সিলেট বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত বিভাগীয় শহর। প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী এই শহর সুরমা নদীর উভয় পারে বিস্তৃত।
জানুন[সম্পাদনা]
নামকরণ[সম্পাদনা]
বাংলা ও আঞ্চলিক সিলটি ভাষায় প্রাচীনকাল থেকেই সিলেটকে শ্রীহট্ট নামে ডাকা হয়েছে। কিন্তু শ্রীহট্ট নামের উৎস নিয়েও রয়েছে অনেক অস্পষ্টতা। এর সাথে হিন্দু পৌরাণিক আখ্যানের প্রভাব জড়িত থাকতে পারে বলে ধারণা করা হয়। হিন্দু পুরাণ অনুযায়ী শ্রী শ্রী হাটকেশ্বর হচ্ছে মহাদেব শিবের বহু নামের অন্যতম। তৎকালীন গৌড় (শ্রীহট্ট) রাজাদের কর্তৃক পুজিত শ্রী হাটকেশ্বরই শ্রীহট্ট নামের উৎস বলে অনেকে মনে করেন। আবার হিন্দুদেবী লক্ষ্মীর আরেক নাম শ্রী, বর্তমান সিলেট শহরের অনতিদূরে দেবী মহালক্ষ্মীর একটি সুপ্রসিদ্ধ মন্দিরও রয়েছে, যেটি আবার সতীপীঠের মধ্যেও অন্যতম, অতএব, শ্রীহট্ট নামটি শ্রী-এর হাট (অর্থাৎ বাজার) থেকেও হতে পারে।
সিলেটের নামকরণের বিষয়ে আরেকটি প্রচলিত কিংবদন্তীতুল্য কাহিনী হলো, হযরত শাহজালাল যখন সিলেটের দিকে আগমন করেন তখন তৎকালীন হিন্দু রাজা গৌড়গোবিন্দ তার আগমন থামাতে সিলেট সীমান্তে তার কথিত জাদু ক্ষমতার দ্বারা পাথরের দেয়াল বা পাহাড়ের প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেন। হযরত শাহজালালও তার অলৌকিক ক্ষমতা দিয়ে ‘শিল হট্’ বলতেই সেই শিল বা পাথরের প্রতিবন্ধক হটে যায় বা অপসারিত হয়। এ থেকেই এই ভূমির অন্য নাম হয়েছে শিল-হট থেকে সিলেট। বরং ব্রিটিশ আমলেই এই সিলেট শব্দটির সৃষ্টি হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। পুরনো কাগজপত্রে বাংলায় শ্রীহট্ট হিসেবে লেখা হলেও ভারতের সরকারি নথিপত্রে যেমন আসাম গেজেটিয়ারে বা অন্যত্র শ্রীহট্টকে ইংরেজিতেই প্রথম ‘সিলহেট’ (Sylhet) হিসেবে উদ্ধৃত হতে দেখা যায়। তৎকালীন ভারতবর্ষে শাসক হিসেবে আধিপত্যকারী ব্রিটিশদের নিজস্ব ইংরেজি উচ্চারণে অন্য অনেক বাংলা যুক্তশব্দের বিবর্তন প্রক্রিয়ার মতোই ‘শ্রীহট্ট’ শব্দটিও যে ভিন্নমাত্রিক ‘সিলহেট’ শব্দে বিবর্তিত হয়ে বর্তমান ‘সিলেট’-এ রূপান্তরিত হয়েছে। আবার আরেক মত অনুযায়ী, রাজার কনিষ্ঠ মেয়ে শীলা। এবং শীলার জন্মদিন উপলক্ষে প্রতিবছর বড় করে হাট বসতো। সেই হাটে দেশ বিদেশ থেকে প্রচুর জনসমাগম হতো। সেই হাট থেকে শীলার হাট, তা থেকে শীলহাট এবং পরবর্তীতে শ্রীহট্ট। যা থেকে বর্তমান সিলেটের জন্ম।
আবহাওয়া[সম্পাদনা]
গ্রীষ্ম মৌসুমে বাংলাদেশের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় সিলেট অঞ্চলের তাপমাত্রা তুলনামূলক কম থাকে। এপ্রিল থেকে অক্টোবর পর্যন্ত এখানে বর্ষাকাল, যার ফলে প্রায় প্রতিদিন প্রচণ্ড ভারী বৃষ্টিপাত এবং ঝড়বাতাস সহ আবহাওয়া গরম এবং আর্দ্র থাকে, যদিও নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্বল্প শুকনো মৌসুম খুব উষ্ণ এবং আকাশ মোটামুটি পরিষ্কার থাকে। বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাতের ৪,২০০ মিলিমিটার (১৭০ ইঞ্চি) এবং ৮০% বৃষ্টিপাত হয় মে থেকে সেপ্টেম্বর মাসে। সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর পর্যন্ত সময়কাল ঝর্ণা, পাথর কোয়ারি অঞ্চল ও হাওড়ে ভ্রমণের জন্য জন্য উপযুক্ত সময়।
