উত্তরা হলো বাংলাদেশের ঢাকার একটি পাড়া ও নতুন ঢাকা অঞ্চলের একটি স্থান। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্মিত এই শহর এখন ঢাকা মহানগরীর একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান ও পর্যটন আকর্ষণ।
অঞ্চল
[সম্পাদনা]পূর্ব উত্তরা অভিজাত আবাসিক এলাকা, বাণিজ্যিক কেন্দ্র, সরকারি কোয়ার্টার, বিভিন্ন দপ্তর |
পশ্চিম উত্তরা শহরের মূল কেন্দ্র, কেনাকাটা অঞ্চল, ফুড স্ট্রিট, হোটেল এলাকা, সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, উত্তরা লেক |
নতুন উত্তরা রাজউক উত্তরা অ্যাপার্টমেন্ট প্রকল্প, নতুন আবাসিক এলাকা, মেট্রোরেল, বিভিন্ন সরকারি ভবন, দিয়াবাড়ি অঞ্চল |
বহিঃস্থ এলাকা উত্তরার উত্তর ও দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত একাধিক অপরিকল্পিত এলাকা |
জানুন
[সম্পাদনা]১৯৪৭ সালে ভারত বিভক্ত হওয়ার পর যখন ঢাকা পূর্ববঙ্গ প্রদেশের রাজধানী হয়, তখন শহরটি ছিল মফস্বলের মত যেখানে প্রাদেশিক রাজধানীর কোন সুযোগ সুবিধা ছিল না। পাকিস্তান সরকার শহরের উন্নয়নের জন্য বেশ কিছু প্রকল্প হাতে নেয়, যেগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল ঢাকার উত্তরে একটি স্যাটেলাইট টাউন প্রতিষ্ঠা করা। ১৯৬৭ সালে স্যাটেলাইট টাউন প্রকল্পটির উদ্বোধন করা হলেও তা বাস্তবায়িত হতে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর পর্যন্ত সময় নেয়। ১৯৯০ সালে এর প্রথম পর্যায়ের মূল কাজ শেষ হয় ও আগ্রহীদের প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়। ১৯৯৭ সালের মধ্যে উত্তরা কোনমতে গড়ে উঠলেও মূল ঢাকা থেকে দূরে হওয়ায় এবং পর্যাপ্ত নগর সুবিধার আওতার বাইরে থাকায় একে অনেকে "গ্রাম" হিসেবে উল্লেখ করত। তবে ঢাকা মহানগরীর উপর চাপ বৃদ্ধি এবং রাষ্ট্রীয় প্রবৃদ্ধির ফলে ২০০৫ সালের পর থেকে শহরটির গুরুত্ব বাড়তে থাকে। পাশাপাশি এখানে গড়ে উঠতে শুরু করে বাণিজ্যিক ভবন, রেস্তোরাঁ, অফিস, সরকারি দপ্তর ইত্যাদি। বিভিন্ন বিপণিবিতান ও দর্শনীয় স্থানের কারণে এর কদর বাড়তে থাকে। ২০১০-এর দশকে তৃতীয় পর্যায়ের অংশ হিসেবে উত্তরার পশ্চিমে অবস্থিত গ্রামগুলোকে অধিগ্রহণ করে উত্তরার অন্তর্ভুক্ত করা হয় যা এখন দর্শনীয় স্থান হিসেবে জনপ্রিয়, পাশাপাশি উত্তরায় ৩টি মেট্রোরেল স্টেশন চালু হওয়ার পর বর্তমানে এটি শহরের আকর্ষণীয় এলাকাগুলোর মধ্যে অন্যতম।
প্রবেশ
[সম্পাদনা]বিমান
