হোয়াইট সি দ্বীপপুঞ্জের জন্য বিখ্যাত। রাতের ট্রেন বা দ্রুতগতির ট্রেনে করে সহজেই এখানে পৌঁছানো যায়।
  • মস্কো — রাশিয়ার রাজধানী শহর। রাতের কোন ট্রেন ধরে অথবা দিনের বেলা দ্রুতগতির সাস্পান ট্রেন (প্রায় ৪ ঘণ্টা) ধরে পৌছানো যায়। এছাড়াও বিমানযোগে সহজেই পৌঁছানো যায়। এখানে সেন্ট পিটার্সবার্গের মতো অনেক দর্শনীয় স্থল আছে, তাই পর্যাপ্ত সময় নিয়ে ভ্রমণ পরিকল্পনা করুন।
This TYPE সেন্ট পিটার্সবার্গ has নির্দেশিকা অবস্থা TEXT1 TEXT2

{{#assessment:শহর|নির্দেশিকা}}

বিষয়শ্রেণী তৈরি করুন