প্রবেশ[সম্পাদনা]
আকাশ পথে[সম্পাদনা]
- 1 ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (ZYL আইএটিএ)। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, নভোএয়ার এবং ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স সিলেট থেকে ঢাকায় অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট পরিচালনা করে। এছাড়া দেশের অভ্যন্তরে ঢাকা-সিলেট, সিলেট-চট্টগ্রাম, সিলেট- কক্সবাজার ইত্যাদি অভ্যন্তরীণ রুটেও বিমান চলাচল করে থাকে। এই বিমানবন্দর থেকে লন্ডন যুক্তরাজ্য ও দুবাইসহ বিভিন্ন দেশের সাথে সরাসরি বিমান চলাচল করে থাকে।
স্থলপথে[সম্পাদনা]
সড়ক পথে ঢাকা হতে সিলেটের দূরত্ব ২৪১ কিলোমিটার এবং রেলপথে ঢাকা হতে সিলেট রেল স্টেশনের দূরত্ব ৩১৯ কিলোমিটার।
সড়কপথ[সম্পাদনা]
ঢাকার সায়েদাবাদ বাস স্টেশন থেকে সিলেটে আসার সরাসরি দুরপাল্লার এসি ও নন-এসি বাস সার্ভিস আছে; এগুলোতে সময় লাগে ৪.৩০ হতে ৬ ঘণ্টা। ঢাকা থেকে সিলেটের উদ্দেশ্যে হানিফ, শ্যামলী, এনা, ইউনিক, গ্রীনলাইন, লন্ডন এক্সপ্রেস প্রভৃতি পরিবহন কোম্পানীর বাস চলাচল করে। ঢাকা-সিলেট রুটে সরাসরি চলাচলকারী পরিবহনে আসার ক্ষেত্রে এসি বাসে ১৪০০-১৫০০ টাকা (এক্সিকিউটিভ) এবং নন-এসি বাসে ভাড়া ৭০০ টাকা। লন্ডন এক্সপ্রেস, এনা ও সৌদিয়া সিলেট-কক্সবাজার রুটে চলাচল করে।
- গ্রীন লাইন পরিবহন: ☎ ০২-৭১৯১৯০০ (ফকিরাপুল), +৮৮০১৭৩০-০৬০০৮০ (কল্যাণপুর), ০৮২১-৭২০১৬১ (সোবাহানীঘাট, সিলেট);
- হানিফ এন্টারপ্রাইজ: মোবাইল +৮৮০১৭১৩-৪০২৬৬১ (কল্যাণপুর), +৮৮০১৭১১৯২২৪১৩ (কদমতলী বাসস্ট্যান্ড, সিলেট);
- শ্যামলী পরিবহন: ☎ ০২-৯০০৩৩১, ৮০৩৪২৭৫ (কল্যাণপুর), +৮৮০১৭১৬০৩৬৬৮৭ (কদমতলী বাসস্ট্যান্ড, সিলেট)।
রেলপথ[সম্পাদনা]
ঢাকার কমলাপুর রেল স্টেশন বা চট্টগ্রাম রেল স্টেশন থেকে সিলেটের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা ট্রেনে সরাসরি সিলেট শহরে আসা যায়। কমলাপুর রেল স্টেশন থেকে প্রতিদিন একাধিক ট্রেন সিলেটের উদ্দেশ্যে ছাড়ে। ঢাকা–সিলেট এবং চট্টগ্রাম–সিলেট রুটে চলাচলকারী ট্রেনগুলো হলো:
ট্রেন নং | নাম | বন্ধের দিন | হইতে | ছাড়ে | গন্তব্য |
---|---|---|---|---|---|
আন্তঃনগর ট্রেন | |||||
৭০৯ | পরাবত এক্সপ্রেস | মঙ্গলবার | ঢাকা | ০৬২০ | সিলেট |
৭১০ | সিলেট | ১৫৪৫ | ঢাকা | ||
৭১৭ | জয়ন্তীকা এক্সপ্রেস | বৃহস্পতিবার | ঢাকা | ১১১৫ | সিলেট |
৭১৮ | সিলেট | ১১১৫ | ঢাকা | ||
৭১৯ | পাহাড়ীকা এক্সপ্রেস | শনিবার | চট্টগ্রাম | ৯০০০ | সিলেট |
৭২০ | সিলেট | ১০১৫ | চট্টগ্রাম | ||
৭২৩ | উদয়ন এক্সপ্রেস | রবিবার | চট্টগ্রাম | ২১৪৫ | সিলেট |
৭২৪ | সিলেট | ২১৪০ | চট্টগ্রাম | ||
৭৩৯ | উপবন এক্সপ্রেস | বুধবার | ঢাকা | ১৫৩০ | সিলেট |
৭৪০ | - | সিলেট | ২৩৩০ | ঢাকা | |
৭৭৩ | কালনী এক্সপ্রেস | শুক্রবার | ঢাকা | ০৬১৫ | সিলেট |
৭৭৪ | সিলেট | ০৬১৫ | ঢাকা | ||
মেইল/এক্সপ্রেস ট্রেন | |||||
৯ | সুরমা মেইল | ঢাকা | ২১০০ | সিলেট | |
১৪ | জালালাবাদ এক্সপ্রেস | চট্টগ্রাম | ২০১৫ | সিলেট | |
১৭ | কুশিয়ারা এক্সপ্রেস | আখাউড়া | ১৬১০ | সিলেট |