[সম্পাদনা]- 1 হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (IXC আইএটিএ), কাওলা, বিমানবন্দর সড়ক, ঢাকা (এলাকার খুব কাছে বিমানবন্দর সড়ক ধরে দক্ষিণে।)। এটি উত্তরার নিকটে ঢাকার একমাত্র আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। অত্যাধুনিক সুবিধা না থাকলেও এর তৃতীয় টার্মিনালের নির্মাণ সম্পন্ন হওয়ার পর এতে অত্যাধুনিক বিমানবন্দরের সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যাবে।
ট্রেন
[সম্পাদনা]- 2 ঢাকা বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন (হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিকটে।)।
বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন একটি গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন হওয়ায় এখানে অনেক ট্রেন থামে। লোকাল ও কমিউটার ট্রেন এখানে সেবা দিলেও কিছু দূরপাল্লার ট্রেন এখানে আসেনা বা থামেনা। সেসব ক্ষেত্রে প্রথমে নিকটবর্তী কোন স্টেশনে থেমে সেখান থেকে যেকোন লোকাল বা কমিউটার ট্রেনে করে এখানে আসা যাবে।
গাড়ি
[সম্পাদনা]উত্তরার মাঝখান দিয়ে বিমানবন্দর সড়ক চলে গেছে যা ঢাকা–ময়মনসিংহ মহাসড়কের সাথে সংযুক্ত। পাশাপাশি উত্তরার পশ্চিম প্রান্ত মিরপুর সড়কের মাধ্যমে টঙ্গী–আশুলিয়া মহাসড়ক, বিরুলিয়া–আশুলিয়া মহাসড়ক ও ঢাকা–আশুলিয়া মহাসড়কের সাথে যুক্ত। ফলে নিজের গাড়িতে করে সহজে উত্তরায় আসার যায়। সেজন্য আপনাকে গাড়িতে করে হয় বিমানবন্দর সড়ক অথবা মিরপুর বেড়িবাঁধ সড়ক হয়ে উত্তরায় আসতে হবে।
বাস
[সম্পাদনা]- 3 আব্দুল্লাহপুর বাস কাউন্টার (উত্তরা ৯ নং সেক্টর ঘেঁষে হাউজ বিল্ডিংয়ের নিকটে)।
মহাসড়কগুলো উত্তরাকে দেশের অধিকাংশ মহাসড়কের সাথে সংযুক্ত করে বিধায় অধিকাংশ বাস বিভিন্ন জেলা থেকে উত্তরা পর্যন্ত সেবা দিয়ে থাকে। উত্তরায় আসতে চাইলে আপনাকে এমন কোন বাসে উঠতে হবে যা আব্দুল্লাহপুর অতিক্রম করবে। আব্দুল্লাহপুরে বাস আসার পর আপনাকে সেখানে নেমে সেখান থেকে উত্তরায় আসতে হবে যে ১০ মিনিট হাঁটার পথ। বাস যদি আব্দুল্লাহপুর না যায় সেক্ষেত্রে আপনাকে ঢাকার যে কাউন্টারে নেমেছেন সেখান থেকে যেকোন নগর পরিবহন সেবাদানকারী বাসে করে উত্তরায় পৌঁছাতে হবে।
নদী
[সম্পাদনা]উত্তরার সন্নিকটে টঙ্গীতে তুরাগ নদীর তীরে একটি নদীবন্দর নির্মাণ করা হলেও তা প্রকৃতপক্ষে অচল, তাই এটি ব্যবহার করে লঞ্চে করে উত্তরায় আসা সম্ভব নয়।
বিচরণ
[সম্পাদনা]বাস
[সম্পাদনা]সরকারি বিআরটিসি নিকটবর্তী টঙ্গীর স্টেশন রোড হতে বিমানবন্দর সড়ক হয়ে হাউজ বিল্ডিং দিয়ে প্রবেশ করে সোনারগাঁও জনপথ দিয়ে ১৫ নং সেক্টরের বটতলার দিকে অবস্থিত উত্তরা উত্তর মেট্রো স্টেশন পর্যন্ত সেবা দিয়ে থাকে। রাইদা বাস উত্তরার জসিমউদ্দিন সরণি থেকে হাউজ বিল্ডিং দিয়ে প্রবেশ করে দিয়াবাড়ি পর্যন্ত সেবা দিয়ে থাকে। এছাড়া কিছু মিনিবাস (যেগুলোকে বেঙ্গল ও লেগুনা বলা হয়ে থাকে) হাউজ বিল্ডিং থেকে মেট্রো স্টেশন ও আজমপুর স্ট্যান্ড থেকে ১২/১৩ মোড় সেবা দেয়।
মেট্রো
[সম্পাদনা]ঢাকা মেট্রোরেলের তিনটি স্টেশন উত্তরার পশ্চিমে ১৫ ও ১৭ নং সেক্টরে পড়েছে: উত্তরা উত্তর, উত্তরা সেন্টার ও উত্তরা দক্ষিণ। এই কয়েকটি সেক্টরে চলাচলের জন্য মেট্রো সেবা গ্রহণ করতে পারেন। সেবা নেওয়ার আগে ঢাকা মেট্রোরেলের ওয়েবসাইটে থাকা সময়সূচি দেখে নিবেন কেননা মাসখানেক পরপর এর সময়সূচিতে পরিবর্তন আসে।
ট্যাক্সি
[সম্পাদনা]নিম্নলিখিত কোম্পানিগুলো উত্তরায় ট্যাক্সি সেবা দিয়ে থাকে
- উবার। শহরের ভেতরে এবং শহরের বাইরের ভ্রমণের জন্য মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করে ট্যাক্সি বুক করুন।
রিকশা
[সম্পাদনা]- ও ভাই। এটি মূলত সিএনজি অটোরিকশা সেবা দেওয়ার একটি অনলাইন সেবা।
ও ভাইয়ের পাশাপাশি উত্তরার সর্বত্র রিকশা ও অটোরিকশা কম খরচে সেবা দিয়ে থাকে। যেসব সড়কে বাস ও মিনিবাস নেই সেসব স্থানে হাঁটতে না চাইলে রিকশাই শ্রেয়।
কোথায় যাবেন
[সম্পাদনা]- 1 উত্তরা লেক (উত্তরার পশ্চিমে)। উত্তরা লেক পশ্চিম উত্তরার সেক্টর ১০, ৯, ৭ ও ৩ সংলগ্ন একটি হৃদ। শহুরে অবস্থানের মধ্যে এমন এক প্রাকৃতিক নিদর্শন উত্তরাকে সুন্দর করে তুলেছে। বর্তমানে দখল ও দূষণের ফলে এর সৌন্দর্য অনেকটাই ম্লান হয়ে গেছে। পাশাপাশি আজকাল ভরা মৌসুম ছাড়া এই লেক শুকিয়ে যায়। সম্প্রতি লেকের উন্নয়ন কাজের জন্য এর আগের অবস্থা আর নেই।
- 2 ৭নং সেক্টর পার্ক, রোড ১, সেক্টর ৭। উত্তরা হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজের পাশে অবস্থিত এই পার্কটি একটি বড় সুন্দর পার্ক। একটু বসে প্রকৃতির মাঝে নিঃশ্বাস নেওয়ার জন্য উপযুক্ত স্থান। যাওয়ার আগে খেয়াল রাখবেন যে এখানে প্রবেশের আলাদা সময়সূচি আছে যা পরিবর্তন হতে পারে।
- 3 ঢাকা মেট্রো রেল প্রদর্শনী ও তথ্য কেন্দ্র (এমইআরসি), দিয়াবাড়ি ডিপো, সোনারগাঁও জনপথ। সকাল ৯০.৩০ থেকে বিকেল ৪.০০ (রবিবার ব্যতীত)। ঢাকা মেট্রোরেলের ব্যাপারে মানুষকে জানানো ও সচেতন করার উদ্দেশ্যে এই কেন্দ্র চালু হয়েছে। এখানে মেট্রোরেলের অভিজ্ঞতার পাশাপাশি এর ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারবেন গ্যালারির মাধ্যমে। পাশাপাশি এখানে কিনতে পারবেন মেট্রোরেলের মডেল ট্রেন যা অন্য কোথাও পাওয়া যাবেনা। ১০।
- 4 রাজউক উত্তরা অ্যাপার্টমেন্ট প্রকল্প (রুয়াপ), সেক্টর ১৮। এখানে রাজউক অ্যাপার্টমেন্ট এলাকা গড়ে তুলেছে। সমতল ভূমির মধ্যে দূর থেকে এই এলাকার উঁচু ভবনগুলো মনোরম দেখায় বিধায় লোকজন এখানে ঘুরতে আসে। সাথে এর প্রাকৃতিক পরিবেশ মানুষকে মোহিত করে। এখানে জন্মানো কাশফুল দেখার জন্য উৎসাহী মানুষ ভীড় করে। এই এলাকার প্রবেশমুখে অ্যাভিনিউ ১-এ রয়েছে রুয়াপ ফুডকোর্ট যা সন্ধ্যায় চালু হয়, বিভিন্ন মজাদার পথখাবার পাবেন এই ফুডকোর্টে।
- 5 দিয়াবাড়ি লেক (সোনারগাঁও জনপথের খালপাড় এলাকা থেকে)। এই লেক ১২ নং সেক্টরের খালপাড় থেকে সেক্টর ১৫ ও ১৭ হয়ে মিরপুর ডিওএইচএস পর্যন্ত গেছে। গ্রামীন পরিবেশের স্বাদ পাওয়া যায় বিধায় এটি উত্তরার সবচেয়ে জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থান।
- 6 ভার্সিটি চত্বর (অ্যাভিনিউ ৭, সেক্টর ১৭)। এটি ১৭ নং সেক্টরে অবস্থিত একটি এলাকা। এর দক্ষিণে রয়েছে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রতিষ্ঠানের দাপ্তরিক ভবন। গ্রামীন পরিবেশে এসব নান্দনিক ভবনগুলো দেখতে অনেকেই ছুটে আসেন। পাশাপাশি এখানে রয়েছে একাধিক রেস্তোরাঁ।
- 7 উত্তরা সার্বজনীন পূজা মন্দির, প্লট ১, সড়ক ২, ব্লক ই, সেক্টর ১৭। ২০২৩ সালে প্রতিষ্ঠিতি এই হিন্দু মন্দিরটি নান্দনিক না হলেও বিভিন্ন উৎসবে এখানে সুন্দর করে সাজানো হয়ে থাকে। সেসব সময় এই মন্দিরটি পরিদর্শনের সঠিক সময়।
- 8 বৃন্দাবন, রোড ১৬, অ্যাভিনিউ ৬, সেক্টর ১৭। এটি মিরপুর ডিওএইচএসের খুব কাছে অবস্থিত। কাশবনের জন্য এই এলাকাটি জনপ্রিয়।
কী করবেন
[সম্পাদনা]- 1 মুগ্ধ মঞ্চ, সাঙ্গাম মোড়, রবীন্দ্র সরণি, সেক্টর ৭। উত্তরার একমাত্র সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানস্থল। বিভিন্ন বিশেষ দিবসে এখানে কনসার্ট, পথনাটক, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ইত্যাদির আয়োজন হয়ে থাকে।
- 2 ফ্যান্টাসি আইল্যান্ড, সেক্টর ১৫, সোনারগাঁও জনপথ (খালপাড় থেকে দিয়াবাড়ি গোলচত্বর যাওয়ার পথে), ☎ +৮৮০১৮৪১-২৪২৭১২। এটি একটি চিত্তবিনোদন পার্ক, আয়তনে ছোট হলেও অবসরে সময় কাটানোর জন্য মন্দ নয়। এখানে একটি সিনেমা হল রয়েছে যার টিকেট কিনলে পার্কটিতেও প্রবেশাধিকার ফ্রি। ২০০।
