বিষয়বস্তুতে চলুন

উইকিভ্রমণ থেকে
রাজধানী বাগদাদ
মুদ্রা Iraqi dinar (IQD)
জনসংখ্যা ৩৮.২ মিলিয়ন (2017)
বিদ্যুৎ ২৩০ ভোল্ট / ৫০ হার্জ (ইউরোপ্লাগ, টাইপ ডি, বিএস ১৩৬৩)
দেশের কোড +964
সময় অঞ্চল ইউটিসি+০৩:০০, ইউটিসি+০৪:০০, Asia/Baghdad
জরুরি নম্বর 112, 104 (পুলিশ), 115 (দমকল বাহিনী), 122 (জরুরি চিকিৎসা সেবা), 100
গাড়ি চালানোর দিক ডান
ভ্রমণ সতর্কীকরণ সতর্কীকরণ: ইরাকে ভ্রমণ অত্যন্ত বিপজ্জনক এবং দৃঢ়ভাবে নিরুৎসাহিত। ইরাক জুড়ে নিরাপত্তা পরিস্থিতি অস্থিতিশীল এবং অনিশ্চিত, এবং দ্রুত অবনতি হতে পারে। সন্ত্রাসী হামলা ও অপহরণ অব্যাহত রয়েছে। কুর্দিস্তানের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল ছাড়া ইরাকের জন্য পর্যটন ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। ইরাকি কুর্দিস্তান নিয়ে গঠিত উত্তর-পূর্ব প্রদেশগুলি বিদেশীদের জন্য কিছুটা নিরাপদ, তবে দেশের যেকোনো জায়গায় বিক্ষিপ্ত সহিংসতা ঘটতে পারে।

ব্রিটিশ পররাষ্ট্র দপ্তর, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট এবং অন্যান্য সরকার ইরাকে সমস্ত ভ্রমণের বিরুদ্ধে পরামর্শ দেয়।

(সর্বশেষ হালনাগাদ: জানু ২০২২)

ইরাক একটি মধ্যপ্রাচ্যের রাষ্ট্র। বাগদাদ ইরাকের রাজধানী। ইরাকের দক্ষিণে কুয়েত এবং সৌদি আরব, পশ্চিমে জর্ডান, উত্তর-পশ্চিমে সিরিয়া, উত্তরে তুরস্ক এবং পূর্বে ইরান অবস্থিত।

অঞ্চল

[সম্পাদনা]

ইরাক উনিশ গভর্নরেট (বা প্রদেশ) দ্বারা গঠিত হয়। ইরাকী কুর্দিস্তান (ইরাকী, দোহুক, সুলাইমানিয়া এবং হালাবজা) ইরাকের একমাত্র আইনানুযায়ী নির্ধারিত অঞ্চল, যার নিজস্ব সরকার এবং আধা সরকারি বাহিনী রয়েছে।

উত্তর ইরাক প্রদেশ
  • নিনাওয়া প্রদেশ
পশ্চিম ইরাক প্রদেশ
  • আল আনবার প্রদেশ(সবথেকে বৃহত্তম প্রদেশ)
মধ্য ইরাক প্রদেশ
  • বাগদাদ প্রদেশ(সবথেকে জনবহুল প্রদেশ)
দক্ষিণ ইরাক প্রদেশ
  • আল মুসান্না প্রদেশ
  • বাসরাহ প্রদেশ

বৈশিষ্ট্য

[সম্পাদনা]

ভূগোল

[সম্পাদনা]

ইরাক মূলত মরুময় দেশ, কিন্তু দজলা ও ফোরাতের মধ্যবর্তী অববাহিকার ভূমি উর্বর। নদীগুলি প্রতিবছর প্রায় ৬ কোটি ঘনমিটার পলি বদ্বীপে বয়ে নিয়ে আসে। দেশটির উত্তরাঞ্চল পর্বতময়। সর্বোচ্চ পর্বতের নাম চিকাহ দার, যার উচ্চতা ৩,৬১১ মিটার। পারস্য উপসাগরে ইরাকের ক্ষুদ্র একটি তটরেখা আছে। সমুদ্র উপকূলের কাছের অঞ্চলগুলি জলাভূমি ছিল, তবে ১৯৯০-এর দশকে এগুলির পানি নিষ্কাশন করা হয়। ইরাকের জলবায়ু মূলত ঊষর। শীতকাল শুষ্ক ও ঠাণ্ডা; গ্রীষ্মকাল শুষ্ক, গরম, ও মেঘহীন। উত্তরের পার্বত্য অঞ্চলে শীতকালে ভারী বরফ পড়ে এবং এতে মাঝে মাঝে বন্যার সৃষ্টি হয়।

ইতিহাস

[সম্পাদনা]

ইরাক বিশ্বের প্রাচীনতম সভ্যতা মেসোপটেমিয়ার জন্য সারা বিশ্বের বুকে গৌরবে মহীয়ান। টাইগ্রিস ও ইউফ্রেটিস (দজলা ও ফোরাত) নদীদ্বয়কে কেন্দ্র করে খ্রিস্টপূর্ব ৬০০০ বছর আগে গড়ে ওঠে এ সভ্যতা। বর্তমান আরব বিশ্বের ইরান, কুয়েত, তুরস্ক, সিরিয়া, জর্ডান, কুয়েত প্রভৃতি দেশের অংশবিশেষ এর অন্তর্ভুক্ত ছিল। প্রাক্তন সুমেরীয়, অ্যাসেরীয়, ব্যাবিলনীয় ও ক্যালডীয় সভ্যতা বৃহত্তর মেসোপটেমীয় সভ্যতারই বিভিন্ন পর্যায়। তবে বিশ্বব্যাপী মেসোপটেমীয় সভ্যতার কারণে ইরাকের মহিমা বর্তমান বিশ্বব্যবস্থায় অনেকটাই ম্রিয়মাণ। কারণ একদিকে রয়েছে ইরাকের বর্তমান দুর্বল অর্থনৈতিক কাঠামো, অন্যদিকে আল কায়েদা, আইএসসহ নানা জঙ্গিবাদী ও পরাশক্তি সমর্থনপুষ্ট নানা সরকার বিদ্রোহী গেরিলাগোষ্ঠীর অভ্যুদ্যয়। নব্বইয়ের দশক থেকেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বৈরিতার মাধ্যমেই মূলত দেশটির রাজনৈতিক স্থবিরতা শুরু হয়। ১৯৯০ সালে সাদ্দাম হোসেনের নেতৃত্বাধীন ইরাক কুয়েতে আগ্রাসন চালায় এবং কুয়েতকে ইরাকের ১৯তম প্রদেশ ঘোষণা করে। ইরাকের দখলদারি থেকে কুয়েতকে মুক্ত করার লক্ষ্যে মার্কিন নেতৃত্বে বহুজাতিক বাহিনী ইরাকের বিরুদ্ধে ২রা আগস্ট ১৯৯০ থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৯১ সাল পর্যন্ত 'অপারেশন ডেজার্ট স্ট্রম' নামক অপারেশন পরিচালনা করে। এটি প্রথম উপসাগরীয় যুদ্ধ নামেও পরিচিত। এর প্রায় এক দশক পর ইরাকে মারাত্নক বিধ্বংসী পারমাণবিক অস্ত্রের মজুদ রয়েছে এ কারণ দর্শিয়ে ইরাকে সন্ত্রাস বিরোধী যুদ্ধের অংশ হিসেবে অভিযান পরিচালনা করে মার্কিন ও ইংরেজ যৌথ বাহিনী। ইতিহাসে এ ঘটনা দ্বিতীয় উপসাগরীয় যুদ্ধ নামে পরিচির। এছাড়া মার্কিন বাহিনী ইরাকের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি সাদ্দাম হোসেনকে গ্রেপ্তারের উদ্দেশ্যে ২০০৩ সালের ১৩ ডিসেম্বর 'অপারেশন রেড ডন' নামক আরেকটি অপারেশনও পরিচালনা করে। এভাবে গত কয়েক দশকে বিভিন্ন অস্থিরতা ও যুদ্ধের কারণে ইরাকের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ব্যবস্থায় দুর্দশা নেমে আসে। সাম্প্রতিকতম সময়ে আইএসআইএল (ইসলামিক স্টেটস ইন ইরাক অ্যান্ড লেভান্তে) নামক সন্ত্রাসী সংগঠন ইরাকের ভূমিতে গঠিত হয় এবং মসুলসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ নগরীতে শক্তিশালী ঘাঁটি গড়ে তোলে। এছাড়া দেশটির উত্তর সীমান্তবর্তী কুর্দিস্তান প্রদেশের বিচ্ছিন্নতাবাদ সমস্যাও ইরাকের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে ইরাকের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা এবং দুর্বল সরকার ও রাষ্ট্রব্যবস্থার কারণে বিশ্ব রাজনীতিতে দেশটির গুরুত্ব ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে।

আরবি ইরাকের সরকারি ভাষা। ইরাকের তিন-চতুর্থাংশেরও বেশি জনগণের মাতৃভাষা আরবি। ইরাকে প্রচলিত আরবি ভাষার লিখিত রূপটি ধ্রুপদী বা চিরায়ত আরবি ভাষার একটি পরিবর্তিত রূপ। কিন্তু কথা বলার সময় ইরাকের লোকেরা আরবির বিভিন্ন কথ্য উপভাষা ব্যবহার করেন। এদের মধ্যে মেসোপটেমীয় বা ইরাকী আরবিউপভাষাটিতে ১ কোটিরও বেশি লোক কথা বলেন। সেমিটীয় আরবি ভাষার বাইরে ইরাকে বিভিন্ন ইরানীয় ভাষা প্রচলিত। এদের মধ্যে কুর্দি ভাষা সবচেয়ে বেশি প্রচলিত। ইরাকের জনগণের প্রায় ২০% কুর্দি ভাষায় কথা বলেন। এছাড়াও ইরাকের বিভিন্ন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ে নব্য আরামীয় ভাষা, আলতায়ীয় ভাষা (যেমন- আজারবাইজানি, তুর্কমেন, ইত্যাদি), আর্মেনীয় ভাষা, জিপসি ভাষা, ইত্যাদি প্রচলিত।

খাদ্য

[সম্পাদনা]
উপাদান

ইরাকিদের দৈনন্দিন খাদ্য তালিকার কিছু সাধারণ উপাদান হচ্ছেঃ

  • শাকসব্জি- বেগুন, টমেটো, শালগম, শিম, শ্যালট, ঢেঁড়স, পেঁয়াজ, ডাল, আলু, বাঁধাকপি, লেটুস, রসুন, মরিচ।
  • শস্য - চাল, বুলঘুর গম এবং বার্লি।
  • ডাল- মসুর, ছোলা।
  • ফল - জলপাই, খেজুর, এপ্রিকট, তাল, ডুমুর, আঙুর, তরমুজ, বেদানা, আপেল, চেরি, লেবুজাতীয় ফল যেমন কমলা লেবু, লেবু।
  • পনির - বালাদি, ফেতা এবং হাল্লৌমি।
মেজ্জা
শুকনো ফল

মেজ্জা হচ্ছে হালকা খাবার যা প্রায়শই পানীয়ের সাথে পরিবেশন করা হয়। পানীয়টি ঝাঁঝ স্বাদের হয় যেমন আরক, অঊজু, রাকি অথবা বিভিন্ন মদ যা স্পেনের তাপাসের মত।

  • বাইজেন্টাইন মাকলি - যা ঠান্ডা অবস্থায় পরিবেশন করা হয়। ঝলসানো বা ভাঁজা কাটা রুটির সাথে পরিবেশন করা হয়। গোলমরিচ অথবা রসুন লেবুন ভিনেগার দিয়ে বৈচিত্র্য আনা হয়।
  • ফাট্টুস- এক ধরণের সালাদ যা বাগানের বিভিন্ন সবজি দিয়ে তৈরী করা হয় এবং ভাজা রুটির সঙ্গে পরিবেশন করা হয়।
  • তাব্বুলেহ - একধরণের সালাদা যা মেজ্জের অংশ হিসেবে প্রায়শই ব্যবহৃত হয়।
  • তুরশি - সব্জির আচার যা বলকান ও মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশের রন্ধনশৈলীর অংশ। এটা সনাতন হজমীকারক।
  • আরবীয় সালাদ
স্যুপ ও স্ট্যু

ভাত জাতীয় খাবারের উপর বিভিন্ন প্রকারের ঝোল পরিবেশন করা ইরাকী রন্ধনশৈলীর প্রধান অংশ।

  • ফাসৌলিয়া - শুকনো সাদা শিম, জলপাই তেল এবং সব্জি দিয়ে তৈরী স্যুপ।
  • হারিসসা
  • মসুর ডালের স্যুপ
  • মারগাট বামিয়া বা শুধুই বামিয়া যা ঢেড়স এবং ভেঁড়া বা গোমাংসের টুকরো দিয়ে তৈরি করা
  • ফেসেঞ্জেন - হয়। সনাতনভাবে এটা হাঁস বা মুরগী দিয়ে তৈরী করা হয়।
  • কেবাব - মাংস ঝলসে কেবাব তৈরী করা হয় যা বাংলাদেশে দেশে কাবাব নামে পরিচিত। তবে কাবারের বিভিন্ন প্রকারভেদ আছে। কাবাব তৈরীর সব থেকে পরিচিত উপাদান হচ্ছে গরু, ছাগল বা ভেড়ার মাংস। তবে অনেক স্থানে হাঁস-মুরগী ও মাছের কেবাব প্রস্তুত করা হয়।
  • কিমা - প্রথাগতভাবে দক্ষিণ ইরানে বাৎসরিক আশুরা পালনের সময়ে কিমা প্রস্তুত করা হয়। কিমা হচ্ছে প্রাচীন আক্কাডিয় ভাষার শব্দ যার অর্থ কুচিকুচি করে কাটা।
  • মাকলুবা
  • মাসগুফ -
  • মারগাট বেতিনিজান
  • বেদানার স্যুপ
  • শরবত রুম্মান
  • কুজি
  • তাশরিব
  • তাহদিগ
  • তেপসি বেতিনিজান।
মাংসের গোল্লা
  • দোলমা - দোলমাতে মাংসের ব্যবহার হতেও পারে নাও পারে। সব্জির ব্যবহার প্রধান। আঙুর পাতা দোলমা অধিক প্রচলিত।
  • ফালাফেল - এর উৎস মিশলে। মধ্যপ্রাচ্যে ফাস্টফুড হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
  • কুব্বা
  • কোফতা
  • ম্যান্টি
  • সমুসা
চালের খাবার
  • দোলমা
  • বিরিয়ানী
  • খিঁচুড়ি
  • মুজাদ্দারা
  • পিলাদ
  • তাবিত
  • কুজি