কিশোরগঞ্জ জেলা বাংলাদেশের একটি জেলা যা ঢাকা বিভাগ এর অন্তর্গত। কিশোরগঞ্জের ভৌগোলিক আয়তন প্রায় ২,৬৮৮ বর্গ কিলোমিটার। এই আয়তনে ১৩টি উপজেলা রয়েছে। এই জেলার উত্তরে নেত্রকোণা জেলা ও ময়মনসিংহ জেলা, দক্ষিণে নরসিংদী জেলা ও ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলা, পূর্বে সুনামগঞ্জ জেলা ও হবিগঞ্জ জেলা, পশ্চিমে ময়মনসিংহ জেলা ও গাজীপুর জেলা।
প্রবেশ
[সম্পাদনা]আকাশ পথে
[সম্পাদনা]এখানে কোন বিমানবন্দর নেই।
রেল পথে
[সম্পাদনা]ঢাকা কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে প্রতিদিন এগারসিন্দুর এক্সপ্রেস ও কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস রেলগাড়ি ছেড়ে যায়।
বাসে
[সম্পাদনা]ঢাকা থেকে কিশোরগঞ্জ জেলায় সাধারণত সড়ক পথেই যাতায়াত করা হয়ে থাকে। ঢাকা থেকে কিশোরগঞ্জ, ভৈরব রুটে যে কয়েকটি পরিবহন চলাচল করে তার মধ্যে ঈশাখাঁ এক্সক্লুসিভ, অনন্যা সুপার, যাতায়াত, এবং গাজীপুর রুটে অনন্যা পরিবহন, হাওড় বিলাস, জলসিঁড়ি অন্যতম। ভোর ৬.০০ টা থেকে রাত ৯.৩০ টা পর্যন্ত ১ ঘণ্টা পরপর বাসগুলো ঢাকা থেকে ছেড়ে যায়।
দেখুন
[সম্পাদনা]- দিল্লীর আখড়া। দিল্লীর আখড়া মুঘল সম্রাট জাহাঙ্গীরের শাসনামলে নির্মিত। এটি মিঠামইন উপজেলায় অবস্থিত।
- মানব বাবুর বাড়ি। মানব বাবুর বাড়ি হোসেনপুর উপজেলার গোবিন্দপুর ইউনিয়নের গাঙ্গাটিয়া গ্রামে অবস্থিত। ১৯০৪ সালে জমিদারির পত্তন হলে ব্রিটিশ জেপি ওয়াইজের কাছ থেকে জমিদারি কিনে নেন গাঙ্গাটিয়ার ভূপতিনাথ চক্রবর্তী। সেখানেই তিনি এই বাড়িটি নির্মাণ করেন।
- ভীমের মায়ের চুলা (কিশোরগঞ্জ থানা কমপ্লেক্সের উত্তর-পশ্চিম দিকে ২০০শত মিটার দূরে)। তিনদিক উঁচু মৃৎ-প্রাচীর বেষ্টিত একটি স্থাপনা যার প্রাচীরের উপরের তিনটি স্থান অপেক্ষাকৃত উঁচু। এর ভিতরের অংশ গভীর ও বাইরের তিনদিক প্রায় ২০ ফুট প্রশস্ত পরিখা বেষ্টিত। ফলে আবিস্কৃত স্থাপনাটি চুলার আকারে পরিদৃষ্ট হয়।
স্থাপত্য
[সম্পাদনা]- 1 এগারসিন্দুর দূর্গ। এগারসিন্দুর দুর্গ পাকুন্দিয়া উপজেলার এগারসিন্দুর গ্রামে অবস্থিত। গ্রামটি ব্রহ্মপুত্র নদীর পূর্ব তীরে অবস্থিত। ইতিহাসবেত্তা আবুল ফজল রচিত আকবরনামা গ্রন্থে এই গ্রামের নাম উল্লেখ রয়েছে। এটি ছিল অহম শাসকদের রাজধানী। ১৫৩৮ সালে মুঘলরা অহমদের পরাজিত করে এ অঞ্চল দখল করে। এখানেই ১৫৮০ সালে বার ভূঁইয়াদের প্রধান ঈসা খাঁ মুঘল সম্রাট আকবরের সেনাপতি মান সিংহকে পরাজিত করে।
- 2 চন্দ্রাবতী মন্দির, কাচারীপাড়া, মাইজখাপন ইউনিয়ন (কিশোরগঞ্জ থেকে রিক্সায় এখানে আসা যাবে)। চন্দ্রাবতীর শিবমন্দির ষোড়শ শতাব্দীতে নির্মিত প্রথম বাঙালি মহিলা কবি স্মৃতিবিজরিত শিবমন্দির। এটি কিশোরগঞ্জ শহর থেকে ৬ কিলোমিটার দূরে মাইজখাপন ইউনিয়নের কাচারীপাড়া গ্রামে ফুলেশ্বরী নদীর তীরে অবস্থিত। অষ্টভুজাকৃতির মন্দিরিটির উচ্চতা প্রায় ৩২ ফুট। এর আট বাহুর প্রতিটির দৈর্ঘ্য ৮ ফুট। নিচতলায় আছে একটি কক্ষ ও প্রবেশের পথ। কক্ষের ভেতরে রয়েছে ৭টি কুলুঙ্গি। দ্বিতীয় তলাতে আছে একটি প্রশস্ত কুলুঙ্গি এবং পোড়ামাটির সুদৃশ্য কাজ। দ্বিতীয় তলা থেকেই মন্দিরটি ক্রমশ সরু হয়ে ৩২ ফুট পর্যন্ত উচ্চতায় গিয়ে শেষ হয়েছে। ১৯৯০-এর দশকে প্রত্নতত্ত্ব মন্দিরটির কিছু অংশ সংস্কার করা হয়েছে।
- 3 জঙ্গলবাড়ি দূর্গ। জঙ্গলবাড়ি দুর্গ ছিল বার ভূঁইয়াদের প্রধান ঈসা খাঁর দ্বিতীয় রাজধানী। এটি কিশোরগঞ্জ শহর থেকে ৬ কিলোমিটার দূরে করিমগঞ্জ উপজেলার কাদিরজঙ্গল ইউনিয়নের জঙ্গলবাড়ি গ্রামে অবস্থিত। দূর্গের ভিতরে ঈসা খাঁ কয়েকটি স্থাপনা গড়ে তোলেন। ১৮৯৭ সালে ভুমিকম্পে দুর্গের কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্থ হয়।
উদ্যান
[সম্পাদনা]- 4 শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান। কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার পূর্ব প্রান্তে প্রায় ৬.৬১ একর জমিতে অবস্থিত বাংলাদেশ তথা উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ ও ঐতিহ্যবাহী শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান। প্রতিবছর এ ময়দানে ঈদ-উল-ফিতর ও ঈদ-উল-আযহার নামাজের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। কালের স্রোতে শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানটি পরিণত হয়ে উঠেছে একটি ঐতিহাসিক স্থানে।
রাত্রিযাপন
[সম্পাদনা]কিশোরগঞ্জ সদরে স্টেশন রোডে আসলে থাকার হোটেল পেয়ে যাবেন।