উইকিভ্রমণ থেকে
শিলিগুড়ি শহর চত্বর।

শিলিগুড়ি হল ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যের একটি শৈল শহর ও পর্যটন কেন্দ্র। এই শহরটি পর্বতের ঢালে গড়ে উঠেছে। শহরটি দার্জিলিং জেলার বৃহত্তম শহর। এখানে প্রতি বছর প্রচুর পর্যটকের আগমন ঘটে।

কীভাবে যাবেন?[সম্পাদনা]

শিলিগুড়ি পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের একটি প্রধান শহর এবং ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির যোগাযোগের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে কাজ করে। একটি মূল বাণিজ্য কেন্দ্র হিসাবে এই শহরটি বিমান, সড়ক ও রেল পথের একটি উন্নত পরিবহন জালবিন্যাস দ্বারা সু-সজ্জিত। যদি পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং, কালিম্পং এবং সিকিমের গ্যাংটক-এর মত শহরগুলিতে ভ্রমণ করতে হয় তাহলে এটি হল প্রতিটি স্থানের প্রবেশদ্বার।

শিলিগুড়ি নগরের পরিবহনকে ব্যবস্থা রিক্সা, স্থানীয় বাস এবং টেম্পো অন্তর্ভুক্ত করে। এখানে কোনও মিটার যুক্ত যানবাহন নেই। ৬ সিটের ডিজেল চালিত টেম্পো প্রায় সময় ১০–১৫ কিমির দুই গন্তব্যের মধ্যে নিয়মিতভাবে চলাচল করে পৌরসভা কর্তৃপক্ষের দ্বারা নির্ধারিত ভাড়াতে। পেট্রোল চালিত অটোরিক্সাও ভাড়া করা যায়। মোট, ১৬,০০০ রিক্সা পৌরসভা সম্বন্ধীয় কর্পোরেশন দ্বারা লাইসেন্স দিয়েছিল এবং আরও অতিরিক্ত ৫৫,০০০ বেআইনি রিক্সা এই ক্রমবর্ধমানভাবে ঘিঞ্জি শহরটিতে নিয়মিতভাবে চলাচল করে।

ভিসা প্রসেসিং[সম্পাদনা]

শিলিগুড়ি বাংলাদেশের বাহিরে হওয়ায় এখানে যাওয়ার জন্য ভারতের ভিসার প্রয়োজন। বিমানপথ, রেলপথ বা সরকপথ - যে পথই হোক না কেন, শিলিগুড়ি ভ্রমণে ভারতের ভিসা সংগ্রহ করতে হবে। অনলাইনের মাধ্যমে ভারতীয় ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। ভারতীয় ভিসা আবেদনের ওয়েব অ্যাড্রেসঃ http://www.ivacbd.com - এ প্রবেশ করে আবেদন করতে হবে। ভিসা হতে বেশি সময় লাগে না; তবে, ই-টোকেন পেতে একটু সময় লাগে। ভিসা নেয়ার জন্য যেতে হবেঃ ভারতীয় ভিসা প্রসেসিং সেন্টার, Jamuna Future Park. শিলিগুড়িতে পাসপোর্ট অফিসঃ ০৩৫৩-২৫১৬৫৩৩ -তে যোগাযোগ করতে পারেন।

স্থলপথে[সম্পাদনা]

সড়কপথ[সম্পাদনা]

শিলিগুড়ি একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য কেন্দ্র তথা ভারতের উত্তর-পূর্বের প্রবেশদ্বার। একটি বিস্তৃত সড়ক জালবিন্যাস শিলিগুড়িকে কলকাতার সাথে সংযুক্ত করে,যা দেশের বাকি অংশের সাথেও সংযোগস্থাপনের একটি প্রধান বিন্দু। শিলিগুড়ি, সড়ক দ্বারা ভারতীয় রাজ্য গ্যাংটক ও নেপাল ও ভুটান দেশের সাথে সংযুক্ত। জাতীয় মহাসড়ক ৩১,৩১-এ, ৩১-ডি এবং ৫৫ শিলিগুড়িকে প্রতিবেশী শহর এবং রাজ্যের সঙ্গে সংযুক্ত করে।

