বিষয়বস্তুতে চলুন

উইকিভ্রমণ থেকে
এই পাতাটি অপসারণের জন্য মনোনীত করা হয়েছে। অপসারণ নীতিমালাটি পড়ে, উইকিভ্রমণ:অপসারণ ভোটাভুটি পাতায় আপনার মতামত দিন। আলোচনাটি শেষ না হওয়া পর্যন্ত দয়া করে এই বিজ্ঞপ্তিটি সরিয়ে ফেলবেন না। আপনি যদি এই নিবন্ধের লেখক হন তবে মনে রাখবেন, এই মনোনয়নটি আপনার কাজের সমালোচনা নয়, বরং এটি আপনার নিবন্ধের শিরোনাম বা বিষয় উইকিভ্রমণের নিবন্ধের মানদণ্ড পূরণ করতে পারে কিনা তার একটি বিজ্ঞপ্তি।

কক্সবাজার সদর বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা।

জানুন

[সম্পাদনা]

চট্টগ্রাম বিভাগীয় সদর থেকে প্রায় ১৪৩ কিলোমিটার দক্ষিণে ২১°২৪´ থেকে ২১°৩৬´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১°৫৯´ থেকে ৯২°০৮´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ জুড়ে অবস্থিত কক্সবাজার সদর উপজেলার আয়তন ২২৮.২৩ বর্গ কিলোমিটার। ১৮৫৪ সালে কক্সবাজার থানা এবং ১৯৫৯ সালে টাউন কমিটি গঠিত হয়। ১৯৭২ সালে টাউন কমিটি বিলুপ্ত করে পৌরসভায় রূপান্তরিত হয়। ১৯৮৩ সালে থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয়। এ উপজেলায় বর্তমানে ১টি পৌরসভা ও ১০টি ইউনিয়ন রয়েছে।

নামকরণ

[সম্পাদনা]

কক্সবাজার নামটি এসেছে ক্যাপ্টেন হিরাম কক্স নামে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির এক অফিসারের নাম থেকে। কক্সবাজারের পূর্বনাম ছিল পালংকি। ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি অধ্যাদেশ, ১৭৭৩ জারি হওয়ার পর ওয়ারেন্ট হোস্টিং বাংলার গভর্নর হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। তখন হিরাম কক্স পালংকির মহাপরিচালক নিযুক্ত হন। ক্যাপ্টেন কক্স আরাকান শরণার্থী এবং স্থানীয় রাখাইনদের মধ্যে বিদ্যমান হাজার বছরেরও পুরানো সংঘাত নিরসনের চেষ্টা করেন এবং শরণার্থীদের পুনর্বাসনে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি সাধন করেন, কিন্তু কাজ পুরোপুরি শেষ করার আগেই তিনি ১৭৯৯ সালে মারা যান। তাঁর পূর্নবাসন অবদানকে স্মরণীয় করে রাখতে একটি বাজার প্রতিষ্ঠা করা হয় এবং এর নাম দেয়া হয় কক্স সাহেবের বাজার।

জনসংখ্যা

[সম্পাদনা]

২০১১ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী কক্সবাজার সদর উপজেলার জনসংখ্যা ৫,২২,৪৩৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২,৭৪,৯৮৩ জন এবং মহিলা ২,৪৭,৪৫২ জন। এ উপজেলার ৯০% মুসলিম, ৭% হিন্দু এবং ৩% বৌদ্ধ ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বী।

কীভাবে যাবেন

[সম্পাদনা]

স্থলপথে

[সম্পাদনা]

ঢাকা থেকে সড়ক, রেল ও বিমান সকল পথেই কক্সবাজারের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা রয়েছে। ঢাকা থেকে কক্সবাজারের দূরত্ব ৪৪০ কিলোমিটার। ঢাকার বিভিন্ন স্থান থেকে কক্সবাজার রুটের বাসগুলি ছাড়ে। তবে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল, কমলাপুর, মতিঝিল ও আরামবাগ থেকে অধিকাংশ বাস ছাড়ে।

এই রুটে এসি ও নন-এসি উভয় ধরণের বাস রয়েছে। এই রুটে চলাচলকারী উল্লেখযোগ্য পরিবহনগুলোর মধ্যে রয়েছে গ্রীন লাইন, হানিফ এন্টারপ্রাইজ, শ্যামলী এন্টারপ্রাইজ, সোহাগ পরিবহন, সৌদিয়া, এস আলম পরিবহন, মডার্ন লাইন, শাহ বাহাদুর, সেন্টমার্টিন প্রভৃতি।

ঢাকা থেকে সরাসরি কক্সবাজারের সাথে এখনো কোনো রেল যোগাযোগ গড়ে ওঠেনি। রেলে করে কক্সবাজার যেতে চাইলে আপনাকে প্রথমে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যেতে হবে। চট্টগ্রামের জিইসি মোড়, সিনেমা প্যালেস, বহদ্দারহাট বাস টার্মিনাল, শাহ আমানত সেতু প্রভৃতি এলাকা থেকে বিভিন্ন পরিবহনের অসংখ্য বাস রয়েছে সরাসরি কক্সবাজারে যাওয়ার।

আকাশপথে

[সম্পাদনা]

ঢাকা বা চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি কক্সবাজারের সাথে বিমান যোগাযোগ রয়েছে। ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের একটি বিমান প্রতিদিন চলাচল করে।

