বিষয়বস্তুতে চলুন

উইকিভ্রমণ থেকে

রাঙ্গামাটি জেলা বাংলাদেশের একটি জেলা যা চট্টগ্রাম বিভাগ এর অন্তর্গত। রাঙ্গামাটির উত্তরে ভারতের ত্রিপুরা, মিজোরাম, দক্ষিণে বান্দরবান, পূর্বে মিজোরাম ও পশ্চিমে চট্টগ্রাম ও খাগড়াছড়ি। এ জেলা আয়তনের দিক থেকে দেশের সর্ববৃহৎ জেলা। দেশের এক মাত্র রিক্সা বিহীন শহর, হ্রদ পরিবেষ্টিত পর্যটন শহর এলাকা। এ জেলায় চাকমা, মারমা, তঞ্চঙ্গ্যা, ত্রিপুরা, মুরং, বোম, খুমি, খেয়াং, চাক্, পাংখোয়া, লুসাই, সুজেসাওতাল, রাখাইন সর্বোপরি বাঙ্গালীসহ ১৪টি জনগোষ্ঠি বসবাস করে। রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান- এই তিন পার্বত্য অঞ্চলকে নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলা সৃষ্টির পূর্বের নাম ছিল কার্পাস মহল। পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলা থেকে ১৯৮১ সালে বান্দরবান এবং ১৯৮৩ সালে খাগড়াছড়ি পৃথক জেলা সৃষ্টি করা হলে পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলার মূল অংশ রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথাগত রাজস্ব আদায় ব্যবস্থায় রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলায় রয়েছে চাকমা সার্কেল চীফ। চাকমা রাজা হলেন নিয়মতান্ত্রিক চাকমা সার্কেল চীফ।

কীভাবে যাবেন?

[সম্পাদনা]

স্থলপথে

[সম্পাদনা]

চট্টগ্রাম থেকে রাঙ্গামাটিতে বাস যোগে আসা যায়। রাঙ্গামাটিতে যাওয়ার সরাসরি দুইটি বাস আছে। একটি হলো পাহাড়িকা যা চট্টগ্রাম থেকে সকাল ৮.০০টা থেকে রাত ৮.০০টা পর্যন্ত এবং রাঙ্গামাটি হতে সকাল ৮.০০টা থেকে রাত ৮.৩০মিনিট পর্যন্ত চলাচল করে। এই বাস সার্ভিসটি প্রতি ১ ঘণ্টা অন্তর অন্তর স্টেশন থেকে ছেড়ে যায় এবং গন্তব্যে পৌঁছাতে প্রায় ৩ ঘণ্টা সময় নেয়। পাহাড়িকা বাস সার্ভিসের টিকিটের মূল্য ১৫০ টাকা এবং টিকিট মুরাদপুর ও অক্সিজেন মোড় থেকে সংগ্রহ করা যায়। আরেকটি বাস সার্ভিস হচ্ছে বিআরটিসি বাস সার্ভিস, যা রাঙামাটির একমাত্র শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাস সার্ভিস। এই বাসের টিকিটের ভাড়া ১৫০ টাকা এবং টিকিট চট্টগ্রামস্থ বটতলী রেলওয়ে স্টেশনের বিআরটিসি কাউন্টার থেকে সংগ্রহ করা যাবে। এছাড়া অনেক ধরনের লোকাল বাস সার্ভিসের ব্যবস্থা রয়েছে, তবে সেসব বাস সার্ভিস রাস্তার যেকোন জায়গা থেকে যাত্রী উঠানামা করায়, ফলে বাসে সবসময় যাত্রীদের ভিড় লেগে থাকে এবং গন্তব্যে ৪-৫ ঘণ্টা সময় ব্যয় হয়। রাজধানী ঢাকা থেকেও রাঙ্গামাটি যাওয়ার কিছু বাস সার্ভিস রয়েছে। এই বাস সার্ভিসগুলো শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত নয়। এছাড়াও আশেপাশের জেলাগুলোতেও কিছু লোকাল বাস সার্ভিসের ব্যবস্থা রয়েছে রাঙ্গামাটিতে আসা যাওয়ার জন্য।

আকাশ পথে

[সম্পাদনা]

জল পথে

[সম্পাদনা]

দর্শনীয় স্থান

[সম্পাদনা]
মানচিত্র
রাঙ্গামাটি জেলার মানচিত্র

  • সাজেক ভ্যালী
  • কাপ্তাই হ্রদ
  • ধুপপানি ঝর্ণা
  • কাপ্তাই নেভী ক্যাম্প
  • ঝুলন্ত সেতু
  • আসামবস্তি ব্রীজ
  • বীরশ্রেষ্ঠ ল্যান্সনায়েক মুন্সী আব্দুর রউফ স্মৃতি ভাস্কর্য চট্টগ্রাম-রাঙ্গামাটি মহাসড়ক সংলগ্ন সাপছড়ি নামক স্থানে অবস্থিত। সদর উপজেলা থেকে অটোরিক্সা এবং চট্টগ্রামগামী বিভিন্ন যানের মাধ্যমে এ স্থানে যাওয়া যায়।
  • উপজাতীয় জাদুঘর
  • জেলা প্রশাসক বাংলো রাঙ্গামাটি শহরের যে কোন স্থান থেকে অটোরিক্সা যোগে যাওয়া যায়। ভাড়ার পরিমাণ ১০০-১৫০ টাকা। তবে বাংলো এলাকায় প্রবেশের জন্য অনুমতি আবশ্যক।
  • জীবতলী ইউনিয়নের প্রবেশ মুখ রাঙ্গামাটি সদর উপজেলা থেকে সড়ক পথে তবলছড়ির আসামবস্তি হয়ে জীবতলী ইউনিয়নে যেতে হয়। এছাড়া নদীপথেও জীবতলী যাওয়া যায়।
  • পেদা টিং টিং কাপ্তাই হ্রদের উপর নির্মিত ভাসমান পাহাড়ে অবস্থিত পর্যটন আকর্ষণ কেন্দ্র। পেদা টিং টিং চাকমা শব্দগুচ্ছ। এর ভাবগত অর্থ হচ্ছে - পেট টান টান। অর্থাৎ, মারাত্মকভাবে খাবার পর পেটের যে টান টান অবস্থা থাকে, সেটাকেই বলা হয় পেদা টিং টিং।

রাত্রিযাপন

[সম্পাদনা]

রাঙামাটি শহরে বিভিন্ন মানের আবাসিক হোটেল রয়েছে। রাঙামাটি শহরের পুরাতন বাস স্ট্যন্ড ও রিজার্ভ বাজার এলাকায় লেকের কাছাকাছি হোটেলে উঠলে হোটেল থেকে কাপ্তাই লেকের পরিবেশ ও শান্ত বাতাস উপভোগ করা যাবে। এছাড়া কম খরচে থাকতে বোডিং এ থাকা যাবে। বোডিংগুলোতে খরচ কম হলেও এগুলোর পরিবেশ খুব একটা ভাল নয়। রাঙামাটি শহরের উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হোটেল:

  • হোটেল গ্রিন ক্যাসেল (রিজার্ভ বাজারে অবস্থিত), ০১৭২৬-৫১১৫৩২ , ০১৮১৫-৪৫৯১৪৬ নন-এসি সিঙ্গেল বেড, ডাবল বেড ও ত্রিপল বেডের রুমের ভাড়া যথাক্রমে ৮০০, ১০০০ ও ১২০০ টাকা। এসি কাপল বেড রুম ভাড়া ১৬০০ টাকা ও এসি ট্রিপল বেড রুম ভাড়া ২০০০ টাকা।
  • পর্যটন মোটেল (রাঙ্গামাটি ঝুলন্ত ব্রিজের পাশে অবস্থিত), ০৩৫১-৬৩১২৬ নন-এসি ডাবল বেডের রুম ভাড়া ১০০০-১২০০ টাকা। আর এসি ডাবল বেড ভাড়া ১৫০০-১৮০০ টাকা।
  • রংধনু গেস্ট হাউজ, ০১৮১৬-৭১২৬২২ , ০১৭১২-৩৯২৪৩০ ফ্যামিলি বেড বা কাপল বেড ভাড়া নিতে খরচ পড়বে যথাক্রমে ৬৫০ ও ৫০০ টাকা।
  • হোটেল সুফিয়া, ফিসারী ঘাট, কাঁঠালতলী, ০১৫৫৩-৪০৯১৪৯
  • হোটেল আল-মোবা, নতুন বাস স্টেশন, রিজার্ভ বাজার, ০১৮১১-৯১১১৫৮

রাঙ্গামাটিতে বিভিন্ন মানের খাবার রেস্তোরাঁ রয়েছে। রেস্তোরাঁয় স্থানীয় ঐতিহ্যবাহী বাঙালী, পাহাড়ি সব খাবার পাওয়া যায়। ভিন্ন স্বাদের এইসব খাবারের স্বাদ নিতে পর্যটকগণ আগ্রহী থাকেন।

চিত্রশালা

[সম্পাদনা]