তেনজিং নোরগে সেন্ট্রাল বাস টার্মিনাস বেসরকারি এবং সরকারি মালিকানাধীন বাসের একটি প্রধান কেন্দ্রস্থল। এছাড়াও ভুটানের রাজকীয় সরকার শিলিগুড়ি থেকে তার সীমান্ত শহর ফুন্টসোলিং পর্যন্ত বাস পরিষেবা প্রদান করে। ভাড়ার জিপ গাড়িগুলিও এই শহরকে তার প্রতিবেশী শৈল শহর দার্জিলিং, কালিম্পং, গ্যাংটক, কার্শিয়াং ইত্যাদির সাথে সংযুক্ত করে। সিকিম সরকারের সিকিম রাষ্ট্রায়ত্ত পরিবহন, বাস স্টেশন থেকে সিকিমের বিভিন্ন গন্তব্যস্থলে বাস পরিচালনা করে।

শিলিগুড়ি পর্যন্ত ভারতের বিভিন্ন শহরের দূরত্বঃ

  • দিল্লী থেকে – ১৪৮৪ কিমি;
  • মুম্বাই থেকে – ২২৭১ কিমি;
  • গুয়াহাটি থেকে – ৪৭৫ কিমি;
  • কলকাতা থেকে – ৬০৬ কিমি।

রেলপথ[সম্পাদনা]

শিলিগুড়ি জংশন রেলওয়ে স্টেশন।

শিলিগুড়িতে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ রেলওয়ে স্টেশন আছে; শিলিগুড়ি টাউন, শিলিগুড়ি জংশন এবং নিউ জলপাইগুড়ি জংশন। নিউ জলপাইগুড়ি রেলওয়ে স্টেশন বর্তমানে এই অঞ্চলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন। এটি দেশের প্রতিটি প্রধান রেলপথের সাথে সংযুক্ত।

আকাশ পথে[সম্পাদনা]

বাগডোগরায় একটি অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দর আছে যা শহরের কেন্দ্র থেকে প্রায় ১৭ কিমি দূরে অবস্থিত। বাগডোগরা বিমানবন্দর দিল্লি, কলকাতা, মুম্বাই, চেন্নাই ও গুয়াহাটির সাথে নিয়মিত বিমান দ্বারা সংযুক্ত। বিমানবন্দরটির দ্বারা শিলিগুড়ি ভুটানের থিম্পু শহর ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ব্যাংকক শহরেরও সংযোগ রয়েছে। রাষ্ট্রায়ত্ব ও বেশ কিছু বেসরকারি বিমান পরিবহন সংস্থা এই বিমানবন্দরে পরিষেবা প্রদান করে। এই অঞ্চলে একটি বিমানঘাঁটি রয়েছে, যেখান থেকে গ্যাংটক, সিকিমের নিয়মিত হেলিকপ্টার পরিষেবা পাওয়া যায়।

জল পথে[সম্পাদনা]

পার্বত্য এলাকা হওয়ায় নৌপথ ব্যবহৃত হয় না। তবে পার্শবর্তী এলাকায় ভ্রমণে এবং নৌভ্রমণে মহানন্দা নদীতে চলাচল করেন পর্যটকরা।

দর্শনীয় স্থান ও স্থাপনা[সম্পাদনা]

  • দার্জিলিং পর্যন্ত চলাচলকারী "টয় ট্রেন";
  • পাহাড়ের মনোরম দৃশ্য;
  • মিরিক;
  • কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়াম;
  • হংকং বাজার;
  • জলদাপাড়া;
  • গরুমারা;
  • কোচবিহার;
  • কালিঝোড়া;
  • মহানন্দা ওয়াইল্ড লাইফ স্যাংচুয়ারি
  • মহানন্দা নদীবক্ষস্থ সুকনা।

খাওয়া দাওয়া[সম্পাদনা]

