ত্লাবং ঝর্ণা বা দ্বৈত ঝর্ণা বাংলাদেশের বান্দরবান জেলায় অবস্থিত জলপ্রপাত। যা জোড়া বা ক্লিবুং খাম নামেও পরিচিত। পাথুরে খাল রেমাক্রির উৎপত্তি এই ঝরনা থেকেই। ত্লাবং একটি বম শব্দ। এর অর্থ “পানি ধরে রাখার বেসিন বা গর্ত”।
বর্ণনা
[সম্পাদনা]দুটি পানির প্রবাহ প্রানশা বা প্রাংশা (বামে) ও পাঙ্খিয়াং বা পাংখিয়াং (ডানে) ঝিরি মিলে দুটি জলপ্রপাত তৈরী হয়েছে। দুটি ঝর্ণা একসাথে থাকার কারণের একে দ্বৈত ঝর্ণা বলা হয়। বম গ্রাম হতে ২.৫ কিমি দক্ষিণ-পূর্ব এবং কেওক্রাডং থেকে ১-২ ঘণ্টা দূরত্বে ত্লাবং ঝর্ণা অবস্থিত। সুংসাং পাড়া আর থাইক্ষাং পাড়ার মাঝের জঙ্গলের অত্যন্ত গভীরে অবস্থিত এই ঝর্নাটি।
সুংসাং পাড়া থেকে লাল মাটির একটি গমনপথ এগিয়েছে থাইক্যাং পাড়ার দিকে। সেই পথ ধরে হাঁটলে দেখা মিলে তলাবংয়ের। পথের ডানপাশে কপিতাল পাহাড় অবস্থিত।
যাতায়াত
[সম্পাদনা]প্রথমে বান্দরবন আসতে হবে। রাজধানী শহর ঢাকা থেকে বিভিন্নভাবে বান্দরবন আসা যায়। বাসযোগে সরাসরিভাবে আসা যায়। তবে ভেঙে আসলে বাস, ট্রেন, প্লেন পছন্দসই যেকোন মাধ্যম বেছে নেওয়া যাবে।
- বাস
ঢাকা টু বান্দরবান রুটে ঢাকার বিভিন্ন স্থান থেকে এস. আলম, সৌদিয়া, ইউনিক, হানিফ, শ্যামলি, সেন্টমার্টিন পরিবহন, ডলফিন ইত্যাদি পরিবহনের বাস বান্দরবনের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। এসি ও ননএসি জনপ্রতি এসব বাসের ভাড়া ৫৫০ থেকে ১৫০০ টাকা। অথবা ঢাকা থেকে চট্রগ্রাম এসে তারপর চট্রগ্রামের বিআরটিসি টার্মিনাল বা দামপাড়া বাস স্ট্যান্ড থেকে ১০০-৩০০ টাকায় বাস ভাড়ায় বান্দরবন আসা যায়। চট্রগ্রাম থেকে প্রাইভেট কারে ২৫০০-৩৫০০ টাকায় বান্দরবন যাওয়া যায়।
- ট্রেন
ঢাকা থেকে চট্রগ্রাম গামী সোনার বাংলা, সুবর্ণ এক্সপ্রেস, তূর্ণা নিশিতা, মহানগর প্রভাতি কিংবা মহানগর গোধূলি ট্রেনে করে চট্রগ্রাম আসা যায়। শ্রেণী ভেদে ট্রেন ভাড়া ৩৫০ থেকে ১৫০০ টাকা। চটগ্রাম এসে উপরে নিয়মে বান্দরবান যেতে হবে।
- আকাশপথ
বাংলাদেশ বিমান, জিএমজি এয়ার লাইনস, ইউনাইটেড এয়ার ওয়েজসহ বেশকিছু বিমান ঢাকা থেকে সরাসরি চট্রগ্রাম ফ্লাইট পরিচালনা করে থাকে। আকাশপথে চট্রগ্রাম এসে সড়কপথে উপরে উল্লেখিত উপায়ে বান্দরবান যেতে হবে।
- বান্দরবন থেকে ত্লাবং ঝর্ণা
রুমা –> বগাহ্রদ –> কেওক্রাডং –> পাসিং পাড়া –> সুংসাং পাড়া –> ত্লাবং ঝর্ণা
বান্দরবান থেকে বাস করে রুমা সদর উপজেলা যাওয়া যায়। প্রতি এক ঘণ্টা পরপর একটি করে বাস বান্দরবান থেকে রুমা বাজারের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। সেখান থেকে পরবর্তী গন্তব্য বগা হ্রদ। বগা হ্রদে দুইভাবে পৌঁছানো যায়। ঝিরিপথে হেঁটে বা চান্দের গাড়িযোগে।
বগা হ্রদ থেকে বাকীপথ ট্রেক করে এগিয়ে যেয়ে, দার্জিলিংপাড়া হয়ে বাংলাদেশের পঞ্চম উচ্চতম শৃঙ্গ কেওক্রাডংয়ে যাওয়া যায়। এরপর সেখান থেকে হেঁটে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ গ্রাম পাসিংপাড়ায় যেতে হয়। এরপর যেতে হয় সুংসাংপাড়া। প্রায় এক হাজার ফুট নিচে সুংসাংপাড়া অবস্থিত। সেখান থেকে প্রায় দু’ঘণ্টা হাঁটার পর জোড়া ঝরণায় পৌঁছানো যায়।