দর্শনীয় স্থান

[সম্পাদনা]
  • কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারের প্রধান আকর্ষণ হচ্ছে সমুদ্র সৈকত। সবচেয়ে জাঁকজমক হচ্ছে লাবণী সমুদ্র সৈকত। পরিষ্কার ঝকঝকে পরিবেশ আর নানা সুযোগ-সুবিধা রয়েছে এখানে। সমুদ্র সৈকতের তীর ঘেঁষে রয়েছে ইজি চেয়ারে শোবার ব্যবস্থা। চা, কফি, ডাব, মুড়ি, বাদাম সবই পাওয়া যায়। এছাড়া স্পীডবোট, বিচ কার, ঘোড়ায় চড়ার ব্যবস্থা এসব তো রয়েছেই।
  • মাহাসিংদোগ্রী বৌদ্ধ মন্দির কক্সবাজার সদর উপজেলা পরিষদ থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এই বৌদ্ধমন্দির কক্সবাজার বায়তুশ শরফ কমপ্লেক্স এর পাশে রাখাইন পল্লীতে অবস্থিত। রিক্সা ও ব্যাটারী চালিত গাড়ি যোগে যাওয়া যায়। যাতায়াত ভাড়া প্রায় ৩০-৪০ টাকা।
  • মৎস্য অবতরণ ও পাইকারী মৎস্য বাজার কক্সবাজার সদর উপজেলার পশ্চিমে ৮ কিলোমিটার দূরে বিমান বন্দর সড়কে অবস্থিত। রিক্সা ও ব্যাটারী চালিত গাড়ি নিয়ে যাওয়া যায়। ভাড়া আনুমানিক ৫০-৬০ টাকা।
  • রাখাইন পাড়া কক্সবাজার সদর থেকে সিএনজি চালিত অটোরিক্সা যাওয়া যায়।
  • চৌফলদণ্ডী-খুরুশকুল সংযোগ সেতু কক্সবাজার শহর থেকে ৮ কিলোমিটার উত্তরে চৌফলদণ্ডী ইউনিয়নে নির্মিত। সিএনজি চালিত অটোরিক্সা, বাস ও রিক্সা যোগে যাওয়া যায়।
  • বার্মিজ মার্কেট কক্সবাজার সদর উপজেলা পরিষদ থেকে ৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। যেকোন যানবাহনে যাওয়া যায়।
  • ইনানী সৈকত কক্সবাজার থেকে চান্দের গাড়ি করে এক বা দেড় ঘণ্টার পথ পেরিয়ে যাওা যায় এক সুন্দর সৈকত এ, যেখানে কোরাল পাথরগুলো আর বিভিন্ন আকৃতির শামুক, ঝিনুক হল মূল আকর্ষণ। ইনানী বিচ এ যে কেউ মুগ্ধ হতে বাধ্য। তবে সমস্যা হল পর্যটকদের আগে থেকেই খাবারদাবার সাথে করে নিয়ে যেতে হবে। যদিও বর্তমানে ইনানী বিচ এ কিছু রিসর্ট বা রেস্তোরাঁ হয়েছে। কিন্তু সেগুলো ব্যয়বহুল হতে পারে অনেকের কাছে।
  • হিমছড়ি ঝর্ণা কক্সবাজার থেকে ১২ কিমি দক্ষিনে অবস্থিত এই প্রাকৃতিক ঝর্না অনেককেই আকর্ষণ করে থাকে। শীতকালে যদিও এ ঝর্নার পানি কমে যায়। আর দুঃখের কথা এই যে, বর্তমানে কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনায় সেখানে ময়লার ভাগাড় হয়ে গিয়েছে।

এছাড়া অন্যান্য দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে রয়েছে:

  • কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি
  • কক্সবাজার বিমানবন্দর
  • শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম
  • রাডারস্টেশন (হিলটপ সার্কিট হাউজ সংলগ্ন)
  • শাল, সেগুন, মেহগনি, গর্জন, রাবারসহ নানা প্রকৃতির উদ্ভিদ ও দুষ্প্রাপ্য অর্কিড
  • কক্সবাজার বৌদ্ধ বিহার
  • অগ্বমেধা বৌদ্ধ বিহার
  • ঝিলংজা ইউনিয়নে দ্বাদশ শতাব্দীতে নির্মিত এক গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদ
  • ডুলাফকির মাজার
  • চিংড়ি রপ্তানি জোন
  • লবণ রপ্তানি জোন

থাকার ব্যবস্থা

[সম্পাদনা]

কক্সবাজার শহরের কলাতলীতে ভালোমানের হোটেল রয়েছে। বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের মোটেল শৈবাল, লাবণী, প্রবাল ছাড়াও বেসরকারি হোটেলগুলোর মধ্যে 'হোটেল সী গাল', 'হোটেল দি কক্স টুডে', 'হোটেল সী প্যালেস', 'মিডিয়া ইন্টারন্যাশনাল', 'জিয়া গেস্ট হাউজ', 'সোহাগ গেস্ট হাউজ', 'গ্রীন অবকাশ রিসোর্ট', 'নিট বেল রেস্টহাউজ' রয়েছে। এ সকল হোটেলে ৩০০ থেকে ৩০০০ টাকায় রাত্রিযাপন করা যায়।

কক্সবাজার এ বর্তমানে মোট ১৪৫ টি হোটেল রয়েছে। তন্মধ্যে ৬ টি হোটেলে সুইমিং পুল রয়েছে এবং ৪ টি তে স্পা করার সুব্যাবস্থা রয়েছে। এর মধ্যে ১৯ টি হোটেল ব্যয়বহুল।

খাওয়া দাওয়া

[সম্পাদনা]

কক্সবাজার শহরের যে কোন জায়গায় যে কোন মানের হোটেলে খেতে পারেন।