উইকিভ্রমণ থেকে
পরিভ্রমণে চলুন অনুসন্ধানে চলুন
রাজা কুঞ্জ, মিউজিয়াম অব রাজাস

মিউজিয়াম অব রাজাস বা রাজাদের জাদুঘর বা হাসন রাজা জাদুঘর সিলেটের অন্যতম প্রধান দর্শনীয় স্থান, যা সিলেট সদরের অন্তর্গত জিন্দাবাজার এলাকায় অবস্থিত। এটি সিলেটের অন্যতম প্রধান একটি সংগ্রহশালা হিসাবে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। স্থানটি সিলেট শহরের '০' পয়েন্টের ৫০০ মিটারের মধ্যে রয়েছে।

বিশেষত্ব[সম্পাদনা]

বাঘের মূর্তি

কবি হাসন রাজাও তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে যাদের কৌতুহল, তাদের জন্য এ জাদুঘর। এখানে আছে হাছন রাজা ও তার পরিবারের সদস্যদের ব্যবহৃত বিভিন্ন জিনিসপত্র। আছে হাসন রাজাকে নিয়ে লেখা বইপত্র এবং পেপার কাটিংসের সংগ্রহ।

২০০৬ সালে রাজাদের পারিবারিক উদ্যোগে নগরীর প্রাণকেন্দ্র জিন্দাবাজারের জল্ল­ারপারে এ জাদুঘরটি প্রতিষ্ঠিত হয়।

হাসন রাজার বাসভবনই বর্তমানে জাদুঘর হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এই জাদুঘরের উদ্দেশ্য হচ্ছে হাসন রাজাকে কেন্দ্র করে রাজা পরিবারের স্মৃতি সংরক্ষণ করা। লোক সংস্কৃতি এবং ইতিহাসের উপর গবেষণা কার্যক্রমকে এই জাদুঘর অনুপ্রানিত করে থাকে।

কীভাবে যাবেন?[সম্পাদনা]

স্থলপথে[সম্পাদনা]

সড়কপথে ঢাকা হতে প্রথমে সিলেট যেতে হবে; অতঃপর সেখান থেকে জাদুঘরটিতে যেতে হবে। এটি সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ১০ কিলোমিটার এবং সিলেট কদমতলী বাসস্ট্যান্ড বা রেল স্টেশন থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। সিলেট এসে সেখান থেকে রিক্সা বা সিএনজি অটো রিক্সায় অতি সহজেই জিন্দাবাজার আসা যায়।

  • সিলেটের মূল বাস স্ট্যান্ড কদমতলী বাস টার্মিনাল অথবা রেল স্টেশন থেকে জিন্দাবাজারস্থ জাদুঘরটিতে আসার জন্য ভাড়া হবেঃ
    • রিক্সায় - ৩০/- - ৫০/-
    • সিএনজিতে - ৮০/- - ১৫০/-

যেসব দৃশ্যাবলী দেখবেন[সম্পাদনা]

দুইটি কক্ষকে দুইটি গ্যালারি হিসাবে তৈরি করে রাখা আছে বিভিন্ন দ্রব্যাদিঃ

গ্যালারি-১[সম্পাদনা]

দুই কামরার পুরানো ভবনের মূলকক্ষে বাঁদিকের দেয়ালে চোখে পড়বে জন্ম মৃত্যুর তারিখ লেখা হাসন রাজার (১৮৫৪-১৯২২) ছবি। পশ্চিমের দেয়ালে পরিবারের সদস্যদের নামের তালিকা।

সামনেই চোখে পড়বে রাজ পরিবারের ব্যবহৃত একটি মাঝারি লোহার সিন্দুক। যা ছিল তখনকার উচ্চবিত্ত শ্রেণির সম্পদ সংরক্ষনের পারিবারিক ব্যাংক এবং আভিজজাত্য প্রদর্শনের অন্যতম উপাদান। ডানদিকের কাঁচের মাঝারি বাক্সে সংরক্ষিত হাছন রাজা, রাজ পরিবার এবং এ জাদুঘর সম্পর্কে বিভিন্ন প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রকাশিত সচিত্র প্রতিবেদন।

জাদুঘরে যা দেখতে পাবেন তা হলো, দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সংগৃহিত একতারা, দোতারা, প্লুং বাঁশি ইত্যাদি। আছে হাসন পরিবার ব্যবহৃত, থালা, জগ, প্লেট, কোরআন শরীফ রাখার রেহাল, ইস্ত্রি, সোনা ও রূপার তারের পোশাক, পাকিস্তান আমলের ধাতব মুদ্রা।

জাদুঘরে আছে হাসন রাজার শখের পোষা কোড়াপাখির নামের তালিকা। আছে তার ৯টি হাতির নামের তালিকা। এদের নাম বেশ অভিজাত: জিবা, জঙ্গ-বাহাদুর, বাংলা বাহাদুর, মাসুকজান, মুকনা, রাজরানী, সুরতজান, মঙ্গলপ্যারি, হাছন প্যারি।

আরও আছে হাসন রাজার কাঠের তৈরি বগলা খড়ম, গুড়গুড়ি হুঁক্কা, ঘোড়ার পায়ের কাঠ, সেকালের কয়েকটা ইট, ইত্যাদি। পূর্বদিকের শোকেসে রাখা একতারা, ডোগী, ঢোলক, মৃদঙ্গ, ক্যাসেট এবং অনেক গুলো বাঁশি। হাসন রাজার ব্যবহার করা দুটি জোব্বা (বিশেষ ধরনের পাঞ্জাবী)।

গ্যালারি-২[সম্পাদনা]

