তাজিকিস্তান দক্ষিণ-পূর্ব মধ্য এশিয়ার একটি স্থলবেষ্টিত প্রজাতন্ত্র। এর উত্তরে কিরগিজস্তান, উত্তরে ও পশ্চিমে উজবেকিস্তান, পূর্বে চীন এবং দক্ষিণে আফগানিস্তান। দুশান্বে দেশের বৃহত্তম শহর ও রাজধানী। গোর্নো-বাদাখশান স্বায়ত্তশাসিত এলাকাটি তাজিকিস্তানে অবস্থিত; এটি একটি জাতিগত অঞ্চল যা দেশটির ৪৫% এলাকা জুড়ে অবস্থিত।
শহর
[সম্পাদনা]পর্যটন
[সম্পাদনা]বৈশিষ্ট্য
[সম্পাদনা]ভূগোল
[সম্পাদনা]তাজিকিস্তানের ৯০%-এরও বেশি এলাকা পর্বতময়। পামির পর্বতমালা এবং আলায় পর্বতমালা দুইটি প্রধান পর্বতমালা, এবং এগুলির হিমবাহ থেকে উৎপন্ন বিভিন্ন পার্বত্য জলধারা ও নদী প্রাচীনকাল থেকে ঐ অঞ্চলের খামারভূমিতে সেচ কাজে ব্যবহার করা হয়ে এসেছে। তাজিকিস্তানের উত্তর প্রান্তে মধ্য এশিয়ার আরেক প্রধান পর্বতমালা তিয়ান শান পর্বতমালার একাংশ চলে গেছে। পর্বতগুলির উত্তরে ও দক্ষিণে রয়েছে দুইটি নিম্নভূমি অঞ্চল এবং এখানেই তাজিকিরা ব্যাপক পরিমাণে বাস করে।
মধ্য এশিয়ার সবচেয়ে জনবহুল এলাকা সির দরিয়া নদীবিধৌত ফের্গানা উপত্যকার একাংশ উত্তর তাজিকিস্তানে পড়েছে। এই দীর্ঘ উপত্যকাটি উত্তরে কুরামিন পর্বতমালা ও দক্ষিণে তুর্কেস্তান পর্বতমালার মধ্যে অবস্থিত। দক্ষিণের নিম্নভূমি এলাকাটিতে আমু দরিয়া ও পাঞ্জ নদী প্রধান দুইটি নদী।
ইতিহাস
[সম্পাদনা]তাজিকিস্তান নামে যে স্থানটি বর্তমানে পরিচিত তার পত্তন হয়েছিল খ্রিষ্টপূর্ব ৪০০০ বছর আগে। তখন থেকে এ ভূখণ্ডটি বিভিন্ন সম্রাটের শাসনাধীনে ছিল। বিশেষ করে পারস্যের সম্রাটদের অধীনে এ ভূখণ্ডটি থাকে দীর্ঘ সময় ধরে। বুদ্ধ-পূর্ব যুগে আধুনিক তাজিকিস্তান জারাভশান ভ্যালির অন্তর্ভুক্ত হয়ে কামবোজার অংশ ছিল। আর তখন কামবোজা সাম্রাজ্যটি শাসন করত পারস্যের আচেহমানিদ সম্রাটরা। আলেকজান্ডারের হাতে পারস্য সম্রাটদের পরাজিত হওয়ার পর এ অঞ্চলটি গ্রেসো-ব্যাকট্রিয়ান সাম্রাজ্যের উত্তরাংশ হিসেবে পরিগণিত হয়।
খ্রিস্টপূর্ব চতুর্থ শতাব্দীর শেষাংশ থেকে শুরু করে দ্বিতীয় শতাব্দীর প্রথমাংশ পর্যন্ত এটি ব্যাকট্রিয়ান সাম্রাজ্যের অংশ হিসেবেই থাকে। এরপর এটা হয়ে যায় তুর্কিস্তানের অংশ। তারপর কিছু দিন এটি চীন সাম্রাজ্যের অংশ হিসেবে গণ্য হয়। সপ্তম খ্রিস্টাব্দে আরবরা এ অঞ্চলে ইসলাম নিয়ে আসেন। সম্রাট