মিরিক হল সেই জায়গা, ভারতের অঙ্গরাজ্য পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং জেলার যে পর্যটন কেন্দ্রে একমাত্র বড়ো পাহাড়ি ঝিল বা লেক আছে। মিরিক পর্যটন কেন্দ্রের বৈশিষ্ট্য হল: চারিদিকে পাহাড় আর মাঝখানে ঝিল! ঝিলের পাড়ে বসে, কিংবা বোটিং করতে করতে; একা একা, কিংবা সাথীকে সঙ্গে নিয়ে শীতলতার ছোঁয়া পাওয়ার শিহরিত মুহূর্ত মনের মণিকোঠায় গেঁথে রাখার মতো ব্যাপার প্রত্যেক পর্যটকের একান্ত নিজস্ব! একসঙ্গে এতকিছু পাওয়া যায় বলেই মিরিক পাহাড় ভ্রমণকারীদের কাছে স্বর্গরাজ্য হয়ে উঠেছে। পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং পাহাড়ের সবচেয়ে জনবহুল পর্যটন কেন্দ্রগুলোর অন্যতম হল এই মিরিক লেক। পাহাড়, বনবীথি আর ঝিল - এই তিনের সঙ্গমে মিরিক হয়ে উঠেছে জমজমাট পর্যটন কেন্দ্র। মিরিক কথাটি এসেছে মির-ইয়ক থেকে এসেছে। এর অর্থ আগুনে পুড়ে যাওয়া স্থান।
পাহাড় ঘোরা ক্লান্তি কাটানোর জন্যে অজস্র ক্যাফে-রেস্তোরাঁ আর হস্তশিল্প স্মৃতিসম্পদ কেনাকাটার দোকানের অভাব নেই। আবার যাতায়াতের পথেই পড়বে নেপাল সীমান্তের পশুপতি বাজার। যেখানে সবই হাতের কাছে পাওয়া যাবে। এককথায় দার্জিলিং পাহাড়ে ভ্রমণরত পর্যটকদের মিরিকের ঝিলের হাওয়া খেতে আসতেই হবে।
কীভাবে যাবেন?
[সম্পাদনা]- কলকাতা থেকে ট্রেনে নিউ জলপাইগুড়ি। নিউ জলপাইগুড়ি থেকে মিনিবাস অথবা ছোটো চারচাকার ভাড়াগাড়িতে হিলকার্ট রোড ধরে কার্সিয়াং, সোনাদা, ঘুম, সুখিয়াপোখরি, সীমানা (ভারত-নেপাল সীমান্ত) হয়ে মিরিক।
- কলকাতা থেকে দিন/রাত, সাধারণ/বাতানুকূল বাসে শিলিগুড়ি। শিলিগুড়ি থেকে সুকনা হয়ে মিনিবাস অথবা চারচাকার ভাড়াগাড়িতে সরাসরি মিরিক।
- কলকাতা থেকে নিজের গাড়িতে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে শিলিগুড়ি, সুকনা হয়ে সরাসরি মিরিক আনুমানিক সাতশো কিলোমিটার পথ।
দেখুন
[সম্পাদনা]- 1 সুমেন্দু হ্রদ (মিরিক হ্রদ)। এটি মিরিকের একটি হ্রদ, যার দৈর্ঘ্য প্রায় ১/২ কিলোমিটার। হ্রদের ধারে পাইন গাছের ঘন বন রয়েছে। হ্রদ থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যায়। এই লেকটির উপর একটি ৮০ ফুট দীর্ঘ সাঁকো রয়েছে। লেকের জলে নৌকাবিহার এবং টাট্টু ঘোড়ায় চেপে লেকের চারপাশ প্রদক্ষিণ করার ব্যবস্থা রয়েছে।
- 2 বোকার মঠ, ☎ +৯১ ০৩৫৪ ২২৪ ৩৫৭৫। মিরিক সর্বোচ্চ বিন্দু হল বোকার মঠ। এটি প্রায় ১,৭৬৮ মিটার (৫,৮০১ ফুট) উঁচুতে। এটি একটি বৌদ্ধ ধ্যান কেন্দ্র।
- 3 রামিতে দারা ভিউ পয়েন্ট, গিটিঙ্গি চা বাগান, পশ্চিমবঙ্গ ৭৩৪২২৩। শহরের কাছেই অবস্থিত একটি ভিউ পয়েন্ট যেখান থেকে চারপাশের পাহাড় ও বিস্তর্ণ সমভূমি অঞ্চল দেখতে পাওয়া যায়।
- 4 ডন বসকো চার্চ, ডন বস্কো সেন্টার, পশ্চিমবঙ্গ, পিন ৭৩৪২১৪। ডন বসকো স্কুলের কাছেই অবস্থিত এটি দার্জিলিং জেলার অন্যতম সুন্দর এবং বড় ক্যাথলিক চার্চ।
রাত্রিযাপন
[সম্পাদনা]মিরিকে থাকার মতো অনেক হোটেল আছে; তবে যেহেতু শিলিগুড়ি থেকে এক-দেড় ঘণ্টার পথ, তাই শিলিগুড়িতেও থাকা যায়।
- 1 প্রধান হোটেল মিরিক, মিরিক রোড, মিরিক, পিন ৭৩৪২১৪, ☎ +৯১ ০৮৪৩৬৩ ২৩১১১।
- 2 গোল্ডেন সানভিউ হোমস্টে, ৪ নং ওয়ার্ড, মিরিক দেওসায়দরা, ☎ +৯১ ৯৮৩১৬ ৩২৫৮৯।
কী খাবেন?
[সম্পাদনা]- মিরিকে শুধুমাত্র পাহাড়ি খানা নয়, বৌদির হোটেলে ঘরোয়া মাছ, ভাত, আলু-পোস্ত, লেটুস শাকভাজাও খাওয়া যায়।
কী কিনবেন?
[সম্পাদনা]- বর্তমানে মিরিকে অনেক পাহাড়ি হস্তশিল্পের সামগ্রীর সঙ্গে নানা উপহারের জিনিস পাওয়া যায়।
- কাছাকাছি নেপাল সীমান্তের পশুপতি বাজারে লোভনীয় জিনিসপত্র দরকষাকষি করলে অনেক সস্তায় পাওয়া যায়।