হবিগঞ্জ শহর হলো বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত একটি ঐতিহ্যবাহী শহর, যা সিলেট বিভাগের অন্তর্গত হবিগঞ্জ জেলায় পড়েছে। এটি মূলত হবিগঞ্জ পৌরসভা, যা ৯টি ওয়ার্ডে বিভক্ত এবং থোয়াই নদীর তীর ঘেষে অবস্থিত। এটি রাজধানী ঢাকা থেকে ১৬৩ কিলোমিটার এবং বিভাগীয় সদর দপ্তর সিলেট থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
কীভাবে যাবেন?
[সম্পাদনা]স্থলপথে
[সম্পাদনা]সড়ক পথে ঢাকা হতে হবিগঞ্জের দূরত্ব ১৬৩ কিলোমিটার এবং বিভাগীয় শহর সিলেট হতে হবিগঞ্জের দূরত্ব ১০০ কিলোমিটার। রেলপথে ঢাকা হতে শায়েস্তাগঞ্জ স্টেশনের দূরত্ব ২০০ কিলোমিটার।
সড়কপথ
[সম্পাদনা]ঢাকার সায়েদাবাদ বাস স্টেশন থেকে হবিগঞ্জে আসার সরাসরি দুরপাল্লার বাস সার্ভিস আছে; এগুলোতে সময় লাগে ৪ হতে ৫ ঘণ্টা। ঢাকা থেকে সরাসরি হবিগঞ্জ আসার জন্য পরিবহন কোম্পানিগুলো হচ্ছে - অগ্রদুত পরিবহন (এসি ও নন-এসি), দিগন্ত পরিবহন (এসি ও নন-এসি) এবং বিছমিল্লাহ পরিবহন (নন-এসি)।
- ঢাকা-হবিগঞ্জ রুটে সরাসরি চলাচলকারী পরিবহনে আসার ক্ষেত্রে ভাড়া হলোঃ
- এসি বাসে - ২৫০ টাকা এবং
- নন-এসি বাসে - ২০০ টাকা।
- সরাসরি চলাচলকারী পরিবহন হবিগঞ্জ হতে ছাড়ার সময় হলোঃ
- অগ্রদুত পরিবহন - ভোর ০৪টা ৪৫ মিনিট, ভোর ০৫টা ১৫ মিনিট, সকাল ০৬টা, সকাল ০৭টা (এসি), সকাল ০৮টা, সকাল ১০টা ৩০ মিনিট, দুপুর ১২টা ৩০ মিনিট, দুপুর ২টা এবং বিকাল ০৪টা (এসি)।
- দিগন্ত পরিবহন - ভোর ০৫টা ৩০ মিনিট, সকাল ০৬টা ৩০ মিনিট, সকাল ০৮টা ১৫ মিনিট, সকাল ০৮টা (এসি), সকাল ১১টা ৩০ মিনিট (এসি) এবং বিকাল ০৩টা।
- বিছমিল্লাহ পরিবহন - ভোর ০৫টা ৪৫ মিনিট, সকাল ০৬টা ১৫ মিনিট, সকাল ৭টা ৩০ মিনিট, সকাল ০৮টা ৩০ মিনিট, দুপুর ১২টা, দুপুর ০২টা ৩০ মিনিট এবং বিকাল ০৪টা ৩০ মিনিট।
- সরাসরি চলাচলকারী পরিবহন ঢাকা হতে ছাড়ার সময় হলোঃ
- অগ্রদুত পরিবহন - সকাল ০৭টা ১০ মিনিট, সকাল ০৮টা ৩০ মিনিট (এসি), সকাল ০৯টা ৫০ মিনিট, সকাল ১১টা ১০ মিনিট, দুপুর ০১টা ১০ মিনিট, বিকাল ০৪টা ৩০ মিনিট (এসি) এবং সন্ধ্যা ০৬টা ৩০ মিনিট।
- দিগন্ত পরিবহন - সকাল ০৯টা ১০ মিনিট, সকাল ১১টা ৫০ মিনিট, দুপুর ০১টা ৫০ মিনিট, বিকাল ০৩টা ১০ মিনিট (এসি), বিকাল ০৫টা ৫০ মিনিট (এসি) এবং সন্ধ্যা ০৭টা ৪৫ মিনিট।
- বিছমিল্লাহ পরিবহন - সকাল ০৬টা ৩০ মিনিট, সকাল ৭টা ৫০ মিনিট, সকাল ১০টা ৩০ মিনিট, দুপুর ১২টা ৩০ মিনিট, দুপুর ০২টা ৩০ মিনিট, বিকাল ০৫টা ১০ মিনিট এবং সন্ধ্যা ০৭টা ১০ মিনিট।
এছাড়াও সিলেট বিভাগের যেকোন স্থানের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা দুরপাল্লার বাসে শায়েস্তাগঞ্জ এসে সেখান থেকে বাস, ম্যাক্সি, লেগুনা, সিএসজি অটোরিক্সা, জীপ প্রভৃতিতে করে হবিগঞ্জ জেলা সদরে আসা যায়। শায়েস্তাগঞ্জ হচ্ছে সড়কপথে সিলেট বিভাগের প্রবেশদ্বার ও অন্যতম প্রধান বাস স্টেশন এবং এখান দিয়েই মূল ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক বিস্তৃত বলে যেকোন বাসে করে এখানে এসে তারপর হবিগঞ্জ আসা সম্ভব। ঢাকা থেকে সিলেটের উদ্দেশ্যে হানিফ, শ্যামলী, এনা, ইউনিক, মামুন, সাউদিয়া, গ্রীনলাইন, মিতালি প্রভৃতি পরিবহন কোম্পানীর বাস আছে প্রতি ১০ মিনিট পর পর।
- ঢাকা-সিলেট রুটে সরাসরি চলাচলকারী পরিবহনে শায়েস্তাগঞ্জ আসার ক্ষেত্রে ভাড়া হলোঃ
- এসি বাসে - ১২০০ টাকা এবং
- নন-এসি বাসে - ৩৭০ টাকা।
১০০ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত বিভাগীয় শহর সিলেট হতে 'হবিগঞ্জ বিরতিহীন এক্সপ্রেস' বাসে ২ থেকে ২:৩০ ঘণ্টায় হবিগঞ্জ আসা যায়। এপথে ভাড়া নেয়া হয় ১৫০ টাকা।
রেলপথ
[সম্পাদনা]রেলপথে সরাসরি হবিগঞ্জ আসার ট্রেন নেই; এখানে আসতে হয় শায়েস্তাগঞ্জ হয়ে। ঢাকার কমলাপুর রেল স্টেশন থেকে সিলেটের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা যেকোন ট্রেনে শায়েস্তাগঞ্জ আসা যায়; কারণ শায়েস্তাগঞ্জ হচ্ছে রেলপথে সিলেট বিভাগে প্রবেশের অন্যতম প্রধান স্টেশন এবং এই শহরটির উপর দিয়েই মূল ঢাকা-সিলেট ও চট্টগ্রাম-সিলেট রেলপথটি বিস্তৃত।
- ঢাকা-সিলেট রুটে চলাচলকারী ট্রেনে শায়েস্তাগঞ্জ আসার ক্ষেত্রে ভাড়া হলোঃ
- ২য় শ্রেণির সাধারণ - ৫৫ টাকা;
- ২য় শ্রেণির মেইল - ৭৫ টাকা;
- কমিউটার - ৯০ টাকা;
- সুলভ - ১১০ টাকা;
- শোভন - ১৮০ টাকা;
- শোভন চেয়ার - ২১৫ টাকা;
- ১ম শ্রেণির চেয়ার - ২৮৫ টাকা;
- ১ম শ্রেণির বাথ - ৪২৫ টাকা;
- এসি সীট - ৪৮৯ টাকা এবং
- এসি বাথ - ৭৩১ টাকা।
- ঢাকা-সিলেট রুটে চলাচলকারী ট্রেনগুলো ঢাকা হতে ছাড়ার সময় হলোঃ
- পারাবত এক্সপ্রেস (৭০৯) - সকাল ০৬টা ৪০ মিনিট (মঙ্গলবার বন্ধ)।
- জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস (৭১৭) - দুপুর ০২টা (কোনো বন্ধ নেই)।
- উপবন এক্সপ্রেস (৭৩৯) - রাত ১০টা (বুধবার বন্ধ)।
আকাশ পথে
[সম্পাদনা]এই শহরটিতে সরাসরি বিমানে চলাচলের কোনো ব্যবস্থা এখনো তৈরি হয় নি; তবে ঢাকা হতে সিলেটে আকাশ পথে বিমানে এসে সেখান থেকে সড়কপথে সরাসরি কিংবা রেলপথে শায়েস্তাগঞ্জ এসে সেখান থেকে হবিগঞ্জ আসা যায়।
জল পথে
[সম্পাদনা]অপ্রচলিত মাধ্যম হিসাবে নৌপথ ব্যবহৃত হয়ে থাকে; তবে কেবলমাত্র শেরপুর ও আজমেরীগঞ্জ ছাড়া অন্য কোনো এলাকার সাথে ঢাকা থেকে বা সিলেট শহর হতে সরাসরি কোনো নৌযান চলাচল করে না। অপরদিকে, হাওড় এলাকায় যোগাযোগের একমাত্র বাহন নৌযান।
দর্শনীয় স্থান ও স্থাপনা
[সম্পাদনা]- খোয়াই নদীর তীর;
- সার্কিট হাউজ - হবিগঞ্জ।
খাওয়া দাওয়া
[সম্পাদনা]হবিগঞ্জে স্থানীয় পর্যায়ের বিশেষ কোনো বিখ্যাত খাদ্য নেই। তবে স্থানীয় আনারস, কমলা, পান, লেবু এবং কাঠালের বেশ সুখ্যাতি রয়েছে। এছাড়াও রয়েছে চা-পাতা। হাওড় এলাকায় প্রচুর মাছ পাওয়া যায় এবং খামার ভিত্তিক হাঁস পালন করা হয়। এখানে সাধারণভাবে দৈনন্দিন খাওয়া-দাওয়ার জন্য স্থানীয় হোটেল ও রেস্টুরেন্টগুলোতে সুস্বাদু খাবার পাওয়া যায়। স্থানীয় পর্যায়ের উন্নতমানের ও নিরিবিলি পরিবেশের রেস্তোরা হিসাবে রয়েছেঃ
- হোটেল জামিল;
- হোটেল আলিফ;
- হোটেল সোনার তরী।
রাত্রি যাপন
[সম্পাদনা]আবাসিক ও রাত্রি যাপনের জন্য সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ের আবাসন ব্যবস্থা রয়েছে এখানে। আবাসনের জন্য রয়েছেঃ
- সার্কিট হাউজ, হবিগঞ্জ, ☎ ০৮৩১-৫২২২৪।
- জেলা পরিষদ রেস্টহাউজ, হবিগঞ্জ।
- পানি উন্নয়ন বোর্ড রেস্টহাউজ, হবিগঞ্জ। সিংগেল কক্ষ ভাড়াঃ ১২০/- ও ডাবল কক্ষ ভাড়াঃ ২০০/-।
- শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে রেস্টহাউজ - বাংলাদেশ রেলওয়ে'এর ব্যবস্থাধীন (সরকারী)। মোবাইল: +৮৮০১৯২০-৪১৬৬২৩।
- সড়ক ও জনপথ বিভাগ রেস্টহাউজ - (সরকারী)।
- পল্লী বিদ্যুৎ রেস্টহাউজ, শায়েস্তাগঞ্জ - পল্লী বিদ্যুৎ'এর ব্যবস্থাধীন (সরকারী)।
- হোটেল সোনার তরী, হবিগঞ্জ। সিংগেল কক্ষ ভাড়াঃ ৩০০/- ও ডাবল কক্ষ ভাড়াঃ ৩৫০/- এবং এসি কক্ষ ভাড়াঃ ৭০০/-।