কুড়িগ্রাম জেলা বাংলাদেশের একটি প্রশাসনিক এলাকা, যা দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রংপুর বিভাগের অন্তর্গত। ২৫°২৩´ উত্তর অক্ষাংশ হতে ২৬°১৪´ উত্তর অক্ষাংশে এবং ৮৯°২৭´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ হতে ৮৯°৫৪´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশে বিস্তৃত এই জেলার উত্তরে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য, দক্ষিণে গাইবান্ধা ও জামালপুর জেলা, পূর্বে ভারতের আসাম রাজ্য এবং পশ্চিমে রংপুর ও লালমনিরহাট জেলা এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য অবস্থিত। উলিপুর, কুড়িগ্রাম সদর, চর রাজিবপুর, চিলমারী, নাগেশ্বরী, ফুলবাড়ী, ভুরুঙ্গামারী, রাজারহাট ও রৌমারী - এই নয়টি উপজেলার সমন্বয়ে গঠিত ২২৯৬.১০ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের এই জেলাটি রাজধানী ঢাকা থেকে ৩৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
কীভাবে যাবেন?
[সম্পাদনা]স্থলপথে
[সম্পাদনা]সড়ক পথে ঢাকা হতে কুড়িগ্রামের দূরত্ব ৩৮০ কিলোমিটার এবং রেলপথে ঢাকা হতে কুড়িগ্রাম রেল স্টেশনের দূরত্ব ৫৮৫ কিলোমিটার। জেলা সদরটি বিভাগীয় শহর রংপুর হতে ৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
সড়কপথ
[সম্পাদনা]ঢাকার গাবতলী, সায়েদাবাদ, আসাদগেট, শ্যামলী, মহাখালী, মিরপুর বাস স্টেশন থেকে কুড়িগ্রামে আসার সরাসরি দুরপাল্লার এসি ও নন-এসি বাস সার্ভিস আছে; এগুলোতে সময় লাগে ৬.৩০ হতে ৮.০০ ঘণ্টা। ঢাকা থেকে কুড়িগ্রামের উদ্দেশ্যে হক, নাবিল, জবা, এসবি প্রভৃতি পরিবহন কোম্পানীর বাস আছে প্রতিদিন।
- হক পরিবহন, ঢাকা: ☎ ০২-৯১১৮৭১৩, মোবাইল: +৮৮০১৭২২-০৫২ ৮০৯ (আসাদগেট), কুড়িগ্রাম: ☎ ০৫৮১-৬১৮৭৩, মোবাইল: +৮৮০১৭১৮-০২৭ ৫১৬;
- জবা পরিবহন, ঢাকা: ☎ ০২-৯১১২৩৪২, মোবাইল: +৮৮০১৭১২-৭২৫ ৯৬৫ (আসাদগেট), কুড়িগ্রাম: ☎ ০৫৮১-৬১৭৭২, মোবাইল: +৮৮০১৭১১-১০১ ৩৪২;
- এসবি পরিবহন, ঢাকা: মোবাইল: ০১১৯৭-০২৫ ৬১৫ (আসাদগেট), কুড়িগ্রাম: ☎ ০৫৮১-৬১ ৮৮৭, ৬১ ৩৩৭, মোবাইল: ০১১৯৭-০২৫ ৬১৪;
- মোল্লা পরিবহন, ঢাকা: মোবাইল: +৮৮০১৮১৯-০২৯ ৪৫৩, +৮৮০১৭২০-১৭২ ৮৭১ (মিরপুর), কুড়িগ্রাম: ☎ ০৫৮১-৬১৭৬২, মোবাইল: +৮৮০১৭১২-২১২ ০৬৬;
