বিষয়বস্তুতে চলুন

উইকিভ্রমণ থেকে

আফ্রিকা আয়তন ও জনসংখ্যা উভয় বিচারে বিশ্বের ২য় বৃহত্তম মহাদেশ (এশিয়ার পরেই)। পার্শ্ববর্তী দ্বীপগুলোকে গণনায় ধরে মহাদেশটির আয়তন ৩০,২২১,৫৩২ বর্গ কিলোমিটার (১১,৬৬৮,৫৯৮ বর্গমাইল)। এটি বিশ্বের মোট ভূপৃষ্ঠতলের ৬% ও মোট স্থলপৃষ্ঠের ২০.৪% জুড়ে অবস্থিত। এ মহাদেশের ৬১টি রাষ্ট্র কিংবা সমমানের প্রশাসনিক অঞ্চলে ১০০ কোটিরও বেশি মানুষ, অর্থাৎ বিশ্বের জনসংখ্যার ১৪% বসবাস করে। আফ্রিকার প্রায় মাঝখান দিয়ে নিরক্ষরেখা চলে গেছে। এর বেশির ভাগ অংশই ক্রান্তীয় অঞ্চলে অবস্থিত। মহাদেশটির উত্তরে ভূমধ্যসাগর, উত্তর-পূর্বে সুয়েজ খাল ও লোহিত সাগর, পূর্বে ভারত মহাসাগর, এবং পশ্চিমে আটলান্টিক মহাসাগর। উত্তর-পূর্ব কোনায় আফ্রিকা সিনাই উপদ্বীপের মাধ্যমে এশিয়া মহাদেশের সাথে সংযুক্ত। আফ্রিকা একটি বিচিত্র মহাদেশ। এখানে রয়েছে নিবিড় সবুজ অরণ্য, বিস্তীর্ণ তৃণভূমি, জনমানবহীন মরুভূমি, সুউচ্চ পর্বত এবং খরস্রোতা নদী। এখানে বহু বিচিত্র জাতির লোকের বাস, যারা শত শত ভাষায় কথা বলে। আফ্রিকার গ্রামাঞ্চলে জীবন শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে একই রয়ে গেছে, অন্যদিকে অনেক শহরে লেগেছে আধুনিকতার ছোঁয়া।

দেশ ও অঞ্চল

[সম্পাদনা]

আফ্রিকাতে ৫৪টি রাষ্ট্র আছে। এদের মধ্যে ৪৭টি আফ্রিকার মূল ভূখণ্ডে এবং ৬টি আশেপাশের দ্বীপগুলিতে অবস্থিত। সাহারা মরুভূমির মাধ্যমে মহাদেশটিকে দুইটি অংশে ভাগ করা হয়। সাহারা বিশ্বের বৃহত্তম মরুভূমি; এটি আফ্রিকা মহাদেশের উত্তর অংশের প্রায় পুরোটা জুড়ে বিস্তৃত। সাহারার উত্তরে অবস্থিত অঞ্চলকে উত্তর আফ্রিকা বলা হয়। সাহারার দক্ষিণে অবস্থিত আফ্রিকাকে সাহারা-নিম্ন আফ্রিকা বলা হয়। সাহারা-নিম্ন আফ্রিকাকে অনেক সময় কৃষ্ণ আফ্রিকাও বলা হয়।

