আসানসোল হলো পশ্চিমবঙ্গের রাঢ অঞ্চলের একটি শিল্প মহানগর এবং রাজ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম নগরাঞ্চল।
জানুন
[সম্পাদনা]আসানসোল পূর্ব ভারতের একটি গুরুত্বপূর্ণ খনি ও শিল্প কেন্দ্র। বেশ কয়েক বছর ধরে আসানসোল কয়লা খনিঅঞ্চলের বৃদ্ধি, রেলপথের উন্নয়ন এবং বার্নপুরে ইন্ডিয়ান আয়রন অ্যান্ড স্টিল কোম্পানির বৃদ্ধির সাথে সাথে আসানসোলের উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নয়ন হয়েছে।
যোগাযোগ ব্যবস্থা
[সম্পাদনা]আকাশপথ
[সম্পাদনা]নিকটতম বিমানবন্দর হলো কাজী নজরুল ইসলাম বিমানবন্দর (অণ্ডাল বিমানবন্দর)। সড়কপথে দুর্গাপুর থেকে আসানসোলের দূরত্ব প্রায় ৩৫ কিলোমিটার। আসানসোলের নিকটতম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হলো কলকাতার নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর।
ট্রেন যোগে
[সম্পাদনা]- 1 আসানসোল জংশন রেলওয়ে স্টেশন।
আসানসোল হাওড়া-দিল্লি মেন লাইনের একটি গুরুত্বপূর্ণ জংশন। বেশিরভাগ ট্রেন এখানে থামে। দিল্লি, জম্মু তাউই, দেরাদুন, কালকা, কাঠগোদাম, যোধপুর, গোয়ালিয়র, ইন্দোর, জব্বলপুর এবং মুম্বাইয়ের জন্য দৈনিক সরাসরি ট্রেনগুলি হয় আসানসোল থেকে শুরু হয় বা আসানসোল জংশন রেলওয়ে স্টেশনের মধ্য দিয়ে যায়। কন্যাকুমারী, যশবন্তপুর, আহমেদাবাদ এবং ডিব্রুগড়ের মতো দূরবর্তী গন্তব্যস্থানগুলির জন্য বেশ কয়েকটি সাপ্তাহিক এবং দ্বি-সাপ্তাহিক ট্রেন রয়েছে। কলকাতা থেকে আসানসোলে আসার জন্য অনেকগুলি স্বল্প দূরত্বের এক্সপ্রেস ট্রেন রয়েছে। এই ট্রেনগুলি আদর্শ। এছাড়া স্বল্প দূরত্বের লোকাল ট্রেনও রয়েছে। স্বল্প দূরত্বের এক্সপ্রেস ট্রেনে আগে থেকে আসন সংরক্ষণ করতে ভুলবেন না যেন। কারণ এই সব ট্রেনে সাধারণত ভিড় থাকে। অবশ্য কিছু দূরপাল্লার ট্রেনে হাওড়া থেকে আসানসোল পর্যন্ত আসন সংরক্ষণ পাওয়া যায়। আসানসোল রেলওয়ে স্টেশনে তিনটি ডাবল-বেডের এসি রিটায়ারিং রুম, দুটি ডাবল-বেডের নন-এসি রিটায়ারিং রুম এবং একটি আট শয্যা বিশিষ্ট ডরমেটরি রয়েছে। প্ল্যাটফর্ম নং ২ এবং ৭-এ এস্কেলেটর আছে। ওয়াইফাই পরিষেবা এখানে উপলব্ধ। স্টেশন চত্বরে একটি ফুড প্লাজা প্রতিদিনই ২৪ ঘন্টা খোলা থাকে। রেলওয়ের উচ্চশ্রেণীর যাত্রীদের জন্য একটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত লাউঞ্জও রয়েছে।
রাস্তা ধরে
[সম্পাদনা]শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ভলভো এবং এসবিএসটিসির বাস প্রতিদিন এসপ্ল্যানেড, কলকাতা থেকে দুর্গাপুর হয়ে আসানসোলের উদ্দেশ্যে যায়। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত নয় এমন অনেক সরকারি বাসও একই রাস্তা ধরে চলাচল করে। বাসের টিকিট অগ্রিম অনলাইনে অগ্রিম কাটা যায় অথবা বাস ছাড়ার আগে বাসস্ট্যন্ড থেকে আসন সংরক্ষণ করা যেতে পারে।
আসানসোল শহরটি দক্ষিণ এশিয়ার ঐতিহাসিক গ্র্যান্ড ট্রাঙ্ক রোডে অবস্থিত। কলকাতা থেকে যারা আসানসোলে আসবেন তাদের হয় দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে (এনএইচ ১৯) বা হাওড়া থেকে জিটি রোড দিয়ে আসা উচিত।
ঘুরুন
[সম্পাদনা]আসানসোল জংশন রেলওয়ে স্টেশনের বাইরে ভাড়া করা গাড়ি, অটোরিকশা এবং সাইকেল রিকশা পাওয়া যায়। তবে গাড়ীর চালকেরা কেউই মিটারে যায় না। তাই গাড়ীতে চড়ার আগে কত ভাড়া দিতে হবে সে সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে।