- নাবিল পরিবহন, ঢাকা: ☎ ০২-৮১২৭৯৪৯, মোবাইল: +৮৮০১৭১৪-৮২৭ ৩৭৩ (আসাদগেট), কুড়িগ্রাম: ☎ ০৫৮১-৫২৪৭১, মোবাইল: +৮৮০১৮২৪-৯৮০ ৭১৯;
- হানিফ এন্টারপ্রাইজ, ঢাকা: ☎ ০২-৯১৪ ৪৪৮২, ৮০১ ১৭৫০, ৯০০ ৩৩৮০, ৮১১ ৯৯০১, মোবাইল: ০১১৯৮-২২০ ০৫২ (শ্যামলী), ০১১৯০-১৮৮ ১৬৯ (গাবতলি);
- কুড়িগ্রাম পরিবহন, মোবাইল: +৮৮০১৯২৪-৪৬৯ ৪৩৭, +৮৮০১৯১৪-৮৫৬ ৮২৬।
- ঢাকা-কুড়িগ্রাম রুটে সরাসরি চলাচলকারী পরিবহনে আসার ক্ষেত্রে ভাড়া হলোঃ
- এসি বাসে - ৭০০/- এবং
- নন-এসি বাসে - ৩৫০/- - ৫০০/-।
রেলপথ
[সম্পাদনা]ঢাকার কমলাপুর রেল স্টেশন থেকে ট্রেনে সরাসরি, অথবা লালমনিরহাট অভিমুখী ট্রেনে রংপুরের কাউনিয়া এসে সেখান থেকে সড়ক পথে কুড়িগ্রাম আসা যায়। কমলাপুর রেল স্টেশন থেকে প্রতিদিন একাধিক ট্রেন কুড়িগ্রাম - কাউনিয়া পথে যাতায়ত করে। ঢাকা – কুড়িগ্রাম/কাউনিয়া রুটে চলাচলকারী ট্রেনগুলো হলোঃ
- ৭৭১ রংপুর এক্সপ্রেস (রবিবার বন্ধ) - রংপুর হতে রাত ০৮ টায় ছাড়ে ও ঢাকায় ভোর ৬টা ১৫ মিনিটে পৌছে এবং ঢাকা থেকে সকাল ০৯ টায় ছাড়ে ও রংপুরে সন্ধ্যা ৭টায় পৌছে;
- লালমনি এক্সপ্রেস (শুক্রবার বন্ধ) - ঢাকা থেকে রাত ১০ টা ১০ মিনিটে ছাড়ে।
ঢাকা-কুড়িগ্রাম রুটে চলাচলকারী রেলে ঢাকা হতে কুড়িগ্রাম আসার ক্ষেত্রে ভাড়া হলো -
- শোভন চেয়ার - ৫১৫ টাকা;
- স্নিগ্ধা (এসি চেয়ার) - ৯৮৪ টাকা।
ট্রেন সম্পর্কিত তথ্যের জন্য যোগাযোগ করতে পারেন:
- কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন, ☎ ০২-৯৩৫৮৬৩৪,৮৩১৫৮৫৭, ৯৩৩১৮২২, মোবাইল নম্বর: +৮৮০১৭১১৬৯১৬১২;
- বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন, ☎ ০২-৮৯২৪২৩৯;
- ওয়েবসাইট: www.railway.gov.bd।
আকাশ পথে
[সম্পাদনা]কুড়িগ্রামে কোনো বিমানবন্দর না-থাকায় এখানে সরাসরি আকাশ পথে আসা যায় না, তবে ঢাকা থেকে সরাসরি বিমান যোগাযোগ ব্যবস্থা রয়েছে সৈয়দপুর বিমানবন্দরের সাথে; ঢাকা থেকে সৈয়দপুর এসে সেখান থেকে সড়কপথে কুড়িগ্রাম আসা যায়। বাংলাদেশ বিমান, জেট এয়ার, নোভো এয়ার, রিজেন্ট এয়ার, ইউনাইটেড এয়ার - প্রভৃতি বিমান সংস্থার বিমান পরিষেবা রয়েছে ঢাকা থেকে সৈয়দপুর আসার জন্য।
বাংলাদেশ বিমানের একটি করে ফ্লাইট সপ্তাহে ৪ দিন ঢাকা-সৈয়দপুর ও সৈয়দপুর-ঢাকা রুটে চলাচল করে; ভাড়া লাগবে একপথে ৩,০০০/- এবং রিটার্ণ টিকিট ৬,০০০/-। সময়সূচী হলোঃ
- ঢাকা হতে সৈয়দপুর - শনি, রবি, মঙ্গল, বৃহস্পতি - দুপুর ০২ টা ২০ মিনিট;
- সৈয়দপুর হতে ঢাকা - শনি, রবি, মঙ্গল, বৃহস্পতি - দুপুর ০৩ টা ৩৫ মিনিট।
এই সম্পর্কিত তথ্যের জন্য যোগাযোগ করতে পারেন:
- ম্যানেজার, সৈয়দপুর বিমান বন্দর, মোবাইল - +৮৮০১৫৫৬-৩৮৩ ৩৪৯।
জল পথে
[সম্পাদনা]অপ্রচলিত মাধ্যম হিসাবে নৌপথ ব্যবহৃত হয়ে থাকে; তবে কেবলমাত্র স্থানীয় পর্যায় ছাড়া অন্য কোনো এলাকার সাথে, কিংবা ঢাকা থেকে বা অন্যান্য বড় শহর হতে সরাসরি কোনো নৌযান চলাচল করে না। তবে, চরাঞ্চলে যোগাযোগের একমাত্র বাহন নৌযান।
দর্শনীয় স্থান
[সম্পাদনা]- চণ্ডী মন্দির - উলিপুর;
- দোলমঞ্চ মন্দির - উলিপুর;
- ধরলা ব্রিজ - কুড়িগ্রাম সদর;
- ধরলা বাঁধ - কুড়িগ্রাম সদর;
- মোগলবাসা ভাটলার স্লুইচগেট - কুড়িগ্রাম সদর;
- ঘোগাদহ বাজার - কুড়িগ্রাম সদর;
- শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিফলক - ঘোষপাড়া, কুড়িগ্রাম সদর;
- স্বাধীনতার বিজয় স্তম্ভ - কলেজ মোড়, কুড়িগ্রাম সদর;
- বেহুলার চর - চর রাজিবপুর;
- বালিয়ামারী সীমান্ত হাট - চর রাজিবপুর;
- চিলমারী বধ্যভূমি;
- রমনা ঘাট - চিলমারী;
- চিলমারী বন্দর - চিলমারী;
- ভিতরবন্দ জমিদার বাড়ি - নাগেশ্বরী;
- ফুলসাগর - ফুলবাড়ী;
- নাওডাঙ্গা জমিদার বাড়ি - ফুলবাড়ী;
- ভুরুঙ্গামারী বধ্যভূমি - ভুরুঙ্গামারী;
- সোনাহাট স্থল বন্দর - ভুরুঙ্গামারী;
- চাকির পশার বিল - রাজারহাট;
- সিন্দুরমতি দিঘি - রাজারহাট;
- চান্দামারী মসজিদ - রাজারহাট;
- শাহী মসজিদ - রাজারহাট;
- কোটেশ্বর শিব মন্দির
- পাঙ্গা জমিদার বাড়ি
- ঘড়িয়ালডাঙ্গা জমিদার বাড়ী
- টুপামারী (জিয়া পুকুর)
- মুন্সিবাড়ী
- ধাম শ্রেণী মন্দির
- জালার পীরের দরগাহ
- উদুনা-পুদুনার বিল
- সোনাহাট ব্রিজ
- ফুল সাগর
- চতুর্ভূজ সেনপাড়া শিব মন্দির
- ধলডাঙ্গা বাজার
- কালজানি
- জয়মনিরহাট জমিদারবাড়ি
- আমতলা সর্ব্বজনীন গোবিন্দ ও দূর্গামন্দির,রাজারহাট
- মাধাইখাল কালী মন্দির
- সোনাহাটি স্থলবন্দর
- শিংঝাড় রেল সেতু
- সোনাহাট
- 1 চান্দামারী মসজিদ (কুড়িগ্রাম বাস স্ট্যান্ড এ নেমে অটো রিক্সা যোগে রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের কাছে গিয়ে খোঁজ করলে পাওয়া যাবে মসজিদটি)। প্রত্নতাত্ত্বিক মতে মোগল আমলের এই মসজিদটির নির্মাণকাল আনুমানিক ১৫৮৪-১৬৮০ খ্রিটাব্দের মধ্যবর্তী সময়ে। এর গায়ের নকশাগুলো মোঘল আমলের স্থাপত্য কৌশল ও শৈলীর অনন্য দৃষ্টান্ত।
