সামারা (আরবি:سامَرّاء) হল ইরাকের বাগদাদ বলয়ের একটি শহর। ২০০৭ সালে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানগুলির মধ্যে সামারার নাম অন্তর্ভুক্ত করে।
অনুধাবন
[সম্পাদনা]অঞ্চলটি প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকেই মানুষের একটি আবাসস্থল হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে এবং ৫৫০০ থেকে ৪৮০০ খ্রিস্ট-পূর্বাব্দের মধ্যে নব্যপ্রস্তর যুগের সামারা সংস্কৃতি বিকশিত হয়েছিল। ৬৯০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে দজলা নদীর বিপরীত তীরে সুর-মারাতি নামে একটি শহর প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর শহরটি বেশ কয়েকবার ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়ে নতুন করে নির্মিত হয় এবং দজলা নদীর আশেপাশে বিভিন্ন স্থানে পুনর্নির্মিত হয়েছিল।
বর্তমান সামারা শহরটি ৮৩৬ সালে আব্বাসীয় খলিফা আল মুতাসিম কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হয়। তিনি এবং তার উত্তরসূরীরা এখানে বেশ কয়েকটি রাজকীয় প্রাসাদ নির্মাণ করেন; যেমন: আল-মুতাওয়াক্কিলিয়া প্রাসাদ, সামারার বড় মসজিদ ও তার বিখ্যাত সর্পিল মিনার এবং বুলকুওয়ারা প্রাসাদ। ৮৯২ খ্রিস্টাব্দে সামারা খলিফার রাজধানী হিসেবে বাগদাদে স্থানান্তরিত হলে শহরটি পতন শুরু হয় এবং ৯৪০ খ্রিস্টাব্দের পর থেকে প্রায় পরিত্যক্ত হয়ে যায়। এরপর হাজার বছর ধরে সামারার কোনো বড় ভূমিকা ছিল না। তবে ১৯৫০ এর দশকে সামারা বাঁধ নির্মাণের ফলে এর কাছকাকাছি এলাকা প্লাবিত হলে শহরের জনসংখ্যা বৃদ্ধি পায়।
বর্তমান সামারায় প্রায় ৩,৫০,০০০ মানুষ বসবাস করে। এটি একমাত্র ইসলামি রাজধানী, যা মূল পরিকল্পনা, স্থাপত্য ও শৈল্পিক বৈশিষ্ট্য ধরে রেখেছে। এই কারণে ২০০৭ সালে সামারাকে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের মর্যাদা দেওয়া হয়।
জলবায়ু
[সম্পাদনা]- আরও দেখুন: উষ্ণ আবহাওয়া
সামারায় একটি উষ্ণ মরুভূমির জলবায়ু রয়েছে। জুন এবং জুলাই মাসে দৈনিক তাপমাত্রা স্বাভাবিকভাবেই ৪৫ °সে (১১৩ °ফা) এ পৌঁছায় ।
প্রবেশ
[সম্পাদনা]সড়কপথে
[সম্পাদনা]বাগদাদ ও মসুলকে সংযোগকারী মহাসড়ক ১ সামারার পাশ দিয়ে গেছে। রাস্তাটি চলাচলের অবস্থায় রয়েছে; তবে ২০১০-এর দশকের শেষের দিকে সড়কটিতে প্রায়শ ডাকাতির ঘটনা ঘটতো।
বাসে
[সম্পাদনা]বাগদাদ থেকে দৈনিক সামারা অভিমুখী বাস আছে।
রেলপথে
[সম্পাদনা]ইরাকি জাতীয় রেল পরিষেবা সংস্থা ইরাকি রেলওয়ে বাগদাদ থেকে প্রতি সপ্তাহে একদিন শুক্রবারে একটি যাত্রীবাহী ট্রেন চালায়।
