ফেণী বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিভাগের একটি উল্লেখযোগ্য শহর এবং জেলা। এটি চট্টগ্রাম শহরের উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত এবং জেলা সদর হিসেবে পরিচিত। ফেনী তার কৃষি এবং বাণিজ্যিক কার্যক্রমের জন্য বিখ্যাত। এখানে রয়েছে বিস্তৃত কৃষিজমি, যেখানে ধান, চিংড়ি, এবং অন্যান্য কৃষি পণ্য উৎপাদন হয়। ফেনী নদীর তীরে অবস্থিত এই শহরটি একটি প্রধান সড়ক যোগাযোগ কেন্দ্র, যা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের সাথে যুক্ত। ফেনী শহরের জনসংখ্যা আড়াই লাখের কিছু কম, তবে এর আশপাশের অঞ্চলে জনসংখ্যা অনেক বেশি। ফেনী শহরটি তার ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি, স্থানীয় খাবার এবং অতিথিপরায়ণতার জন্য পরিচিত। ভৌগলিকভাবে তিন দিক দিয়ে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য বেষ্টিত ফেনীকে বাংলাদেশের নাভি বলা হয়।
অনুধাবন
[সম্পাদনা]ফেনী নদীর নামানুসারে অঞ্চলের নামকরণ হয়েছে ফেনী। মধ্যযুগে কবি-সাহিত্যিকদের লেখায় ফনী শব্দের ব্যবহার পাওয়া যায়। সতের শতকে মির্জা নাথানের ফার্সী ভাষায় রচিত বাহরিস্তান-ই-গায়েবীতে ফনী শব্দটি ফেনী হিশেবে পাওয়া যায়। ধারণা করা হয় আদি শব্দ ফনী কবি ও সাহিত্যিকদের ভাষায় ফেনীতে পরিণত হয়েছে। অতীতে এ অঞ্চল সাগরের অংশ ছিল, তবে উত্তর পূর্ব দিকে ছিল পাহাড়ি অঞ্চলের পাদদেশ। ১৯২৯ সালে ফেনী টাউন কমিটি গঠিত হয়েছিল পরে ১৯৫৮ সালে একে পৌরসভায় রুপান্তর করা হয়।
জলবায়ু
[সম্পাদনা]ভূসংস্থান অনুসারে ফেনী সমতলভূমিতে অবস্থিত হলেও এর উত্তরাংশ থেকে দক্ষিণাংশ তুলনামূলক ঢালু। বছরের অধিকাংশ সময়ই ক্রান্তীয় ভেজা এবং শুষ্ক আবহাওয়া বিরাজ করে। গড় তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ৩২.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বোনিম্ন ১৩.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এপ্রিল থেকে জুন হল সবচেয়ে উষ্ণতম মাস এবং ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি সবচেয়ে শীতলতম মাস। ফেনীর গড় বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাত ২৭৯৪ মিলিমিটার।
প্রবেশ
[সম্পাদনা]বিভাগীয় শহর চট্টগ্রাম থেকে ফেনী শহরের দূরত্ব ৯১.৭ কি.মি.।
স্থলপথে
[সম্পাদনা]ফেনী জেলায় সাধারনত সড়ক পথেই ভ্রমণ করা হয়ে থাকে। ঢাকার সায়েদাবাদ,আরামবাগ,টিটিপাড়া থেকে প্রতিদিন সকাল ৬ টা থেকে ১ ঘণ্টা পর পর ফেনীর উদ্দ্যেশে বাস ছেড়ে যায়। এদের মধ্যে ড্রীম লাইন, সেবা চেয়ার কোচ, স্টার লাইন অন্যতম। এ ছাড়াও সায়েদাবাদ হতে ছাড়া চট্টগ্রামগামী লোকাল বাস গুলোতে ফেনী যেতে পারবেন। ঢাকা থেকে ফেনীর ভাড়া নিতে পারে ২৫০ থেকে ৪২০ টাকা।
রেল পথে
[সম্পাদনা]চট্টগ্রামগামী সব ট্রেনই ফেনী যাত্রা বিরতি দিয়ে যায়। মহানগর গোধুলী, তূর্ণা, কর্ণফুলী, ঢাকা মেইল(কমিউটার) এই রুটে চলাচলকারী ট্রেন গুলোর মধ্যে অন্যতম।
আকাশ পথে
