কলকাতা/দক্ষিণ
দক্ষিণ কলকাতা
[সম্পাদনা]দক্ষিণ কলকাতা হল কলকাতার আধুনিক ও আভিজাত্যপূর্ণ অংশ। এখানে আধুনিক অ্যাপার্টমেন্ট ব্লক, প্রশস্ত রাস্তা, সংস্কৃতিকেন্দ্র, প্রাচীন মন্দির এবং জনবহুল বাজার একসঙ্গে মিশে রয়েছে। উত্তর কলকাতার সরু গলির তুলনায় দক্ষিণ কলকাতা অনেক বেশি খোলা ও পরিশীলিত মনে হয়, তবে এখানেও শহরের উষ্ণতা অটুট রয়েছে।
বুঝুন
[সম্পাদনা]দক্ষিণ কলকাতা এ জে সি বসু রোড-এর দক্ষিণে বিস্তৃত, পশ্চিমে আদি গঙ্গা এবং পূর্বে সিয়ালদহ দক্ষিণ লাইন দ্বারা সীমাবদ্ধ। এর প্রধান অঞ্চলগুলির মধ্যে রয়েছে বালিগঞ্জ, ভবানীপুর, ঢাকুরিয়া, গড়িয়াহাট, হাজরা এবং কালীঘাট। আদি গঙ্গার পশ্চিমে রয়েছে আলিপুর, শহরের আরেকটি সমৃদ্ধ অঞ্চল।
পৌঁছান
[সম্পাদনা]- মেট্রোতে – লাইন ১ অশুতোষ মুখার্জি রোড এবং এস পি মুখার্জি রোড ধরে চলে, যা কালীঘাট, রবীন্দ্র সরোবর ইত্যাদি এলাকায় সংযোগ দেয়।
- বাসে – দক্ষিণ কলকাতার সর্বত্র বাস চলাচল করে; ভাড়া সস্তা ও যাতায়াত ঘন ঘন।
- ট্রেনে – বালিগঞ্জ জংশন সিয়ালদহ এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার সাথে সংযোগ স্থাপন করে।
- ট্যাক্সি/রিকশায় – কাছাকাছি বাজার ও আবাসিক এলাকায় যাওয়ার জন্য সুবিধাজনক।
দেখুন
[সম্পাদনা]জাদুঘর ও ঐতিহ্য
[সম্পাদনা]- বিরলা শিল্প ও প্রযুক্তি জাদুঘর – এশিয়ার প্রথম বিজ্ঞান জাদুঘর। (প্রবেশমূল্য ₹১৫)
- সিমা (আন্তর্জাতিক আধুনিক শিল্প কেন্দ্র) – আধুনিক শিল্পের অন্যতম গ্যালারি। (প্রবেশমূল্য নেই)
- মৌলানা আজাদ জাদুঘর – ভারতের প্রথম শিক্ষামন্ত্রীর বাসভবন। (প্রবেশমূল্য নেই)
- নেতাজি ভবন – সুভাষচন্দ্র বসুকে উৎসর্গীকৃত। (প্রবেশমূল্য: প্রাপ্তবয়স্ক ₹২০, শিশু ₹১০)
- ট্রাম ওয়ার্ল্ড – কলকাতার ১৫০ বছরের ঐতিহ্যবাহী ট্রাম নিয়ে প্রদর্শনী।
উদ্যান ও হ্রদ
[সম্পাদনা]- রবীন্দ্র সরোবর – হ্রদের ধারে হাঁটার পথ, নৌকো ক্লাব, খোলা আকাশের থিয়েটার।
- দেশপ্রিয় পার্ক – খেলার মাঠ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং উৎসবের জন্য বিখ্যাত।
ধর্মীয় স্থান
[সম্পাদনা]- কালীঘাট মন্দির – ৫১ শক্তিপীঠের একটি, দেবী কালীর উদ্দেশ্যে নিবেদিত।
- বিরলা মন্দির – রাধাকৃষ্ণকে উৎসর্গীকৃত, আধুনিক স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত।
- নিপ্পনজান মিয়োহোজি বৌদ্ধ মন্দির – ১৯৩৫ সালে প্রতিষ্ঠিত বিরল জাপানি মন্দির।
করুন
[সম্পাদনা]- সিনেমা হল – প্রিয়া সিনেমা বা বসুস্রী হলে সিনেমা দেখুন।