- শাহী মসজিদ (কুড়িগ্রাম জেলা বাস টার্মিনালে পৌঁছার পর অটো (ইজি বাইক) যোগে রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের সামনে এসে জিজ্ঞাস করলেই পাওয়া যাবে শাহী মসজিদ।)। শাহী মসজিদ কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাট উপজেলা সদর থেকে ১ কিমি উত্তর-পূর্ব দিকে ব্যাপারীপাড়া শাহী মসজিদ অবস্থিত।মসজিদের কোন শিলালিপি নেই তবে মোগল সহাপত্য শৈলিতে নির্মিত মসজিদটি ২০০ বছরের পুরাতন বলে অনুমান করা যায়।
খাওয়া দাওয়া
[সম্পাদনা]‘সিদল ভর্তা’ এখানকার জনপ্রিয় খাবার, যা কয়েক ধরনের শুঁটকির সঙ্গে নানা ধরনের মসলা মিশিয়ে বেটে তৈরি করা হয়। এছাড়াও রয়েছে বিখ্যাত “হাড়িভাঙ্গা” আম, তামাক ও আখ। এখানে সাধারণভাবে দৈনন্দিন খাওয়া-দাওয়ার জন্য স্থানীয় হোটেল ও রেস্টুরেন্টগুলোতে সুস্বাদু খাবার পাওয়া যায়। মিষ্টি জাতীয় খাবারের মধ্যে বিখ্যাত হলো ক্ষীর লালমোহন। এছাড়াও তিস্তা নদীর বৈরাতি মাছ কুড়িগ্রামের অন্যতম জনপ্রিয় খাবার।
থাকা ও রাত্রি যাপনের স্থান
[সম্পাদনা]কুড়িগ্রামে থাকার জন্য স্থানীয় পর্যায়ের কিছু সাধারণ মানের আবাসিক হোটেল রয়েছে। এছাড়াও সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় থাকার জন্য উন্নতমানের আবাসন সুবিধা পাওয়া যায় -
- সার্কিট হাউজ, কুড়িগ্রাম, ☎ ০৫৮১-৬১ ৩০৪;
- হোটেল বসুন্ধরা, কুড়িগ্রাম, ☎ ০৫৮১-৬১ ৫০৭;
- হোটেল ডিকে, ঘোষপাড়া, কুড়িগ্রাম, মোবাইল: +৮৮০১৭১২-১২৩ ১৭১;
- হোটেল স্মৃতি, কেন্দ্রীয় বাসটর্মিনাল, কুড়িগ্রাম, মোবাইল: +৮৮০১৭১৯-০২৮ ৪১১;
- হোটেল মেহেদী, ঘোষপাড়া, কুড়িগ্রাম, মোবাইল: +৮৮০১৭১১-৩৪৮ ৯১০;
- হোটেল নিবেদিকা, আদর্শ পৌরবাজার, কুড়িগ্রাম, মোবাইল: +৮৮০১৭১৭-০৫৮ ২৯৫;
- হোটেল অর্ণব প্যালেস, কেন্দ্রীয় বাসটর্মিনাল, কুড়িগ্রাম, মোবাইল: +৮৮০১৭৪০-৫৭১ ০০৬;
- অর্নব হোটেল, কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল, কুড়িগ্রাম, মোবাইল: +৮৮০১৮১৯-০৩০ ৫২৬;
- হোটেল আরজি, ঘোষপাড়া, কুড়িগ্রাম;
- মিতা রেস্ট হাউস, সবুজপাড়া, কুড়িগ্রাম;
- টেরেটেস হোমস, সদর হাসপাতাল রোড, কুড়িগ্রাম;
- হোটেল সাগর রেস্ট হাউস, সাগর সুপার মার্কেট, কুড়িগ্রাম;
- হোটেল আকাশ, কুড়িগ্রাম।