কাপ্তাই বাংলাদেশের রাঙ্গামাটি জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা।
জানুন
[সম্পাদনা]চট্টগ্রাম বিভাগীয় সদর থেকে প্রায় ৫৫ কিলোমিটার পূর্বে এবং রাঙ্গামাটি জেলা সদর থেকে প্রায় ২৭ কিলোমিটার দক্ষিণে ২২°২১´ থেকে ২২°৩৫´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯২°০৫´ থেকে ৯২°১৮´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ জুড়ে অবস্থিত কাপ্তাই উপজেলার আয়তন ২৫৯ বর্গ কিলোমিটার। ১৯৭৬ সালে কাপ্তাই থানা গঠিত হয় এবং ১৯৮৩ সালে থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয়। এ উপজেলায় বর্তমানে ৫টি ইউনিয়ন রয়েছে।
নামকরণ
[সম্পাদনা]কাপ্তাই উপজেলার নামকরণে কত্থয় ও কিয়ং শব্দদ্বয়ের প্রভাব রয়েছে বলে অনেকের ধারণা। কত্থয় অর্থ কোমর আর কিয়ং অর্থ খাল।
জনসংখ্যা
[সম্পাদনা]২০১১ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী কাপ্তাই উপজেলার জনসংখ্যা ৬৬,১৩৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৩৬,৬৭৭ জন এবং মহিলা ২৯,৪৫৮ জন। মোট জনসংখ্যার ৬২.৭৮% মুসলিম, ৫.৯৫% হিন্দু, ৩০.৪৯% বৌদ্ধ এবং ০.৭৮% খ্রিস্টান ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বী রয়েছে। এ উপজেলায় চাকমা, মারমা, তঞ্চঙ্গ্যা, ত্রিপুরা, মুরং, খিয়াং, পাংখোয়া প্রভৃতি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।
কীভাবে যাবেন
[সম্পাদনা]সড়কপথে
[সম্পাদনা]চট্টগ্রাম শহরের বহদ্দারহাট বাস টার্মিনাল থেকে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই বাস যোগে কাপ্তাই যাওয়া যায়। এছাড়া রাঙ্গামাটি-কাপ্তাই সড়ক হয়ে রাঙ্গামাটি জেলা শহর থেকে বাস বা সিএনজি চালিত অটোরিক্সা যোগে কাপ্তাই যাওয়া যায়।
নৌপথে
[সম্পাদনা]নৌপথে ভ্রমণ পিয়াসুরা ইচ্ছে করলে নৌপথেও কাপ্তাই যেতে পারেন। সেক্ষেত্রে চট্টগ্রাম শহরের কালুরঘাট এলাকা থেকে রিজার্ভ স্পীডবোট ভাড়া করতে হবে।
দর্শনীয় স্থান
[সম্পাদনা]- 1 কাপ্তাই হ্রদ। বাংলাদেশের বৃহত্তম কৃত্রিম এ হ্রদ রাঙ্গামাটি জেলার রাঙ্গামাটি সদর, কাপ্তাই, বিলাইছড়ি, জুরাছড়ি, বরকল, বাঘাইছড়ি, লংগদু ও নানিয়ারচর উপজেলা জুড়ে বিস্তৃত।
- 2 কর্ণফুলি কাগজ কল। চন্দ্রঘোনায় কর্ণফুলি নদীর তীরে অবস্থিত এ কাগজ কলটি বাংলাদেশের বৃহত্তম কাগজ কল।
- 3 কাপ্তাই বাঁধ। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৬টা পর্যন্ত। কর্ণফুলি নদীকে ঘিরে সৃষ্ট কৃত্রিম কাপ্তাই হ্রদের উপর নির্মিত একটি বাঁধ। ১৯৬২ খ্রিস্টাব্দে নির্মিত বাংলাদেশের বৃহত্তম এ বাঁধটির মাধ্যমে একমাত্র জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হয়।
- 4 কাপ্তাই জাতীয় উদ্যান। ১৯৯৯ খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশ বন ও পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক ৫,৪৬৪ হেক্টর জায়গা জুড়ে প্রতিষ্ঠিত হয়।
- 5 কর্ণফুলি পানিবিদ্যুৎ কেন্দ্র। ১৯৬২ খ্রিস্টাব্দে নির্মিত বাংলাদেশের বৃহত্তম কাপ্তাই বাঁধের মাধ্যমে একমাত্র জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হয়। কাপ্তাই বিপিডিবি রিসিভশন গেইট হতে অনুমতি নিয়ে স্পিলওয়ে দেখতে যেতে হবে।
- 6 বাংলাদেশ সুইডেন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট। কাপ্তাই হ্রদের তীরে অবস্থিত। এটি বাংলাদেশের একটি পুরাতন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের মধ্যে অন্যতম।
- 7 বানৌজা শহীদ মোয়াজ্জম পিকনিক স্পট। কাপ্তাই হ্রদের তীরে অবস্থিত এ পিকনিক স্পটটি নৌবাহিনী দ্বারা নিয়ন্ত্রিত।
- 8 প্যানোরমা জুম রেস্তোরা পিকনিক স্পট। চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়ক সংলগ্ন কর্ণফুলি নদীর তীরে অবস্থিত।
- গিরিনন্দিনী পিকনিক স্পট চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়ক সংলগ্ন শিলছড়ি ৫, আনসার ব্যাটালিয়ান কর্তৃক পরিচালিত একটি বিনোদন পার্ক।
- ওয়াজ্ঞাছড়া টি এস্টেট বড়ইছড়িস্থ কাপ্তাই উপজেলা হেড অফিসের বিপরীতে কর্ণফুলি নদীর দক্ষিণ পাড়ে অবস্থিত।
- 9 চিৎমরম বৌদ্ধ মন্দির। চিৎমরম ইউনিয়নে অবস্থিত।
- 10 বনশ্রী পর্যটন কমপ্লেক্স। চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়ক সংলগ্ন ওয়াজ্ঞাছড়ায় অবস্থিত।
- লেক ভিউ পিকনিক কর্নার চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়ক সংলগ্ন কাপ্তাই বাংলাদেশ বনশিল্প উন্নয়ন কর্পোরেশনে অবস্থিত।
কোথায় থাকবেন
[সম্পাদনা]কাপ্তাইয়ে থাকার জন্য সরকারি পরিচালনাধীন উপজেলা পরিষদ ডাক বাংলো ছাড়াও কাপ্তাই, বড়ইছড়ি, চন্দ্রঘোনা এলাকায় ব্যক্তি মালিকানাধীন সুলভ মূল্যে থাকার মত হোটেল রয়েছে।
খাওয়া দাওয়া
[সম্পাদনা]কাপ্তাইয়ের কাপ্তাই নতুন বাজার, বড়ইছড়ি, চন্দ্রঘোনা ইত্যাদি এলাকায় যে কোন রেস্টুরেন্টে সুলভ মূল্যে খাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে।