তেঁতুলিয়া উপজেলা বাংলাদেশের একটি প্রশাসনিক এলাকা যা রংপুর বিভাগের পঞ্চগড় জেলার অন্তর্ভূক্ত। আটোয়ারী উপজেলা ২৬°২৪′ উত্তর অক্ষাংশ হতে ২৬°৩৮′ উত্তর অক্ষাংশের এবং ৮৮°২১′ পূর্ব দ্রাঘিমা হতে ৮৮°৩৩′ পূর্ব দ্রাঘিমাংশের মধ্যে অবস্থিত। ১৮৯.১২ বর্গ কিমি আয়তনের এই উপজেলাটির উত্তরে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য; দক্ষিণে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য; পূর্বে পঞ্চগড় সদর উপজেলা এবং পশ্চিমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য অবস্থিত। বাংলাদেশের সর্ব উত্তর সীমান্তে তেঁতুলিয়া উপজেলা অবস্থিত।
কীভাবে যাবেন?
[সম্পাদনা]স্থলপথে
[সম্পাদনা]সড়ক পথে ঢাকা হতে তেঁতুলিয়ার দূরত্ব ৬০০ কিলোমিটার এবং জেলা সদরের সাথে দূরত্ব ৩৮ কিলোমিটার।
সড়কপথ
[সম্পাদনা]ঢাকার গাবতলী, মহাখালী, সায়েদাবাদ, শ্যামলী, কল্যানপুর, কলাবাগান, ফকিরাপুল, আসাদগেট - প্রভৃতি বাস স্টেশন থেকে তেঁতুলিয়া আসার সরাসরি দুরপাল্লার এসি ও নন-এসি বাস সার্ভিস আছে; এগুলোতে সময় লাগে ৭.৩০ হতে ১০ ঘণ্টা। ঢাকা থেকে তেঁতুলিয়ার উদ্দেশ্যে হানিফ, নাবিল, ও শ্যামলী পরিবহন কোম্পানীর বাস আছে প্রতিদিন; এসব বাসে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত যায়। অন্যথায়, বগুড়া, রংপুর ও দশমাইল হয়ে পঞ্চগড় এসে তারপর সেখান থেকে লেগুনা, মেক্সি, সিএসজি অটোরিক্সা, বাস প্রভৃতিতে তেঁতুলিয়া যেতে হবে।
- নাবিল পরিবহন: ☎ ০২-৮১২৭৯৪৯ (আসাদ গেট), ৯০০৭০৩৬, ৮০১২১৩৬ (গাবতলী);
- বাবলু এন্টারপ্রাইজ: ☎ ০২-৮১২০৬৫৩, মোবাইল +৮৮০১৭১৬-৯৩২১২২ (শ্যামলী-রিং রোড);
- হানিফ এন্টারপ্রাইজ: ☎ ০২-৮১২৪৩৯৯, মোবাইল +৮৮০১৬৭৩-৯৫২৩৩৩ (কলেজ গেট), +৮৮০১৭১৩-৪০২৬৬১ (কল্যাণপুর), +৮৮০১৭১৩-৪০২৬৭১, +৮৮০১৭১৩-৪০২৬৩১ (আরামবাগ);
- শ্যামলী পরিবহন: ☎ ০২-৯০০৩৩১, ৮০৩৪২৭৫ (কল্যাণপুর), ৯১২৪১৩৯ (শ্যামলী)।
- ঢাকা-পঞ্চগড় রুটে সরাসরি চলাচলকারী পরিবহনে আসার ক্ষেত্রে ভাড়া হলোঃ
- এসি বাসে - ৮০০/- (রেগুলার) ও ১২০০/- (এক্সিকিউটিভ) এবং
- নন-এসি বাসে - ৩৫০/- হতে ৬০০/-।
রেলপথ
[সম্পাদনা]ঢাকার কমলাপুর রেল স্টেশন থেকে তেঁতুলিয়া আসার সরাসরি কোনো ট্রেন নেই; ট্রেনে করে ঢাকা থেকে শান্তাহার, বা, পার্বতীপুর, বা, দিনাজপুর এসে সেখান থেকে পঞ্চগড় হয়ে তেঁতুলিয়া আসতে হয়। কমলাপুর রেল স্টেশন থেকে প্রতিদিন একাধিক ট্রেন দিনাজপুরে ও শান্তাহারের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।
শান্তাহার থেকে একটি ট্রেন পঞ্চগড়ের পথে চলাচল করে; যার সময়সূচী হলোঃ
- লোকাল ট্রেন - পঞ্চগড় পৌছে রাত ১২টায় এবং পঞ্চগড় ছাড়ে সকাল ৮ টায়।
পার্বতীপুর থেকে দুটি ট্রেন পঞ্চগড়ের পথে চলাচল করে; যার সময়সূচী হলোঃ
- একতা শাটল ট্রেন - পঞ্চগড় হতে ছাড়ে রত ৮ টায় এবং পার্বতীপুর পৌঁছে রাত ১০ টা ৫৫ মিনিটে;
- দ্রুতযান শাটল ট্রেন - পার্বতীপুর হতে ছাড়ে রাত ৩টা ৩০ মিনিটে এবং পঞ্চগড় পৌঁছে সকাল ৬টা ৫৫ মিনিটে।
ট্রেন সম্পর্কিত তথ্যের জন্য যোগাযোগ করতে পারেন:
- কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন, ☎ ০২-৯৩৫৮৬৩৪,৮৩১৫৮৫৭, ৯৩৩১৮২২, মোবাইল নম্বর: +৮৮০১৭১১-৬৯১৬১২;
- বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন, ☎ ০২-৮৯২৪২৩৯;
- ওয়েবসাইট: www.railway.gov.bd।
আকাশ পথে
[সম্পাদনা]তেঁতুলিয়ায় বিমানবন্দর না-থাকায় এখানে সরাসরি আকাশ পথে আসা যায় না, তবে ঢাকা থেকে সরাসরি বিমান যোগাযোগ ব্যবস্থা রয়েছে সৈয়দপুর বিমানবন্দরের সাথে; ঢাকা থেকে সৈয়দপুর এসে সেখান থেকে সড়কপথে তেঁতুলিয়া আসা যায়। বাংলাদেশ বিমান, জেট এয়ার, নোভো এয়ার, রিজেন্ট এয়ার, ইউনাইটেড এয়ার - প্রভৃতি বিমান সংস্থার বিমান পরিষেবা রয়েছে ঢাকা থেকে সৈয়দপুর আসার জন্য।
বাংলাদেশ বিমানের একটি করে ফ্লাইট সপ্তাহে ৪ দিন ঢাকা-সৈয়দপুর ও সৈয়দপুর-ঢাকা রুটে চলাচল করে; ভাড়া লাগবে একপথে ৩,০০০/- এবং রিটার্ণ টিকিট ৬,০০০/-। সময়সূচী হলোঃ
- ঢাকা হতে সৈয়দপুর - শনি, রবি, মঙ্গল, বৃহস্পতি - দুপুর ০২ টা ২০ মিনিট।
- সৈয়দপুর হতে ঢাকা - শনি, রবি, মঙ্গল, বৃহস্পতি - দুপুর ০৩ টা ৩৫ মিনিট।
এই সম্পর্কিত তথ্যের জন্য যোগাযোগ করতে পারেন:
- ম্যানেজার, সৈয়দপুর বিমান বন্দর, মোবাইল - +৮৮০১৫৫৬-৩৮৩ ৩৪৯।
জল পথে
[সম্পাদনা]অপ্রচলিত মাধ্যম হিসাবে নৌপথ ব্যবহৃত হয়ে থাকে; তবে কেবলমাত্র স্থানীয় পর্যায় ছাড়া অন্য কোনো এলাকার সাথে, কিংবা ঢাকা থেকে বা অন্যান্য বড় শহর হতে সরাসরি কোনো নৌযান চলাচল করে না। তবে, নদীর চরাঞ্চলে যোগাযোগের একমাত্র বাহন নৌযান।
দর্শনীয় স্থান ও স্থাপনা
[সম্পাদনা]- ভদ্রেশ্বর মন্দির;
- শিবমন্দির;
- গ্রিক ভাস্কর্য রীতিতে নির্মিত দুটি সমাধিস্তম্ভ;
- তেঁতুলিয়া পিকনিক কর্ণার;
- ডাহুক বনভোজন কেন্দ্র;
- রওশনপুর আনন্দধারা ও চা বাগান;
- বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট ও স্থলবন্দর;
- ভজন পুর ও তেতুলিয়া মধ্যবর্তী বুড়াবুড়ি নামক স্থানে একটি দুর্গের ভগ্নাংশ;
- মহানন্দা নদীর তীরে দাড়িয়ে কাঞ্চনজঙ্গা পর্বত;
- তেঁতুলিয়া ডাকবাংলো;
- বোদা ময়নাগুড়ি দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৭);
- কাজী শাহাবুদ্দিন গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ (১৯৬৫);
- ভজনপুর দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৫৬);
- শালবাহান দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬২);
- তেঁতুলিয়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৫৯);
- মাঝিপাড়া দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৭৩);
- হারাদীঘি দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬৯)।
খাওয়া দাওয়া
[সম্পাদনা]‘সিদল ভর্তা’ এখানকার জনপ্রিয় খাবার, যা কয়েক ধরনের শুঁটকির সঙ্গে নানা ধরনের মসলা মিশিয়ে বেটে তৈরি করা হয়। এছাড়াও রয়েছে বিখ্যাত “হাড়িভাঙ্গা” আম, তামাক ও আখ। এখানে সাধারণভাবে দৈনন্দিন খাওয়া-দাওয়ার জন্য স্থানীয় হোটেল ও রেস্টুরেন্টগুলোতে সুস্বাদু খাবার পাওয়া যায়। স্থানীয় কিছু খাবার হলো: পেলকা শাক, সিঁদোলের ভর্তা, সজির খারিয়া, মানা কচুর বেশোয়ার, লাফা শাক, সেট শাক খাটাশাক, সীমের বেশোয়ার, ফদগই(কচু ও মিষ্ট কুমড়ার পাতা ও ডাটা দিয়ে) খরখরিয়া ভাত, মাড়ুয়া ভাত, পয়ড়ার ছাতু, জবের ছাতু, কাউনের ভাত, ঢেঁকিয়া শাক, শুক্তা (শুকনা পাট শাক ও সরিষা দিয়ে), লাউয়ের কড়কড়ি, পেননেতের ভর্তা (কচুর ফুল), মিষ্টি কুমড়ার পায়েস, আমরুলের বাঘার প্রভৃতি।
থাকা ও রাত্রি যাপনের স্থান
[সম্পাদনা]তেঁতুলিয়ায় থাকার জন্য স্থানীয় পর্যায়ের কিছু সাধারণ মানের হোটেল রয়েছে। এছাড়াও থাকার জন্য সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে উন্নতমানের কিছু হোটেল ও আবাসন রয়েছে -
- জেলা পরিষদ ডাকবাংলো, উপজেলা চত্ত্বর, তেঁতুলিয়া।
- জেলা পরিষদ ডাকবাংলো, বাংলাবান্ধা, তেঁতুলিয়া।
- কাজী ব্রাদার্স আবাসিক হোটেল, বিহারী পাড়া রোড, তেঁতুলিয়া।
- সীমান্তের পাড় হোটেল, কলোনীপাড়া, তেঁতুলিয়া।
- আরডিআরএস, তেঁতুলিয়া।
জরুরি নম্বরসমূহ
[সম্পাদনা]- জননিরাপত্তা সম্পর্কিত যোগাযোগের জন্য
- ওসি তেঁতুলিয়া: +৮৮০১৭১৩-৩৭৪ ০০২;
- ওসি পঞ্চগড়: +৮৮০১৭১৩-৩৭৩ ৯৯৯।