[সম্পাদনা]ফেনীর সঙ্গে সরাসরি বিমানযোগাযোগ নেই। শহরটির সবচেয়ে নিকটবর্তী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর চট্টগ্রাম শহরে অবস্থিত। তবে হেলিকপ্টার ব্যবহার করে যাওয়া যায়। সাধারণত বিদ্যালয় ও কলেজ প্রাঙ্গণ গুলো হেলিপ্যাড হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
দেখুন
[সম্পাদনা]- গান্ধী আশ্রম, নতুন মুন্সিরহাট বাজারে অবস্থিত। গান্ধী আশ্রম ট্রাস্টের একটি টিনের ছাউনি দেওয়া ঘর রয়েছে, যেখানে প্রশিক্ষণের বিভিন্ন সরঞ্জাম সংরক্ষিত আছে। ট্রাস্টের নথিপত্র পর্যালোচনা করে জানা যায়, মহাত্মা গান্ধী জীবদ্দশায় ১৯২১ সালের ৩১ আগস্ট ফেনীতে আগমন করেন এবং রেলওয়ে স্টেশনের বাইরে একটি সভা করেন।
- ফেনী বিমানঘাঁটি। ফেনী বিমানঘাঁটি একটি ঐতিহাসিক স্থাপনা, যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বার্মা অভিযান (১৯৪৪-১৯৪৫) চলাকালীন মার্কিন বিমানবাহিনী ব্যবহার করেছিল। বর্তমানে এই বিমানঘাঁটি পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে।
- রাবার বাগান, পরশুরাম। ফেনী জেলার পরশুরাম উপজেলার মির্জানগর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী জয়ন্তীনগর গ্রামে ব্যক্তিগত উদ্যোগে গড়ে তোলা হয়েছে পরশুরাম রাবার বাগান। ২০১০ সালে প্রায় ২৫ একর জমিতে ৮,০০০ রাবার গাছ রোপণের মাধ্যমে এই বাগানের যাত্রা শুরু হয়।
- শৈলকুঠির, মাস্টার পাড়া
- 1 ভাষা শহীদ আবদুস সালাম গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর, সালাম নগর গ্রাম। ভাষা শহিদ সালামের স্মৃতি রক্ষার্থে জাদুঘরটি স্থাপন করা হয়।
- চারশত বছরের প্রাচীন কড়ই গাছ - ফেনীতে ডেপুটি ম্যাজিষ্ট্রেট ও ডেপুটি কালেক্টর হিসেবে কর্মরত থাকাকালীন কবি নবীনচন্দ্র সেন এই গাছের ছায়ায় বসে কবিতা লিখতেন।
জলাধার
[সম্পাদনা]- কৈয়ারা দিঘী
- পরীর দিঘী
- 2 ফেনী নদী। ২৪ ঘণ্টা। বাংলাদেশ-ভারতের একটি আন্তঃসীমান্ত নদী। ১৫৩ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এবং ১৫৯ মিটার গড় প্রস্থের সর্পিলাকার নদীটি বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের ফেনী, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রাম জেলা দিয়ে প্রবাহিত। উৎসমূল থেকে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত ফেনী নদীর দৈর্ঘ্য ১১৫.৮৫ কিলোমিটার। ছোট ফেনী নদী নামে পরিচিত নোয়াখালী জেলার মুহুরী নদী ফেনী নদীর মোহনায় এসে মিলিত হয়েছে। বিনামূল্য।
- পরীর দিঘী
- 3 বিজয় সিংহ দীঘি (বিজয় সেনের দীঘি), বিজয় সিংহ গ্রাম (সার্কিট হাউজের পাশে)। ২৪ ঘণ্টা। বাংলার সেন বংশের প্রতিষ্ঠাতা বিজয় সেন দীঘিটি খনন করেন। আয়তন ৩৭.৫৭ একর। ১৯৯৫ সালে দিঘীর ধারে বৃক্ষ রোপণ করা হয়। বিনামূল্য।
- 4 মুহুরি প্রজেক্ট, সোনাগাজী। ২৪ ঘণ্টা। এটি দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সেচ প্রকল্প। ফেনী নদীর স্বচ্ছ জলরাশি, মুহুরী ইরিগেশন প্রজেক্টের ৪০ গেট বিশিষ্ট দৃষ্টিনন্দন রেগুলেটর, বায়ু শক্তি বিদ্যুৎ কেন্দ্র, নির্মাণাধীন মুহুরী সেতু, মৎস্য হ্যাচারি, অদূরে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু অর্থনৈতিক অঞ্চল ইত্যাদি। প্রকল্পের দক্ষিণাংশে কেওড়া বাগান সহ চর এলাকা রয়েছে। বিনামূল্য।
- মুহুরীর চর। বিলোনিয়া সীমান্তবর্তী এলাকায় মুহুরী নদীতে জেগে ওঠা একটি চর। চরের আয়তন ৯২ দশমিক ১৪ একর।
- 5 রাজাঝির দীঘি, ফেনী শহরের জিরো পয়েন্ট সংলগ্ন। ২৪ ঘণ্টা। এটি ফেনীর ঐতিহ্যবাহী দীঘি। জনশ্রুতি আছে ত্রিপুরা মাণিক্য রাজবংশের মহারাজের প্রভাবশালী এক রাজা তার কন্যার অন্ধত্ব দুর করার মানসে প্রায় ৫/৭ শত বছর পূর্বে দীঘিটি খনন করিয়েছিলেন। বিনামূল্য।
- সিলোনিয়া নদী। বাংলাদেশ-ভারতের একটি আন্তঃসীমান্ত নদী। সর্পিলাকার নদীটির দৈর্ঘ্য ৬১ কিলোমিটার এবং গড় প্রস্থ ৬২ মিটার। সিলোনিয়া ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের পার্বত্য অঞ্চল থেকে উৎসারিত হয়ে ফেনী জেলার পরশুরাম উপজেলার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। এরপর এটি ফুলগাজী, ফেনী সদর, এবং ছাগলনাইয়া উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে শেষ পর্যন্ত মুহুরী নদীতে মিলিত হয়েছে।
উদ্যান
[সম্পাদনা]- 1 কাজিরবাগ ইকো পার্ক (ফেনী-পরশুরাম সড়কের পাশে অবস্থিত)। এখানে রয়েছে হরিণ, বানর, ময়ূর, খরগোশ, তিতির, টার্কি, বনমোরগ, টিয়া-ঘুঘুসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি। এছাড়াও রয়েছে শিশু কর্নার, পুকুরে নৌকাভ্রমণ, বোটানিক্যাল গার্ডেন ইত্যাদি।
- চৌধুরী বাগান বাড়ী, ধর্মপুর (আশ্রয়ন কেন্দ্রের বিপরীতে)।
- নারিকেল বাগান
- তৃপ্তি পার্ক
স্থাপত্য
[সম্পাদনা]- 6 কালীদহ বরদা বাবু জমিদার বাড়ি, ফেনী সদর উপজেলার কালীদহ ইউনিয়নে। জমিদার বরদা প্রসন্ন দাস ফেনী সদর উপজেলার কালীদহ ইউনিয়নে ১৮৬০ শতকের দিকে এই জমিদার বাড়িটি প্রতিষ্ঠিত করেন।
- 7 চাঁদগাজী ভূঁইয়া মসজিদ (প্রতাপপুর বড় বাড়ি বা রাজবাড়ি), প্রতাপপুর, দাগনভূঞা উপজেলা। ১৬৩৫-১৭০০ মধ্যবর্তিকালে মুঘল স্থাপত্যকলায় নির্মিত মসজিদটি মুঘল সাম্রাজ্য স্বীকৃত খাজনা আদায়কারী চাঁদগাজী ভূঁইয়া নির্মাণ করেন। এক সারিতে তিনটি গম্বুজ রয়েছে, যার মধ্যে মাঝের গম্বুজটি তুলনামূলকভাবে বড়। গম্বুজগুলোর সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে এর উপরে পাতা ও কলসের চমৎকার নকশা করা হয়েছে। একই ধরনের স্থাপত্যশৈলীর ১২টি মিনার মসজিদটিকে আরও দৃষ্টিনন্দন করেছে, এবং দরজার ওপরে রয়েছে টেরাকোটার মনোমুগ্ধকর নকশা। মসজিদের সামনের অংশে শ্বেত পাথরের একটি নামফলকে এর বিবরণ খোদাই করা রয়েছে।
- 8 জগন্নাথ কালী মন্দির, ছাগলনাইয়া। শসসের গাজী বাল্যকালে তার লালন কর্তা জগন্নাথ সেনের স্মৃতিতে এ মন্দির ও কালী মূর্তি নির্মাণ করেন।
- 9 প্রতাপপুর জমিদার বাড়ি, প্রতাপপুর, দাগনভূঞা উপজেলা। আনুমানিক ১৭৬০ সালে প্রায় ১৩ একর জায়গা জুড়ে এই জমিদার বাড়িটি নির্মাণ করা হয়। বাড়িটিতে ১০টি ভবন ও ১৩টি পুকুর রয়েছে।
- প্রাচীর সুড়ঙ্গ মঠ, ফুলগাজী।
- বাঁশপাড়া জমিদার বাড়ি (সাত মন্দিরের বাড়ি), ছাগলনাইয়া উপজেলা। জমিদার বিনোদ বিহারি বাঁশপাড়া জমিদার বাড়িটি প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি এখানে সাতটি মন্দির বা মঠ নির্মাণ করেছিলেন, যার ফলে এটি "সাত মন্দিরের বাড়ি" বা "মঠের বাড়ি" নামে পরিচিত। অনেকেই এটিকে "বিনোদ বিহারির বাড়ি" নামেও ডাকেন। ভারত বিভাগের সময় বিনোদ বিহারি জমিদারীর সব সম্পত্তি ত্যাগ করে কলকাতায় চলে যান। এরপর থেকে বাড়িটি পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়ে গেছে।
- 10 মোহাম্মদ আলী চৌধুরী মসজিদ, ফেনী জেলা সদর। তিন গম্বুজ বিশিষ্ট এই মসজিদটি শর্শদী মাদ্রাসার অভ্যন্তরে অবস্থিত। শিলালিপি অনুযায়ী, মসজিদটি ১৬৯০ থেকে ১৬৯১ সালের মধ্যে নির্মিত হয়। বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের মালিকানাধীন এই মসজিদে বর্তমানে প্রাচীন দেয়ালগুলোর উপর নতুন রং করা হয়েছে। মূল কাঠামোর সামনে একটি লালচে রঙের প্রবেশপথ রয়েছে। প্রবেশপথের ভেতরে সমতল একটি খালি জায়গা, তার পরেই মূল মসজিদের স্থাপনাটি দেখা যায়। মসজিদের প্রধান গম্বুজের উপরে একটি কালো নকশাযুক্ত লম্বা মিনার আকৃতির অংশ রয়েছে, যা ইট দিয়ে গোলাকৃতিতে সাজানো। এছাড়া, পূর্ব দেয়ালে একটি বড় প্রবেশপথ এবং তার দুপাশে খিলান-আকৃতির নকশা করা স্থাপত্যশৈলী দৃষ্টিনন্দন।
- 11 শর্শাদী শাহী মসজিদ (তাকিয়াহ মসজিদ), সদর উপজেলার শর্শাদী গ্রামে অবস্থিত।। মসজিদটি মূলত চুন, সুরকি ও ইট দিয়ে নির্মিত, যার দেয়ালের পুরুত্ব প্রায় ৫ ফুট। এর দেয়ালে লতা-পাতার বিভিন্ন নকশার কারুকার্য খোদাই করা হয়েছে। ছাদে রয়েছে তিনটি গম্বুজ, যার মধ্যে মাঝের গম্বুজটি আকারে সবচেয়ে বড়। বাংলাদেশে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের অধীনে নেওয়া ৪৭টি মসজিদের মধ্যে এটি অন্যতম।
- 12 শমসের গাজীর কেল্লা। ফেনীর ছাগলনাইয়ার চম্পকনগর এবং জগন্নাথ সোনাপুরের বর্তমান ভারত সীমান্ত এলাকাটি শমসের গাজীর স্মৃতি বিজড়িত একটি ঐতিহাসিক স্থান। এখানে রয়েছে শমসের গাজীর সুড়ঙ্গ, শমসের গাজীর দীঘি এবং আরও অনেক প্রাচীন নিদর্শন। তবে শমসের গাজীর প্রাসাদসহ আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার ধ্বংসাবশেষ ভারতের ত্রিপুরা অঞ্চলে ভাগ হয়ে রয়েছে।
- 13 শিলুয়া মন্দির (শিল ঘর), ছাগলনাইয়া উপজেলা। প্রাচীন শিলামূর্তির ধ্বংসাবশেষ উদ্ধারের কারণে এই স্থানটি সে সময় থেকেই শিলুয়া বা শিল্লা নামে পরিচিত লাভ করে। স্থানীয় একটি মিথ অনুযায়ী, এটি মহাশূন্য থেকে ছিটকে আসা একটি শিলাখণ্ড। এই শিলাখণ্ড দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে বহু মানুষ এখানে আসে। অনেকের কাছে এটি এখনো "জীবিত শিলা পাথর" নামে পরিচিত। একসময় হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন এই শিলাখণ্ডকে ঘিরে পূজা-অর্চনা করত।
- 14 সাত মঠ, ছাগলনাইয়া উপজেলা শহরের বাঁশপাড়ায়। ছাগলনাইয়া উপজেলার বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর এর তালিকাভুক্ত একটি প্রাচীন মঠ। এটি হিন্দু জমিদার বিনোদ বিহারির বাড়িটি আট একর জায়গাজুড়ে নির্মিত। বাড়ির পাশে রয়েছে সাতটি চিতা মন্দির। এজন্য এর নাম সাত মন্দির বাড়ি বা রাজবাড়ি বা সাত মঠ হিসেবে পরিচিত পেয়েছে। ১৯৪৮ সালের দিকে জমিদার বিনোদ বিহারি কলকাতা চলে যান। বাড়িটি রেখেই তিনি চলে যান। বর্তমানে স্থানীয় বাসিন্দারা এখানে বসবাস করেন।
- সেনেরখিল জমিদার বাড়ি, সোনাগাজী উপজেলা। প্রায় ৫০০ বছর আগে জমিদার উপেন্দ্র সেনগুপ্ত চৌধুরী এবং মহেন্দ্র সেনগুপ্ত চৌধুরী একত্রে এই জমিদার বাড়িটি প্রতিষ্ঠা করেন। জমিদার বাড়িটি ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করেছে, কারণ এখানে মাষ্টারদা সুর্যসেন এবং প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার কয়েকবার এসে আশ্রয় নিয়েছিলেন।
কেনাকাটা
[সম্পাদনা]- মোকামিয়া সীমান্ত হাট, মোকামিয়া, রাধানগর, ছাগলনাইয়া। এটি ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার রাধানগর ইউনিয়নের মোকামিয়া এবং ভারতের দক্ষিণ ত্রিপুরার শ্রীনগর থানার কৃষ্ণনগর এলাকার মধ্যবর্তী তৃতীয় সীমান্ত হাট।
খাবার
[সম্পাদনা]এই জেলার বিখ্যাত খাবারের মধ্যে রয়েছে মহিষের দুধের ঘি ও খন্ডলের মিষ্টি। এটি মূলত রসগোল্লার একটি ভিন্নধর্মী সংস্করণ। এই মিষ্টির বিশেষত্ব হলো, অন্যান্য মিষ্টি সাধারণত ঠান্ডা বা স্বাভাবিক তাপমাত্রায় খাওয়া হলেও খন্ডলের মিষ্টি গরম গরম খাওয়াও অত্যন্ত উপভোগ্য।
রাত্রিযাপন
[সম্পাদনা]সরকারী রেষ্ট হাউজসমূহ
[সম্পাদনা]- ১.এলজিইডি রেস্ট হাউজ- মোট কক্ষ-০৪টি (ভিআইপি-২টি,সাধারণ-২টি)
- ২.পানি উন্নয়ন বোর্ড-রেষ্ট হাউজ- মোট কক্ষ-০৪টি (ভিআইপি-০১টি, সাধারণ-০৩টি)
- ৩. জেলা শিক্ষা অফিস রেষ্ট হাউজ- মোট কক্ষ-০২টি (ভিআইপি-০১টি, সাধারণ-০১টি)
- ৪. পল্লী বিদ্যুৎ রেষ্ট হাউজ--- মোট কক্ষ-০৩টি (ভিআইপি-০১টি, সাধারণ-০২টি)
- ৫. সড়ক জনপথ রেষ্ট হাউজ- মোট কক্ষ-০২টি (ভিআইপি-০১টি,সাধারণ-০১টি)
আবাসিক হোটেল
[সম্পাদনা]১.হোটেল অবকাশ
ঠিকানা- তাকিয়া রোড,ফেনী। ফোন- ৭৩৬৪৮
ধারন ক্ষমতা- ৭০ জন। খরচাদি- এসি-ডাবল-৮০০/- ননএসি ডাবল-১৬০/- ননএসি-সিংগেল-৯০/- যোগাযোগ- ম্যানেজার, মোঃ ইসমাইল- ০১৮২০০১৮৭৬৮
২.হোটেল গাজী ইন্টারন্যাশনাল ঠিকানা- পাঁচগাছিয়া রোড়,ফেনী। ফোন- ৬২৪১৫ ধারন ক্ষমতা-৭জন। খরচাদি- এসি-ডাবল-১০০০/- এসি সিংগেল-৭০০/- ননএসি ডাবল-৩০০/- ননএসি-সিংগেল-১০০-২৫০/-
৩.হোটেল মিড নাইট ঠিকানা- জহিরিয়া মসজিদের বিপরীতে পাঁচগাছিয়া রোড,ফেনী। ফোন- ৬২২২৩ ধারন ক্ষমতা-১৬ জন। খরচাদি- এসি-ডাবল-৬০০/ ননএসি ডাবল-৩০০/- ননএসি-সিংগেল-১৫০-২০০/-
পরবর্তী ভ্রমণ
[সম্পাদনা]- চট্টগ্রাম - বাংলাদেশের প্রধান আন্তর্জাতিক সমুদ্র বন্দর ও দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর।