উইকিভ্রমণ থেকে

মধুটিলা ইকোপার্ক বাংলাদেশের একটি দর্শনীয় স্থান, যা শেরপুর জেলার অন্তর্গত। এটি দেশের মধ্য উত্তর অঞ্চলে স্থাপিত যা বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা থেকে প্রায় ২০০ কিঃ মিঃ দক্ষিণ দিকে এটির অবস্থান।

বিশেষত্ব[সম্পাদনা]

ঢাকা থেকে ২০০ কিলোমিটার দূরে শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলার ভারত সীমান্তবর্তী ইউনিয়ন পোড়াগাও এ এই ইকোপার্কটি মূলত গারো পাহাড় ও সংলগ্ন এলাকা জুড়ে ১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়।

এখানে আছে বিভিন্ন প্রজাতির ঔষধি ও সৌন্দর্যবর্ধক গাছ। এছাড়াও আছে মৌসুমি ফুলসহ বিভিন্ন রঙের গোলাপের বাগান। বৃক্ষ, লতা ও গুল্মের মধ্যে শাল, সেগুন, কাঠাল, মেহগনি, চম্পা, কড়ই, বাশ প্রধান।

পার্কটিতে জীববৈচিত্র্য ও প্রাণীর সমাহারও চোখে পড়ার মতো; বিভিন্ন প্রজাতির বানর, সাপ, বেজি, পাখি রয়েছে এখানে। মাঝে মাঝে দেখা মেলে হাতিরও।

এখানে প্রাকৃতিক লেক রয়েছে। আছে মিনি চিড়িয়াখানা ও শিশু পার্ক। ওয়াচ টাওয়ারে উঠে দেখা যায় বহুদূর পর্যন্ত প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য।

কীভাবে যাবেন[সম্পাদনা]

সড়ক পথে ঢাকা হতে শেরপুরের দূরত্ব ২০৩ কিলোমিটার ও মধুটিলা ইকোপার্কের দূরত্ব প্রায় ২২৫ কিলোমিটার। সড়কপথে এখানে আসা সবচেয়ে সহজ - ঢাকার মহাখালি বাস স্টেশন থেকে শেরপুরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা দুরপাল্লার বাসে শেরপুর ও নালিতাবাড়ী আসা যায়। সেখান থেকে অটোরিকশা, মোটরসাইকেলে ২০-২৫ মিনিটে মধুটিলায় যাওয়া যায়।

শেরপুর বা নালিতাবাড়ীতে সরাসরি ট্রেনে আসা যায় না। ঢাকার কমলাপুর রেল স্টেশন থেকে জামালপুরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা যেকোন ট্রেনে জামালপুর পর্যন্ত এসে সেখান থেকে সিএনজি অথবা বাস যোগে শেরপুর বা নালিতাবাড়ী আসতে হবে।

এই শহরটিতে বিমানে চলাচলের কোনো ব্যবস্থা এখনো তৈরি হয় নি বলে আকাশ পথে এখানে আসা যায় না। আবার, গভীর নাব্যতা বিশিষ্ট নদী না থাকায় অপ্রচলিত মাধ্যম হিসাবে নৌপথ ব্যবহৃত হলেও ঢাকা থেকে বা আন্তঃজেলা সরাসরি কোনো নৌযান চলাচল করে না।

কী দেখবেন[সম্পাদনা]

মধুটিলা ইকোপার্ক একটি পরিবেশ-উদ্যান। এখানকার সাইটভিট টাওয়ার থেকে দূরের দৃশ্য দেখে আবিভূত হতে পারবেন। লেক প্যাডেল বোটে চড়ে বেড়ানোর পাশাপাশি স্টার ব্রিজে ঘুরে বেড়ানোও যায়। শিশুদের মনোরঞ্জনের জন্যে রয়েছে মিনি চিড়িয়াখানা ও শিশুপার্ক। বিশ্রামের জন্যে থাকা রেস্টহাউসে কাটাতে পারেন শান্ত-সমাহিত চাদনী রাত। মৌসুমি ফুলসহ বিভিন্ন রঙের গোলাপের বাগানও আপনাকে চমত্‌কৃত করবে।

ঘুরে দেখুন[সম্পাদনা]

নিকটবর্তী দর্শনীয় স্থানগুলো ঘুরে বেড়াতে পারেন; এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্যগুলো হলো -

  • রাবার ড্যাম;
  • ভোগাই নদীর তীর;
  • বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা) উপকেন্দ্র।

কোথায় থাকবেন[সম্পাদনা]

নালিতাবাড়ীতে বা শেরপুরে থাকার জন্য স্থানীয় পর্যায়ের কিছু সাধারণ মানের হোটেল রয়েছে। এছাড়াও সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় থাকার জন্যে রয়েছে উন্নতমানের -

  • জেলা পরিষদ ডাকবাংলো - নালিতাবাড়ী;
  • হোটেল সম্পদ প্লাজা (আবাসিক) : ☎ ০৯৩১-৬১৭৭৬;
  • কাকলি গেস্ট হাউজ (আবাসিক) : ☎ ০৯৩১-৬১২০৬;
  • বর্ণালি গেস্ট হাউজ (আবাসিক) : ☎ ০৯৩১-৬১৫৭৫;
  • আরাফাত গেস্ট হাউজ (আবাসিক) : ☎ ০৯৩১-৬১২১৭;
  • শাহী খানা খাজানা (আবাসিক) : ☎ ০৯৩১-৬১৬৪৭;
  • হোটেল শাহজাহান (আবাসিক) : মোবাইল: ০১৯১১৪১১৭৭১।

কী খাবেন[সম্পাদনা]

শেরপুরে স্থানীয় পর্যায়ের বিশেষ কোনো বিখ্যাত খাদ্য নেই, কেবল রসগোল্লা ব্যতীত। এখানে সাধারণভাবে দৈনন্দিন খাওয়া-দাওয়ার জন্য স্থানীয় হোটেল ও রেস্টুরেন্টগুলোতে সুস্বাদু খাবার পাওয়া যায়।

সতর্কতা[সম্পাদনা]

যেকোনো সমস্যায় যোগাযোগ করতে পারেন -

  • শেরপুর পৌরসভা কার্যালয়: ☎ ০৯৩১-৬১৩৬৮, ৬১২১০, ৬১১৩৮; মোবাইল: ০১৭১২০০৪১৮৪।