বান্দরবান বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিভাগের বান্দরবান জেলার একটি উল্লেখযোগ্য শহর।
কীভাবে যাবেন?
[সম্পাদনা]আকাশপথ
[সম্পাদনা]ঢাকা থেকে বান্দরবান এর সরাসরি বিমান যোগাযোগ নেই। প্রথমে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম গিয়ে সেখান থেকে পূরবী বা পূর্বাণী বাস যোগে বান্দরবান যাওয়া যায়। বিমান, নভোএয়ার, ইউএসবাংলা এয়ারওয়েজের একাধিক ফ্লাইট প্রতিদিন ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে চলাচল করে।
সড়কপথ
[সম্পাদনা]বান্দরবান যাওয়ার সবচেয়ে সহজ উপায় হলো বাস। ঢাকা থেকে বাসে বান্দরবান বাসে যেতে সাধারণত ৬ঘণ্টা - ১০ঘণ্টা সময় লাগে। নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থা অথবা গাড়ি ভাড়া করেও বান্দরবান যাওয়া সম্ভব। এছাড়া ঢাকা থেকে ট্রেনযোগে চট্টগ্রাম গিয়ে সেখানে থেকে বাসে করেও বান্দরবান যাওয়া যায়। এছাড়াও রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি এবং কক্সবাজার থেকেও বান্দরবান যাওয়া যায়।
বহদ্দারহাট টার্মিনাল থেকে পূরবী এবং পূর্বাণী নামক দুটি নন এসি বাস আছে ১ ঘণ্টা পর পর সরাসরি বান্দরবানের উদ্দ্যেশে ছেড়ে যায়। ভাড়া জনপ্রতি ৯০ টাকা। প্রতিদিন ভোর ৬ টা থেকে শুরু করে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত প্রতি ১ ঘণ্টা পর পর এই পরিবহনের বাসগুলো চট্টগ্রাম-বান্দরবান-চট্টগ্রাম রুটে যাতায়াত করে।
এখানকার সড়কপথে সংযোগগুলো হচ্ছে চিম্বুক - রুমা, বান্দরবান - রোয়াংছড়ি - রুমা, আজিজনগর - গজালিয়া - লামা, খানহাট - ধোপাছড়ি - বান্দরবান, বান্দরবান - চিম্বুক - থানচি - আলীকদম - বাইশারী - ঘুনধুম এবং চিম্বুক - টঙ্কাবতী - বারো আউলিয়া।
ঢাকা থেকে সরাসরি বান্দরবান রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা নেই। ঢাকা থেকে প্রথমে চট্টগ্রাম তারপর সেখান থেকে পূরবী বা পূবার্নী বাসযোগ সরাসরি বান্দরবান যাওয়া যায়।
নৌপথ
[সম্পাদনা]এখানে কোন আন্তঃজেলা নৌ যোগাযোগ নেই।
দর্শনীয় স্থান
[সম্পাদনা]- 1 বুদ্ধ ধাতু জাদি (স্বর্ণ মন্দির)। বান্দরবন শহর থেকে চার কিলোমিটার দূরে বালাঘাটায় অবস্থিত বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ বৌদ্ধ মন্দির। স্থানীয়ভাবে স্বর্ণমন্দির নামে পরিচিত। এটি স্বর্ণমন্দির নামে পরিচিত পেলেও এটি স্বর্ণ নির্মিত নয়। মূলত সোনালী রঙের জন্যেই এটির নাম হয়েছে স্বর্ণমন্দির। এই থেরাবেড়া বৌদ্ধমন্দিরটি ৬০ মিটার উঁচু পর্বতের শীর্ষদেশে অবস্থিত। মন্দিরটি দক্ষিণপূর্ব এশীয় স্থাপত্যশৈলীতে তৈরী করা হয়েছে এবং এখানে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্ববৃহৎ বৌদ্ধ মূর্তিটি আছে। সন্ধ্যা ছয়টার পরে মন্দিরে সাধারণ দর্শনার্থীদের প্রবেশ নিষেধ। মন্দির চত্ত্বরে শর্টপ্যান্ট, লুঙ্গি এবং জুতা পায়ে প্রবেশ নিষিদ্ধ। পাহাড়ের চূড়ায় দেবতাপুকুর নামে একটি লেক আছে।
- 2 চিম্বুক পাহাড়। বান্দরবন শহর থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে বাংলাদেশের অন্যতম উঁচূ শৃঙ্গ চিম্বুক পাহাড় অবস্থিত। চিম্বুক পাহাড়ের পাদদেশে বম নৃগোষ্ঠীর গ্রাম দেখতে পাওয়া যায়। অল্প কিছুদূরে ম্রোদের গ্রাম অবস্থিত। শহর থেকে এক দিনেই চিম্বুক পাহাড় এবং বম ও ম্রো গ্রাম ঘুরে আসা সম্ভব।
- 3 বগালেক (বগাকাইন লেক)। ছোট ছোট গ্রাম এবং পাহাড়কে পাশ কাটিয়ে বয়ে চলেছে নান্দনিক এই জলাশয়টি। বগালেক বাংলাদেশের সব থেকে সৌন্দর্যময় প্রাকৃতিক লেক। বান্দরবনের রুমা সদর উপজেলা থেকে ১৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩০০০ কিলোমিটার উচ্চতায় অবস্থিত লেকটির আয়তন ১৫ একর। লেকের নীল পানি পর্যটকদের মুগ্ধ করে। লেকটির তৈরী হওয়ার পিছনে অনেক লোকগল্প প্রচলিত আছে। শীত মৌসুমে বগালেকে পর্যটকের ভিড় উপচে পড়ে। বর্ষাকালে বগালেক এলাকায় ভ্রমণ কঠিন হয়ে পড়ে। বগালেকের আশপাশে বম এবং খুমি নৃগোষ্ঠীর লোক বাস করে।
- 4 নীলগিরি (নীলগিরি পর্যটন কেন্দ্র)। নীলগিরি অন্যতম উঁচু পাহাড় এবং বাংলাদেশ সৌন্দর্য্যময় পর্যটন স্পট। বান্দরবন শহর থেকে ৪৬ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে এখানে একটি রিসোর্ট আছে। সেনা কর্মকর্তাদের সহায়তায় এখানে বুকিং সম্পন্ন করতে হয়। এখানে রেস্তোরাঁ, হেলিপ্যাড, সুসজ্জিত কটেজ ইত্যাদির ব্যবস্থা আছে। বিদেশি পর্যটকগনের এখানে অবস্থানের উপর নিষেধাজ্ঞা আছে।
- শৈলপ্রপাত: বান্দরবন থেকে ৪ কিলোমিটার দূরে থানচি যাওয়ার পথে মিলনছড়ি নামক স্থানে চমৎকার এই জলপ্রপাতটি অবস্থিত। বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন এটার রক্ষণাবেক্ষনের দ্বায়িত্বে আছে।
- মেঘলা এবং নীলাচল: বান্দরবন থেকে ৪ কিলোমিটার দূরে কেরানিহাট যাওয়ার পথে মেঘলা পর্যটন স্পট অবস্থিত। এখানে একটি মিনি সাফারী পার্ক, চিড়িয়াখানা এবং ঝুলন্ত সেতু আছে। জেলা প্রশাসন মেঘলার কাছে টাইগারপাড়ায় নীলাচল নামে পর্যটন স্পট গড়ে তুলেছে।
- রাজবিহার এবং উজানিপাড়া বিহার: স্থানীয়ভাবে বৌদ্ধ মন্দিরসমূহ কিয়াং এবং বিহার নামে পরিচিত। জাদিপাড়ায় অবস্থিত রাজবিহার খুবই সুপরিচিত। উজানিপাড়ায় অবস্থিত উজানিপাড়া বিহারটিও উল্লেখযোগ্য দর্শনীয় স্থান।
- অন্যান্য স্থান: থানচি, প্রান্তিক লেক, জীবননগর এবং কিয়াচলং লেক।
খাওয়া দাওয়া
[সম্পাদনা]বান্দরবান শহরে বেশ কিছু বাঙালি এবং আদিবাসী খাবারের হোটেল আছে।