- 3 পিরামিড পয়েন্ট রিসোর্ট, নর্থ পয়েন্ট রোড, দিয়াবাড়ি। দিয়াবাড়ি এলাকায় অবস্থিত অবসর কাটানোর জন্য রিসোর্ট। এখানে প্রদর্শনের জন্য কিছু বন্যপ্রাণী রাখা আছে।
- 4 বিডি কায়াকিং জোন (উত্তর দিক থেকে শিল্পী কামরুল হাসান সড়ক ধরে মিরপুর ডিওএইচএস যাওয়ার পথে দিয়াবাড়ি লেকের আগে), ☎ +৮৮০১৮২০৯৭১১১১। সকাল ১০টা – সন্ধ্যা ৭টা। দিয়াবাড়ি লেকে কায়াকিং করার জন্য একমাত্র স্থান। ১০০-১৫০।
কেনাকাটা
[সম্পাদনা]উত্তরায় জীবনযাপনের ব্যয় বেশি হওয়ায় এখানের বিপণিবিতানে কেনাকাটার খরচও বেশি৷ উত্তরায় প্রায় সর্বত্র কেনাকাটার সুযোগ পাবেন। উত্তরার ঢাকা–ময়মনসিংহ মহাসড়ক ঘেঁষে নির্মিত বিপণিবিতানগুলো কেনাকাটার উপযুক্ত স্থান। এছাড়া সোনারগাঁও জনপথের দুই পাশের বিপণিবিতানেও কেনাকাটা করতে পারবেন। কম খরচে কেনাকাটা করতে চাইলে মহাসড়কের পাশে থাকা হকারদের কাছ থেকে কিনতে পারেন। তবে এখনো উত্তরার বেশ কিছু বিপণিবিতানে দামাদামি করে কেনার সুযোগ রয়েছে।
আহার ও পানীয়
[সম্পাদনা]উত্তরায় প্রচুর রেস্তোরাঁ রয়েছে। এছাড়া এর আনাচে কানাচে রয়েছে ছোট ছোট খাবারের দোকান। সেগুলো থেকে উল্লেখযোগ্য রেস্তোরাঁ ও দোকানগুলো দেওয়া হলো:
দামী
[সম্পাদনা]- 1 শী শেল রেস্টুরেন্ট অ্যান্ড পার্টি প্যালেস (শী শেল), বাড়ি ১১৩/বি, রোড ৭, সেক্টর ৪, ☎ +৮৮০১৭১১২৮২১৩২। একটি চাইনিজ ও থাই রেস্তোরাঁ। ভালো মানের খাবারের জন্য পরিচিত।
- 2 হারফি, ২৯ গাউসুল আজম অ্যাভিনিউ, সেক্টর ১৪। একটি আরবীয় ফাস্টফুড চেইন।
- 3 মুম্বাই এক্সপ্রেস, বাড়ি ১৬/এ, রোড ৪, সেক্টর ৪, ☎ +৮৮০১৩০১৮৮২৯১৯। এটি একটি ভারতীয় রেস্তোরাঁ যেখানে প্রায় সবরকম ভারতীয় খাবার পাবেন।
- 4 গুস্তো বিস্ট্রো অ্যান্ড কফি হাউজ, রোড ২, সেক্টর ১, ☎ +৮৮০১৭৩০৪২৬৫৪১। মনোরম পরিবেশে কফি ও হালকা ফাস্টফুডের জন্য জায়গাটা ভালো।
মধ্যম
[সম্পাদনা]- 5 উত্তরা বিরিয়ানি হাউজ, বাড়ি ১, রোড ১৪, সেক্টর ১, ☎ +৮৮০১৭৩০৪২৬৫৪১। মধ্যম খরচে এখানে বিরিয়ানির পাশাপাশি এখানে পেটপুরে খাওয়া যায়।
- 6 কাবাব ফ্যাক্টরি, লেক ড্রাইভ রোড, সেক্টর ৭। কাবাবের জন্য জায়গাটি বিখ্যাত।
- 7 ওভেন পিজ্জা, গরীবে নেওয়ার অ্যাভিনিউ, সেক্টর ১৩ (১০ নং সেক্টর সেতুর দিকে), ☎ +৮৮০১৮৭৩৮৩৮৪৯৫। মধ্যম খরচে এখানে ওভেনে তৈরি বিভিন্ন পিজা পাওয়া যায়।
- 8 বিসমিল্লাহ মিষ্টি মুখ ও বেকারি, হাউজ বিল্ডিং, সেক্টর ৯, সোনারগাঁও জনপথ, ☎ +৮৮০২৫৮৯৫৬৭০৯। বেকারির ও মিষ্টির দোকান। পাশাপাশি ফাস্টফুড পাওয়া যায়।
সুলভ
[সম্পাদনা]- 9 চিয়ার্স, হাউজ বিল্ডিং, সেক্টর ৯, সোনারগাঁও জনপথ, ☎ +৮৮০১৮৭৩৮৩৮৪৯৫। পেস্ট্রি ও ফাস্টফুডের দোকান। এখানের খাবারের দাম খুবই কম।
রাত্রিযাপন
[সম্পাদনা]আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিকটবর্তী হওয়ায় উত্তরায় অসংখ্য হোটেল রয়েছে। বিশেষত ১নং সেক্টরে বেশ কিছু হোটেল পাবেন। বিদেশী হয়ে থাকলে হোটেল পছন্দ করার আগে জেনে নিবেন সেটি আন্তর্জাতিক পর্যটকদের জন্য কিনা। ভালো পরিচিতি আছে এমন হোটেল বাছাই করুন।
- 1 বেস্ট ওয়েস্টার্ন প্লাস ম্যাপল লিফ, প্লট ১বি, রোড ১, সেক্টর ১, ☎ +৮৮০২৪১০৯১২৪৭।
- 2 হোটেল ডি মেরিডিয়ান, প্লট ১২, রোড ১২, সেক্টর ৬, ☎ +৮৮০১৭০১৭৬৭৬৭৬। দুপুর ২টা – সকাল ১১টা।
- 3 গ্র্যান্ড প্লাজা হোটেল, প্লট ২৯, রোড ৩/বি, সেক্টর ৯, ☎ +৮৮০১৭৭৭৭৭৫৫৭২। দুপুর ১২টা – দুপুর ১২টা।
- 4 প্লাটিনাম হোটেল লিমিটেড, প্লট ৪৪, রোড ১০, সেক্টর ১১, ☎ +৮৮০১৭১৫০৪৬১১৪। দুপুর ২টা – দুপুর ১২টা।
- 5 মারিনো রয়্যাল হোটেল, প্লট ২৫, রোড ৩, সেক্টর ৩, ☎ +৮৮০১৯৫১১১৯৯০০। দুপুর ২টা – দুপুর ১২টা।
নিরাপত্তা ও সংযোগ
[সম্পাদনা]উত্তরায় সর্বমোট ৪টি থানা রয়েছে, আপনার এলাকা অনুযায়ী একটি থানায় যোগাযোগ করতে হবে:
- 5 উত্তরা পূর্ব, প্লট ৭, রোড ৭, সেক্টর ৪, ☎ +৮৮০২৮৯১৪১২৬। এটি সেক্টর ১, ২, ৪, ৬ ও ৮ নং সেক্টরের জন্য।
- 6 উত্তরা পশ্চিম, প্লট ৪৮, রোড ১৮, সেক্টর ১১, ☎ +৮৮০২৮৯৯১৩১৫, ইমেইল: ocuttarawest@dmp.gov.bd। এটি আব্দুল্লাহপুর, বাউনিয়া এবং সেক্টর ৩, ৫, ৭, ৯, ১০, ১১, ১২, ১৩ ও ১৪ নং সেক্টরের জন্য।
- 7 বিমানবন্দর, র্যাব সদরদপ্তর, বিমানবন্দর–দক্ষিণখান সড়ক, দক্ষিণখান, ☎ +৮৮০২৮৯৫১২৮১। এটি বিমানবন্দর এলাকা, দক্ষিণখানের পশ্চিমাংশ এবং সেক্টর ১ নিয়ে গঠিত।
- 8 তুরাগ, রোড ১৩, সেক্টর ১৬, ☎ +৮৮০২৮৯১৪৬৬৪। এটি ১০, ১৫, ১৬, ১৭, ১৮ নং সেক্টর এবং কামারপাড়া, রসদিয়া, ভাটুলিয়া, রানাভোলা, ফুলবাড়িয়া, বামনারটেক, নলভোগ, নয়ানগর এবং ধউর নিয়ে গঠিত।
এখানে শুধুমাত্র একটি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন রয়েছে:
- 9 ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন, সোনারগাঁও জনপথ, দিয়াবাড়ি, ☎ +৮৮০২২২৪৪৭০৬৬০।
উত্তরার দুই প্রান্তে দুটি ডাকঘর রয়েছে:
- 10 উত্তরা মডেল টাউন ডাকঘর, প্লট ৭, রোড ৭, সেক্টর ৫, ☎ +৮৮০১৭১৯০৯৭১২০।
- 11 আজমপুর শাখা ডাকঘর, শাহজালাল অ্যাভিনিউ। এটি সম্ভবত এখন বন্ধ।
সরকারি ডাকঘর সেবাপ্রদানে বিলম্ব করে বিধায় অনেক মানুষ বেসরকারি কুরিয়ার সেবা গ্রহণ করে থাকে। এখানে রয়েছে একাধিক দেশী ও আন্তর্জাতিক কুরিয়ার কোম্পানির শাখা। একটা সময় উত্তরায় অনেক সাইবার ক্যাফে থাকলেও মোবাইল ইন্টারনেটের জোয়ারের ফলে এখন এখানে সাইবার ক্যাফে সংস্কৃতি মৃতপ্রায়। তবে প্রয়োজন হলে ৭ ও ৫ নং সেক্টরের ঢাকা–ময়মনসিংহ মহাসড়ক সংলগ্ন বিপণিবিতানে খোঁজ করতে পারেন।
স্বাস্থ্য
[সম্পাদনা]উত্তরার প্রচুর হাসপাতাল ও ফার্মেসি পাবেন। এখানে গলিতে গলিতে রয়েছে ফার্মেসির দোকান। তবে কিছু ওষুধ কিনতে আপনার প্রেসক্রিপশন দেখাতে হবে। পাশাপাশি এখানে রয়েছে প্রচুর হাসপাতাল, সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
- 12 কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতাল, সেক্টর ৬, ঈশা খাঁ অ্যাভিনিউ, ☎ +৮৮০১৭২০০১৩৯২৩। এটি উত্তরার একমাত্র সরকারি হাসপাতাল।
- 13 উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, বাড়ি ৩৪, রোড ৪, সেক্টর ৯, সোনারগাঁও জনপথ। এটি বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল নামেও পরিচিত যা এলাকার সর্ববৃহৎ হাসপাতাল।
- 14 এমসিডাব্লিউ হাসপাতাল, বাড়ি ৪, রোড ৮, সেক্টর ১, ☎ +৮৮০১৩২৪২৫৭৩০০।
- 15 শহীদ মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বাড়ি ২৬, রোড ১০, সেক্টর ১১, ☎ +৮৮০৯৬৪৩১০০৩০০।
সতর্কতা
[সম্পাদনা]- উত্তরা এমনিতে খুব নিরাপদ একটি জায়গা, তবে সম্প্রতি এখানে অপরাধকর্ম বৃদ্ধি পেয়েছে এবং অনেক অবৈধ হোটেল ও বার প্রতিষ্ঠা হয়েছে। কেউ আপনাকে কোথাও আমন্ত্রণ জানালে স্থানটির বৈধতা সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে নিবেন।
- রাতের বেলায় উত্তরা নিরাপদ হলেও কিশোর গ্যাংয়ের তৎপরতার ফলে রাতে দলবদ্ধভাবে চলাফেরা করা উচিত এবং গভীর রাতে ঘোরা উচিত নয়, অবশ্য বর্তমানে পুলিশি অভিযানে গ্যাং ও সন্ত্রাসীদের তৎপরতা কমে এসেছে।
- উত্তরার নতুন গড়ে উঠা এলাকাগুলো (সেক্টর ১৫, ১৬, ১৭ ও ১৮ – দিয়াবাড়ি নামে অধিক পরিচিত) এখনো প্রায় জনশূন্য হওয়ায় এর বিভিন্ন খালি স্থানে অপরাধীরা ঘুরে বেড়ায় ও নিরাপত্তার অভাব থাকে। তাই দিয়াবাড়ির জনসমাগম কম এমন স্থানে দলবদ্ধভাবে চলাফেরা করুন এবং খুব রাতে দিয়াবাড়িতে যাওয়া থেকে বিরত থাকুন।