উইকিভ্রমণ থেকে

থানচি বাংলাদেশের বান্দরবান জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা। এই উপজেলায় পর্যটকদের দেখার মত অনেক পর্যটন স্পট রয়েছে।

জানুন[সম্পাদনা]

বান্দরবান জেলা সদর থেকে প্রায় ৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে ২১°১৫´ থেকে ২১°৫৭´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯২°২০´ থেকে ৯২°৪১´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ জুড়ে অবস্থিত থানচি উপজেলার আয়তন ১০২০.৮২ বর্গ কিলোমিটার। ১৯৭৬ সালে থানচি থানা গঠিত হয় এবং ১৯৮৩ সালে থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয়। এ উপজেলায় বর্তমানে ৪টি ইউনিয়ন রয়েছে।

নামকরণ[সম্পাদনা]

মার্মা শব্দ থাইন চৈ বা বিশ্রামের স্থান থেকে থানচি নামটির উৎপত্তি। ধারণা করা হয়, ১৯৫০ সালে বা তার পূর্বে নৌপথে চলাচল কালে যাত্রীগণ বিশ্রামের জন্য এ স্থানে থামতেন বলে থাইন চৈ নামে স্থানটি পরিচিত ছিল, পরে তা থানচি হিসাবে পরিচিতি লাভ করে।

জনসংখ্যা[সম্পাদনা]

২০১১ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী থানচি উপজেলার জনসংখ্যা ২৭,৫৮৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১৫,৩৪১ জন এবং মহিলা ১২,২৪৫ জন। মোট জনসংখ্যার ৭.৬৫% মুসলিম, ২.২৬% হিন্দু, ৫৪.৬৮% বৌদ্ধ, ২৬.৭৫% খ্রিস্টান এবং ৮.৬৬% অন্যান্য ধর্মাবলম্বী। এ উপজেলায় মার্মা, চাকমা, খেয়াং, ত্রিপুরা, খুমী, খিও, ম্রো ও বম উপজাতি গোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।

কীভাবে যাবেন[সম্পাদনা]

ঢাকা বা চট্টগ্রাম থেকে সড়কপথে থানচি যাওয়ার জন্য প্রথমে চট্টগ্রাম-বান্দরবান মহাসড়ক হয়ে বান্দরবান যেতে হবে। এরপর বান্দরবান সদর থেকে সরাসরি পূর্বাণী চেয়ারকোচ বা জীপগাড়ি যোগে থানচি যেতে পারেন।

এছাড়া কক্সবাজার থেকে যেতে চাইলে প্রথমে কক্সবাজার থেকে বাসে করে চকরিয়া যেতে হবে। সেখান থেকে বাসে বা জিপে করে আলীকদম যেতে হবে। আলিকদম থেকে জিপ, সিএনজি চালিত অটো রিক্সা বা মোটরসাইকেলে করে থানচি যাওয়া যায়।

দর্শনীয় স্থান[সম্পাদনা]

মানচিত্র
থানচি উপজেলার মানচিত্র
  • নাফাখুম জলপ্রপাত (থানচি উপজেলার রেমাক্রি ইউনিয়নে অবস্থিত)। এ জলপ্রপাতটি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জলপ্রপাত।
  • সাকা হাফং (ত্ল্যাংময়) (বাংলাদেশ-মায়ানমার সীমান্তে চূড়াটি অবস্থিত)। এটিকে অনেক সময় বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বিন্দু হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এর উচ্চতা ১,০৫২ মিটার (৩,৪৫১ ফুট)। এটি বম ভাষায় ত্ল্যাংময় নামেও পরিচিত। আনুষ্ঠানিকভাবে এটিকে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ চূড়া হিসেবে ঘোষণা করা না হলেও সাম্প্রতিক তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে বলা যায়, সম্ভবত এর চেয়ে বেশি উচ্চতার আর কোন চূড়া বাংলাদেশে নেই।
  • আমিয়াখুম জলপ্রপাত বাংলাদেশ-মায়ানমার সীমান্তের পাশে অবস্থিত আমিয়াখুম জলপ্রপাতকে দেখা হচ্ছে বাংলার ভূস্বর্গ হিসেবে। কারো কারো মতে, এটা বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর জলপ্রপাত। এর অবস্থান বান্দরবানের থানচি উপজেলার দুর্গম নাক্ষিয়ং নামক স্থানে।
  • রাজা পাথর তিন্দু ইউনিয়নে অবস্থিত। আদিবাসীরা মনে করে, রাজা পাথর এখনো জাগ্রত। কেউ এই পাথরকে অসম্মান করলে রাজা ক্ষিপ্ত হন এবং তাকে মেরে ফেলেন।
  • বাকলাই জলপ্রপাত থানচি উপজেলার নাইটিং মৌজার বাকলাই গ্রামে অবস্থিত একটি জলপ্রপাত। জলপ্রপাতটি প্রায় ৩৮০ ফুট উঁচু।
  • ছোট পাথর তিন্দু ইউনিয়নে অবস্থিত।

থাকার ব্যবস্থা[সম্পাদনা]

থানচিতে পার্বত্য জেলা পরিষদের নিয়ন্ত্রিত একটি রেস্টহাউস রয়েছে। এছাড়া বলিপাড়া বাজারে পার্বত্য জেলা পরিষদের একটি রেস্ট হাউস ও বেসরকারি সংস্থার ২টি রেস্ট হাউস আছে যাতে সীমিত আকারে আবাসনের ব্যবস্থা আছে।

খাওয়া দাওয়া[সম্পাদনা]

থানচি উপজেলা সদরের বাজারে বেশ কয়েকটি সাধারণ মানের খাবার হোটেল রয়েছে। এছাড়া বলিপাড়া বাজারে বেশ কিছু সংখ্যক খাবার হোটেল আছে।

  • 1 টং মা হাং, দি হোটেল ডিসকভারি থানচি, +৮৮০ ১৮৮০ ০০৬৩৫৮পাহাড়ী, বাঙালি ও চাইনিজ খাবার

কেনাকাটা[সম্পাদনা]

থানচি বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস পাওয়া যায়। এছাড়া পর্যটকদের জন্য অত্যাবশ্যকীয় জিনিসও এই বাজারে পাওয়া যায়।