- ক্যালকাটা ক্লাব – বাংলার ঐতিহ্যবাহী সামাজিক মিলনকেন্দ্র।
- ক্যালকাটা ক্রিকেট ও ফুটবল ক্লাব – ১৭৯২ সালে প্রতিষ্ঠিত খেলার আসর।
- রবীন্দ্র সরোবর স্টেডিয়াম – ৪০,০০০ আসন বিশিষ্ট ক্রীড়াঙ্গন।
কিনুন
[সম্পাদনা]- গড়িয়াহাট বাজার – দক্ষিণ কলকাতার সবচেয়ে জনপ্রিয় কেনাকাটার জায়গা। শাড়ি থেকে শুরু করে রাস্তার খাবার সবই আছে।
- লেক মার্কেট ও ল্যান্সডাউন মার্কেট – তাজা ফলমূল, ফুল ও ঐতিহ্যবাহী পণ্য।
- ফোরাম মল ও লেক মল – ব্র্যান্ডের দোকান, মাল্টিপ্লেক্স এবং খাবারের জায়গা।
খাবার
[সম্পাদনা]- ৬ বালিগঞ্জ প্লেস – আসল বাঙালি খাবার।
- ভোজোহরি মান্না – ঘরোয়া বাঙালি রান্নার জন্য বিখ্যাত।
- আজাদ হিন্দ ধাবা – রাত জাগা মানুষের প্রিয় উত্তর ভারতীয় খাবার।
- বানানা লিফ ও তামারিন্ড – দক্ষিণ ভারতীয় স্বাদের জন্য।
- আউধ ১৫৯০ – আউধি খাবারের আভিজাত্যপূর্ণ অভিজ্ঞতা।
- গড়িয়াহাট ও মহারাজা/মহারানির স্টল – কচুরি, জিলাপি ও রোল যা কলকাতার রাস্তার স্বাদ।
পানীয়
[সম্পাদনা]- কাপ ই-বং – আরামদায়ক ক্যাফে যেখানে প্ল্যাটার ও আউটডোর বসার জায়গা আছে।
- মোচা ও আন্ডারগ্রাউন্ড (হোটেল হিন্দুস্থান ইন্টারন্যাশনাল) – নাইটলাইফ প্রেমীদের জন্য।
থাকুন
[সম্পাদনা]বাজেট (₹২,০০০-এর নিচে)
[সম্পাদনা]- ফার্ন হোটেল
- হোটেল কোমলা বিলাস
- কর্নফিল্ড রিট্রিট – হোমস্টে, ভাড়া ₹৮৪৯।
মধ্যম মান (₹২,০০০–৫,০০০)
[সম্পাদনা]- দ্য বেস্ট ইন – ₹২,০০০–৩,০০০
- দ্য সামিলটন – ₹৩,০০০–৪,৫০০
- সেন্ট্রাল বি অ্যান্ড বি – ₹২,৬৯৯
বিলাসবহুল (₹৫,০০০-এর বেশি)
[সম্পাদনা]- হোটেল হিন্দুস্থান ইন্টারন্যাশনাল
- রোল্যান্ড হোটেল
- বোধি ট্রি বুটিক গেস্টহাউস
সংযোগ
[সম্পাদনা]দক্ষিণ কলকাতায় ফাইবার ইন্টারনেট ক্যাফে, কো-ওয়ার্কিং স্পেস এবং ওয়াইফাই-যুক্ত হোমস্টে রয়েছে। অনেক ক্যাফেই আবার ছাত্রছাত্রী ও পর্যটকদের জন্য ডিজিটাল হাবে পরিণত হয়েছে।
মানিয়ে নিন
[সম্পাদনা]- হাসপাতাল – এএমআরআই ও ফোর্টিস-এর মতো বড় বড় হাসপাতাল কাছেই রয়েছে।
- মন্দির – মানসিক প্রশান্তির জন্য কালীঘাট বা বিরলা মন্দিরে যেতে পারেন।
পরবর্তী যাত্রা
[সম্পাদনা]দক্ষিণ কলকাতা থেকে সহজেই যেতে পারবেন:
- আলিপুর – আলিপুর চিড়িয়াখানা ও ঔপনিবেশিক প্রাসাদসমূহ।
- মধ্য কলকাতা – পার্ক স্ট্রিট, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল ও ব্যবসায়িক এলাকা।
- দক্ষিণ ২৪ পরগনা – সুন্দরবনের প্রবেশদ্বার।