বিভিন্ন স্থানে ঘোরা[সম্পাদনা]
সিলেট শহরের যেকোন জায়গা থেকে রিক্সা, মোটর সাইকেল, সিএনজি অটো রিক্সা বা গাড়ীযোগে সহজেই সিলেটের শহরে ভ্রমণ করা যায়। শহরের ভেতরের চলাফেরার জন্য উবারের বাইক সার্ভিস রয়েছে। এছাড়া উবার বা যাত্রী অ্যাপের মাধ্যমে গাড়ী ভাড়া করে শহরের ভেতরে ও বাইরে যাতায়াত করা যেতে পারে। পায়ে হেঁটে চলাচলের জন্য সিলেট উপযুক্ত নয়। এখানে মানসম্পন্ন ফুটপাতের অভাব রয়েছে।
দেখুন[সম্পাদনা]


- 1 শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (সাস্ট), আখালিয়া। বাংলাদেশের প্রথম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। বাংলাদেশের সবচেয়ে উঁচুতে ৫৮ ফুট উঁচু টিলার উপরে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারটি অবস্থিত।
- 2 সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (সিকৃবি), টিলাগড়। পূর্বে এটি ছিল সরকারি ভেটেরিনারি কলেজ। পরবর্তিতে ভেটেরনারি কলেজকে একটি অনুষদে রূপান্তর করে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়।
- 1 বঙ্গবীর ওসমানী শিশু উদ্যান (ওসমানী শিশু পার্ক), ধোপা দিঘীর পাড়, পূর্ব বন্দরবাজার।
১৩:০০-২০:০০। বিভিন্ন ধরণের রাইডস যেমন ঘোড়া, ট্রেন, নৌকা, চড়কি রয়েছে। এছাড়া রয়েছে স্নো চিতা, বানর ও ছোট বড় সব অজগর সাপ।
প্রবেশ ফি ৳৩০।
- 3 শাহী ঈদগাহ, সিলেট সদরের অন্তর্গত কাজীটুলা (শাহী ঈদগাহ) এলাকায় অবস্থিত।। ১৭০০ খ্রিস্টাব্দে সিলেট মহানগরীর মধ্যস্থলের কাজীটুলা সড়কে এই ঐতিহাসিক স্থাপনাটি নির্মাণ করেন সিলেটের তদানীন্তন ফৌজদার ফরহাদ খাঁ। এটি সিলেট শহরের '০' পয়েন্টের ২ কিলোমিটারের মধ্যে রয়েছে।
ঈদগাহের উত্তরে শাহী ঈদগাহ মসজিদ, পাশে সুউচ্চ টিলার ওপর বন কর্মকর্তার বাংলো, দক্ষিণে বাংলাদেশ টেলিভিশনের সিলেট কেন্দ্র, পূর্ব দিকে হযরত শাহজালালের অন্যতম সফরসঙ্গী শাহ মিরারজীর মাজারের পাশের টিলার ওপর রয়েছে সিলেট আবহাওয়া অফিস।
ধর্মীয় স্থান[সম্পাদনা]
- 4 শাহজালালের মাজার (শাহজালালের দরগা), সিলেট শহরের উত্তর প্রান্তে আম্বরখানার কাছাকাছি একটি টিলার উপর অবস্থিত। পাশ্চাত্যের ইসলাম ধর্মপ্রচারক শাহ জালালের বাসস্থান ও শেষ সমাধি। কারো কারো মতে সিলেট ভূমির মুসলিম সভ্যতা ও ধর্মমত এই দরগাহকে কেন্দ্র করে প্রসার লাভ করেছে। শাহ জালালের লৌকিক ও অলৌকিক স্মৃতি বিজড়িত এই স্থান সিলেটের অন্যতম পূণ্য তীর্থ হিসেবে পরিচিত। বাংলাদেশ ও ভারতের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বাৎসরিক উরস উপলক্ষে প্রতিবছর হাজার হাজার লোক এখানে এসে শাহ জালালের উপলক্ষ ধরে (অসিলা) স্রষ্টার কাছে ভক্তি নিবেদন ও কৃতজ্ঞতা জানান।
- 5 শাহ পরাণের মাজার (শাহ জালালের দরগাহ থেকে প্রায় ৮ কি.মি. দুরত্বে সিলেট শহরের পূর্ব দিকে খাদিম নগর এলাকায় অবস্থিত।)। মধ্যপ্রাচ্য হতে বাংলাদেশে আসা ইসলাম ধর্ম প্রচারক শাহ জালালের অন্যতম সঙ্গী অনুসারী শাহ পরাণের সমাধি। এলাকাটির নাম খাদিমনগর হলেও স্থানীয়ভাবে এলাকাটিকে শাপরাণের দরগা এলাকা এবং প্রবেশ পথটিকে শাপরাণ গেইট বলা হয়।
স্থাপত্য[সম্পাদনা]
- 2 আলী আমজদের ঘড়ি (আলী আমজাদের ঘড়ি), সুরমা নদীর তীর। ১৮৭৪ খ্রিস্টাব্দে সিলেট মহানগরীর প্রবেশদ্বার (উত্তর সুরমা) ব্রিজের ডানপার্শ্বে সুরমা নদীর তীরে এই ঐতিহাসিক ঘড়িঘরটি নির্মাণ করেন সিলেটের কুলাউড়ার পৃত্থিমপাশার জমিদার ছিলেন আলী আমজদ খান। এটি সিলেট শহরের ঠিক মধ্যস্থলে ক্বীন ব্রীজের ঠিক পাশেই অবস্থিত।
- 6 ক্বীন ব্রীজ (পুরান পুল, সুরমা ব্রীজ এলাকা), এটি সিলেট শহরের ঠিক মধ্যস্থলে এবং '০' পয়েন্টের ১০০ মিটারের মধ্যে রয়েছে। (কদমতলি বাস টার্মিনাল বা রেল স্টেশন থেকে এটি পায়ে হাটার দূরত্বে অবস্থিত।)। ক্বীন ব্রীজ বিংশ শতকের তিরিশের দশকে আসাম প্রদেশের গভর্ণর মাইকেল ক্বীন সিলেট সফরে আসলে তাঁর স্মৃতিকে অম্লান করে রাখতে লৌহ নির্মিত হয় ১৯৩৬ সালে।
- 7 সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, চৌহাট্টা। সিলেটি ঐতিহ্যকে মিশিয়ে তৈরি করা হয়েছে এই শহীদ মিনার। সিলেটের চা বাগানের ফাঁক দিয়ে নতুন ভোরে নবদিগন্তে যেভাবে রক্তিম সূর্যের দেখা মেলে, সেই রূপ আর আবহমান বাংলার সংগ্রামী চেতনাকে প্রস্ফুটিত করে নির্মাণ করা হয়েছে এটি।
- 3 জিতু মিয়ার বাড়ী, শেখঘাট, কাজীরবাজার (দক্ষিণ সড়কের ধারে)। সিলেট মহানগরীর প্রবেশদ্বার (উত্তর সুরমা) ব্রিজের ডানপার্শ্বে সুরমা নদীর তীরে কাজীরবাজার এলাকায় এই ঐতিহাসিক বাড়িটি নির্মাণ করেন সিলেটের জায়গীরদার খান বাহাদুর আবু নছর মোহাম্মদ এহিয়া ওরফে জিতু মিয়া। চুন-সুরকি দিয়ে নির্মিত মুসলিম স্থাপত্য কলার অনন্য নিদর্শন এ দালানটি। বর্তমান কাজিরবাজার গরুর হাট ছিল কাজিদের মূল বাড়ি। ১৮৯৭ সালের ভূমিকম্পে বাড়িটি লন্ডভন্ড হয়ে গেলে বর্তমান জায়গায় বাড়িটি স্থানান্তরিত হয়। ১৯১১ সালে এ বাড়ির সামনের দালানটি নির্মাণ করা হয়।
উদ্যান ও বাগান[সম্পাদনা]
- 8 মালনীছড়া চা বাগান, সিলেটের এয়ারপোর্ট রোডে অবস্থিত। (সিএনজি অটো রিক্সা বা গাড়িতে করে যাওয়া যায়।)। ১৮৫৪ সালে ১৫০০ একর জায়গা জুড়ে প্রতিষ্ঠিত উপমহাদেশের প্রথম চা বাগানটি এটি। বাগানটি বর্তমানে বেসরকারি তত্ত্বাবধানে পরিচলিত হচ্ছে। চা বাগানের প্রবেশদ্বার বেশ কয়েকটি, যে কোন একটি পথ দিয়েই চা বাগান দর্শনের কাজ শুরু করা যায়। তবে ঝামেলা এড়াতে বাগানে প্রবেশের আগে কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেয়াই বাঞ্চনীয়; তারপর ঘুরে দেখা উচিত বাগানের এপাশ থেকে ওপাশ। দেখা যেতে পারে বাগানের বাংলো। স্থানটি সিলেট শহরের '০' পয়েন্টের ৫ কিলোমিটারের মধ্যে রয়েছে।
- 4 টিলাগড় ইকোপার্ক।
০৯:০০-১৮:০০। সিলেট নগরীর শহর থেকে মাত্র ৮ কিলোমিটার দূরে উত্তর-পূর্ব কোণে এটি অবস্থিত। ইকোপার্কটি কয়েকটি ছোট ছোট টিলা নিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে। এই ইকোপার্কের ছোটবড় টিলার মধ্য দিয়ে বয়ে গিয়েছে একটি ছড়া। এখানে ঘন গাছ-গাছালির পাশাপাশি রয়েছে জীববৈচিত্রের সমাহার। এছাড়া এখানে ছোট চিড়িয়াখানাও রয়েছে। পার্কটির পেছনে একটি চা বাগান রয়েছে।
৳২৩।
জাদুঘর[সম্পাদনা]
- 9 ওসমানী জাদুঘর, নাইওর পুল, ☎ +৮৮০২১৭১৪৩৬১, ইমেইল: dgmuseum@yahoo.com।
১০:৩০-১৭:৩০। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল আতাউল গণি ওসমানীর অবদানকে স্মরণ করে প্রতিষ্ঠিত এই জাদুঘরটির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর। স্থানটি সিলেট শহরের '০' পয়েন্টের ১০০ মিটারের মধ্যে রয়েছে। বৃহস্পতিবার ব্যাতিত সপ্তাহের অন্যান্য সবদিন এই জাদুঘরটি খোলা থাকে।
৳২০।
- 10 মিউজিয়াম অব রাজাস, জিন্দাবাজার, সিলেট সদর (সিলেট শহরের '০' পয়েন্টের ৫০০ মিটারের মধ্যে)।
রবিবার ছাড়া প্রতিদিন সকাল ০৯টা থেকে বিকেল ৫টা। কবি হাসন রাজার বাসভবনই বর্তমানে জাদুঘর হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এখানে আছে হাছন রাজা ও তার পরিবারের সদস্যদের ব্যবহৃত বিভিন্ন জিনিসপত্র, হাসন রাজাকে নিয়ে লেখা বইপত্র এবং পেপার কাটিংসের সংগ্রহ। লোক সংস্কৃতি এবং ইতিহাসের উপর গবেষণা কার্যক্রমকে এই জাদুঘর অনুপ্রাণিত করে থাকে।
৳১০।
একটু দূরে[সম্পাদনা]

- 11 রাতারগুল জলাবন (রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্ট), ফতেহপুর, গোয়াইনঘাট (সিলেট শহর থেকে এর দূরত্ব ২৬ কিলোমিটার উত্তরে)। সিলেটের স্থানীয় ভাষায় ‘মুর্তা’ বা পাটি গাছ “রাতা গাছ” নামে পরিচিত; এই রাতা গাছের নামানুসারে এ বনের নাম “রাতারগুল জলারবন”। এই জলারবনের আয়তন ৩,৩২৫.৬১ একর, আর এর মধ্যে ৫০৪ একর বনকে ১৯৭৩ সালে “বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য” হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এছাড়াও ২০৪.২৫ হেক্টর বনভুমিকে ৩১ মে ২০১৫ তারিখে বাংলাদেশের বন অধিদপ্তর “বিশেষ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এলাকা” হিসাবে ঘোষণা করে। এটি পৃথিবীর মাত্র কয়েকটি জলাবনের মধ্যে অন্যতম একটি।
চিরসবুজ এই বন গোয়াইন নদীর তীরে অবস্থিত। গোয়াইন নদী সারি নদীর সাথে মিলিত হয়েছে এবং চেঙ্গির খালের সাথে একে সংযুক্ত করেছে। এখানে সবচেয়ে বেশি জন্মায় করচ গাছ (বৈজ্ঞানিক নাম- Millettia pinnata)। বর্ষাকালে এই বন ২০–৩০ ফুট পানির নিচে নিমজ্জিত থাকে। বাকি সারা বছর, পানির উচ্চতা ১০ ফুটের মতো থাকে। বর্ষাকালে এই বনে অথৈ জল থাকে চার মাস। তারপর ছোট ছোট খালগুলো হয়ে যায় পায়ে-চলা পথ। আর তখন পানির আশ্রয় হয় বন বিভাগের খোঁড়া বিলগুলোতে। সেখানেই আশ্রয় নেয় জলজ প্রাণীকুল। বৈশিষ্ট্যমন্ডিত এই মিঠাপানির জলাবনটিতে উদ্ভিদের দু'টো স্তর পরিলক্ষিত হয়। উপরের স্তরটি মূলত বৃক্ষজাতীয় উদ্ভিদ নিয়ে গঠিত যেখানে নিচের স্তরটিতে ঘন পাটিপাতার (মুর্তা) আধিক্য বিদ্যমান। বনের উদ্ভিদের চাঁদোয়া সর্বোচ্চ ১৫ মিটার উচ্চতা পর্যন্ত বিস্তৃত। এছাড়াও অরণ্যের ৮০ শতাংশ এলাকাই উদ্ভিদের আচ্ছাদনে আবৃত। এখন পর্যন্ত এখানে সর্বমোট ৭৩ প্রজাতির উদ্ভিদের সন্ধান পাওয়া গেছে।
আসে বালিহাঁস সহ প্রচুর পরিযায়ী পাখি; আসে বিশালাকায় শকুনও। মাছের মধ্যে আছে টেংরা, খলিসা, রিটা, পাবদা, মায়া, তল্লা আইড়, কালবাউশ, রুই সহ বিভিন্ন জাত।
জলে নিম্নাংঙ্গ ডুবিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা বনের গাছগুলো দেখতে বিভিন্ন সময়, বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে এখানে ভিড় করেন পর্যটকগণ। বনের ভিতর ভ্রমণ করতে দরকার হয় নৌকার, তবে সেগুলো হতে হয় ডিঙি নৌকা ডিঙিতে চড়ে বনের ভিতর ঘুরতে ঘুরতে দেখা যায় প্রকৃতির রূপসুধা।
রাতারগুল যেতে হলে প্রথমে যেতে হবে সিলেটে। সিলেট শহর থেকে রাতারগুল যাওয়া যায় বেশ কয়েকটি পথে।
প্রথম উপায়: সিলেট থেকে জাফলং–তামাবিল রোডে সারীঘাট হয়ে সরাসরি গোয়াইনঘাট পৌঁছানো। এরপর গোয়াইনঘাট থেকে রাতারগুল বিট অফিসে আসবার জন্য ট্রলার ভাড়া করতে হয়, ভাড়া ৯০০-১৫০০ এর মধ্যে (আসা-যাওয়া) আর সময় লাগে ২ ঘণ্টা। বিট অফিসে নেমে ডিঙ্গি নৌকা নিয়ে বনে ঢুকতে হয়, এতে ঘণ্টাপ্রতি ভাড়া পড়বে ২০০-৩০০ টাকা।
দ্বিতীয় উপায়: সিলেটের আম্বরখানা পয়েন্ট থেকে সিএনজি নিয়ে গোয়াইনঘাট পৌঁছানো, ভাড়া পড়বে ৫০০ টাকা। ওসমানী এয়ারপোর্ট–শালুটিকর হয়ে যাওয়া এই রাস্তাটা বর্ষাকালে বেশ উপভোগ্য। এরপর একইভাবে গোয়াইনঘাট থেকে রাতারগুল বিট অফিসে আসবার জন্য ট্রলার ভাড়া করতে হবে, ভাড়া ৮০০–১৫০০ টাকার মধ্যে (আসা-যাওয়া) এবং সময় লাগে দুই ঘণ্টা। বিট অফিসে নেমে ডিঙ্গি নৌকা নিয়ে বনে ঢুকতে হয়, এতে মাঝি ঘণ্টাপ্রতি খরচ পড়বে ২০০-৩০০ টাকা।
তৃতীয় ও সহজ উপায়: সিলেটের আম্বরখানা পয়েন্ট থেকে সিএনজি নিয়ে মোটরঘাট (সাহেব বাজার হয়ে) পৌঁছাতে হবে, ভাড়া নেবে ২০০-৩০০ টাকা এবং সময় লাগবে ঘণ্টাখানেক। এরপর মোটরঘাট থেকে সরাসরি ডিঙ্গি নৌকা নিয়ে বনে চলে যাওয়া যায়, ভাড়া পড়বে ৪৫২ টাকা। একটি ডিঙ্গি নৌকায় সর্বোচ্চ ৬ জন উঠা যায়।
প্রাপ্ত বয়স্কদের ৳ ৫৭.৫০, অপ্রাপ্ত বয়স্কদের ৳২৮.৭৫, নৌকা ভাড়া ৳৪৫২।
- 5 ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর, সিলেট শহর হতে ৩৩ কিলোমিটার দূরবর্তী ও ভারতের চেরাপুঞ্জি সীমান্ত এলাকায় কোম্পানিগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত (সিলেট শহরের আম্বরখানা পয়েন্ট থেকে দোতলা বিআরটিসি ও সাদা পাথর নামক দুইটি পরিবহনে করে সাদা পাথরে যাওয়া যায়। এছাড়া রির্জাভ সিএনজি অটোরিকশা করেও যাওয়া যায়। বাস থেকে নেমে নৌকা করে সাদা পাথরে যাওয়া যেতে হয়। নৌকা ভাড়া যাওয়া আসা ৮০০ টাকা, ৮-১০ জন একটি নৌকায় যাতায়াত করা যায়।)। পাহাড়ী ঝর্ণাধারা থেকে সৃষ্ট ধলাই নদী ভারত থেকে ভোলাগঞ্জের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। প্রতি বর্ষায় ধলাই নদীর গ্রোতে বাংলাদেশে প্রবেশ করে অসংখ্য পাথর। ভোলাগঞ্জ সীমান্তে হাঁটুপানির ধলাই নদীতে হাঁটতে হাঁটতে চোখে পড়বে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অসংখ্য পাথর। দূরের পাহাড়গুলোর উপরে মেঘের ছড়াছড়ি, সাথে একটা-দুটো ঝর্ণা। নদীর টলমলে হাট জলের তলায় দেখা যায় বালুর গালিচা। চিকমিক বালু আর ছোট-বড় পাথর মিলে এখানে যেন তৈরি হয়েছে পাথরের রাজ্য। ভোলাগঞ্জে থাকার জন্য 'সাদা পাথর হোটেল এন্ড রিসোর্ট' নামে একটি হোটেল আছে। এই হোটেলে দুপুরে বুফে খাবারের ব্যবস্থা আছে। এছাড়া ভোলাগঞ্জে সাদাপাথরের কাছে খাবার হোটেল রয়েছে।
করুন[সম্পাদনা]

- 2 খাদিমনগর জাতীয় উদ্যান (উদ্যানটি সিলেট শহর থেকে ১৩ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে অবস্থিত। সিলেট নগরী থেকে সিলেট-তামাবিল সড়কে সিএনজি বা বাসযোগে ৮ কিলোমিটার দূরত্বে হযরত শাহ্ পরাণ (রঃ) এর মাজারের পাশ্ববর্তী খাদিন চৌমোহনা পর্যন্ত যাওয়া যায়। চৌমোহনা থেকে ৫ কিলোমিটার উত্তরে সড়ক যোগে সেখানে যেতে হয়। চৌমোহনা থেকে সিএনজি বা অটোরিক্সা যোগে যাওয়া যায়।), ☎ +৮৮ ০১৭৩৭-৮৫৩৭১৩। ট্রেইল অ্যাকটিভিটি:খাদিমনগরে হাঁটার জন্য ৪৫ মিনিট ও দুই ঘণ্টার দুটি ট্রেইল আছে। বন বিভাগের বিট অফিসের সামনে ট্রেইল দুটির মানচিত্র দেওয়া আছে, চাইলে স্থানীয় কাউকে গাইড হিসেবে সঙ্গে নেওয়া যেতে পারে। যদি ঘন জঙ্গলে ট্রেকিং করতে চাইলে সঙ্গে গাইড নেওয়া ভালো। এক ঘণ্টার গাইড খরচ ১৫০ টাকা। জিপ লাইন ও দড়িপথ: বিট কর্মকর্তার অফিসের সামনেই পাওয়া যাবে জিপ লাইন। এছাড়া এখানে ট্রি অ্যাকটিভিটিজ (দড়িপথ) করারও সুবিধা আছে। ১০০ টাকার টিকেটের বিনিময়ে প্রতিটি এক্টিভিটি করা যায়। রাত্রিযাপন: কটেজ বা তাঁবু ভাড়া করে এখানে রাত্রি যাপন করা যায়। বিট অফিসে আগে থেকে যোগাযোগ করলে তারা তাঁবু করে রাতযাপনের ব্যবস্থা করে দেয়। ২ জনের জন্য একটি তাঁবুর ভাঁড়া ৫০০ টাকা। এখানে প্রায় ৫০ জন ক্যাম্পিং করে থাকার মত ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়া সিলেট বন বিভাগের পক্ষ থেকে এখানে খাবার ব্যবস্থা আছে। তবে আগে থেকে তাদের বলে রাখতে হয়। প্রতিবেলা জনপ্রতি খরচ ১৫০ টাকা ও সকালের নাস্তার জন্য ৮০ টাকা। এছাড়া ক্যাম্পিং করলে জনপ্রতি ৭৫০ টাকার একটি প্যাকেজ আছে। যাতে রাতের খাবার (সন্ধ্যা ৬ টায় দেয়া হয়), মুরগীর বারবিকিউ (রাত ১২ টায় দেয়া হয়), পরের দিন সকালের নাস্তা ও রাতে তাঁবুতে থাকার ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত। এছাড়া চাইলে পছন্দ অনুযায়ী খাবার অর্ডার করা যায়। ভ্রমণের ২/৩ দিন আগে বুকিং দিতে পারলে ভালো হয়।
এছাড়া খাদিমনগর জাতীয় উদ্যানে প্রায় ২১৭ প্রজাতির গাছ এবং ৮৩ প্রজাতির প্রাণী রয়েছে। এখানে জাতীয় উদ্যানে আছে প্রচুর সেগুন গাছ। এছাড়াও দেখা যায় ঢাকি জাম, গর্জন, চম্পা ফুল, চিকরাশি, চাপালিশ, মেহগনি, শিমুল, চন্দন, জারুল, আম, জাম, কাউ, লটকন, বন বড়ই, জাওয়া, কাইমূলা, গুল্লি, পিতরাজ, বট, আমলকি, হরিতকি, বহেড়া, মান্দা, পারুয়া, মিনজিরি, অর্জুন, একাশিয়া প্রভৃতি। বাঁশের প্রজাতিগুলো হচ্ছে জাইবাশ, বেতুয়া বাঁশ, পেঁচা বাঁশ, পারুয়া বাঁশ এবং বেতের প্রজাতিগুলো হচ্ছে তাল্লাবেত, জালিবেত।
এই উদ্যানে পাখির মধ্যে রয়েছে দোয়েল, ময়না, শ্যামা, কাক, কোকিল, টিয়া, কাঠ ঠোকরা, মাছরাঙ্গা, চিল, ঘুঘু, বক, টুনটুনি, চড়ুই, বুলবুলি, বনমোরগ, মথুরা, শালিক। স্তন্যপায়ীর মধ্যে রয়েছে বানর, হনুমান, শিয়াল, বনবিড়াল, বেজি, কাঠবিড়াল, ইঁদুর, খরগোশ, মেছো বাঘ। সাপের মধ্যে আছে অজগর, দারাইশ, উলুপুড়া, চন্দ বুড়াসহ নানা বিষধর সাপ। শকুনের নিরাপদ এলাকা-১ তফসিল অনুসারে খাদিমনগর জাতীয় উদ্যান শকুনের জন্য নিরাপদ বলে ঘোষিত।
প্রবেশ ফি ৳২০।
অন্যান্য স্থান ও স্থাপনা[সম্পাদনা]
খাওয়া দাওয়া[সম্পাদনা]
স্থানীয় পর্যায়ের বিখ্যাত খাদ্য হলো আথনী পোলাও ও সাতকরা (হাতকরা)। এছাড়াও স্থানীয় আনারস, কমলা, পান, লেবু এবং কাঠালের দারুণ সুখ্যাতি রয়েছে। আরও রয়েছে চা-পাতা। হাওড় এলাকায় প্রচুর মাছ পাওয়া যায় এবং খামার ভিত্তিক হাঁস পালন করা হয়। এখানে সাধারণভাবে দৈনন্দিন খাওয়া-দাওয়ার জন্য স্থানীয় হোটেল ও রেস্তোরাঁগুলোতে বিভিন্ন ধরণের খাবার পাওয়া যায়।
বাংলা খাবারের জন্য সিলেটের সবচেয়ে পরিচিত দুইটি রেস্তোরাঁ হচ্ছে পানশী ও পাঁচভাই। দুইটি রেস্তোরাঁই জিন্দাবাজারের জল্লারপাড়ে অবস্থিত। সুলভ মূল্য ও খাবারের মান ভালো হওয়ার সব শ্রেণির মানুষের কাছে উভয় রেস্তোরাঁই খুব জনপ্রিয়। এ দু'টি রেস্তোরাঁ ছাড়াও সমমানের আরও কিছু রেস্টুরেন্ট এই এলাকায় আছে।
পুরো সিলেট শহর জুড়েই কমবেশি হালকা খাবার বা বিদেশি খাবারের রেস্তোরাঁ দেখা যায়। তবে বেশি সংখ্যক রেস্তোরাঁ দেখা যায় নয়া সড়ক ও জেলরোডে। এখানে বিভিন্ন ধরণের পানীয় থেকে শুরু করে দেশী ও বিদেশি খাবারের বিভিন্ন দোকান রয়েছে।
কয়েকটি কিছু বুফে রেস্তোরাঁ রয়েছে এই শহরে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে গ্র্যান্ড বাফেট রেস্টুরেন্ট। এটি পূর্ব জিন্দাবাজারে অবস্থিত। এখানে দুপুরে ৭৫০ টাকা ও রাতে ৮৫০ টাকায় বুফে খাবার পাওয়া যায়।
থাকা ও রাত্রিযাপনের স্থান[সম্পাদনা]
সিলেটে থাকার জন্য স্থানীয় পর্যায়ের কিছু সাধারণ মানের হোটেল রয়েছে। এছাড়াও থাকার জন্য উন্নতমানের কিছু হোটেলও রয়েছে। মৌসুমভেদে এসব হোটেলে ভাড়াতে অনেক ছাড়ের ব্যবস্থা থাকে।
- 1 হোটেল রোজভিউ ইন্টারন্যাশনাল, উপশহর, ☎ +৮৮ ০১৯৭২৭৮৭৮৭৮, ইমেইল: reservation@roseviewhotel.com। আগমন: দুপুর ২টা, প্রস্থান: দুপুর ১২টা। ৫ তারকা হোটেল
৳১০,০০০-৫১,০০০।
- 2 গ্র্যান্ড সিলেট হোটেল এন্ড রিসোর্ট, খাদিমনগর, বিমানবন্দর সড়ক, ☎ +৮৮০ ১৩২১২০১৫৮০, ইমেইল: reservation@grandsylhet.com। আগমন: দুপুর ২টা, প্রস্থান: দুপুর ১২টা। ৫ তারকা হোটেল
৳৬,৩২৩-১৫,৮০৯।
- 3 নূরজাহান গ্র্যান্ড, দরগা গেট, ☎ +৮৮০১৯৩০ ১১১ ৬৬৬, ইমেইল: info@noorjahangrand.com। আগমন: দুপুর ২টা, প্রস্থান: দুপুর ১২টা।
- 4 হোটেল মেট্রো ইন্টারন্যাশনাল, ধোপা দীঘির পাড়, পূর্ব বন্দর বাজার, ☎ +৮৮০১৭৩১৫৩৩৭৩৩, ইমেইল: info@hotelmetrointl.com।
৳৪,০০০-১৪,০০০।
- 5 হোটেল ডালাস, তামাবিল রোড, মিরাবাজার, ☎ +৮৮০১৭৯৬৩৩৬৮৩৬, ইমেইল: hoteldallassylhet@yahoo.com।
- 6 হোটেল হিলটাউন, ভিআইপি রোড, তেলি হাওড়, ☎ +৮৮০১৭১১৩৩২৩৭১।
৳৪,০০০-৮,০০০।
- 7 শুকতারা নেচার রিট্রিট, শাহ্পরাণ উপশহর, খাদিমনগর (শহরের কেন্দ্র থেকে প্রায় ৭.৫ কি:মি: দূরে অবস্থিত), ☎ +৮৮০১৭৬৪৫৪৩৫৩৫, ইমেইল: shuktararetreat@gmail.com।
দূতাবাস ও কনস্যুলেট[সম্পাদনা]
ব্রিটিশ কাউন্সিলর সার্ভিসেস সিলেট, হোটেল নির্ভানা ইন, মির্জা জাঙ্গাল, সিলেট, ☎ +৮৮০ ২ ৫৫৬৬৮৭০০।
6 ভারতীয় ভিসা আবেদন কেন্দ্র, সিলেট, রহিম টাওয়ার, সুভানিঘাট বিশ্বরোডে রোড, সিলেট, ☎ +৮৮ ০৯৬১২ ৩৩৩ ৬৬৬, ইমেইল: info@ivacbd.com।
রবি-বৃহঃ ০৮:০০-১৬:০০।
পরবর্তিতে যান[সম্পাদনা]
- মৌলভীবাজারের অনেকগুলো টুরিস্ট স্পটে সিলেট থেকে দিনে যেয়ে দিনেই ঘুরে আসা যায়। এখানে উল্লেখযোগ্য দর্শনীয় স্থানের মধ্যে রয়েছে চা বাগান, সংরক্ষিত বন, ঝর্ণা, হাওর ইত্যাদি।
- সুনামগঞ্জের হাওরগুলোতে সিলেট থেকে সকাল সকাল রওনা দিলে সারাদিন নৌকায় ঘুরে আবার দিন শেষে সিলেটে ফেরা যায়।
- শিলং ভারতীয় মেঘালয়ের রাজ্যের জনপ্রিয় একটি পর্যটন শহর। এজন্য বাংলাদেশ সীমান্ত পার হয়ে ভারতে প্রবেশ করতে হবে।