পরের কক্ষে আছে হাসন রাজার লেখা গানের বই এবং তাঁকে নিয়ে রচিত অনেক গুলো বই ও লিটল ম্যাগ। এখানে আরও আছে সৈয়দা মিনা রাজা কর্তৃক সংগৃহিত পৌণে ১ ইঞ্চি বাই ১ ইঞ্চি কোরআন শরীফ যা পৃথিবীর সবচেয়ে ছোট কোরআন শরীফ গুলোর একটি। সিলেটের মরমি শিল্পীদের নামের তালিকা আছে।

রবিবার ছাড়া প্রতিদিন সকাল ০৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকে মিউজিয়াম অব রাজাস। বারান্দায় ১০ টাকা দর্শনীর বিনিময়ে টিকিট কেটে প্রবেশ করতে হয় জাদুঘরে।

খাওয়া দাওয়া[সম্পাদনা]

জাদুঘরটির আশেপাশেই প্রচুর হোটেল - রেস্তোরা আছে খাওয়া - দাওয়া করার জন্য। স্থানীয় পর্যায়ের বিখ্যাত খাদ্য হলো আথনী পোলাও ও সাতকরা (হাতকরা)। আরও কিনতে পারবেন স্থানীয় আনারস, কমলা, পান, লেবু, কাঠাল, চা-পাতা, তাজা মাছ। স্থানীয় হোটেল ও রেস্তোরাঁগুলোতে এসকল দ্রব্যাদির তৈরি নানারকম খাদ্যও পাওয়া যায়। জাদুঘরটির খুব নিকটেই রয়েছে কিছু উন্নতমানের হোটেল-রেস্তোরাঁঃ

  • পানশী রেস্তোরাঁ, জল্লারপাড় রোড, জিন্দাবাজার, সিলেট;
  • পাঁচভাই রেস্তোরাঁ, জল্লারপাড় রোড, জিন্দাবাজার, সিলেট;
  • ভোজনবাড়ি রেস্তোরাঁ, জল্লারপাড় রোড, জিন্দাবাজার, সিলেট;
  • প্রীতিরাজ রেস্তোরাঁ, জল্লারপাড় রোড, জিন্দাবাজার, সিলেট;
  • স্পাইসি রেস্তোরাঁ, সিটি সেন্টার, জিন্দাবাজার, সিলেট, ☎ ০৮২১-২৮৩২০০৮;
  • রয়েলশেফ, মির্জাজাঙ্গাল, সিলেট, ☎ ০৮২১-৭২৩০৯৬।

থাকা ও রাত্রিযাপনের স্থান[সম্পাদনা]

জাদুঘরটির নিকটে কিছু আবাসিক হোটেল রয়েছে; তবে তুলনামূলক ভালো মানের হোটের রয়েছে শাহজালালের দরগা এলাকায়। সেখানে থাকার জন্য প্রচুর আবাসিক হোটেল রয়েছে যেগুলোতে সিলেট ভ্রমণে আসা অধিকাংশ পর্যটক অবস্থান করে। এসি এবং নন-এসি - এই উভয় ধরনের রুমের ব্যবস্থা সমৃদ্ধ ঐসকল হোটেলে মান ও বর্ডার ভেদে ভাড়া নেয়া হয় ৩০০/- হতে ২,৫০০/-। এছাড়াও থাকার জন্য আশেপাশেই কয়েক কিলোমিটারের মধ্যে কিছু উন্নতমানের হোটেলও রয়েছে -

  • হোটেল রোজভিউ ইন্টারন্যাশনাল (৫ স্টার) : উপশহর, সিলেট; ☎ ০৮২১-৭২১৮৩৫, ২৮৩১২১৫০৮-১৪, ২৮৩১৫১৬-২১, মোবাইল: ০১১৯৫১১৫৯৬৪, ইমেইল- sales@roseviewhotel.com, reservation@roseviewhotel.com
  • হোটেল ফরচুন গার্ডেন : জেল রোড, সিলেট, ☎ ০৮২১-৭১৫৫৯০, ৭২২৪৯৯, ফ্যাক্স: ০৮২১-৭১৫৫৯০, মোবাইল: +৮৮০১৭১১-১১৫১৫৩, ইমেইল- info@hotelfortunegarden.com, ওয়েব: www.hotelfortunegarden.com
  • হোটেল ডালাস : তামাবিল রোড, মিরাবাজার, সিলেট, ☎ ০৮২১-৭২০৯৪৫, ৭২০৯২৯, ইমেইল- hoteldallassylhet@yahoo.com, ওয়েব: www.hoteldallassylhet.com
  • হোটেল সুপ্রিম : তামাবিল রোড, মিরাবাজার, সিলেট, ☎ ০৮২১-৮১৩১৬৯, ৭২০৭৫১, ৮১৩১৭২, ৮১৩১৭৩, ফ্যাক্স: ০৮২১-৮১৩১৭১, মোবাইল: +৮৮০১৭১১-১৯৭০১২, +৮৮০১৬৭৪-০৭৪১৫৭, ইমেইল- hotelsupreme_1@yahoo.com, hotelsupreme_2@hotmail.com
  • হোটেল হিলটাউন : ভিআইপি রোড, তেলি হাওড়, সিলেট, ☎ ০৮২১-৭১৮২৬৩, মোবাইল:- +৮৮০১৭১১৩৩২৩৭১, ৭১৬০৭৭, ওয়েব: www.hiltownhotel.com
  • নাজিমগড় রিসোর্ট : ☎ ০৮২১-২৮৭০৩৩৮-৯, ওয়েব: www.nazimgarh.com

পরবর্তীতে যান[সম্পাদনা]