বিষয়বস্তুতে চলুন

উইকিভ্রমণ থেকে

চন্দ্রনাথ পাহাড় বাংলাদেশের চট্টগ্রাম জেলার অন্তর্গত সীতাকুণ্ড উপজেলার পাহাড়বিশেষ। চট্টগ্রাম অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের লীলাভূমি। এলাকাটি শুধুমাত্র হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বড় তীর্থস্থানই নয়; বরং খুব ভালো ভ্রমণের স্থান হিসেবেও স্বীকৃত।

জানুন

[সম্পাদনা]

চট্টগ্রামের উত্তর পূর্বদিকে চন্দ্রনাথ পাহাড়। আর পশ্চিমদিকে সুবিশাল সমুদ্র। চন্দ্রনাথ পাহাড়ের শ্রেণিভূক্ত ছোট পাহাড়গুলো ব্যাসকুণ্ড থেকে শুরু হয়েছে। চন্দ্রনাথ ধামে যাবার পথে বেশকিছু হিন্দুধর্মীয় স্থাপনা রয়েছে। চন্দ্রনাথ মন্দিরসহ আরও রয়েছে বড়বাজার পূজামণ্ডপ, ক্রমধেশ্বরী কালী মন্দির, ভোলানন্দগিরি সেবাশ্রম, কাছারীবাড়ী, শনি ঠাকুর বাড়ী, প্রেমতলা, শ্রী শ্রী লোকনাথ ব্রাহ্মচারী সেবাশ্রম, শ্রী রামকৃষ্ণ সেবাশ্রম, গিরিশ ধর্মশালা, দোল চত্বর, এন,জি,সাহা তীর্থযাত্রী নিবাস, তীর্থ গুরু মোহন্ত আস্তানা, বিবেকানন্দ স্মৃতি পঞ্চবটি, জগন্নাথ আশ্রম, শ্রীকৃষ্ণ মন্দির, মহাশ্মশানভবানী মন্দির, স্বয়ম্ভুনাথ মন্দিগয়াক্ষেত্, জগন্নাথ মন্দির, বিরুপাক্ষ মন্দির, পাতালপুরী, অন্নপূর্ণা মন্দির ইত্যাদি।

পুরো এলাকাটি বিভিন্ন ধরনের গাছ, বনফুল, গুল্মলতায় পরিপূর্ণ। পেয়ারা, সুপারি, আমগাছসহ বিভিন্ন ফলের বাগান দেখা যায়। কিছুসংখ্যক নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর মানুষের বসবাস রয়েছে এখানে। ত্রিপুরাদের নিজস্ব কিছু গ্রাম রয়েছে। পাহাড়ের গভীরে জুমক্ষেতের মাধ্যমে ফসল চাষাবাদ করা হয়। এছাড়াও, বাণিজ্যিকভাবে ফুলের বাগানের চাষ করা হয়।

প্রবেশ

[সম্পাদনা]

সীতাকুণ্ড বাজার থেকে ৪ কি.মি. দূরে চন্দ্রনাথ পাহাড় অবস্থিত। এখানে পায়ে হেঁটে অথবা রিক্সায় চড়ে যাওয়া যাবে।

ঢাকা থেকে এস.আলম, সৌদিয়া, গ্রীনলাইন, সিল্ক লাইন, সোহাগ, বাগদাদ এক্সপ্রেস, ইউনিক প্রভূতির বাস সীতাকুণ্ডে থামে। চট্টগ্রাম থেকে বাসগুলো মাদারবাড়ী, কদমতলী বাসষ্টেশন থেকে ছাড়ে। তা ছাড়াও অলঙ্কার থেকে কিছু ছোট গাড়ি ছাড়ে (স্থানী ভাবে মেক্সী নামে পরিচিত)। সেগুলো করেও আসা যাবে।

এছাড়া ঢাকা থেকে আসা দ্রুতগামী ট্রেন “ঢাকা মেইল” সীতাকুণ্ডে থামে, এটি ঢাকা থেকে ছাড়ে রাত ১১টায় এবং সীতাকুণ্ডে পৌঁছে পরদিন সকাল ৬.৩০ থেকে ৭টায়। অন্যান্য আন্তঃ নগর ট্রেন গুলো সরাসরি চট্টগ্রামে চলে যায়। শুধুমাত্র শিবর্তুদশী মেলার সময় সীতাকুণ্ডে থামে।

চট্টগ্রাম শহর থেকে পারিবারিক ভাবে সিএনজি অটো রিক্সাতে করে ঘুরে আসা যাবে। পাবলিক বাসে যেতে চাইলে নগরির অলংকার কিংবা এ কে খান মোড় থেকে বাসে উঠতে হবে, ভাড়া ২০ টাকা প্রতি জন।

