আলীর গুহা বা আলীর সুড়ঙ্গ পার্বত্য জেলা বান্দরবানের আলীকদম উপজেলা সদর থেকে মাত্র তিন কিলোমিটার দূরেই মাতামুহুরী-তৈন খাল ঘেঁষে দাঁড়িয়ে থাকা দু‘পাহাড়ের চূঁড়ায় অবস্থিত। এটি প্রাকৃতিক ভাবে সৃষ্ট, ঝিরি থেকে দেড়শত ফুট উপরে এই গুহা। প্রকৃতির অপরূহ এই গুহাকে ঘিরে রহস্যের শেষ নেই।
জানুন
[সম্পাদনা]আলীর সুড়ঙ্গ নামকরণের সঠিক কোনো তথ্য কারো জানা নেই। পাহাড়ি ঝিরি থেকে গুহায় উঠতে খুবই কষ্টকর। পাথর বেষ্টিত এই গুহায় কিছুদিন আগেও উঠতে হলে দড়ি বা পাহাড়ের লতা ধরে আস্তে আস্তে উঠতে হতো। পর্যটকদের এই সমস্যার সমাধানে আলীকদম সেনা জোনের উদ্যোগে তিনটি সিঁড়ি স্থাপন করা হয়েছে। ফলে পর্যটকদের বড় কোনো সমস্যা পোহাতে হয় না। অনায়াসেই যেতে পারেন গুহার দর্শনে। দেখতে অনেকটা ভয়ংকর! পাহাড়ের মাঝখানে লম্বাকৃতির এই গুহাটি প্রায় ১০০ ফুট লম্বা। তার পাশেই আরও দু‘টি গুহা রয়েছে। যাদের দৈর্ঘ্য প্রায় একই রকম। গুহার ভেতরে অন্ধকার! টর্চ লাইট বা আগুনের মশাল নিয়ে প্রবেশ করতে হয়। তবে সতর্কতা, গুহার ভেতরে রয়েছে ছোট বড় চাপা বাদুড় রয়েছে। এই বাদুড় গুলো এদিক থেকে ওদিক উড়ে যাওয়ার সময় ভয় পেতে পারেন। তবে এরা কারো কোনো ক্ষতি করে না।
কীভাবে যাবেন
[সম্পাদনা]ঢাকা বা চট্টগ্রাম থেকে আপনাকে প্রথমে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চকরিয়া পৌর বাস টার্মিনালে নামতে হবে।
ঢাকা থেকে শ্যামলী পরিবহন ও হানিফ এন্টারপ্রাইজ বাস সরাসরি আলীকদমে চলাচল করে। ঢাকা থেকে আলীকদম বাস ভাড়া ৮৫০ টাকা। এছাড়া কক্সবাজারগামী বাসেও যাওয়া সম্ভব। এজন্য আপনাকে কক্সবাজার হতে প্রায় দক্ষিণে চকোরিয়া বাস টার্মিনালে নামতে হবে। অপরদিকে কক্সবাজার হতে আলীকদমে যেতে চাইলে কক্সবাজার হতে শুরুতে চকোরিয়া যেতে হবে। কক্সবাজার হতে চকোরিয়া বাস ভাড়া ৫০/৬০ টাকা। চকোরিয়া হতে এরপর যেতে আলীকদম। চকোরিয়া হতে আলীকদম যাওয়ার জন্য জিপ এবং বাস সার্ভিস রয়েছে। জিপে ভাড়া পড়বে জনপ্রতি ৭০ টাকা আর বাসে ৫০ টাকা। প্রতিদিন সকাল ৭.৩০ থেকে সন্ধ্যা ৬.৩০ পর্যন্ত এই রুটে বাস পাওয়া যায়।
আলীকদম বাস স্ট্যান্ড নেমে প্রথমে মংচুপ্রু পাড়ায় যেতে হবে। হেঁটে বা অটো করে যাওয়া যাবে এই ৩ কি.মি. এর মত পথ। অটো রিজার্ভ ভাড়া পড়বে ৫০ টাকা। মংচুপ্রু পাড়ার পাশ দিয়ে বয়ে গেছে তৈন খাল। তৈন খাল পার হয়েই আলীর সুড়ঙ্গ যেতে হবে। মংচুপ্রু পাড়া থেকে প্রথম গুহার কাছে যেতে ২০ মিনিটের মত সময় লাগবে।
সাদারণত এখানে দিনের বেলায় নিয়মিত দর্শনার্থীদের যাতায়াত থাকে। তাদের অনুসরণ করে বা ঝিরি ধরে হাঁটলে সহজেই গুহাগুলি খুঁজে পাওয়া যায়। যদিও সবচেয়ে দীর্ঘ গুহাটির মুখ খুব ছোট হওয়ায় চেনা একটু কষ্টকর। সেক্ষেত্রে গাইড থাকলে একটু সুবিধা পাওয়া যেতে পারে।
থাকার ব্যবস্থা
[সম্পাদনা]- 1 দ্যা দামতুয়া ইন, আলীকদম উপজেলা সড়ক, ☎ +৮৮ ০১৭৪৮ ৯১২১২৭, ইমেইল: thedamtuainn@gmail.com। আগমন: ১২.০০, প্রস্থান: ১১.০০। নন এসি রুম, গাড়ি পার্কিং ও কফারেন্সের সুবিধা এবং হোটেল সংলগ্ন রেস্তোরা ৳১,০০০।
খাওয়া দাওয়া
[সম্পাদনা]আলীকদমের খাবার হোটেল গুলো মাঝারি মানের। খুব বেশি কিছু আশা করা ভুল হবে। তবে দ্যা দামতুয়া ইন ও রেস্তোরাঁয় তিন বেলা বেশ ভালো মানের খাবার পাওয়া যায়।
- 1 দামতুয়া ইন ও রেস্তোরাঁ, আলীকদম উপজেলা সড়ক, ☎ +৮৮০ ১৮৮৩ ৫৩৫২০০। রাত্রি ৯ টা পর্যন্ত।
চিত্রশালা
[সম্পাদনা]- আলীর সুড়ঙ্গ
- গুহার প্রবেশ মুখ
- গুহার ভেতরে দর্শনার্থী
- সুড়ঙ্গে যাওয়ার পথ
- তৈন খাল, যা পার হয়ে গুহায় যেতে হয়