ঋজুক জলপ্রপাত বা ঋজুক ঝর্ণা বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামের অন্তর্গত বান্দরবানের রুমা উপজেলায় অবস্থিত একটি প্রাকৃতিক জলপ্রপাত। মার্মা ভাষায় ঝর্ণাটি রী স্বং স্বং নামে ডাকা হয়। প্রায় ৩০০ ফুট উচ্চতা হতে জলধারা সাংগু নদীতে প্রবাহিত হয়।
জানুন
[সম্পাদনা]সাঙ্গু নদীর পাড়ে প্রায় ৩০০ ফুট উঁচু থেকে সারা বছর জুড়ে জলপ্রপাতটির রিমঝিম শব্দে জল পড়তে থাকে। বর্ষার সময় সাঙ্গুর বুকে অনেক বেশি পানি ঢালে যে প্রবল স্রোতের তোড়ে জলপ্রপাতের ধারে পৌঁছতে বড় ইঞ্জিনচালিত নৌকাকেও বেশ বেগ পেতে হয়। তবে, জুলাই- আগস্ট মাসে জলপ্রবাহ সবচেয়ে বেশি থাকে। শুকনো মৌসুমেও বেশে ভালো পরিমাণেই পানি থাকে। গতি, উদ্দমতারও কমতি থাকে না তখন। জলপ্রপাতের কাছে গিয়ে দাঁড়ালেই বর্শার ফলার মতো শরীরে এসে বিঁধবে ঠাণ্ডা পানির ফলা। সুমিষ্ট অনুভূতিতে ছড়িয়ে পড়বে সমগ্র শরীরে। যেখান থেকে নামছে জলের ধারা, সেখানে পাহাড়ের গায়ে গভীর হয়ে জন্মেছে গাছপালা। সবুজের পুরো আস্তর যেন চারপাশে যা এই ঝর্ণা এনে দিয়েছে ভিন্নমাত্রা।
কীভাবে যাবেন
[সম্পাদনা]ঋজুক জলপ্রপাত দেখার জন্য বান্দরবান থেকে রুমায় আসতে হবে। রুমা বাজার থেকে নদীপথে থানছি যাবার পথে ঋজুক ঝর্ণা দৃশ্যমান। রুমা বাজার থেকে এর দূরত্ব প্রায় ৭ কিলোমিটার ও বান্দরবান সদর থেকে ৬৬ কিলোমিটার দূরে পান্তলা মৌজায় অবস্থিত। ঋজুক ঝর্ণায় যেতে রুমাবাজার থেকে নৌকা পাওয়া যায়। নৌকা ভাড়া ৫০০ টাকা। তবে ইচ্ছে করলে খুব সকালে উঠে পায়ে হেঁটেও রওনা দেওয়া যায়।
কী দেখবেন
[সম্পাদনা]সাঙ্গুতে পানি একেবারেই কম। নিচে চিকচিক বালু দেখা যায়। টলটলে পানির নিচে ছোট ছোট নুড়িপাথরের রাজত্ব। হাঁটুজলে শামুক খুঁজে ফিরছে মারমা কিশোরীরা। ডানে পাহাড়, বাঁয়ে বেশ কিছুটা জায়গা জুড়ে ফসলের ক্ষেত। রুমা বাজারের দিকে ফেরার সময় প্রচুর বাঁশের চালি বা ভেলা চোখে পড়বে সাঙ্গুর বুকে। ভেলা বানিয়ে নদীর স্রোতে ভাসিয়ে দূর-দূরান্তে নিয়ে যাওয়া হয় বাঁশ।
ঋজুক জলপ্রপাতের উল্টো পার্শ্বে নতুন ঋজুকপাড়া নামে মারমাদের পাড়া আছে। আর এ পাশে পাহাড়ের ওপর বমদের যে পাড়াটি এর নামও ঋজুকপাড়া। হাতে সময় থাকলে ঋজুক দেখার সাথে সাথে আদিবাসীদের জীবনযাত্রাও অবলোকন করে অভিজ্ঞতা নিয়ে আসা যায়। আতিথেয়তা ও আন্তরিকতার দিক দিয়ে বম কিংবা মারমারা অতুলনীয়।
রাত্রিযাপন
[সম্পাদনা]রুমায় রাত্রিযাপনের জন্য হোটেল হিলটন উল্লেখযোগ্য।