ট্যাক্সি করে
[সম্পাদনা]কলকাতার ট্যাক্সিগুলির মতোই আসানসোলের অ্যাম্বাসেডর ট্যাক্সিগুলি হলুদ এবং নীল রঙ করা। ট্যাক্সিগুলি রেলওয়ে স্টেশন এবং নির্দিষ্ট কিছু স্থান থেকে সহজেই পাওয়া যায়।
দেখুন
[সম্পাদনা]- 1 ঘাঘর বুড়ি মন্দির। দেবী চন্ডীকে উৎসর্গ করা একটি ছোট মন্দির, এটি আসানসোলের প্রাচীনতম মন্দির।
- 2 ইস্কো ইস্পাত কারখানা (বার্ণপুর স্টিল প্ল্যান্ট)। স্টিল অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (সেল) দ্বারা পরিচালিত, ইস্কো ইস্পাত কারখানা পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম প্রধান ইস্পাত কারখানা।
- 3 সুশান্ত রায় ওয়াক্স মিউজিয়াম।
- 4 বিদ্যাসাগর আর্ট গ্যালারি।
করুন
[সম্পাদনা]- 2 মনোজ টকিজ। আপনি এখানে নতুন মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা দেখতে পারেন। এটি ভালো সিনেমা হল। প্রায় ১৮০০ জন দর্শক আসন রয়েছে।
- 3 নেহেরু পার্ক, বার্নপুর (আসানসোল রেলওয়ে স্টেশন থেকে দূরত্ব ১৪ কিমি)। দামোদর নদীর তীরে একটি সুন্দর পার্ক। নেহেরুর একটি ঢালাই লোহার মূর্তি এই পার্কে রয়েছে। পার্কে একটি খাবারের দোকান আছে। পার্কের ভিতরে একটি বড় পুকুর রয়েছে যেখানে বোটিং সুবিধা আছে। আপনি পার্ক থেকে বিহারীনাথ পাহাড়ের চমৎকার দৃশ্য দেখতে পারেন।
- পানিফলার উষ্ণ প্রস্রবণ (শহরের কেন্দ্র থেকে প্রায় ৭ কিমি দূরে অবস্থিত), ☎ +৯১ ৯৯৩২১৩৩১৫৪। নৌবিহারের জন্য একটি জলাশয় এবং ফুলের সুন্দর বাগান সহ একটি পিকনিক স্পট।
- 4 রবীন্দ্র ভবন।
- 5 শতাব্দী পার্ক (আসানসোল রেলওয়ে স্টেশন থেকে ২ কিমি দূরে অবস্থিত)। এখানে প্যাডেল বোটিং এবং শিশুদের জন্য কয়েকটি রাইডের সুবিধা রয়েছে। সন্ধ্যা কাটানোর জন্য এটি চমৎকার জায়গা।
কিনুন
[সম্পাদনা]আসানসোল পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম একটি বড় বাজার। এখানে জামাকাপড়, ইলেকট্রনিক সামগ্রী, খেলাধুলার জিনিসপত্র ইত্যাদি কেনার জন্য অনেক দোকান রয়েছে।
আহার ও পানীয়
[সম্পাদনা]আসানসোলে বড় হোটেলগুলিতে বার এবং রেস্তোরাঁ রয়েছে। এই এলাকার বেশিরভাগ ক্লাবেই ঔপনিবেশিক পুরানো আমলের আকর্ষণ রয়েছে। তবে এইসব ক্লাবে সদস্য এবং তাদের অতিথিদের জন্য প্রবেশ সীমাবদ্ধ।
- অর্পন, বার্নপুর রোড, ☎ +৯১ ৩৪১-২২৫২০০৭। চিত্রা সিনেমা সংলগ্ন। এখানে একটি বার আছে।
- 1 গঙ্গার হোটেল, আসানসোল কোর্ট সংলগ্ন। ধাবার মতন। এখানে বিলাসিতা নেই তবে সুস্বাদু খাবার পাওয়া যায়। বাঙালি খাবার সুস্বাদু ডালওআলুভাজা অবশ্যই খেয়ে দেখবেন। 'রুই' এবং 'চিতল মাছ' থেকে ইলিশ এবং ছোটো মাছ পাওয়া যায়। যারা মাংশ বা ডিমের ডালনা পছন্দ করেন তারা সেটি অর্ডার করতে পারেন।
- গরম মশলা, জিটি রোড, ☎ +৯১ ৩৪১ ৩২৬২০৩০। এটি একটি সম্পূর্ণ নিরামিষ এসি রেস্টুরেন্ট
- সুধামৃত, বাস্তিন বাজার, জিটি রোড, ☎ +৯১ ৩৪১-২৩০২৭৫৭।
রাত্রিযাপন
[সম্পাদনা]- 1 হোটেল অজন্তা, ২২৫, হাটন রোড, ☎ +৯১ ৩৪১ ২২১৪০৫২, +৯১ ৩৪১ ২২১৪৭২১।
- 2 হোটেল আকবর, লেইটন প্লেস, বাস্টিন বাজার রোড, ☎ +৯১ ২২০৪৭৫৮।
- 3 হোটেল আরতি, ৭/১৬২ জিটি রোড, রাহা লেন, ☎ +৯১ ২২০৬৪৫৫-৫৮। আগমন: সকাল ১১টা, প্রস্থান: বেলা ১২টা।
- 4 হোটেল আসানসোল তাজ, বিবি রোড, বকর আলী লেন, ☎ +৯১ ২২১২০৭৫।
- 5 হোটেল আতিথি, অতিথি কমপ্লেক্স, ১, জিটি রোড, হাটন রোড মোড়, ☎ +৯১ ২২০১৪৩১।
- হোটেল ক্লাসিক, বাস্তিন বাজার, ☎ +৯১ ২২০৬৩৭৩।