আফ্রিকার অঞ্চল, রং করা মানচিত্র
 উত্তর আফ্রিকা (আলজেরিয়া, মিশর, লিবিয়া, মরক্কো এবং তিউনিসিয়া)
ভূমধ্যসাগরের দক্ষিণ তীর এবং উত্তরপশ্চিম আটলান্টিক উপকূল।
 সাহেল (চাদ, মালি, মৌরিতানিয়া, নাইজার, সুদান)
মরুভূমি এবং সাভানা ঘেরা দেশসমূহ।
 পশ্চিম আফ্রিকা (বেনিন, বুর্কিনা ফাসো, ক্যামেরুন, চাদ, আইভরি কোস্ট, ঘানা, গিনি, গিনি-বিসাউ, লাইবেরিয়া, মালি, মৌরিতানিয়া, নাইজার, নাইজেরিয়া, সেনেগাল, সিয়েরা লিওন, গাম্বিয়া এবং টোগো)
উষ্ণমণ্ডলীয় আটলান্টিক উপকূলের দেশসমূহ।
 মধ্য আফ্রিকা (অ্যাঙ্গোলা, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, বিষুবীয় গিনি, গাবন,, কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্র এবং, জাম্বিয়া)
আফ্রিকার হৃদয়, পূর্বাঞ্চল উচ্চত পর্বতমালা ঘেরা, পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম জঙ্গল কংগো রেইনফরেস্ট এই অঞ্চলে অবস্থিত।
 পূর্ব আফ্রিকা (বুরুন্ডি, জিবুতি* ইরিত্রিয়া, ইথিওপিয়া, কেনিয়া, মালাউই, মোজাম্বিক, রুয়ান্ডা, সুদান, সোমালিয়া, তানজানিয়া এবং, উগান্ডা)
এই অঞ্চলের দেশসমূহ লোহিত সাগর এবং ভারত মহাসাগরের কোলঘেঁষে অবস্থিত। কয়েকটি দেশ ভূমি দ্বারা ঘেরা।
 পূর্ব আফ্রিকার দ্বীপরাষ্ট্র (কোমোরোস, মাদাগাস্কার, মরিশাস এবং সেশেল)
ভারত মহাসাগরে অবস্থিত।
 দক্ষিণাঞ্চলীয় আফ্রিকা (বতসোয়ানা, লেসোথো, নামিবিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, সোয়াজিল্যান্ড এবং জিম্বাবুয়ে)
আফ্রিকার দক্ষিণ মাথার কাছাকাছি দেশসমূহ।
  • 1 আক্রা — ঘানার রাজধানী।
  • 2 আদ্দিস আবাবা — ইথিওপিয়ার রাজধানী এবং আফ্রিকার অন্যতম বৈশ্বিক শহর।
  • 3 কায়রো — মিশরের ঐতিহাসিক রাজধানী এবং প্রাচীন মিশরের প্রবেশদ্বার।
  • 4 কেপ টাউন — দক্ষিণ আফ্রিকার শহর যেখানে টেবিল পর্বত অবস্থিত।
  • 5 ডাকার — সেনেগালের রাজধানী এবং আফ্রিকার সর্বপশ্চিম এর শহর।
  • 6 জোহানসবার্গ — দক্ষিণ আফ্রিকার বৃহত্তম শহর।
  • 7 লুয়ান্ডা — এঙ্গোলার রাজধানী।
  • 8 মারাক্কেশ — প্রাচীন ও আধুনিক মরোক্কোর মিশেল।
  • 9 নাইরোবি — কেনিয়ার রাজধানী।

পর্যটন

[সম্পাদনা]
ভিক্টোরিয়া জলপ্রপাত

বৈশিষ্ট্য

[সম্পাদনা]

ইতিহাস

[সম্পাদনা]

আফ্রিকা মানবজাতির আতুড়ঘর। বিজ্ঞানীরা মনে করেন আজ থেকে ৮০ থেকে ৫০ লক্ষ বছর আগে এখানেই আদি মানবেরা এপ-জাতীয় প্রাণী থেকে বিবর্তিত হয়। আজ থেকে ১ লক্ষ ৩০ হাজার থেকে ৯০ হাজার বছর আগে আধুনিক মানুষের উৎপত্তি ঘটে এবং এরা আফ্রিকা থেকে পৃথিবীর অন্যত্র ছড়িয়ে পড়ে। প্রায় ৫ হাজার বছর আগে উত্তর-পূর্ব আফ্রিকায় বিশ্বের প্রথম মহান সভ্যতাগুলির একটি, মিশরীয় সভ্যতা, জন্মলাভ করে। এরপর আফ্রিকাতে আরও বহু সংস্কৃতি ও রাজ্যের প্রতিষ্ঠা ও পতন হয়েছে। ৫০০ বছর আগেও সারা আফ্রিকা মহাদেশ জুড়ে সমৃদ্ধ নগর, বাজার, এবং শিক্ষাকেন্দ্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল।

আফ্রিকায় ৩৯০০ এর বেশি ভাষা আছে। এর মধ্যে আরবী, রুস এবং ইংরাজি অন্যতম।

আফ্রিকায় ৫০০ টির বেশি ধর্ম আছে। এর মধ্যে ইসলাম ধর্মের অনুসারী বেশী। যারা মোট জনসংখ্যার ৪৭%।আরও আছে আফ্রিকার ঐতিহ্যবাহী ধর্ম।যারা জনসংখ্যার ৬%।এ ছাড়া খ্রিষ্টানরা জনসংখ্যার ৩৯%।

খাদ্য

[সম্পাদনা]

আফ্রিকায় অঞ্চলভেদে খাবারের ধরন আলাদা। উত্তরাঞ্চলের খাবারে আরব রন্ধনশৈলীর প্রভাব এবং দক্ষিণ আফ্রিকা ও নামিবিয়ায় ইউরোপীয় রন্ধনশৈলীর প্রভাব দেখতে পাওয়া যায়। উপনিবেশিক শাসনের অনেক পূর্বে স্থানীয় খাবারের উদ্ভব হয়েছে। আফ্রিকার প্রতিটি শহরে এমনকি প্রতিটি দেশে পাঁচ তারকা হোটেল পাওয়া নাও যেতে পারে।

রাত্রিযাপন

[সম্পাদনা]

ব্যবসাপ্রধান জেলা এবং রিসোর্ট শহরসমূহে উচ্চমানের হোটেল এবং আবাসন ব্যবস্থা আছে। জাতীয় উদ্যানসমূহে ক্যাম্পিং এর অভিজ্ঞতা উত্তেজনাকর তবে বিপজ্জনক প্রাণী এবং অপরাধ ও অপরাধী সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে।