উইকিভ্রমণ থেকে

রাঙ্গামাটি বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিভাগের রাঙ্গামাটি জেলার একটি উল্লেখযোগ্য শহর।

জানুন[সম্পাদনা]

চট্টগ্রাম বিভাগের পূর্বাংশে এটির অবস্থান। চট্টগ্রাম শহরের পূর্বদিকে মাত্র ৭৭ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ছোট্ট পাহাড়ী শহর রাঙামাটি। এখানকার বেশিরভাগ মানুষই উপজাতি।

কীভাবে যাবেন?[সম্পাদনা]

স্থলপথে[সম্পাদনা]

চট্টগ্রাম থেকে রাঙ্গামাটিতে বাস যোগে আসা যায়। রাঙ্গামাটিতে যাওয়ার সরাসরি দুইটি বাস আছে। একটি হলো পাহাড়িকা যা চট্টগ্রাম থেকে সকাল ৮.০০টা থেকে রাত ৮.০০টা পর্যন্ত এবং রাঙ্গামাটি হতে সকাল ৮.০০টা থেকে রাত ৮.৩০মিনিট পর্যন্ত চলাচল করে। এই বাস সার্ভিসটি প্রতি ১ ঘণ্টা অন্তর অন্তর স্টেশন থেকে ছেড়ে যায় এবং গন্তব্যে পৌঁছাতে প্রায় ৩ ঘণ্টা সময় নেয়। পাহাড়িকা বাস সার্ভিসের টিকিটের মূল্য ১৫০ টাকা এবং টিকিট মুরাদপুর ও অক্সিজেন মোড় থেকে সংগ্রহ করা যায়। আরেকটি বাস সার্ভিস হচ্ছে বিআরটিসি বাস সার্ভিস, যা রাঙামাটির একমাত্র শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাস সার্ভিস। এই বাসের টিকিটের ভাড়া ১৫০ টাকা এবং টিকিট চট্টগ্রামস্থ বটতলী রেলওয়ে স্টেশনের বিআরটিসি কাউন্টার থেকে সংগ্রহ করা যাবে। এছাড়া অনেক ধরনের লোকাল বাস সার্ভিসের ব্যবস্থা রয়েছে, তবে সেসব বাস সার্ভিস রাস্তার যেকোন জায়গা থেকে যাত্রী উঠানামা করায়, ফলে বাসে সবসময় যাত্রীদের ভিড় লেগে থাকে এবং গন্তব্যে ৪-৫ ঘণ্টা সময় ব্যয় হয়। রাজধানী ঢাকা থেকেও রাঙ্গামাটি যাওয়ার কিছু বাস সার্ভিস রয়েছে। এই বাস সার্ভিসগুলো শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত নয়। এছাড়াও আশেপাশের জেলাগুলোতেও কিছু লোকাল বাস সার্ভিসের ব্যবস্থা রয়েছে রাঙ্গামাটিতে আসা যাওয়ার জন্য।

দর্শনীয় স্থান[সম্পাদনা]

  • ঝুলন্ত সেতু: পর্যটকদের বিনোদনের জন্য পর্যটন কর্পোরেশনের উদ্যোগে রাঙামাটিতে ১৯৮৫ সালে নির্মাণ করা হয়েছ। এ সেতুটিকে রাঙামাটির প্রতীক’ বলা হয়। সেতুটির জন্য দেশ এবং দেশের বাইরে আলাদা পরিচিতি পেয়েছে রাঙামাটি।
  • ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী জাদুঘর: শহরের ভেদভেদী এলাকায় গড়ে তুলেছে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী জাদুঘর।
  • রাঙামাটি মিনি চিড়িয়াখানা: শহরের রাঙাপানি এলাকায় প্রকৃতির অপরূপ পরিবেশে জেলা পরিষদের অর্থায়নে গড়ে উঠেছে মিনি চিড়িয়াখানা। বানর, ভাল্লুক, অজগর, সজারু, হরিণ বনমোরগসহ অনেক প্রাণী রয়েছে এ চিড়িয়াখানায়।
  • বনভান্তের বৌদ্ধ মন্দির: শহরের রাজবাড়ি এলাকায় দক্ষিণ এশিয়ার বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের অন্যতম তীর্থ স্থান বনভান্তের বৌদ্ধ মন্দিরটিও ঘুরে দেখতে পারেন পর্যটকরা। বিশাল আকৃতির মূর্তি, প্রাকৃতিক পরিবেশ আপনাকে আলাদা শান্তি প্রদান করবে।
  • রাঙামাটি-কাপ্তাই সংযোগ সড়ক: রাঙামাটি-কাপ্তাই যোগাযোগের জন্য রাঙামাটি শহরের আসামবস্তি-রাঙাপানি সড়কের কাছে একটি বিকল্প সড়ক রয়েছে। বর্তমানে এ সড়কটি এখন পর্যটক বান্ধব সড়কে পরিণত হয়েছে।
  • রাঙ্গামাটি স্টেডিয়াম
  • 1 রাজবন বিহার, কাপ্তাই হ্রদ (রাঙামাটির রিজার্ভ বাজার লঞ্চ ঘাট থেকে জলপথে এবং স্টেডিয়ামের পাশ্ববর্তী সড়ক পথে পাঁচ মিনিটেই বিহারে পৌঁছানো যায়।)। রাজবন বিহার বাংলাদেশে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের বৃহত্তম বিহার রাঙামাটি শহরের অদূরেই অবস্থিত। ১৯৭৭ সালে বনভান্তে লংগদু এলাকা থেকে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য রাঙামাটি আসেন। বনভান্ত এবং তাঁর শিষ্যদের বসবাসের জন্য ভক্তকূল এই বিহারটি নির্মাণ করে দেন। প্রতিবছর পূর্ণিমা তিথিতে রাজবন বিহারে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। পর্যটকদের বিহার চত্ত্বরে মাথায় টুপি, বোরকা কিংবা ঘোমটা এবং পায়ে সেন্ডেল, জুতা ইত্যাদি পরে প্রবেশ নিষেধ। উইকিপিডিয়ায় রাজবন বিহার (Q18988849)

খাওয়া[সম্পাদনা]

রাঙ্গামাটিতে বিভিন্ন মানের খাবার রেস্তোরাঁ রয়েছে। রেস্তোরাঁয় স্থানীয় ঐতিহ্যবাহী বাঙালী, পাহাড়ি সব খাবার পাওয়া যায়। ভিন্ন স্বাদের এইসব খাবারের স্বাদ নিতে পর্যটকগণ আগ্রহী থাকেন।

রাত্রিযাপন[সম্পাদনা]

রাঙামাটি শহরে বিভিন্ন মানের আবাসিক হোটেল রয়েছে। এছাড়া কম খরচে থাকতে বোডিং এ থাকা যাবে। রাঙামাটি শহরের উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হোটেল:

  • হোটেল গ্রিন ক্যাসেল: রিজার্ভ বাজারে অবস্থিত এ হোটেলে নন-এসি এক বিছানা, দুই বিছানা ও তিন বিছানার রুমের ভাড়া যথাক্রমে ৮০০, ১০০০ ও ১২০০ টাকা। এসি দম্পতিদের বিছানার রুম ভাড়া ১৬০০ টাকা ও এসি তিন বিছানার রুম ভাড়া ২০০০ টাকা। যোগাযোগ: ০১৭২৬-৫১১৫৩২, ০১৮১৫-৪৫৯১৪৬
  • পর্যটন মোটেল: রাঙ্গামাটি ঝুলন্ত ব্রিজের পাশে অবস্থিত এ হোটেলটিতে নন-এসি দুই বিছানার রুম ভাড়া ১০০০-১২০০ টাকা। আর এসি দুই বিছানা ভাড়া ১৫০০-১৮০০ টাকা। যোগাযোগ: ০৩৫১-৬৩১২৬
  • রংধনু গেস্ট হাউজ: এই গেস্ট হাউজে পারিবারিক বিছানা বা দম্পতিদের জন্য বিছানা ভাড়া নিতে খরচ পড়বে যথাক্রমে ৬৫০ ও ৫০০ টাকা। যোগাযোগ: ০১৮১৬-৭১২৬২২, ০১৭১২-৩৯২৪৩০
  • হোটেল সুফিয়া: ফিসারী ঘাট, কাঁঠালতলী। যোগাযোগ: ০১৫৫৩-৪০৯১৪৯
  • হোটেল আল-মোবা: নতুন বাস স্টেশন, রিজার্ভ বাজার। যোগাযোগ: ০১৮১১-৯১১১৫৮