দেখুন

[সম্পাদনা]
চন্দ্রনাথ পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত চন্দ্রনাথ মন্দির, ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথ হতে দৃশ্যমান অবস্থায়। ছবির কেন্দ্রে বিরূপাক্ষ মন্দির দেখা যাচ্ছে।

এলাকায় অনেকগুলো ঝর্ণা আছে। তবে পাহাড়ে যাবার পথে একটিমাত্র ঝর্ণা দেখা যায়। পাহাড়ে উঠার জন্য দুটি পথ রয়েছে। ডানদিকের রাস্তাটি পুরোটাই সিঁড়ি দিয়ে আর বামদিকেরটি পুরোটাই পাহাড়ি পথ। কিছু ভাঙ্গা সিঁড়ি আছে। তন্মধ্যে, বামদিকেরটি দিয়ে উঠা সহজ; ডানদিকেরটি দিয়ে নামা সহজ।

সীতা মন্দিরের কাছে একটি ঝর্ণা আছে যা শুকিয়ে গেছে। অন্যান্য ঝর্ণা গভীর বনে রয়েছে। বর্ষাকালে পাহাড়কে পরিপূর্ণ যৌবনা মনে হবে। তবে, বর্ষায় পাহাড়ে উঠা বেশ বিপজ্জ্বনক। এই উপরে অবস্থিত চন্দ্রনাথ মন্দির অন্যতম বিখ্যাত শক্তিপীঠ।

সাংবার্ষিক ফাল্গুন মাসে (ফেব্রুয়ারি-মার্চ) শিবচতুর্দশী মেলা হয় যা বেশ বড় ধরনের মেলা। দেশ-বিদেশের অগণিত সাধু-সন্ন্যাসী, ধর্ম পথিকের আগমণ ঘটে। তখন এলাকাটি জনাকীর্ণ আকার ধারণ করে।

রাত্রিযাপন

[সম্পাদনা]

থাকার জন্য চট্টগ্রাম এসে থাকতে হবে।

  • হোটেল প্যারামাউন্ট, স্টেশন রোড, চট্টগ্রাম (নতুন ট্রেন স্টেশনের ঠিক বিপরীতে), +৮৮০৩১২৮৫৬৭৭১, +৮৮০১৭১৩২৪৮৭৫৪ নতুন ট্রেন স্টেশনের ঠিক বিপরীতে অবস্থিত হোটেল। মধ্যম মানের থাকার ব্যবস্থা। বাতানুকুলহীন একক শয্যা ৮০০ টাকা, দুই শয্যা ১৩০০ টাকা, এসি ১৪০০ ও ১৮০০ টাকা
  • হোটেল এশিয়ান এসআর, স্টেশন রোড, চট্টগ্রাম, +৮৮০১৭১১৮৮৯৫৫৫ ছিমছাম ও পরিছন্ন একটি সুন্দর হোটেল, স্টেশন রোডে অবস্থিত। বাতানুকুলহীন একক শয্যা ১০০০ টাকা, বাতানুকুল কক্ষ ১৭২৫ টাকা
  • হোটেল সাফিনা, এনায়েত বাজার, চট্টগ্রাম, +৮৮০৩১০৬১৪০০৪ পারিবারিক পরিবেশের মাঝারি মানের হোটেল, ছাদের ওপর একটি সুন্দর রেস্তোরাঁ রয়েছে। ৭০০ টাকা থেকে শুরু
  • হোটেল নাবা ইন, রোড ৫, প্লট ৬০, ও আর নিজাম রোড, চট্টগ্রাম, +৮৮০১৭৫৫৫৬৪৩৮২ ও আর নিজাম রোড ও নাসিরাবাদ এলাকায় থাকার জন্য আদর্শ, কিছুটা বেশি ভাড়ার হোটেল। ২৫০০–৩০০০ টাকা
  • হোটেল ল্যান্ডমার্ক, ৩০৭২ শেখ মুজিব রোড, আগ্রাবাদ, চট্টগ্রাম, +৮৮০১৮২০১৪১৯৯৫, +৮৮০১৭৩১৮৮৬৯৯৭ আগ্রাবাদ এলাকায় ভালো মানের একটি হোটেল, ব্যবসায়িক ও পর্যটক উভয়ের জন্য উপযোগী। ২৩৫০–৩৪০০ টাকা

ব্যাসকুণ্ডের পাশে বিশাল মাঠ আছে। গাড়ি রাখা, রান্না করাসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হয়। খাবার, পানির সুব্যবস্থা নেই। নিজ উদ্যোগে সংগ্রহ করতে হয়।

ব্যাসকুন্ডের পাশেই শঙ্কর মঠ আছে। সেখানে বিশ্বনাথ মন্দিরও রয়েছে। তীর্থযাত্রীদের জন্য শঙ্কর মঠে স্বল্পমূল্যে খাবার সুব্যবস্থা রয়েছে।

পরবর্তিতে যান

[সম্পাদনা]