সীতাকুণ্ড ইকো পার্ক চট্টগ্রাম শহর থেকে মাত্র ৩৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এখানে সহস্র ধারা এবং সুপ্তধারা নামে দুইটি অনিন্দ্য সুন্দর ঝর্ণা রয়েছে। এছাড়া সীতাকুণ্ড ইকো পার্কে রয়েছে অসংখ্য দুর্লভ প্রজাতির গাছ যা বৃক্ষ বিষয়ক জ্ঞান বৃদ্ধিতে সহায়ক। বোটানিক্যাল গার্ডেনে রয়েছে অর্কিড হাউস, যেখানে প্রায় ৫০ ধরনের দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রজাতির অর্কিড সংরক্ষিত রয়েছে।
পাহাড়, বৃক্ষরাজি, বন্যপ্রাণী, ঝর্ণা, পাখির কলরব ইকোপার্কটিকে আরও সমৃদ্ধ করেছে। উঁচুনিচু পাহাড়, বানর, খরগোশ এবং হনুমান সহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণীর সমাহার, আছে অর্জুন, চাপালিশ, জারুল, তুন, তেলসুর, চুন্দুল সহ আরও অনেক ফুল, ফল ও ওষধি গাছ।
প্রবেশ
[সম্পাদনা]ইকো পার্কে প্রবেশ করলে একটি বড় ডিসপ্লে চোখে পড়ে, এই ডিসপ্লেতে ইকোপার্কে আসা সমস্ত পর্যটকদের ইকো পার্ক সম্পর্কে ধারণা দেয়া আছে। সিএনজি সহ ইকো পার্কে প্রবেশ করতে ৮০/- টাকা লাগে। আর সিএনজি ছাড়া প্রবেশ করলে লাগে ২০ টাকা। সীতাকুণ্ড ইকো পার্কে চাইলে পিকনিক করতে পারা যাবে। এখানে পর্যাপ্ত খাবার পানি, রেষ্টহাউস, টয়লেট ইত্যাদির সুবিধাসহ পিকনিকের জন্য রয়েছে যাবতীয় আয়োজন।
যাতায়াত
[সম্পাদনা]সড়ক পথে ঢাকা থেকে : এস.আলম, সৌদিয়া, গ্রীনলাইন, সিল্ক লাইন, সোহাগ, বাগদাদ এক্সপ্রেস, ইউনিক ইত্যাদি পরিবহণের বিভিন্ন এসি, ননএসি বাস গুলো সায়দাবাদ বাস স্টেশন থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে ছাড়ে। সবগুলো বাসই সীতাকুণ্ডে প্রয়োজন অনুযায়ী থামে। বাসে করে ঢাকা থেকে আসলে সীতাকুন্ড বাস স্টপেজ থেকে ২ কিলোমিটার দূরে ফকিরহাট নামক জায়গা দিয়ে সীতাকুণ্ড ইকো পার্কে যতে হয়।
চট্টগ্রাম থেকে : চট্টগ্রামের মাদারবাড়ী ও কদমতলী বাস স্টেশন থেকে সীতাকুণ্ড যাবার বাসগুলো ছাড়ে। এ ছাড়া অলঙ্কার থেকে মেক্সীতে করে সীতাকুণ্ডের ফকিরহাট যাওয়া যায়।
রেলপথে ঢাকা থেকে : ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা ঢাকা মেইল ট্রেনই শুধু সীতাকুণ্ড রেলস্টেশনে থামে। ঢাকা থেকে রাত ১১টায় যাত্রা শুরু করে পরদিন সকাল ৬ টা থেকে ৭ টার মধ্যে ট্রেনটি সীতাকুণ্ডে পৌঁছায়। অন্যান্য আন্তঃ নগর ট্রেনে আসতে চাইলে ফেনী স্টেশনে নেমে সেখান থেকে ১০/১৫ টাকা অটো/রিক্সা ভাড়ায় মহিপাল বাস স্ট্যান্ড গিয়ে লোকাল বাসে ৫০-৮০টাকা ভাড়ায় সীতাকুণ্ড যেতে পারা যাবে।
সীতাকুণ্ড থেকে সারাদিনের জন্য সিএনজি ভাড়া নেয়া যায়। সেক্ষেত্রে ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা লাগতে পারে। তবে ইচ্ছা করলে পায়ে হেঁটে পার্কে ঘুরতে পারা যাবে তবে তাতে সময় বেশি লাগবে। সময় বাঁচাতে পারলে সহজেই সীতাকুণ্ড ও মিরসরাই এলাকার ঝর্ণা ও ঝিরি ট্রেইল গুলো দেখে নেওয়া যাবে।
রাত্রিযাপন
[সম্পাদনা]সীতাকুণ্ডে থাকার জন্য তেমন কোন ভালো মানের আবাসিক হোটেল নেই। সীতাকুণ্ড বাজারে কয়েকটি মাঝারি মানের আবাসিক হোটেল আছে। এছাড়া এখানে টেলি-কমিউনিকেশনের অধীনস্থ একটি ডাকবাংলো আছে। অনুমতি নিয়ে সেখানে থাকার চেষ্টা করা যায়। অতি সম্প্রতি সীতাকুণ্ড পৌরসভার ডি টি রোডে হোটেল সৌদিয়া নামে একটি আবাসিক হোটেল চালু হয়েছে। হোটেলটিতে ৮০০ থেকে ১৬০০ টাকায় কয়েক ধরণের রুম পাওয়া যায়।
চট্টগ্রামে থাকতে চাইলে সেখানে বিভিন্ন মানের হোটেল রয়েছে। এদের মধ্যে হোটেল প্যারামাউন্ট, হোটেল এশিয়ান এসআর, হোটেল সাফিনা, হোটেল নাবা ইন, হোটেল ল্যান্ডমার্ক ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
নিকটবর্তী দর্শনীয় স্থান
[সম্পাদনা]- চন্দ্রনাথ পাহাড় ও মন্দির
- গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত
- বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত
- ঝরঝরি ঝর্ণা
- কুমিরা সন্দ্বীপ ফেরী ঘাট
- মিরসরাই এর খৈয়াছড়া ঝর্ণা
- নাপিত্তাছড়া ঝর্ণা
- কমলদহ ঝর্ণা