শিলিগুড়িতে পর্যটকদের জন্য রয়েছে থাকা-খাওয়ার সুব্যবস্থা। বিধান রোডে গোষ্ঠ পালের মূর্তির ঠিক নিচেই মিলবে ডিম-ঘুগনি, আর, পাশেই রোল ওভারে রকমারি রোল পাওয়া যায় - খরচ গড়ে তিরিশ থেকে একশো টাকা। হিলকার্ট রোডে দাওয়াত ও আহেলি রেস্তোরায় পাবেন বাংলা খাবার, আর, চাইনিজ খেতে চাইলে চলে যান তাইওয়া বা ইন্ডিয়ান প্যাগোডায়। বিরিয়ারি খেতে চাইলে ব্লু জিঞ্জার, জাইকা বা বেদুইন-এ যান। পাঞ্জাবি খানার জন্য যেতে পারেন সেবক রোডের পঞ্জাবি কড়াইতে। রুচী ও মান ভেদে খাওয়া বাবদ জনপ্রতি প্রতিদিন খরচ পড়বে ১০০/- - ৭০০/-।

রাত্রি যাপন[সম্পাদনা]

শিলিগুড়িতে পর্যটকদের জন্য রয়েছে থাকা-খাওয়ার সুব্যবস্থা। সাধারণ মান সম্মত আবাসিক হোটেল ও রিসোর্টে প্রতিদিনের থাকা বাবদ খরচ হবে জনপ্রতি প্রায় ৪০০/- - ১,৫০০/-। এখানকার কয়েকটি আবাসিক হোটেল হলোঃ

  • হোটেল স্নোভিউ - ব্রিজ সংলগ্ন;
  • মৈনাক ট্যুরিস্ট লজ - পশ্চিমবঙ্গ পর্যটন কতৃপক্ষের ব্যবস্থাধীন;
  • পি ডব্লু ডি-র বাংলো;
  • মিউনিসিপাল পান্থনিবাস;
  • ইয়ুথ হোস্টেল।

জরুরি নম্বরসমূহ[সম্পাদনা]

চিকিৎসা সম্পর্কিত যোগাযোগের জন্য
  • শিলিগুড়ি সদর হাসপাতাল: ☎ ০৩৫৩-১০২, ২৪৩৫৭৩৬, ২৪৩৬৫২৬;
  • এন.বি. মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল: ☎ ০৩৫৩-২৫৮১৩৪২, ২৫৮৫২২৫;
জননিরাপত্তা সম্পর্কিত যোগাযোগের জন্য
  • দার্জিলিং পুলিশ স্টেশনঃ ☎ ০৩৫৪-২২৫৪২২;
  • শিলিগুড়ি পুলিশ স্টেশনঃ ☎ ০৩৫৩-২৪৩৬৪৮৪;
  • ডিএসপি, শিলিগুড়িঃ ☎ ০৩৫৩-২৪৩৬৬৪৪;
  • আইজিএন, বাংলা, শিলিগুড়িঃ ☎ ০৩৫৩-২৫১৭০৫৪;
  • এসডিও, শিলিগুড়িঃ ☎ ০৩৫৩-২৪৩০৮০০ (অ), ২৫২৯০২১ (বা);
  • ডেপুটী এসপি ট্রাফিকঃ ☎ ০৩৫৩-২৫২০৮৪৯;
  • এডিশনাল এসপি, শিলিগুড়িঃ ☎ ০৩৫৩-২৪৩৩৯০০ (অ), ২৪৩৩৮০০ (বা);
  • এডিএম, শিলিগুড়িঃ ☎ ০৩৫৩-২৪৩৩৯০০ (অ), ২৪৩৩৮০০ (বা);
অন্যান্য
  • টেলিফোন ডাইরেক্টরীঃ ১৯৭ (ম্যানুয়াল)
  • এসপিবিএএক্সঃ ☎ ০৩৫৩-২৪৩৬২০০;
  • আনন্দবাজার পত্রিকাঃ ☎ ০৩৫৩-২৫৩০৭৬৩, ৯৮৩২০৬৮৮২৫।