সামানিড তখন আরবদের উচ্ছেদ করেন। সে সময় তিনি সমরকন্দ ও বোখারাকে আরো বড় ও সমৃদ্ধ করে তোলেন। এর পর থেকে উভয় শহর তাজিকদের সাংস্কৃতিক কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে গণ্য হতে থাকে (উভয় শহরই এখন উজবেকিস্তানের অন্তর্গত)। এরপর মঙ্গোলরাও কিছু সময়ের জন্য এর নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করে। এমনিভাবে বিভিন্ন সাম্রাজ্যের অধীনে কখনো এই অংশের সাথে কখনো ওই অংশের সাথে যুক্ত হয়ে এগিয়ে গেছে তাজিকিস্তানের ইতিহাস।
ভাষা
[সম্পাদনা]তাজিক ভাষা ও রুশ ভাষা তাজিকিস্তানের সরকারি ভাষা। এদের মধ্যে তাজিক ভাষাতে প্রায় ৬২% লোক এবং রুশ ভাষাতে প্রায় ৫% লোক কথা বলেন। তাজিকিস্তানে প্রচলিত অন্যান্য ভাষাগুলির মধ্যে আছে উজবেক ভাষা (১৬% বক্তা), ফার্সি ভাষা এবং পশতু ভাষা।
ধর্ম
[সম্পাদনা]তাজিকিস্তানে ২০০৯ সালে ইসলামকে সরকারি ধর্ম হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এ বিষয়টি সাবেক সোভিয়েত দেশগুলোর মধ্যে তাজিকিস্তানকে আলাদা করে তুলেছে। তবে তাজিকিস্তানে অন্য যেকোনো ধর্ম পালনের পূর্ণ স্বাধীনতা রয়েছে। ২০০৯ সালের তথ্যানুসারে দেশটির ৯৮ শতাংশ লোক মুসলমান। এদের মধ্যে ৯৫ শতাংশ সুন্নি এবং ৩ শতাংশ শিয়া মুসলমান। আর বাকি দুই শতাংশের মধ্যে অর্থোডক্স, প্রোটেস্ট্যান্ট ও ক্যাথলিক খ্রিস্টান, বৌদ্ধ ও ইহুদি রয়েছে। পারে।
সংস্কৃতি
[সম্পাদনা]ঐতিহাসিকভাবেই তাজিক এবং পার্সিয়ানরা একই ভাবধারার। তাদের ভাষাও কাছাকাছি পর্যায়ের। দেশটির ৮০ শতাংশ লোকেরই মাতৃভাষা তাজিক। বর্তমানে দেশটির রাজধানী দুশানবে, খুজান্দ, দুলব, পাঞ্জাকেন্ট এবং ইস্তারভশান প্রধান এলাকা হিসেবে পরিচিত। উত্তর তাজিকিস্তানে ২৫ হাজার লোক রয়েছে ইয়াগনোবি সম্প্রদায়ের। তারা ইয়াগনোবি ভাষাতেই কথা বলে থাকে।
খেলাধুলা
[সম্পাদনা]পর্বতময় তাজিকিস্তানের খেলাধুলাও পাহাড়পর্বতকেন্দ্রিক। পাহাড়ে হাঁটা, উঁচু পাহাড়ে আরোহণ করা ইত্যাদিই এখানকার প্রধান খেলা হিসেবে পরিচিত। প্রতি মৌসুমে স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্বত এজেন্সিগুলো বিভিন্ন খেলার আয়োজন করে থাকে। এর পাশাপাশি দেশটিতে ফুটবলও একটি জনপ্রিয় খেলা। তারা ফিফা ও এএফসি আয়োজিত বিভিন্ন খেলায় অংশ নিয়ে থাকে।