বিষয়বস্তুতে চলুন

উইকিভ্রমণ থেকে

মীরসরাই বাংলাদেশের চট্টগ্রাম জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা। একে চট্টগ্রাম এর প্রবেশদ্বার বলা যায়। মুহুরি নদী ফেনী এবং নোয়াখালী জেলা থেকে এটিকে আলাদা করেছে। এর পূর্বে ফটিকছড়ি উপজেলা; দক্ষিণে সীতাকুণ্ড উপজেলা; পশ্চিমে সন্দ্বীপ চ্যানেল ও সন্দ্বীপ উপজেলা, নোয়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা, ফেনী জেলার সোনাগাজী উপজেলা এবং উত্তরে ফেনী জেলার ফেনী সদর উপজেলা, ছাগলনাইয়া উপজেলা ও ভারতের ত্রিপুরা প্রদেশ অবস্থিত।

জানুন

[সম্পাদনা]

চট্টগ্রাম শহর থেকে প্রায় ৬০ কিলোমিটার উত্তরে ২২°৩৯´ থেকে ২২°৫৯´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১°২৭´ থেকে ৯১°৩৯´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ জুড়ে অবস্থিত মীরসরাই উপজেলার আয়তন ৪৮২.৮৮ বর্গ কিলোমিটার। মীরসরাই থানা গঠিত হয় ১৯১৭ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে। মীরসরাই উপজেলায় বর্তমানে ২টি থানার অধীনে মোট ২টি পৌরসভা ও ১৬টি ইউনিয়ন রয়েছে। ২০১১ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী মীরসরাই উপজেলার জনসংখ্যা ৩,৬৮,৯৫০ জন, এর মধ্যে ৮৫% মুসলিম, ১৩% হিন্দু এবং ২% বৌদ্ধ ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বী।

বর্তমান মীরসরাই এলাকায় মোগল আমলে একটি সামরিক ঘাঁটি ছিল। ঘাঁটিটি মেহমান সরাই নামে পরিচিত ছিল, সেখানে মীর সাহেব নামে এক মুসলিম সৈনিক মারা যায়। তার নামে এই থানার নামকরণ মীরের সরাই বা মীরসরাই করা হয়েছে বলে ধারণা করা হয়।

প্রবেশ

[সম্পাদনা]

আকাশপথে

[সম্পাদনা]

মীরসরাই উপজেলায় কোনো বিমানবন্দর নেই। তবে উপজেলা থেকে প্রায় ৬০ কিলোমিটার দূরে চট্টগ্রাম শহরে রয়েছে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ব্যস্ততম বিমানবন্দর শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। অভ্যন্তরীণ সেবার মধ্যে ঢাকা, সিলেট, কক্সবাজারের সঙ্গে বিভিন্ন দৈনিক ফ্লাইট রয়েছে। চট্টগ্রাম শহর পর্যন্ত আকামপথে এসে বাকিটা সড়কপথে মিরসরাই আসা যায়।

রেলপথে

[সম্পাদনা]

চট্টগ্রাম শহরের বটতলী রেলস্টেশন থেকে রেলযোগেও মীরসরাই যাওয়া যায়। এ উপজেলায় ৫টি রেলস্টেশন রয়েছে। সেগুলো হল নিজামপুর, মাস্তাননগর, মুহুরীগঞ্জ, চিনকি আস্তানা ও ফজিলপুর।

সড়কপথে

[সম্পাদনা]

চট্টগ্রাম শহরের অলংকার মোড় এলাকা থেকে ঢাকা ট্রাঙ্ক রোড হয়ে বাস বা সিএনজি চালিত অটোরিক্সা যোগে মীরসরাই আসা যায়।

দেখুন

[সম্পাদনা]
  • মহামায়া লেক
  • খৈয়াছড়া ঝর্ণা
  • নাপিত্তাছড়া ঝর্ণা
  • সহস্রধারা ঝর্ণা
  • উপকূলীয় বনাঞ্চল
  • মুহুরী সেচ প্রকল্প
  • করেরহাট বনাঞ্চল
  • বাওয়াছড়া সেচ প্রকল্প
  • মেলখুম ট্রেইল, জোরারগঞ্জ ইউনিয়ন (সোনাপাহাড়ের নাহার এগ্রো থেকে পূর্বদিকের রাস্তা ধরে ৫ মিনিট হাঁটলে রেললাইন পাওয়া যাবে। রেললাইন পার হওয়ার পর মাটির রাস্তা ধরে ১৫-২০ মিনিট হাঁটলে একটি কালভার্ট দেখা যাবে। কালভার্টের ডানদিকে একটি পাথরবিহীন সরু ঝিরি রয়েছে। ঝিরি হতে উজানের দিকে ৪৫-৫০ মিনিট হাঁটলে মেলখুম ট্রেইল দেখা যাবে।)। মেলখুমের প্রবেশপথের দুই পাশে প্রায় ১০০ থেকে ২০০ ফুট খাড়া উঁচু পাহাড় আড়াআড়িভাবে দাঁড়িয়ে আছে। পাহাড়ের মাঝখানে রয়েছে সরু পিচ্ছিলপথ। চলার পথটি খুব সরু হওয়ায় ভিতরে সূর্যের আলো প্রবেশ করতে পারে না। ফলে দিনের বেলায়ও কূপটি ঘন অন্ধকার হয়ে থাকে। এছাড়া, কূপের কিছু কিছু জায়গায় গভীরতা খুব বেশি হওয়ায় এটি ভয়ানক দেখায়। সাঁতার না জানলে ও শ্বাসকষ্ট বা ঠান্ডাজনিত সমস্যা থাকলে মেলখুমে না যাওয়া উচিত। কারণ খুমের পানি অনেক ঠান্ডা। এছাড়া, জায়গাটি মোবাইল নেটওয়ার্কের আওতাভুক্ত নয়। ২০২৩ সালের ১৪ মার্চ ও ২৪ এপ্রিল মেলখুমে ঘুরতে এসে ১৩ জন পর্যটক আটকা পড়ে। পরে জোরারগঞ্জ থানা পুলিশ দীর্ঘ আট ঘণ্টা অভিযানের পর তাদের উদ্ধার করে। উইকিপিডিয়ায় মেলখুম ট্রেইল (Q123556834)
  • ছুটি খাঁ মসজিদ, জোরারগঞ্জ ইউনিয়ন একটি ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন মসজিদ। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ঐতিহাসিক স্থাপনাটি ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়ে যাওয়ায় পুরাতন স্থাপনার উপরে আরেকটি একতলাবিশিষ্ট মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে। তবে প্রাচীন নিদর্শন ও শিলালিপিগুলো এখনও বিদ্যমান রয়েছে। এতে প্রায় ৭৫০ জন মুসল্লি একসাথে নামাজ আদায় করতে পারে। উইকিপিডিয়ায় ছুটি খাঁ জামে মসজিদ (Q123717230)

কোথায় থাকবেন

[সম্পাদনা]

মীরসরাইয়ে থাকার জন্য সরকারি পরিচালনাধীন উপজেলা পরিষদ ডাক বাংলো ছাড়াও ব্যক্তি মালিকানাধীন সুলভ মূল্যে থাকার মত হোটেল রয়েছে।

খাওয়া দাওয়া

[সম্পাদনা]

মীরসরাই পৌরসভা ও বারৈয়ারহাট পৌরসভা এলাকায় যে কোন রেস্টুরেন্টে সুলভ মূল্যে খাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে।