দক্ষিণ এশিয়া পরিচিত ভারতীয় উপমহাদেশ নামেও (বা "উপমহাদেশ"), এটি একটি ত্রিভুজাকৃতির ভূখণ্ড, যার উত্তর দিকে হিমালয়, দক্ষিণে ভারত মহাসাগর, আর পূর্ব ও পশ্চিমে গঙ্গা ও সিন্ধু নদীর উপত্যকা বিস্তৃত। দক্ষিণ এশিয়া প্রায় ২০৮ কোটি মানুষের আবাসস্থল। এখানে রয়েছে বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বতমালা এবং এটি বিশ্বের প্রাচীনতম কিছু সভ্যতার উৎসভূমি। এই অঞ্চল থেকেই হিন্দুধর্ম, বৌদ্ধধর্ম, সানামাহিজম, শিখধর্ম ও জৈনধর্মের উৎপত্তি হয়েছে।
দেশসমূহ
[সম্পাদনা]| বাংলাদেশ নদীসমৃদ্ধ একটি মুসলিম-সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ। যদিও এটি মূলধারার পর্যটন গন্তব্য নয়, তবে এখানে রয়েছে মনোরম সৈকত, বন্যপ্রাণী, ইতিহাস ও সংস্কৃতির মিশেল। |
| ভুটান তিব্বতি সংস্কৃতির প্রভাবাধীন একটি বৌদ্ধ-সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ। এখানে পর্যটন কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়। |
| ভারত প্রাচীন ও সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের দেশ, যার উত্তরে হিমালয় পর্বতমালা, পশ্চিমে থর মরুভূমি এবং দক্ষিণে ভারত মহাসাগর। |
| মালদ্বীপ নির্জন ও নয়নাভিরাম সৈকতের আবাসস্থল, যার সংস্কৃতিতে ভারত ও মধ্যপ্রাচ্যের প্রভাব রয়েছে। |
| নেপাল এভারেস্ট পর্বত ও বুদ্ধের জন্মস্থান। এটি অ্যাডভেঞ্চার পর্যটকদের জন্য জনপ্রিয়, এখানে বিরল প্রাণী ও আন্তরিক আতিথেয়তা রয়েছে। |
| পাকিস্তান ইসলামের নামে গঠিত একমাত্র দেশ। এটি সংস্কৃতি ও ইতিহাসে ভরপুর, জলবায়ু ও ভূপ্রকৃতি বৈচিত্র্যময়—গরম মরুভূমি থেকে শুরু করে বরফঢাকা পর্বত পর্যন্ত। এখানে পৃথিবীর ১৪টি আট-হাজারি পর্বতের মধ্যে ৫টি অবস্থিত। |
| শ্রীলঙ্কা শ্রীলঙ্কায় বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ, পাশাপাশি হিন্দু ও মুসলিম সংখ্যালঘু রয়েছে। পর্তুগিজ, ডাচ ও ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক ইতিহাসের প্রভাবে এখানে একটি সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য গড়ে উঠেছে। এর দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে রয়েছে মনোমুগ্ধকর সৈকত, পাথুরে পাহাড়, মনোরম রেলপথ, সুস্বাদু খাবার, সাফারি এবং প্রাচীন স্মৃতিস্তম্ভ। |
সম্পর্কিত গন্তব্যসমূহ
[সম্পাদনা]নিম্নোক্ত কিছু গন্তব্যকে কখনও কখনও দক্ষিণ এশিয়ার অংশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যদিও উইকিভ্রমণে অন্যান্য বিভাগে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়েছে:
- আফগানিস্তান অঞ্চলগতভাবে প্রায়শ মধ্য এশিয়ার অংশ হিসেবে বিবেচিত হলেও, এটি প্রায়ই দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সংগঠনে অংশগ্রহণ করে, তাই কখনো কখনো দক্ষিণ এশিয়ার অংশ হিসেবেও দেখা হয়।
- ব্রিটিশ ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চল একটি দ্বীপমালা যা ব্রিটেন কর্তৃক শাসিত এবং মালদ্বীপের দক্ষিণে অবস্থিত। তবে সাধারণ মানুষের জন্য এটি নিষিদ্ধ এলাকা।
- ইরান মাঝে মাঝে দক্ষিণ এশিয়ার অংশ হিসেবে বিবেচিত হলেও, সাধারণত এটি মধ্যপ্রাচ্য বা পশ্চিম এশিয়ার অন্তর্ভুক্ত।
- মিয়ানমার (পূর্ব নাম বার্মা) এক সময় ব্রিটিশ ভারতের অংশ ছিল বলে দক্ষিণ এশিয়ার অংশ হিসেবে গণ্য করা হতে পারে, তবে সাধারণভাবে এটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অংশ হিসেবেই বিবেচিত।
- তিব্বকে কখনো কখনো দক্ষিণ এশিয়ার অংশ বলা হয়, কারণ এটি নেপাল, ভুটান, লাদাখ, সিকিম ও উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সাংস্কৃতিক সম্পর্ক রক্ষা করে।
শহরসমূহ
[সম্পাদনা]
- 1 কলম্বো - শ্রীলঙ্কার সবচেয়ে বড় শহর
- 2 নয়াদিল্লি - ভারতের রাজধানী, একটি সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যময় শহর
- 3 ঢাকা - বাংলাদেশের রাজধানী ও প্রাণবন্ত সংস্কৃতির মিলনকেন্দ্র
- 4 ইসলামাবাদ - পাকিস্তানের রাজধানী
- 5 কাঠমান্ডু - নেপালের রাজধানী
- 6 করাচি - পাকিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলের বৈচিত্র্যময় ও মহানগরী শহর
- 7 মালে - ঘনবসতিপূর্ণ দ্বীপনগরী, মালদ্বীপের প্রবেশদ্বার
- 8 মুম্বই - ভারতের সবচেয়ে বৈচিত্র্যময় ও বিশ্বজনীন শহর, বলিউড চলচ্চিত্র শিল্পের জন্য বিখ্যাত
- 9 থিম্ফু - ভুটানের রাজধানী, পাহাড়বেষ্টিত একটি শহর
অন্যান্য গন্তব্য
[সম্পাদনা]
- 10 বান্দরবান জেলা - বাংলাদেশের পাহাড়ি জেলা, যেখানে অক্ষত অরণ্যের ভেতর দিয়ে ট্রেকিং করা যায়
- 11 কক্সবাজার - বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকতগুলির একটি
- 12 হিমালয় উত্তর - ভারতের উত্তর হিমালয় অঞ্চল
- 13 হুনজা উপত্যকা - পাকিস্তানের উচ্চ পর্বতমালার অন্যতম মনোমুগ্ধকর ও জনপ্রিয় স্থান
- 14 কন্যাকুমারী - ভারতের মূল ভূখণ্ডের সর্বদক্ষিণ প্রান্ত
- 15 মহেঞ্জোদাড়ো - প্রাচীন সিন্ধু সভ্যতার বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন
- 16 এভারেস্ট পর্বত - বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বত, যা চীন ও নেপালের সীমানা জুড়ে বিস্তৃত
- 17 সুন্দরবন জাতীয় উদ্যান - দক্ষিণ এশিয়ায় বাঘ দেখার অন্যতম সেরা স্থান
- 18 তাজমহল - আগ্রায় অবস্থিত অতুলনীয় সাদা মার্বেলের সমাধি
দেখুন ভারত মহাসাগরের দ্বীপপুঞ্জ।
জানুন
[সম্পাদনা]
ইতিহাস
[সম্পাদনা]- মূল নিবন্ধ: দক্ষিণ এশিয়ার ইতিহাস
দক্ষিণ এশিয়া হলো চারটি প্রধান ধর্মের জন্মভূমি: হিন্দুধর্ম, বৌদ্ধধর্ম, শিখধর্ম, এবং জৈনধর্ম। ইসলাম সপ্তম শতক থেকে আরব আক্রমণকারীদের মাধ্যমে এখানে প্রবেশ করে এবং মুঘল যুগে প্রভাবশালী হয়ে ওঠে। এছাড়াও, ভারতে প্রায় ২০০০ বছর ধরে ইহুদি ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের অস্তিত্ব রয়েছে এবং দশম শতক থেকে এখানে পারসি (জরথুস্ত্রী) সম্প্রদায়ও বসবাস করছে। দক্ষিণ এশীয় সংস্কৃতির আরেকটি ঐক্যসূত্র এসেছে ব্রিটিশ প্রভাব থেকে, বিশেষ করে ইংরেজি ভাষার ব্যাপক ও ক্রমবর্ধমান ব্যবহার, কারণ ভারত ছিল ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের "মুকুটের রত্ন"।
কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, ১৯৪৭ সালে এই রত্ন ভাগ হয়ে হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ রাষ্ট্র ভারত এবং মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রাষ্ট্র পাকিস্তানে বিভক্ত হয়। এর ফলে হিন্দু-মুসলিম রক্তপাতের ভয়াবহ ঘটনায় অন্তত পাঁচ লক্ষ মানুষ মারা যায় এবং ১ কোটি ২০ থেকে ১ কোটি ৪০ লক্ষ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়। নতুন দুটি রাষ্ট্র চারটি যুদ্ধ করেছে, যার মধ্যে তিনটি কাশ্মীরের অবস্থান নিয়ে। ১৯৭১ সালের তৃতীয় যুদ্ধের ফলে পূর্ব পাকিস্তান স্বাধীন হয়ে বাংলাদেশে পরিণত হয়।
ব্রিটিশরা সিলন ও মালদ্বীপকে ভারতের বাইরে থেকে শাসন করত, এবং যথাক্রমে ১৯৪৮ ও ১৯৬৫ সালে তারা স্বাধীনতা লাভ করে। সিলন ১৯৭২ সালে প্রজাতন্ত্র হয়ে শ্রীলঙ্কা নাম নেয়, আর মালদ্বীপে ১৯৬৮ সালে রাজতন্ত্র বিলুপ্ত হয়।
নেপাল ও ভুটানকে ব্রিটিশরা আনুষ্ঠানিকভাবে উপনিবেশ বানায়নি, তবে ঔপনিবেশিক যুগে তারা ব্রিটিশ আধিপত্যের অধীনে ছিল। নেপালের গুর্খারা পুরো ঔপনিবেশিক যুগে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে সৈন্য সরবরাহ করেছে, এখনো করছে। এছাড়াও, ভারতের সেনাবাহিনী ও ব্রুনাই সেনাবাহিনীতে গুর্খা রেজিমেন্ট রয়েছে, এবং সিঙ্গাপুর পুলিশ বাহিনীতে একটি গুর্খা ইউনিট আছে। ভুটানের পররাষ্ট্রনীতি পুরো ঔপনিবেশিক সময়ে ব্রিটিশদের নিয়ন্ত্রণে ছিল, যা ভারতের স্বাধীনতার পর ভারতের কাছে হস্তান্তরিত হয়।
আবহাওয়া
[সম্পাদনা]হিমালয় বাদ দিলে দক্ষিণ এশিয়ার জলবায়ু মূলত উষ্ণমণ্ডলীয়। গ্রীষ্মে বর্ষাকাল এবং শীতে শুষ্ক মৌসুম থাকে। তবে এই অঞ্চলের আবহাওয়ায় চরম বৈচিত্র্যও রয়েছে। যেমন, পশ্চিম পাকিস্তানে প্রায় কোনো বর্ষাই হয় না, আবার দক্ষিণ ভারতে বর্ষাকাল ছয় মাস স্থায়ী হয়। শ্রীলঙ্কায় এমনকি দুটি বর্ষা হয়-একটি মে মাসে এবং আরেকটি অক্টোবর/নভেম্বর মাসে।
মানুষ
[সম্পাদনা]দক্ষিণ এশিয়া বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ অঞ্চলের একটি। প্রায় দেড় শ কোটি মানুষ, অর্থাৎ মানবজাতির প্রায় এক-চতুর্থাংশ এখানে বসবাস করে। গড় জনসংখ্যার ঘনত্ব ৩০৫ /কিমি২[রূপান্তর: অজানা একক], যা বিশ্ব গড়ের প্রায় সাত গুণ। অনেক শহরে সরু গলি এবং বৈদ্যুতিক তারে জড়ানো ভবন দেখা খুবই সাধারণ ব্যাপার।
ভাষা
[সম্পাদনা]এই অঞ্চলে কোনো সাধারণ যোগাযোগের ভাষা নেই। তবে দক্ষিণ এশিয়ার বেশিরভাগ অংশই ব্রিটিশ শাসনের অধীনে ছিল এবং স্বাধীন নামধারী এলাকাগুলোও কোনো না কোনোভাবে ব্রিটিশ আধিপত্যে থাকায় শিক্ষিত মানুষের মধ্যে ইংরেজি ভাষা ব্যাপকভাবে প্রচলিত। হিন্দি ও উর্দু ভারত ও পাকিস্তানের বৃহৎ অঞ্চলে বলা হয়। দুটি ভাষা পরস্পর বোধ্য হওয়ায় ভ্রমণের আগে যদি একটি শিখতেই হয়, তবে এর যেকোনো একটি শিখতে পারেন। হিন্দি নেপালেও কাজে লাগবে, কারণ নেপালি ভাষা হিন্দির সঙ্গে অনেকটা সাদৃশ্যপূর্ণ। এছাড়া ভারতের সিকিমের মতো সীমান্তবর্তী এলাকায়ও নেপালি মূল ভাষা হিসেবে ব্যবহৃত হয়। বাংলা বাংলাদেশে এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গে বহুল প্রচলিত এবং ভারতের অন্য কিছু পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যেও বোঝা যায়। অন্যদিকে, পাঞ্জাবি ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত অঞ্চলে বলা হয় এবং তামিল দক্ষিণ ভারত ও উত্তর শ্রীলঙ্কায় প্রচলিত।
এগুলো ছাড়াও দক্ষিণ এশিয়ায় রয়েছে ভাষার এক বিস্ময়কর বৈচিত্র্য। বিশেষ করে ভারতেই কয়েকশ ভাষা প্রচলিত, পাকিস্তানেও অনেক ভাষা রয়েছে। বড় শহর ও পর্যটন এলাকায় সাধারণত ইংরেজি দিয়ে কোনো না কোনোভাবে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়।
দক্ষিণ এশিয়ার তরুণদের মধ্যে ইংরেজি ছাড়া অন্য কোনো পাশ্চাত্য ইউরোপীয় ভাষায় দক্ষতা খুবই বিরল। তবে পুদুচেরিতে এখনো কিছু বয়স্ক মানুষ রয়েছেন, যারা ফরাসি উপনিবেশ আমলে (ফরাসি ভারত) বেড়ে উঠেছেন এবং ফরাসি ভাষা জানেন। তবে এদের সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে এবং সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ফরাসির পরিবর্তে ইংরেজি সেখানে প্রধান দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আবার গোয়ায় কিছু বয়স্ক মানুষকে এখনো পর্তুগিজ ভাষায় কথা বলতে শোনা যায়, যারা ১৯৬১ সালের আগে পর্তুগিজ শাসনের সময় বেড়ে উঠেছেন।
কীভাবে যাবেন
[সম্পাদনা]|
পারিবারিক/জাতীয় ভিসা
সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ায় প্রবাসী নাগরিকদের জন্য কিছু দেশে ভিসামুক্ত প্রবেশের বিশেষ কর্মসূচি রয়েছে। ভারত ও পাকিস্তানে যেসব লোক একসময় নাগরিক ছিলেন বা নাগরিকদের বংশধর, তাঁরা সাধারণত আজীবন বৈধ ভিসার (কিছুটা মার্কিন গ্রিন কার্ডের মতো) জন্য যোগ্য হন। এই ধরনের ভিসা দ্বৈত নাগরিকত্বের সুবিধার কাছাকাছি হলেও আইনত নাগরিকত্ব দেয় না। এ ভিসাধারীরা দেশটিতে অনির্দিষ্টকাল বসবাস ও কাজ করতে পারেন। যদিও এগুলো আজীবনের জন্য কার্যকর থাকার কথা, প্রায় প্রতি ২০ বছর পর তা নবায়ন করতে হতে পারে। যারা দীর্ঘ সময় বা নিয়মিত ভ্রমণ করেন, তাঁদের জন্য এটি পর্যটক ভিসার তুলনায় খরচে সাশ্রয়ী ও সুবিধাজনক হতে পারে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে দেওয়া হয় “নো-ভিসা রিকোয়ার্ড” (এনভিআর) সিল, যা বহুমাত্রিক প্রবেশের সুযোগ দেয়। এনভিআরধারী ও তাঁদের পরিবার যতদিন ইচ্ছা বাংলাদেশে থাকতে পারেন। এটি পাসপোর্টের মেয়াদকাল পর্যন্ত বৈধ থাকে, তবে নতুন পাসপোর্টেও স্থানান্তরযোগ্য। শ্রীলঙ্কা, ওই অঞ্চলের অন্য দেশগুলোর বিপরীতে, দ্বৈত নাগরিকত্ব অনুমোদন করে। |
স্থলপথে
[সম্পাদনা]স্থলপথে দক্ষিণ এশিয়ায় প্রবেশ করা অনেক সময় চ্যালেঞ্জিং হতে পারে। পশ্চিম দিক থেকে এটি তুলনামূলক সহজ, বিশেষ করে ইস্তানবুল (তুরস্ক) থেকে নয়াদিল্লি (ভারত) পর্যন্ত ভ্রমণপথে (হিপি ট্রেইল নামে পরিচিত)।
উত্তর-পশ্চিমে দক্ষিণ এশিয়ার সীমানা আফগানিস্তানের সঙ্গে, যা কয়েক দশক ধরে যুদ্ধক্ষেত্র। চীন থেকেও প্রবেশ সম্ভব হয় কারাকোরাম মহাসড়ক দিয়ে অথবা নেপাল দিয়ে, তবে তিব্বতের মধ্য দিয়ে যাতায়াত করতে বিশেষ অনুমতি প্রয়োজন। মিয়ানমার থেকে স্থলপথে প্রবেশের জন্য প্রচুর আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার সম্মুখীন হতে হয় বলে জানা যায়।
বিমানে
[সম্পাদনা]গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগুলোর মধ্যে রয়েছে:
- বাংলাদেশ - ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট
- ভুটান - পারো (নিকটবর্তী থিম্পু)
- ভারত - দিল্লি, মুম্বাই, বেঙ্গালুরু, চেন্নাই, কলকাতা, হায়দ্রাবাদ, আহমেদাবাদ, কোচি
- মালদ্বীপ - মালে
- নেপাল - কাঠমান্ডু
- পাকিস্তান - করাচি, লাহোর, ইসলামাবাদ, পেশোয়ার, ফয়সালাবাদ, মুলতান, কোয়েটা, সিয়ালকোট
- শ্রীলঙ্কা - কলম্বো
উত্তর আমেরিকার পশ্চিম উপকূল থেকে আসা অনেক ফ্লাইট সিঙ্গাপুর ও ব্যাংকক হয়ে পৌঁছে। আর পূর্ব উপকূল থেকে ছেড়ে আসা ফ্লাইটগুলো সাধারণত ইউরোপের কোনো একটি শহরে বিরতি নেয়, যা এয়ারলাইন্সের উপর নির্ভর করে।
ইউরোপ থেকে আসা ফ্লাইটগুলো সাধারণত দুবাই, দোহা এবং আরও কয়েকটি বড় এয়ারলাইন হাবের মাধ্যমে পৌঁছে।
ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যের মধ্যে সরাসরি ফ্লাইটের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে।
নৌপথে
[সম্পাদনা]কিছু ক্রুজ জাহাজ এ অঞ্চলে আসে। ছোট জাহাজেও প্রবেশ করা সম্ভব, তবে ভ্রমণের পরিকল্পনা করার আগে যথাযথ গবেষণা করা জরুরি। কারণ এ অঞ্চলের কিছু অংশ সোমালি দস্যুদের কার্যক্রমের সঙ্গে মিলে যায়। তাঁদের সঙ্গে মুখোমুখি হওয়া যেকোনো মূল্যে এড়ানো উচিত।
ঘুরে দেখুন
[সম্পাদনা]রেলে করে
[সম্পাদনা]যদিও পুরো অঞ্চল একসময় ব্রিটিশ শাসনের অধীনে ছিল, তবুও দক্ষিণ এশিয়ার রেলব্যবস্থা দেশভেদে ভিন্ন। ভারতে রয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বিস্তৃত রেল নেটওয়ার্ক (দেখুন ভারতে রেল ভ্রমণ)। অন্যদিকে পাকিস্তানের রেলব্যবস্থা অনেকটাই অনুন্নত। শ্রীলঙ্কার রেলব্যবস্থা কার্যকর ও সাশ্রয়ী, আর পাহাড়ি এলাকা ও চা-বাগানের মনোরম দৃশ্যাবলী অন্তর্ভুক্ত করে। বাংলাদেশ মূলত অতিরিক্ত ভিড়যুক্ত ট্রেনের জন্য পরিচিত। অপরদিকে মালদ্বীপ, নেপাল ও ভুটানে কোনো রেলব্যবস্থা নেই।

প্রকৃতি
[সম্পাদনা]- আরও দেখুন: ভারতের জাতীয় উদ্যান ও বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য
পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বতশ্রেণি থেকে শুরু করে সর্বাধিক বৃষ্টিপাতপ্রবণ উপকূলীয় অঞ্চল পর্যন্ত দক্ষিণ এশিয়ার প্রকৃতি একদিকে নাটকীয়, অন্যদিকে জনসংখ্যা ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির চাপে বিপর্যস্ত। দক্ষিণ এশিয়া ইন্দোমালয়ান বন্যপ্রাণী অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত, যেখানে এশীয় হাতি, বাঘ ও ময়ূরের মতো প্রতীকী প্রজাতি রয়েছে।
বিশেষ করে নেপাল ও কাশ্মীর পর্বতারোহণের জন্য বিশ্বব্যাপী পরিচিত।
ধর্ম ও আধ্যাত্মিকতা
[সম্পাদনা]- আরও দেখুন: দক্ষিণ এশিয়ার পবিত্র স্থানসমূহ
দক্ষিণ এশীয় ধর্মীয় আন্দোলন যেমন হিন্দুধর্ম, বৌদ্ধধর্মের রয়েছে দীর্ঘ ইতিহাস। বিংশ শতাব্দী থেকে এগুলো মহাদেশীয় সীমা অতিক্রম করে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করেছে। অনেক পর্যটক দক্ষিণ এশিয়ায় আসেন যোগ শিক্ষা নিতে, যা প্রাচীন ভারতের দেহ, মন ও আত্মার অনুশীলনের একটি সমষ্টি।
ভ্রমণপথ
[সম্পাদনা]
ঐতিহাসিক বিষয়
[সম্পাদনা]খেলাধুলা
[সম্পাদনা]কী করবেন
[সম্পাদনা]কেনাকাটা
[সম্পাদনা]এই অঞ্চলের বেশিরভাগ দেশে কেনাকাটার সময় দর-কষাকষি অত্যাবশ্যক।
ভারত ও পাকিস্তানে কার্পেট তৈরির দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। এ অঞ্চল আরও অসংখ্য শিল্পকর্ম ও হস্তশিল্প সামগ্রী উৎপাদন করে, যা প্রায়ই শ্রম ব্যয় কম হওয়ার কারণে সাশ্রয়ী মূল্যে পাওয়া যায়। বিস্তারিত জানতে প্রতিটি দেশের নিবন্ধ দেখুন।
খাওয়া-দাওয়া
[সম্পাদনা]- আরও দেখুন: দক্ষিণ এশীয় রান্না

দক্ষিণ এশীয় সংস্কৃতির প্রকৃত স্বাদ পেতে হলে আপনাকে অবশ্যই এর সুস্বাদু খাবার খেতে হবে। কেবল ভারতেই পৃথিবীর সেরা কিছু রান্নার সমাহার রয়েছে; তবে এই অঞ্চলের প্রায় সর্বত্রই আপনার রুচি অনুযায়ী কিছু না কিছু খুঁজে পাবেন।
পানীয়
[সম্পাদনা]চা (চাই) পুরো অঞ্চলের একটি সাধারণ পানীয়। এছাড়াও, মুসলিম সম্প্রদায় এবং ভারতের কিছু হিন্দু-অধ্যুষিত এলাকা যেমন গুজরাটে মদ্যপান নিষিদ্ধ বা সীমিত হলেও ফলের রস সর্বত্র সহজলভ্য।
নিরাপত্তা
[সম্পাদনা]এ অঞ্চলের অধিকাংশ স্থান ভ্রমণের জন্য নিরাপদ। তবে ব্যতিক্রম হলো উত্তর-পশ্চিম পাকিস্তান, যা আফগানিস্তানের সীমানার কাছাকাছি, এবং কাশ্মীরের কিছু অংশ। উত্তর-পশ্চিম পাকিস্তান একটি যুদ্ধক্ষেত্র এবং প্রায়ই তেহরিক-ই-তালেবানের মতো উগ্রপন্থী গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণে থাকে; তাই যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলা উচিত।
{{#assessment:অঞ্চল|রূপরেখা}}

