23.050088.9000
উইকিভ্রমণ থেকে

বেনাপোল বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের একটি সীমান্ত শহর। ভারতবাংলাদেশের মধ্যে ভ্রমণের সময় এটি পেরিয়ে যেতে হয়। তাই ভারত-বাংলাদেশ ভ্রমণে এটি সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়।

যাতায়াত[সম্পাদনা]

বাসে করে[সম্পাদনা]

বেনাপোলে বাস পরিবর্তনের মাধ্যমে বেশিরভাগ মানুষ কলকাতাঢাকার মধ্যে চলাচলকারী দূরপাল্লার শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাস পরিষেবা ব্যবহার করে। বেনাপোল এবং হরিদাসপুরে শ্যামলী ও গ্রীনলাইনের কাউন্টার রয়েছে। বুকিংয়ের জন্য কলকাতা এবং ঢাকা নিবন্ধগুলো দেখুন।

বেনাপোল বাস স্টপেজ সীমান্ত থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে। সেখান থেকে বাস যশোর যায় (৩০ টাকা, ২ ঘন্টা) এবং আরও দূরেও যায়।

আপনি যদি কলকাতা থেকে ঢাকার বাস বুক করে থাকেন তবে হরিদাসপুর (পেত্রাপোল নামেও পরিচিত) পৌঁছাতে ৪-৫ ঘন্টা সময় লাগবে। বাসচালকদের নিজস্ব বিশ্রামাগার আছে, কিন্তু তাদের কর্মীরা সৌহার্দ্যপূর্ণ নয় এবং এখানে টয়লেটগুলো খুবই নোংরা। ইমিগ্রেশনে যাওয়ার পূর্বে, বাংলাদেশ হাইকমিশন কর্তৃক বেনাপোলে প্রবেশ/প্রস্থান সড়ক পথে উল্লেখ করেছে কিনা অনুগ্রহ করে নিশ্চিত হয়ে নিন। বাংলাদেশের ভিসা সিলমোহরযুক্ত এবং অন্যান্য তথ্যগুলো হাতে লেখা থাকে, তাই দৈত লেখা/কাটাকাটি করা থেকে সতর্ক থাকুন। আপনার ভিসা সংগ্রহ করার সময় যদি এমন কিছু খুঁজে পান, অনুগ্রহ করে তাদের একটি স্বাক্ষর করে দিতে বলুন এবং দৈত লেখা অংশে সিলমোহর করে নিন। অন্যথায়, সীমান্তে আপনার সমস্যা হতে পারে। আপনি দেখতে পাবেন যে, বাংলাদেশি কর্মকর্তারা ভারতীয়দের চেয়ে ভাল আচরণ করে। ভারতীয়রা মাঝে মধ্যে ঘুস চেয়ে বসে। তবে সরাসরি বাসে ভ্রমণ করলে এই সম্ভাবনা কম। কাস্টমস কর্মকর্তারা সাধারণত স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকারী বাংলাদেশী নাগরিকদের ব্যতিত তেমন ঝামেলা করে না।

ট্রেনে করে[সম্পাদনা]

বিকল্প হিসেবে, কলকাতায় শিয়ালদহ স্টেশন থেকে স্থানীয় ট্রেন আছে, যেগুলোতে করে বনগাঁ পৌঁছাতে প্রায় ৩ ঘন্টা সময় লাগে। বনগাঁ স্টেশন থেকে সীমান্ত প্রায় ৬ কিমি (৩.৭ মা) দূরে। স্টেশনের পাশে লোকাল বাস থাকতে পারে, কিন্তু সেগুলো খুঁজে পাওয়া সৌভাগ্যের বিষয়। তবে, রিকশা বা অটোরিকশা আপনাকে বনগাঁ স্টেশন থেকে সীমান্ত পর্যন্ত নিয়ে যাবে।

ঘুরে দেখুন[সম্পাদনা]

আপনি এখানে একটা জিনিসই করতে পারেন: সীমান্তের ওপারে হাঁটুন। বাংলাদেশের দিকে, বাস স্টপে যেতে ২ কিলোমিটার হাঁটুন অথবা ৫ টাকা দিয়ে রিকশা নিন।

ভারতের দিকে, বাস স্টপ ইমিগ্রেশন ভবনের কাছেই রয়েছে। ইমিগ্রেশন ভবন থেকে অর্থ-বদলকারী দোকানে যাওয়ার সময় আপনি আশেপাশে কিছু লোককে বসে থাকতে দেখবেন, যারা কলকাতায় ট্যাক্সির ব্যবস্থা করতে পারে। ভাড়া ₹৯০০ থেকে শুরু, তবে সাধারণত আরও বেশি হয়।

করনীয়[সম্পাদনা]

আপনার পাসপোর্টে সিলমোহর লাগিয়ে নিন - স্থল সীমান্ত পার হওয়ার ক্ষেত্রে ভারতীয় পক্ষ মোটামুটি স্বাভাবিক। আপনার পাসপোর্টটি বেশ কয়েকবার হাত বদল করবে, এবং অবশেষে একটি সিলমোহর যুক্ত হবে, এতে খুব বেশি সময় লাগবে না। বাংলাদেশি পক্ষের গল্প অবশ্য ভিন্ন। আপনার পৌঁছানোর এক ঘণ্টা আগেই কর্মীদের নিয়োগ করা হয়েছে। আপনার পাসপোর্টে বাংলাদেশের কোন ভিসাটি আছে তা জিজ্ঞেস করলে হাঁসার চেষ্টা করবেন না। এছাড়া পাসপোর্টে সিলমোহরকারী বা যে ছেলেটি আপনার কাছ থেকে পাসপোর্টটি নিবে বা আপনাকে যারা ফরম পূরণ করার প্রস্তাব দিবে তাদের দ্বারা আপনার কাছ থেকে বকশিশ চাওয়া হতে পারে। তবে ভারতীয় সীমান্ত অতিক্রমের ক্ষেত্রে এটি স্বাভাবিক নয় এবং সম্পূর্ণরূপে পরিহারযোগ্য - আপনার পাসপোর্ট আপনি নিজেই উপস্থাপন করুন এবং ঘুষ চাওয়া হলে দৃঢ়ভাবে 'না' বলুন। আপনি যদি এসি সরাসরি বাসগুলোয় উঠেন, তাহলে বাস কোম্পানি সীমান্তে পোঁছানোর আগে সমস্ত যাত্রীর পাসপোর্ট সংগ্রহ করে নিজেরা সিলমোহর করিয়ে নেয়।

প্রক্রিয়াটি আগের চেয়ে ভালো। বাংলাদেশের দিকটি ভারতের দিক থেকে সহজ, যেখানে আপনাকে সীলমোহর পেতে একটি জটিল প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। বাংলাদেশে, আপনি একটি ভবনে প্রবেশ করবেন, তারপর আপনার পাসপোর্ট পরীক্ষা করা হবে এবং সীলমোহর লাগানোর জন্য বসতে বলা হবে।

বাংলাদেশ থেকে সড়কপথে প্রস্থান নেওয়ার সময় আপনাকে ৩০০ টাকা প্রস্থান কর দিতে হবে। তবে আপনি যদি সরাসরি বাসগুলোয় ভ্রমণ করেন তবে বাস কোম্পানি সাধারণত আপনার কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে তারাই টাকাটা প্রদান করে দিবে। আপনি যদি স্বাধীনভাবে ভ্রমণ করেন তাহলে ইমিগ্রেশন ভবনের পাশে সোনালী ব্যাংকের ছোট্ট শাখা থেকে অর্থ প্রদান করতে পারবেন। সীমান্ত যতক্ষণ খোলা থাকবে ব্যাংকও ততক্ষণ পর্যন্ত খোলা থাকতে পারে।

আপনি যদি আকাশপথে বাংলাদেশে আসেন, তবে নিশ্চিত হয়ে নিন যে আপনার কাছে "বন্দর পরিবর্তন" সনদ রয়েছে, যা আপনাকে স্থলপথে যাওয়ার অনুমতি দিবে। অন্যথায় আপনাকে সীমান্তে ফেরত পাঠানো হবে। ঢাকার ভিসা অফিস থেকে বন্দর পরিবর্তন সনদ সংগ্রহ করা যায়, যা তৈরি করতে প্রায় ৪ ঘন্টা সময় লাগে।

কেনাকাটা[সম্পাদনা]

অর্থ-বদলকারীদের সংখ্যা ভারতে অনেক বেশি। তারা সাধারণত ভালো হার অফার করলেও অন্য উপায়ে তা পুষিয়ে নেয়ার চেষ্টা করতে পারে। তাই নগদ দেয়া এবং গ্রহণ করার সময় সাবধানে গণনা করুন এবং আপনার ফোনে নিজেই হিসাব করে নিন।

খাওয়াদাওয়া[সম্পাদনা]

সীমান্তের দুপাশে কয়েকটি খাবারের দোকান এবং ধাবা রয়েছে যেখানে স্থানীয় বাঙালি খাবার পরিবেশন করা হয় এবং বাংলাদেশের দিকে কয়েকটি হোটেল ও রেস্তোরাঁ রয়েছে।

রাত্রিযাপন[সম্পাদনা]

যদি আপনার সীমান্তে ঘুমাতে হয় তবে বাংলাদেশের দিকে থাকাই ভালো হবে।

  • 1 পর্যটন হোটেল, +৮৮০ ৪২২৮-৭৫৪১১, +৮৮০ ১৭১১-৪৫২১৪৫সম্ভবত শহরের সবচেয়ে সুন্দর হোটেল। অনুরোধ করলে একজন প্রদর্শকের ব্যবস্থাও হয়ে যেতে পারে। প্রতি রুম ৬০০ টাকা (নন এসি) এবং ১২০০ টাকা (এসি), এমনকি কিছু স্যুট (২২০০ টাকা)
  • হোটেল হক প্রতি রুম ১০০ টাকা