1 সামারা রেলওয়ে স্টেশন।
ঘোরাঘুরি
[সম্পাদনা]দেখুন
[সম্পাদনা]- 1 সামারা বড় মসজিদ (مسجد سامراء الكبير): এটি নবম শতাব্দীতে নির্মিত মসজিদ, যা ৮৪৮ সালে ভিত্তি স্থাপিত হয়েছিল এবং ৮৫১ সালে আব্বাসীয় খলিফা আল-মুতাওয়াক্কিল দ্বারা সম্পন্ন হয়েছিল। যিনি ৮৪৭ থেকে ৮৬১ সাল পর্যন্ত সামারাতে রাজত্ব করেছিলেন। এক সময় এটি বিশ্বের বৃহত্তম মসজিদ ছিল; এর মিনার যা মালউয়া টাওয়ার নামে পরিচিত একটি সুবিশাল সর্পিল শঙ্কু, যা ৫২ মিটার উচু এবং ৩৩ মিটার চওড়া একটি সর্পিল ঢালুপথ। মসজিদের শিল্প ও স্থাপত্য খুব আকর্ষণীয়; ফুল ও জ্যামিতিক নকশায় মসজিদের অভ্যন্তরে খোদাইকৃত স্টুকো প্রাথমিক ইসলামি অলঙ্করণের প্রতিনিধিত্ব করে।
- 2 আল আসকারি মাজার (مرقد الاامامين علي الهادي والحسن العسكري; মারকাদ আল-ইমামাইন আলী আল হাদী ওয়াল হাসান আল আসকারি): যথাক্রমে দশম ও একাদশ শিয়া ইমাম 'আলি আল হাদি ও হাসান আল আসকারির সমাধি এটি। সেই সাথে মুহাম্মদ আল মাহদির মাজারও রয়েছে, যিনি "গোপন ইমাম" নামেও পরিচিত। তিনি জাফরী শিয়া মাযহাবের দ্বাদশ ও শেষ ইমাম। এসব কারণ একে জাফরি শিয়া মুসলমানদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ তীর্থস্থানে পরিণত করেছে। এছাড়াও হাকিমা খাতুন এবং নারজিস খাতুন নামে নবী মুহাম্মদের দুইজন মহিলা আত্মীয়কেও এখানে সমাহিত করা হয়েছে, যাদের শিয়া ও সুন্নি উভয় মুসলিমরা উচ্চ সম্মান প্রদান করে। এটি এই মসজিদটিকে শিয়াদের জন্য সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য উপাসনালয়গুলির একটি এবং একটি পূজনীয় স্থানে পরিণত করেছে।
- 3 কাসর আল আশিক (قصر العاشق ): একটি ঐতিহাসিক প্রাসাদ, যা আব্বাসীয় যুগে নির্মিত হয়। ১৫তম আব্বাসীয় খলিফা আল-মুতামিদের অধীনে এটি নির্মাণ হয়েছিল। এর নির্মাণকাজ ৮৭৭–৮৮২ সালের মধ্যে সংঘটিত হয়েছিল এবং প্রাসাদটি আব্বাসীয় স্থাপত্য শৈলীর একটি বিশিষ্ট জীবিত উদাহরণ।
- 4 আবু দালাফ মসজিদ: এটি সামারার উত্তরে ১৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। ৮৫৯ সালে দশম আব্বাসি খলিফা আল মুতাওয়াক্কিল কর্তৃক নির্মিত এটি একটি ঐতিহাসিক মসজিদ।
- 5 বেলকুয়ারা প্রসাদ (قصر بلكوارا)
- 6 বারাকা প্রসাদ (قصر البركة)
করণীয়
[সম্পাদনা]কেনাকাটা
[সম্পাদনা]আহার
[সম্পাদনা]পানীয়
[সম্পাদনা]ঘুমের স্থান
[সম্পাদনা]নিরাপদে থাকুন
[সম্পাদনা]সামারার নিরাপত্তা পরিস্থিতি সম্পর্কে সার্বিক তথ্যের জন্য ইরাক নিবন্ধে সতর্কতা দেখুন ।
সংযোগ
[সম্পাদনা]মোকাবেলা
[সম্পাদনা]পরবর্তী ভ্রমণ
[সম্পাদনা]{{#মূল্যায়ন:শহর|রূপরেখা}}